Professional Documents
Culture Documents
Digital Marketing
Digital Marketing
গতানুগতিক সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে বিজ্ঞাপন দেয়ার চেয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করা অনেক বেশি
সাশ্রয়ী এবং কার্যকর। বর্তমানে বড় ও মাঝারি কোম্পানি গুলো তাদের মোট মার্কেটিং বাজেটের
৬০-৭০% ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য ব্যবহার করছে। ডিজিটাল মার্কেটিং মানে কোম্পানির পণ্য
ও সেবার তথ্য গুলো ডিজিটাল মিডিয়া - গুগল, ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইমেইল ও sms এর মাধ্যমে
ছড়িয়ে দেয়া।
২. ডিজিটাল মার্কেটিং এর খরচ গতানুগতিক সংবাদপত্র এবং টিভি মার্কেটিং এর অর্ধেকেও কম।
৩. ডিজিটাল মার্কেটিং, বিশেষ করে ফেসবুকে যেকোনো সময় ফলোয়ারদের কাছে তথ্য পৌঁছে
দেয়া যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিনা মূল্যই। এছাড়া ফেসবুক ব্যবহারকারীরা শেয়ার করেও এই
প্রচারে ভূমিকা রাখে। ইমেইল মার্কেটিংও ফ্রি একটা মার্কেটিং মাধ্যম।
৬. ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বয়স, পেশা বা লিঙ্গ অনুযায়ী কাস্টোমাদের টার্গেট করা যায়। কেও যদি
চায় একটা ফেইসবুক অ্যাড (বিজ্ঞাপন) শুধু ছাত্ররা দেখবে, বা কোনো নির্দিষ্ট পেশার লোকজন
দেখবে ... সেটা সেটিং করে দেয়া যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার আগে কিছু পূর্ব শর্ত পূরণ করা আবশ্যক।
১. লোগো ও নাম (ব্র্যান্ডিং)
২. ওয়েবসাইট থাকা
৩. ফেইসবুক পেজ থাকা
৪. কোম্পানি প্রোফাইল (এ মেইলে কোম্পানির তথ্য পাঠানোর জন্য )
৫. ফেইসবুক ও অনন্যা মিডিয়াতে শেয়ারের জন্য কনটেন্ট (ব্যানার, পণ্য বা সেবার বিস্তারিত তথ্য,
ছবি, ভিডিও )
এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং এর কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গ ভাবে পরিচালনা করার এবং ফায়দা নেয়ার জন্য
সফটওয়্যার ও মোবাইল এপ থাকার সুবিধা অনেক। তবে আবশ্যক নয়।
ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে তথ্য, ছবি ও ভিডিও (সবগুলোকে একসাথে কনটেন্ট
বলা হয়) অনলাইনে দেখা যায়। আমাদের মূল টার্গেট কোম্পানি ওয়েবসাইট। বিভিন্ন ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট , শোরুম ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসে
সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে উপস্থাপন করে।
বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে কাস্টমার কোনো পণ্য বা সার্ভিসে নেয়ার আগে অনলাইনে তথ্য
সংগ্রহ করে যাচাই বাছাই করে। তাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে
ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যক। ওয়েবসাইট দেখে কাস্টমার শুধু তথ্যই নেয় না। অনলাইনের অর্ডার ও
করতে পারে অথবা আরো বিস্তারিত জানার জন্য যোগাযোগ করতে পারে।
১. ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়া। যাতে ওয়েবসাইট ব্যবহারকারী সহজে তার প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো
পেতে পারে। এছাড়া সুন্দর ভাবে তথ্য উপস্থাপন করে কাস্টমারকে পণ্য বা সেবা নিতে উৎসাহিত
করা যায়। ইউজার ফ্রেন্ডলি না হলে সেই ওয়েবসাইট কোনো কাজেই আসেনা।
২. মোবাইল ফ্রেন্ডলি হওয়া। বর্তমানে ৭০-৮০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোবাইল থেকে ওয়েব
ব্রাউজিং করে। এই কারণে ওয়েবসাইট এর ডিজাইন মোবাইলে দেখার উপযুক্ত হওয়ার বিকল্প নাই।
নোট : একটি ওয়েবসাইট PC এবং মোবাইল উভয় মাধ্যমে যাতে ইউজার ফ্রেন্ডলি হয় সেই ভাবে
ডিজাইন করতে হয়। এই ধরণের ওয়েবসাইট কে রেসপনসিভ ওয়েবসাইট বলা হয়।
একটা ওয়েবসাইটে উপরের সব বৈশিষ্ট থাকলো ... কিন্তু সেটা যদি google এ সার্চ করে পাওয়া না
যায় .... তাহলে ওই ওয়েবসাইটের প্রচার কমে যাবে।
তাই একটা কোম্পানি ওয়েবসাইটকে google সার্চ এ টপ পজিশনে আনার জন্য SEO করতে হয়।
facebook মার্কেটিং
বাংলাদেশে ৩ কোটি মতো ফেইসবুক ব্যবহারকারী আছে। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে অনেকটা
ফেইসবুক মার্কেটিং ই ধরা যায়। আমাদের দেশে একটা ধারণা প্রচলিত যে ... শুধু paid ad এর মাধ্যমেই
ফেইসবুক মার্কেটিং করলেই ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু বিনামূল্য ফেইসবুক একটিভিটোর
মাধ্যমেও অনেক ফল পাওয়া যেতে পারে। বলতে গেলে, paid ad দেয়ার পর নিয়মিত facebook
এক্টিভিটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়।
১. সাধারণ ফেইসবুক এক্টিভিটির মাধ্যমে কাস্টমারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদেকে লাইক ও শেয়ার
করতে এবং পণ্য ক্রয় করতে বা আরো তথ্য জানার জন্য যোগাযোগ করতে উৎসাহিত করা। এর
জন্য প্রয়োজন পণ্য বা সেবার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কনটেন্ট (ব্যানার, তথ্য ইত্যাদি ) এবং
পরিকল্পিত রেগুলার একটিভিটি। কনটেন্ট গুলো হতে হবে আকর্ষণীয় এবং কাস্টমারদের জন্য
তথ্য সংবলিত এবং অবশ্যই সবার চেয়ে আলাদা।
এর জন্য বিভিন্ন ধরণের ফেইসবুক গ্রপ গুলোতে পোস্ট দিতে হয়। অনেক সময় টাকার বিনিময়ে
এইধরণের পোস্ট দিতে হয়।
২. পেইড ফেইসবুক অ্যাড। এর মাধ্যমে বিভিন্ন পেশা ও বয়সের ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে
অ্যাড দেয়া যায়। এর জন্য অনলাইনের পেমেন্ট করতে হয়।
email মার্কেটিং
email মার্কেটিং এখনো সবচেয়ে সহজ এবং কর্যকর একটা ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি। এর জন্য
বিভিন্ন পেশার লোকজনের ইমেইল এড্রেস সংগ্রহ করতে হয়। এর পর তাদের কাছে কোম্পানি,
পণ্য ও সেবা সম্পর্কিত তথ্য ইমেইল করতে হয়।
google মার্কেটিং
গুগল এ পেইড অ্যাড দিয়ে এবং ভালো SEO করে মার্কেটিং করা যায়। google এখন ইন্টারনেট
ব্যবহারকারীদের নিত্য সঙ্গী। তাই google মার্কেটিং অনেক কার্যকরী।
মার্কেটিং করার আগে প্রস্তুতি
১. নিজেকে জানা। নিজের শক্তিশালী দিক গুলো কাজে লাগানো এবং দুর্বল দিক গুলো কাটিয়ে
উঠার চেষ্টা।
২. নিজের কোম্পানিকে জানা
৩. নিজেদের পণ্য ও সেবার তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানা।
৪. market বা বাজার সম্পর্কে জানা। নিজেদের পণ্য বা সেবা সংক্রান্ত মার্কেটের বর্তমান কি কি
প্রচলন আছে, কি কি জনপ্রিয়, মার্কেটের বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি বিস্তারিত জানতে হবে এবং
নিয়মিত আপডেট নিতে হবে। এজন্য প্রতিদিন ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
৫. মার্কেটে নিজেদের প্রতিযোগীদের সম্পর্কে জানতে হবে।
৬. কাস্টমার সম্পর্কে জানতে হবে। নতুন কাস্টোমাদের কাছে যাওয়ার আগে তাদের তথ্য জোগাড়
করতে হবে।
উদাহরণ
আমরা যখন কোনো কাস্টমারের কাছে যাবো তখন নিচের বিষয় গুলো নিয়ে কাজ করবো
১. কাস্টমারের যদি কোনো রেকওয়াইরমেন্ট বা চাহিদা থাকে আগে সেটা শুনে সেটার সমাধান দেয়ার
চেষ্টা করবো। সমাধান দেয়ার আগে নতুন কিছু কাস্টমারকে অফার করবো না।
২. নতুন কাস্টমার হলে ... বা কাস্টমারের নির্দিষ্ট কোনো চাহিদা না থাকলে আগে কাস্টমার
সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবো।
৩. কাস্টমারের লোগো, প্রোফাইল, ব্রশিউর আছে কিনা দেখবো। না থাকলে অফার করবো।
৪. ওয়েবসাইট আছে কিনা দেখবো। থাকলে সেটা আধুনিক কিনা, মোবাইল থেকে লোড হয় কিনা এবং
মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা সেটা দেখবো। নাহলে মোবাইল ফ্রেন্ডলি হওয়া এবং ডিজাইন ভালো
হওয়ার গুরুত্ব বুঝাবো উদাহরণ সহকারে।
৫. SEO করা আছে কিনা। google সার্চ করে দেখবো। যদি গুগল সার্চে না আসে তাহলে SEO সার্ভিস
এর গুরুত্ব বুঝাবো উদাহরণ সহকারে।
৬. google business ডিরেক্টরি তে কোম্পানির নাম আছে কিনা দেখবো। না থাকলে এর গুরুত্ব
বুঝাবো।
৭. কোম্পানির ফেইসবুক পেজ আছে কিনা, থাকলে এক্টিভিটি আছে কিনা দেখো। না থাকলে এর
সুবিধা ও গুরুত্ত বুঝাবো উদাহরণ সহকারে।
৮. কোম্পানির নিজস্ব ইমেইল আছে কিনা (ভিজিটিং কার্ড এ email address দেখলেই বুঝা যাবে), না
থাকলে email solution অফার করবো।
৯. এছাড়া কোম্পানি প্রোফাইল আছে কিনা, থাকলে সেটার ডিজাইন ভালো কিনা দেখবো।
প্রোফাইল ডিজাইন এর অফার দিবো। দেয়ার সময় আমাদের করা কয়েকটা প্রোফাইল দেখাবো।
১০. এছাড়া কোম্পানির ডিজিটাল ব্যানার, লিফলেট, মেনু (রেস্টুরেন্ট) ইত্যাদির অফার দিবো।
১১. চ্যাট এজেন্ট ও কল সেন্টার সেবা। ফেসবুকে শুধু পেইড অ্যাড দিলেই হবেনা। কাস্টমার
কোনো তথ্য জানতে চাইলে সেটা দ্রুত কাস্টমারকে জানাতে হবে এবং কাস্টমারের চাহিদা বুঝে
আরো তথ্য দিয়ে পণ্য এ সেবা নেয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। এর কাজটা প্রশিক্ষিত
প্রফেশনাল চ্যাট এজেন্ট ছাড়া কখনোই ফল প্রদ হবে না। এখন চ্যাট এজেন্ট এর জনপ্রিয়তা
দিনদিন বাড়ছে কারণ কাস্টমাররা ফেইসবুক বেশি ব্যবহার করে ...এবং ফ্রি তথ্য পেতে পছন্দ করে।
এর ফলে কোম্পানির গ্রহণযোগ্যতা ও ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ে।
১২. কল সেন্টার এর ক্ষেত্রেও চ্যাট এজেন্টের মতো একই যুক্তি দিতে হবে।
কাস্টমার নিজেদের কল সেন্টার বা চ্যাট এজেন্ট রাখার ব্যাপারে আগ্রহ দেখতে পারে। তাদের
বুঝাতে হবে যে .. কল সেন্টার বা চ্যাট এজেন্ট নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং তাদের পরিচালিত করা
ঝামেলার কাজ। এছাড়া একজন এজেন্ট চাকরি ছেড়ে দিলে শূন্য পদ পূরণ করতে সময় লাগে। এই
সময়টা কাস্টমাররা কল সেন্টার সুবিধা পেতে সমস্যায় পড়বে। প্রশিক্ষিত প্রফেশনাল কল সেন্টার
ও চ্যাট এজেন্ট সেবা নিলে এই সমস্যা গিলো হবে না, খরচ ও কম হবে, সার্ভিস ভালো পাওয়া যাবে।