Professional Documents
Culture Documents
SR ACT Declaratory suit-WPS Office
SR ACT Declaratory suit-WPS Office
আমাদের ধারণা স্পষ্ট নয়।আজকে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে ছোট ছোট করে ঘোষণামূলক মামলার বিষয়গুলো ক্লিয়ার
করার চেষ্টা করব।
কোন ব্যক্তির আইনগত পরিচয় এবং সম্পত্তিতে স্বত্বের অধিকার যদি অন্য কেউ অস্বীকার করে তাহলে তার বিরুদ্ধে
ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যায়।তার মানে কোন ব্যক্তি ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করে তার আইনগত পরিচয় বা
চরিত্র অথবা সম্পত্তির স্বত্ব রক্ষা করতে পারে।আইনগত পরিচয় এবং আইনগত চরিত্র দুটি সমার্থক শব্দ।উদাহরণ-বেআইনী
বরখাস্ত আদেশের বিরুদ্ধে চাকুরীতে থাকার অধিকার আইনগত পরিচয়ের অন্তর্ভু ক্ত। আবার মনে করেন,রোকেয়া বেগমকে
এস.এস.সি পরীক্ষার হল থেকে বেআইনী উপায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে।এক্ষেত্রে রোকেয়া বেগম এস.এস.সি পাশ করেছে মর্মে
ঘোষণা দেয়ার জন্য সুনির্দি ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুসারে মামলা দায়ের করতে পারবে।এখানে তার আইনগত
পরিচয়ের উপর আঘাত আনা হয়েছে।তাই সে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে পারবে।স্বত্ব(Title) কথাটির সহজ অর্থ হল
কোন স্হাবর সম্পত্তির উপর কারো মালিকানা।উদাহরণ-সাদমান মুশরিফাত ১২ শতাংশ জমির মালিক।এখন মীম যদি এই
১২ শতাংশ জমিতে সাদমান মুশরিফাতের স্বত্ব(Title) অস্বীকার করে তাহলে সাদমান মুশরিফাত মীমের বিরুদ্ধে সুনির্দি ষ্ট
প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী ১২ শতাংশ জমিতে সাদমানের স্বত্ব আছে এই মর্মে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে
পারবে।
কোন ব্যক্তির আইনগত পরিচয় রক্ষার জন্য ঘোষণামূলক মামলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।কোন ব্যক্তি কোন পদের
অধিকারী।এখন যদি অন্য কোন ব্যক্তি তাকে বেআইনীভাবে পদচ্যুত করে তাহলে পদচ্যুত ব্যক্তি ঘোষণামূলক মামলা দায়ের
করে তার পদ ফিরে পেতে পারে।তাছাড়া কোন সম্পত্তিতে সম্পত্তির মালিকের অধিকার নিরবিচ্ছিন্ন এবং নির্বিঘ্ন করার জন্য
ঘোষণামূলক মামলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।মনে করুন,কামরুল হাসান কোন সম্পত্তির মালিক এবং দখলকার।এখন
সাজিদ নামে কোন ব্যক্তি যদি সেই মালিকানা অস্বীকার করে কামরুল হাসানকে তার সম্পত্তি থেকে বেদখল করতে চায়
তাহলে কামরুল হাসান উক্ত সম্পত্তির মালিক এবং দখলকার হিসেবে সাজিদের বিরুদ্ধে সুনির্দি ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা
অনুযায়ী ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে পারবে।
কোন মামলার মূল প্রতিকারের ফলস্বরূপ আগত প্রতিকারকে আনুষঙ্গিক প্রতিকার(Consequential relief) বলে।প্রধান
কোন প্রতিকারের সহগামী প্রতিকার হলো আনুষঙ্গিক প্রতিকার।তার মানে কোন মামলায় মূল প্রতিকার ছাড়া অন্যান্য যে
সকল প্রতিকার চাওয়া হয় তাই আনুষঙ্গিক প্রতিকার।উদাহরণ-স্বত্ব ঘোষণার মামলায় স্বত্ব ঘোষণার সাথে সাথে দখল
উদ্ধারের প্রার্থনাও করতে হবে।এখানে স্বত্ব আছে এই মর্মে ঘোষণা চাওয়া মূল প্রতিকার।আর দখল উদ্ধারের প্রার্থনা
আনুষঙ্গিক প্রতিকার।তার মানে বাদী যখন সম্পত্তির দখলে থাকবে না তখন বাদীকে আনুষঙ্গিক প্রতিকার হিসেবে দখল
উদ্ধারের প্রার্থনাও করতে হবে।সুনির্দি ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারায় স্বত্বের মামলায় আনুষঙ্গিক প্রতিকার প্রার্থনা করাকে
বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অর্থ বিষয়ে কখনো ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যায় না।অর্থ বিষয়ে সবসময় অর্থ মোকদ্দমা (Money suit) দায়ের
করতে হবে।টাকা পাওয়ার ঘোষণা প্রদানের জন্য সুনির্দি ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারার আওতায় মামলা দায়ের করা যায়
না।বাদী যদি বিবাদীর নিকট হতে টাকা পাওয়ার অধিকারী হয় তাহলে বাদী টাকা পাওয়ার অধিকারী মর্মে ঘোষণা দাবী
করতে পারবে না।
বিবাহ বিষয়ে ঘোষণামূলক মামলা করা যায়।বাদী বিবাদীকে বিবাহ করেছেন কিনা এই মর্মে দেওয়ানী আদালতে
ঘোষণামূলক মোকদ্দমা দায়ের করা যায়।বাদী এবং বিবাদী স্বামী এবং স্ত্রী কিনা এই মর্মেও ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা
যায়।রোমেল আফরিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়নি এই মর্মে রোমেল ঘোষণামূলক মামলা দেওয়ানী আদালতে দায়ের
করতে পারবে।কারণ ইহা রোমেলের আইনগত চরিত্র-কে প্রভাবিত করে।মামলার পক্ষগণের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে
কিনা এই মর্মেও ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যায়।
ছ.বেনামী কারবার নিয়ে ঘোষণামূলক মামলা:
কোন বেনামীদার নিজেকে প্রকৃ ত মালিক বলে ঘোষণা করলে প্রকৃ ত মালিকের আইনগত অধিকার লঙ্ঘিত হয়।তার জন্য
প্রকৃ ত মালিক বেনামদারকে বেনামদার ঘোষণার জন্য ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে পারে।তবে বেনামী কারবারটি
১৯৮৪ সালের ১৪ এপ্রিলের পূর্বের হতে হবে।কারণ The Land Reforms Ordinance, 1984-এর ৫ ধারার মাধ্যমে সকল
প্রকার বেনামী কারবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।৫ ধারায় বলা হয়েছে,"No person shall purchase any immoveable
property for his own benefit in the name of another person."এই অধ্যাদেশ ১৯৮৪ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে
কার্যকর হয়।সুতরাং এই তারিখ হতে বেনামীতে সম্পত্তি ক্রয় করলে তার কোন আইনগত স্বীকৃ তি থাকবে না।তার মানে যে
ব্যক্তির নামে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রেশন হবে সে ব্যক্তিই ক্রয়কৃ ত সম্পত্তির প্রকৃ ত মালিক বলে বিবেচিত হবে।বেনামী
কারবারটি যদি ১৯৮৪ সালের ১৪ এপ্রিলের আগে হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যাবে।১৯৮৪ সালের
১৪ এপ্রিলের পর থেকে বেনামী কারবার করার আর কোন সুযোগ নেই।কারণ The Land Reforms Ordinance, 1984-
এর ৫ ধারার মাধ্যমে বেনামী কারবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রত্যেক ব্যক্তির কোন ট্রেডমার্ক নিরুঙ্কুশভাবে ব্যবহারের অধিকার রয়েছে।কোন ব্যক্তির ট্রেডমার্ক ব্যবহারে হস্তক্ষেপ
করলে,তা তার আইনগত অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে প্রতীয়মান হবে।তখন তিনি সুনির্দি ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুসারে
ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে পারবেন।
পুরোপুরি সরকারী কিংবা বিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃ পক্ষের অধীনে নয় তাদের চাকুরীর বিষয়ে সুনির্দি ষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২
ধারা অনুসারে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যায়।উদাহরণ-আধা সরকারী কলেজের শিক্ষকগণ তাদের চাকুরীর
শর্ত াবলী বিষয়ে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে পারেন।একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন।১৯৮০ সালের প্রশাসনিক
ট্রাইব্যুনাল আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে সরকারী ও বিধিবদ্ধ কর্তৃ পক্ষের চাকুরীর শর্ত াবলীর প্রশ্নে কোন মামলা
প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ছাড়া অন্য কোন আদালত গ্রগ্রহণ করতে পারবে না।The Administrative Tribunal Act,1980-এর
৪ ধারায় সরকারী ও বিধিবদ্ধ কর্তৃ পক্ষের চাকুরীর শর্ত ও অবস্হা সম্পর্কে বিচার করার একচেটিয়া ক্ষমতা প্রশাসনিক
ট্রাইব্যুনালকে প্রদান করা হয়েছে।তার মানে ১৯৮০ সালের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে সরকারী
কর্মচারী কর্মকর্ত াদের চাকুরীর বিষয়ে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যাবে না।পরবর্তী সময়ে ১৯৮৪ সালে The
Administrative Tribunal (Amendment) Ordinance, 1984 -জারির মাধ্যমে বিধিবদ্ধ সরকারী কর্তৃ পক্ষের কর্মকর্ত া-
কর্মচারীদেরকেও প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের আওতায় নিয়ে আসা হয়।তাই এখন সরকারী ও বিধিবদ্ধ কর্তৃ পক্ষের চাকুরীতে
নিয়োজিত কর্মকর্ত া কর্মচারীদের তাদের চাকুরী বিষয়ে অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করতে
হবে।
ধর্মীয় কাজ করার অধিকার একটি আইনগত অধিকার।তাই কেউ যদি ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ করে তাহলে সুনির্দি ষ্ট
প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুসারে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যায়। ধর্মীয় কাজে হস্তক্ষেপ করা হতে বিরত রাখার
জন্য ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যায়।উদাহরণ-কোন প্রকার বিভক্তি ছাড়া কোন মসজিদে নামাজ আদায় করা
মুসলমানদের আইনগত অধিকার।মসজিদের কাছে কেউ বাজনা বাজালে তা এই অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে।ইহা
হতে লোকজনকে বিরত রাখার জন্য ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করা যাবে।[AIR 1964 Orissa 18]
কোন মন্দিরের সেবাইতের অধিকার এবং এর সাথে জড়িত সম্মান ও সুবিধাদির অধিকার আইনগত অধিকার বলে গণ্য
হবে।দেওয়ানী আদালতে ঘোষণামূলক মামলা দায়েরের মাধ্যমে এই অধিকার রক্ষা করা যাবে।
সাধারণত ঘোষণামূলক মামলা ৬ বছরের মধ্যে দায়ের করতে হয়।তামাদি আইনের ১২০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,
ঘোষণামূলক মামলার প্রকৃ ত কারণ উদ্ভব হওয়ার সময় হতে ৬ বছরের মধ্যে ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে হবে।
এক্ষেত্রে কোন আনুষঙ্গিক প্রতিকারের প্রার্থনা করা যাবে না।আনুষঙ্গিক প্রতিকার চাওয়া হলে আনুষঙ্গিক প্রতিকারের প্রকৃ তি
অনুসারে তামাদির মেয়াদ নির্ধারিত হবে।উদাহরণ -কোন ব্যক্তি সম্পত্তি হতে বেদখল হলে স্বত্ব ঘোষণাসহ খাস-দখলের
মামলা ১২ বছরের মধ্যে দায়ের করতে হবে।[PLD 1979 Pesh.87]
সাধারণত ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে হলে সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা কোর্ট ফি দিতে হবে।কিন্তু আনুষঙ্গিক প্রতিকারসহ
ঘোষণামূলক মামলা দায়ের করতে হলে মূল্যানুপাতিক কোর্ট ফি প্রদান করতে হবে।
#পরিশেষে বলতে চাই ঘোষণামূলক মামলা মূলত দেওয়ানী প্রকৃ তির মামলা।এই ধরনের মামলা সবসময় দেওয়ানী আদালতে
দায়ের করতে হয়।এই টপিক সম্পর্কে আমি ছোট ছোট আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছি।তাতে আপনারা
কিছুটা উপকৃ ত হলেও আমার পরিশ্রম সার্থক হবে।ধন্যবাদ সবাইকে...