জান্নাত কোন পথে ? / Jannat kon pothe (Bengali)

পুস্তিকার পটভূমি

দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্য করে আসছি আমার প্রিয়জনদের জীবন পরিচালনার ধারা একটা বিশেষ বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। এ ধারা আর বিশ্বাস মৌলিকভাবে ইসলামের সাথে অনেক ক্ষেত্রে সংগতিপূর্ণ নয় বরং উল্টো এবং অনেক ক্ষেত্রে তা ইসলামের সাথে বিরোধীতার শামিল। তাদের কেউ কেউ এও বিশ্বাস করে, যে বিশ্বাসের উপরই জীবন পরিচালনা করা হোক না কেন, তাতে ঈমানের কোন ঘাটতি নেই বা পাকা মুসলিম থাকার ব্যাপারেও সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এ ধারণা সম্পর্কে আমি এতটুকুই বলতে চাই, যে বিশ্বাস ইসলামের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়, সে বিশ্বাস ইসলামের প্রতি শুধু অবিশ্বাসেরই জন্ম দেয় না, ইসলামের বিরুদ্ধে বিরোধীতা করার মানসিকতাও তৈরী করে। তারা কিন্তু নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, বিবাহ-তালাক, জানাযা, দোয়া মাহফিল ইত্যাদি এ সকল আনুষ্ঠানিক এবাদত বন্দেগী ইসলামের উপর বিশ্বাস রেখেই পালন করে। কিন্তু তাদের এই আনুষ্ঠানিক এবাদত বন্দেগীর বাইরে তারা যে বিশ্বাস নিয়ে জীবন পরিচালনা করে তা আদৌও ইসলাাম সমর্থন করে কিনা তা ভেবে দেখার প্রয়োাজনও বোধ করে না। তারা মনে করে এবাদত বন্দেগীর জীবনই শুধু ইসলামের অনুশাসনে চলতে পারে। সামাজিক ও জাতীয় জীবন ইসলামের অনুশাসনে চালাবার বাধ্যবাধকতা থাকা উচিৎ নয়। এ চিন্তা ধারা যে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তা ঈমানের মৌলিক বিষয় অস্বীকার করে তারা বুঝেও তা বুঝতে চায় না। তার পরও অগাধ বিশ্বাস নিয়ে ভাবতে থাকে আমরা পুরাপুরি মুসলিমই আছি। তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, এ সকল চিন্তাধারা আর বিশ্বাস, মানুষের পরম শত্রু শয়তানের ধোকাবাজির ফসল। শয়তানের এ সকল ধোকাবাজি পরিহার করতে না পারলে জীবনকে শিরক মুক্ত করা যাবে না।

উপরোক্ত ভুল চিন্তাধারা ও বিশ্বাস পরিহার করার জন্যে কুরআন ও হাদিস থেকে অতি সংক্ষেপে কিছু আলোচনা করেছি। ইসলাম সম্পর্কে কিছু মৌলিক ও সঠিক ধারণা আমার প্রিয়জনদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আমার প্রিয়জনদের ভালবাসি। সামান্য হলেও তাদের নিয়ে কিছু চিন্তা ভাবনা করি। তাদের ইহকালীন ও পরকালিন জীবনের কোন অংশে অকল্যাণের কোন ছোয়া স্পর্শ করুক তা আমি কল্পনাও করতে পারি না। আর এ জন্যেই তাদের কাছে কিছু আহবান রেখেছি। আশা করি, আমার আহবানগুলো তারা অন্তর দিয়ে বুঝার চেষ্টা করবে।

আমার পুস্তিকার আলোচনায় কোন ভুল ক্রটি হয়ে থাকলে তা আমার জ্ঞানের স্বল্পতার কারণেই এবং তা আমার অনিচ্ছাকৃত। আল্লাহ আমাকে মাফ করুন। আর যা সঠিক ও সত্যরূপে উপস্থাপন করেছি তার সবটুকুই আমার আব্বা-আম্মার জন্যে আল্লাহ কবুল করুন। আমীন।

অধ্যক্ষ খন্দকার এ কে এম আলী মুহসীন

তরুছায়া

৪৭/ডা: আইনুদ্দিন সড়ক

কালি শংকরপুর, কুষ্টিয়া

১৫ জুন, ২০১২ ইসায়ী।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

আমার প্রিয়জনেরা,

দেখতে দেখতে বয়সের কাতারে সামনে এসে পড়েছি। ইতোমধ্যে সামনের এবং পেছনের অনেককে হারিয়েছি। সামনের বাকী পথটুকুও ছোট হয়ে এসেছে। আর কতপথ চলতে হবে তাও জানা নেই। তুমি বলে সম্বোধন করার আপনজনেরা প্রায় শেষ। যাঁদেরকে হারিয়েছি তাদের আর কিছুই শোনাতে পারব না। তারাও আর আমাকে কিছু বলবে না। অনেক আগে থেকে ভাবছি তোমাদের নিয়ে কিছু কথা বলব। সকলকে একত্রে পাইনি। একত্রে পাওয়া বড়ই কঠিন। সবাই ব্যস্ত। স্থির করেছি যা বলতে চাই তা লিখে তোমাদের হাতে পৌছে দেব। এ সুযোগটুকু আল্লাহ আমাকে দান করুন। আমার কথা বলতে কিছু নেই। যা বলতে চাই তা আমার জীবনের সহজ সরল এক সত্য উপলব্ধি। সেই সত্যের প্রতিই আমার আহবান।

পীর বংশের সন্তান। ইসলাম সম্পর্কে যা কিছু শিখেছি, জেনেছি তা পারিবারিকভাবে আমার পিতার নিকট থেকেই শিখেছি। তাতে