You are on page 1of 47

স্থিতিশীল বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি

মধ্য আয়ের উন্নয়নশীল এবং অর্থনীতি।


বাংলাদেশ এর প্রধান প্রধান অর্থনৈ্তিক
খাতসমুহ
 কৃ ষি খাত
 পাটশিল্প
 ট্যানারী
 গার্মেন্টস শিল্প
 জাহাজ শিল্প
 ঔষধ শিল্প
 আইসিটি
 পর্যটন শিল্প
 পরিবহণ খাত
 রেমিটেন্স
ক্ ৃ ষি খাত
বিবরণঃ
বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে কৃ ষি।
কৃ ষি এ দেশের অর্থনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত।
বর্ত মানে দেশে জিডিপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অর্জি ত হয়
কৃ ষি খাত থেকে। তার চেয়েও বড় কথা কৃ ষি এ দেশের
জনমানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা প্রদানের প্রধানতম
এবং অন্যতম উৎস। এখনও এ দেশের বিপুল জনসংখ্যার
কর্মসংস্থানও হয়ে থাকে কৃ ষিকে অবলম্বন করেই। ফলে
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ,
জীবনযাত্রায় মানোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হলে
কৃ ষিক্ষেত্রে অধিকতর মনোযোগ দিতে হয় ।

বর্ত মান অবস্থাঃ


গত কয়েক দশক এ ধরে কৃ ষিক্ষেত্রে অভূ তপূর্ব সাফল্য
অর্জি ত হয়েছে।২০১৮ সালের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
সমীক্ষার তথ্যমতে, মোট শ্রমশক্তির ৪০.৬ ভাগ কাজ
করে কৃ ষি খাত এ এবং দেশের জিডিপিতে কৃ ষি খাত এর
অবদান ১৪.১০ শতাংশ।

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি,


দারিদ্র দূরীকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং খাদ্য
নিরাপত্তায় এই খাতের ভূ মিকা অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশের কৃষি খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনাঃ


সম্ভাবনাসসুহঃ

* মোট জাতীয় উৎপাদনে একক বৃহত্তম খাত হিসেবে


কৃ ষিই সর্বাধিক অবদান রাখছে

* শস্য উৎপাদন পদ্ধতি ব্যাপকভাবে শ্রমঘন এবং কৃ ষি


খাতে বিদ্যমান উদ্বত্ত
ৃ শ্রমশক্তি

* দক্ষ ও অদক্ষ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান কৃ ষি খাতই


বৃহত্তম উৎস

* বছরব্যাপী বিদ্যমান অনুকূল প্রাকৃ তিক পরিবেশ

* জৈব বৈচিত্র্যের ব্যাপক সমাহার


* বিভিন্ন প্রজাতির শস্য এবং কৃ ষিজ উৎপন্ন হলো
আমিষ, খনিজ ও ভিটামিনের প্রধান উৎস

* কৃ ষিজাত উৎপন্নের ক্ষেত্রে অন্যান্য উৎপাদনের চেয়ে


অধিকতর মূল্য সংযোজনের সুযোগ রয়েছে

সমস্যাসমূহঃ

* কৃ ষি ব্যবস্থা প্রকৃ তির খেয়াল খুশির ওপর নির্ভ রশীল


এবং ঝুঁ কিপূর্ণ

* আবাদযোগ্য ভূ মির লভ্যতা ক্রমাগতভাবে কমে যাচ্ছে

* কৃ ষিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান ব্যাপক


দারিদ্র্য

* কৃ ষি কাজের অন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব

* কৃ ষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত


আধুনিক প্রযুক্তির স্বল্পতা

* অনুন্নত ও দুর্বল বাজার ব্যবস্থার কারণে কৃ ষিপণ্যের


উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা

* কৃ ষিজ উৎপন্নসমূহ দ্রুত পচনশীল এবং ফসল-পরবর্তী


ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অত্যধিক
* ফল এবং শাক-সবজিসহ বিভিন্ন কৃ ষিজ উৎপন্নের
পুষ্টিমান সমন্ধে সাধারণ মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞান

বাজেটঃ কৃ ষি খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বরাদ্দ ১৪ হাজার ৫৩


কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২ দশমিক ৬৯ ভাগ। খাতভিত্তিক
বাজেট বরাদ্দের হিসাবে গত ৫ বছরের মধ্যে এবারই কৃ ষি খাতে
বরাদ্দের হার সবচেয়ে কম ।

জাতীয় বাজেটে এবার অনেক বিষয় গুরুত্ব পেলেও কৃ ষকের


উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির প্রশ্নে নতু ন কোনো উদ্ভাবনী
উদ্যোগ ও দরিদ্র কৃ ষক তথা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তা
বেষ্টনীর মধ্যে আনার জন্য কোনো সুদর
ূ প্রসারী উদ্যোগ
সরকারের কাছ থেকে আসেনি। কৃ ষককে একটি সুপরিকল্পিত
বাজার-ব্যবস্থায় আনা না গেলে তারা বার বার ন্যায্যমূল্য পাওয়া
থেকে বঞ্চিত হবে। এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনতে
হবে।

কৃষি খাত নিয়ে সরকার এর পরিকল্পনাঃ


২০৩০ সালের মধ্যে কৃ ষি উৎপাদন দ্বিগুণের পরিকল্পনা
রয়েছে সরকারে কারণ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা
(এসডিজি) অর্জ নে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে।

বর্ত মানে হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয় দুই দশমিক ৬৬


মেট্রিক টন। যা ২০৩০ সালের মধ্যে পাঁচ দশমিক ৩২
মেট্রিক টনে উন্নীত করতে হবে।

এ লক্ষ্য অর্জ নে তিন ফসলি জমিকে চার ফসলি করার


পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার।

তথ্যপ্রযুক্তির এ অপার সম্ভাবনা আমাদের কৃ ষিকেও করেছে


সমৃদ্ধ। কৃ ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি তথা ই-কৃ ষি আমাদের কৃ ষি
উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে মনে করা হচ্ছে।
ই-কৃ ষি ফসল উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণনসহ প্রতিটি
পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে সঠিক কলাকৌশল জেনে
টেকসই কৃ ষি উৎপাদন নিশ্চিত করাতে সাহায্য করে।
সনাতন পদ্ধতিতে তথ্য গ্রহণের পাশাপাশি কৃ ষকেরা এখন
তথ্যপ্রযুক্তি তথা ই-কৃ ষিকেও গ্রহণ করেছেন। পরিসংখ্যানে
দেখা গেছে, ৮৪ শতাংশ গ্রামীণ কৃ ষক মোবাইল ফোন
ব্যবহার করেন। ৬৬ শতাংশ কৃ ষক পরিবার একের
অধিক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন। তথ্যপ্রযুক্তি
ব্যবহার করে প্রতি পরিবারের আয় বেড়েছে গড়ে ১০
হাজার ৫০০ টাকা (অরগাকোয়েস্ট জরিপ ২০১৩,
ক্যাটালিস্ট)। সাম্প্রতিক সময়ে কৃ ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি
ব্যবহারের এ রেখাচিত্র আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। কৃ ষি
মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থাগুলো ই-কৃ ষির প্রসারে অগ্রণী
ভূ মিকা পালন করে চলেছে। প্রায় প্রতিটি সংস্থাই প্রদেয়
নাগরিক সেবাগুলোকে ই-সার্ভি সে পরিণত করে সময়মাফিক
গুণগত সেবা প্রদানের প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে। এসব
উদ্যোগের ফলে কৃ ষকসহ আপামর কৃ ষিজীবীরা যেমন
একদিকে উপকৃ ত হচ্ছেন অন্যদিকে কৃ ষি সংশ্লিষ্ট
নীতিনির্ধারকদের কাছেও কর্মপন্থা প্রণয়নে প্রয়োজনীয়
তথ্যের উৎস হিসেবে কাজ করছে।

ফু ল রপ্তানিতে বাংলাদেশ
বাংলাদেশে রপ্তানি পণ্যের তালিকায় কাঁচা ফু লের নাম উঠে
এসেছে। বাংলাদেশে উত্পাদিত কাঁচা ফু ল পৃথিবীর বিভিন্ন
দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফু ল রপ্তানি করে প্রতিবছর বৈদেশিক
মুদ্রা আয় হচ্ছে। কৃ ষিপ্রধান বাংলাদেশে বিভিন্ন কৃ ষিজাত
পণ্যের মধ্যে কাঁচা ফু ল ইতিমধ্যে বিশেষ স্থান দখল
করেছে। ফু ল চাষে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক।
বাংলাদেশের জমি এবং জলবায়ু ফু ল চাষের জন্য খুবই
উপযোগী। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের ফু ল উত্পন্ন হয়।
এসব ফু লের মধ্যে গ্লাডিউলাস, রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা,
লিলিয়াম, থাইঅর্কি ড, কার্নেশন, শর্বারা, গ্লোবাল প্রভৃ তি ফু ল
রপ্তানি হচ্ছে।

বাংলাদেশের কাঁচা ফু ল মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া,


ব্রিটেন, পাকিস্তান, ভারত, ইতালী, কানাডা, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও
ফ্রান্সে রপ্তানি করা হচ্ছে। এসব ফু ল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত
উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে রপ্তানি করা হচ্ছে। রপ্তানি উন্নয়ন
ব্যুরোর হিসাবে দেখা যায়, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে এদেশ
থেকে ফু ল রপ্তানি হয়েছিল ২৭৬ কোটি ৯ লাখ টাকা,
২০০৯-২০১০ সালে ৩২৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা এবং
২০১০-২০১১ সালে ৩৬২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
উদ্যোক্তারা মনে করেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পেলে
ভবিষ্যতে প্রতিবছর কাঁচা ফু ল বিদেশে রপ্তানি করে ৫০০
কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। ফু ল উত্পাদন খাতে
চার লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। বাংলাদেশে
অনেকদিন থেকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে ফু লের চাষ শুরু হয়।
১৯৯১ সালের দিকে বাংলাদেশ সরকার রপ্তানিযোগ্য পণ্যের
তালিকায় কাঁচা ফু লকে অন্তর্ভু ক্ত করে।
বর্ত মানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ১২ হাজার
হেক্টর জমিতে ফু লের চাষ করা হচ্ছে। সারাদেশে খুচরা
বিক্রেতার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে
যে পরিমাণ ফু লের চাহিদা রয়েছে তাতে ঠিকভাবে ফু ল
রপ্তানি করতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নব
দিগন্তের সূচনা হতো। ফু ল চাষের ব্যাপারে ফু ল
চাষীদেরকে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিদিন।

সর্বপ্রথম ফু ল চাষের ব্যাপারে ফু ল চাষীরা সরকারের কাছ


থেকে কোন সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছে না। ফু ল উত্পন্ন
করে ফু ল চাষীরা প্রকৃ ত মূল্য পাচ্ছে না। পরিবহন,
বাজারজাতকরণ এবং বিপণন সমন্বয় না থাকায় ফু ল
চাষীদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের
দেশে ফু ল চাষীদেরকে ফু ল চাষের ব্যাপারে উন্নত
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই।

তাছাড়া বাংলাদেশ বিমানে কোন কার্গো সুবিধা না থাকায়


আন্তর্জ াতিক বাজারে দ্রুত পচনশীল পণ্য পাঠানো সম্ভব হয়
না। এখানে নেই কোন উন্নত প্যাকেজিং এবং সংরক্ষণের
জন্য হিমাগার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ফ্রিজার ভ্যান এবং স্বল্প
ভাড়ায় বিমানে করে ফু ল রপ্তানি ব্যবস্থা। ফু লকে পোকার
আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক পায় না
ফু ল চাষীরা। বাংলাদেশে উত্পাদিত কাঁচা ফু ল বিদেশে
রপ্তানির ব্যাপারে এবং এই খাত থেকে কোটি কোটি
ডলার আয় করার লক্ষ্যে এই বাধাগুলো দূর করতে হবে।

গার্মেন্টস শিল্প
বর্ত মান চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশকে এখন অনেক শক্তিশালী দেশের সাথে
প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তন্মধ্যে
পণ্য এবং বাজার বহুমুখীকরণ, অবকাঠামোগত অসুবিধা
দূরীকরণ, পণ্য সরবরাহে ক্ষমতা বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচ
হ্রাসে কৌশল গ্রহণ এবং পশ্চাৎ সংযোগ সম্প্রসারণের
মাধ্যমে মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি

বাংলাদেশ প্রায় ৩০টি দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি


করলেও এর রপ্তানি বাজার মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং
ইউরোপীয় ইউনিয়নে কেন্দ্রীভূ ত সবচেয়ে বড়
আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৮-৯৯ সালে
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃ ত তৈরি পোশাকের
সর্বমোট ৪৩.২৪% আমদানি করেছে।

যদিও বাংলাদেশ প্রায় ৩০টি দেশে পোশাক রপ্তানি


করে, তবে রপ্তানি মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ-এর
বাজারে কেন্দ্রীভূ ত যা এই শিল্পের বড় দূর্বলতা।
অর্থাৎ মোট রপ্তানির ৯০%-এর অধিক যুক্তরাষ্ট্র ও
ইইউ বাজারে বিক্রি হয়। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মোট
রপ্তানির ৪০% এবং ইইউতে ৫০% রপ্তানি হয়।

বাংলাদেশকে চীন, ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান,


থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, তু রস্ক,
মেক্সিকো, পূর্ব ইউরোপের দেশ, ল্যাটিন আমেরিকা
ও আফ্রিকার সাথে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে।

মেক্সিকো, বেশ কিছু ল্যাটিন আমেরিকার দেশ,


আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের
বাজারে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পেলেও বাংলাদেশ
পায় নি। এই বৈষম্যের কারণে বাংলাদেশকে তীব্র
প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই বৈষম্যের
কারণে দাম পার্থক্য বাংলাদেশের প্রতিকূলে থাকায়
কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। যদি
কোনো কারণে একটি বাজার হাতছাড়া হয়ে যায়,
তা হলে তৈরি পোশাক শিল্প বড় ধরনের হুমকির
সম্মুখীন হতে পারে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী


এখন ভিয়েতনাম। গত কয়েকবছরে এ খাতে
দেশটির উত্থান চোখে পড়ার মতো।

গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি


মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে পোশাক শিল্পে। এখন
সেটি স্তিমিত হয়ে আসছে। কোন কোন ক্ষেত্রে
ছাঁটাই শুরু হয়েছে।পোষাক শিল্পে বাংলাদেশে কাজ
করে প্রায় চল্লিশ লাখ মানুষ এদের ৬০ হতে ৮৮
শতাংশ তাদের কাজ হারাবে অটোমেশনের কারণে।
অর্থাৎ লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেকার হবে।

এছাড়াও বাংলাদেশের সামনে বিপদ অনেক রকমের

প্রথমটা হচ্ছে এই অটোমেশন, যেটা ইতোমধ্যে ঘটতে শুরু


করেছে।
দ্বিতীয় হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবে বদলে যাওয়া
ফ্যাশন ট্রেন্ড, যেটা বিরাট প্রভাব ফেলছে পোশাকের
ব্রান্ডগুলোর ওপর।

আর সবশেষে আছে অটোমেশনের চূ ড়ান্ত ধাপে পোশাক


শিল্পের 'রিশোরিং' বা 'নিয়ারশোরিং।' অর্থাৎ যেখান থেকে
এই পোশাক শিল্প বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে এসেছে,
এই শিল্পের সেখানেই ফিরে যাওয়ার ঝুঁ কি।

বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ ঘটতে শুরু করেছিল


আশির দশকের মাঝামাঝি। শিল্পোন্নত দেশগুলো থেকে
এধরণের শিল্প যখন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সরিয়ে নেয়া
হচ্ছিল তখন তার নাম দেয়া হয়েছিল অফশোরিং।

অটোমেশনের ফলে এসব শিল্প এখন অনশোরিং, অর্থাৎ


আগের জায়গায় নিয়ে যাওয়া, কিংবা নিয়ারশোরিং, অর্থাৎ
কাছাকাছি কোন দেশে নিয়ে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে

প্রযুক্তি ভিত্তিক যে নতু ন শিল্পবিপ্লবের ঢেউ এসে লেগেছে


বাংলাদেশে, তার ধাক্কায় গার্মেন্টস শিল্প যে আমূল বদলে
যেতে চলেছে, তা নিয়ে এই খাতের কারও মনেই কোন
সন্দেহ নেই। কিন্তু রোবটিক প্রযুক্তি যে লাখ লাখ কর্মীর
কাজ নিয়ে নেবে, তার কর্মসংস্থান কোথায় হবে, সেটি
এখনো স্পষ্ট নয়।
পোষাক শিল্পের সাফল্যর কারনঃ
দেশের বর্ত মান রপ্তানি আয়ের শতকরা ৮০ ভাগই আসে
তৈরি পোশাক শিল্পখাত থেকে। গত কয়েক দশকে গার্মেন্ট
শিল্পের এ অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূ মিকা
রেখেছে আমাদের দেশের সস্তা শ্রম। বাস্তবতা হচ্ছে সস্তা
শ্রম একটি নিছক ‘তু লনামূলক সুবিধা’ (comparative
advantage) যা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। তৈরি পোশাকের
ইতিহাস থেকে আমরা জানি, যে দেশেই যখন শ্রম সস্তা
ছিল, সেখানেই তৈরি পোশাক শিল্প গিয়েছে।

যুক্তরাজ্য থেকে শুরু করে, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ


কোরিয়ার মত দেশগুলো একসময়ে এ শিল্পের উপরে
নির্ভ রশীল ছিল। সময়ের সাথে সাথে যখন শ্রমের মূল্য
বেড়ে যায়, পোশাক শিল্প তার পরবর্তী গন্তব্য খোঁজে।

তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বাংলাদেশ বর্ত মানে বেশ


আকর্ষণীয় হলেও যথাযথ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা না নিলে
বিশ্ববাজারে এই অবস্থা ভবিষ্যতে ধরে রাখা যাবে না।
গত কয়েক দশকে আমাদের জিডিপি যেভাবে ৬-৭% হারে
বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধির এই হার অব্যাহত থাকলেআমাদের দেশের শ্রমের
মূল্য গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে যাবে।
তাই এই শিল্পে বিশ্বে আমাদের অবস্থান ধরে রাখতে হলে
এখন থেকেই শুধু সস্তা শ্রমের প্রতি নির্ভ রশীলতা কমিয়ে
বিকল্প প্রতিদ্বন্ধিতামূলক সুবিধা (competitive
advantage) তৈরি করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নিতে
হবে।

পোশাক শিল্পের হালচালঃ


 তৈরি পোশাক শিল্পের স্বকীয় কিছু অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য
রয়েছে যার কারণে মুনাফা বৃদ্ধির জন্য কারখানার
মালিকদের খুব বেশি বিকল্প থাকে না।
 এই শিল্পের ক্রেতারা অত্যন্ত দাপুটে – পণ্যের
ডেভলপমেন্ট থেকে শুরু করে, এতে কি ধরনের
কাপড়/বোতাম/জিপার/সুতা, এমনকি কি ধরনের
প্যাকেজিং উপকরণ ব্যবহার করা হবে সেটিও
নির্ধারণ করে দেয় ক্রেতারাই।
 বিশ্বের শতাধিক দেশের হাজার হাজার কারখানা
আছে যাদের মধ্যে গুণগত মানের খুব বেশি পার্থক্য
নেই। তাই যে কারখানা সবচেয়ে কম দামে পণ্য
বিক্রি করতে পারে ক্রেতারা তাদেরকেই বেছে নেয়।
 যদিও গার্মেন্টস ব্যবসায় নতু ন প্রতিযোগীর আগমন
কঠিন কারণ এতে অনেক এককালীন মূলধনের
দরকার হয়, তবে একবার যারা উচ্চ মূলধন নিয়োগ
করে এই ব্যবসায় আসে তাদের জন্য এর থেকে বের
হওয়া অত্যন্ত কঠিন। কারণ, সেলাই মেশিন, ওয়াশ
প্লান্ট ইত্যাদির গার্মেন্ট ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসায়
তেমন কোনো ব্যবহার নেই। ফলে, এই ব্যবসায়
প্রতিযোগিতা অত্যন্ত তীব্র।

পাট শিল্পঃ
পাট বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। ২০১৭-১৮
অর্থবছরে বাংলাদেশে ৭ লাখ ৫৮ হাজার ২০০ হেক্টর
জমি থেকে প্রায় ৮৯ লাখ বেল পাট উৎপাদিত হয়।
দেশের ৫০ লাখ কৃ ষক সরাসরি পাট চাষের সঙ্গে জড়িত।
দেশে মোট রপ্তানি আয়ের শতকরা ৩ থেকে ৪ ভাগ
আসে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে। পাট উৎপাদনে বিশ্বে
ভারতের অবস্থান শীর্ষে এবং বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়
হলেও রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। বাংলাদেশ বিশ্বের
মোট পাটের ৩৩ শতাংশ উৎপাদন করে এবং কাঁচা
পাটের ৯০ শতাংশ রপ্তানি করে। পাটকে কেন্দ্র করে দেশে
গড়ে উঠেছে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। বর্ত মানে সরকারি ও
বেসরকারি মিলে মোট ৩০৭টি পাট কল রয়েছে। এর
মধ্যে সরকারি পাট কলের সংখ্যা ২৫টি এবং বেসরকারি
পাট কলের সংখ্যা ২৮২টি।

পাট শিল্প হলো বর্ত মানে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ভারী


শিল্প, যা ব্রিটিশ শাসনামলে এবং পাকিস্তানি আমলে একক
বৃহত্তম শিল্প।বর্ত মান বিশ্বের পাট ও পাটজাত দ্রব্যের
বৈদেশিক রপ্তানি আয়ের বৃহদাংশই বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে
রয়েছে, যা মোট বিশ্ববাজারের প্রায় ৬৫%।

যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের পাটশিল্প বিভিন্ন সমস্যার


মোকাবেলা করে আসছে:

 স্থবিরতা বা রপ্তানি মূল্য হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে


উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি
 পুরাতন যন্ত্রপাতির উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস
 শ্রমিক সমস্যা
 বহুবিস্তৃত দুর্নীতি
 অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং এর ফলে পুঞ্জীভূ ত বিশাল
পরিচালন লোকসান প্রভৃ তি।
এসব কারণে এক সময়ের একটি গতিশীল শিল্প বর্ত মানে
‘অস্তমিত’ শিল্প হিসেবে অভিহিত হচ্ছে এবং সোনালি অাঁশ
তার ঔজ্জ্বল্য অনেকাংশে হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু বর্ত মানেও
পাটশিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ মিকা
পালন করতে পারে: পাটশিল্পের ৪০% উৎপাদন ক্ষমতা
বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও এই শিল্প প্রায় দেড় কোটি
লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। বীমার অর্থ
হিসেবে ১০০ কোটি টাকা প্রদান করে এবং প্রায়
সমপরিমাণ টাকা খরচ হিসেবে কাঁচাপাটের অভ্যন্তরীণ
পরিবহণে ব্যয় করতে পারে, ১৫০ কোটি টাকার বৈদেশিক
মুদ্রা আয় করতে পারে এবং ৩০ লক্ষ টাকার কাঁচাপাট
ব্যবহার করতে পারে। এভাবে পাটশিল্প লক্ষ লক্ষ
পাটচাষীর জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।

লোকসান ও অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারি পাটকলগুলো


প্রায়ই শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারে না। অবিক্রীত পণ্য
গুদামে পড়ে থাকে। প্রতিবছরই পাটের মৌসুমে কাঁচা পাট
কিনতে সরকারের কাছে হাত পাততে হয়।

সরকারি পাটকলের এই লোকসানের প্রবণতা অনেক


পুরোনো। স্বাধীনতার পর দু-এক বছর ছাড়া প্রতিবছরই
এসব পাটকল লোকসান দিয়েছে। সরকারের বোঝা কমাতে
অতীতে বেশ কিছু পাটকল বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া
হয়। ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ পাট
খাতকে লাভজনক করার অঙ্গীকার করে। তারা ক্ষমতায়
আসার পর বিজেএমসিকে লাভজনক করতে কর্মপরিকল্পনা
করে। এটি বাস্তবায়নে সরকার বিজেএমসির দেনা
পরিশোধ করতে ৫ হাজার ২৪১ কোটি টাকা দেয়। এই
অর্থ দিলে ভবিষ্যতে বিজেএমসির জন্য আর কোনো
আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন হবে না—এ শর্তে পাট মন্ত্রণালয়,
বিজেএমসি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই
হয়। এরপর বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া খুলনার
খালিশপুর জুট মিলস, দৌলতপুর জুট মিলস, সিরাজগঞ্জের
জাতীয় জুট মিলস, চট্টগ্রামের কর্ণফু লী জুট মিলস ও
ফোরাম কার্পেটস ফ্যাক্টরি ফিরিয়ে নিয়ে চালু করে
সরকার।

কিন্তু কোনো কিছু তেই কোনো কাজ হয়নি। লোকসান


হতেই থাকে। বেসরকারি খাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়া
মিলগুলোও বড় লোকসান দিতে থাকে। চলতে থাকে
সরকারের কাছে হাত পাতা।
ট্যানারি শিল্প
ট্যানারি চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার প্রক্রিয়া বা প্রতিষ্ঠান।
ট্যানারি বলতে চামড়া পাকা করার কার্যক্রম পরিচালিত
হয় এমন কোন স্থান বা ইমারতকেও বোঝায়। ট্যানারিতে
পশুর কাঁচা চামড়াকে পাকা করার পর জুতার উপরিভাগ,
ব্যাগ, স্যুটকেস, বেল্ট, মানিব্যাগ, জ্যাকেট প্রভৃ তি
উৎপাদনের উপযোগী চামড়া তৈরি করা হয়। অতীতে
কতিপয় দেশীয় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে খালি
হাতে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হতো। এ অঞ্চলে ১৯৪০
সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম ট্যানারি স্থাপন করেন রণদাপ্রসাদ
সাহা। পরবর্তীকালে ট্যানারিটি ঢাকার হাজারিবাগে স্থানান্তর
করা হয়। এই ট্যানারিকে কেন্দ্র করেই হাজারিবাগ
এলাকায় অনেকগুলি ট্যানারি গড়ে উঠে।

প্রতিযোগিতামূলক উৎপাদন মূল্য, ক্রমবর্ধমান কমপ্লায়েন্স


প্র্যাকটিস, দক্ষ ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, ইউরোপ ও চীনা
বাজারে বাণিজ্য অগ্রাধিকারের কারণে বাংলাদেশ, চীন,
ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় শিল্প স্থাপনের তু লনায়
বাংলাদেশ সারা বিশ্বের চামড়ার বাজারে প্রতিযোগিতামূলক
জায়গা হিসেবে চিহ্নিত।

বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি দেশে এবং


ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে আরও ১০টি দেশে জিএসপি
সুবিধা পাচ্ছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চামড়া শিল্পে
রফতানি আয় হয়েছে রেকর্ড ১০১৯.৭৮ মিলিয়ন মার্কি ন
ডলার, যেখানে অন্যান্য পাদুকা (চামড়াবিহীন) শিল্পের
রফতানি আয় ১১.২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করা
হচ্ছে, ২০২২ সালের মধ্যে এ খাত থেকে ৫ বিলিয়ন
ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব হবে।

ট্যানির শিল্প এর সমস্যা


 সঠিক পরিকল্পনার অভাব ।
 সাভারে কেন্দ্রীয় বর্জ ্য শোধনাগার (সিইটিপি)
নির্মাণ কাজ শেষ না করে কারখানা স্থানান্তর কর।
 সাভারে ট্যানারিপল্লীতে অবকাঠামোগত সুবিধা
দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না
করা।
 নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ ও সময়মত গ্যাস
সংযোগ দিতে না পারা।
 সড়ক যোগাযোগে অব্যবস্থাপনা।
 চামড়া কাটার পর বর্জ ্য কোথায় ফেলা হবে সেটি
নির্ধারণ করতে না পা।
 জমির দলিল হস্তান্তরসহ নানা বিষয় নিয়ে চামড়া
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব।
 তিন বছরেও সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে
প্রত্যাশা অনুযায়ী সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারা।
 কারখানা স্থানান্তরের পরও অনেক প্রতিষ্ঠ। উৎপাদনে
যেতে না পারায় রফতানি আদেশ বাতিল হয়ে
যাওয়া
 হাজারীবাগে ২০৫ টি কারখানা থাকলেও সাভারে
মাত্র ১৫০টি প্লট বরাদ্দ দেয়া ।
 প্লট না পাওয়া ৫৪টি কারখানা বন্ধ হওয়ায় এসব
কারখানার শ্রমিকদের বেকার হয়ে যাওয়া ।
 অবৈধ পথে চামড়া পাচার ।
 বিশ্ব বাজারের দরপতনে দেশের চামড়া শিল্পের
অবস্থান আন্তর্জ াতিক বাজারে দুর্বল হয়ে যাওয়া ।
 টানা কয়েক বছর ধরে চামড়া রফতানি আয়
কমে যাওয়া ।
 আন্তর্জ াতিক বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে
পণ্যের আধুনিকায়নে সামঞ্জস্যতা না থাকা ।
 চীন-মার্কি ন বাণিজ্য যুদ্ধ ।
 বিশ্ববাজারে চামড়ার জুতার পরিবর্তে সিনথেটিক বা
কাপড় জাতীয় জুতার আগ্রহ বৃদ্ধি ।
 চামড়াজাত পণ্যের উৎপাদন কমে যাওয়া ।
 চামড়া শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে না তোলা

 ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কারখানার পরিবেশ
উন্নত না করা ।
 চাহিদার তু লনায় ব্যাংক ঋণ না পাওয়া ।
 পুজি
ঁ সংকট ।
 দক্ষ শ্রমিকের সংকট ।
 গতবারের চামড়া এখনো প্রক্রিয়াজাত করতে না
পারা ।
 আগের বছরের সংগৃহীত কাঁচা চামড়ার গুণগত মান
কমে যাওয়া ।
 নতু ন চামড়া সংরক্ষণে স্থান সংকট ।
 আমলাতান্ত্রিক জটিলতা।

জাহাজ শিল্পঃ
সম্ভবনাঃ
নানা কারণেই জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য বাংলাদেশ
অন্যতম স্থান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম
হচ্ছে

 পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তু লনায় তু লনামূলক কম


খরচ।
 জাহাজ নির্মাণে প্রচু র দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন
হয়। বাং
 লাদেশে জাহাজ নির্মাণে স্বল্প খরচে প্রচু র শ্রমিক পাওয়া
যায়। আর এ কারণে নির্মাণ খরচ অনেক কম।
দক্ষিণাঞ্চল সমুদ্রবেষ্ঠিত হওয়ায় ভৌগোলিক সুবিধা এ
সম্ভাবনার ক্ষেত্রে অন্যতম সহায়ক ভূ মিকা পালন
করছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা আন্তর্জ াতিক নৌ-সংস্থা


আইএমও’র জারিকৃ ত আইএসপিএস কোডের কারণে ২৫
বছরের বেশি পুরনো জাহাজগুলো আগামী বছর থেকে
চলাচল করতে পারবে না। আইএমও’র এ নির্দে শনার
কারণে কেবল ইউরোপীয় দেশগগুলোকেই কিছু দিনের মধ্যে
প্রায় ৩ হাজার নতু ন জাহাজ বাদ দিতে হবে এবং এর
স্থলে নতু ন জাহাজ যোগ করতে হবে। আর এ জাহাজ
নির্মাণে বাংলাদেশই হতে পারে অন্যতম বিকল্প। কারণ
বিশ্বের অন্যতম জাহাজ নির্মাণকারী দেশ চীন, ভিয়েতনাম,
ভারতের সব ক’টি শিপইয়ার্ড আগামী ৫ বছরের জন্য
বুকড হয়ে আছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট
কর্তৃ পক্ষ উদ্যোগ নিলে সম্ভাবনার নতু ন দুয়ার উন্মোচিত
হবে বলে আশা করা যায়।

বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণের প্রতিবন্ধকতা


বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বাধা বা
চ্যালেঞ্জগুলি হলো:

(ক) বাংলাদেশের মত অনেক দেশ যেমন ভিয়েতনাম,


ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, তু রস্ক জাহাজ নির্মাণের
বর্ধিত বিশ্ববাজার নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা করছে;

(খ) স্থানীয় শিপইর্য়াডগুলি থেকে প্রতিবছর দক্ষ


জনশক্তি বিদেশি শিপইয়ার্ড গুলিতে যুক্ত হওয়ায় স্থানীয়
জাহাজ নির্মাণ শিল্প সাময়িক সমস্যার সম্মখ
ু ীন হচ্ছে;
(গ) শতকরা ৮০ ভাগের বেশি কাঁচামাল এবং
জাহাজ নির্মাণ উপাদান বিদেশ থেকে আমদানী করতে
হচ্ছে। ফলে দেশীয় শিপইয়ার্ড গুলিতে রপ্তানিযোগ্য জাহাজের
নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক নির্ভ রতা বাড়ছে;

(ঘ) বিভিন্ন দেশের জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলি


তাদের দেশের জাহাজ নির্মাণের কাঁচামালের সরবরাহকারী
প্রতিষ্ঠানের সাথে একটি সুসম্পর্ক বজায় রাখে এবং
দ্রুততার সাথে সবকিছু ই কাছে পেয়ে যায়। ফলে তারা
তাড়াতাড়ি নির্মাণাধীন জাহাজ মালিকের কাছে হস্তান্তর
করতে পারে। অথচ এদেশের শিপইয়ার্ড গুলি জাহাজ
নির্মাণের কাঁচামালের জন্য বহুলাংশে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের
উপর নির্ভ রশীল। ফলে বাংলাদেশি জাহাজ নির্মাণ
প্রতিষ্ঠানগুলির নতু ন জাহাজ তৈরি ও সরবরাহ করতে
বেশি সময় লাগে;

(ঙ) জাহাজ নির্মাণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে


বেশিরভাগ জাহাজ নির্মাণকারী দেশ, জাহাজ নির্মাণ শিল্প
ও অন্যান্য সহযোগী শিল্পের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।
কিন্তু মানসম্মত মেরিন যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী কারখানার
অভাব এবং সীমিত অবকাঠামোগত সুবিধার কারণে
বাংলাদেশে জাহাজ নির্মাণ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এতে
জাহাজ তৈরিতে অন্যান্য দেশের তু লনায় বেশি অর্থ ও
সময় ব্যয় হচ্ছে;

(চ) এদেশের বেশিরভাগ শিপইয়ার্ডে র ব্যবস্থাপনা ও


পরিকল্পনা আন্তর্জ াতিক মানসম্পন্ন নয়। দক্ষ
অর্থব্যবস্থাপনার অভাব, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনা সংস্কৃতির
(কর্পোরেট কালচার) অনুপস্থিতি, সামগ্রিক ও দূরদর্শিতার
অভাবের কারণে দিন দিন দেশীয় শিপইয়ার্ড গুলি পঙ্গু হয়ে
যাচ্ছে;

(ছ) সহযোগী শিল্পের পশ্চাৎপদতাও রপ্তানিযোগ্য


জাহাজ নির্মাণ খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহ প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত
করছে;

(জ) পর্যাপ্ত পরিমাণ জমির অভাব, জ্বালানি ঘাটতি


এবং দূর্বল অবকাঠামোগত ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের জাহাজ
নির্মাণ শিল্পের উন্নতিতে একটি বড় বাধা;

(ঝ) বিশ্বমন্দার কারণে জাহাজ এবং লোহার


(প্লেটের) বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় জাহাজ তৈরির
অনেক চু ক্তি বাতিল হতে দেখা যাচ্ছে, যা দেশীয় জাহাজ
নির্মাণ শিল্পের জন্য একটি বড় হুমকি;

(ঞ) ইউরোপীয়রা বাংলাদেশে নির্মিত জাহাজের বড়


গ্রাহক। তারা নির্মাণের মোট খরচের ৬০-৬৫% যন্ত্রপাতি
বিদেশ থেকে আমদানি করার শর্ত দেয়। অথচ বিদেশি
সরবরাহকারী সংস্থাগুলি বাংলাদেশি জাহাজ নির্মাণকারকদের
কাছে ঐসব যন্ত্রপাতির জন্য প্রতিযোগিতামূলক দামের
প্রস্তাব দেয় না এবং বেশি দাম হাকায়। ফলে দেশীয়
জাহাজের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায়;

(ট) বেশিরভাগ শিপইয়ার্ড ঢাকার নিকটবর্তী নদী


তীরে অবস্থিত, যা সমুদ্র থেকে অনেক দূরে। এছাড়া পলি
পড়ায় নদীগুলি দিন দিন নাব্যতা হারাচ্ছে। অদূর
ভবিষ্যতে এই সব শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণ করে নদীপথে
সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছানো কষ্টসাধ্য হবে। ফলে ঢাকার আশে
পাশে অবস্থিত শিপইয়ার্ড গুলিতে সীমিত ড্রাফ্ধসঢ়;টের
(সর্বোচ্চ ৪-৪.৫ মি.) জাহাজ তৈরি করতে হচ্ছে। এছাড়া
নদীগুলির উপরে সেতু এবং বৈদ্যুতিক/টেলিফোন লাইন
থাকায় বড় আকারের জাহাজ তৈরিতে ও পরিবহণে বাধার
সৃষ্টি হচ্ছে;

(ঠ) স্থানীয় শিপইয়ার্ড গুলিতে মাননিয়ন্ত্রণ এবং দক্ষতার


যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে;

(ড) অর্থনৈতিক দিক থেকে মূলধনের স্বল্পতা, উচ্চ


সুদে শিল্পঋণ, উচ্চ ব্যাংক গ্যারান্টি এবং উচ্চ হারে এলসি
মার্জি নের কারণে এদেশের জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলি
(শিপইয়ার্ড সমূহ) আশানুরূপ সফলতা অর্জ ন করতে পারছে
না;

ঔষধ শিল্প
সম্ভাবনা:
ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের প্রচু র সম্ভাবনা রয়েছে। যার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হল - বৈদেশিক মুদ্রা অর্জ ন ও ব্যাপক
কর্মসংস্থান।

বৈদেশিক মুদ্রা

২০০১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে, ওষুধ রপ্তানিতে


বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জ নের পরিমাণ ৩১ কোটি
টাকা থেকে বেড়ে প্রায় ৬০৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়,
আর ওষুধ তৈরির কাঁচামাল রপ্তানি এক কোটি ১০ লাখ
টাকা থেকে ১৬ কোটি ছয় লাখ টাকা ছেড়ে যায়।
কর্মসংস্থান

এ শিল্পের মাধ্যমে প্রায় দু’লাখেরও বেশি মানুষের


কর্মসংস্থান হয়েছে, এছাড়াও আরো পাঁচ লাখেরও বেশি
মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ শিল্পের সাথে জড়িত।
প্রতিবছর আরো প্রচু র লোকের কর্মসংস্থান বাড়ছে এ শিল্প
প্রসারের মাধ্যমে। সব মিলিয়ে ওষুধ উত্পাদন, বিপণন ও
খুচরা বাজারজাতের সঙ্গে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি
সম্পৃক্ত।

মেধাস্বত্ব ছাড়

উন্নত দেশগুলোর বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার ওয়ার্ল্ড


ইনটেলেকচু য়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন (ডবিলউআইপ্রি)
সাধারনত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য ওষুধ
শিল্পে মেধাস্বত্ব (পেটেন্ট) ছাড় দিয়ে থাকে। যার ফলে
স্বল্পোন্নত দেশগুলো যে কোনো পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ জেনেরিক
ফর্মে উৎপাদন করতে পারে। এছাড়া 'ট্রিপস চু ক্তি' নামক
আরো একটি চু ক্তি রয়েছে, যেখানে কোন কোম্পানি নতু ন
কোন ওষুধ আবিষ্কার করে (পেটেন্ট করে) বাজারজাত
করলে, সরকার তাকে ২০ বছরের জন্য একচেটিয়া ব্যবসা
করতে দিতে বাধ্য থাকবে।
২০০১ সালের নভেম্বর মাসে কাতারের রাজধানী দোহায়
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মন্ত্রিপর্যায়ের এক সম্মেলনে ৪৯টি
স্বল্পোন্নত দেশকে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মেধাস্বত্ব
ছাড় দিয়ে যে কোনো ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত
করার অধিকার দেয়া হয়। পরে তার মেয়াদ ২০৩৩ সাল
পর্যন্ত ১৭ বছর বাড়ানো হয়। এ ছাড়ের ফলে বাংলাদেশের
ওষুধ শিল্পখাতের রফতানির দরজা অবারিত হয়।

ঔষধ শিল্পের প্রসারের ক্ষেত্রে সমস্যা


জালানি

জালানি বাংলাদেশের এ শিল্প প্রসারে প্রধান অন্তরায়,


বিশেষ করে গ্যাস ও বিদ্যুৎ। বিশেষজ্ঞদের মতে, জালানি
সমস্যার সমাধান হলে এ শিল্পের প্রসার খুব দ্রুত ঘটবে।

যোগাযোগ

যোগাযোগ এ শিল্প প্রসারের ক্ষেত্রে আরেকটি অন্যতম


বাধা। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সব ধরনের যোগাযোগ
ব্যবস্থার (সড়ক, রেল ও নৌপথ) উন্নয়ন ঘটালে
বাংলাদেশে এ শিল্পের প্রসার ঘটবে।

গবেষণা
যেকোন শিল্প প্রসারের ক্ষেত্রে গবেষণা বিশেষভাবে
গুরুত্বপূর্ণ। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিবেদন মতে, বিশ্বের
উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর গড়ে ১৩৫ বিলিয়ন ডলার
গবেষণা খাতে খরচ করে থাকে। যেসব দেশের গবেষণা
যত উন্নত, সেসব দেশে শিল্পের প্রসার তত বেশি।

দক্ষ মানবসম্পদ

দক্ষ মানবসম্পদের অভার কোন শিল্প প্রসারের জন্য


অন্তরায়। যদিও এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ওষুধশিল্প খাতে
মেধাবী ও কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন একটি বিশাল
মানবসম্পদ রয়েছে, কিন্তু পর্যাপ্ত প্রশিক্ষন ও সুযোগের
অভাবে সেই সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছে
না।

আন্তর্জ াতিক স্বীকৃতি

বাংলাদেশের ওষুধের মান আন্তর্জ াতিকসম্পন্ন হলেও, ওষুধ


নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো সে স্বীকৃ তি অর্জ ন
করতে সমর্থ হয়নি। এ ছাড়া এখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
(ডব্লিউএইচও)-এর অনুমোদিত সরকারি মান যাচাইকারী
কোনো ল্যাবরেটরি নেই।

মান নিয়ন্ত্রণ

কোন ওষুধ রপ্তানি ও আন্তর্জ াতিক স্বীকৃ তির অর্জ নের জন্য
মান নিয়ন্ত্রণ একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক সময়
বাংলাদেশের ওষুধের মান নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে, এবং
এখনও মাঝে মাঝে নিম্নমানের ওষুধ খেয়ে সাধারণের
মৃত্যুর খবর শোনা যায়।

রপ্তানি প্রক্রিয়া

অন্যান্য দেশের তু লনায় অনেক সময় আমলাতান্ত্রিক


জটিলতার কারনে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি প্রক্রিয়ায় অনেক
বেশি সময় লাগে।

চোরাচালান

ওষুধ সমিতির তথ্যমতে, সারা দেশে অবৈধ দোকানের


সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষাধিক। রাজধানীর মিটফোর্ড পাইকারি
ব্যবসায়ীদের তথ্যানুযায়ী, প্রতিবছর চোরাচালানের মাধ্যমে
এক হাজার কোটি টাকারও বেশি বিদেশি ওষুধ দেশে
আসে। এবং অভিজ্ঞদের মতে, এ চোরাচালান রোধ করা
গেলে দেশীয় ওষুধের বাজার চাহিদা আরও বাড়বে।
আইনি ও নীতিগত বাধা

বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের ওষুধ রফতানির ক্ষেত্রে কিছু


আইনি ও নীতিগত বাধা আছে। সেসব বাধা দূর করার
লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বর্ত মানে বিশ্বের ৫০টির অধিক


দেশে বাংলাদেশের ঔষধ রপ্তানি হয়। ঔষধ শিল্প দেশের
অর্থনীতিতে বিরাট ভু মিকা রাখলেও এর অধিকাংশ
কাঁচামাল দেশের বাহিরে থেকে আমদানি করতে হয়। শুধু
তাই নয়, দেশের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ঔষধ
আমাদের দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোই উৎপাদন করে। তাই
এই শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক কমানোর
দাবি করেন।

আইসিটি
বাজেটঃ
আইসিটি খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে
১৩ হাজার ৭৪ কোটি ২৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
আগের বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ৮৯৭
কোটি ৭১ লাখ ১১ হাজার টাকা।
ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা ব্লকচেইন প্রযুক্তি চালু করার ঘোষণা
এসেছে নতু ন বাজেটে।

সম্ভবনাঃ
তথ্যপ্রযুক্তির আউটসোর্সিং, বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে
আউটসোর্সিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

বিশ্বে বছরে এক ট্রিলিয়ন মার্কি ন ডলারের বাজার রয়েছে


আউটসোর্সিংয়ে। প্রতিবেশী দেশ ভারত এখাতে আয় করছে
১০০ বিলিয়ন ডলার। এখাতে বছরে আয় ৩০০ মিলিয়ন
মার্কি ন ডলার। এর সঙ্গে ফ্রিল্যান্স-আউটসোর্সিং
পেশাজীবীরা আরও প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার আয়
করছে। ফলে বিশ্বের ৫০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের
অবস্থান এখন ২২তম। ২০২১ সালে আউটসোর্সিং থেকে ৫
বিলিয়ন ডলার আয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। তাতে
জিডিপিতে এ খাতের অবদান দাঁড়াবে ৫ শতাংশে।
বর্ত মানে এ খাতে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ যুক্ত থাকলেও,
ভবিষ্যতে ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের বিশাল সম্ভাবনা
দেখছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তারা।
সরকার এর পরিকল্পনা
২০২১-২৩ সালের মধ্যে সারা দেশে ৫জি ইন্টারনেট সেবা
পৌঁছে দেয়া হবে। সরকারি সব কর্মকাণ্ডের চালিকাশক্তি
হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। বাজেট বত্তৃদ্ধতায় বলা হয়েছে,
মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দফতর, উপজেলা, জেলা, বিভাগসহ
১৮ হাজার ৪৩৬টি সরকারি অফিসকে একীভূ ত
নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা হয়েছে। ২৮টি
হাইটেক/সফটওয়্যার পার্ক স্থাপন করা হয়েছে।
সরকারিভাবে জাতীয় ডাটা সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
চালু হয়েছে ভূ মি ব্যবস্থাপনার অটোমেশন। ইতিমধ্যে
অনলাইনে খতিয়ান সরবরাহ, ই-নামজারি ও ই-
সেটেলমেন্ট ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

পর্যটন শিল্প
পর্যটন এক ধরনের বিনোদন, অবসর অথবা ব্যবসায়ের
উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থান কিংবা এক দেশ থেকে
অন্য দেশে ভ্রমণ করাকে বুঝায়। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশে পর্যটন শিল্প হিসেবে স্বীকৃ তি পেয়েছে। এছাড়াও,
বিশ্বব্যাপী অবসরকালীন কর্মকাণ্ডের অন্যতম মাধ্যম
হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জ ন করেছে। যিনি আমোদ-প্রমোদ বা
বিনোদনের উদ্দেশ্যে অন্যত্র ভ্রমণ করেন তিনি পর্যটক
নামে পরিচিত। ট্যুরিস্ট গাইড, পর্যটন সংস্থা প্রমূখ সেবা
খাত পর্যটনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ - উভয়ভাবেই
জড়িত রয়েছে।

পর্যটন শিল্পের অর্থনৈতিক উপযোগিতা


২০১০ সালে ৯৪০ মিলিয়নেরও অধিক আন্তর্জ াতিক পর্যটক
বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ করেন। ২০০৯ সালের তু লনায় এ সংখ্যা
৬.৬% বেশি ছিল।২০১০ সালে আন্তর্জ াতিক পর্যটনে ৯১৯
বিলিয়ন মার্কি ন ডলার বা ৬৯৩ বিলিয়ন ইউরো।

বিশ্বের অনেক দেশে পর্যটন খাত অর্থনৈতিক উন্নয়নে


অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূ মিকা পালন করে। তন্মধ্যে - ফ্রান্স,
মিশর, গ্রীস, লেবানন, ইসরায়েল, মার্কি ন যুক্তরাষ্ট্র,
যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, থাইল্যান্ড অন্যতম। এছাড়াও
দ্বীপ রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত মৌরীতাস, বাহামা, ফিজি,
মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, সিসিলিতেও পর্যটন শিল্প ব্যাপক
বিকাশ লাভ করেছে। পর্যটনের মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণের
অর্থ মালামাল পরিবহন এবং সেবা খাতে ব্যয়িত হয় যা
বিশ্বের মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ৫%। অর্থনীতির
সহায়ক সেবা খাত হিসেবে পর্যটনের সাথে জড়িত রয়েছে
ব্যাপকসংখ্যক লোক। এরফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক
জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।[৮] সেবা
খাত বা শিল্পের মধ্যে রয়েছে পরিবহন ব্যবস্থা যাতে
বিমান, প্রমোদ তরী, ট্যাক্সিক্যাব; আতিথেয়তা সেবায়
থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা যাতে হোটেল, রিসোর্ট ; এবং
আমোদ-বিনোদনের মধ্যে চিত্তবিনোদন পার্ক , ক্যাসিনো,
শপিং মল, সঙ্গীত মঞ্চ ও থিয়েটার অন্যতম।

বাংলাদেশের পর্যটন
বাংলাদেশে পরিচিত অপরিচিত অনেক পর্যটক-আকর্ষক
স্থান আছে। বাংলাদেশের প্রাকৃ তিক সৌন্দর্যে যুগে যুগে
ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে প্রত্মতাত্বিক নিদর্শন,
ঐতিহাসিক মসজিদ এবং মিনার, পৃথিবীর দীর্ঘতম
প্রাকৃ তিক সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, অরণ্য ইত্যাদি অন্যতম।
এদেশের প্রাকৃ তিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটি এলাকা বিভিন্ন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে
বিশেষায়িত । বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হচ্ছে
বাংলাদেশের কক্সবাজার।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা
বাংলাদেশের প্রাকৃ তিক সৌন্দর্যে যুগে যুগে ভ্রমণকারীরা মুগ্ধ
হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে এ সৌন্দর্যের লীলাভূ মি বাংলাদেশে
পর্যটন শিল্প উন্নয়নের সম্ভাবনা অপরিসীম। নতু ন করে
কৌশল ঠিক করে সম্ভাবনার সবটু কুকে কাজে লাগিয়ে
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পর্যটনে মডেল হতে পারে।
তু লনামূলকভাবে বাংলাদেশ স্বল্প আয়তনের দেশ হলেও
বিদ্যমান পর্যটক আকর্ষণে যে বৈচিত্র্য তা সহজেই
পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে। পৃথিবীতে পর্যটন শিল্প
আজ বৃহত্তম শিল্প হিসেবে স্বীকৃ ত। পর্যটন শিল্পের বিকাশের
ওপর বাংলাদেশের অনেকখানি সামগ্রিক উন্নয়ন নির্ভ র
করছে। দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে কর্মসংস্থান
ঘটবে ও বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন
সফল হবে। ভিন্ন ভিন্ন দেশের প্রাচীন যুগের ইতিহাস ও
শিল্প, সাহিত্য, কালচার ও প্রথার সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত
ঐতিহাসিক স্থান দেখার জন্যও পর্যটকরা নিজ দেশের
সীমানা পেরিয়ে দূর-দূরান্তে ছু টে চলে প্রতিনিয়ত। পর্যটন
হলো একটি বহুমাত্রিক শ্রমঘন শিল্প। এ শিল্পের
বহুমাত্রিকতার কারণে বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ডের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের
সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি অনুদান ও
সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় সাধন করার
পাশাপাশি উন্নত অবকাঠামো, সঠিক পরিকল্পনা ও
রাজনৈতিক স্থিতিশীল অবস্থা দরকার পর্যটনের জন্য।
পর্যটন শিল্পের উপাদান ও ক্ষেত্রগুলো দেশে ও বিদেশে
আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের
অধিকতর বিকাশ ঘটানো সম্ভব।

পর্যটন শিল্প নিয়ে সরকার এর পরিকল্পনা


২০১৯-২০ অর্থবছরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও
পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার
৪২৬ কোটি টাকা।

কক্সবাজারের সাবরাং-এ বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি


এক্সক্লুসিভ পর্যটন এলাকা (Exclusive Tourist Zone)
স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল
সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পটকে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের
উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সমস্যাসমূহ


বাংলাদেশের যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত অসুবিধা
ছাড়াও, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে
পর্যটকরা উদ্বিগ্ন থাকেন। এছাড়া পর্যটন শিল্পের প্রচার
এবং প্রসারের জন্য সরকারি-বেসরকারি উভয়ের
উদ্যোগের অভাব রয়েছে। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যটকরা
ছিনতাইসহ নানা রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।
বিশেষত নারী ও বিদেশি পর্যটকরা বেশি সমস্যায় পরেন।
দিনের বেলায় ফেরিওয়ালাদের উৎপাত ছাড়াও পর্যটন
স্পটে জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্যের কারণে পর্যটকেরা
অনুৎসাহিত হন ।

পরিবহণ খাত
যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নের মধ্য দিয়ে
বাংলাদেশ যথেষ্ট অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জ ন করতে পারে।
এতে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তাদের অবস্থান আরও
জোরদার হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কেবলমাত্র
বিনিয়োগ বৃদ্ধি নয়, সেবা ব্যবস্থার ওপরও জোর দিতে
হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে
গত কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী
পরিবহন। এতে রেলের আয়ও প্রতি বছর বাড়ছে। এর
মধ্যে গত অর্থবছরই রেলের যাত্রী পরিবহন বেড়েছে প্রায়
১৬ শতাংশ। এছাড়া পণ্য পরিবহন বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
এতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির আয়
বেড়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ। আর পাঁচ বছরে রেলের আয়
বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যয় বাড়ায় রেলওয়ের লোকসান


কমানো যায়নি। ফলে গত পাঁচ বছরে সংস্থাটির
লোকসানও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

বাংলাদেশ বিমান
১৯৯১-৯২ থেকে ২০০৩-০৪ অর্থবছর পর্যন্ত লাভজনক
প্রতিষ্ঠান ছিল বিমান। এরপর থেকে টানা লোকসানে পড়ে
প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিমানকে
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের
দুই বছরই লাভ করে বিমান। এরপর ২০০৯-১০ থেকে
২০১৩-১৪ পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর লোকসান দেয় বিমান।
তারপর তিন অর্থবছর লাভ করে। এরপর ২০১৭-১৮
অর্থবছরে এসে আবারও লোকসান দেয় বিমান। গত ১০
বছরের মধ্যে ৬ বছরে বিমানের মোট লোকসান ১
হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। বাকি চার অর্থবছর মোট
লাভ হয় ৭৭৭ কোটি টাকা।

রেমিটেন্স
২০১৮ সালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় অর্জ নকারী
১০টি দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। ওই
বছরে বিশ্বব্যাপী ৫২ হাজার ৯০০ কোটি মার্কি ন ডলারের
প্রবাসী আয় পেয়েছে বিভিন্ন দেশ, যা আগের বছরের
চেয়ে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক
ফোরাম (ডবিø উইএফ) সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ
করেছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে


থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিট্যান্স। বর্ত মানে
এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
অবস্থান করছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের
অবদান ১২ শতাংশের মত। স্থানীয় বাজারে ডলারের
তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা
পদক্ষেপের কারণে বেশ কিছু দিন ধরেই রেমিট্যান্স বাড়ছে
বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্ত ারা।

এদিকে রেমিট্যান্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি


মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।
গত ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রিজার্ভে র পরিমাণ ছিল
৩৩ বিলিয়ন ডলার। আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান
ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জুন-জুলাই মেয়াদের ১
বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি বিল পরিশোধের পর
রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছিল।
বাংলাদেশ, ভু টান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল,
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্ত মানে
আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য
আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর
মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের টাকা উৎপাদনশীল খাতে


বিনিয়োগের জন্য একটি ‘মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরি করার
উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে রেমিটেন্স আহরণ বাড়াতে
প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ হারে
প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। প্রবাসীদের
কষ্টার্জি ত অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রিজার্ভে র টাকায়
সভরেন বন্ড ইস্যু করার পরিকল্পনা করছে অর্থমন্ত্রণালয়।
এছাড়া সব ধরনের হয়রানিমুক্ত থেকে দ্রুত দেশে
রেমিটেন্স নিয়ে আসতে ব্যাংকিং খাতে বেশকিছু কর্মসূচী
নিয়ে আসা হচ্ছে। রেমিটেন্স বিনিয়োগে কর অবকাশ
সুবিধা, ওয়ানস্টপ সার্ভি স নিশ্চিত এবং অর্থনৈতিক
অঞ্চলগুলোতে প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট
কর্তৃ পক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হবে।

সূত্রমতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটি প্রবাসী বাঙালী


বসবাস করছেন। বছরে প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিটেন্স
আসছে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। গত কয়েক
বছর ধরে সরকারের নানামুখী উদ্যোগে রেমিটেন্স
আহরণের পরিমাণ ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রস্তাবিত
বাজেটে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণাটি প্রবাসীরা ইতিবাচক
হিসেবে দেখছেন। ইতোমধ্যে সরকারের এ উদ্যোগকে
সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রবাসী ভাই-বোনেরা। বেশি পরিমাণ
রেমিটেন্স পাঠানোর পাশাপাশি কষ্টার্জি ত অর্থ তারা এখন
বিনিয়োগ করে লাভবান হতে চান। সুনির্দি ষ্ট পরিকল্পনা না
থাকায় এতদিন রেমিটেন্সের টাকা ভোগবিলাস এবং
অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করা হয়েছে। এখন রেমিটেন্সের
ব্যাপারে সরকারী উদ্যোগ থাকায় উৎসাহী হচ্ছেন
প্রবাসীরা। এ কারণে আশা করা হচ্ছে, নতু ন অর্থবছরে
রেমিটেন্স আহরণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।

বাংলাদেশ এর অর্থনৈতিক সম্ভবনা


গোল্ডম্যান স্যাক্স এর সাম্প্রতিক সমীক্ষায় ব্রাজিল, রাশিয়া,
ভারত, চায়না এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বিশ্বেও
সম্ভাবনাময় ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্তর্ভু ক্ত করা
হয়েছে। এ রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতির আকার আগামী ২০৩০
সাল নাগাদ ইউরোপের ২৭টি রাষ্ট্রের সম্মিলিত অর্থনীতির
আকারের চেয়েও বড় হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র পূর্বাভাস
দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন নির্ভ রযোগ্য গবেষণা সংস্থা কর্তৃ ক
উদীয়মান অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র ক্লাবের সদস্য
হিসাবে বাংলাদেশের নাম গত কয়েক বছর ধরেই
আলোচিত হচ্ছে। গোল্ডম্যান স্যাক্সের মতে, বাংলাদেশে
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যুত, জ্বালানি, সিমেন্ট ও
টেলিযোগাযোগ খাত বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে সম্ভাবনাময়
ক্ষেত্র এবং নাউট ফ্রাঙ্ক ও সিটি গ্রুপ কর্তৃ ক যৌথভাবে
প্রণীত ‘দ্য ওয়েলথ রিপোর্ট ২০১২’ প্রতিবেদনে বিশ্বের
সম্পদ প্রবাহ ও সম্ভাব্য বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০৫০ সালের
মধ্যে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জ নে প্রথম চারটি দেশের মধ্যে
নাইজেরিয়া, ভারত ও ইরাকের পরেই বাংলাদেশের
অবস্থান। শুধুমাত্র তাই নয়, গার্ডি য়ানের মতে, ২০৫০
সালে প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পশ্চিমা দেশগুলোকে
ছাড়িয়ে যাবে।

You might also like