You are on page 1of 23

নগেণ র মৃতু

িমত ন ী
মূল - িবল নিজিন

তার নাম িছল দা ।


অ ত আিম কােরা মুেখ দা ছাড়া তার অন কােনা নাম িনিন।
হয়েতা তার িপতৃ দ নাম িছল দশরথ িকংবা পদবী িছল দাশ, সটাই
হয়েতা লাকমুেখ দা হেয় িগেয়িছল। িকংবা হয়েতা এর কােনাটাই নয়,
অন কােনা কারেণ সবার কােছ রাতারািত স দা হেয় িগেয়িছল।
আসেল প ােশাধ জীবেন কুিড়েয় পাওয়া ব িজিনেসর মত নাম
িজিনসটাও তার কােছ অথহীন হেয় পেড়িছল। তাই আিমও কােনািদন
জানেত চাইিন তার নােমর উৎস কাথায়। দা র পিরচয় স েক
সমাজিব ানীরা বলেবন স ‘একজন মানুষ য ঈ র, মনুষ এমনিক
িনেজর ওপেরও সবরকেমর িব াস হািরেয় মদ-গঁাজার নশায় সব িকছু
ভু েল থাকেত চায়।’ আর সমােজর চােখ স একজন নশােখার ভবঘুের
মাতাল। সাধারণ মানুেষর কােছ স তাি ল ছাড়া আর িকছু ই পায় না।
িডেস েরর এক কুয়াশা িদেন স যখন আমার অিফেস এল তখন
ঘিড়র কঁাটা দশটাও ছঁায়িন। স এককােল চ ননগেরর কােছ ওকালিত
কেরেছ। তার র হাড় িজরিজের চহারায় এখেনা সই বুি ম া ও
িশ াদী ার ছাপ । এমনিক পেট মদ না থাকেল তার ভাবভ ীর
মেধ সই সমেয়র আদবকায়দা চােখ পেড়। আমার সে তার আলাপ ায়
দশ বছর আেগ- আিম তখন সুিজত নােম একজন সাব ই েপ েরর সে
রাত গভীর হেল উ র কলকাতায় টহল িদেত বেরাতাম। কান
ভাগ িবপযেয় চ ননগেরর স ানজনক ওকালিত ফেল উ র কলকাতার
রা ায় ঠঁাই িনেয়েছ সটা স আমায় কােনািদন বেলিন আর আিমও
কােনািদন তােক িজে স কিরিন।
দরজার কােছ দঁািড়েয় স স ভােব তার রঁায়া ওঠা মাফলারটা
গলা থেক খুলিছল আর জড়াি ল । তার পরেণ তািল দওয়া একটা
কােলা শাট আর গাড়ািলর কােছ ছঁড়া ময়লা একটা প া যটা কােনা
এক দূর অতীেত বাদামী িছল। তার চােখ একটা আবছােট নীল ঘালােট
ভাব যা রােতর পর রাত ব বাতল িদিশ মেদর সে কাটােনার সা বহন
করেছ। তেব আজ সকােল তােক মাতাল বেল মেন হেলা না–বরং তার
গলায় এক শীতল য ণাি শা ভাব খয়াল করলাম।
আিম বললাম, “আের দা য, অেনকিদন পর।”
“হঁ া, দাদা, অেনকিদন পর,” স নীচুগলায় স িত জানাল।
“তা কিফ খােব নািক?”
“না, না, ধন বাদ।”
ফাইিলং ক ািবেনেটর ওপর আমার ইেলক ক কটিলটা থােক।
শীতকােল কিফ িকংবা গরমকােল চা যেকােনা একটার জন ওটা কােজ
লেগই যায়। একটু আেগই বানােনা গরম কিফর খািনকটা কােপ ঢেল
িনেয় বললাম, “বেলা আিম িকভােব তামায় সাহায করেত পাির?”
স গলা খাঁ করাল। তার ঠঁাট েলা নেড় উঠল। যন স িকছু মেন
কের বলেত চ া করেছ। িক তারপেরই মেন হল স তার িস া বদেল
ফেলেছ। স এক পা িপিছেয় িগেয় দরজার িদেক ায় ঘুের িগেয় বলল,
“আমার বাধহয় এখােন আসাটা ক হয়িন,” মেঝর িদেক মুখ নািমেয়
বলল, “আিম এখন আিস বুঝেলন…”
“আের দঁাড়াও না! কী ব াপার বেলা তা?”
“চসার”, স বলল, “চসােরর কথা বলার িছল।”
নামটা আিম িচনেত পারলাম। চসার উ র কলকাতার আর এক
ভবঘুের বািস া। দা র মতই চসার একজন িশি ত মানুষ য সব খুইেয়েছ
কােনাকােল, কােনা ােন, কােনাভােব। স একসময় মালদা বা
মুিশদাবােদর কােনা কেলেজ ইংেরিজ সািহেত র অধ াপক িছল আর স
জন ই সবাই তােক এ নাম ডােক। দুজেনই শ ামবাজার এলাকায় রা ার
ধাের ঝুপিড়েত থােক। স সুবােদ তােদর অেনকিদেনর ব ু ।
আিম বললাম, “কী হেয়েছ তার?”
“ স মারা গেছ,” দা িন ভভােব বলল, “আিম িকছু ণ আেগ
খবরটা নেত পলাম। আজ ভারেবলা এস ােনড মে ার কােছ এক
গিলেত পুিলশ ওর লাশ খুঁেজ পেয়েছ। ওেক িপ েয় খুন করা হেয়েছ।”
“ হ ভগবান! জানা গেছ ক খুন কেরেছ?”
দা মাথা নাড়ল। “তেব কন ওেক খুন হেত হল সটা হয়েতা আিম
জািন।”
“তু িম পুিলেশর কােছ গছ?”
অবশ টা না করেলও চলত। কারণ উ রটা আমার জানা।
কলকাতার ভবঘুের বািস ারা অিলিখতভােব য িনয়ম েলা মেন চেল
তার মেধ একটা হল আইিন ব াপারস াপার থেক শত হ দূের
থাকা–এমনিক যখন তােদর িনেজেদর কউ খুন হেয় যায় তখনও। তা
সে ও আিম বললাম, “তু িম যিদ চসােরর খুেনর ব াপাের যিদ িকছু জােনা
তাহেল সটা সরাসির পুিলেশর কােছ খুেল বলাই ভােলা।”
“তােত িক লাভ হেব কােনা? পুিলশ চসােরর ব াপাের মাথা ঘামেব
কন–ও তা একটা নশােখার ভবঘুের মাতাল। আমােদর মেতা নগণ কউ
মারা গেল ওেদর িক যায় আেস কােনা?”
“ কউ কউ য এরকম মেন কের সটা আিম অ ীকার করিছ না।
িক সবাই তা এক নয়।”
“সংখ াটা কম নয়,” স বলল, “হয়েতা বিশরভাগই।”
“আ া তাহেল তু িম আমার কােছ কন এেল? আিম তা এককােল
পুিলেশ িছলাম আর এখেনা বলেত গেল পুিলেশর কাজই করিছ। যিদ
তামার মেন হয় পুিলেশর কােনা মাথা ব থা নই তাহেল তামার কন মেন
হে আিম এ ব াপাের নাক গলাব?”
“জািন না,” স বলল, “আপিন সবসময় আমার সে ভােলা ব বহার
কেরন। আর আপিন তা এখন আর পুিলেশর চাকির কেরন না। তাই আিম
ভাবলাম… যাই হাক হয়েতা আিম চেল গেলই ভােলা।”
“ সটা তামার হােত।”
স ইত ত করল। বুঝেত পারলাম তার মেধ একটা কাজ
করেছ–তার ায়িব ৃত কতব েবাধ আর ভবঘুের জীবেন বদবাক মেন
চলা নীিত েলার মেধ । শষেমশ চসােরর সে তার দীঘ সমেয়র ব ু
তার িভতেরর কতব েবাধেক িজিতেয় িদল। স ভারী পােয় এিগেয় এেস
মে লেদর জন রাখা একটা চয়াের বসল। মাফলারটা খুেল কােলর
ওপর রেখ িশরাসব হােতর িপেঠর িদেক চেয় রইল।
“তেব আিম আপনােক িকছু িদেত পারব না, জােনন তা,” স বলল।
“ সটা িনেয় ভেবা না। দেখা তু িম আমায় যা বলেব সটা পুিলেশর
কােছ প ঁেছ দব আর খয়াল রাখব যন সটা কােনা উপযু লােকর
হােতই প ঁেছায়। এমিনেতও এর বিশ তা আিম িকছু করেত পারব না।”
েন স একটা ল া াস িনেলা। তারপর স একবার কাশল। ল
করলাম এই শীতকােলও তার কপােল ঘাম জেমেছ। হােতর চেটা িদেয় স
ঘাম মুছল। তারপর বশ নীচু গলায়, ায় একেঘেয়ভােব স বলেত র
করল। “িতন স াহ আেগর কথা, রাজাবাজােরর কােছ একটা বািড়র
দওয়ােল ঠস িদেয় আিম আর চসার িমেল এক বাতল িদিশ মদ
িগলিছলাম। রাত বশ গভীর হওয়ােত রা ায় গািড় খুব একটা চলাচল
করিছল না। আ া, কমলা বুিড়েক আপিন চেনন নািক?”
আিম মাথা নাড়লাম।
“আমার ঝুপিড়র কােছই থােক। রা ায় পেড় থাকা কাগজ কুেড়ােনার
কাজ কের,” দা বলল, “রাজাবাজােরর মােড় স রা া পার করেব বেল
দঁািড়েয় িছল। িসগন াল লাল হওয়ার অেপ া করিছল। সটা হেতই স
ফুটপাথ থেক নেম রা া পার হি ল। স যখন ায় রা ার মাঝখােন
তখন একটা গািড় তােক ধা া দয়। কশব সন ট িদেয় গািড়টা ঝেড়র
বেগ আসিছল, লাল বািতেক পুেরাপুির অ াহ কের। গািড়র ধা ায় বুিড়
ি শ ফুট দূের একটা বািড়র দওয়ােল আছেড় পেড়। আিম বা চসার
চঁিচেয় ওঠার সময়টুকুও পাইিন। গািড়টা ধা া মের খািনক েণর জন
গিত কিমেয়িছল, তারপর আবার গিত বািড়েয় দীেন েট ঢুেক পেড়।
বুিড় যভােব দওয়ােল আছেড় পেড়িছল তােত এটুকু বুেঝিছলাম আমােদর
িকছু করার নই। তাই পুিলশ আসার আেগই আমরা সখান থেক কেট
পিড়।”
সই আইন বা আইেনর র েকর থেক শত হ দূের থাকার নীিত।
দা মুেখ হাত ঘসল। যন সিদেনর িবশদ িববরণ মুহূেতর জন তার সম
শি েষ িনেয়েছ। আিম িকছু না বেল অেপ া করেত লাগলাম। খািনক
বােদই স আবার বলেত র করল।
“গত স াহাে চসার বাগবাজােরর কােছ িভ া করেত িগেয়িছল।
তখন ও দখেত পায় িগিরশ ঘাষ েট ওই খুেন গািড়টা দঁাড় করােনা।
গািড়টা ভােলা কের সারাই কেরেছ। এমনিক নতু ন কের রঙ কের সিদেনর
কুকী তর সব িচ মুেছ ফেলেছ। পের ও আমায় এসব বেলিছল।”
আিম বললাম, “ও কী কের জানল ওটা একই গািড়?”
“কমলা বুিড়েক ধা া মারার পর যখন গািড়টা গিত কমায় তখন ও
লাইেস েটর ন রটা পেড় ফেলিছল। িভতের দু বাতল িদিশ ঢুকেলও
চসােরর চাখ থাকত ক ােমরার মত, জােনন দাদা?”
“তা ন রটা ও তামায় বেলিছল?”
“না,” দা বলল, “আিম তা এটাও জানতাম না ওইিদনই ও
কােনাভােব গািড়র মািলেকর নাম কানা জাগাড় কেরিছল। তেব
আমার মেন হয় এরকমই িকছু হেয়িছল। আিম ওেক গতকাল স ার িদেক
যখন দখলাম তখন ও ভীষণ উে িজত। বলল ওর নািক িকছু কাজ
আেছ। সটা যিদ কঠাক উৎের যায় তাহেল পের একসে ফু ত করেত
যােব। তারপর আিম আর ওর কােনা দখা পাইিন।”
“আ া। তাহেল তামার মেন হয় ও গািড়র মািলেকর সে দখা
করেত যাি ল। তােক চাপ িদেয় িকছু টাকাকিড় হাতােনার তােল িছল।
উে িনেজই খুন হেয় গল।”
স মাথা দালাল।
“চসার বেলিছল গািড়টা কান কা ািনর?”
“না।”
“বা মািলক কাথায় থােক?”
“না।”
“ও কী এমন িকছু বেলিছল যা থেক গািড়টা বা সটার মািলকেক
সনা করা যেত পাের?”
“না,” দা বলল, “ও আমােক যা িকছু বেলিছল তার সবটাই
আপনােক বললাম।”
আিম িসগােরেটর প ােকট থেক একটা ধরালাম। দা আমার িদেক
লাভী দৃ েত চেয়িছল। আিম ভাবলাম, হাজার হাক, বচারা এখােন তা
িনেজ থেক উেদ াগ িনেয় এেসেছ তা, তাই না? তার িদেক আধাভ ত
প ােকটটা ছুঁ েড় িদলাম। থেম স লাফার চ া করল, না পারায়
প ােকটটা মা েত পেড় গল। তারপর সটা কুিড়েয় িনেয় স পেকেট পুরল।
মুেখ িকছু না বলেলও তার চােখ মুেখ কৃত তা ফুেট উঠল।
“ ক আেছ,” আিম বললাম, “ দখিছ কী করা যায়। িকছু জানেত
পারেল সে সে তামায় জানাব।”
স উদাসভােব মাথা দুিলেয় উেঠ দঁাড়াল। চেল যাওয়ার সময় তার
হঁ াটার ভি দেখ পির ার বুঝেত পারলাম তার মেন হয় না আেদৗ িকছু
জানা যােব।
***
আেগ চাকির করতাম বেল লালবাজাের এখেনা িকছু চনা জানা
আেছ। সুিজেতর কথা মেন আেছ িক? সইিদেনর সাব ই েপ র এখন
কলকাতা পুিলেশর বড়সড় পেদ আেছ। আিম যখন লালবাজাের প ঁছলাম
তখন সুিজত িকছু লােকর সে কথা বলিছল। দু-একজেনর সে কথা
বেল যা বুঝলাম খািনক ণ অেপ া করেত হেব। তাই ায়াড র েম িগেয়
বসলাম। সদ খালা নতু ন প ােকেটর িসগােরট আর ায়াড র েমর
জােলা িম চা ংস করেত করেত বর ণ বেল একজন ই েপ েরর সে
বতমান রাজৈনিতক পিরি িত িনেয় আ া মারলাম। আধ ঘ া বােদ
সুিজেতর ঘর থেক িতনজন ভীষণ রকেমর গ ীর সু ট বুট পরা লাক
বিরেয় গল, তােদর মেধ দুজেনর হােত আবার ি ফেকস। প ােরড িফে
আ মর লাকেদর মেতা তারা একেযােগ সু র কুচকাওয়াজ কের বিরেয়
গল।
বর ণ ই ারকেম আমার আগমনবাতা জািনেয় িদেয়িছল। তেব
আেরা িমিনট পঁােচক পর আমার ডাক এল। ঘের ঢুেক দিখ, সদ ধরােনা
িসগােরট হােত স খুব মেনােযাগ িদেয় একটা ফাইল পড়েছ। ছাইদািনেত
অন মন ভােব িসগােরেটর ছাই ফলেত িগেয় মােঝ মেধ ই ছাইেয়র ঁ েড়া
কাগজপে র ওপর ছিড়েয় িছ েয় নাংরা কের িদি ল। আমায় ঢুকেত
দেখ সামেনর চয়াের বসেত বলল স। খািনক বােদ মুখ না তু েলই বলল,
“তা তামার কী চাই ঝটপট বেল ফেলা দিখ।”
“যিদ বিল তামার মহামূল বান সময় থেক পঁাচটা িমিনট?”
“িতনজন লাকেক দখেল যারা এখুিন বিরেয় গল?”
“তা দখলাম বিক।”
“তারা ট এট ন জনােরেলর অিফস থেক এখােন এেসিছল। গত
এক স াহ ধের একটা িবেশষ কােজ তারা মাগত আমায় চাপ িদেয়
চেলেছ। আিম দু িদন হল সুমনােক দিখিন, গতকাল রাত এগােরাটার পের
পেট একটা দানা-পািনও পেড়িন। এিদেক ঠা া লেগ দঁােতর গাড়া ফুেল
িগেয়েছ। কােজই তু িম য কােজই এেস থােকা না কন পঁাচ িমিনট কন এক
সেক তার িপছেন ন করা স ব নয়।”
আিম বললাম, “ বশ ক আেছ, সুিজত। তেব কাল রােত য খুনটা
হেয়েছ সটা িনেয়ই িকছু বলার িছল।”
স কঁু চেক বলল, “ কান খুন?”
“ভবঘুের একটা লাক, নাম চসার।”
“তু িম স ব াপাের কী জােনা?”
“ য ই েপ র এই কসটার দািয়ে আেছ তু িম যিদ তার নামটা বেলা
তাহেল আিম তােকই পুেরা ব াপারটা–” আিম উেঠ পড়লাম।
“তু িম আমােকই বলেত পােরা,” স বলল, “বেসা।”
আিম বেস পড়লাম। তারপর িসগােরেটর প ােকট থেক একটা বর
কের ধরালাম।
সুিজত বলল, “তু িম ব বশী াক কেরা িক ।”
“একদম ক বেলছ,” আিম বললাম, “ তামার দা র কথা মেন
পড়েছ? চসােরর সে এক জায়গায় থাকত?”
“িবল ণ িচিন বেট।”
“ স আজ সকােল আমার কােছ এেসিছল,” বেল দা আমায় যা
বেলিছল তার পুেরাটা তােক জানালাম।
সুিজত সবটা শানার পর খািনক ণ চুপ কের রইল। শষ হেয়
যাওয়া িসগােরেট টান িদেত িগেয় ব থ হেয় িবরি সূচক আওয়াজ কের
িফ ারটা ঠঁাট থেক বর করল। ব াজার মুেখ সটা ছাইদািনেত ঁ জেত
ঁ জেত বলল, “ ম, কােনা যাগােযাগ থাকেতই পাের, সটা কই। তা
দা িনেজ এেস একথা আমােদর জানাল না কন?”
“এর উ র তা তামার ভােলাভােবই জানা আেছ, সুিজত।”
“ , তা ক।” স একটা দীঘ াস ফেল বলল, “আিম খািনক আেগই
াথিমক তদে র িরেপাট দখিছলাম, ওই জাকার েলা আসার আেগ।
আিম চসােরর নামটা িচনেত পেরিছলাম। তেব িবেশষ িকছু ই জানা
যায়িন।”
“দা বলল, ওেক নািক িপ েয় খুন করা হেয়েছ।”
“ কই জােনা। ল ােবর ছেলেমেয় েলা গিলর মেধ একটা
িবি ংেয়র গােয় রে র দাগ দখেত পেয়েছ। দেখ মেন হে , তার মাথাটা
ফেট চৗিচর না হওয়া অি দওয়ােলর গােয় বার বার মারা হেয়েছ। তার
শরীের ও মুেখও িকছু আঘােতর িচ পাওয়া গেছ।”
“ মাটামু কখন খুনটা হেয়েছ?”
“কেরানােরর মেত, রাত বােরাটা থেক দুেটার মেধ ।”
“গিলর মেধ িকছু পাওয়া গেছ িক?”
“ কােনা এিভেডে র কথা বলছ? না। আর কউ িকছু দেখিন বা
শােনিন। ধমতলার ওিদকটা আবার রাত বাড়েল কবরখানার মেতা
নশান হেয় যায়।”
“চসােরর পেকেট িকছু পাওয়া গেছ?”
“ েচর একটা ছাট বাতল, আঠাশেশা টাকা, আর িকছু খুচেরা
কেয়ন।”
“ স তা অেনক টাকা। আর মদটাও তা বশ শ িখন। অ ত
চসােরর মেতা ভবঘুের মাতােলর কােছ তা বেটই।”
“ ।”
“দা র িথওিরটা তাহেল কও হেত পাের, িক বেলা?”
“হেত পাের। িক এই িহট অ া রােনর লাকটা যিদ চসারেক খুন
কের থােক তাহেল আেগ খােমাকা টাকা িদল কন?”
“স বত চসােরর পেকেট যা পাওয়া গেছ তার থেক অেনক বিশ স
দািব কেরিছল,” আিম বললাম, “ লাকটা তােক তখনকার মত িকছু টাকা
িদেয় িবেদয় কেরিছল। কাল রােত দখা কের বািক পাওনা িম েয় দওয়ার
কথা িছল।”
“আর তার সব িকছু র সাধ িচরকােলর মেতা িম েয় িদল,” সুিজত
বলল, “হঁ া, এরকম হেয় থেকই পাের।”
“ দেখা, সুিজত, যিদ িকছু মেন না কেরা আিম িনেজ ব াপারটা িনেয়
একটু নাড়া ঘঁাটা কের দখেত চাই।”
“আিম তা ভাবিছলাম তু িম কখন কথাটা পাড়েব। চসােরর মৃতু িনেয়
তামার এত আ হ িকেসর বেলা তা?”
“আিম তামায় বললাম না, আজেক দা আমার কােছ এেসিছল।”
“ তামায় তদে র ভার িদেত িন য়ই নয়। সটা তু িম বলেলও আিম
িব াস করব না।”
“না,” আিম ীকার করলাম।
“তাহেল তামার দি ণা ক দেব িন?”
“হয়েতা আিম মাগনায় কাজটা করব। এমিনও আমার হােত এখন
তমন কােনা কাজ নই।”
“দা র জন খারাপ লাগেছ তামার, তাই না?”
“খািনকটা তা বেটই। তু িম িক জােনা স কী মেন কের? স মেন কের
পুিলেশর িব ম ু া মাথা ব থা নই চসােরর খুিনেক খুঁেজ বর করা িনেয়।
চসার তা নগণ মা , রা ার আর একটা ভবঘুের। দা র কথায়, কার িক
আেস যায়, যিদ একটা ভবঘুের মাতালেক কউ পৃিথবীর বুক থেক
িচরকােলর মেতা সিরেয় দয়।”
সুিজত দীঘ াস ফেল া ভােব উেঠ দঁাড়াল। “মেন হয়
িমিনটদুেয়ক সময় বর করেত পারব,” স বলল, “চেলা। ািফেক যাওয়া
যাক। ওরা কী বেল দখা যাক কমলা বুিড়র িহট অ া রােনর ব াপাের।”
িলফেট কের ািফক পুিলশ িডপাটেমে নেম এলাম। সখােন
অতনু বেল একজন ই েপ েরর সে দখা করলাম। িহট অ া রােনর
কস েলা সাধারণত সই দখভাল কের। অতনু একজন বড়সড়,
ল াচুলওয়ালা লাক, তার হােত মুেখ অজ মেচতার দাগ। সুিজত তােক
কেসর কথা বলেল স কি উটার ঘঁেট কস ফাইল ন রটা দেখ িনেলা।
তারপর অেনক েলা ফাইল ক ািবেনেটর মেধ একটা হাতেড় একটা
পাতলা ফা ার বর করল। স তার ডে র ওপর সব কাগজ আর ছিব
ছিড়েয় রাখল। তার বার বার চাখ কঁু চেক তাকােনা দেখ মেন হল, তার
অিবলে চশমার েয়াজন। হয় স চশমার ব াপাের ভীষণ এক ঁ েয় না হয়
িনেজর দৃ শি র ব াপাের ভীষণ অহংকারী, তাই স চশমার েয়াজনটা
ীকার কের না।
স গড়গিড়েয় বেল গল, “মিহলার নাম কমলা ম ল, তষ বছর
বয়স, িতন স াহ আেগ রাজাবাজােরর মােড় িহট অ া রান। ট ডড।
এই কসটার কথাই বলেছন?”
“ওটাই,” সুিজত বলল।
“আমরা ায় িকছু ই জানেত পািরিন,” অতনু বলল, “ মাটামু সােড়
বােরাটার সময় ঘটনাটা হয়। ফেল কােনা সা ীও িছল না।”
“না, িছল সা ী,” আিম বললাম, “তাও আবার দুজন।”
“তাই?”
আিম তােক জানালাম দা আমায় যা বেলিছল। তারপর িজে স
করলাম, “ঘটনা েল কােনা ভাঙা কঁােচর টুকেরা পাওয়া গেছ?”
“হঁ া। স বত কােনা একটা হডলাইেটর। তেব সটা থেক কান
কা ািনর গািড় সটা জানার উপায় নই।”
“ কােনা রেঙর দাগ?”
“ । ঘন সবুজ। অেনক জ েলর মেতা। রংটা একটু অন রকম হেলও
একদম রয়ার নয়। মার িত থেক র কের টেয়াটা–অেনক গািড়েতই সই
রং দখা যায়। কান সােল তরী সটাও জানার কােনা উপায় নই। আবার
কউ যিদ শখ কের রং কিরেয় থােক তাহেল তা কথাই নই।”
“গািড়র ফ ার বা ি ল থেক ঝের পড়া কােনা ধুেলা-কাদা জাতীয়
িকছু পাওয়া গেছ?”
অতনু মাথা দালাল। “ল ােব কিমক াল অ ানািলিসস কের দখা
হেয়েছ, অফ কাস। রা ার সাধারণ ধুেলা-কাদা, অ খািনকটা বািল,
সাধারণ নুিড়-কঁাকর, আর টুকটাক িকছু । িক অ াভািবক িকছু নই যা
িদেয় তদে র কাজ এেগােনা যায়।”
সুিজত জানেত চাইল,”আর িকছু ?”
“আর িকছু কােঠর ঁ েড়া,” অতনু বলল।
“কােঠর ঁ েড়া?”
“িকছু টা কােঠর িমিহ ঁ েড়া পাওয়া গেছ ঘটনা েলর কােছই। সাদা
পাইন, স ন, চ ন কাঠ। এর থেক আপনারা কােনা িস াে আসেত
পারেছন িক? আমরা পািরিন।”
আিম আর সুিজত দুজেনই মাথা নাড়লাম।
“কলকাতার সম কার িরেপয়ািরং অ া সা ভিসংেয়র দাকান আর
গ ারােজ আমরা খবর িনেয়িছলাম,” অতনু বলল, “এটাই া াড
িসিডউর। হ া আর টেয়াটার একটা কের সবুজ রংেয়র গািড়র খবর
পাওয়া গিছল। একটা গািড় পা কং লট থেক বেরােনার সময় অন গািড়র
সে ধা া লেগ পছেন তু বেড় গিছল। আর একটার বঁা িদেকর দরজাটা
টাল খেয়িছল। আমরা দুেটা গািড়রই অ াি েড িরেপাট দেখিছ।
সে হ করার িক ু নই। আর কােনা খবর পাওয়া যায়িন।” স দু হাত
ছিড়েয় কঁাধ ঝঁাকাল, “ ডড এ ।”
আমরা অতনুেক ধন বাদ জািনেয় িলফেটর িদেক এেগালাম। সুিজত
ওপের ওঠার বাতাম েপ বলল, “আিম এখনই আর এর পছেন সময়
িদেত পারব না। তু িম চাইেল িবষয়টা খিতেয় দখেত পােরা। তেব িকছু
জানেত পারেল অবশ ই আমায় ফান করেত ভু েলা না।”
“তু িম তা জােনাই এর অন থা হেব না।”
“হঁ া,” স বলল, “তাও আর একবার মেন কিরেয় িদেল িত তা
নই।”
িলফেটর দরজা খুেল গল। স িভতের ঢুেক চার তলার বাতাম
পল। আিম লিব পার হেয় লালবাজার েট বিরেয় পড়লাম। সকাল
থেকই সূেযর দখা মেলিন খুব একটা। তাই কুয়াশা এখেনা ভােলা কের
কােটিন। জাের হাওয়া িদি ল। ফেল শহর জুেড় ঠা াটাও জঁািকেয়
পেড়েছ আজ। আিম জ ােকেটর চনটা গলা অি টেন যিদেক গািড়টা
পাক কেরিছলাম সিদেক এেগালাম।
িকছু ণ আিম গািড়র ইি ন চালু না কের খািল িহটার চািলেয় বেস
রইলাম। ভাবেত লাগলাম এর পর কী করা উিচত। দা বেলিছল স
চসারেক শষ দেখিছল গতকাল দুপুরেবলা, স বত স শ ামবাজার চ র
থেক বিরেয় যাওয়ার ক আেগই। আর সুিজত বলিছল, কেরানােরর
মেত, চসার মারা গেছ বােরাটা থেক দুেটার মেধ । তাহেল তার জীবেনর
শষ বােরা ঘ ার কােনা হিদস িমলেছ না। এিদেক চসােরর পেকেট বশ
িকছু টাকা পাওয়া গেছ। তার মােন এই টাকাটা তার খুন হওয়ার বশ
িকছু ণ আেগ থেকই তার কােছ িছল। আিম চসারেক যতটুকু িচিন স
িন য়ই এর মেধ ওই টাকাটা িনেয় শ ামবাজার এলাকায় িফের এেসিছল,
তেব হয়েতা কােনাভােব দা র সে তার দখা হয়িন। যিদ তাই হয় তাহেল
এই এলাকারই অন কােনা মাতাল বা ভবঘুের তােক দেখ থাকেত পাের।
গািড়টা চািলেয় িমিনট পেনেরার মেধ শ ামবাজার প ঁছলাম। বাটার
পােশর গিলেত গািড়টা রেখ বিরেয় পড়লাম। কারণ িজ াসাবােদর
কােজ বার বার গািড় থামােত হেব। তার চেয় একটা জায়গায় রেখ হঁ েট
যাওয়া ভােলা হেব। তাছাড়া গািড় থেক নামেল লােকর একটা স ম তির
হেত পাের যা আমার তদে র ে বাধা তির করেব। শ ামবাজাের পঁাচ
মাথার মােড় নতািজর মূ তর পােয়র কােছ দঁািড়েয় ভাবলাম কাথা থেক
র করেল ভােলা হয়। নতািজেক পঁাচ িদক থেক িঘের রেয়েছ পঁাচটা
রা া, স াবনা অসংখ । উ েরর খাঁ েজ হেদা, মািনকতলা, দশব ু পাক,
পাইকপাড়া, বাগবাজার চেষ ফললাম পরবতী চার পঁাচ ঘ ায়।
দুপুরেবলা াণহীন মেদর দাকােনর টিবেল টিবেল গলাসটা
বাতলটা চাটটা এিগেয় দয় য িনে জ শীতল চােখর ছেল েলা,
ফুটপােথ আধা কেনা ফুেলর পাহাড় িনেয় বেস থাকা তামােট সাদােট
িকংবা ফ াকােশ চামড়ার ফুলওয়ািল, দুপুেরর খাওয়া সের ভাতঘুম
দওয়ার তােল থাকা আধা ঘুম দাকানদার, খেয় যাওয়া দঁােত কান এঁেটা
করা হািস মুেখ পান িসগােরেটর দাকানদার, মেদর দাকােনর িহসাবর ক
যারা মুখ ব াজার কের েন েন িত নয়া পয়সা ফরত দয়,
সানাগািছর িহি িসেনমার লাস থেক লাস তর নােমর বশ া, মেদর
দাকােনর ভতের ও বাইের জট পািকেয় পেড় থাকা মাতােলর দল, মাঝ
রা ার ািফক পুিলশ থেক বড় িবি ংেয়র িসিকউির গাড সবার সে ই
কথা বললাম।
িক িনট ফল শূন ।
যখন আিম বাটার সামেন এেস দঁাড়ালাম তখন আিম ঠা ায় জেম
যাি লাম। ভীষণ া লাগিছল আর পােয়ও ব থা হি ল। একবার
ভাবলাম গািড়টা কােছই রেয়েছ, অিফেস িফের যাই। িক তখনই হাল
ছাড়ার ইে িছল না। খািল মেন পড়িছল দা র কথা েলা আর ও যভােব
আশাহীেনর মেতা আমার অিফস থেক বিরেয় িগেয়িছল। তাই আিম
এিগেয় গলাম আর একটা মেদর দাকােনর িদেক।
সে হেত তখনও ঢর দরী বেল িভড় র হয়িন। বাের একটা লাক
বেসিছল যােক দেখ মেন হি ল ছাই রেঙ তােক চাবােনা হেয়েছ–তার
নাংরা তামােট ছাই চুল, আবছা ঘালােট ছাই রেঙর চাখ, ফ াকােশ ছাই
রেঙর িশরা উপিশরা দৃশ মান হাত, ধুেলামাখা ছাই রেঙর জ ােকট যটা
বাধহয় বাজেপয়ীর ধানম ী থাকাকালীন নতু ন িছল। তার নাম
পনবুেড়া, স অেনকিদন ধেরই দা আর চসােরর সে ভবঘুেরর জীবন
কাটাে । ও যখন কথা বেল মেন হয় যন কােনা ে র ঘাের আেছ। স
জন লােক তার এই নাম িদেয়েছ। তার কােছ িগেয় বললাম আিম কী
জন এেসিছ আর স েলা িজেগ স করলাম য েলা আজেক হয়ত
একশবার কেরিছ।
স নােমর সে মানানসই ালু গলায় বলেত র করল, “কালেক
চসারেক দেখিছলাম বেট। ভাবা যায় না ওর যা হেলা, সিত ভাবা যায় না।”
“কখন দেখিছেল, পন?”
“ছটার িদেক। স তখন ােরর কােছ একটা বাস থেক নামিছল।”
“চসার… বােস? কান র েটর বাস?”
স কঁাধ ঝঁাকাল। “ ক জােন?”
“একটু ভােবা পন। িমিন বাস? সরকারী নািক বসরকারী?”
“হাওড়া,” পনবুেড়া বলল, “হঁ া, ও বলিছল হাওড়া থেক আসেছ।”
আিম বললাম, “ স ওখােন কী করিছল তামায় িকছু বেলিছল?”
“নাহ।” পনবুেড়া একপা ফাকলা দঁাত বর কের হাসল, “আমরা
তারপর ফু ত করলাম,” স বলল, “ চ। বুেড়া পেনর হােত এক গলাস
ভ ত চ ভাবেত পােরন?”
“চসার িকেন িদেয়িছল?”
“ও একেগাছা টাকার বাি ল িনেয় ঘুরিছল। চ িকেন িনেয় আমরা
সামবাজাের আমার ঝুপিড়েত িফের এলাম।”
“ স কাথা থেক ও টাকা পেয়িছল?”
“চসার ভীষণ মজাদার লাক িছল, জােনন তা? অত বড় বড় সব
িডি থাকেল িক হেব মজা করার সুেযাগ পেল িকছু েতই ছাড়ত না। আিম
িজেগ স করলাম, কাথায় পেল ও টাকা? কােক িছনতাই কের এেল? েন
স হা হা কের হেস বলল, ওেক নািক রিবন ড টাকাটা িদেয়েছ।”
“রিবন ড?”
“ও তা তাই বেলিছল।”
“আর িকছু বেলিন?”
“নাহ। এইটুকুই।”
“গত রােত কখন ও তামার ঝুপিড় থেক বিরেয়িছল?”
“ ক জােন,” পনবুেড়া বলল, “ গলাস ভ ত আসিল চ িনেয় বসেল
কই বা কার খবর রােখ বলুন?”
“তু িম জানেত ও কাথায় যাি ল?”
“রিবন েডর সে দখা করেত।”
“ও তামােক তাই বেলিছল?”
“ও ভীষণ মজাদার লাক িছল, জােননই তা? ভীষণ মজাদার
লাক…”
“হঁ া।”
“বুেড়া চসার বড় ভােলা লাক িছল,” পনবুেড়া ালুভােব বলল,
“িজেভ এখেনা যন সই চ লেগ আেছ।”
আিম ওখান থেক বিরেয় পড়লাম। বাটার িদেক হঁ াটেত হঁ াটেত রিবন
েডর কথা ভাবিছলাম। এর কােনা মােন থাকেত পাের আবার নাও পাের।
ক যমন অতনুর কােঠর ঁ েড়ার কােনা মােন থাকেত পাের আবার নাও
পাের। আিম খািল একটা িজিনসই িনি তভােব জানেত পারলাম গতকাল
চসার হাওড়া িগেয়িছল। িক হাওড়ার কাথায় সটা জানা না গেল এ
তেথ রও কােনা দাম নই।
আিম গািড় চািলেয় ধমতলায় এলাম। একটা র ু েরে ঢুেক িকছু
খাবার অডার িদলাম। িক িকছু ই মুেখ র চল না। তেব রঁাধুিনর কােনা
কসুর নই তােত। আসেল মনটা বশ ভারী লাগিছল। আেগ যখন
শ ামবাজার চ ের টহল িদেত যতাম, তখন মােঝ মােঝ এরকম লাগত।
মেন হি ল না দা র জন িকছু করেত পারব। একটাও কােজ লাগােনার
মেতা সূ পলাম না যা চসােরর খুনীেক খুঁেজ বর করেত সাহায করেব।
যখন আিম া রােড আমার অিফেস িফরলাম, তখন লটারবে
একটা িচ পলাম। সটা হােত কের উপের উেঠ গলাম। ঘের ঢুেক র ম
িহটারটা চািলেয় িদলাম–ঘরটা শীতকােল ভীষণ ঠা া হেয় যায়। তারপর
বেস িচ টা খুললাম। একটা সামিয়কপে র তরফ থেক আসা আর
একটা িবল। কােনা এক দুবল মুহূেত কােনা এক হিরণী নয়েনর
ব ললনার কথায় ভু েল াহক হেয় িগেয়িছলাম, যিদও আজ অি একটা
সংখ াও ভােগ জােটিন। তেব সময়মত িবল েলা কই চেল আেস।
কি উটাের সু রভােব টাইপ করা িবেলর নীেচ লখা, “আপিন যিদ িবেলর
টাকা না দন তাহেল আমরা আইেনর রা া িনেত বাধ হব। যার ফেল
আপনার িডট র ং খারাপ হেয় যােব। তাই আজই িবেলর টাকা িম েয়
িদন!”
আিম িবল আর খাম দুেটাই দুমেড় মুচেড় ডা িবেন ফেল চঁিচেয়
উঠলাম, “শালা িকেসর িডট র ং?” একটা িসগােরট ধিরেয়
দওয়ােলর িদেক চেয় রইলাম আর িহটােরর পাখার শ এক মেন নেত
লাগলাম। ঘরটা আে আে গরম হি ল।
রিবন ড, মাথায় ঘুরিছল।
কােঠর ঁ েড়া।
খািনক বােদ উেঠ পড়লাম। ইেলক ক কটিলর ঢাকিন খুেল
দখলাম, সকােলর কিফর বশ খািনকটা পেড় আেছ। িক ওপের তেলর
একটা পাতলা সর জেমেছ। আবার নতু ন কের বানােত ইে করিছল না,
তাই সটাই আবার সুইচ েপ গরম করেত বিসেয় িদলাম। মাবাইেল
দখলাম কােনা িমসড কল বা নতু ন কােনা মেসজ আেছ নািক। িকছু
নই। আমার ডে র একটা য়াের সাধারণত িকছু পি কা রাখা থােক,
তারই একটা বর করলাম সময় কাটােনার জন । িক মন বসল না
দবারিত মুেখাপাধ ােয়র উপন ােস। পি কাটা সিরেয় রেখ আর একটা
িসগােরট ধরালাম।
কােঠর ঁ েড়া, মাথায় ঘুরিছল।
রিবন ড।
আর হাওড়া...
ধুর শালা! ভাবলাম, পুিলশ হয়েতা এই িতেনর মেধ কােনা যাগসূ
খুঁেজ বর করেত পারেব। ঘিড়েত তখন সওয়া পঁাচটা বােজ। আিম ক
করলাম, ছটার সময় অিফস থেক বেরােনার আেগ সুিজতেক ফান কের
বেল দব কী কী জানেত পেরিছ পনবুেড়ার কাছ থেক। তারপর–ইে
থাকুক আর না থাকুক, িবষয়টা থেক িনেজেক সিরেয় নব।
কটিল জানান িদেলা, কিফ গরম হেয় গেছ। কােপ খািনকটা ঢেল
িনেয় আিম ডে র পছেন জানলার কােছ এেস দঁাড়ালাম। সারািদন তমন
রাদ না ওঠায় শহরটা ধূসর আর ঠা া মেন হি ল। আিম া রােডর
িদেক তাকালাম, রাজকার মেতা অিফসেফরত সমেয়র ব তা র হেয়
িগেয়েছ। রা ায় একগাদা গািড় এখনই ািফক জ ােম দঁািড়েয় আেছ।
একটা িবশাল বড় াক যাওয়া-আসার দুেটা লনই আটেক ফেলেছ।
সটােক িপিছেয় এেন একটা গিলর মেধ ঢাকােনার চ া করা হে ।
াইউড িসটভ ত াকটা গিলর মুেখ ঢাকােত িহমিশম খাি ল াইভার।
আিম সিদেক খািনক ণ দখলাম। মাথায় তখেনা কােঠর ঁ েড়া,
রিবন ড আর হাওড়া ঘুরপাক খাি ল। আটেক যাওয়া গািড়েদর রাগত
হেনর শ নেত নেত হঠাৎ অবেচতেন থাকা একটা ৃিত মাথা চাড়া
িদেয় উঠল। হাওড়ার একটা জায়গা, যখােন একবার িবেয়বািড়েত িনম ণ
র া করেত িগেয়িছলাম। তাড়া েড়া কের কাপটা রাখেত িগেয় খািনকটা
কিফ চলেক পেড় আমার ড িভিজেয় িদল। ল াপটপটা চািলেয় গল
খুললাম। একটা িজিনস িলেখ সাচ করলাম। যটা খুঁজিছলাম সটা িমিনট
দেশক পর শষেমশ পলাম। আিম তখন ভাবিছলাম, পনবুেড়া কই
বেলিছল, ইংেরিজ সািহেত র া ন অধ াপক চসার সিত ই ভীষণ
মজাদার লাক িছল।
আিম মাবাইলটা তু েল সুিজেতর ন রটা ডায়াল করলাম। সুিজত
দুবার বাজার পর ফানটা তু লল।
“ ক চসারেক খুন কেরেছ সটা বাধহয় ধরেত পেরিছ,” আিম
বললাম, “আমার ধারণা স হাওড়ােত মি রতলায় একটা কােঠর দাকােন
কাজ কের।”
“ কান কােঠর দাকান?”
“ দাকােনর নাম শর উড ই া ।”
***
“ দাকান মািলেকর ছেলই খুনটা কেরেছ। নাম শমেশর আলী,”
সুিজত বলল, “গািড়টা একটা সবুজ অ া ােসডর, ২০১৫ সােলর মেডল,
দাকােনর কােছই একটা পা কং লেট দঁািড়েয়িছল যখন অতনু তামার
কথামেতা সখােন যায়। গািড়টা শমেশেরর নােমই রিজ াড। তাই তােকই
থেম িজ াসাবাদ করা হয়। ছেলটা নাভাস হেয় িগেয় ভু লভাল বকিছল।
ফেল অতনুর সে হ হওয়ােত তােক শেন তু েল আেন।”
আিম মাথা দুিলেয় িবয়াের চুমুক িদলাম। আমরা লালবাজােরর
কােছই ক ােফ মে কােলা বেল একটা র ু েরে বেস আিছ। সময় পরিদন
িবেকল পঁাচটা। সুিজত সেবমা অফ িডউ হেয়েছ। স আমায় চি শ
িমিনট আেগ ফান কের এখােন আসেত বেল। আর আিম তার জন
িমিনট পেনেরা মতন অেপ া করিছ। আিম বললাম, “ দাষ ীকার
কেরেছ?”
“তখনই কেরিন। ছেলর বাবা অনুেরাধ কেরিছল উিকেলর উপি িত
ছাড়া ছেল কথা বলেব না। তাই খািনকটা দির হেয় যায়। আর উিকলটাও
বুি মান িছল। স থেমই শমেশরেক বেলেছ সব সাজাসুিজ বলেত।
পুিলেশর সহেযািগতা করেল স দুেটাই অিন াকৃত খুন বেল কস সাজােব
তাহেল ছেলটার অেনক কম শাি হেব। বাধহয় স এটা বেল পারও পেয়
যােব।”
“শমেশর তাহেল সব সাজাসুিজ বলল?”
“তা বলল। য রােত স কমলা বুিড়েক গািড় চাপা দয়, স রােত নািক
স তার িমকার সে ফু ত করিছল। িমকােক স েলেক বািড় প ঁেছ
িদেয় স িফরিছল। আমােদর ধারণা স মদ বা গঁাজা বা দুেটারই নশা
কেরিছল, যিদও এটা স ীকার করেব না। যাই হাক, স কসম খেয়
বলেছ, রা ার মােড় িসগন াল সবুজ িছল। িক কাগজ কুেড়ািন সটা
খয়াল না কেরই রা া পার হি ল। ধা া লাগার আেগ অি ও নািক স
বুিড়েক দখেত পায়িন। তারপর স ভয় পেয় গািড় না থািমেয় পািলেয়
যায়।”
“কােঠর ঁ েড়া স বত ঝঁাকুিন খেয় তার গািড়র পছন থেক ঝের
পেড়িছল,” আিম বললাম, “যিদ খুব ভু ল িকছু না বিল তাহেল স ওই
গািড়টা কের দাকােনর ছাটখাট ডিলভাির িদেত যত।”
“ স আমােদর সরকমই জািনেয়েছ।”
“গািড়র টাল িসেধ করল কীভােব?”
“তার িকছু ব ু গ ােরেজ কাজ কের। তােদরই দুজন রােতর অ কাের
চুিপচুিপ কাজটা সাের। স জন ই ািফেকর লােকরা কােনা হিদস পায়িন।
গািড় নতু ন কের রং করার িতন স াহ পেরও িকছু না হওয়ায় স ধের নয়,
এ যা ায় বঁেচ গেছ।”
“আর তারপরই চসােরর আিবভাব হয়।”
“হঁ া। হতভাগাটা প াশ হাজার টাকা চেয়িছল মুখ ব রাখার জন ।
শমেশর তােক হাজার পঁােচক িদেয় তখনকার মেতা ভািগেয় দয়। বািকটার
জন পরিদন রােত শয়ালদায় আসেত বেল। সখােন চসারেক তু েল িনেয়
স ধমতলায় চেল আেস। শমেশর কসম খেয় বলেছ, তার খুন করার
কােনা অিভ ায় িছল না। স ধু চেয়িছল খািনকটা রগড়ািন িদেয় তােক
ভয় দখােত। িক স বড়সড় চহারার পুর ষ মানুষ তাই একটু হাতাহািত
হেতই তার মাথা গরম হেয় যায় আর খুব তাড়াতািড় ব াপারটা হােতর
বাইের চেল যায়। িকছু ণ বােদ স যখন দেখ চসারেক মের ফেলেছ
তখন স আেগর মেতাই ভয় পেয় সখান থেক পািলেয় যায়।”
“ স জন চসােরর লােশ পঁাচ হাজােরর বািক টাকাটা পাওয়া গিছল।”
“ ।” সুিজত আমার িবয়ার শষ করা দখল। “ শােনা,” স তারপর
বলল, “আিম সুমনােক ফান কের বেলিছ িডনােরর জন িচেকন িবিরয়ানী
বানােত। তু িম আসেব নািক?”
“ স অন িদন হেব না হয়,” আিম বললাম, “আজ আর একটা কাজ
রেয়েছ।”
“আবার কী?”
“দা েক খুঁেজ বর করব। আিম ওেক কথা িদেয়িছলাম যখনই িকছু
জানেত পারব ওেক সে সে জানাব। যখন ও শমেশেরর কথা নেব
হয়েতা তার মানুেষর ওপর হািরেয় যাওয়া িব াস িকছু টা হেলও িফের
আসেব, অ ত আইেনর র াকতােদর ওপর।”
“পেনেরা বছর সামবাজােরর ঝুপিড়েত থাকার পর? চাপ আেছ।”
“িকছু ই বলা যায় না হ।”
সুিজত তার াসটা তু েল একটা সলাম ঠাকার ভান কের বলল,
“িবদায় তেব, সমাজকমী।”
“িবদায় তেব, পুিলশ।”
আিম সঁ াতসঁ ােত ঠা া রােত বিরেয় পড়লাম।

You might also like