Professional Documents
Culture Documents
BGL Comp Study Report Bangla
BGL Comp Study Report Bangla
1
কৃতজ্ঞতাস্বীকার
ট্রান্সলেটর্স উইদাউট বর্ডার্স সেই সমস্ত সংস্থা এবং ব্যক্তিদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে যারা এই গবেষণায় সাহায্য ও
অংশগ্রহণ করেছে। আমরা বিশেষভাবে এই সংস্থাগুলির কাছে কৃতজ্ঞ: বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন
কার্যালয় (আর.আর.আর.সি), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আই.ও.এম), নিডস অ্যান্ড পপুলেশন মনিটরিং (এন.পি.এম) এবং
রিচ ইনিশিয়েটিভ।
এই গবেষণাটি কমন সার্ভিস ফর কমিউনিটি এনগেজমেন্টের অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত করা হয়েছে এবং এটির জন্য আন্তর্জাতিক
অভিবাসন সংস্থা (আই.ও.এম) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটেরিয়ান এইডের (ইকো) মাধ্যমে
যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্থ সংস্থান করেছে।
মাহরুখ মায়া হাসান এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন এবং প্রতিবেদনটি রচনা করেছেন। এরিক ডেলুকা, আইরিন স্কট এবং এ.কে.
রহিম এই গবেষণা পরিচালনা ও বিশ্লেষণে সহায়তা করেছেন।
ট্রান্সলেটর্স উইদাউট বর্ডার্স (TWB) এমন একটি ভাবী দুনিয়াতে বিশ্বাসী যেখানে ভাষা কখনোই জ্ঞানের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে
না। যুক্তরাষ্ট্রে স্থিত এই অলাভজনক সংস্থাটি অন্যান্য অলাভজনক সংস্থার সাথে ভাষাবিদ ও অনুবাদক-দোভাষীদের যোগাযোগ
করিয়ে, আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদের ক্ষমতা গড়ে তুলে এবং ভাষা সংক্রান্ত বাধাগুলির বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করে মানুষকে
তাদের নিজেদের ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে সাহায্য করে। শুরুতে ১৯৯৩ সালে ফ্রান্সে প্রতিষ্ঠিত ( ট্রেডাকটিয়ার্স স্যান্স
ফ্রন্টিইয়ের্স) এই সংস্থা, TWB বর্তমানে প্রতি বছর এমন লক্ষ লক্ষ শব্দ অনুবাদ করে যা মানুষের জীবন বাঁচাতে ও জীবনে
ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। ২০১৩ সালে TWB প্রথম সংকটকালীন ত্রাণ অনুবাদ সেবা - ওয়ার্ডস অফ রিলিফ -
প্রদান করা শুরু করে যা নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতি বছর সংকটের মোকাবেলায় কাজ করে চলেছে।
2
সূচীপত্র
1. রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এমন ভাষায় তথ্য প্রয়োজন, যা তারা বুঝতে পারবে....................... 4
2. পদ্ধতি........................................................................................................... 6
3. ব্যবহার ........................................................................................................ 6
4. সাক্ষাৎকারের স্থানের মানচিত্র ............................................................................ 7
5. গবেষণায় কারা অংশগ্রহণ করেছেন?........................................................................ 8
6. তথ্য পাওয়ার সুযোগ ....................................................................................... 9
7. মৌখিক যোগাযোগ ........................................................................................ 10
8. লিখিত যোগাযোগ .......................................................................................... 18
9. ভিসুয়াল বা চাক্ষুষ যোগাযোগ ........................................................................... 23
10. তথ্য জানানো ................................................................................................ 24
11. সুপারিশ ......................................................................................................... 29
12. পরিশিষ্ট ....................................................................................................... 32
3
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের
এমন ভাষায় তথ্য
প্রয়োজন, যা তারা
বুঝতে পারবেন।
শরণার্থীদের তথ্য পাওয়ার এবং মতামত আদান প্রদান করার
অধিকার আছে যা তাদের নিজের ভাষায় ও বোধগম্য হওয়া
প্রয়োজন এবং তা এমন সূত্র বা মাধ্যমের সাহায্যে দিতে
হবে যা তাদের পছন্দের ও বিশ্বস্ত হবে।
5
পদ্ধতি
এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল কুতুপালং-বালুখালী ক্যাম্পে (বা ২০১৮ সালের ৮ই থেকে ১২ই আগস্টের মধ্যে এই ডাটা সংগ্রহ
মেগাক্যাম্প) বসবাসকারী রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদেরকে বিভিন্ন করা হয়েছে। আমরা সংগৃহীত বেশিরভাগ ডাটা সংকলিত করেছি।
ভাষায় এবং ফরম্যাটে দেওয়া তথ্যের কার্যকারিতার মূল্যায়ন যেক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আমরা এই ডাটা লিঙ্গ, বয়স, বা
করা। ইউ.এন.এইচ.সি.আর.-এর মতে এই এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষাগত যোগ্যতার স্তর অনুসারে শ্রেণীবিভক্ত করেছি।
রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৭০০,০০০ এর বেশি। আশেপাশের
টেকনাফের ক্যাম্পগুলো বা প্রতিবেশী আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ে সমীক্ষাটি বাংলা লিপি ব্যবহার করে রোহিঙ্গা ভাষায় লেখা
বসবাসকারী শরণার্থীদের এই সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এইভাবে প্রতিটি প্রশ্ন প্রতিবার একইভাবে জিজ্ঞাসা
হয়নি। করা হয়েছে তা নিশ্চিত করা এবং সমীক্ষার প্রশ্ন ভুল
বোঝার সম্ভাবনা দূর করা সম্ভব হয়েছে। নির্ভুলভাবে ডাটা
আমরা ক্যাম্পে প্রাপ্তবয়স্ক ৪০৭ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। সংগ্রহের জন্য সমীক্ষাকারীদের বাংলা লিপিতে লেখা রোহিঙ্গা
এই নমুনাটিতে আস্থার মাত্রা (কনফিডেন্স লেভেল) ৯৫ ভাষায় প্রশ্ন ও উত্তর পড়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
শতাংশ, আর ত্রুটির সম্ভাবনা (মার্জিন অফ এরর) ৫
শতাংশ ছিল। এই গবেষণায় কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্প ছাড়া এই প্রতিবেদনের পরিশিষ্ট ১-এ সীমাবদ্ধতাসহ পদ্ধতিটির
(তথ্য সংগ্রহের সময় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে একটি বিস্তারিত বর্ণনা যোগ করা হয়েছে। প্রশ্নাবলী এবং
সেখানে যাওয়া সম্ভব হয় নি) কুতুপালং-বালুখালী ক্যাম্পে পরিমার্জিত ডাটাসেট পরিশিষ্ট ২-এ পাওয়া যাবে।
বসবাসকারী সমগ্র প্রাপ্তবয়স্ক শরণার্থী জনসংখ্যার বিষয়ে
তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
ব্যবহার
এই প্রতিবেদনটি জুড়ে "শরণার্থী" শব্দটি মেগাক্যাম্পে
বসবাসরত (পুরো বাংলাদেশে বর্তমানে উপস্থিত রোহিঙ্গা
সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০ শতাংশ) রোহিঙ্গা শরণার্থীদের
বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলা, বর্মি, ইংরেজি ও চট্টগ্রামের ভাষা তিনি কতটা বুঝতে পারছেন তা যাচাই করতে মহিলাদের একটি রেকর্ড করা বার্তা
শোনানো হয়। টি.ডাব্লিউ.বি.
6
সাক্ষাৎকারের স্থান:
কক্ স বাজার জেলা,
বাংলাদেশ
টেকনাফ রোড
বাংলাদেশ মায়ানমার
7
জরিপে কারা
অংশগ্রহণ করেছে?
কুতুপালং-
বালুখালি
এক্সটেনশন সাইট থেকে
৪০৭ এদের
জন উত্তরদাতা। মধ্যে৮২%
নবাগত শরণার্ থ ী। বেশিরভাগ মানুষই ২০১৭
সালের আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে ক্যাম্পে এসে
পৌঁছেছেন।
৪ জনের মধ্যে জন ৩
১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী।
৫৮% ৪২%
নারী পু র ু ষ
৩ জনের মধ্যে জন ২
কোনো প্রথাগত শিক্ষা ৬৬%
পাননি। জানিয়েছে যে, তারা লিখতে-পড়তে
জানে না।
8
তথ্য পাবার সুযোগ-সুবিধা
২৮%
শরণার্ থ ীর কাছে
সিদ্ ধ ান্ ত নেবার জন্ য
উপযু ক ্ ত পরিমাণ তথ্ য নেই।
9
মৌখিক
যোগাযোগ
শরণার্থীদের সবাই বলেছেন যে, তাঁরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য ও "ওয়াশ" সম্পর্কে নানা বিষয়
রোহিঙ্গা ভাষায় কথা বলেন, আর ৯৯ ব্যাখ্যা করার জন্য মানবকল্যাণমূলক বিভিন্ন সংস্থার
শতাংশই বলেছেন মায়ানমারে এটিই তাঁদের ব্যবহার করা প্রধান প্রধান বার্তাগুলোর উপর ভিত্তি করে
প্রধান ভাষা। কিছু বার্তা নির্বাচন করা হয়েছিল, বোঝার দক্ষতার এই
শুনে কে কতটা বুঝতে পারে তার (শ্রবণদক্ষতা) উপর পরীক্ষায় সেগুলোই ব্যবহার করা হয়েছে। যেসব ভাষা এখানে
করা পরীক্ষা থেকে পাওয়া ফলও এই কথাকেই সমর্থন করে বেশি ব্যবহৃত হয় (রোহিঙ্গা, বাংলা, বর্মি, চট্রগ্রামের
(চিত্র ১ দেখুন)। এই তথ্য খুব অবাক করার মত নয়, ভাষা, ও ইংরেজি) সেগুলোর প্রত্যেকটিতেই আমরা ৫ থেকে
বরং এটি ইতোমধ্যেই জানা একটি বিষয়কেই সমর্থন করে ১০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ৩টি করে বিবৃতি তৈরি করেছিলাম।
– শরণার্থীদের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে হলে বিবৃতি গুলোর কোনটিই জটিল ছিল না, ধারণাগত
এই কর্মকাণ্ডের সব কর্মচারীকে তাদের সাথে রোহিঙ্গা সমস্যা হয় নি, এবং সবাই সেগুলো একটানা বলে যেতে
ভাষাতেই কথাবার্তা বলতে হবে। অতএব, মাঠ পর্যায়ের কর্মী পেরেছে।
এবং দোভাষীদের জন্য রোহিঙ্গা ভাষায় প্রশিক্ষণ দেওয়াটা
অপরিহার্য।
99%
64%
39%
27%
15%
10
বাগদক্ষতার পরীক্ষায় ব্যবহৃত
বার্তার উদাহরণ
98%
52%
18%
9%
4%
2%
11
৩৬ শতাংশ শরণার্থীরই
চট্টগ্রামের কথ্য ভাষা
বুঝতে কষ্ট হচ্ছে।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, তাদের বেশিরভাগ চট্টগ্রামের
ভাষায় বলা সহজ কথা বুঝতে পারলেও শতকরা ৩৬ ভাগই তা
পারছে না (চিত্র ১ দেখুন)। অতএব, চট্টগ্রামের স্থানীয়
যেসব মানুষকে বিভিন্ন সংস্থা থেকে রোহিঙ্গাদের সহায়তার
কাজে দোভাষী হিসাবে নিয়োগ করা হয় তাদের রোহিঙ্গা
ভাষার দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া উচিত, এবং এই ভাষায়
যোগাযোগ করার বিষয়ে সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া
উচিত। মাঠ পর্যায়ের যেসব কর্মী চট্টগ্রামের ভাষায় কথা
বলেন তাঁদেরকে উপযুক্ত সহায়তা ও সরঞ্জাম দেওয়া উচিত
যেন তাঁরা বিভিন্ন রোহিঙ্গা শব্দ ব্যবহার করে রোহিঙ্গা
সম্প্রদায়ের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে পারেন।
12
তাহলে রোহিঙ্গা এবং চাঁটগাইয়া ভাষা - এ দু'টির মধ্যে আসলে পার্থক্য কী?
রোহিঙ্গা একটি কথ্য ভাষা যার কোনও মানসম্মত এবং সর্বজন স্বীকৃত লিখিত লিপি নেই। এটি সম্পর্কিত বাংলা
ভাষার চাঁটগাইয়া উপভাষার সাথে, যেটিও শুধুই একটি কথ্য ভাষা। কক্সবাজারের আশেপাশের অতিথিসেবক জনগোষ্ঠি যে
প্রাথমিক উপভাষায় কথা বলে তা হচ্ছে চাঁটগাইয়া।
ভাষার সীমারেখা সবসময় রাজনৈতিক সীমারেখা মেনে চলে না। রোহিঙ্গা, চাঁটগাইয়া এবং বাংলা ভাষা হল ইন্দো-আরিয়ান
ভাষা এবং এদের মধ্যে মিল রয়েছে। উদাহরনস্বরূপ, এই তিনটি ভাষারই ব্যাকরণগত লিঙ্গ বিভেদের অভাব রয়েছে এবং
সংস্কৃত ভাষা থেকে আসা একই রকমের মূল শব্দভান্ডার এবং শব্দবিন্যাস রয়েছে।
উপরন্তু, তিনটি ভাষাতেই প্রতিনিয়ত ধীরে ধীরে পরিবর্তন ঘটছে। এর অর্থ হচ্ছে কাছাকাছি এলাকার উপভাষাগুলোর
মধ্যে পার্থক্য এদের দুরুত্বের সাথে সাথে বৃদ্ধি হয়েছে। চট্টগ্রামের উত্তর দিকের জেলার চাঁটগাইয়া ভাষাভাষীরা রাখাইন
স্টেটের দক্ষিণাঞ্চলের রোহিঙ্গা ভাষাভাষীদের কথা ঠিকমত বুঝতে পারেন না। যাহোক, চাঁটগাইয়া ভাষা যা টেকনাফের
লোকজন বলে থাকেন তা নদীর (এবং সীমানার) ওপারের মংডুতে বলা রোহিঙ্গা ভাষার সাথে বেশ মিল রয়েছে।
যদিও তাদের মধ্যে সাদৃশ্য দৃশ্যমান, তারপরেও তাদের ভেতর পার্থক্য প্রবল। চাঁটগাইয়া এবং রোহিঙ্গা ভাষার মূল
পার্থক্য হচ্ছে এদের ঋণকৃত শব্দের উৎস, অথবা ভিনদেশি ভাষার শব্দ যেখান থেকে তারা কিছু শব্দ ধার করেছে। যেখানে
চাঁটগাইয়া ভাষা প্রমিত বাংলা ভাষা থেকে শব্দ ধার করেছে, রোহিঙ্গা ভাষা শব্দ ধার করেছে সাধারণত বার্মিজ, রাখাইন
এবং উর্দূ থেকে।
রোহিঙ্গা ভাষার মধ্যেও বিভিন্ন উপভাষা পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রতি আগমনকারীরা বার্মিজ এবং উর্দূ শব্দ বেশি
ব্যবহার করে থাকেন, কিন্তু রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু যারা গত ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছে তারা চাঁটগাইয়া এবং
বাংলা শব্দ বেশি গ্রহণ করেছে এবং চাঁটগাইয়া ভাষাভাষীদের কাছে এ উপভাষা বেশি বোধগম্য।
যেমন, সাইক্লোন শব্দটি রোহিঙ্গা এবং চাটগাইয়া ভাষাতে একই ভাবে উচ্চারণ করা হয় (তুয়ান এবং তু-য়েন),
বিপদ শব্দের জন্য ব্যহৃত হয় (মসিবত / বিফদ-আফদ), উদ্ধার (বেসন / উদ্দার) এবং নিরাপদ
(হেফাজত / নিরাফত) এই পার্থক্যগুলো দৃশ্যমান। চাঁটগাইয়া ভাষাতে জরুরী সতর্কীকরণ বার্তা প্রচার করলে
তার ভুল ব্যাখ্যা হতে পারে, যার ফল মারাত্বক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
13
কথ্য বার্মিজ
এবং ইংরেজীর চাইতে
কথ্য বাংলা বেশি
বোধগম্য।
রোহিঙ্গা এবং চাঁটগাইয়া ভাষার পরে, নারীরা পুরুষের চেয়েও কম
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সবচেয়ে বেশি কথ্য বাংলা এবং বার্মিজ ভাষা বুঝতে পারে।
বোঝেন বাংলা (৩৯ শতাংশ) বাক্য, তারপর বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে পার্থক্যগুলো বিশেষভাবে চিহ্নিত
বার্মিজ (২৭ শতাংশ) অথবা ইংরেজী (১৫ (ফিগার ৩ দেখুন)। এর বিভিন্ন কারণ হতে পারে। অনেক
শতাংশ)। এর কারণ হতে পারে যে বিগত এক বছরের রোহিঙ্গা নারীপর্দা করেন, যা নির্দিষ্ট কিছু দক্ষিণ এশীয়
বেশী ধরে এদের অনেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের মধ্যে লিঙ্গ পৃথকীকরণে সাধারণ বিষয়। যখন
প্রতিবেশীর কাছাকাছি বসবাস এবং ত্রাণকর্মীদের সাথে কোন নারী ক্যাম্পের ভিতরে পর্দা করেন, পরপুরুষের চোখ
ঘন ঘন যোগাযোগের কারণে তারা এই ভাষা থেকে হয়ত এড়াতে সাধারণত তিনি বাড়িতে অবস্থান করেন এবং পর্দার
কিছু শব্দ শিখে নিয়েছে। বিবেচনা করার আরেকটি কারণ হল আড়ালে থাকেন। এ কারণে রোহিঙ্গা নারীরা কথ্য বাংলা
তাদের পরীক্ষা করার জন্যে দেয়া কথ্য বর্মিজ বার্তায় ভাষার সাথে কম পরিচিত হন। ফলে, রোহিঙ্গা নারীদের সাথে
একটি আদর্শ অনুবাদ এবং বাচনভঙ্গি ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি যোগাযোগ করতে মানবিক সাহায্যকর্মীদের বাড়তি প্রচেষ্টা
হয়ত সেইসব রোহিঙ্গাদের কাছে বেশি পরিচিত নয় যারা প্রয়োজন।
রাখাইন উপভাষা এবং বাচনভঙ্গি বেশি ব্যবহার করে। রাখাইন
গোষ্ঠী, যারা আরাকানী নামেও পরিচিত, এদের শব্দভান্ডার
ও উচ্চারণে আদর্শ বার্মিজ ভাষা থেকে উল্লেখযোগ্য
পার্থক্য রয়েছে।
Men Women
46%
35%
32%
24%
16%
14%
14
শুনে বোঝার হার "কম বয়সীরা বাংলা বাংলা
বাংলা, বার্মিজ, কিছুটা বুঝতে পারে, কারণ
এবং ইংরেজীর ক্ষেত্রে তারা এক বছর ধরে এই
স্ব-মূল্যায়নের ফলাফলের দেশে রয়েছে আর এর মধ্যে
হারের চেয়ে অনেক বেশি। বাংলা শিখে নিয়েছে।"
পরিমাপকৃত বোঝার হার নির্দেশ করে কথ্য বাংলা, বার্মিজ – পুরুষ সমীক্ষাকারী
এবং ইংরেজী বোঝার ক্ষমতা তারা কম রিপোর্ট করেছে।
কথ্য বাংলা ভাষা বলতে এবং বুঝতে পারে বলে এমন মাত্র
৫ শতাংশ নিজেদের চিহ্নিত করেছে, অথচ এদের ৩৯ শতাংশ
সহজ বাংলা ভাষায় একটি কথ্য বার্তা বুঝতে সক্ষম হয়েছে।
স্ব-মূল্যায়নে বারো শতাংশ বলেছে যে তারা বার্মিজ ভাষা
বলতে এবং বুঝতে পারে, কিন্তু তাদের ২৭ শতাংশ একটি সহজ
বার্মিজ বার্তা বুঝতে পেরেছে। স্ব-মূল্যায়নে মাত্র দুই শতাংশ
বলেছে তারা ইংরেজী বুঝতে পারে, কিন্তু দেখা যায় ১৫ শতাংশ
একটি সহজ ইংরেজী কথ্য বার্তা বুঝতে সক্ষম।
73%
43%
18% 17%
8%
2% 2%
15
ছক্কা ফেলে এক মহিলা ঠিক করছেন তার পরিবারের কোন সদস্য সমীক্ষায় অংশ নেবেন। টি.ডাব্লিউ.বি.
শোনা কথা আর
মাধ্যম মুখে মুখে শোনা তথ্য, এর পর লাউডস্পিকার, তার
পরে ফোন কল (চিত্র ৪ দেখুন)।
লাউডস্পিকার।
16
শরণার্থীরা যে মৌখিকভাবে তথ্য পাওয়া বেশি পছন্দ করেন
তা এই বিষয়টির গুরুত্ব আবারো তুলে ধরে যে মাঠ পর্যায়ের
কর্মী ও দোভাষীদের রোহিঙ্গা ভাষায় যোগাযোগের
দক্ষতা থাকাটা খুবই জরুরি।
লাউডস্পিকারের বিবিধ ব্যবহার
মৌখিক যোগাযোগ শরণার্থীদের পছন্দের যোগাযোগের
যোগাযোগের ক্ষেত্রে পছন্দের মাধ্যমের
মাধ্যম হলেও অন্যান্য মাধ্যম বা সূত্রও কার্যকরী হতে
কথা জিজ্ঞাসা করে দেখা গেছে যে, রোহিঙ্গা
পারে।
ভাষায় 'লাউডস্পিকার'-কে মাইক (ইংরেজি
'মাইক্রোফোন' এর সংক্ষিপ্ত রূপ) বলা হয়।
যেমন, মানুষের কথাবার্তা থেকে জানা গেছে যে, ক্যাম্পের
এই শব্দটি মেগাফোন, স্পিকার, মাইক্রোফোন
প্রায় প্রত্যেক পরিবারেরই কোনও না কোনোভাবে
লাগানো অ্যামপ্লিফায়ার, কিংবা মসজিদে আজান বা
মোবাইল ফোনে যোগাযোগের সুযোগ আছে। ২০১৭
ঘোষনা করার জন্য ব্যবহৃত স্পিকার – এই সবগুলি
সালের নভেম্বর মাসে ইন্টারনিউজের একটি প্রতিবেদন থেকে
বোঝাতেই ব্যবহার করা হয়।
জানা যায় যে শরণার্থীদের ৬৪ শতাংশই বলেছিলেন যে তারা
মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। কিন্তু খুব সম্ভবত
উপরে মেগাফোন লাগানো টম টম বা অটোরিকশা
পুরুষদের তুলনায় পরিবারের মহিলাদের মোবাইল ফোন
কক্সবাজারে প্রচুর দেখতে পাওয়া যায়। ভিতরে বসে
ব্যবহারের সুযোগ অনেক কম।
থাকা যাত্রী সেটির মাধ্যমে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক
বার্তা প্রচার করেন, কিংবা গান বাজানো হয়।
“[শরণার্থীরা] ফোন কলকে বিশ্বাস করেন কারণ কেউ শুধু
মাঝে মাঝে টেলিকম কোম্পানির মত বেসরকারি
শুধু কোনও কারণ ছাড়া ফোন করবে না।”
ব্যবসার বিজ্ঞাপনও এরকম উজ্জ্বল, রঙিন
– পুরুষ সমীক্ষাকারী
পোস্টারে ঢাকা বড় বড় ট্রাকে স্পিকার বসিয়ে
এবং গান বাজিয়ে করা হয়। মানবিক সংস্থাগুলিও
যোগাযোগের মৌখিক মাধ্যমগুল
যোগাযোগের এই পদ্ধতি ব্যবহার করে, মেগাফোনে
োর মধ্যে রেডিও পছন্দের তালিকায়
জরুরি ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির বার্তা প্রচার করা হয়,
বেশ নীচে রয়েছে।
যেসব চায়ের দোকানে ভিড় হয় সেখানে স্পিকারে
উত্তরদাতাদের ১৮ শতাংশ রেডিওর মাধ্যমে মানবিক সহায়তা
রেকর্ড করা অনুষ্ঠান বাজানো হয়, আর স্পিকারে
সংক্রান্ত তথ্য পেতে চেয়েছেন। এই তথ্য বি.বি.সি. মিডিয়া
রেকর্ড করা অনুষ্ঠান বাজিয়ে শ্রোতা দলের মধ্যে
অ্যাকশন, ইন্টারনিউজ ও টি.ডব্লিউ.বি.-র সেই সাম্প্রতিক
আলোচনার আয়োজন করা হয়।
সমীক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যেটিতে জানা গেছে যে শরণার্থী
পরিবারগুলির মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশই নিয়মিত রেডিও
শোনেন। আগের একটি মূল্যায়নে রেডিওর শ্রোতা এত কম
হওয়ার কারণ হিসাবে রেডিও সেটের দুষ্প্রাপ্যতা ও বিদ্যুতের
অভাবের কথা বলা হয়েছিল।
17
লিখিত
যোগাযোগ
রোহিঙ্গা ভাষার
পরেই লিখিত যোগাযোগের
ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পছন্দের
ভাষা হল বর্মী।
যে সমস্ত শরণার্থীরা ইংরেজি বা বাংলায়
লিখিত তথ্য পাওয়া পছন্দ করেন তাদের
তুলনায় সেই সব শরণার্থীদের সংখ্যা
দ্বিগুণেরও বেশি যারা লিখিত বর্মী পছন্দ
করেন। যদিও পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে বর্মী, ইংরেজি ও
বাংলায় পড়ে বোঝার দক্ষতার হার প্রায় একই তবুও বাকি
দুটো ভাষার চেয়ে বর্মী ভাষায় লিখিত তথ্য পাওয়াই বেশি
পছন্দ করা হয় (চিত্র ৫ দেখুন)। এর মধ্যে মায়ানমারের
রাষ্টর্ ভাষা বর্মীর সাথে একটি সংযোগ অক্ষণু ণ্ রাখার ইচ্ছা কুতুপালং অস্থায়ী ক্যাম্প, কক্সবাজার, বাংলাদেশ। ছবি: এরিক
নিহিত থাকতে পারে যার হয়ত সেখানে ফিরে গিয়ে নাগরিকত্ব ডেলুকা, টি.ডব্লিউ.বি.
দাবী করার আশার সাথে যোগসূতর্ রয়েছে।
পানি নিরাপদ হবে যদি এটি আপনি আপনার এই বোঝার দক্ষতা পরিমাপের গবেষণায় নির্বাচিত লিখিত
বাসায় একুয়াট্যাব দিয়ে শুদ্ধ করেন বা বিবৃতিগুলি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য এবং ডব্লিউএএসএইচ
পানের পূর্বে যদি আপনি ফুটিয়ে নেন। (ওয়াশ) - সম্পর্কিত তথ্যসমূহ ব্যাখ্যা করতে মানবিক
সংস্থাগুলো দ্বারা ব্যবহৃত মূল বার্তার উপর ভিত্তি করে
সবাই তীব্র ডায়রিয়া/ কলেরা থেকে সেরে তৈরি ছিল। আমরা তিনটি সহজ এবং ধারণাগতভাবে পরিষ্কার
উঠতে পারে কিন্তু এই রোগ অনেক বাক্য রচনা করেছি প্রতিটি লিখিত ভাষায় (বাংলা, বার্মিজ,
সহজেই ছড়ায়। এবং ইংরেজিতে) ।
18
Figure 5. Information preference by written language
32%
14% 15%
11%
3%
যদিও বেশির ভাগ উত্তরদাতা আসলে বলছিল তারা মানবিক সাহায্য তথ্যের জন্য লিখিত রোহিঙ্গা এবং লিখিত চাঁটগাইয়া ভাষা
পচ্ছন্দ করেন, এসব ভাষা বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত ছিল না কারণ কোনটারই মানসম্মত স্ক্রিপ্ট/লিপি নাই।
বেশির ভাগ শরণার্থী লিখিত রোহিঙ্গায় তথ্য পেতে চান, কিন্তু এই ভাষার সর্বজনীন
স্বীকৃত কোন লিপি নাই
আটষট্টি শতাংশ শরণার্থী বলছে তারা লিখিত মানবিক সাহায্য তথ্য রোহিঙ্গা ভাষায় পেতে পছন্দ করে।
সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের কোনো সরকারী স্ক্রিপ্ট/ লিপি নেই। এতদসত্ত্বেও দুইটি সম্পূর্ণ ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত,
হানিফি এবং রোহিঙ্গালিশ নামে দুইটি লিখিত পদ্ধতি আছে, এবং অন্য বৈচিত্র্যগুলো শরণার্থীদের মাঝে ঘরোয়াভাবে
ব্যবহৃত হয়।
এটি একটি খোলামেলা প্রশ্ন ছিল, তাই উত্তরদাতারা অবাধে উত্তর দিতে সক্ষম হন। যাইহোক, জরিপটি বিশেষ করে
বিভিন্ন লিপি সম্পর্কে সচেতনতা বা পরিচিতির বর্তমান মাত্রা পরিমাপ করতে পরিকল্পিত হয় নি। কিভাবে তাদের এই
জোরালোভাবে বিবৃত পছন্দকে আমলে নিয়ে সাহায্য করা যেতে পারে এর জন্যে আরও তদন্তের দরকার রয়েছে ।
19
কমপক্ষে কিছুটা শিক্ষিতদের মধ্যে পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক তথ্য প্রচারণা পাওয়া শরণার্থীদের
সামগ্রিক পড়া বোঝার হার বেশি ছিল। জন্য এগুলো পূর্বপরিচিত থাকতে পারে। উপরন্তু, অধিকাংশ
সাধারণত, যদি কোন শরণার্থী কয়েক ক্লাস স্কুল সম্পন্ন শরণার্থীর মায়ানমার বা বাংলাদেশের অন্তত তিনটি ভাষার
করে থাকে তারা যারা একটুও স্কুলে যায়নি তাদের চেয়ে লিখিত সাথে কিছুটা জানাশোনা আছে।
বার্মিজ (৬৮ শতাংশ -২৭ শতাংশের তুলনায়), লিখিত বাংলা
(৫০ শতাংশ- ২৭ শতাংশের তুলনায় ), অথবা লিখিত ইংরেজি ২১ শতাংশ শরণার্থী যারা কিছু শিক্ষা
(৪৯ শতাংশ -২৪ শতাংশের তুলনায়) বেশি ভাল করে সম্পন্ন করেছেন, তাদের মধ্যে বার্মিজ
বুঝতে পারে। ভাষা নির্দেশনার সর্বাধিক সর্বজনীন
ভাষা ছিল (চুরাশি শতাংশ)।
পড়া বোঝার জন্য যখন পরীক্ষা করা হয়, বোঝার স্তর জানার জন্য প্রতিনিধিত্বমূলক সূচক হিসাবে,
বার্মিজ ভাষা তারা বাংলা ও ইংরেজির মত এটি এও ব্যাখ্যা করতে পারে কেন বার্মিজ সবচেয়ে পছন্দসই
একই হারে বুঝতে পেরেছে। মজার ব্যাপার হল, লিখিত ভাষা। শুধু কয়েকজন উত্তরদাতা আরবী (সাত
এই ফলাফল পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়ের শতাংশ), বাংলা (চার শতাংশ), এবং ইংরেজি (তিন শতাংশ)
জন্য একই ছিল। সহ অন্যান্য ভাষায় নির্দেশনা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
যখন পড়া বোঝার জন্য পরীক্ষা করা হয় দেখা যায় প্রায়
৩২ শতাংশ শরণার্থী সহজ লিখিত বার্তা বার্মিজ (৩৬
শতাংশ), বাংলা (৩২ শতাংশ), এবং ইংরেজি (২৯ শতাংশ)
ভাষায় বোঝেন। এটা হতে পারে যে কারণে যে আমরা
ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাস্থ্য এবং ডব্লিউএএসএইচ (ওয়াশ)-
সংক্রান্ত বিষয়ে সহজ বিবৃতি বাছাই করেছিলাম। ক্যাম্পের
Men Women
39%
26%
20
২৫- থেকে ৪৪-বছরের এই পরীক্ষায় দেখা গেছে বিভিন্ন বয়স গ্রুপের মধ্যে শ্রবণ
এবং পড়া বোঝার হার উভয়ের মধ্যে বেশ পার্থক্য আছে
শরণার্থীদের বোঝার (চিত্র দেখুন ৭)। মাঝামাঝি বয়সের দল দুটি (২৫-৩৪ এবং
৩৫-৪৪ বছর) ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য তিনটি গোষ্ঠী
ক্ষমতা তরুণ বা বয়স্ক (১৮-২৪ বছর এবং ৪৫-৬০ এবং ৬০ বছরের বেশি) তুলনায়
কম বোঝার হার দেখিয়েছে।
52%
48%
43% 43% 43%
40%
37%
34%
32%
30% 29% 30%
26%
23% 22%
পড়ে বুঝার ক্ষমতা চৌদ্দ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছে তারা বার্মিজ পড়তে বা
লিখতে পারে, কিন্তু ৩৬ শতাংশ সহজভাবে বার্মিজে লিখিত
এবং ইংরেজিতে লেখা বিবৃতি বুঝতে পেরেছে। দুই শতাংশ বলেছে তারা বাংলা
পড়তে পারত, কিন্তু ৩২ শতাংশ সহজ বাংলায় লিখিত বিবৃতি
বুঝতে পারত। পুরুষের তুলনায় নারীরা তিনটি ভাষায় নিজেদের
স্ব-মুল্যায়নের স্বাক্ষরতাকে অবমুল্যায়ন করেছে।
চেয়ে বেশি। শরণার্থীদের ছেষট্টি শতাংশ বলেছে যে, তারা কোন ভাষাতেই
লিখতে-পড়তে জানেন না।
21
লিখিত সব ধরনের বিশ্বস্ত মানুষকে দিয়ে পড়িয়ে নিতে পারেন। গবেষণায় যে
জানা গেছে যে শরণার্থীদের মধ্যে প্রতি তিন জনের মধ্যে
একজন বাংলা, ইংরেজি বা বর্মী ভাষা পড়তে জানেন তা এই
উপকরণের মধ্যে মানুষ এই যুক্তিকেই সমর্থন করে।
22
যোগাযোগের
ভিসুয়াল পদ্ধতি
মানবকল্যাণমূলক কাজের ক্ষেত্রে – বিশেষ করে যেসব
এলাকায় শিক্ষার হার কম সেখানে – লিখিত বা মৌখিক
যোগাযোগের একটি অন্যতম বিকল্প হচ্ছে যোগাযোগের
ভিসুয়াল পদ্ধতি। ছবি, ফটোগ্রাফ, অলংকরণ, মানচিত্র
ইত্যাদি সবকিছুই এই মাধ্যমের অন্তর্গত। আর চলমান
ফরম্যাটের মধ্যে রয়েছে অ্যানিমেশন, ফিল্ম, ও গণ নাটিকা।
দেওয়া বার্তা।
লিঙ্গ, বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে শরণার্থীদের
সকলেই সমানভাবে ছবি দেখে তার অর্থ বুঝতে পেরেছে।
23
তথ্য
জানানো
শরণার্থীদের মাঝে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিভিন্ন সূত্রের
মাধ্যমে মানবকল্যাণ সংস্থা তথ্য বিতরণ করে থাকে।
শরণার্থীদেরকে বিশ্বস্ততার নিরিখে (অনেক, একটু, মোটেই
না) তথ্যের বিভিন্ন সূত্রের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছিল।
উত্তরদাতারা যখন "এই সূত্রকে অনেক বেশি বিশ্বাস করি"
বা "এই সূত্রকে একটু বিশ্বাস করি" বলে উত্তর দিয়েছেন
তখন উত্তরগুলি একত্রিত করে সূত্রের উপর সামগ্রিক
বিশ্বাসের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইমামসবচেয়ে বিশ্বস্ত
তথ্যের সূত্র।
রোহিঙ্গাদের প্রায় সকলেই
ইমামদের বিশ্বাস করেন।
মানুষের কথাবার্তা থেকে জানা যায় যে, নামাজ পরিচালনার
স্বাভাবিক দায়িত্ব ছাড়াও সম্প্রদায়ে তাঁদের যথেষ্ট প্রভাব
রয়েছে। সামাজিক প্রায় সমস্ত ব্যাপারে মানুষ তাদের কাছে
পরামর্শ চেয়ে থাকেন। অতএব এটা একেবারেই আশ্চর্যজনক
নয় যে উত্তরদাতাদের ১০০ শতাংশই ইমামের কাছ থেকে
পাওয়া তথ্যকে বিশ্বাস করেন বলে জানিয়েছেন। ৯৭ শতাংশ
বলেছে যে, তারা ইমামকে খুব বেশি বিশ্বাস করেন।
79%
67%
61%
57%
25
ক্যাম্পের জীবনে মসজিদ এক কেন্দর
্ ীয় ভূমিকা পালন করলেও নারীদের কিন্তু
এতে সামিল করা হয় না।
রোহিঙ্গারা অত্যন্ত ধার্মিক এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে মুসলমান ধর্মের রীতিনীতি ও বিশ্বাস এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে। পুরুষরা প্রতি শুক্রবার মসজিদে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে জামাতে নামাজ পড়েন এবং নামাজের পর মসজিদের
বাইরে সমবেত হন। বহু পুরুষ দিনে বা সপ্তাহে বেশ কয়েকবার মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়েন। শুক্রবার ইমামরা
মসজিদে খুতবা (ধর্মীয় উপদেশ) পড়েন।
পুরুষদের মধ্যে সম্প্রদায়ের নেতা হিসাবে বিবেচিত প্রবীণরা ইমামদের সাথে নিয়মিত দেখাসাক্ষাতও করেন। একজন পুরুষ
সমীক্ষাকারী জানিয়েছেন, "ইমামরা [বয়স্ক মানুষদের] যা বলেন সেটাই তারপরে সম্প্রদায়কে জানানো হয়"।
মসজিদের লাউডস্পিকারগুলিও গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার জন্য ব্যবহার করা হয়। আরেকজন সমীক্ষকারী বলেছেন, "যদি
কোনও শিশু হারিয়ে যায় বা খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে [শরণার্থীরা] মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ওই শিশু সম্পর্কে
ঘোষণা করেন।"
যদিও মসজিদ প্রধানত পুরুষরাই ব্যবহার করেন, মহিলারাও মসজিদ এবং ইমামকে সমানভাবে সম্মান করেন। আমাদের
গবেষণায় দেখা গেছে ইমামের দেওয়া তথ্যের ওপর পুরুষ ও মহিলারা সমানভাবে বিশ্বাস করেন। সাংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞার
কারণে, ইমামদের সাথে মহিলাদের সরাসরি যোগাযোগের উপায় নেই। পুরুষ আত্মীয়রা ইমামের দেওয়া তথ্য পরিবারের
মহিলা সদস্যদের জানান, পুরুষরাই এক্ষেত্রে কোন তথ্য জানানো হবে বা জানানো হবে না সেই সিদ্ধান্ত নেন।
"মসজিদে ইমাম যা বলেন স্বামীরা তা তাদের স্ত্রীদের জানান। স্ত্রীরা ইমামকে বিশ্বাস করেন।"
- পুরুষ সমীক্ষাকারী
এই পরিস্থিতির ফলে মহিলারা তথ্য পাওয়া এবং সরাসরি তাদের চাহিদা ও মতামতের কথা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত
হতে পারেন, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অজানা রয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মানবিক কর্মীদের উচিত যোগাযোগের
এমন কৌশল পরিকল্পনা করা যাতে বিশেষভাবে নারীবান্ধব স্থান এবং মহিলা নেত্রীদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
26
পরিবার, ত্রাণ তথ্যের অন্যান্য সকল সূত্রের তুলনায়
গোষ্ঠী হিসেবে সনাতন চিকিৎসকদের কথায়
97%
91%
74%
65% 65%
37%
33%
28%
24%
21%
15%
1.
মাঝিরা হচ্ছেন ইউ.এন.এইচ.সি.আর. এবং বাংলাদেশ সরকার দ্বারা নির্বাচিত রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্প্রদায়ের সদস্য যারা একেকটি ভৌগোলিক এলাকার শরণার্থীদের প্রতিনিধিত্ব
করেন। মাঝিরা সরকারী কর্মকর্তা, মানবিক সংস্থা ও কর্মী এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করেন। বেশ কিছু ক্যাম্পে বর্তমানে মাঝির পরিবর্তে কমিটি
এবং সম্প্রদায়ের নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
27
তথ্যের সূত্র হিসেবে শরণার্থীরা রেডিও,
নতুন এবং টিভি, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে
বিশ্বাস করেন ঠিকই, কিন্তু এগুলোর স্থান
গতানুগতিক প্রচার অন্যান্য সব সূত্রের নিচে, কেবল সনাতন
চিকিৎসকের উপরে।
মাধ্যমের ফরম্যাটগুলিকে চিত্র ৮ এবং ৯-এ যেমনটা দেখানো হয়েছে, শরণার্থীরা
তুলনামূলকভাবে রেডিও, টিভি, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল
সাধারণত বিশ্বাস করা হয়, মিডিয়ায় (ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো) কম
মাত্রার বিশ্বাস করেন। শুধুমাত্র ২১ শতাংশ শরণার্থী
কিন্তু মহিলারা সেগুলির সাথে ইন্টারনেটকে খুব বেশি বিশ্বাস করেন।
২০১২ সালের আগে মায়ানমারে সামরিক শাসনের এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য যে পূর্বের একটি ইন্টারনিউজ
সময় সিম কার্ডের নিষেধাজ্ঞামূলক চড়া দামের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য -ইন্টারনেটের ব্যবহার অত্যন্ত
কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার আগে রোহিঙ্গাদের কম (১৯ শতাংশ) যার মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ মহিলা
ইন্টারনেটের সাথে পরিচয় খুবই সীমিত ছিল। এমনও জানিয়েছিলেন যে তারা সেটা ব্যবহার করেন - এই গবেষণায়
সময় ছিল যখন একটা সিম কার্ডের দাম ছিল প্রাপ্ত তথ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। একই গবেষণা অনুযায়ী ৮৬
৩০০০ ডলার। তাছাড়া, আগে মায়ানমারে মোবাইল শতাংশ বলেছে তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট
ফোনের ব্যবহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল। ব্যবহার করেন।
এছাড়াও রোহিঙ্গারা এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস
করতেন যেখানে সিগন্যাল পাওয়া কষ্টকর ছিল এবং
সেটাও ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করার ক্ষেত্রে একটি
অন্যতম সমস্যা ছিল।
বাংলাদেশে এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সিম কার্ড বাংলাদেশের কক্সবাজারের কাছে কুতুপালং অস্থায়ী ক্যাম্প।
বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কিন্তু লোকজনের ছবি: এরিক ডেলুকা, টি.ডব্লিউ.বি.
সাথে কথা বলে জানা যায় যে অনেক পরিবারের কাছেই
এখনো মোবাইল ফোন রয়েছে। মোবাইল ফোন
সাধারণত পুরষু দের কাছেই থাকে। এমনকি যাদের কাছে
ফোন ও সিম কার্ড আছে, তাদের কাছে খরচ করার
মতো টাকা না থাকার কারণে ডাটা প্যাকেজ কেনা
কঠিন। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের হার কম থাকাটা
অপ্রত্যাশিত নয়।
28
সুপারিশ
1. শরণার্থীদের সাথে মৌখিক
যোগাযোগের জন্য রোহিঙ্গা ভাষা
ব্যবহার করুন।
রোহিঙ্গা ভাষাই কেবল এমন একমাত্র কথ্য ভাষা যা
শরণার্থীরা সবাই বোঝেন, সেজন্য মানবিক সংস্থাগুলির
এই ভাষায় যোগাযোগের উপর প্রাধান্য দেওয়া
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখোমুখি কথোপকথনে সহায়তার
জন্য সংস্থাগুলিকে অবশ্যই রোহিঙ্গা ভাষাভাষীদের
নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের ভাষাগত দক্ষতা
নিশ্চিত করতে হবে। সম্প্রদায়ের সাথে শেয়ার করার
আগে সমস্ত যোগাযোগের বিষয়বস্তু সঠিক কিনা তা
পরীক্ষা করা উচিত। যেহেতু রোহিঙ্গা নারীদের বহু
সাংস্কৃতিক/প্রথাগত প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় তাই
তাদের সাথে কথোপকথনের জন্য সংস্থাগুলিকে এমন
মহিলা কর্মচারী নিয়োগ করতে হবে যাদের এই ভাষায়
যথাযথ দক্ষতা রয়েছে।
29
হবে এবং এমন মাধ্যমের সাহায্যে তা পাবেন যা তারা • সঠিক বার্তাটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য
বিশ্বাস করেন। যে তথ্য জানানো হবে তার জন্য অন্যদের এই কাজে সামিল করুন ।
উপযুক্ত একটি মিশ্র পদ্ধতি বিবেচনা করুন: মাইক এবং যেখানে সম্ভব গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রচারের
মাঝী জীবনদায়ী সেবা পাওয়া সংক্রান্ত তথ্য জানানোর জন্য ইমাম বা মহিলা নেত্রীদের মতো স্থানীয়
জন্য অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। প্রত্যাবাসনের প্রভাবশালী মানুষদের সাথে সহযোগিতা গড়ে
মতো আরো জটিল সমস্যাগুলি মুখোমুখি আলোচনা, তুলুন। বার্তার বিষয়বস্তু সাধারণ মানুষের জন্য
সম্প্রদায়ের মধ্যে মিটিং, বা দীর্ঘ-মেয়াদী রেডিও সহজবোধ্য, উপযুক্ত এবং সম্প্রদায়ের মূল আশংকা
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানানোই শ্রেয়। ফরম্যাট এবং নিরসন করে কিনা তা মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা করতে
মাধ্যমের ক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য বিষয়গুলি হল: কমিউনিকেটিং উইথ কমিউনিটিস (সি.ডব্লিউ.সি)
কর্মগোষ্ঠীর সাহায্য ও সংস্থান ব্যবহার করুন।
• অডিও ফরম্যাটকে যোগাযোগের
কৌশলের কেন্দ্রে রাখতে হবে।
সংস্থাগুলির উচিৎ মুখোমুখি আলোচনার পাশাপাশি 4. শরণার্থীদের লিখিত তথ্য দেওয়ার
মৌখিক বার্তাগুলি মাইক এবং রেডিওর মাধ্যমে সময় বর্মীভাষার লিপি ব্যবহার করুন।
প্রচার করা। তথ্য যাতে সবচেয়ে অসহায় এবং কম যদিও এই গবেষণাতেও পূর্বে প্রমাণিত এই তথ্য আবারো
শিক্ষিত জনসাধারণের কাছে পৌঁছয় তা নিশ্চিত নিশ্চিত হয়েছে যে শরণার্থীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার
করার চাবিকাঠি হল সবচেয়ে বোধগম্য ফরম্যাট কম, তবুও শরণার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে তারা
এবং সহজলভ্য মাধ্যম ব্যবহার করা। ইংরেজি বা বাংলার পরিবর্তে বর্মী ভাষাতেই লিখিত তথ্য
পেতে বেশি পছন্দ করেন। তাদের এই পছন্দকে সম্মান
• বার্তা যাতে আরও সহজে বোঝা করতে হবে এবং সাক্ষরতার হারে উন্নতি না হওয়া
যায় সেজন্য ভিসুয়াল ফরম্যাট পর্যন্ত তাদের পছন্দের ভাষাতেই লিখিত তথ্য দেওয়া
ব্যবহার করুন। উচিৎ। যাতে যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক স্বাক্ষর মানুষের
ভিসুয়াল বার্তাগুলি সহজ, সাংস্কৃতিকভাবে প্রাসঙ্গিক কাছে তথ্য পৌঁছনো যায় সেজন্য শরণার্থীদের উদ্দেশ্যে
হওয়া দরকার এবং যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে তা লিখিত সমস্ত তথ্য বর্মী, ইংরেজি এবং বাংলা- এই তিনটি
সহজবোধ্য কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য আগে ভাষাতেই দিতে হবে। যদি শুধুমাত্র একটি ভাষাতে লিখিত
থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সেগুলি দেখিয়ে পরীক্ষা তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয় তাহলে সেটি বর্মী ভাষায়
করে নেওয়া প্রয়োজন। অ্যানিমেশন, ফিল্ম, এবং দেওয়া উচিত।
কমিউনিটি থিয়েটারের মতো গতিশীল ভিসুয়াল
ফরম্যাট ব্যবহার করার ব্যাপারেও বিবেচনা করা 5. যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলি
যেতে পারে। নেপথ্য ভাষ্য বা সাবটাইটেল বুঝতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেতিবাচকভাবে
আরও বেশি সাহায্য করতে পারে। প্রভাবিত করছে সেগুলি আরও
ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন।
• বার্তার আরও দীর্ঘস্থায়ী
যোগাযোগ, সম্প্রদায়ের যোগদান এবং ত্রাণ
ফরম্যাট হিসেবে সচিত্র পুস্তিকা
প্রচেষ্টায় দায়বদ্ধতার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হল ভাষা
বা লিফলেট তৈরি করুন।
ও সংস্কৃতি। এই গবেষণায় এমন একাধিক বিষয় নিয়ে
শরণার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে পোস্টার বা
আলোচনা করা হয়েছে যেখানে ভাষা ও সংস্কৃতির
ব্যানারের মতো অন্যান্য লিখিত ফরম্যাটের তুলনায়
সূক্ষ্ম বিষয়গুলি বোঝা কার্যকর যোগাযোগে অবদান
তারা লিফলেট বেশি পছন্দ করেন। লিফলেট সহজে
রাখতে পারে এবং যার মাধ্যমে সহায়তার কাজকে
বহনযোগ্য যা তারা বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন এবং
ক্রমপরিবর্তনশীল স্থানীয় পরিস্থিতির উপযোগী করে
কম লেখাপড়া জানা শরণার্থীরা তাদের বন্ধুবান্ধব
তোলা যায়। এগুলির মধ্যে রয়েছে:
বা আত্মীয়দের সেগুলিতে কি লেখা আছে তা পড়ে
বুঝিয়ে বলার জন্য অনুরোধ করতে পারেন। তথ্য
• মহিলাদের সাথে যোগাযোগ গড়ে
পাওয়ার সুযোগ কম থাকা এবং গোপনীয়তার
তোলা। সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতাগুলি বিবেচনা
বিষয়টি বিবেচনা করলে বিশেষত মহিলারা এই পদ্ধতির
করলে, রোহিঙ্গা শরণার্থী সম্প্রদায়ের মধ্যে
মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন, এবং এটি পোস্টারের
মহিলারা বিশেষভাবে অসহায় এবং তাদের কাছে
মতো অন্যান্য গণ যোগাযোগ পদ্ধতির পাশাপাশি
পৌঁছনো বা যোগাযোগ গড়ে তোলা সহজ
ব্যবহার করা যেতে পারে।
নয়। গবেষণা ইংগিত দেয় যে তাদের বিভিন্ন
প্রচার মাধ্যমের ফরম্যাটগুলি বুঝতে পারা, সেগুলি
পাওয়ার সুযোগ এবং সেগুলির সাথে পরিচয়
থাকার হার অপেক্ষাকৃতভাবে সামান্য কম। পৃথক
30
গুণগত গবেষণায় মহিলা এবং পুরুষদের ব্যবহৃত • রোহিঙ্গা লিপি
শব্দভাণ্ডারের পার্থক্য সম্পর্কেও জানা যায়। সচেতনতা এবং ব্যবহার।
মহিলাদের ভাষার পার্থক্য এবং যোগাযোগের শরণার্থীরা লিখিত রোহিঙ্গা ভাষায় মানবিক
মাধ্যমগুলি পাওয়ার সুযোগ কম থাকার কারণে সহায়তা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার বিষয়ে যে প্রবল
এই বিষয়টির প্রতি আরও বেশি মনোযোগ আগ্রহ প্রকাশ করেছে তার থেকে বোঝা যায়
দেয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে মহিলাদের সমবেত হওয়ার যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান রোহিঙ্গা
স্থানগুলি (যেমন মহিলা বান্ধব জায়গা) ও লিপির ব্যাপক ব্যবহার, সচেতনতা বা তা শেখা ও
সম্প্রদায়ের মহিলা নেত্রীদের (মুরুব্বি বা ব্যবহারের প্রচুর আগ্রহ রয়েছে। গবেষণায় জানা
গ্রামের বয়স্ক মানুষজন এবং মাঝী) কার্যকর এই নতুন তথ্যটি সম্প্রদায়ের আরও বেশি যোগদান
যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা যায় কিনা তা এবং শরণার্থী ও মানবিক সহায়তা প্রদানকারী
ভাবা যেতে পারে। গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বিমুখী যোগাযোগের একটি পথ
উন্মুক্ত করে। অন্যদিকে শরণার্থীদের বিভিন্ন
• শিশুদের স্বাক্ষরতা
রোহিঙ্গা লিপি সম্পর্কে সচেতনতা, আগ্রহ বা
এবং বোঝার ক্ষমতা।
তা ব্যবহারের অভাব ইংগিত দেয় যে মানবিক
এই গবেষণায় ৫-১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে
সহায়তাকারীদের তাদের ভাষা সংক্রান্ত প্রচেষ্টার
স্বাক্ষরতা এবং বোঝার দক্ষতার মূল্যায়ন করা
অভিমুখ পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
হয়নি। মানুষের কথাবার্তা থেকে ইংগিত পাওয়া
যায় যে কম বয়সী শিশুরা বাংলা ভাষা বেশি • যোগাযোগের ভিসুয়াল পদ্ধতি।
বোঝে এবং সেই সাথে হিন্দি, উর্দু বা উভয় শরণার্থীরা সাধারণত মৌখিক যোগাযোগের
ভাষাই বুঝতে পারে। এটি সম্ভবত বাংলাদেশে আরও মাধ্যম বেশি পছন্দ করলেও তারা ভিসুয়াল বা
বেশি মাত্রায় উভয় ভাষার সংস্পর্শে আশার চাক্ষুষ যোগাযোগ আরও বেশি হারে বুঝতে
কারণে এবং প্রথাগত (যেমন বলিউড) এবং পারেন। তাই ভিডিও, চিত্রগত এবং কমিউনিটি
নতুন মিডিয়া ফর্ম্যাট (যেমন হোয়াটসঅ্যাপ / থিয়েটার যোগাযোগের কার্যকর মিডিয়া হয়ে
ইমো / ফেসবুক) এর ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের উঠতে পারে। কিন্তু ছবি এবং প্রতীকের অর্থ
কারণে ঘটেছে। এই দলটি যা রোহিঙ্গা শরণার্থী সার্বজনীন নয়। চিত্রগত যোগাযোগের
জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ, তাদের যোগাযোগ উপকরণগুলি সম্প্রদায়কে সামিল করে একসাথে তৈরি
সংক্রান্ত পছন্দ ও অভ্যাসগুলি আরও ভালভাবে করতে হবে এবং তাদের দিয়ে সেগুলির কার্যকরতা
বোঝার জন্য আরও গবেষণা করা দরকার। পরীক্ষা করাতে হবে। যোগাযোগের উপকরণ
ও চিত্রায়ন রোহিঙ্গা ভাষায় করতে হবে এবং
সেগুলির সাংস্কৃতিক উপযুক্ততা পরীক্ষা করে নিতে
হবে। লিখিত বর্ণনাসহ বা ছাড়া বিভিন্ন ধরণের
ভিসুয়াল যোগাযোগগুলির কার্যকরতা সম্প্রদায়ের
বিভিন্ন উপগোষ্ঠীর সাথে পরীক্ষা করা উচিত।
31
পরিশিষ্ট
https://tinyurl.com/y7p4czdc
https://tinyurl.com/ybfeqzkj
32
এই গবেষণার বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য বা কিভাবে ট্রান্সলেটর্স উইদাউট বর্ডার্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় অংশ নিচ্ছে
তা জানতে আমাদের ওয়েবসাইট দেখুন বা এখানে যোগাযোগ করুন:
bangladesh@translatorswithoutborders.org
এই গবেষণাটি কমন সার্ভিস ফর কমিউনিটি এনগেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটির একটি অংশ। এই কাজটি আই.ও.এম এবং
জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় সম্পন্ন করা হয়েছে, এবং এটির জন্য অর্থ সরবরাহ করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন
হিউম্যানেটোরিয়ান এইড এবং ইউকে ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। এই রিপোর্টে বলা বক্তব্যগুলো কোন
ভাবেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর অনুমোদিত বক্তব্য হিসাবে ধরা যাবে না, বা এগুলোতে যুক্তরাজ্য সরকারের সরকারি নীতির
প্রতিফলন হয়েছে এমনটি ভাবা যাবে না। এই রিপোর্টের কোনো তথ্যের কোনো প্রকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য
সরকার বা ইউরোপিয়ান কমিশন কোনোভাবেই তার দায়ভার নিতে বাধ্য থাকবে না।