You are on page 1of 59

Name: Sheikh Synthia Rahman

Batch: 31
Department: Economics
Article: নেশা ও একজন মায়ের গল্প

মনীষী নেপোলিয়ান বলেছিলেন,” আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি একটি শিক্ষিত জাতি দেব।“ উনার এই
উক্তিটিতে সমাজে মায়েদের গুরুত্ব কতখানি তার পরিচয় মেলে। কিন্তু সব মা কি এক? হ্যা আজ আমি বলবো
এমন একটি মায়ের গল্প যার নাম মিতু । ড্রাগ্সের ভয়ংকর থাবা যাকে করে দিয়েছিল এক বিদ্ধংসি নারী। আর এর
স্বীকার হয়েছিল তার স্বামী লিখন, শশুর-শাশুড়ি এবং সন্তান।
এবার আসুন মূল গল্পে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক দুটোতেই ভাল ফল করায় মিতু কে তার বাবা-মা উচ্চ
শিক্ষার জন্য বিশ্ব বিদ্যালয়ে পাঠান। কিন্তু সেই শিক্ষা লাভ করতে গিয়ে তার পরিচয় হয় কিছু মাদকাসক্ত বন্ধুর
সাথে। যারা মিতু কে বোঝায় যে অন্য সকল ক্ষেত্রের মত নেশায়ও নারী-পুরুষের সম অধীকার আছে। (বি: দ্র:
নারীদের ন্যায্য অধীকারের বিরোধী নই আমি ।) মাদকের ফলে মিতু র এমন অবস্থা হয়াছিল যে বন্ধুরা অন্য
মেয়েদের উত্যপ্ত করলে সে তাতে সহোযগিতা করতে দ্বীধাবোধ করতো না।
ওদিকে মিতু যখন অধ:পতনের সীমা অতীক্রম করতে চলেছে তখনি তার বাবা-মা কিছু না জানিয়েই তাকে
বিয়ে দেয় লিখনের সাথে। লিখন, যে ছিল মধ্যবিত্য বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। যারা খুব সাধ করে বিয়ে
দিয়েছিলেন ছেলেকে। কিন্তু না মিতু র অসভ্য আচরণের কারণে তাদেরকেও চলে যেতে হয় শহর থেকে গ্রামে।
আর লিখন..............। অনেক স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু সব সপ্ন ধূলিষ্যাত হয়ে যায়, যখন তাকে বাসর রাতে স্ত্রীর
জন্য নেশার উপকরণ এনে দিতে হয়। তারপরও সব মুখ বুজে সহ্য করে নিচ্ছিল সে।
এরি মাঝে খবর আসে বাবা হতে চলেছে সে। জীবনতো আর থেমে থাকে না তাই নিজ সন্তানকে নিয়ে নতু ন করে
বাচার স্বপ্ন দেখেছিল লিখন। কিন্তু অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায়, কারণ মায়ের দুধ পানের কারণে
মাত্র আট মাস বয়সে শিশুটির শরীরে ধরা পড়ে ড্রাগ্স।
তারপর .....................
আচ্ছা মিতু র বাবা- মা কি পারতো না মিতু কার সাথে মিশছে, কি করছে তা লক্ষ্য করতে। এমনি অনেক বাবা-
মা আছেন যারা খেয়াল করেন না তাদের সন্তান কি করছে? যেমন ছিল ঐশী । বাবা-মায়ের আন্ধত্বের ফলে
নেশাগ্রস্ত মেয়ের হাতে প্রাণ দিতে হয় তাদের। এবং আদরের কন্যাটিও এখন ফাসির সেলে।
বিভিন্ন তথ্যে দেখা গেছে তথাকথিত শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরাই মাদকাসক্ত বেশি এবং মহিলা ধুমপায়ীর মধ্যে
বাংলাদেশ প্রধম স্থানে।
নেশার কারণ:
v কু সঙ্গ।
v প্রেমে অসফলতা।
v চাকরি ও আন্যান্য ক্ষেত্রে অসফলতা।
যে আপনাকে ক্ষতির মধ্যে ঠেলে দেয় সে কি আসলে আপনার বন্ধু? সে তো শত্রুর চেয়ে অধম।
শরতচন্দ্রের দেবদাসের মত অনেকেই প্রেমে অসফল হলে নেশাকে আকড়ে ধরেন। বলি, ভাইরে গল্প আর
বাস্তবতা এক না।
আর রইল চাকরি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অসফলতা, সেক্ষেত্রে প্রশ্ন ছু ড়ে দিতে হয়। ভারতের পপধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
চা বিক্রি করতেন, এ্যামেরিকার সাবেক প্রেসিদেন্ট এ্যাব্রাহাম লিঙ্কন কাঠু রিআর ছেলে ছিলেন, জাতিয় কবি কাজি
নজরুল ইসলাম রুটির দোকানে কাজ করতেন, গ্রীসের এরিস্টেটল ওনাসিস বিশ্বের সেরা ধনি হয়েছিলেন,
অকিজ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আকিজুদ্দিন এবং বঙ্গোবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উনারা কোন নেশা করে
ইতিহাসে নিজেদের নাম অঙ্কন করেছেন? না নেশা নয় উনাদের আত্ম পত্যয় আর পরিশ্রম উনাদের মহান
করেছেন।
“নেশা একটি সামাজিক ব্যধি, তোমরা নেশা করবে না” এ কথা বলেই খালাস। কিন্তু বাস্তবে কয়জন আমরা এটা
নিয়ে ভাবি। বলার অপেক্ষা রাখে না কোভিড-১৯ একটি মরণ ব্যাধী। কিন্তু এ নিয়ে সারা বিশ্ব ততপর। হয়তো
এর একদিন প্রতিকার বের হবে। কিন্তু নেশার প্রতিকার কোথায়?
আমাদের সমাজে অনেক বড় মাপের মানুষ আছেন যারা সামান্য পয়সার লোভে মাদক সরবরাহে ইন্ধন
জোগাচ্ছেন। কেউ কেউ তো সরাসরি বিক্রিও করছেন। তাদের কারণে অনেক ভাল মানুষ নেশার বিপক্ষে কাজ
করতে গিয়েও করতে পারেন না। আর এই সব মাদক সরবরাকারিদের উদ্দেশ্যে এটু কুই বলবো আপানাদের
ঘরেওতো সন্তান আছে। তারা যদি মাদকাসক্ত হয়ে আপনাদের উপর অত্যাচার করে তবে কি খুব ভালো লাগবে?
১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধ, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা দাবি ৬৯- এর গণ অভ্যুথান, ৭১ –এর
মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি সবই সম্ভব হয়েছে বাঙালির দ্বারা। ঠিক তেমনি মাদককেও পরাদুস্থ করতে পারবে এদেশের
মানুষ। শুধু দরকার সচেতনতা আর একতা। আসুন গলায় গলা মিলিয়ে বলি “মাদকের হবে শেষ, গড়বো
সোনার বাংলাদেশ।
Name: Riazul islam Limon
Batch: 31
Department: Pharmacy
Article: সে আমার আলো

ভেবেছিলাম একটা গল্প লিখবো,যখন ভেবেছিলাম লিখবো তখন গল্পের ধরন সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না।
কি লিখবো উপন্যাস?ছোট গল্প?নাকি ভ্রমণকাহিনী!!
হয়ত ভাবছেন,ভ্রমণ কাহিনী?যে কখনও দেশের কোথাও ঘুরতে পারলো না,হয়ত হাসি পাবে কিন্তু
না এ কোন জায়গার ভ্রমন কাহিনী নয়।
জীবনের আঁকাবাকা পথের ভ্রমণ কাহিনী🙂
চলুন শুরু করা যাক,
একটা ছেলে,দেখতে রোগা-পাতল হ্যাংলা,চেহারাও তেমন না উপজাতি ছাপযুক্ত তার কাহিনী। ছোট বেলা
থেকেই আর কোন প্রশংসা না পেলেও সবার মুখে শুনতো সে মেধাবী।
গল্পের খাতিরে ধরেই নেন সে মেধাবী।।
অতীত শুনবেন?
বাদ দেন ওই পচাগলা অতীতে আর না যাই,
আপনাদের একটা আলোর গল্প শোনাই☺
সম্মোহনী সে আলো,চোখ ধাঁধানো কোন আলো নয়,যে আলো দেখলে জীবনের মানে উপলব্ধি হয়,যে আলো
দেখলে আবার মৃত মরুভূ মিতেও প্রাণের সঞ্চার হয়।
সেই আলোর গল্প 💝
আমি বরাবরের মতো আবারও অন্ধকারে নিমজ্জিত, জানেন মানুষের জীবন টা কিন্তু মুভির মতোই,ওই যে
দেখেন না নায়িকার আগমন সবার মনে দোলা দিয়ে যায়।
তেমনি আমার জীবনে আমার আলোর আগমন,আমি তখন মৃতপ্রায়,বাচার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেহীন।
মনে করে অন্ধকারে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল এর মতো আলোক নিয়ে আসে আমার আলো।
যাকে আমি ভালোবেসে ডাকি 'পরী'💝
এই ডাক কোন বাবু,সোনা এদের মতো সস্তা ডাক নয়।
আমার আলো এই নাম টা অর্জ ন করেছে।।
শুনবেন আমাদের গল্প?
জানেন!
এখন আমার আলোর জীবন টাও না মিটমিট জ্বলছে, নিভু নিভু ,আমাকে এখন সে আর আলো দেয় না।আমি
আবারও সেই অন্ধকারের ডাক শুনি,পা টেনে ধরে অন্ধকার। হাত বাড়িয়ে আছি যদি আলো আবার আমাকে
টেনে তু লে🙂
হয়ত কথা টা কেমন লাগলো!!
কিন্তু এর কারণ টাও আমি,আমার আলোর জীবনে দমকা ঝড় এর কারণ আমি।
এ দোষে আমি মৃত্যুদন্ড আশা করলেও,আমার আলো কি আমাকে আজন্ম মৃত্যু যন্ত্রণা উপহার দিতে চায়?
আমার ভ্রমণ কাহিনী টা না এখন হেমলক, বা রোমিও জুলিয়েট এর মতো ট্র‍্যাজিক অবস্থায়।আর আমি
জোকার এর মতো, আমার কোন অবস্থান নেই।শুধু আলোর ক্ষমার প্রতীক্ষা ছাড়া।।
শুনাবো একদিন আমার না আমাদের গল্প,আশায় বুক বাঁধি।
আমার আলোর গল্প,জীবনের একজন পরীর গল্প। 💝
শেষ হয়েও হয় না শেষ, ভালোবেসে মরে যাক প্রতিটা নিঃশ্বাস। 🙂
#StayHomeStaySafe

Name: Mahir Shahriar


Batch: 41
Department: Textile
Article: আমি প্রকৃ তি বলছি

আমার আর্ত নাদে তোমরা কখনই কর্ণপাত করনি। আমি চিৎকার করে বার বার বলেছি, তোমরা আমার
আত্নচিৎকার গ্রাহ্যই কর নি। হ্যা, আমি প্রকৃ তি বলছি। তোমরা, মানুষের উদ্দেশ্যে,
তোমরা নিজেদের খুব উন্নত প্রাণী ভাবতেই পারো। কেননা আজ তোমরা, পাখির ন্যায় আকাশে ভাসতে শিখে
গেছো। মাছের ন্যায় মহাজলরাশির ভেতর ঘুরে বেড়াতে শিখে গেছো। অন্ধকার রাত কাটাতে
চাঁদের ন্যায় আলো জ্বালাতে শিখে গেছ। শুধু শিখতের পারোনি আমার মাঝে একটি মানবপ্রাণী আকারে থাকতে।
তিলে তিলে আমার ফু সফু স জ্বালিয়ে, কেটে ছারখার করেছো। আমার শিরা উপশিরায়
গড়েছো আবর্জ নার স্তূ প। আমি তোমাদের বার বার বলার চেষ্টা করেছি, হাজার বার! তোমরা বোঝেও বোঝার
চেষ্টা কর নি। উত্তাল জলচ্ছাস, প্রবল বন্যা, শোন নি তোমরা। জ্বলন্ত আগ্নেয়শিখা, না শোন নি
তোমরা। তীব্র ঝড়, তোমাদের কানে পৌঁছায় নি। দানবীয় ঘূর্ণিঝড়, তাও শোন নি তোমরা। তোমরা এখনো
আমার আর্ত নাদ শুনতে পাও না, যখন তোমাদের দূষণে মারা যায় সামুদ্রিক মাছ, হিমবাহ গলে
চরম গতিতে, দুর্বিষহ খড়া। না, তোমরা শুনতে পাও না। কত কত খারাপ আমি বয়ে নিয়ে চলেছি, লাগাতার
যুদ্ধ, সীমাহীন লোভ। সেখানে যত ঘৃণা জমে থাকুক না কেন, রোজ যতই মানুষ মারা যাক না
কেন, আমি কি বলতে চাচ্ছি তা শোনার চেয়ে বেশি জরুরি ছিল সদ্য বের হওয়া iPhone'টা। কিন্তু এখন? সে
এসে গেছে (করোনাভাইরাস), বিশ্বের সেই ফাঁদেই বিশ্বকে স্তব্দ করে দিয়েছে। তোমাকে
আমার চিৎকার শুনতে বাধ্য করেছে, তোমাকে গৃহবন্দি থাকতে বাধ্য করেছে, বহু মূল্য দ্রব্য মাথা থেকে ঝেড়ে
ফেলতে বাধ্য করেছে । সে তোমাদের শাস্তি দিতে আসে নি, এসেছে সচেতন করতে। এখন
তোমদের সামনে আমার মতই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই। কি, কেমন লাগছে? সে তোমাদের জ্বর
দিচ্ছে, ঠিক যেমন ভাবে আমার বুকে আগুন জ্বলে। সে তোমাদের শ্বাসকষ্ট দিচ্ছে, ঠিক
যেমন ভাবে দূষণ ছড়িয়ে পরে বাতাশে। সে তোমাদের দূর্বল করে তোলে, ঠিক যেমন ভাবে আমি রোজ হচ্ছি।
কারো আর্ত নাদ শোনা যেমন প্রায় তোমরা ভু লেই গিয়ে ছিলে, তাই তোমাদেরও সে আমার
মতই অবস্থায় এনে ফেলেছে। এখন দেখ, আমার বাতাস কত পরিষ্কার। কেননা মানুষ নামের সেই উন্নত প্রাণীটি
আজ ঘরে বন্দি, ছড়াচ্ছে না দূষণ। প্রাণ খুলে নিশ্বাস নিচ্ছি আমি। এখন তোমরা বুঝে নাও
তোমাদের কোনটা বেশি প্রয়োজন। নিজেকে নিজের সামনে দাড় করাও। আমি আবারো বলছি সে তোমাদের
শাস্তি দিতে আসে নি। আমায় তোমাদের হাত থেকে রক্ষা করতে এসেছে।... আমি প্রকৃ তি
বলছি।
#StayHomeStaySafe.

Name: MD. Mahtab Hossain Tamim


Batch: 30
Department: EEE
Article: নাড়ীর টানে

(১)
ঘড়িতে দুপুর সোয়া একটা। জোহরের আজান দিচ্ছে।স্থানীয় সময় একটা পাচেঁ জোহরের আজান দেয়।ঘড়িটা
দশ মিনিট আগানো।গতকালই ঘড়িটা ঠিক করে দিয়ে গিয়েছিলো অর্নব।ঘড়িটা ঠিক করার পর ডাইনিং
টেবিলের চেয়ারটার উপর দাঁড়িয়ে ঘড়ি হাতে জানতে চেয়েছিলো কয়টা বাজে।অভ্যাশবশত মোবাইল থেকে
অরজিনাল সময়টা দেখে দশ মিনিট বাড়িয়ে ছেলেকে ছেলেকে সময় বলেছিলেন ফারজানা জামান কলি।
ভোরবেলা উঠে সবকিছু গোজগাজ করে স্কুলে যেতে হবে ক্লাস নিতে।কিন্তু কলি ম্যাডাম ভু লে গিয়েছিলেন যে
তাকে আর আগের মতো নিয়মিত ক্লাস নিতে যেতে হয় না।
একটু আগে ভাত খেতে বসেছেন।প্লেটে নরম ভাত আর অপটু হাতে রান্না করা বেগুন আর চিংড়ির তরকারি।
যদিও কলি ম্যাডামের প্রিয় খাবার কিন্তু একটু ও মুখে দিতে পারছেন না।একেতো নরম ভাত তিনি মুখে দিতেই
পারেন না,তার উপর তরকারিতে রসুনটা বেশি হয়ে গেছে।ঝাল তো বলতে গেলে হয়ই নি।কিন্তু তারপরও
খাবারটা খাওয়ার যোগ্য,মনে মনে ভাবলেন কলি ম্যাডাম।তাছাড়া বর্ত মানে উনার শরীরের যে অবস্থা তাতে
করে উনাকে রসগোল্লা এনে দিলেও মুখে রোচবে না। সেটা অবশ্য উনি এমনিতেই পছন্দ করেন না।মিস্টি জিনিস
উনার দুচোখের বিষ।তাছাড়া অর্নব অনেক কষ্ট করে রোজা রেখে রেঁধে দিয়ে গেছে।ওর কষ্টের কথা চিন্তা করে
হলেও খেতে উনাকে হবেই।তাছাড়া ছোটবেলায় কলি ম্যাডামের নানি উনাকে প্রায়ই একটা কথা বলতো,”কষ্ট
করে বর্ড ারের ওইপার দিয়ে দিতে!”অর্থাৎ কোনোমতে গলার ওইপারে ঢেলে দেওয়া।পেটে গেলেই কাজে দিবে।
কোনওমতে খাওয়াটা শেষ করে নামাজ পড়তে চলে গেলেন।রমজানের মাস,অসুস্থতার কারণে রোজাগুলো
হয়তো রাখতে পারছেন না, কিন্তু নামাজটা পড়তেই হবে।এক্ষেত্রে কোনও ওজর চলে না।জীবন থেকে কোনও
কিছু আশা করা ছেড়ে দিয়েছেন দশ বছর আগেই যখন অর্নবের বাবা তাকে ডিভোর্স দিয়ে তাদের ঘরের কাজের
মেয়েকে বিয়ে করে।কলি ম্যাডামের জন্য এটা একটা বড় ধরনের অপমান ছিলো।উনার আত্মসম্মান মারাত্মক
ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলো।এখন জীবনের শেষ প্রান্তে এসব ব্যাপারগুলো ভাবলে ম্যাডামের হাসিই পায়।ভাবতে
থাকেন,”হায়রে,কি কপাল কাজের মেয়েটার।চাকরাণী থেকে রীতিমতো রাজরাণী হয়ে গেলো মেয়েটা।“
কলি ম্যাডাম জানেন তার জীবনে খুব বেশি দিন আর বাকি নেই।আগামীকাল ৩৮ বছর বয়সে পা দিবেন
তিনি।অথচ কতটা আশা,কতটা সাহস,আর অনুপ্রেরণা নিয়ে অর্নবের বাবার সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে সিঙ্গেল
মাদার হিসেবে নতু ন জীবন শুরু করেছিলেন।ছাত্রজীবনে ভাইয়ের মতো বেশ মেধাবী ছিলেন কলি ম্যাডাম।কলি
ম্যাডামের ভাই হাভার্ডে পড়াশুনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন।কলি ম্যাডামও সেরকম লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছিলেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স এবং মাস্টার্স।তাও আবার ফার্স্ট ক্লাস।কিন্তু অর্নবের বাবার
সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবার পর সব উচ্চাশা ভু লে যান।মনে মনে ঠিক করেন ছেলেকে মানুষ করে বিয়ে দিয়ে
তারপর উনার ছু টি।এক সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পেয়ে যান।সবকিছু ঠিকমতোই যাচ্ছিলো।হঠাৎ
একদিন ঝড় আসে।
কলি ম্যাডামের এখনও মনে পড়ে। অন্যান্য সব দিনের মতোই ছিলো দিনটি।ম্যাডাম টানা পাঁচ ক্লাস নিয়ে
টিফিন টাইমে টিচার্স রুমে বসেছেন।হঠাৎ করেই কোমরের বাঁপাশটায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করেচন।কোমরের
এই জায়গাটায় দীর্ঘ একমাস ধরেই হালকা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব করে আসছিলেন।কয়েকদিন ধরেই
ভাবছিলেন ডাক্তার দেখানোর কথা।কিন্তু ক্লাস আর পরীক্ষারে খাতা দেখার ব্যাস্ততায় সময় হয়ে উঠে নি।
তৎক্ষণাৎই উবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো।কয়েকটা টেস্ট দেওয়া হলো।টেস্টের রেজাল্ট পজেটিভ
আসলো।কলি ম্যাডাম ভাবলেন তার শরীর ঠিক আছে।সিরিয়াস কিছু হয় নি।এরপর তিনি নিয়মিত ক্লাস
করাতে লাগলেন।কিন্তু তার শারিরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিলো ক্রমাগত।একদিন কলি ম্যাডামের ভাই
দেশে এসে ম্যাডামের এ অবস্থা দেখে উনাকে তারভ পরিচিত এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চঞ্চল্যকর
এক তথ্য প্রকাশ পায়।
কলি ম্যাডামের পেটে টিউমার ছিলো।যেদিন স্কুলে উনার কোমরে ব্যাথা উঠে সেদিনই উনার টিউমার ব্লাস্ট
হয়।হাসপাতালের যে রিপোরটটিকে উনি পজেটিভ ভেবেছিলেন,সেটার অর্থ ছিলো টিউমারের চিকিৎসা
করানোর জন্য পজেটিভ।আর এতিদিনে চিকিৎসা না নেওয়ায় উনার সারা শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে গেছে।
অনতিবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি হলেন তিনি।দুবছর ধরে ট্রিটমেন্ট চলছে।চলতি বছর ভারত থেকে দেখিয়ে
এনেছিলেন।সেখান থেকে রিলিজ দেওয়া হলো।কলি ম্যাডাম বুঝে গেলেন,”আল্লাহ যে কয়দিন রাখে!”জীবন
থেকে যে এতো দ্রুত বিদায় নিতে হচ্ছে এর জন্য তিনি ব্যাথীত নন।তার ছেলে অর্নব বুয়েটে পড়ছে।ওকে নিয়ে
আপাতত কোনও চিন্তা নেই।বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টু রনামেন্টে তার দলের হয়ে অসাধারণ খেলেছে অর্নব।বিনিময়ে
দশ বছরের জন্য অর্নবের শিক্ষার সব খরচ নিতে রাজি হয় তার দলের স্পন্সর।অবশ্য বিনিময়ে দলটির সাথে
দশ বছরের চু ক্তিও করে অর্নব।এগুলো দুই বছর আগের ঘটনা।অর্নব এখন বুয়েটের ফার্স্ট সেমিস্টার শেষ
করলো।ও এখন আগের তু লনায় অনেক পরিপক্ক্ব এবং স্বাবলম্বীও বটে।আর বিশেষ দরকারে অর্নবের মামা
আছেন।অর্নবের জীবনটা যেন সুন্দর হয়,নামাজ পরে সেই প্রার্থনাটাই করেন তিনি।
নামাজ পড়ার জন্য কোনওমতে শরীরটাকে উঠালেন তিনি।ওয়াশরুমে যেতেই আয়নার দিকে চোখ পড়লো।
কিশোরী থাকতে যেরকম সুন্দর ছিলেন,সেসব সৌন্দর্য্যের ছিটেফোটাঁও নেই।অবাক নয়নে তাকিয়ে আছেন
আয়নার অবয়বটির দিকে।ভার্সিটিতে থাকতে উনাকে একটা ছেলে প্রপোজ করেছিল।উনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
সেই ছেলে এখন জগন্নাথের লেকচারার।তার সাথে বিয়ে হলেই হয়তো ভালো হত।ভাবনাটা আসার সাথে সাথেই
মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলেন তিনি।ওই ছেলের সাথে বিয়ে হলে অর্নবের মতো লক্ষী ছেলে তিনি পেতেন না।
(২)
- সরি,লেট হয়ে গেলো!
- ইটস ওকে।
- তু মি রাগ করে বলছো।
- রাগ করতে যাবো কেন আজব!এক ঘন্টা আগে আসতে বলেছিলে,তু মি এসেছ একঘন্টা পর,আমারই তো দায়
তোমার সাথে দেখা করার,তাই না?
- আরে কি আর বলবো,এমন এক স্টু ডেন্ট পেলাম পুরোই ফাঁকিবাজ।ওকে পড়া বুঝিয়ে দিতে দিতেই…………
এই কথোপকথনের পনের মিনিটের পর নীলার রাগ ভাঙাতে সক্ষম হয় অর্নব।নীলা অর্নবের খুবই ভালো বন্ধু
ক্লাস থ্রী থেকেই।সিক্সে অর্নব ক্যাডেটে চান্স পেয়ে হোস্টেলে চলে গেলেও তাদের বন্ধুত্বে এতটু কুও ফাটল ধরে
নি,দুরত্ব তৈরী হয় নি।ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বের উর্ধ্বে চলে যায় নিজেদের অজান্তেই।দুজনই দুজনের
প্রতি ফীল করে।কিন্তু,এখনো মুখ ফু টে কিছু বলে নি।শুধুমাত্র একে অপরের সঙ্গ পছন্দ করা,এইটু কুই।
- নীলা তোমায় একটা অনুরোধ করবো,রাখবে?
- কি অনুরোধ? আমাকে বউ বানাবে………
বলেই খিলখিল করে হাসতে থাকে নীলা।সে হাসিতে বালখিল্যতা দেখতে পায় অর্নব।হাসলে নীলাকে যে এতোটা
সুন্দর দেখায়,আগে কখনও খেয়াল করে নি অর্নব।তবে নীলার কথায় লজ্জা পেয়ে যায় অর্নব।ভাবতে থাকে
নীলা কি তাকে খোঁচা দিয়ে কথাটা বললো?চু প করে মাথা নীচু করে রাখে অর্নব।কিছু ক্ষণ পর নীরবতা ভেঙে
নীলা বলতে থাকে,”আচ্ছা বাবা,আমি সরি! বলো,কি বলবে?”কিছু ক্ষণ ইতস্তত করে কথাটা বলে ফেলে
অর্নব,”তু মি কি প্রোপার রান্না জানো?মানে খাওয়া যায় এরকম রান্না?
- হুম সব ধরনের রান্নাই জানি,বাই দ্যা ওয়ে এটা কি ইন্সাল্ট করে বললে না কি?
- আরে না, মানে বলছিলাম,আমার বাসায় যদি একবেলা রেধে দিয়ে যেতে……মানে আমি তো পুরোপুরি রান্না
জানি না।আজ সকালে ভাত আর বেগুন দিয়ে চিংড়ি রেধে দিয়ে এসেছি মার জন্য।আমি চেখে না দেখলেও
বুঝতে পারি ওগুলো খাওয়ার অযোগ্য।মা হয়তো আমার কথা ভেবে কষ্ট করে হলেও খাবেন,কিন্তু আমি চাই
উনি ভালো কিছু খান।এমন কিছু খান যেটা খাওয়ার যোগ্য।তাই তোমাকে বললাম রান্নার জন্য।আসলে আমার
কোনও খালা নেই,দেশেও এমন কোনও আত্মীয়স্বজন নেই যাদেরকে একটু রেধে দেওয়ার জন্য বলতে পারি।আর
এই রোজার সময় পাড়া প্রতিবেশীদেরকে একটু রান্না করে দেওয়ার কথা কিভাবে বলি? ওনারা যেখানে
নিজেদের রান্না করতেই হিমশিম খায়,সেখানে ওনাদের অনুরোধ করতে বিবেকেও তো লাগে।
কথাটা শুনে কিছু ক্ষণ মৌন হয়ে থাকে নীলা।তারপর সুন্দর করে একটা হাসি দিয়ে অর্নবের হাতটা তার কোমল
দুটি হাতের মধ্যে পুরে নিয়ে তার চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে,”আন্টির জন্য তিনবেলাই রেধে দিবো।“
(৩)
টিং টং, টিং টং,
চু লায় রান্না বসিয়েছেন কলি ম্যাডাম।কোনওমতে কড়াইয়ের বেগুণিগুলো প্লেটে তু লে রেখে দিয়ে দরজা খুললেন।
ততক্ষণে আরও দুবার বেল বেজে গেছে।
দরজা খোলার পর অর্নব কলি ম্যাডামের অবস্থা দেখে অবাক।কপালে চিনচিনে ঘাম,শাড়ির আঁচল কাছা দিয়ে
কোমরে গোজা,হাতে মুখে ছোপ ছোপ হলদেটে দাগ লেগে রয়েছে।পানিতে গুলানো ভেসন।কলি ম্যাডাম নীলাকে
স্বাগত জানিয়ে ভিতরে আসতে বললেন।অর্নব বলতে থাকে,”মা, হুসনা খালা আসে নাই আজকে?”
- আরে হুসনাকে আমিই বলেছি আজ খালি থালাবাটি মেঁজে আর ঘরটা মুছে চলে যেতে।বেচারার তো ঘরে গিয়ে
ইফতার বানাতে হবে।তাছাড়া,ভাবলাম তোর জন্য কিছু বানাই আজ।তু ই তো ঘরে বানানো ইফতারি খেতে
পছন্দ করিস অনেক।
- কিন্তু, তোমার শরীর!
- আরে আমি ভালো আছি।তু ই নিজের অবস্থা দেখ,গোসল নাই,চু ল দাড়ি একাকার অবস্থা।দেবদাস হয়ে গেছিস
রীতিমতো।
এমন সময় নীলাও কলি ম্যাডামের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে বলে,”ঠিক বলেছেন আন্টি।অর্নব জঙ্গল হয়ে
যাচ্ছে দিনকে দিন।সমর্থন পেয়ে নীলা ম্যাডাম বললেন,”এই যা! এক্ষু ণি চু ল দাড়ি কেটে মানুষ হয়ে আয়।“অর্নব
মৃদস্ব
ু রে প্রতিবাদের চেষ্টা করে,”ইয়ে মানে, রোজার মাসে দাড়ি কাটবো!”কিন্তু অর্নবের প্রতিবাদ ধোপে টিকলো
না।“অ্যাঁই! হোসেন খান্দানের মহিলা আমি,আমাকে ধর্মীয় জ্ঞান দিবি না।দাড়ি রাখবি ভালো কথা,তাই বলে
এভাবে জঙ্গলের মতো কেন? দাড়ি একটু সাইজ তো করে রাখে মানুষ”,কলি ম্যাডাম বলেন।
অর্নব চলে যায় সেলুনের উদ্দ্যেশ্যে।সে বুঝে গেছে দুই ললনা এক হয়েছে।এখানে তার আর কিছু ই করার নেই।
পরাজিত সৈনিক সে এখন।অর্নব যাওয়ার পর ওড়না দিয়ে কোমরে কাছা বেঁধে অর্নবের মাকে সাহায্য করতে
লেগে যায় নীলা।নীলার কর্মদক্ষতায় অবাক হয়ে যান কলি ম্যাডাম।কি গুণী মেয়ে! ,মনে মনে ভাবলেন তিনি।
এরকম একটা মেয়ে অর্নবের বউ হলে মন্দ হয় না।কিন্তু আফসোস অতোদিন সময় তার হাতে নেই।ইতস্তত
করতে করতে প্রশ্নটা এক সময় করেই ফেললেন।“নীলা মা!”,ডাকলেন তিনি নীলাকে।পেঁইয়াজ কাঠছিলো
নীলা,কলি ম্যাডামের ডাকে উঠে দাঁড়িয়ে গেলো।“কিছু বলবেন আন্টি?”,বললো সে।
- কিছু যদি মনে না করো মা,একটা কথা বলি?
- সে কি! মনে করতে যাবো কেন আন্টি?আপনি বলুন আন্টি।
- আমার পাগল জঙ্গলী ছেলেটাকে তোমার কেমন লাগে?
জবাবে মাথা নীচু করে থাকে নীলা,মুখে হালকা হাসি হাসি ভাব।কলি ম্যাডাম বুঝে গেছেন।নীলার চিবুক
উপরের দিকে তু লে আস্তে করে বললেন,”আমার ছেলেটাকে দেখেশুনে রাখতে পারবি তো?”নীলা আবার মাথা
নীচু করে ফেলে।আস্তে করে বলে,”পারবো মা!”
(৪)
আজ ২৩শে রমজান গেলো।ঈদের আর এক সপ্তাহের মতো বাকি।এই ঈদে অর্নবকে সব সামলাতে হবে।দুই বছর
ধরে অর্নবের মামা আমেরিকা থেকে চলে এসে এগুলো সামলাতেন।এবছর অর্নবের মামা আসবেন ঈদের পরের
দিন।একটা সমস্যায় আটকে গেছেন বলে ঈদের আগে আসতে পারছেন না।
আজ স্কুলে যেতে হয়েছিলো।হ্যাঁ,অসুস্থ এবং এক হিসেবে চলনে অক্ষম হওয়ার পরও তিনি চাকরীতে বহাল
আছেন।আর এজন্য কলি ম্যাডামের সহকর্মীদের অবদান অনেক এবং স্কুলের হেডমাস্টার এটাতে একটা বড়
ভূ মিকা রেখেছিলেন।কলি ম্যাডামের শরীরে যখন ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে,তখন হেডমাস্টার সাহেব
টিচারদের সাথে নিয়ে মিটিং ডাকেন এবং সেখানে তিনি একটা প্রস্তাবনা দেন।কলি ম্যাডাম যে অসুস্থ সেটা সবাই
গোপন রাখবে।উনি উনার মতো চিকিৎসা নিতে থাকুক,রেস্ট নিতে থাকুক।উনি যেন উনার স্যালারীটা পান।
প্রতিদিন এসে খালি হাজিরাটা দিয়ে যাবেন।যখন সরকারি কোনও লোক ভিজিটিংয়ে আসবেন,তখন তিনি নাহয়
পুর্নাঙ্গ সময়ের জন্য উপস্থিত থাকবেন।
এতোদিন এভাবেই এডজাস্ট করে চলে আসছেন।অবশ্য উনাকে সাহায্য করতে গিয়ে উনার সহকর্মীদের একটু
কষ্টই হয়েছে বলতে গেলে।কলি ম্যাডামের প্রক্সি ক্লাসগুলো নেওয়া,কলি ম্যাডামের খাতাগুলো দেখা ইত্যাদি।
সেসময় অর্নব সবেমাত্র ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে।এখন বুয়েটের প্রথম সেমিস্টার শেষ করেছে অর্নব।ওর
পড়াশুনার জন্য আর কোনও চিন্তা নেই।
আজ এক সরকারি অফিসার ভিজিটিংয়ে আসেন স্কুলে।ছাত্রদের আগেই ছু টি হয়ে গিয়েছিলো পাঁচ রোজার পর
থেকেই।টিচার এবং অন্যান্য স্টাফদেরও বন্ধ ছিলো।তবে মাঝে মাঝে দাপ্তরিক কিছু প্রয়োজনে এক দুদিন আসা
লাগতো স্কুলে।আজ যেহেতু ভিজিটরের আসার কথা,সেহেতু কলি ম্যাডামকেও যেতে হয় স্কুলে।
অফিসে আজ অনেকের বাঁকা দৃষ্টি দেখেছেন তিনি।দেখাটাই স্বাভাবিক।কোনও কাজ না করে খালি হাজিরা দিয়ে
বসে বসে বিয়াল্লিশ হাজার টাকার বেতন নিচ্ছেন,অথচ উনার ভাগের কাজগুলো করে দিচ্ছেন অন্য কেউ।মানুষ
এক দিন,দুই দিন,তিন দিন কিংবা বড়জোর এক সপ্তাহ সমব্যাথী হতে পারে।কিন্তু প্রায় দুবছর ধরেই এভাবে
একরকম বিনাশ্রমে বেতন নিচ্ছেন,সহকর্মীরা এটা সহজভাবে নিবে না স্বাভাবিক।বর্ত মান সরকার প্রাইমারি স্কুল
শিক্ষকদের বেতন স্কেল বাড়িয়েছে।কলি ম্যাডাম ছোট থাকতে উনার দূর সম্পর্কে র এক কাকাকে দেখেছিলেন
সাড়ে তিন হাজার বেতনে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করে যেতে।এই বড় অঙ্কের স্যালারিটা নিয়মিত পাওয়ার
একটা বন্দোবস্ত করে দেওয়ার কারণে আজীবন কৃ তজ্ঞ থাকবেন তিনি উনার সহকর্মীদের কাছে।বড় অঙ্কের এই
স্যালারীটা নিয়মিত পেতেন বলেই সৃষ্টিকর্ত ার রহমতে খুব একটা দিশেহারা হতে হয়নি কলি ম্যাডামকে।কিন্তু
এখন তাকে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
রাত এগারোটা,তিনি ঘুমাননি,ঘুমানোর চেষ্টা করছেন।চোখ মুদে চিন্তা করছিলেন।হাবিজাবি সব চিন্তা।যেন
আপনমনে রূপকথার গল্প গেথে চলেছেন বিনি সুতোর মালার মতো।অর্নব ছোট থাকলে তাকে ঘুমপাড়ানোর
জন্য অনর্গল গল্প বলে যেতে পারতেন।গল্পের আর কোনও অভাব হতো না।কিংবা বাংলায় একটা মৌলিক
ফ্যান্টাসি উপন্যাস লিখলে কেমন হয়? লেখা যায়,কিন্তু উপন্যাসটা শেষ করতে পারবেন তো? ছোটবেলা থেকেই
হ্যারি পটার সিরিজের ভক্ত ছিলেন।ইচ্ছে ছিলো বাংলায় মৌলিক ফ্যান্টাসি লিখবেন।কিন্তু সেটা হলো কই?
অর্নবের বাবার সাথে ছাড়াছাড়ি হবার পর জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য অনেক বড় বড় আশা জলাঞ্জলি
দিয়েছেন।
উনি ভাবছেন,এমন সময় দরজা খোলার আওয়াজ এলো।অর্নব তারাবী নামাজ শেষ করে এসেছে।ডাকলেন
অর্নবকে,”বাবা অর্নব,এসেছিস?”
- হ্যা,মা!
- একটু বস তো বাবা আমার কাছে।
অর্নব মায়ের শিয়রের কাছে বসে।কলি ম্যাডাম বলতে থাকে,”শোন বাপ,কাল একটু দৌড়াদৌড়ি করতে হবে
তোকে।সবার আগে একটা রেজিগনেশন লেটার নিয়ে স্কুলে যাবি।তারপর জনতা ব্যাংকে একটা অ্যাকাউন্ট
খুলবি।তারপর তোর টিনা আন্টির কাছে যাবি।উনি তোকে সবকিছু বুঝিয়ে দিবে।উনার কথামতো ব্যাংকের
কাজ শেষ করবি।আমি আর কতদিন আছি জানি না।আমি মরার পর ঝামেলায় পড়বি।তারচেয়ে আমি থাকতে
থাকতে আগেভাগে সব শেষ করে রাখ।
পিনপতন নীরবতা।অর্নবের চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে।নিঃশব্দে কাঁদছে সে।মাথা নীচু করে বসে আছে সে মায়ের
শিয়রের পাশে।একটু পর আস্তে করে কলি ম্যাডাম বললেন,”কাল পারলে তোর বাবাকে একটু ডেকে
আনিস,বলিস যে মা খালি একটু কথা বলবে।“
আগামীকাল ব্যাস্ত একটা দিন গেলো অর্নবের।
(৫)
ঈদের চাঁদ দেখা গেছে।আগামীকাল ঈদ।দুদিন ধরে কলি ম্যাডামের শরীরের অবস্থা বেশি একটা ভালো না।তবে
আজ একটু ভালো হয়েছে।অর্নবের হাতে টাকা দিয়ে জোর করে মার্কে টে পাঠিয়েছেন।ছেলেমানুষ,স্টাইলিশ না
হোক,অন্তত সাধারণ সাদা হলেও নতু ন একটা পাঞ্জাবী পড়তে হয় ঈদের দিন।কথাটা আগে মাথায় আসলে
নীলাকে বলে অর্নবের সাথে পাঠাতেন।চাঁদরাতে ঘরের কাজ ফেলে নীলার তো আর অর্নবের সাথে যাওয়া সম্ভব
না।
রাত দশটা,শুয়ে শুয়ে অর্নবের বাবার সাথে প্রেমের সময়গুলোর কথা ভাবছেন কলি ম্যাডাম।একসাথে কত
সুন্দর সময় কাটিয়েছেন,বাদাম খেয়েছেন,বাংলাবাজার থেকে কবিতার বই কিনেছেন,একে অপরকে উপহার
দিয়েছেন।কত প্রতিশ্রুতি,সারাজীবন পাশে থাকার অঙ্গীকার।শেষবারের মতো অর্নবের বাবাকে দেখার ইচ্ছে
ছিলো।অর্নবের বাবা আসেনি।অর্নব বলেছে সে নাকি বাবাকে বাসায় পায়নি।চেহারা দেখেই কলি ম্যাডাম বুঝে
ফেলেছিলেন,অর্নবের বাবা আসতে চায় নি।
আজকের দিনটি কেন জানি বড্ড বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছে উনার।পৃথিবীর প্রতি মায়াটা যেন ক্রমশই বেড়েই
চলেছে।কেন তাকে এতো অল্প বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যেতে হবে? কি অপরাধ ছিলো তার? আর
কটা দিন,কটা সপ্তাহ,কটা মাস কিংবা কটা বছর কেন বেঁচে থাকতে পারবেন না।কোন পাপের শাস্তি পাচ্ছেন
তিনি? আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে কপালে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ অনুভব করলেন তিনি।“কে রে!
অর্নব?”,বললেন তিনি।
- হ্যাঁ মা,
- তোর হাত এতো ঠান্ডা কেনরে বাবা?
- হুসনার খালা নাকি ফ্রীজে মাংস রেখে গেছিলো,সেই মাংস খুঁজে পাচ্ছিলাম না।মাংসের পুটলাটা খুঁজে বের
করার জন্য ফ্রীজের মাছ মাংস ঘাটাঘাটি করছিলাম।
- ওহ! দে তো কপালটাতে হাত বুলিয়ে,ভালোই তো লাগছে।
অর্নব হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।অর্নবের হাত একসময় গরম হয়ে যায়।ফ্রীজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে বাটিতে
ঢেলে সেখানে হাত ডু বিয়ে তারপর কলি ম্যাডামের চোখে মুখে বুলিয়ে দেয়।এক সময় কলি ম্যাডাম বলেন “যাও
বাবা যাও,তু মি ঘুমাতে যাও,কাল ভোরে উঠতে হবে।“
অর্নব যেতে চাইছিলো না।পরে কলি ম্যাডামের জোরাজুরিতে চলে যায়।কলি ম্যাডামের অদ্ভু ত এক ধরনের
প্রশান্তি হছে।মনে হচ্ছে তিনি যেন হালকা হয়ে গেছেন।জাগতিক সব চাপ থেকে মুক্ত।শরীরটা ঝরঝরে লাগছে।
অর্নব যে একটু আগে ঠান্ডা হাতটা বুলিয়ে দিয়ে গেলো,সেজন্যই হয়তো।হঠৎ করেই কলি ম্যাডাম বুঝতে
পারলেন সোনার টু করো এক ছেলে তাকে উপহার দিয়েছেন সৃষ্টিকর্ত া।কিন্তু এই সোনার টু করোকে মাটির
পৃথিবীতে রেখে তাকে বিদায় নিতে হবে।
(৬)
খুব ভোরে ঘুম ভাঙলো অর্নবের।আজ যে ঈদের দিন,সেরকম একটা আমেজ ভাসছে চারপাশে।অন্যান্য ঈদে মা
সব কিছু রেডি করে তারপর তাকে ডেকে তু লতো।গোসল করে রেডি হয়ে টেবিলে সেমাই,রুটি আর খেজুঁর
দেখতে পেতো।বিগত দুই বছর মামী এসে সব করেছে।আজকে সেমাই রুটি বানিয়ে নিয়ে আসবে নীলা।নামাজ
শেষ হওয়ার পর বারোটার মধ্যেই বাকি রান্না রেডি করে নিয়ে আসবে নীলা।দুপুর এবং রাতে ঐ রান্না দিয়েই
চালানো হবে।মেয়েটা নিজে থেকে রাজী না হলে কে জানে ঈদের দিন দুইটা ভালো খাবার জুটতো কি না!
মেয়েটার প্রতি অদ্ভু ত এক কৃ তজ্ঞতায় মনটা ছেয়ে আসে অর্নবের।
গোসল সেরে পাঞ্জাবী টু পি পরে নিলো অর্নব,গায়ে আতর মাখলো।এরপর গেলো মাকে ডাকতে।মায়ের রুমে
গিয়ে দেখলো ঘুমিয়ে আছে মা,মুখে প্রসন্ন প্রসন্ন একটা ভাব,সেই সাথে গভীর প্রশান্তির ছায়া।অর্নব আস্তে করে
ডাকলো,”মা! মা!, সকাল হলো উঠো…”কলি ম্যাডাম উঠলেন না।অর্নব পুনরায় ডাকলো।কলি ম্যাডামের সাড়া
নেই।এবার গায়ে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে ডাকতে শুরু করলো অর্নব।ফলাফল একই।আরও বেশ কয়েকবার
ডাকাডাকির পর অর্নব লক্ষ্য করলো তার মা একটা উহু পর্যন্ত করছে না।অজানা আশঙ্কায় অর্নবের বুকের
ভিতরটা কেঁ পে উঠলো।কাপা কাপা হাতে কলি ম্যাডামের নাড়ী টিপে দেখে,
সবকিছু শেষ……!
(৭)
টিং টং, টিং টং!
শরীর এবং মনের শেষ শক্তিটু কু নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দরজাটা খুলে অর্নব।হাতে মাঝারি সাইজের টিফিন
ক্যারিয়ার নিয়ে ঘরে ঢু কতে থাকে নীলা।ডাইনিং টেবিলের উপর খাবারগুলো টিফিন ক্যারিয়ার থেকে বাটিতে
ঢালতে থাকে।টেবিল সাজিয়ে কলি ম্যাডামের রুমে গিয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলার ব্যার্থ প্রচেষ্টা করতে
থাকে।অর্নব ধীরে ধীরে একপাশে এসে দাড়ায়।আস্তে করে বলে,”মা আর নেই নীলা!”
পিনপতন নীরবতা।বেশ কিছু ক্ষণ নীরব থাকার পর অর্নব আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না,কান্নায় ভেঙে
পড়ে।যেন তিন দিন ধরে জমে থাকে মেঘ থেকে অবিরাম ঝড়ছে জলধারা।নীলা অর্নবের চোখের পানি মুছে
দেয়।অর্নবের মাথাটা কোলের কাছে নিয়ে বিলি কেটে দেয় আর বলতে থাকে,”থাক বাবা কিছু হয় নি,কাঁদে
না,কাঁদে না!”ঠিক যেন কোনও মা তার সন্তানকে কোলে মাথা পেতে শুইয়ে দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,আর
শান্তনা দিচ্ছে।
(৮)
১০ বছর পর,
অর্নব হাভার্ডে পড়াশুনা করছে,অ্যাটমিক স্পিনের উপর।ওর মায়ের স্বপ্ন ছিলো হাভার্ডে পড়ার।বিভিন্ন
সীমাবদ্ধতার কারণে সে স্বপ্ন পুরণ হয় নি।অর্নব মায়ের স্বপ্নকে নিজের স্বপ্ন হিসেবে ধরে নেয়।অবশ্য এর জন্য
ওকে সার্বক্ষণিক অনুপ্রাণিত করেছে নীলা।আগামী মাসের ১০ তারিখ নীলার সাথে ওর এংগেইজমেন্ট।জীবনের
প্রতিটি ধাপেই নীলা ছিলো অর্নবের পাশে ছায়ার মতো।তবে;একটা কাজের জন্য নীলার প্রতি সারাজীবন কৃ তজ্ঞ
থাকবে অর্নব।এক ঈদের সকালে অর্নব দেখে তার মা আর নেই।সে সম্পুর্নরূপে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলো।
এসময় আলোকবর্তি কা হয়ে আসে নীলা।অর্নবকে বুঝিয়ে সুজিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মায়ের শোকটা কাটিয়ে উঠে
করণীয় সম্পর্কে বোঝাতে সক্ষম হয় নীলা।নামাজটা পড়ে অর্নব তৎক্ষণাৎ একটা পিকআপ ভাড়া করে এবং
সাথে কিছু লোকবল ভাড়া করে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।উল্লেখ্যঃ এই পিকাপ এবং লোকবলের
ব্যাবস্থা নীলা করে দিয়েছিলো তার বাবাকে বলে।লাশ দাফন দিয়ে দুদিন নানবাড়ির তালা ভেঙে সেখানে আশ্রয়
নিয়ে দুদিন থাকে অর্নব,সম্পুর্ন একা।দুদিন পর অর্নবের মামা দেশে আসলে অর্নবকে সেখান থেকে ঢাকা নিয়ে
আসে।
প্লেনে বসে সিটবেল্ট বাধঁতে বাধঁতে ভাবছে করছে অর্নব,তার মা তাকে এ অবস্থায় দেখলে কতটা খুশিই না
হতেন।নাড়ীর টানে দেশে যাচ্ছে সে।নাড়ীর টান উপেক্ষা করা যায়না,তার মাও পারেনি।বোধহয় নারীর টানেই
চিরনিদ্রায় শায়িত হন তার জন্মস্থানে।সে ঈদের দিন লাশ নিয়ে গ্রামে যেতে যেতে এই কথাটাই ভাবছিলো,আজও
এই কথাটাই ভাবছে।প্লেনের জানালা দিয়ে মেঘের ভেলা দেখা যাচ্ছে অর্নবে মনে হলো ক্ষণিকের জন্য যেন সেই
মেঘে অবিকল তার মায়ের হাসিমাখা মুখটা ভেসে উঠলো!
#StayHomeStaySafe.
Name: Foyez Ahmad
Batch: 51
Department: CSE
Article: 'বন্ধু

''বন্ধু''
বন্ধু...
যতো দিন তু মি কিছু দিতে পারবে,ততো দিন টিকে থাকবে তোমার অস্থিত্ব।
যতো দিন তারা তোমার থেকে নিজ স্বার্থ হাসিল করতে পারবে,ততো দিন বন্ধুত্ব টিকে থাকবে...ফলের সাথে
ফরমালিনের মিলনের মতো!
স্বার্থ হাসিলের জন্য সে আর তু মি হয়ে যাবে রাবার আর পেন্সিল। বন্ধুত্ব এতোটাই মধুর হবে যেন তু মি মৌঁচাক
হয়ে রবে।
যতো দিন তার মনে হবে তু মি তার ভর সইতে পারবে,ততো দিন সে তোমার উপর নির্ভ র করেই চলবে।যেমনটা
করে থাকে কলম আর কালি!
তু মি হবে তার কাছে মাছের মেরুদন্ডের মতো আর সে হবে সম্পূর্ন দেহ!

আবার দেখো..

যখন তু মি কিছু দিতে পারবে না,তখন তোমার অস্থিত্ব আসতে আসতে মুছতে থাকবে।পেন্সিলের লেখা রাবারই
মুছে ফেলবে!
ফরমালিন তোমার আসল স্বাদ ধ্বংস করে দিবে!
মধু সংগ্রহ হয়ে গেলে মৌঁচাক ফেলে দেওয়া হবে!
যখন তার ভরে তু মি মাটিতে লুটিয়ে পরবে,তখন কালি শেষ কলমের মতো তোমায় ছুঁ ড়ে ফেলে দেওয়া হবে!
মাছ খাওয়া শেষে কেউ কাটা না রেখে ফেলে দেয়,ঠিক তাই হবে তোমার সাথে!

কয়-জন-ই বা আছে,যে ফলকে ট্রিক্স দিয়ে ভিজিয়ে ফরমালিন দূর করার চেস্টা করবে!?!
পেন্সিলের লিখা মুছে গেলে কয়-জন-ই বা তা আমার নতু ন করে লিখে দিবে!?!
মধু সংগ্রহ করার পর কয়-জন-ই বা আছে যে মৌঁচাক থেকে মোম সংগ্রহ করে তা দিয়ে শিল্প তৈরী করে অন্যের
কাজের জন্য!?!
কয়-জন-ই বা আছে কলমের কালি শেষ হয়ে গেলে,তাতে নতু ন করে কালি যোগ করার চেস্টা করে!?!
মাছ খাওয়া শেষে কয়-জন-ই বা তার কাটা দিয়ে কারুকার্য করে থাকে!?!

বন্ধু তো তারাই,তাদেরই বলা যায়,যারা এ সব করে থাকে!!!📷


Name: Saddam Hossain Rabbi
Batch: 33
Department: Pharmacy
Article: শেষ বিকেল

গাছের নিচে ফু লের মতোই ফু টফু টে একটি মেয়ে ফেরি করে জুঁই ফু ল বিক্রি করছে।আবির আর নীলু পাশাপাশি
হাঁটছে। নিরিবিলি বসার একটা জায়গা খুঁজছে।আবির আগ্রহ নিয়ে ফু ল কিনল। হাঁটতে হাঁটতে ফু লের সুবাস নিল।
সুভাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবির অন্তরের গভীরে সুস্পষ্ট একটা বেদনা অনুভব করল। অবশ্য বেদনার কারণটা
অস্পষ্ট। কে জানে হয়তো কিছু পেয়ে হারানোর বেদনা, নয়তোবা কিছু পাওয়ার জন্য হাত পেতে না পাওয়ার
বেদনা। হঠাৎ আবির থমকে দাঁড়ালো। নীলু পিছন ফিরে তাকায় আবিরকে মূর্তি র মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।
সেও ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে আসে। আবির মুখোমুখি দাঁড়ায়। আবিরের দৃষ্টি নীলুর দিকে, আর নীলুর অপলক দৃষ্টি
আবিরের চোখে স্থির হয়ে যায়। নীলুর চোখের ভাষা আবির বুঝতে পারছে কিনা কে জানে! তবে নীলুর চোখের
গভীরে আবির নির্মল মায়াভরা সমুদ্র দেখতে পায়। নীলু ঠিকই আবিরের চাহনির ভাষা বুঝতে পারে। কারণ
মেয়েরা অন্তর্যামী হয়। অন্তরের গভীরে তাদের একটা সূক্ষ্মদৃষ্টি থাকে। আবির তার সদ্য কেনা ফু লটা নীলুর
খোঁপায় পরিয়ে দেয়। শেষ বিকেলের মলিন ফু লটাও নীলুর খোঁপায় শোভা পাচ্ছে।ফু লের সুবাস আর নীলুর চু লের
সুবাস একসঙ্গে মিশে গিয়ে একটা মিষ্টি মদির সুবাস মিশ্রিত অনুভূতি আবিরকে অজানা এক আবেশে জড়িয়ে
নেয়।
আবির নিরবতা ভেঙ্গে মমতা জড়ানো কণ্ঠে ছোট্ট করে ডাকে, নীলু।
নীলু উদাসীন আনমনা দৃষ্টি মেলে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, কি...?
আবির কিছু ক্ষণ কি যেন ভেবে বলল, নাহ, কিছু না।
নীলু ঠোঁটের কোণে অস্পষ্ট একটা হাসি এনে শান্ত কন্ঠে বলল, চলেন ওইদিকটায় গাছের ছায়ায় গিয়ে একটু বসি।
আবির মাথা নেড়ে সায় দেয়।তারপর দুজন পাশাপাশি হাটতে হাটতে কখন যে নীলুর ডান হাতটা আবিরের বাম
হাতের মুঠোয় চলে যায় কেউই টের পায় না। একটা গাছের নিচে ঘাসের উপর দুজন পাশাপাশি কাছাকাছি
বসে। আবির শক্ত করে নীলুর হাত ধরে আছে। কিছু ক্ষণ দুজনেই চু প।
আবির নিরবতা ভেঙ্গে বলল আচ্ছা নীলু আমাদের এই সমাজ সংসার টা এমন কেন?
কই,কেমন? সমাজ সংসারের তো কোন দোষ নেই।
দোষ আছে নীলু, আছে।এই সংসারে যার সাথে থাকতে ইচ্ছে করে তার সাথে থাকা যায়না- থাকতে হয় তার
সাথে, যাকে সহ্য হয় না।
নীলু রহস্যময় হাসি হেসে বলল, এতে সমাজ সংসার কিভাবে দায়ী?
অবশ্যই দায়ী। Because our society posed a barrier in the affairs of human relationship..
নীলু মনে মনে ভাবে, কঠিন স্রোতের বিপরীতে যেমন সাঁতার কাটতে নেই, মানুষের মনের আবেগের স্রোতের
বিপরীতে তেমন কিছু বলতে বা করতে নেই।
নীলু অপলক দৃষ্টিতে আবিরের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। আবির মুখে কিছু বলতে পারছে না। নীলুও পারছে
না।
তবে চোখের চাহনিতে সে তার মনের সব অনুভব অনুভূতি ও আকুতি প্রকাশ করতে চায়। এ যেন চোখের
ভাষায় কথা বলা...। এরইমধ্যে গোধূলি লগ্নের ছায়া চারদিকে ঘিরে ফেলে। আকাশে এক ঝাক হংস সারি
দোলানো মালিকার মত উড়ে চলছে আপন কুলায় ফেরার জন্য। আবির আর নীলুকে ফিরতে হবে হয়তোবা
শূন্যতায় ভরা শান্তিহীন অশান্তির নীড়ে.......।

Name: Shahidul Islam Shakil


Batch: 29
Department: Pharmacy
Article: একজন উচ্চমাধ্যমিক পাসকৃত রিকশাওয়ালা

আমি মোহাম্মদ। উচ্চমাধ্যমিকের কাঙ্খিত ফলাফলের সংবাদ না শুনেই বাবা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন।
সংসারের মা এবং ছোট দুই ভাইবোনের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে, কর্মসন্ধানের উদ্দেশ্যে ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত
নেই।
সিদ্ধান্ত মোতাবেক রওনা হলাম। পাশের সিটের ছেলেটার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, ভার্সিটি কোচিং করবে
বলে ঢাকা যাচ্ছে। অবুঝ মনে ভাবতে থাকলাম, হয়তো বাবা বেঁচে থাকলে আমিও আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার
সুযোগ পেতাম। অতঃপর ঘন্টাখানেকের মধ্যে, দুঃসম্পর্কে র এক চাচার বাসায় গিয়ে পৌঁছালাম।
চাচার মাধ্যমে রিকশার এক গ্যারেজে কাজ মিলে গেলো। এতো কম পারিশ্রমিকে হবে না বোঝতে পেরে মাঝেমধ্যে
কয়েকটা টাকার আশায়, নিজেও বের হয়ে পরতাম রিকশা নিয়ে। দুই-এক সপ্তাহ পর, রিকশা চালাতে
তেমনএকটা কষ্ট হতো না।
কষ্ট তখন হতো, যখন বাবার মৃত মুখখানা চোখে ভেসে উঠতো!
কষ্ট তখন হতো, যখন ভর্তি কোচিং এ পড়ুয়া কাউকে টেনে নিয়ে যেতাম!
কষ্ট তখন হতো, যখন রিকশার প্রতিটি প্যাডেলের সাথে আমার ভবিষ্যৎ দুমড়ে-মোচড়ে একাকার হয়ে যেত!
এরইমাঝে হঠাৎ ভেসে আসা কন্ঠস্বর, "এই মামা যাবেন?"
এক নিমিষেই সব কষ্টগুলোকে আড়াল করে এক মলিন হাসিতে বলে উঠতাম, "যাবো মামা।"
আজকাল আর তেমন কষ্ট হয় না, মরিচাধরা কষ্ট আর কতোদিন! আজকাল আনন্দ খুজে নিয়েছি একটি বাক্যে,
"এই মামা যাবেন?" কেননা এই বাক্যের সফলতায় মিশে আছে আমার দৈনিক রুটিরুজি।
আল্লাহতা'আলার রহমতে ভালোই যাচ্ছিল সবকিছু , এরইমধ্যে ছোট ভাইটার মাধ্যমিকে বৃত্তি পাওয়ার খবর
জানতে পারলাম।
ছোটঃ হ্যালো ভাইজান, একটা ক্যালকুলেটর লাগবো, তোমার পুরানডা নষ্ট হইয়া গেছে।
(মূহুর্তে ই মনে পরে গিয়েছিল, আমিওতো একদিন মাধ্যমিকে বৃত্তি পেয়েছিলাম। উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছিলাম!
এমতাবস্থায় চোখের কোনে দু'এক ফোঁটা জলের উদয় হতেই…)
ছোটঃ ভাইজান, ও ভাইজান, ভাইজান হুনতাছো?
আমিঃ অন্যমনষ্কতা কাটিয়ে, হো ভাইজান হুনছি। পরেরবার আহনের লগে নিয়া আমুনি। মা আর ইসুর খেয়াল
রাখিছ।
কয়েকদিন যাবৎ শরীরটাও ভালো ঠেকছিল না। শেষরাতে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। ছোটবেলা জ্বর হলে, মা
সারারাত জেগে মাথায় পানি দিতেন। মাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল। শেষবার যখন জ্বর হয়েছিল বাবা বাজার
থেকে ডাব নিয়ে এসে বলেছিল, "ডাবের পানিডা খাইলে শরীলডা চাঙ্গা লাগবো, পোলামানুষ এতো সহজে ভাইঙ্গা
পরলে সংসার চালাইবি কেনমে খোকা।" হ্যা সংসার, বাবার সেই কথা যখন মনে পরে তখন বাবাকে খুব বলতে
ইচ্ছে করে, তোমার ছেলে আজ এতো সহজে ভেঙ্গে পরেনা বাবা।
মাকে দেখতে ইচ্ছে করছিলো বলে, ভেবেছিলাম কাল বাড়ি যাবো। এরই মধ্যে ছোটভাইয়ের ক্যালকুলেটর নিতে
হলে আরো কিছু টাকার দরকার। দুইদিন পর বাড়ি যাবো এই শান্তনায়, রিকশা নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।
হঠাৎ দেখি, ছিনতাইকারী এক ভদ্রমহিলার ব্যাগ নিয়ে পালাচ্ছিল। ভালোমন্দ কিছু না ভেবেই, রাস্তা পার হয়ে
কয়েক সেকেন্ডর মধ্যেই আমি ব্যাগ উদ্ধার করলাম। কিন্তু, লোকজন ঠিকই আমার দিকে ধেয়ে আসছে। আমার
পোশাক হয়তো তাদের বলে দিচ্ছে আমিই ছিনতাইকারী। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভয়ে আমার কলিজা
শুকিয়ে আসছিল, আমি ব্যাগটা রাস্তায় ফেলে দিয়ে অপরপ্রান্তে আমার রিকশায় যেতে চাইছিলাম। কেননা, ঐখানে
পৌঁছাতে পারলে হয়তো আমার রিকশাওয়ালা পরিচয়টা সবায় মেনে নিবে।
এইসবকিছু ভাবতেই, একজন সাহেবমতোন লোকের ধাক্কা! আমি রাস্তায় পরে গেলাম। জ্বরের কারণে দুর্বল হয়ে
যাওয়া শরীর নিয়ে উঠতে পারছিলাম না। আমি চিৎকার করে বলছিলাম, আমি সামান্য এক রিকশাওয়ালা।
আমি ছিনতাইকারী নই। আমাকে যেতে দিন। যে যেভাবে পারছিলো, যেখানে পারছিলো ইচ্ছে মতো গণহারে
মারছিলো। আমি আর কিছু ই করতে পারলাম না। সাহায্যের প্রতিদান যে এভাবে পেতে হবে আমি ভাবতেও
পারিনি। মা ও ছোট ভাইবোনদের ছবি চোখে ভাসতে লাগলো। মনে মনে ছোট ভাইটাকে বলছিলাম, "তোর
ভাইজান তোর লাইগা ক্যালকুলেটর আনতে পারে নাই। ভাইজানেরে মাফ কইরা দিস।" আর মাকে বলছিলাম,
"তোমার মোহাম্মদ তোমারে, শেষবারের দেখা দেখতে পারলো না 'মা'।" সবকিছু , কেমন অন্ধকারে ডু বে
যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আমার রিকশাটা চিৎকার করে বলছিল,"আমার মালিক নিরপরাধ, সে ছিনতাইকারী নয়!
মালিক নিরপরাধ, সে ছিনতাইকারী নয়!"
অতঃপর, এক উচ্চমাধ্যমিক পাসকৃত এতিম রিকশাওয়ালার মলিন হাসির রক্তাক্ত নিথর দেহ।
#StayHomeStaySafe.
Name: সানজিদা আনিকা মীম
Batch: 46
Department: CSE
Article:পড়তে গিয়ে তোমাকে পুড়ে ফেলেছি

সিজুকা,
প্রোগ্রামিং এর বিদঘুটে সব প্রবলেম সলভ করতে গিয়ে মনের ভেতর প্রবলভাবে 'তু মি' জেগে উঠছিলে কি
স্বাভাবিকভাবে!
মাঝেমধ্যে ভাবনায় ডু বি, হুট করে সবকিছু এতোটা এলোমেলো না ই হতো ।
বিশাল স্বচ্ছ কাচের মতো আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্বিনীত ঔদ্ধত্যপূর্ণ জলেরা যখন তোমার
চশমার ঘোলাটে কাচ আরো ঝাপসা করে দিয়ে যায়, আমার তখন ভীষণ ভয়ংকরভাবে স্বৈরাচারী হয়ে উঠি।
ঠিক যতটা স্বৈরাচারী হলে নাগরিক প্রহসনের দিনগুলোয় প্রোগ্রামার হয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব, যতোটা স্বৈরাচারী
হলে সব রকমের সামাজিক নিয়মনীতির কাগজের অধিকার ছাড়াই তোমায় একটু ছুঁ য়ে দেয়া সম্ভব !
প্রচণ্ড ভালোবাসলে খুব সম্ভবত মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস থেকে চেহারার স্মৃতি ঝাপসা হয়ে যায়। রোজ রোজ
একই আত্বস্থ হয়ে যাওয়া চেহারা, প্রত্যেকটা খাঁজ, ভাঁজ, কিংবা তিল। সেই সব স-ব কিছু একইরকম থাকা
সত্ত্বেও তোমার অবর্ত মানে সে ছবি আর আমার মাথায় ভাসছেই না।
এম্বিশন?!
বলতে বলতে অট্ট হাসি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে চারদিকে ! এই সেই রিসার্চ , যার কারণে আমি-তু মি কখনো 'আমরা'
হয়ে উঠতে পারিনি, বাংলা ব্যাকরণ এখানে কি বড্ড অসহায় গো, আমার মতো!
মাঝেমধ্যে ঘৃণা করতে প্রচণ্ড চেষ্ঠা করেছি জানো। কিন্তু ক্যাফেটেরিয়ার খসে যাওয়া রঙচটা ছাদের নিচে বসে
স্বভাববশতঃ দুটো চা অর্ড ার করতে গিয়ে বুঝি লিকারের রঙের চাইতেও এখনো আমার বোকা অনুভূতির
রঙগুলো গাঢ় ই রয়ে গেছে। শেষমেশ ভালোবাসাবাসির ক্যাটাসট্রোপিক মোমেন্টে দাঁড়িয়ে অভিযোগনামা রচনা
করতে ব্যর্থ হয়ে ভালোবেসে ফেলি প্রতিবার! যাকে একবার ভালোবাসা যায়, তার প্রতি আর কতদিন অভিযোগ
জমিয়ে রাখা সম্ভব, বলো? পাশের চায়ের কাপটা নিদারুণ অবহেলায় আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে
চায়। আমি প্রতিবারের মতো আমার মতো করে একটা দু' চামচ চিনি দেয়া কাপে আরো এক চামচ 'আমি'
মিশিয়ে দিয়ে ওটা স্পর্শ না করেই দাম দিয়ে বেরিয়ে যাই। তোমার জন্য যতটু কু 'আমি' আমার মাঝে আমানত
রাখা ছিল, তার সবটু কু 'আমি'ত্বটু কু না হয় কাপেই জমে থাকুক।
ইতি-
সুমিত
***
তারপর প্রতিবছর ফাল্গুন নামে, গাছের শাখায় শাখায় ফু ল ফু টে।কোন এক শীতের কুয়াশা মাখানো মিষ্টি
রোদের আদরঘেরা এক সকালে জানালা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে চল্লিশোর্ধ এক তরুণ ভু লবশত জীবনের হিসেব কষতে
শুরু করে। ভু লে ভু লে ক্ষয়ে যাওয়া তার অসহায় এক জীবন, আগুনে ঝলসে খাক হয়ে যাওয়া তার তীব্র প্রেম!
হেলানো মাথা রেখে নীলচে আকাশের দিকে চেয়ে সে বুক পকেটে পুরে রাখা কাগজটা নিদারুণ তাচ্ছিল্যতা নিয়ে
উড়িয়ে দেয় আকাশে। অভিকর্ষের টানে কাগজটা গিয়ে ময়লার গোডাউনে বাসা বাধে। এখন আর তার ভেতর
কোনো অবশিষ্ট অনুভূতি কাজ করছেনা......না কোনো অভিমান, না কোন ক্ষোভ, না কোন অভিযোগ, না ঘৃণা
কিংবা স্বয়ং ভালোবাসা! কোত্থেকে যেন ছু টতে ছু টতে দু'টো ক্ষু ধার্ত লোম ছড়ানো কুকুর খাবারের খোঁজে এসে
হাজির হলো। কোন কিছু না পেয়ে শেষমেশ দু'জন কামড়াকামড়ি করে চিঠিতা ছিঁড়ে খেতে শুরু করে।যে
কাগজে সম্ভবত তাদের চাইতেও নিকৃ ষ্ট এক প্রাণীর জন্য ভালোবেসে বোকা হয়ে যাওয়া এক মনের সর্বশেষ
ভালোবাসাটু কুন সঞ্চিত ছিল !
#StayHomeStaySafe

Name: Mahbuba Moumi


Batch: 20
Department: Architecture
Article: সুপারহিরো

আমার কোয়ারেন্টাইন অবসরের একভাগ আমি কাজে লাগাই উদ্ভট সব রান্নার এক্সপিরিমেন্ট করে। রান্না যেমনই
হোক, রান্নাঘরটারে যতো ভাবে পারি ময়লা করার পর, আমি আর রান্নাঘরের ধারেকাছে ঘেষি না।
আম্মা বাসায় এসে আমার দিকে বিষাক্তবাক্যবাণ ছু ড়ঁতে ছু ড়ঁতে বাসন মাজেন, নতু ন করে রান্না করেন। আমি
যাপরনাই বিরক্ত হই.... এই মহিলা অল্পেই এতো ক্ষেপে ক্যেন?
আম্মার পরিচয় দিই! আমার আম্মা পেশায় "নার্স"। আমরা যেই টাইমটা ফেসবুকে জ্বালাময়ী পোস্ট দিয়ে
টাইমপাস করছি, সেই টাইমটা উনি হসপিটালে থাকেন। পুরা দেশ যেখানে লক ডাউন, সেইখানে উনি আর
উনার কলিগরা রাত দিন পরিশ্রম করেন শুধুমাত্র আমাদের ওয়েলবিং এর জন্য। আবার বাসায় এসে
তিনভাইবোনের তাবৎ ময়লা হাড়িপাতিল/কাপড় পরিষ্কার করেন, রাধেঁন....
এইদুইটাই তার দায়িত্ব.... একটার জন্যে সরকার বেতন দেয় তাকে অন্যটায় তিনি মা তাই বেগার খাটেঁন।
মাঝেমাঝে কলিজা টিপটিপ করলেও আমি তার দায়িত্ব ভেবে পাত্তা দেই না ব্যাপারটারে।
যাইহোক, ওইদিন হুট করে আম্মা আমার রুমে এলেন। ভাবলাম এসেই বকাঁ দেয়া শুরু করবেন। আমাকে
অবাক করে দিয়ে হাসতে হাসতে আমার পাশে বসলেন।
বললেন, " শোন মা! আমার অনেক সাধ ছিলো আমি আমার মায়ের হয়ে হজ্জ্বে যাবো। আমার মরার পর আমার
হয়ে তু ই হজ্জ্বে যাবি, সাথে করে জনিরে (ছোটভাই আমার) নিয়ে যাইস, ও তোর নানুর হয়ে হজ্জ্ব করবে। টাকা
সোনালি ব্যাংকে আছে। একাউন্ট নাম্বার.......... "
এরপর পাচঁ মিনিটের মধ্যে আমি জেনে গেলাম, আম্মার প্রোবিডেন্ট ফান্ডের টাকার পরিমাণ, আম্মার ব্যাংক
ব্যালেন্স, কোথায় কোন জমি আছে, কাকে কতটু কু জমি দিতে হবে, আম্মার মরার পর কার পড়ার খরচ চালাতে
হবে, কাকে কতটু ক দান করতে হবে, ইনফ্যাক্ট আম্মার কবর কোথায় হবে তাও!
আমি থতমত খেয়ে বললাম, "আম্মা! কি বলতেছো এইগুলা।"
আম্মা বিব্রত একটা হাসি দিয়ে বললেন, "আমার ওয়ার্ডে দুইজন করোনা রোগী আছে। ওদের অন্য হাসপাতালে
শিফট না করা পর্যন্ত আমারই দেখাশোনা করতে হবে। হায়াত মৌতের কথা তো বলা যায় না, কখন কি হয়!
তাই তোরে আগেভাগেই সব বলে রাখলাম!"
আমি নির্বাক হয়ে আম্মার মুখের দিকে তাকায় ছিলাম। তার হাসিতে একফোটাঁ ভয় বা কষ্ট নেই তাতে। গর্ব
দেখছি জাস্ট... তৃ প্তি দেখছি। দেশরে সার্ভ করার আনন্দ দেখছি....
বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এমন হাজারো সুপারহিরো আছেন, যারা দেশের এই ভয়াবহ সময়ে জানের মায়া ত্যাগ
করে সাধারণ মানুষদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাদের সাহায্য করতে না পারি, এটলিস্ট যে যার ঘরে
থেকে, লকডাউন মেনে তাদের কষ্টটা কমাতে তো পারি।
আমি আমার আম্মার মেয়ে হয়ে আপনাদের রিকুয়েস্ট করছি, প্লিজ! বাসায় থাকুন। আমাদের সুপারহিরোদের
এই ত্যাগগুলো বৃথা যেতে দিবেন না। প্লিজ....
সুস্থ থাকুন, সুস্থ রাখুন।
#StayHomeStaySafe.

Name: Tamanna Islam


Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: সম্পর্ক

আচ্ছা সম্পর্ক বলতে কী বুঝি আমরা?


আচ্ছা ধরে নেই যে সম্পর্ক মানে ভালোবাসা। আরে সত্যিই তো!?
ভালোবাসা থেকেই তো সব সম্পর্কে র শুরু আর ভালোবাসাতেই শেষ। সম্পর্কে র তো অনেক রকম থাকে, এই
যেমন - স্নেহের সম্পর্ক , মায়ার সম্পর্ক , আত্মার সম্পর্ক , প্রেমের সম্পর্ক , বন্ধুত্বের সম্পর্ক । এই সবগুলো সম্পর্কে র
সাথেই আত্মার সম্পর্কে র একটা গোপন যোগসূত্র তো অবশ্যই আছে। পরোক্ষভাবে সবগুলো সম্পর্কে র পেছনে
বন্ধুত্বের সম্পর্ক খুবই গভীরভাবে সম্পর্ক যুক্ত। তার মানে তো এটা দাঁড়ায় যে আত্মার সম্পর্ক আর বন্ধুত্ব থেকেই
বাকী সব সম্পর্কে র জন্ম। তাহলে কী এদের সম্পর্কে র জন্মদাতা বলবো!? আচ্ছা! সম্পর্কে র জন্মদাতা বলতে
কিছু হয়নাকি অবার!? আদৌ কি সব সম্পর্কে র সাথে আত্মা আর বন্ধুত্ব জড়িত? ! যদি তাই হয় তো সম্পর্ক গুলো
ভেঙ্গে যায় কেনো?
তার মানে কি সম্পর্ক আসলে সম্পর্ক না। সম্পর্কে র মানে কি তাহলে অন্যকিছু ?? আচ্ছা সেই মানেটা তাহলে
কী!? প্রয়োজন??!!
#StayHomeStaySafe
Name: Rafi Kawsar
Batch: 34
Department: Textile
Article: মানুষ

একটা গান আছে-" হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফু রাইলেই ঠু স"।


সেদিন রনি বদ্ধ ঘরে বসে এই গানটি শুনছিলো। আর ভাবছিলো তার আত্নকাহিনী।রনি একা থাকতেই পছন্দ
করে।নিজের সাথে কথা বলতে পছন্দ করে তাতে লোকে অবাক হলেও তার কিছু ই যায় আসেনা।রনি বেশ ভাল
করেই অবগত যে,নিজেকে জানতে হলে নিজের সাথে সময় পার করাটা জরুরি ।
মানুষ কত রঙের হয়!ভাল মন্দ এই দুইয়ের সমন্বয়ে মানুষের সত্তা।প্রতিদিন গড়ে কয়টা লাশ সিলিং ফ্যান এ
ঝু লছে তা কেই বা বলতে পারে!আবার কেউ হয়তো সহস্রাধিক পাপ করেও বেচে আছে। একটা সময় বোধহয়
তার মধ্যে আগন্তুক এক অপরাধবোধ উপলব্ধি হয়। পাপাচারে ক্লান্ত হয়ে নিজেকেই আয়নায় দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করে
আর কত?আর কতদিন পাপ করে যাবো?কিন্তু তাতেও সে বেচে থাকে।না সে নিজে বেচে থাকে না তাকে বাচিয়ে
রাখে একটা "আশা"। পিশাচের ন্যায় অনিশ্চিত আলো না দেখেও এই আশায় সে বুক বাধে।আর সেই " আশা" টাই
হলো সৃষ্টিকর্ত া হয়তো তাকে কোনো একদিন মাফ করে নিস্তার দিবে।
মানুষের দেহ কে যদি একটা যন্ত্র ভাবা হয় তবে মানুষের আত্না টা হলো সেই যন্ত্রের চালক।আসলে মানুষ হলো
জিবন্ত এক লাশ মাত্র।আবার মানুষ কে একটা সাইকেলের সাথে তু লনা করা যেতে পারে।একটা সাইকেল প্রথমে
যেমন মজবুত থাকে তেমনি মানুষ যৌবনকালে অত্যাধিক সম্ভাবনাময় থাকে। এই বয়সেই মানুষ জীবনের হাজার
পরিশ্রম করতে সক্ষম থাকে।সাইকেলে যেমন জায়গায় জায়গায় স্ক্র মারা থাকে।মানুষের দেহেও তেমন জায়গায়
জায়গায় ২০৬ খানা অস্থি থাকে।সাইকেলের যত বয়স হতে থাকে স্ক্রু ক্ষয় হতে থাকে,বেল টাও অনেক সময়
অকেজো হয়ে যায়,আস্তে আস্তে চেইন টা পড়ে যেতে শুরু করে,তারপর ঝং ধরে যায়।তারপর তা অকেজো হয়ে
যায় আর শেষে স্থান পায় কোন এক পুরনো গ্যারেজে অথবা আবর্জ নার স্তুপে। তেমনি মানুষেরও বয়স বাড়ার
সাথে সাথে অস্থির পচন ধরে,শরীরে নানান রোগ বাসা বাধে,মস্তিষ্কের উদ্দিপনা হ্রাস পায়।এক সময় দেহ টা
অকেজো হয়ে পড়ে সেই মরিচা পড়া সাইকেলটার মত।আর সবশেষে স্থান হয় আড়াই হাত গভীর মাটিতে বা
কবরে।💔💔💔
Name: রায়হান নিলয়
Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: মা

দেখতে দেখতে পাঁচ দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে সবগুলো হাওড়।
চারদিকে কৃ ষক কৃ ষাণির মুখে কান্নার রোল, হাহাকারে জনপদ। অন্য বছর তো কিছু ধান ঘরে তোলে। ধান খড়
কিছু কিছু করে হলেও প্রত্যেকের ঘরে উঠে এ বছর তাও না। মাত্র ধান থেকে হিজা ছেড়েছে এর মাঝেই
ভরাডু বি। মানুষ কি খাবে সে কথা দূরের কথা গরুগুলো বাঁচার আর কোন পথ থাকলোনা ।
চারদিকেই অভাব।
হাওরের কৃ ষকেরা গরু ধীরে ধীরে মোহনগঞ্জ বাজারে তু লে বিক্রি করা শুরু করেছে।
যে গরুর দাম ত্রিশ হাজার টাকা সে গরু পনেরো হাজার বিশ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রমিজ উদ্দিন প্রতি বছর এক হাজার মন ধান পায় । এ বছর একটা ধান ও নাই ।
কোন উপায়ান্তর না দেখে পাঁচটি গরুর মাঝে একটি গাই গরু বাছু র সহ বাজারে তু লে ।
রমিজ উদ্দির সাথে ঘরের কামলা জবর আলী বুদ্ধি দেয় ভাই বাছু র টি বাড়িতে রেখে পরের হাঁটে কড়া দামে
বিক্রি করব আজকে গাইডা শুধু বেইচ্ছালাইন।
রমিজ উদ্দিন মনে মনে ভাবে এবং বলে । যা গাইডা লইয়া বাজারো যা। বাছু রডা গোয়াইল ঘরো বাইন্ধা রাখ।
কদমতলী গ্রাম থেকে মোহনগঞ্জ গরুর হাট তিন কিলোমিটার ।
জবর আলী ও রমিজ উদ্দিন গাই নিয়ে হাটে রওনা হয়। বাছু রটি যেমন মায়ের জন্য চিৎকার করতে থাকে
মা ও হাম্বা হাম্বা করে চোখের জল ছাড়তে থাকে।
রমিজ উদ্দিন ব্যাপারটি বুঝেও কিছু বলে না।
রমিজ উদ্দিনের বৌ বলে আমি একটা কথা কই হুনবেন;
কি কথা?
বাছু রটা নিয়া যান । যেখানে বিক্রি করেন একসাথে বিক্রি কইরেন । অন্তত মা হারা হইবো না।
রমিজ ধমক দিয়ে বলে বেশি বুঝিস না । আমার সব শেষ আর অহন দরদ মাংরাইতাছো।
রমিজের বউ সাবেরা বেগম বলে আল্লাহ যে হাজার মন ধান নিয়া গেছে তোমার এই চরিত্রডার লাইগা আরো
নিব নে ।
রমিজ বলে বউ বেশি কথা না কইয়া তু ই ঘরে যা। বাছু রডা পরের হাটে বেছমো কড়া দামে।
রমিজের বউ বলে এক নম্বর কাইস্টা বেডা।
রমিজ উদ্দিন হাঁটতে হাঁটতে বাজারের দিকে রওনা হয়।
হাবিব মাষ্টার গাই গরু বাছু র সহ কেনার জন্য বাজারে আসে । সাথে চৌদ্দ বছরের ছেলে আরিফ।
বাজারেও হাহাকারের বিষাদ।
হাবিব মাষ্টার গরুর হাঁটে ঢোকার আগে চা খায় আর চা স্টলে আলাপ শুনে।
সাড়ে বিশ কোটি টাকা আইছিলো হাওরের বাঁধ নির্মাণের জন্য দশ লাখ টাকার কাজও হয় নাই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডে র কর্মকর্ত া মা বাপ চৌদ্দ গোষ্ঠি তু ইল্যা মানুষে বক তাছে। এর মাঝে একজন লোক এসে
বলে শোন তোমরা খালি পানি উন্নয়ন বোর্ডে র লোকদের দোষারুপ করো কেন বাকীদের কি অইবো । একশ
ভাগের নব্বই ভাগ খায় এম পি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার,সাংবাদিক সহ
আরো অনেকেই ।
সবাই নিরব।
হাবিব মাষ্টার বলে আস্তে কও বাই আস্তে কও। সরকার তো দেশের জন্য বাজেট দেয় ছাতি পাতিরা দূর্ণাম কুড়ায়
করবা কি।
হাবিব মাষ্টার চা খেয়ে কয়েকটা গরুর দাম করে রমিজউদ্দির পাশে যায়। রমিজ উদ্দির গাই দেখে পছন্দ হয় ও
পঁচিশ হাজার টাকা দিয়ে কিনে ছেলে আরিফের হাতে দেয় ।
হাবিব মাষ্টার বলে ভাই বাছু র কোথায়।
রমিজ বলে বাড়িতে পরের হাঁটে বিক্রি করব।
হাবিব মাষ্টার বলে এটা ঠিক না। রমিজ নিরবে থাকে এবং টাকা বুঝে নেয়।
আরিফের হাত থেকে হঠাৎ গাইয়ের দড়ি হেঁ ছকা টানে ছু টে যায়। সারা বাজার হাম্বা হাম্বা করে ডাকতে ডাকতে
দৌড়তে থাকে। আরিফও গরুর পিছনে পিছনে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়াতে থাকে। রমিজ উদ্দিন ও হাবিব মাষ্টার
দৌড়ে আরিফকে ধরে। রমিজ উদ্দিন বলে বাজান কাইন্দনা গাই পাওয়া যাইবোনা, বইলা রিক্সা করে গাইয়ের
পিছনে পিছনে রমিজের বাড়ির দিকে যায়। সবাই রমিজের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে দেখে গোয়াল ঘরে গাইয়ের
দুধের ওলান টানছে বাছু র আর গাই পরম মমতায় বাছু রের শরীর চেটে দিচ্ছে ।
সাবেরা বেগম বলে হায়রে বোবা জাত সন্তানের লাইগা কত মায়া । মানুষ হইয়াও মানুষের এত মায়া নাই।
রমিজরে দেইখা সাবেরা বেগম বলে আগেই কইছলাম বাছু রডা লইয়া যান ।
আপনার উপরে আল্লাহর গজব পড়ব।
রমিজ বলে যা চেয়ারডা আন মেহমান আইছে ।
চেয়ারে হাবিব মাষ্টার বসে । হাবিব মাষ্টার বলে ভাই তোমার বাছু রের
দাম কত । রমিজ বলে পাঁচ হাজার । হাবিব মাষ্টার বলে এই নাও আট হাজার টাকা।
তিন হাজার টাকা বেশি দিলেন কেন মাস্টার ভাই?
এই জন্য বেশি দিলাম যে আর কখনো এই ভু ল করো না ভাই।
মাকে যে হারিয়েছে সে মায়ের মর্ম জানে। আমি ছোট থাকতে আমার মাকে হারিয়েছি আমি কত কষ্ট করে যে
বড় হয়েছি আমি জানি।
আরিফ বাছু রকে কোলে করে আর হাবিব মাষ্টার গাইয়ের দড়ি ধরে বাড়ির দিকে রওনা হয়। সবার মুখে হাসি ।
বাছু রটি আরিফের কোল থেকে নেমে একবার তিরিং বিরিং করে সামনে দৌড়ে আরেকবার মায়ের কাছে
লাফাতে লাফাতে আসে ।
#stay_home
#stay_safe
Name: Showkat Ali
Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: রক্তিম ভালবাসা

কখনও কি আয়নায় নিজের চোখের দিকে তাকিয়ে ভেবেছ এমন টা তো হবার ছিল নাহ। কেনো অনুভূতি গুলো
বাদ ভেঙে এভাবে বের হল?কেনো বা আসক্তি টা এত বাড়ল? কেনই বা পাবার আকাঙ্খা এত টা তীব্র হল?
পেরেছো কি আয়নায় নিজের চোখের দিকে তাকাতে? নাকি চোখ নেমে যাচ্ছিল নিচে আগের কথা ভেবে।আচ্ছা
কখনও কি এক বুক অভিমান নিয়ে কারও মেসেজের অপেক্ষা করেছ?আর সেই কাঙ্খিত মেসেজ পাওয়ার সাথে
সাথে অভিমান ভু লে হেসেছ?অনুভূতি গুলোকে আকড়ে ধরে তার অপেক্ষায় রয়েছ?যদি করে থাক এমন তাহলে
ভেবে নিও তোমার ও আছে এক বুক সমুদ্র পরিমাণ ভালবাসা।ভালো তো সবাই বাসতে পারে,অপেক্ষা কয়জনই
বা করতে পারে বল?তু মি যার অপেক্ষায় বিভোর হয়ে দিন কাটাচ্ছ সে কি জানে তোমার মনের বার্ত া? যদি না
জানে তাহলে জানিয়ে দেও এক বুক সমুদ্র পরিমাণ ভালবাসা নিয়ে তু মি তার অপেক্ষায়। কাওকে না জানিয়ে
ভালবাসা টা হচ্ছে বোকামি। তু মি যার আশায় বুক বেধে থাকো সে যদি তা অনুভবই না করতে পারে,তাহলে
তোমার ভালবাসা টা তার জন্য ওর প্রতি ভালো লাগাই হয়ে থাকবে।আর ভালবাসা, ভালোলাগা তো আর এক
নাহ তাই না?অনুভূতি গুলোকে প্রকাশ করে দিতে হয়, না হলে তা ভিতরে থাকতে থাকতে তোমাকে এক অন্য
তু মিতে পরিনত করে দেবে।যেখানে তু মি থাকলেও নিজেকে খুজে পাবে নাহ।আবার দেখো ভু ল মানুষের কাছে
নিজের অনুভূতি গুলো প্রকাশ করে ফেলো নাহ আবার।তখন তু মি কাদবে আর তোমার অনুভূতি দেখে সে হাসবে।
তবুও আমরা ভু ল মানুষদের ভালবাসতেই বেশি ভালবাসি।এতে কিছু ই হয় নাহ,শুধু আমাদের অনুভূতি গুলোর
তিরস্কার হয়।কিছু অনুভূতি দিনে দিনে বাড়ে,আর কিছু অনুভুতি বাস্তবতার সাথে লড়তে লড়তে হারে।
অনুভূতি থেকে আরও ভয়ংকর হচ্ছে মায়া।যা কখনও হারায় নাহ।ভালবাসার মানুষের কিছু না কিছু র জন্য তা
দিন দিন বেড়েই চলে।শত ভু লার চেষ্টা করে অনুভূতি গুলোকে পরাজিত করে যখন জয়ের দিকে আগাতে থাকবে
তখনই সামনে পরবে মায়া।আর মায়ার জালে আমরা সবাই বন্দি।
দিন শেষে আমরা সবাই ভালবাসি...কারো টা একপাক্ষিক, কারো টা দ্বিপাক্ষিক।এক এক জনের কাছে ভালবাসার
রং এক এক রকম আর আমার কাছে তা লাল।তাই আমার ভালবাসা হচ্ছে "রক্তিম ভালবাসা।"
#stay_home_stay_safe
Name: Jahangir Alam
Batch: 25
Department: Bengali
Article: আতঙ্ক

মীরা ও মারুফের বাবা স্থানীয় বাজারে সবজি ব্যবসা করতেন। আজ দুদিন তাদের বাবা বাসায় ফেরেনি।
হাসপাতালে করিডোরে আবদ্ধ বাবার ঘনীভূ ত শ্বাস এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় তাদের মা খুব অসুস্থ হোন।

এক ভ্যান চালক তাদের মা'কে নিয়ে যান হাসপাতালে। কিন্তু পথিমধ্যে মায়ের মৃত্যু হওয়ায়, ভ্যান চালক লাশ
রাস্তায় রেখে পালিয়ে যান। এক দিন পড়ে থাকার পর পুলিশ এসে লাশ সৎকার করেন।

দুপুরের কালো রোদে ভিজতে ভিজতে পরদিন তারা বের হলেন বাবার খোঁজে। জনশূন্য রাস্তায় ঘুমিয়ে আছে
শূন্যতার শেষ সূত্র। আলোনির্মল বাতাসের ঘোড়া তাদেরকে নিয়ে দাঁড় করায় প্রহরারত পুলিশের মোড়ে।
কুয়াশার মতো ঘন কূর্পরের ঘ্রান দিয়ে যায় অপ্রিয় লাশের খবর।

স্তব্ধতাপূর্ণ আতঙ্ক ও শোকে তারা ১০০


গিলে ফেলে নিজেদের চোখের জল। সমস্ত দুঃখের সীমা অতিক্রম করে তারা রূপান্তরিত হয় এক নির্জীব পাথরে।
গাছের শাখায় ডাহুক ডাকে স্পর্ধার ডানা মেলে দুটি কালো কবুতর।

মীরা ও মারুফ অনুভব করে মৃতের গন্ধ ভরা কণ্ঠে তারা স্পষ্ট বলে যাচ্ছে "আজ পৃথিবীর অনেক বড়ো অসুখ।
এমন অসুখে শ্বাসের ভেতরে আবিস্কার করে ঘুরঘুট্টির অন্ধকার।

ক্যালেন্ডারের পাতায় আটকে যায় জীবন স্বপ্ন মনেহয় মৃত্যু উপত্যকা স্থবির ঘর বাড়ির বোবা চিৎকার। অনাহূ ত
পৃথিবী টেনে নিয়ে যায় পৃথিবীর চেয়ে বড়ো ও বেশি অজানা অচেনা একটি শব্দের ওজন।

মীরা ও মারুফ দেখেন বিকেলের রোদে লম্বা হওয়ার মতো লম্বা হচ্ছে শব্দটা। মারুফ শব্দটা ধরতে এগিয়ে গেলে
মীরা টেনে ধরে তার অনুভূতি। সমস্ত দুঃখ আনন্দ ও আত্মার কোলাহল লুকিয়ে পড়ে থাকে নিঃসঙ্গ রেললাইনে
পড়ে থাকা ফ্রিজের মাংসের মতোন।

মীরা ও মারুফ ভোরের অপেক্ষায় থাকে দুপর


ু সন্ধ্যা অথবা নতু ন একটি রাতের অপেক্ষা তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখে
জনশূন্য এক একলা ঘরে।

কিন্তু তারা বাঁচে না কতগুলো কুকুরের আর্ত কলরব নিয়ে বেঁচে থাকে বেঁচে থাকার দীর্ঘ আতঙ্ক রিলেফের চাল
সমুদ্র ক্ষু ধা উপসর্গ সমান ডেথ সার্টি ফিকেট ও পারমাণবিকের মতো কিছু আরাম অক্ষর।
Name: Waliullah Khan Ovi
Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: অপ্রয়োজনীয়' আমি

অগোছালো! কথাটি শুনতে কি তিক্ততা আসে? কখনো ভেবেছিলে আজ এই অবস্থানে এসে দাঁড়াব? ওহ্ হ্যাঁ, তু মি
না বলেছিলে কেন এই ক্লান্তিকর দুপরে
ু দাঁড়িয়ে থাকো ছাদে? আমাকে বিয়ে করলে তু মি ঠকবে। জীবনের এক
বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে চরম আঘাত আসল। তবুও হাল ছাড়িনি, জানি পাব না তোমায়, তবুও স্মৃতিগুলোকে
আকড়ে ধরে হয়ত দিনাতিপাত করতে পারব।জানো, আজ আমি ফার্মাসিস্ট হয়েছি।বিয়ের জন্য কত যে
ঘ্যানঘ্যান করছে পাত্রি পক্ষ!
হুহ্, তবুও সেই দিনের কথা আজও ভেসে বেড়ায়! "আমাকে কেন"? "আর কেউ নেই"?
সেদিনও জবাব দিতে পারিনি আজও পারলাম না।জানো, আমার বড় ভাইয়া আর মুদির দোকানে বসেন না,
উনিও একজন বড় মানের সরকারী কর্মকর্ত া।শুনেছি, ভাইয়া আমাদের জন্য ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। তা কি তার
সিকিউরিটি! আর বাবা? উনি আজ নেই, হয়ত বেঁচে থাকলে গল্পটি লিখতে গিয়ে চোখের পাশটায় জল এসে
কাগজের অগ্রভাগ ভিজতেই দিতেন না। তু মি বলেছিলে, আজকাল দুইদিনের নার্সদের পরিবারে আবার এমন
ছেলেও জুটে নাকি! আমি কিছু ই বলতে পারিনি। আসলে আমার "মা" তো আর মমতাময়ী নার্স ছিল না! তিনি
আজ একজন স্বাস্থ বিভাগের এক উচ্চ পদের কর্মকর্ত া। জীবনে সবই পেয়েছি। এখন আর দুপুরের খাবার না খেয়ে
ছাদে যাওয়ার অপ্রয়োজনীয়তা নিজের জীবনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বহীন হয়ে ধরা দেয়।
কি বলব? আমার ভালোবাসা তো আর বাজি ছিল না!
Name: Towhid Ahmed Romim
Batch: 34
Department: Textile
Article: একদিনের অপেক্ষাই

মাঝে মাঝে অনেক একাকীত্ব রোগে ভু গি।তার সাথে আমার চার বছরের সম্পর্কে র ইতি এক বছর আগে ঘটে।
অনেক খারাপ লেগেছিল।নিজেরও কিছু ভু ল ছিল।সে এখন অনেক ভালো আছে।

তার কথা মনে পড়ে না তা নয়,কিন্তু সম্মান রয়েছে ভালবাসাটা খুব কম।সে ফিরে আসলে তাকে আপন করে
নিবে? এই প্রশ্নের উত্তর,সে আসবে না।আমিও নিবো না,সেও নিতো না।কিন্তু চাই সে ভাল থাকুক।ইহা বলেই
তার কথার সমাপ্তি আনলাম।।।

খুব কথা বলার কাওকে মিস করি,বিশেষ করে রাতে ঘুম না আসলে।আমার এক খুব কাছের বান্ধবী আছে,এখন
সে আমাকে উত্তর না দিয়ে কোন রকম সরতে পারলে বাচে। তাই তাকে আর মেসেজ দিই না।

সেদিন রাতে ঘুম ভেংগে যায়,আম্মাও জেগে গিয়েছিলেন হঠাত, আমার রুমে আসেন।দেখেন আমি বসে আছি।
আমি বললাম বসো একটু আম্মু,খারাপ লাগছে,একটু কথা বলো। সে পাশে বসে কথা বললো কিছু ক্ষন।তারপর
আমিও ঘুমিয়ে গেলাম।

রাত জেগে এখন কারো কথা ভাবি না।কোরেন্টাইনে একটা শিক্ষা পেয়েছি।আমি একা নয়।আমার রাত জাগার
কারন তু মি বিশেষ কেও নও।আমার পরিবার আছে,একা লাগলে তাদের কথা ভাবি।দিনে ঘুমানোর বাজে
অভ্যাসটা এখন বাদ দিয়েছি।এশার নামাজ পরে খাওয়া দাওয়ার পর মোবাইলে গেমস খেলতে খেলতে কখন ঘুম
চলে আসে যে,জীবনে কেও নেই বা ছিল সে কথা মনে করার সুযোগটা আর আসে না।
কথা গুলি পড়তে অনেক হাসি পাচ্ছে তাই না।কিন্তু কি জানেন, এইসব শান্তনার কথা বার্ত া লাগলেও সত্য কথা।
নিজেকেও তো ভালবাসি।যে বলে মরতে চায়,মরন আসলেও সে বাচার জন্য কাদে।

সময় নিন নিজেকে নিয়ে ভাবুন।কারো ভালবাসার জন্য এত কিছু করতে পারেন,এখন তো কেও নেই।
নিজেকে তো ভালবাসেন,নিজের খেয়ালটা না হয় নিজেকে ভালোবাসার জন্যই রাখুন।

তারপর একদিন ভোরে পাখি ডাকার আগে,সূর্য উঠার আগে কেও মাথাই হাত বুলিয়ে বলবে,উঠো নামাজ পড়ে
নাও,চা বানাচ্ছি।এই আশা নিয়ে না হয় তত দিন ভালোবাসুন নিজেকে।আর তৈরি করতে থাকুন সেই কারও
জন্যে।❤
Name: আশরাফ উদ্দিন আহমেদ (জুবায়ের)
Batch: 51
Department: BBA
Article: ধুসর জীবন

মোটামুটি আয়ের সংসার জিহানের। জিহানের বয়স ত্রিশ উর্ধ্ব। উচ্চমাধ্যমিকের পর আর পড়াশোনা করেনি,
অনীহা ছিলো পড়ালেখায়। বাইরে ঘুরাঘুরিতেই বেশি আনন্দ পেতো, এরপর একটা ছোট কোম্পানির ফিল্ড
ওয়ার্ক ার হিসাবে ঢু কে এখন মার্কে টিং এক্সিকিউটিভে পৌঁছেছে। বাবা ছোটখাটো একটা বেসরকারি চাকরি
করতো। রিটায়ার্ড করে বাসার পাশে বন্ধুর এক বিশাল ফার্নিচারের শোরুমে ম্যানেজার হিসাবে বসেন। আসলে
ওটা একটা আড্ডাখানা, বেচা বিক্রির চেয়ে আড্ডাই বেশি হয় ওখানে। এলাকার বেশ কয়েকজন বন্ধু মিলে ওখানে
বসে আড্ডা দেয় আর চা খায়। শেষ বয়সে এটাই তাদের বিনোদনের উৎস। জিহানদের বাসা আধাপাকা অর্থাৎ
টিন শেডের, উপরে টিন পাশে দেয়াল, চারটি রুম। ভাড়া কম তাই অনেক বছর ধরেই এখানেই আছে তারা।
মোটকথা, সল্প আয়ে সুখেই দিন কাটে তাদের।

নতু ন বছর শুরু, সবেমাত্র এক মাস গেলো। এর মধ্যেই জিহান একদিন হঠাৎ দুপুর বেলা বাসায় চলে আসলো।
তাকে দেখে :

মা-কিরে আজ এতো তারাতাড়ি চলে আসলি যে?


জিহান-এমনি, ভালো লাগছে না তাই বস কে বলে চলে আসলাম।
মা-আচ্ছা ভালো হয়েছে, হাত মুখ ধুয়ে আয় খাবার দিচ্ছি।
জিহান-আচ্ছা ঠিক আছে আসছি আমি, তু মি রেডি করো।

(খাবার খেতে বসে)


জিহান-মা জ্যোতি আসেনি এখনো?
মা-নারে, ওর দুপুরে একটা ক্লাস আছে ওটা করে আসবে ফোন দিয়েছিলো আমাকে।

(জ্যোতি হলো জিহানের প্রচন্ড আদরের একমাত্র ছোটবোন আর পরিবারের একমাত্র মেয়ে। মাধ্যমিকে আর
উচ্চমাধ্যমিক দুটাতেই প্লাস পেয়েছিলো কিন্তু কেনো যেনো কোনো পাবলিকে চান্স হয়নি। এরপর হতাশায় পরে
যায় সে। প্রাইভেট ভার্সিটিতে তো আর এতো টাকা দিয়ে পড়ানো সম্ভব না। তখন জিহান তার কয়েকজন
বড়ভাই এবং বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে কয়েক ধাপে অনেক গুলো অ্যাপ্লিকেশন করে প্রাইভেট ভার্সিটির জন্য।
অনেক চেষ্টার পর রেজাল্ট, ফিমেল ওয়েভার, আর্থিক অসচ্ছলতা সব বিষয় বিবেচনায় টিউশন ফি-র উপর
ওয়েভার পেয়ে প্রাইভেট ভার্সিটিতে বিবিএ তে ভর্তি হয় জ্যোতি। তবে প্রতি সেমিস্টারে দুই হাজার টাকা লাইব্রেরি
ফি দিতে হয়। ওয়েভারের শর্ত আবার নুন্যতম গ্রেড ৩.৫০। জ্যোতি আগে পড়ালেখায় প্রচন্ড ভালো থাকলেও
মেয়েটা এখন যেনো শুধু পড়ার জন্য পড়ে, আগের মতো তাকে পড়ালেখা টানেনা। মনে হয় যেনো জোর করে
পড়ালেখা করে, তাই বলে কিন্তু তার রেজাল্টও খারাপ না। ভার্সিটিতে তৃ তীয় বর্ষ শেষেও তার রেজাল্ট ৩.৮০।
খুব ভালো আর ভদ্র মেয়ে জ্যোতি।)

-আচ্ছা ভালো কথা মা, খবর-টবর দেখেছো আজ?


-নারে বাবা, কাজেই ব্যস্ত ছিলাম। তোর বাবা তো তার কাজেই। কেনো কি হয়েছে?
-চীনে নাকি কি একটা ভাইরাস এটাক করেছে নতু নভাবে। অনেকজন আক্রান্ত হয়েছে।
-কি ভাইরাস আবার এটা?
-করোনা।
-কি করবো?
-আরে ধুর, ওই ভাইরাসের নাম "করোনা"
-কিজানি বাবা পঞ্চাশ বছরের মধ্যে এমন নাম শুনিনি।
-যাইহোক সাবধানে থাকবে এখন থেকে। ভাইরাস খুব তারাতাড়ি ছড়ায়।
-ঠিক আছে বাবা।

জিহান খেয়ে রুমের দিকে গেলো। জ্যোতি বিকেলে এসে খেয়ে ভাইয়ের রুমে গেলো চা নিয়ে।

জ্যোতি-কিরে ভাইয়া আজ নাকি দুপুরে এসেছিস, অসুস্থ নাকি?


জিহান-নারে এমনি, আয় বস। চা দে খাই।

এভাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাই বোনের গল্প চলেছে। মাগরিবের নামাজ পড়ে জ্যোতি নিজের রুমে এসে লেপটপ অন
করে মেসেঞ্জারে ঢু কলো।

(লেপটপ ও টাকায় কেনা না আবার। ভার্সিটির এক পিকনিকে রেফেল ড্র তে প্রথম পুরষ্কার পেয়েছিলো।
জ্যোতির ভার্সিটিতেও ভালোই সুনাম আছে বিভিন্ন দিকের।)

জ্যোতি-ভাইয়া...😁
সুহান-এই তোমাকে না বলেছি আমাকে ভাইয়া ডাকবেনা 😒
-তো কি ডাকবো??😅 তু মি তো আমার আরেক ভাই, ভাইয়ার নাম জিহান তোমার নাম সুহান, সো তোমরা
তোমরা ভাই ভাই আর তু মি আমার ভাই 😄
-চু প!! না করেছি বেস ডাকবেনা 😏

(সুহান এর সাথে জ্যোতির প্রেম তিন বছর ধরেই। সুহান ডাক্তারি পড়ে কিছু দিন হয় একটা বেসরকারি
হাসপাতালে ঢু কেছে। ওদের সম্পর্কে র কথা আবার দুই পরিবারই মোটামুটি জানে। সুহানের পরিবারের
অর্থনৈতিক অবস্থা ভালোই। তবে ওদের ক্ষেত্রে সাধারণের চেয়ে চিত্র টা ভিন্ন। জ্যোতির বিয়ের কোনো প্রস্তাব
আসেনা কিন্তু সুহানের বাবার পরিচিত ঘটকরা বিভিন্ন পাত্রীর ছবি দেখিয়ে নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছে। এমন তো
হবেই, ছেলের বিয়ের বয়স হয়েছে আর ডাক্তার ছেলে তো কেউ হাতছাড়া করতে চাইবেনা। তাই এই নিয়েও
জ্যোতির কাছে অনেক পঁচানি খেতে হয় সুহানকে। তবে ওদের সম্পর্ক টা অনেক মিষ্টি একটা সম্পর্ক ।)

-তু মি তো ভবিষ্যৎ গরিব, আরো কয়েক বছর পর দেখবে বাংলাদেশে এত্তো এত্তো ডাক্তার বের হবে। তখন তো
তোমার চাকরি থাকবে না, আমাকেই সংসার চালাতে হবে তোমাকে নিয়ে 😪
-এহহহহ্!!!এসেছে আমার বিবিএ-র ছাত্রী। যেইনা সাবজেক্ট তার আবার ভবিষ্যৎ 😅
-এই চু প, গলা টিপে দিবো বিবিএ নিয়ে কিছু বললে। যাবে কোথায়? বিয়ে তো আমাকেই করতে হবে 😒

এভাবেই কথোপকথন চলতে থাকে তাদের।

(এক মাস পর পারিবারিক কথোপকথন)

জিহান-মা এখন থেকে ঘর থেকে একদম বের হবে না। বাংলাদেশে করোনা রুগী ধরা পরেছে।
মা-আয়হায় কি বলিস!
-হ্যাঁ মা, জ্যোতিদের ভার্সিটি ও হয়তো কিছু দিনের মধ্যে বন্ধ দিয়ে দিবে। আমাদের অফিসেও আজ এটা নিয়ে
কথা হয়েছে।
-বাবা তু ই তো সারাদিন বাহিরে থাকিস, তু ই সাবধানে থাকিস।
-সমস্যা নেই, আল্লাহ্ ভরসা। আমি কাল আসতে সবার জন্য মাস্ক আর গ্লাভস্ নিয়ে আসবো।

এরপর আরো এক মাস চলে গেলো। সবকিছু ই বন্ধ সরকারি নির্দে শে। দোকানপাট খুবই কম খলে
দোকানদারেরা। পরিস্থিতি খুবই থমথমে। ওদিকে জ্যোতির চিন্তা সুহানকে নিয়ে। এই অবস্থায় সারাক্ষণ রুগীদের
সেবায় নিজেকে সোপে দিয়েছে ছেলেটা। কখন কি হয়ে যায় জ্যোতি খুবই চিন্তায় থাকে তাকে নিয়ে আর পরিবার
পরিজন তো আছেই। এইদিকে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মানুষের পুরো শরীরে
ভয় ঢু কে গেছে। সারা বিশ্বে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। সবাই আল্লাহ্ এর কাছে ফানা চাচ্ছে
দিনরাত।

এমনই এক কড়া লকডাউনের দিনে জিহান বাজারে যাচ্ছে, তাও বাসার কাছের ছোট বাজার টা বন্ধ তাই দুই
মাইল দুরের এক বাজারে যাচ্ছে রিকশায় করে। রাস্তায় আর্মির লোকের জিজ্ঞাসাবাদ। অতঃপর সে সব বাজার
সেরে রিকশায় উঠার জন্য সামনের দিকে হাঁটছে। হঠাৎ পিছন থেকে কতোগুলো ছেলে দৌড়ে আসছিলো পুলিশের
ধাওয়া খেয়ে। তাদের দুইজনের সাথে জিহানের ধাক্কা লাগে লাগে অবস্থা। তারপর রিকশা পেয়ে বাসায় ফিরলো।
এসে যথানিয়মে পরিষ্কার হলো। রাতের দিকে খাওয়ার পর হঠাৎ শরীর ভার হয়ে আসলো জিহানের। জ্বর জ্বর
ভাব, নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। রাতে আর কাউকে ডাকাডাকি করলোনা।

পরদিন সকালে উঠতে গিয়ে জিহান দেখে সে গায়ের ব্যথায় নড়তে পারছেনা। তারপর জ্যোতিকে ডাকলো।
জ্যোতি এই অবস্থা দেখে বাবা মাকে ডাকলো তারাহুরো করে। তো আর দেরি না করেই তাকে নিয়ে চলে গেলো
হাসপাতালে। টেস্টের পর খুবই দুর্ভ াগ্যবশত যা ধারণা করেছিলো তাই ধরা পরেছে। "করোনা"এ পজিটিভ
এসেছে। সবার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। জ্যোতি সাথে সাথে সুহানকেও জানালো। তারপর জিহানকে
আইসোলেশনে রাখা হলো জিহানকে।

সুহান বলেছিলো তার হাসপাতালে নিয়ে যেতে কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের এত্তো খরচ তো অসম্ভব বেপার।
চৌদ্দদিন তো কমপক্ষে রাখতেই হবে। প্রতিদিন জ্যোতি আর মা গিয়ে দুর থেকে দেখা করে আসে জিহানের
সাথে। এভাবে পাঁচ দিন কেটে গেলো। সুহান ও প্রতিদিনই খবর নিচ্ছে আর নিজের রুগীদেরও সামলাচ্ছে।
জিহানের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে ক্রমশ। এভাবে সপ্তম দিন দুপর
ু বেলা জ্যোতি আর মা-র সামনেই জিহান
পৃথিবীর মায়া ছেড়ে, সবাইকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি দিলো।

#StayHomeStaySafe

Name: রিফা তাসনিয়া


Batch: 51
Department: BBA
Article: আমার ধরার নতু ন রুপ

"আমার ধরার নতু ন রুপ''

দূর্যোগ দুর্বিষহ
মরণব্যাধি দূর্দ শা
মরিতেছে যে শত দেহ
বাঁচিতেছে হাহাকারে হতাশা
এ দিন থাকিবে ক'দিন
বাঁচিবো কবে নির্ভ য়ে!
কর্ম আজ স্থির তবে
ধর্ম করিতেছে পালন নীরবে
সুদিন আসিবে আশায়
নিঃশ্বাস প্রাণলয়ে বাঁচিবো মোরা
আমাদের সুস্থ ধরায়।

বাহিরে ডাক পড়েছে, মিছিল নাকি বন্ধ হয়েছে! ভালোই হয়েছে আর দেখতে হবে না মারামারি খুনাখুনি। সেদিন
বাবা ঘরে ফিরে বললো, মা'রে দেশের যে করুন হাল। ভয়ে আমার মন যে কাঁদো কাঁদো, বাবা এ কি বললে
আজ। নিজেই বেরুলুম, এ কি দেখছি! চারিদিকে শুধু হাহাকার, সারি করে দাঁড়িয়ে শত পুলিশ সেনা রক্ষক
বাহিনী, আর মাইক নিয়ে চারিদিকে বলছে শুধু.. বের হবেন না, বের হবেন না। করোনা নাকি বংশ করেছে!
তবে কি আমার ধরার গভীর গভীরতম অসুখ হলো?

এ কেমন ধরা আমার? এ কি রুপ ধারণ তোমার! আগে তো দেখি নি তোমায় এই রুপে" সর্বশান্ত, পরিশ্রান্ত,
নিশ্চু প, স্থির আজ গোটা বিশ্ব। প্রতিদিন শত মানুষের প্রাণ যে নিলে কেড়ে, হাহাকারে কতো শিশু কাঁদছে
অবিরাম মায়াধরে, শুনতে পাচ্ছো কি তু মি? কতো ছেলেমেয়ে হারালো তাদের বাবা মা, হারালো পিতামাতা তার
বুকের মানিক। তু মি কি দেখেছো, আজকেও দেখালো পুত্র তার বাবাকে নিয়ে কিভাবে ঘুরছে হাসপাতালের দ্বারে
দ্বারে। তু মি কি জানো, বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারালো সহস্র দেহ!
আমার ধরা! আমার মাতৃ ভু মি তু মি, আমার মায়ের দেশ, যেখানে জন্ম লক্ষ লক্ষ শিশুর, আজ কিভাবে কেড়ে
নিলে এমন অনাদরে!
১৯৭১ এর যুদ্ধের কথা মনে আছে! তোমাকে রক্ষার করার দাবিতে কিভাবে তোমার সন্তানেরা প্রাণ হারিয়েছিলো!
আমার তো এখনো মনে পড়ে, বাবা যে কতটা মন ভারাক্রান্ত স্বরে গল্প শুনাতো। তবে কি এখন নতু ন ভাবে সব
দেখছি, কত মানুষের হাহাকার, দূর্দ ষা। ঘর বন্দি হয়ে আছে, কিভাবে বাঁচবে এই মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের
প্রানগুলো, তারা যে অসহায় আজ, স্বীকার হয়েছে এই নির্মম পরিস্থিতির।
হাসপাতাল গুলো তে নাকি কান্নার শব্দ শুধু! আহা! কত শিশু, কত বয়োজেষ্ঠ মানুষ, কাতরাচ্ছে আর দিন
গুনছে, কবে দেখবো সুর্যের আলো! তবে এই মানুষ গূলোর ভরসার ছায়া হয়ে কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের
সেবক সেবিকারা। এ কি নতু ন রুপে সাজলে আমার প্রিয় ধরা!

এই অসহায় পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে বহু সন্তান আজ ঘর ছাড়া, তাদের যে ফিরবার পথ বন্ধ। আমার ছেলে যে
হাটতে শিখেছে, সেল ফোনের ওপার থেকে নিরবে অশ্রুজল ফেলছে হাজারো মাতৃ -সেবিকা। কাজ শেষ করেও
ফিরছে না সহস্র বাবা সন্তানেরা, আবারো কাজ শেষে ঘরে ফিরেও কোলে নিয়ে আদর করার স্বাদ নিতে পারছে
না আমাদের সৈনিক বাবারা।
এত হাহাকারের মাঝেও আমি অনেক কোমল মধুর ডাক শুনতে পাই। সেখানে থাকে আমার নতু ন আকাশের
নীলচে ভাব আর নানান সুরে হাজারো পাখির কলতান। আরো শুনতে পাই, ভিন্ন থেকে এক হয়ে যাওয়া,কাজে
ব্যস্ত থাকা সন্তানের পরিবারের সাথে সময় কাটানো কিছু মিষ্টি মধুর গল্প, কিছু আনন্দমুখি মিলনায়তন। এ সব
কিছু র পরেও প্রকৃ তিকে সুন্দর সবুজ কোলে সাজতে দেখেছি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দুর হতে ভেসে আসা
ডলফিন দেখেছি। বহু বছর পূর্বে যাদের ছিল এই অঞ্চলে বাস, যেগুলো সময়ের ব্যবধানে বিলুপ্তপ্রায়। চারিপাশে
সবুজের মাঝে কতো রঙের ফু ল ফু টেছে। এ যেনো মনে হচ্ছে, দূষণ বিহীন শহরে আজ প্রানভরে শ্বাস নিচ্ছে
বাহারি জাতের পাখিরা। খাঁচা ছেড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে মনের আনন্দে।

কবি জীবনানন্দ বলে গিয়েছিলেন,


"আমাদের মৃত্যু নেই আজ আর
যদিও অনেক মৃত্যু পরম্পরা ছিলো ইতিহাসে
বিস্তৃ ত প্রাসাদে তারা দেয়ালের অবলঙ ছবি
নানারুপে ক্ষতিক্ষয়ে নানাদিকে ম'রে গেছি-মনে পড়ে বটে
এই সব দেখে, বন্দির মতন তবু নিস্তব্ধ পটে
নেই কোনো দেবদত্ত, উদয়ন,চিত্রসেনী, স্থানু
এক দরজায় ঢু কে বহিষ্কৃত হয়ে গেছে অন্য এক দুয়ারের দিকে
অমেয় আলোয় হেঁ টে তা'রা সব।''

এই স্থিরতার মাঝেও উপলব্ধি করতে পেলাম,আজ পৃথিবীর গভীর গভীরতম অসুখ তবে ঘর বন্দি থেকে আমরা
আমাদের পরিবেশকে তার নিজ প্রানে ফিরিয়ে দিয়েছি, আজ চারিদিকে কোনো দূষণ নেই,বাতাসে কোনো অসস্থি
ভাব নেই৷ তবে পৃথিবী সুস্থের পরেও কি বাঁচিয়ে রাখতে পারবো এই নতু ন সৃষ্টিটাকে। যদি পারি তবেই তাহা
হবে আমাদের এই সময় থেকে নেয়া সবথেকে বড় শিক্ষা। আমরা নতু ন নিঃশ্বাসে, বিশ্বাসে, বাঁচতে শিখেছি,
বুঝেছি পৃথিবীর মায়া। নতু নভাবে নতু নরুপে বাঁচার আনন্দের আশায় পুরো পৃথিবীর মানব হৃদ্য় আজ
আকাঙ্ক্ষিত।

#stayhappyandhealthy
#bepositive😊

Name : Mahamodul Hasan Shohan


Department :BBA
Article : কোয়ান্টায়ন এর দিনগুলো

গল্পে দুই বন্ধু নিজেদের মধ্যে একটা বাজি ধরে।


শর্ত একটাই যদি কেউ এক মাস ধরে একা, কারও সাথে কথা না বলে, একটা ঘরে থেকে, বাইরে না বেরিয়ে
কাটাতে পারে তবে অন্য জন তাকে দশ লক্ষ টাকা দেবে।
কিন্তু এর মধ্যে সে যদি শর্ত ভঙ্গ করে তবে সে হেরে যাবে এবং কোন টাকা পাবে না।

প্রথম বন্ধু শর্ত স্বীকার করে নিলে, দ্বিতীয় বন্ধু তাকে দুরে একটা ফাঁকা বাড়িতে একটা ঘরে বন্দি করে রেখে
আসে।
দুবেলা খাবার জল ইত্যাদি পৌঁছানোর ব্যবস্থা ও কিছু বইও সঙ্গে দিয়ে আসে।
প্রথম বন্ধু সেখানে থাকতে শুরু করে।
প্রথম দু এক দিন বই পড়ে সময় কেটে যায়।
কিন্তু তারপর আর সময় কাটতে চায় না।
যদিও ওকে বলা ছিল যে, যদি খুব অসুবিধা হয়, বরদাস্ত না করতে পারে, তবে একটা ঘন্টা আছে যেটা বাজালেই
তাকে বের করে নেওয়া হবে।

যত দিন কাটতে থাকলো, তার যেন এক একটা ঘন্টা এক একটা যুগ মনে হতে লাগলো।
সে চিৎকার করতে শুরু করলো, চেঁ চিয়ে গলা ফাটিয়ে ফেললো।
কিন্তু শর্তে র কথা মাথায় রেখে ঘন্টা বাজালো না।কাউকে ডাকলো না। নিজের চু ল ছিঁড়তে লাগলো।
গালাগালি করতে থাকলো।
মানে একাকীত্বের জ্বালা ভয়ঙ্করভাবে তাকে শেষ করে ফেলতে লাগলো।

তবু সে শর্তে র কথা মনে করে তা সহ্য করতে থাকলো।


আরও কিছু দিন এইভাবে কাটার পর ওর ভিতরে এক অদ্ভু ত শান্তি বাসা বাঁধতে শুরু করলো।
ও আস্তে আস্তে শান্ত হতে থাকলো।
আর ওর কাছে কোনও কিছু ই চাহিদা বলে মনে হলো না।
ও একদম শান্ত হয়ে চু প করে বসে থাকলো।
যেন মৌনব্রত নিয়েছে।
ওর সব চেঁ চামেচি বন্ধ হয়ে গেল।

ওদিকে দ্বিতীয় বন্ধু চিন্তায় পরে গেছে দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছে অথচ প্রথম বন্ধু বেরোবার নামও করছে না।

মাস শেষ হতে যখন আর দুদিন বাকি, তখন দ্বিতীয় বন্ধু ব্যবসায় ভরাডু বি হয়ে দেউলিয়া প্রায়।
সে ভাবতে লাগলো যদি তার বন্ধু শর্ত জিতে তার কাছে টাকা চায় তাহলে সে কি করবে?

কোনও উপায় না পেয়ে সে বন্ধুকে গুলি করে হত্যা করার পরিকল্পনা করে, একমাস শেষ হওয়ার ঠিক একদিন
আগে সেই বাড়িতে গেল।

সেখানে গিয়ে সে আশ্চর্য হয়ে গেল।


তার বন্ধু একমাস শেষ হওয়ার ঠিক একদিন আগেই, সব শর্ত ভেঙে, তার নামে একটা চিঠি লিখে রেখে চলে
গেছে।

চিঠিতে লিখে গেছে -


*প্রিয় বন্ধু এই এক মাসে আমি যা পেয়েছি, কোনও টাকা দিয়ে তার মূল্যায়ন করা যায় না।*
*আমি একা থেকে অসীম শান্তি ও সুখ পেয়েছি।*
*আর আমি এও জেনে গেছি যে আমাদের চাহিদা যতই কমতে থাকবে ততই আমাদের অসীম আনন্দ আর শান্তি
বাড়তেই থাকবে।*
*এই ক'দিনে পরমাত্মার অশেষ ভালোবাসা কাকে বলে তা আমি জেনে গেছি।*
*সেইজন্য আমি আমার তরফ থেকে তোমার এই শর্ত ভেঙে দিলাম।*
*কারন তোমার ঐ টাকার আর আমার কোনও প্রয়োজন নেই।*

Name: Hussain Badhon


Batch: 28
Department: Pharmacy
Article: জলকেশী

কয়েকজন বন্ধু মিলে রওনা দিলাম হাওর এর উদ্দেশ্যে সময়টা বর্ষাকাল!

বর্ষায় হাওর এর একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে, নৌকার বাহিরে বসে পাহাড় আর মেঘের মিলনমেলা, শত
রকমের গাংচিল আর বক, জেলেদের জালে আটকে পড়া ছোট মাছ আর ছোট্ট জনপদের কিছু কিছু বাতিঘর
বাজার!

আমরা সারাদিন ঘুড়েফিরে রাতে নৌকতেই থাকার প্লান করলাম, কিন্তু মাঝির স্পষ্ট জবাব থানার ঘাটেই নাও
ভিড়াইতে হবে, ডাকাতের বড়ই উৎপাত এই দিকে!
সন্ধ্যা পেরিয়ে আমারা থানার ঘাটেই নাও ভিড়াইলাম। আমি গোসল করে নিলাম কয়েকজন গেলো রাতের
বাজার করতে!

আমি একা একা মাঝির সাথে বসে গল্প করছিলাম


একপ্রকার জোরজবরদস্তি করেই গান শুনলাম দুইটা,
মাঝির কথা "দিলের ভিত্রে দরদ না উঠলে গান আহে না"
কথার ফাকে মাঝি বললে '''মামু লাগব নাকি?

আমি : কি মামা??
মাঝি: জলকেশী ''
আমি : খুব উৎসাহ নিয়ে বললাম বুঝলাম না মামা কি কন?
মাঝির হাসতে হাসতে বলে "জোয়ান পোলা জলকেশী চেনো না! টগবগে শরীর, রক্ত গরম তোমাগো, এই বয়সে
কত কি করছি
অই দিকে দ্যাহো মিয়া ঐ যেঐ দিকের নৌকাগুলার দিকে দ্যাহো!

আমি তাকালাম অনেকগুলো নৌকো। মাঝিকে বলি " বাইদ্দ্যার দল নাকি?

মাঝি : আরে না মিয়া ওরা নৌকায় থাহে, নৌকায় ঘুমায়


পুরুষ খায়, পেট চালায়!
সন্ধ্যের হারিকেনের আলোয় গোটা হাওর মিটমিট করে জ্বলছিলো কিছু পুরুষের আনাগোনা।

ছোট্ট নৌকোর একপাশটায় চোখ গেলো


একটা বাচ্চা মেয়ে পায়ে নেইল পালিশ দিচ্ছে বয়স আর কতোই বা হবে ১৬/১৭ বাড়ন্ত শরীর, মেদ নেই, শ্যামা
রং প্রদীপের আলোয় কমদামি কড়া লাল লিপ্সটিক, কাজল দেয়া চোখ, কালো লম্বা চু ল।
আচ্ছা এই মেয়েটার নাম কি জিজ্ঞেস করা দরকার, না থাক মনে মনেই ওর নাম দিলাম আমি "জলকেশী"
তবে কি এটাই জলকেশী নামের সার্থকতা?

এতো সুন্দর নাম থাকতে আমরা শহরের মানুষেরা কতোই না বাজে নামে ডাকি ওদের আমার মাথায় ধরে না!!
একটা গান ধরলাম মনে মনে

" ভালোবাসার কতোই যে নাম,


যেই নামেতেই ডাকো
ভালোবেসে না ডাকলে সে সারা দেবে না কো'
লজ্জাবতীর মতোই সে যে বড়ই অভিমানী "

মাঝির বকবকানিতে আমার ঘোর কাটলো


আমি বললাম " মামা ওই মেয়েটা এইখানে ক্যানো?
বাচ্চা বয়েস, স্কুলে থাকার কথা,পাড়া মহল্লায় লাফিয়ে দাফিয়ে বেড়ানোর কথা!

খানিক হেসে মাঝি বলে " পড়ালেখা কি খাওন দিবো মিয়া? পেট তো পড়ালেখা চেনে না"

#stayHome_staySafe

Name: মোঃ হাসান


Batch: 51
Department: BBA
Article: উপহার

চারিদিকে তখন করোনার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। তাই সরকার ও দিক-বেদিক না খুঁজেই পুরো ঢাকা শহর
লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিলেন। তার উপর লকডাউনের আগেই সকল গণপরিবহন গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
দিয়ে দিলো।আর এদিকে আমার মেসের আশেপাশে একটা বাসায় করো না আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলো। তাই
আমার মেস ও লকডাউনের আওতায় পড়ে গেল। এদিকে মেসের সব ভাই-ব্রাদার ও গ্রামের বাড়ি চলে গেলো।
আর আমি টিউশনের টাকা পাবার আশায় ভাবলাম কয়েকদিন পর নাহয় যাবো। তাহলে অন্তত মায়ের জন্য কিছু
কিনে নিয়ে যেতে পারবো। সেদিন ছু টকি (ছোট বোন) নাকি মা'কে আমার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করা কাচ্চি
বিরিয়ানির ছবিটা দেখালো। তাই মাও ঐদিন ফোনে বলতেছিলো বাপজান আমারো কাচ্চি নাকি কি যে তু ই
খাইছিলি সেটা খেতে ইচ্ছে করতেছে। আর আমিও ভাবলাম যে টিউশনির টাকা পেলে মায়ের জন্য কাচ্চি নিয়ে
যাবো। কিন্তু বিধিবাম টিউশনির টাকাটাও পেলাম না আর বাড়ি যাওয়া ও হলোনা আমার। তাই কি আর করা
এইত কয়েকটাদিন পরই পৃথিবী সুস্থ হয়ে যাবো ভেবে মতো নিজেকে মিথ্যে স্বান্তনা দিলাম। কিন্তু নাহ আজ ৫৩
তম দিন চলতেছে এই মেসে বন্দী জীবনের। প্রথমে কয়েকটা দিন হাতে কিছু টাকা ছিলো সেটা দিয়ে কোনোমতে
পেট চালালাম। আর পরিস্থিতি যখন বেগতিক তখন দেখি সকল টংয়ের দোকান, চায়ের দোকান ও সব
তালাবদ্ধ। তারপর কয়েকদিজ না খেয়েই কাটিয়ে দিলাম। আবার মাঝেমধ্যে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিছু দিন
পরপর এসে কিছু খিচু ড়ি আর ডিম একটা পলিথিনে করে দিয়ে যেতো। আবার কেউ কেউ এসে শুকনো খাবারো
দিয়ে গেলো বেশ কয়েকবার। সেগুলো এখন শেষের দিকে প্রায়। এখন আমার চিতকার করে বলতে ইচ্ছে
করতেছে, রফিক আজাদ স্যারের কবিতার সেই বিখ্যাত দুই লাইন- "ভাত দে হারামজাদা, তা নাহলে মানচিত্র
খাবো"
আসলে সরকারের দোষ দিয়ে আর কিবা লাভ? সরকার তো প্রাণপনে চেষ্টা করতেছে আমাদের জন্য। আমরা তো
হুজুগে বাঙ্গালি 😡 কত্ত কাজ আমাদের। এখন শপিং করতে হবে, পার্লারে যেতে হবে, বিয়ের মতো এত বড় একটা
ফরজ কাজ আছে সেটা সাড়াতে হবে। এগুলো ভাবতে ভাবতেই কখন যেনো ঘুমিয়ে পড়লাম। শরীরটাও আজ
বেশ ক্লান্ত ছিলো। মায়ের কথা, ছু টকি(ছোট বোন) এর কথা খুব মনে পড়তেছিলো। আজ যদি বাবা বেঁচে থাকতো
তাহলে আমার আর এই দুর্দ শা হতোনা। হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেলো আমার আধভাঙা নোকিয়া ১১০০ মডেলের
মেসেজের শব্দ শুনে। আসলে আমার ঘুম খুব পাতলা তো তাই যেকোনো শব্দে জেগে যাই। যাই হোক ভাবলাম যে
সিম অপারেটরদের তো আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই। এই অফার সেই অফার কত ধরনের ম্যাসেজ যে আসে। তখন
ম্যাসেজটা ডিলিট করতে গিয়ে দেখি যে আমার বিকাশে ২৫৩৬/= টাকা আসলো সেটার ম্যাসেজ ছিলো। আমি
তো হতভম্ব। পরে বিস্তারিত পড়ে দেখলাম যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে লকডাউনে আটকে পড়া
পরিবারের জন্য সামাণ্য উপহার।

Name: Mariam Bushra


Batch: 35
Department: pharmacy
Article: স্বপ্নের মূল্য

পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। তাই না? তার চেয়েও বেশি সুন্দর মানুষের জীবন। জীবন উপভোগ করার মতো
জিনিস। প্রতিটি মানুষ তার নিজের জীবনকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়ে উপভোগ করে। সবারই আশা
থাকে সে তার জীবনকে স্বপ্নের মতো করে সাজাবে। কিন্তু সবার সে আশা পূরণ হয় না। জীবনে অনেক ঝড়, বৃষ্টি,
তু ফানের সঙ্গে তার স্বপ্নগুলো লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তাই বলে সে ভেঙ্গে পড়ে না। সে আবার নতু ন করে তার মনের
ভেতর স্বপ্ন বুনতে থাকে। কারণ স্বপ্নের কখনো মৃত্যু হয় না। একটি স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে সে হাজারো নতু ন স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্নই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। জীবনে চলার পথে অনুপ্রেরণা জোগায়। সেই স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে সে ভবিষ্যত
জীবনের শত বাধা-বিপত্তি পার হয়ে তার লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য অক্লান্ত চেষ্টা করে। পরিশেষে সে সফল হয়। স্বপ্নকে
আঁকড়ে ধরে জীবনে এগিয়ে যায়। সাফল্য একদিন তার কাছে এসে ধরা দেয়। তাই স্বপ্ন দেখা বন্ধ করতে নেই।
একটি স্বপ্ন পূরণ করতে না করতে পারলে আরো বেশি বেশি স্বপ্ন দেখা উচিৎ। তাহলেই নিজেকে উৎসাহ দিয়ে
সামনে এগিয়ে চলা সম্ভব। আর স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দিলে মানুষের মনের ভেতর যে ফু লের বাগান আছে তা
নির্জীব হয়ে যায়। বাগানের প্রতিটি ফু ল তার সতেজতা হারায়। এই একেকটি ফু ল হলো প্রতিটি আশা-ভরসা।
আশা-ভরসা ছাড়া যেমন জীবন চলে না তেমনি ফু ল ছাড়া বাগান সাজানো যায় না। আর একেকটি সতেজ ফু লের
বেড়ে ওঠার জন‍্য পানির প্রয়োজন হয়। পানি ছাড়া ফু লের বৃদ্ধি ও বিকাশ অসম্ভব। ঠিক তেমনি স্বপ্ন ছাড়া মনে
আশা-ভরসা জেগে ওঠে না। স্বপ্ন দেখলেই মানুষের মনের কোণে প্রতিটি আশা-ভরসা সঞ্চার করে। আর প্রচলিত
প্রবাদ অনুসারে ''আশাহীন জীবনের কোনো মূল‍্য নেই।" তাইতো স্বপ্ন দেখা আমাদের জন্য এতোটা ফরজ। স্বপ্ন
ছাড়া জীবন অর্থহীন। জীবনকে যে ভালোবাসে সে প্রতিনিয়ত নতু ন নতু ন স্বপ্ন দেখে। তারপর সেই স্বপ্নগুলো
পূরণের পথে এগিয়ে চলে। তাই স্বপ্নকে তু চ্ছ করতে নেই। জীবনকে রঙিন করে সাজাতে হলে সুন্দর স্বপ্ন
আমাদেরকে দেখতেই হবে। তাইতো আমি স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখতেই থাকি। স্বপ্ন ছাড়া জীবন অচল।

#Stay home stay safe


Name: Humayun Kabir Rhidoy
Batch: 39
Department: Textile
Article: সবুজ বাতি

বছর দুয়েক আগের কথা,,।


ব্যাচেলর লাইফ,,ছোটো খাটো একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরী,, মা বাবা আর ছোটো বোনকে নিয়ে ছোটো
সুখের সংসার,।
বাবা একটা জুটমিলে রিটায়ার করে প্রবিডেন্ট ফান্ডের সামান্য টাকায় দুকামরার একটা বারিও করেছে,,সামান্য
কিছু দেনাও হয়েছে,,।
ভবিষ্যৎএর স্বপ্ন দেখছি আমার গার্লফ্রেন্ড প্রীয়াকে নিয়ে,,। আমাকে খুবই ভালবাসে প্রীয়া। আমরা ঠিক করেছি,,
বাবার দেনাটা শোধ করেই বিয়েটা সেরে নেবো,,। রাতে আমাদের কথাও হয় ফেসবুকে,,। কম খরচে অনেক
কথা,, মন চাইলে সারারাত,,। আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে প্রায় কম বেশি করে একশো সদশ্য। সকলের সাথে না হলেও
অনেকেরই সাথে নিওমিত কথা হয়,,। এমনি অল্প কথা বলা একজন ছিলো,, বিথী শর্মা,,। অবাঙালী হলেও
পরিস্কার বাংলা বলতে পারতো,,। আমি পাঁচটা sms করলে একটার উত্তর দিত,,। কখনো সুধুই লাইক দিয়ে ছেরে
দিত,,।
প্রফাইলের ছবিটাও খুব সুন্দর,, এককথায় সুন্দরী বলা চলে,, বড় বড় চোখ মুখে মৃদু হাঁসি সত্তিই সুন্দর,,।
কোম্পানিতে লেবারদের দাবিদাবা আর ইউনিয়ান বাজিতে বন্ধই হয়ে গেল কোম্পানি,,। একেবারেই কর্মহীন
হয়েগেলাম,,। ভাবলাম একটা কাজ ঠিকি জুটিয়ে নেব,,। এমন ভাবনা আমার মিথ্যে হয়ে গেল,,। এইভাবে কএক
মাস কেটে গেল,,একে একে মায়ের গয়না দোকানে বাঁধা পড়লো,,।
সংসার বাঁচাতে রাজমিস্ত্রির জোগারের কাজের জন্য কথা বললাম,,সেখানেও নিলোনা,, কারন কাজের কোনো
অভিজ্ঞতাই নেই,,। সাফ জানিয়ে দিল তোমার দ্বারায় একাজ হবেনা,,।
অবস্থা বুঝে মুদিওয়ালাও ধার দেওয়া বন্ধ করে দিল।
ছোটো বোনটা ক্লাস টেনে পড়ে,,। সেও দেখি খিদে নেই বলে, কিছু না খেয়েই স্কুলে চলে গেল,,।
মা বাবার মুখের দিকে তাকাতেই পারছিনা,,।
গত রাতে প্রীয়াও বলে দিল,,অন্য জায়গায় নাকি বিয়ের ঠিক হয়ে গেছে,,। আর যেন কখনোই ডিস্টার্ব না করে,,।
যাকে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়জন,, সবার আগে সেই পালিয়ে গেল,,।
বন্ধুরাও প্রায় সবাই বেকার,,।কিন্তু ওদের কেউ না কেউ আছে সংসার চালানোর মত,,। তবুও ওরা অনেক
সাহায্য করেছে,,।
অভাব যে এত ভয়ঙ্কর তা আগে যানাছিলনা,,।
মায়ের মুখঝামটা,, বাবার শুকনো মুখের কটাক্ষ দৃষ্টি,,যে বোনটার সারাটা দিন টু কটাক করে মুখ চলতো - সে
আজ খালি পেটে বইয়ে মুখ গূজে
ঁ পরে রয়েছে,,।
আর পারছিনা,, এভাবে বাঁচার কনো মানেই হয়না,,। আজেবাজে উল্টোপাল্টা চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে,,।
অনেক রাতে বারি ফিরেছিলাম,,বন্ধুর খাওয়ানো চা বিস্কুট অনেক আগেই হজম হয়ে গেছে,,। এবার বিষ খেতে
ইচ্ছা করছে,,, হাঁ এটাই একমাত্র পথ,, অসহ্য যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তির উপায় এটাই,,। হাঁ সুইসাইড,, মাথার
মধ্যে ফিক্সড হয়ে গেল,, এছাড়া আর কিছু ই মাথায় আসছেনা,,।
পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে ফেসবুক খুললাম,,ফ্রেন্ড লিষ্টের বন্ধুরা যারা অন লাইন ছিলো,, তাদের মধ্যে
প্রীয়া ছিলো এক নাম্বারে,,তাই ওকেই প্রথমে লিখলাম গূড বাই প্রীয়া, চললাম,,,,,
হুঁহঃ,,,,,নো রিপ্লাই,,হয়তো ব্যাস্ত আছে অন্য কারোর সাথে,,,।
তারপর পরপর প্রত্যেককেই একই কথা লিখে ফরোয়ার্ড করলাম,,"গুড বাই বন্ধু চললাম ",,,।তার মধ্যে অনেকে
অনেক রকম রিপ্লাই করলো,, কেউ - ভাল থাকিস,,,। কেউ - কোথাও বেড়াতে যাচ্ছো নাকি,,? কেউ - কনো
কাজের জন্যে দেশ ছাড়ছো নাকি,,?
কিন্তু একমাত্র বিথীই ব্যাপারটা ঠিকি আন্দাজ করেছিলো,,। যে কিনা অনেক কথা বলার পর তবে একটা রিপ্লাই
দেয়,,। সে পরস্পর প্রশ্ন বাণে আমাকে ঘায়েল করে ফেলল,,।
একের পর এক প্রশ্ন - এই তু মি কোথায় যাচ্ছো,,?
তোমার গুড বাই বলার ধরনটা একটু অন্য রকম,,।
জীবন থেকে পালিয়ে যাচ্ছোনা তো,,?
কি হয়েছে তোমার,,?
প্রেমীকা ধোকা দিয়েছে,,?
সুইসাইড করার কথা ভাবছোনা তো,,?
আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, আগে যেটু কু কথা হয়েছে,, -হায়,,হ্যালো,,কেমন আছো,, ভালো আছি ব্যাস এইটু কুই,,।
এর পরের কথার কখনই উত্তর পাইনি,,আর আজ,,! সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন যে হুঁ লিখে সেন্ড করে
ফেলেছি,,,,,
আবার শুরু হয়ে গেল,,-
এ মা তু মি কি বোকা,,।
এই সামান্য কারনে কেউ সুইসাইড করে নাকি,,?
বছরের ঋতু পরিবর্ত নের মতই প্রেমীক প্রেমীকারা আসে আর যায়,, ছাড়ো ওসব কথা,, তু মি চাইলে আমাকে
ভালোবাসতে পারো,। আমাকে দেখতেও খুব খারাপ নয়,,। কথা দিচ্ছি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বেইমানি করবোনা,,।
এবার আমি একটু ঝেরে কাশলাম,,। সংক্ষেপে আমার সব সমস্যা গুলো বললাম,,।
সব শুনে যে কথা গুলো বলল, -
তু মি একজন বীর যোদ্ধা,, তোমার লড়াইয়ের উপরে আরো তিন তিনটি প্রাণীর বাঁচা মরা নির্ভ র করছে,,। তু মি
নিশ্চিত যানবে,, তোমার জীবনে যখন ঘনো অন্ধকার,, ঠিক তার পরেই ভগবান তোমার জন্য একটি সুন্দর
সকাল রচনা করে রেখেছেন,,।
আরে বোকা ভগবান এভাবেই পরিক্ষা নেন,, তোমাকে যে উত্তির্ন হতেই হবে,,।
কথা শেষ হতেই বিথীর একটা সেলফি ভেসে উঠলো মবাইলের স্ক্রিনে,,। আমাকে ছুঁ য়ে কথা দাও এ লড়াইটা তু মি
লড়বে,,। আমার ভালবাসার দিব্বি, এ লড়াই তোমাকে জিততেই হবে,,।
বিছানার উপর মোবাইলটা রাখা,,পর পর লেখাগুলো ফু টে উঠছে,,মনে মনে লেখাগুলো আউরে যাচ্ছি,,। কি উত্তর
দেব কিছু ভেবে পাচ্ছিনা,,। হাতের আঙু ল গুল যেন অসার হয়ে গেছে,,
আবার - কিহল কিছু তো বল,,।
অনেক কষ্টে টাইপ করলাম,, আমি তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই,,
বিথী - হাঁ নিশ্চই,, বল কবে কোথায় দেখা করতে চাও,,?
বললাম - কাল বিকেল পাঁচটায় বাবুঘাটে নদীর ধারের পার্কে ,,।
বিথী - তু মি ঠিক আসবে তো,,? তোমার নংটা দাও যদি তোমার আসতে দেরি হয়,,। আমি কিন্তু অপেক্ষা
করবো,,।
বললাম - হাঁ ঠিক আসবো,, সঙ্গে ফোননং টাও টাইপ করে দিলাম,,।
বিথী - তাহলে এখন ভালছেলের মত ফোন রেখে ঘুমিয়ে পরো,,কাল তাহলে আমাদের দেখা হচ্ছে,,।
Good night Sweet dreams..বলে অফলাইন হয়েগেল,,। আমিও ফোন বন্ধ করলাম,,।
ভাবতে লাগলাম,, কে এই বিথী,,?
তা সে যেই হোক,, ওর কয়েকটা কথায় জীবনের সিদ্ধান্তটাই পাল্টে গেল,,।
থেমে যাওয়া গাড়ি যেন নতু ন করে আবার গতি ফিরে পেলো,,।
আর প্রীয়া সেও তো একটা মেয়ে,, কত তফাৎ দুজনের মধ্যে,,। কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লাম,,।
সকালে দরজা ধাক্কায় ঘুমটা ভেঙে গেল,,খুলে দেখি আমার এক বন্ধু সুব্রত,,। বলল আমার দাদা আমার জন্য
একটা কাজ দেখেছে,, কিন্তু আমি চাই কাজটা তু ই কর,, এই মুহুর্তে কাজটা তোর খুবই দরকার,,
কলকাতায় এক চায়ের গোডাউনে লেবার দেখাশুনার কাজ,,মাইনে সাত হাজার দেবে,, এক তারিখে জয়েন্ট,, পাঁচ
দিন বাকি,,।
বললাম - কি বলে যে ধন্যবাদ দেবো,,।
সুব্রত - ওসব পরে হবে,, আমি দাদাকে ব্যাবস্থা করতে বলছি,,। চলে গেল সুব্রত,,।
বিথীর কথা যে এত তারাতারি ফলে যাবে তা স্বপ্নেও ভাবিনি,,। আজ বিকেলে বিথীর সাথে দেখা করতেই হবে,,।
যথারীতি পাঁচটার আগেই যথাস্থানে পৌঁছে গেলাম,,চোখ পরেগেল বিথী আমারো আগে পৌঁছে আমার জন্য অপেক্ষা
করছে,,। তাকিয়ে আছে আমারই দিকে,,।যেন প্রয়জনটা ওরই,,।
একটা হালকা হাঁসি দিয়ে বলল - এইতো ঠিক সময়ের মধ্যেই এসেগেছে আমার যোদ্ধা,, ঠিক এইভাবেই সময়ের
মূল্য দিও,,।
ওর কথায় বুকটা ভরেগেল,,। ওর চোখের দৃষ্টি এতোটাই তিক্ষ্ণ যে, আমার চোখের দরজা দিয়ে ঢু কে মনের
ভেতরটাও দেখতে পাচ্ছে,,।
দুজনেই একটা বেঞ্চে গিয়ে বসলাম নদীর দিকে মুখ করে,,। সুর্য্য ডু বছে,, লাল আবিরের রঙে আকাশটা রাঙিয়ে
দিয়েছে,,। আগে কখনো এভাবে আকাশকে দেখিনি,,।
হঠাৎই বিথী বলে উঠলো,, ও যোদ্ধা বলো কি যেন বলবে বলে ডেকেছিলে,,।
বললাম - আমার মনেহয়,, যেটা বলতে চাই তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা,, তু মি আগে থেকেই সব যেনে
গেছো,,।
বিথী - হাঁ যানি,,
বললাম - কি যানো,,?
বিথী - এইযে সামনেই ফু চকাওয়ালা,, ঝালমুড়ি ওয়ালারা দোকান দিয়েছে,,। তোমার খুব ইচ্ছে করছে আমাকে
মন ভরে খাওয়াতে,,। কিন্তু তোমার পকেট একেবারে গড়েরমাঠ,, খাওয়াতে পারছোনা তাই মনে মনে কষ্ট
পাচ্ছ,,।
আমি এক লাফে উঠে ডাঁড়িয়ে পরলাম,,আর মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি - আর ভাবছি,, আরে সত্তি
সত্তিই তো আমি এটাই ভাবছিলাম,,।
কৌতু হল আর চাপতে পারালাম না,, বলেই ফেললাম,, এই তু মি কে বলতো,,?
খুব সহজ ভাবেই উত্তর দিল - তোমার প্রেমীকা,,।
হাতটা ধরে এক ঝটকায় আবার পাসে বসিয়ে দিল,,।
আর বলল - যা বলি মন দিয়ে শোনো,,
প্রশ্ন করলো - যানো আমাদের প্রেমের মেয়াদ কতদিনের,,?
আমি - না যানিনা,,
বিথী - মাত্র এক দিনের,,।
তু মি কি যানো আমার প্রেমীকের সংখা কত,,?
আমি - না যানিনা,,
বিথী - তোমাকে নিয়ে 210 জন,,
তু মি কি যানো,, কেন আমি এক দিনের বেশি সম্পর্ক রাখিনা,,?
আমি - না,,
বিথী - কারন, একটা যোদ্ধা তৈরী করতে আমার কাছে এক দিনই যথেষ্ট,,। এবার বল আমার বীর যোদ্ধা,, তু মি
কি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত,,?
কথাগুলো শুনে আমার যেন দম আটকে গিয়েছিলো,, যেন অন্য কনো জগৎএ বিচরণ করছিলাম,,।আমার কাঁধ
দুটো ধরে ঝাঁকিয়ে দিয়ে বলল,,- শুনছো আমার কথা ? তু মি কি প্রস্তুত,,?
আমি - হাঁ আমি অনেক আগেই প্রস্তুত,,।
দুহাতে আমার গাল দুটো ধরে বলল চোখ বন্ধকরো,, করলাম - ঠোঁটে চু ম্বনের পরশ পেলাম,,।
সারা শরির মনে এক ঐশ্বরিক অনুভুতির স্বাদ পেলাম,, সেটা ভাষায় বর্ণনা করতে পারবোনা,,।
তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে,,। বিথী আমার দিকে দুহাত বারিয়ে বলল,, - তু মি চাইলে আমাকে আলিঙ্গন দিতে
পারো,,। আমি আশে পাশে দেখলাম,, অনেক মানুষের ভীড়,।
বিথী - আমি কাউকে তোয়াক্কা করিনা,,
আমি মাথা নেরে না বলে দিলাম,,।
এবার আরো কাছে ঘেঁসে বসলো,, শরিরের আধখানা অংশ আমাকে ছুঁ য়ে আছে,,। শান্ত গলায় -
আবার প্রশ্ন - যানো যোদ্ধা আমার আয়ু আর কত দিন,,?
এবার আমি ভালকরে মুখের দিকে তাকালাম,,
নিয়ন আলোয় চোখের কোনে জল চিকচিক করছে,, আর মাত্র 119 দিন,, আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত,,। যোদ্ধা আমি
মরতে চাই না,, আমি বাঁচতে চাই,,
আমার দিন একটা একটা ফু রিয়ে আসছে,,
আমার ভেতরটা আমার অজান্তেই কেঁ দে উঠলো,, চোখের জলকে আর আটকে রাখতে পারালাম না,,।
বিথী - কি হল যোদ্ধা,,? তোমার চোখে জল,,? তু মি না আমার বীর যোদ্ধা,, আর বীরের চোখে জল শোভা
পায়না,,।
আমি বললাম - নিজের জন্য নয়,, তোমার কথা ভেবেই কাঁদছি,, তোমার যে মহৎ উদ্দেশ্য, তার কথা ভেবে
কাঁদছি,, এখন আমি বুঝতে পারছি তোমার এই একদিনের ভালবাসায় একটা মানুষ একশো বছর পর্যন্ত বাঁচার
শক্তি ফিরে পাবে,,। তোমার অবর্ত্তমানে যারা তোমার এই ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হবে,, তাদের কথা ভেবে
কাঁদছি,,।
এবার বিথীও কেঁ দে ফেলল,,
বলল - বাহঃ আমার যোদ্ধা এবার পুরো পুরি তৈরী,, যোদ্ধা কয়েকটা জরুরী কথা,,- আমি আর কোনোদিন
তোমার সঙ্গে দেখা করবোনা,,প্রয়জনে আমি তোমাকে ডেকে নেব,,।
ফেসবুকে আমার উপস্থিতি দেখেও কখনো sms করবেনা,,
আমার নামের পাশে ঐ সবুজ বাতিটা যতদিন দেখতে পাবে,,যানবে ততদিন আমিও আছি,,
তোমার সাথেই আছি,,
কখনো যদি আমার জন্য মনটা কেঁ দে ওঠে,, এই সময়,, এইখানে,, এইই বেঞ্চে এসে বসো,,। আর আবিরে রাঙানো
ডু বে যাওয়া ঐ সুর্য্যটাকে দেখো,,।
একটা দির্ঘশ্বাস ছেরে বলল,,যোদ্ধা এবার আমাকে উঠতে হবে,,আমার অনেক কাজ আর হাতে সময় খুবই কম,
তু মি অনুমতি দাও,,,,,,,,
আমি বললাম - তোমায় বেঁধে রাখার কনো ক্ষমতাই আমার নেই,,। তু মি যাও আবার নতু ন কনো যোদ্ধার
খোঁজে,,।
আমার কাঁধটা আলতোভাবে ঝাঁকিয়ে চলেগেল,,।
বিথী হারিয়ে গেল মানুষের ভীড়ে,,
আমি বিথীতে মহিত হয়ে গেলাম,, আমি যেন আর আমার মধ্যে নেই,,সম্পুর্ন এক অন্য মানুষ,,।
পরেরদিন সকালে একটা ম্যাসেজ পেলাম - কোলকাতার এক অনামী পাখা কারখানায় প্রডাকশন ম্যানেজারের
পদের চাকরীর জন্য,,
আর, চাকরীটা পেতে কনো অসুবিধে হয়নি,,।
ছোট্ট কারখানা,, মালিকের অবর্ত্তমানে আমাকেই সব কিছু দেখতে হয়,,। জীবনটা আগের মতই আবার স্বাভাবিক
হয়ে গেল,,।
রোজ রাতে ফেসবুক খুলে বিথীর উপস্থিতি লক্ষ করি,,জ্বলজ্বল করছে সবুজ আলোটা,, বিথী এখনো অনলাইন
আছে,,। অনেক ম্যাসেজ আসে,, কনো ম্যাসেজই আর পরতে ইচ্ছা করেনা,, অনেক ম্যাসেজের ভীড়ে প্রীয়ারও
ম্যাসেজ আসে,,আর দেখিনা,,সুধু সবুজ আলো ছাড়া,,।
যানি এটাও একদিন হঠাৎই নিভে যাবে,, আর জ্বলবেনা,,।
এমনি একদিন তাকিয়ে আছি সবুজ আলোটার দিকে,,হঠাৎই ম্যাসেজ এলো বিথী শর্মার প্রোফাইল থেকে,, বুকটা
ছ্যাঁত করে ঊঠলো,, তাতে লেখা,,,-
যোদ্ধা,, যদি শেষ দেখাটা দেখতে চাও, তারাতারি চলে এসো,, সময় খুবই কম,,।
নিচে পাটনা'র একটা ঠিকানা দেওয়া,,।
তখন অনেক রাত - ভোর হতেই বেরিয়ে পরলাম একরাশ উৎকন্ঠা নিয়ে,,।
ঠিকানায় পৌঁছতে কনো অসুবিধে হয়নি,,।
কলকাতায় বড়বাজারে মামার কাছে থাকতো,, এটা নিজের বারি,, অনেক পুরানো আমলের বারি,, চারিদিক
ঘেরা,, মাঝে বিশাল বড় দালান,, বাইরে ভিতরে প্রচু র মানুষের ভীর,, সবার চোখেই জল,,
কোথায় বিথী,, মনটা উৎকন্ঠায় ছটফট করছে,,
ভীড় ঠেলে ভিতরের দিকে যাচ্ছি,, হঠাৎ কেউ আমার হাতটা ধরে ফেললো,, দেখি জল ভরা চোখে আমার
মালিক,,
ভীড় কাটিয়ে আমাকে নিয়ে গেল বিথীর কাছে,,
দালানের একপ্রান্তে পালঙ্কের উপরে রানীর মত সুয়ে আছে বিথী,, বড় বড় চোখের কোনে কালি,, শুকনো
মুখ,,বিছানার সঙ্গে প্রায় মিশেই গেছে,,
কিন্তু ঠোঁটের কোনে সেই অম্লান হাঁসি এখনো বর্ত্তমান,,
বিথী বলল - আমার পাসে বসো,,
আমি বসলাম,, আমার হাতটা নিয়ে একটা চু মু দিয়ে বলল,, যানো যোদ্ধা আমি তোমায় রোজ দেখতাম তু মি
তাকিয়ে আছো আমার প্রফাইলের ঐ সবুজ বাতিটার দিকে,, আজ থেকে ওটা আর জ্বলবেনা,,
আমি কথা দিয়েছিলাম বেইমানী করবোনা,,, দেখো -
আমার শেষ দিনেও তোমাকে আমার ভালবাসা দিতে পেরেছি,, আমি আবার আসবো তোমাদের মাঝে,, আবার
আমি যোদ্ধা রুপে তোমাদের পাসে পাবো,,।
আর এইযে এখানে এতো মানুষ দেখছো,, এদের মধ্যে অনেকেই তোমার মত বীর যোদ্ধা,,
আজ আমার একটু ও কান্না পেলনা,, কারন -
বিথী কথা দিয়েছে আবার আসবে,,
বিথী বলল এবার তু মি যাও,,আর এক যোদ্ধা এসেছে শেষ দেখা করতে,,
আমি আর পেছন ফিরে তাকাইনি,, আমি চলে যাওয়া সইতে পারিনা,,।
এখনো আমি প্রতি রাতে একবার করে দেখি -
বিথীর প্রোফাইলটা
যদি একবার জ্বলে ওঠে সবুজ বাতিটা,,,,,,,,,
Name: Bittho Ranjan Singha
Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: প্রতিযোগিতা

কোচিংটার রুমের ওই প্রথম বেঞ্চে একটা বই নিয়ে পড়ার অভিনয়ে বসে ছিল ছেলেটা। মেয়েটার বান্ধবী আগে
থেকেই কোচিংটাতে পড়ত। সে বসে ছিল ডান দিকের পিছের বেঞ্চটাতে। মেয়েটা সেদিন প্রথম কোচিং এ এসেছে।
রুমের ঢু কে তার বান্ধবীকে দেখে আনন্দ উচ্ছ্বসিত একটা চিৎকার দিয়ে পরক্ষণেই একদম চু প হয়ে তার পাশে
গিয়ে বসে পড়ল। পরে আর তেমন সাড়া পাওয়া যায়না তার। পর্দ াশীল মেয়ে। মারাত্মক brilliant কিন্তু বোঝা
যাচ্ছিল না। এদিকে ছেলেটা প্রথম থেকেই পড়াশোনায় serious! এবার ক্লাসের best student হতে হবে! তাই
regular পড়াশোনা,class response করত সে। কোনো এক Math class এ response শুরু হল
মেয়েটার। ভয়ংকর response! এদিকে এর জবাব দিতে পাল্টা response শুরু করল ছেলেটা! কিন্তু পেরে
উঠছিল না। কারণ মেয়েটা Math-এ পাঁকা। তখন থেকেই মূলত প্রতিযোগিতার শুরু,,,,,,এভাবে attack-
counter attack এর মধ্য দিয়ে চলতে থাকল,,,,,,কিন্তু বরাবরই মেয়েটা বেশি ভালো,,,,,মেয়েটার সাথে এই
প্রতিযোগিতাটাকে খুবই respect করত ছেলেটা,,,,,,কিন্তু স্যার সবসময় ছেলেটারই প্রশংসা
করতেন,,,,,,একদিন ছেলেটা তার একটা বন্ধুকে জিজ্ঞেস করল যে,,,,মেয়েটা বেশি ভালো তাহলে স্যার আমার
প্রশংসা কেন করেন! বন্ধু তাকে উত্তর দিল,,,,,"ও তোমার থেকে বেশি ভালো এবং প্রশংসনীয়,,,,,যে প্রশংসনীয়
তার আলাদাভাবে প্রশংসা না করলে চলে",,,ছেলেটা বুঝতে পারল,,,ভালোও লাগল বন্ধুর উত্তরটা। কিন্তু মনে
হিংসা জাগেনি এই উত্তর শুনে।
এদিকে ঘটল আসল ঘটনা! এতোদিনে মেয়েটা নিজের অজান্তেই ছেলেটাকে ভালোবেসে ফেলেছিল,,,,,কিন্তু নিজের
সবচেয়ে ভালো বান্ধবী ছাড়া কাউকে বলেনি আর বুঝতেও দেয়নি,,,মেয়েটা ছেলেটার দিকে তাকাতোই
না,,,কঠোর পর্দ াশীল মেয়ে,,,,,হুজুর পরিবারের! এখন তার বান্ধবী ভাবলো দুইজনই তো single তো এদের
একটা ব্যবস্থা করা যাক! তাই সে এবং ছেলেটার বন্ধু দুইজনে মিলে পরিকল্পনা করে এক সন্ধ্যায়(কোচিং time
ছিল প্রত্যেকদিন সন্ধ্যা ৭:৩০ থেকে রাত ৯:৩০ পর্যন্ত) ছেলে আর মেয়েটাকে এক করল মনের কথা জানানোর
জন্য,,,,,ছেলেটা আগেই জানতে পেরেছিল মেয়েটার মনের কথা তবে এবার তার নিজের মুখ থেকেই শোনার
পালা,,,,,এরকম ভাগ্য আর কয়টা ছেলের হয়! মেয়েটার হৃদস্পন্দন নিশ্চয়ই বেড়ে গিয়েছিল অনেক! first love!
এর উপর সামনাসামনি মনের কথা বলতে হবে,,,,,তো ছেলেটা এতো কিছু বিবেচনা করে মেয়েটাকে অভয় দিয়ে
মনের কথা বলতে বলল! কিন্তু তাও হচ্ছিল না। শেষমেশ ছেলেটা নিজের থেকেই জিজ্ঞেস করল,,, "তু মি নাকি
আমাকে ভালোবাসো?" অনেক দ্বিধা কাটিয়ে মেয়েটা উত্তর দিল "হ্যাঁ"! একটু মজার মধ্যে ঝাড়ি মিশিয়ে ছেলেটা
বলল,,,"এটা বলতে এতোক্ষণ লাগে?" মেয়েটা বলল," আমি তো মেয়ে......" ছেলেটার উত্তর,,," ও হ্যাঁ,,,মেয়েদের
তো বুক ফাটে তবু মুখ ফোটে না!" এভাবে কথা বলতে বলতে তারা যে মাঠে দাঁড়িয়ে ছিল সে মাঠের ছোট
কোণে একটু পাশাপাশি হাঁটল! পরে class শুরু হয়ে গেলে তারা ক্লাসে চলে গেল,,,,,এদিকে তাদের friend-গুলো
তো দারুণ মজা করছে,,,,,ক্লাস শেষে মেয়েটা বাইরে বের হয়ে ছেলেটাকে বলল যে সে relation করবে না!
ছেলেটাও এটাই আশা করছিল এবং চাচ্ছিলও বটে! ব্যাপারটা এমন না যে ছেলেটার অপছন্দ হয়েছে মেয়েটাকে।
মেয়েটা যথেষ্ট সুন্দরী তার চেয়ে বেশি মায়াবী ছিল! কারণ একটাই! Their religion is different! এই একটা
মাত্র কারণে তাদের relation হয়নি,,,,,মেয়েটা সেদিন ছেলেটার সামনে দিয়ে যখন চলে যায় তখন তার মাথা
নত করে যাচ্ছিল আর ছেলেটাকে পার করার পরে ছেলেটাকে পিছন ফিরে দেখেছিল! এক মায়া নিয়ে আর দিয়ে
গেল! কিন্তু তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকে থাকল,,,,,SSC পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে( তারা যখন নবম
শ্রেণিতে ছিল তখনকার ঘটনা এগুলো) অনেকদিন যাবৎ কথা হয়নি তাদের কারণ মেয়েটার Facebook ID
ছিলনা,,,একটা Messenger ID খুলে ছেলেটার বন্ধুর কাছ থেকে খোঁজ খবর নিত! এদিকে কিছু দিন পর পর
মেয়েটাকেও মনে পড়ত ছেলেটার! তাই সে তার Facebook ID খুঁজতে থাকতো! পেয়েও গেল একদিন! কথা
শুরু হলো,,,,,প্রত্যেকটা দিন সারাক্ষণ কথা হয়,,,,মাঝে মাঝে ঝগড়াও হয় তাদের! এভাবে College life কেটে
গেল। দুজনেই এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর কোনো এক অজানা কারণে
তাদের মধ্যে কথা বন্ধ হয়ে গেল। কথা অনেকদিন পর পর শুরু হলেও ৫-১০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়না! হয়ত
তাদের মধ্যে relation হতো পরিণয়ও হত কিন্তু একটা মাত্র কারণে আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি সেসব! তবে তারা
অবশ্যই পরস্পরের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে থাকবে সবসময়!কথা কিংবা দেখা আর না-ই হলো!

আমি দেশান্তরি হব! ঘুরে বেড়াব মাঠের পর মাঠ,,, ফু লে ভরা উদ্যানের পাথরে গড়া বেঞ্চিতে বসে প্রশান্ত করব
মন! দেশে আসব আমি আমার সে মাঠে ফিরতে যেখানে তোকে পাশে নিয়ে খানিক হেটেঁছিলাম! কদাচিৎ তোকে
ভেবে নেব সেখানে,,,,,চলে যাব আবার,,,অনেক ভালো থাকিস..........
#stay_home
#stay_safe

Name: Israt Jahan Eva


Batch: 46
Department: CSE
Article: ডায়েরি

তিতলি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে একরাশ প্রশ্ন আর কান্না। হাতে তার প্রিয়
ডায়েরি। এই ডায়েরিতে তিতলি তার সব ভালোলাগা, রাগ-জেদ,অভিমান,অভিযোগ সব তু লে রাখে। হঠাৎ করে
তিতলি যেনো নিজেকেই প্রশ্ন করলো,আপু কেনো আমাকে পছন্দ করে না??? আপু কাল দেশের বাইরে চলে
যাবে,তাও আজ আমার সাথে এমন করতে পারলো!!! তিতলির বড় বোন তু র্না।দুই বোন আর বাবা- মা।খুব
সুন্দর আর হাসি খুশি পরিবার।কিন্তু সব কিছু র মধ্যেও তিতলি যেনো পরিবার এর সবার থেকে অনেক টা দূরে
সরে যাচ্ছে। তিতলি খুব চঞ্চল আর হাসি-খুশি একটা মেয়ে,,,,কিন্তু সেই হাসিটাও যেনো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে,,,
তিতলির শুধুই মনে হয় পরিবারের কেউই তাকে বুঝতে চায় না।এসবের পেছনে অবশ্য তিতলির ছেলেমানুষী, না
বুঝে করে ফেলা ভু লগুলোই দায়ী,,,,তিতলির সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগা হচ্ছে ওর বড় বোন ওকে একদমই সহ্য
করতে পারে না। তিতলি সবসময় চাইতো ওর বড় বোন ওকে অনেক আদর করুক,ওর সাথে ওর বন্ধুর মতো
মিশুক,,,বাসায় সবাই যখন তিতলি কে বকা দিবে তখন ওর বড় বোন ওকে আগলে রাখুক,,,কিন্তু তিতলির বড়
বোন তু র্না বরাবারই নিজের ছোট বোন কে সহ্য করতে পারতো না,,,,,তু র্না সবসময়ই তিতলির দোষ খুজতে
থাকতো,,,, পান থেকে চু ন খসলেই তিতলি কে কথা শুনাতো,,,তিতলির খুব খারাপ লাগতো,,কিন্তু কিছু বলতো
না,,,একদিন ওদের বাবা ওদের জন্য একটা বড় চকলেট নিয়ে আসলো,,বললো দুজন মিলে খাও,,,তু র্না চকলেট-
টা ভাগ করে নিজের টু কু নিয়ে বাকি টু কু তিতলির জন্য ঘরের মেঝেতে ফেলে রাখলো... এটা দেখে তিতলি র খুব
কান্না পাচ্ছিলো,,,কিন্তু তাও কিছু না বলে চু পচাপ তার রুমে চলে গেলো,,,তার কিছু দিন পরের ঘটনা,, তিতলি
আইসক্রিম ওয়ালার কাছ থেকে দুইটা আইসক্রিম কিনে তু র্নার কাছে দৌড়ে গিয়ে বললো আপু নেও তোমার জন্য
আইসক্রিম এনেছি,,,তু র্না আইসক্রিম ছু ড়ে ফেলে দিয়ে বললো তোর আইসক্রিম আমি খাবো তু ই ভাবলি কি
করে,!! তু র্নার এমন অদ্ভু ত আচরণে তিতলি কষ্ট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলো,,,,,,,এভাবেই প্রতিদিন নানা
ঘটনায় তু র্না আর তিতলির দিন চলে যাচ্ছিলো,,,,,তিতলি বারান্দায় দাঁড়িয়ে এসব ভাবতে ভাবতে ছোট বেলার
কথা মনে করলো,,,,ভাবতে লাগলো তু র্না কি ছোট বেলায় ও এমন করতো?? কিন্তু ছোট বেলায় তো তু র্না
তিতলি কে অনেক আদর করতো,,,এইতো সেদিন আম্মু গল্প করে বলছিলেন ছোট বেলায় যখন তিতলি পড়তে
পারতো না তু র্না তখন তাকে গল্পের বই পড়ে শুনাতো,,,,রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তিতলি কোনো লিখা দেখে
অস্পষ্ট কন্ঠে বলতো আপু পড়ো পড়ো,,বাবা-মা তখন মুচকি হাসতেন,,আর তু র্না হাসতে হাসতে তিতলি কে সেটা
পড়ে শুনাতো,,,বাবার পিঠে চড়ে খেলার সময় ছোট্ট তিতলি যখন উঠতে পারতো না তখন তু র্না ঝাপটে ধরে
তিতলিকে বাবার পিঠে তু লে দিতো,,,কিন্ত হঠাৎ কি এমন হলো যে তু র্না তাকে সহ্য করতে পারে না,,,,এসব
ভাবতে ভাবতে তিতলি কখন রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লো নিজেও বুঝতে পারেনি,,, সকাল বেলা মাথায় কারো
হাতের ছোঁয়া পেয়ে ঘুম ভেঙে গেলো তিতলির,,ভেবেছিল বাবা বা মা কেউ হয়তো মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,
কিন্তু চোখ খুলে খুব অবাক হলো তিতলি,,কারন তার মাথায় তু র্না হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,, চোখে একরাশ বিস্ময়
নিয়ে বোনের দিকে তাকিয়ে আছে তিতলি ,,,, গতকাল রাতে তিতলি ঠাট্টা করছিল বলে নিজের হাসবেন্ডের
সামনে তিতলি গালে হুট করে চড় দিয়েছিল তু র্না,,,তিতলি যখন কাঁদতে কাঁদতে তু র্নার রুম থেকে বেরিয়ে
এসেছিল তখন ই হঠাৎ করে তিতলির জন্য তু র্নার খুব খারাপ লাগছিল,,, তখন তু র্নার হাসবেন্ড ওর পাশে এসে
বসলো আর বললো কাল চলে যাবো আজ কে ওকে থাপ্পড় টা না দিলে ও পারতে,,ও তো অন্যায় কিছু
করেনি,,,আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বলেইতো ও তোমার ছোট বেলার দুষ্টুমির কথা বলছিলো আর হাসছিল,,
তিতলি তো খারাপ কিছু বলেনি,,,তু র্না তখন নিজের ভু ল বুঝতে পারে,,,তাই তিতলি ঘুমিয়ে পড়ার পর তু র্না
তিতলির রুমে আসে,,তখন ই তিতলির ডায়েরিটা পায় তু র্না,,,আর ডায়েরি থেকেই তু র্না জানতে পারে তিতলি
ওকে কতটা ভালোবাসে,,,,,,,আপু!!তিতলির ডাকে তু র্না ভাবনা থেকে ফিরে আসে,,,, আপু তুৃ মি কি এখনও
আমার উপর রেগে আছো,??,,একথা শুনে তু র্নার চোখে পানি চলে আসে,,,তিতলি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,,
আপু তু মি কাঁদছো কেনো??আমার এই ছোট পাগলি বোন টা আমাকে কত ভালোবাসে সেটা বুঝতে পেরে
কাঁদছি,,এইবলে তু র্না তিতলি কে জড়িয়ে ধরলো,,,তিতলি ও বোন কে কাছে পেয়ে আনন্দে কাঁদতে থাকলো,,,দূর
থেকে ওদের বাবা মা সব দেখলো,,তাদের চোখেও পানি,, কারন আজ অনেক বছর পর দুই বোন আবার এক
হয়েছে,,,,,একটু পরই তু র্নার ফ্লাইট,, সবার চোখে পানি,,,,এই চোখের পানি যত-টা বিচ্ছেদের তার চেয়ে বেশি
কাছে পাওয়ার,,,,

#Stay_Home
#Stay_Safe
Name: Najmul Hasan Joy
Batch: 39
Department: Textile
Article: পঙ্গপাল থেকে বঙ্গপাল

জীবন মানুষকে কোন দিকে নিয়ে যায় তা কোন ইয়াদ মানুষ রাখে না ৷ এইত সেদিন, টগবগে তরুন ছিলাম ৷
আমার ধরনী মা'টাও সবে পঞ্চাশের কোঠা পেরোল ৷ মানুষ গুলো আগে কত সাধারণ ছিল, এখন কেমন যেন
অসাধারন হয়ে গেছে ৷ এই অসাধারণের ভালর দিক থেকে খারাপের দিকটা বেশি ৷ আমরা এখন প্রকাশ্যে অনেক
খারাপ কাজ করতে জানি ৷ সবে ক দিন আগেই আমরা দেশের সামাজিক মাধ্যম গুলাতে দেখলাম আফ্রিকা থেকে
এ দেশে পঙ্গপাল আসতে পারে ৷ এখন এই পঙ্গপাল পাকিস্তানে আছে ৷ আমরা কি করলাম ? সবাই সত্য না জেনে
হুজুগে হয়ে গেলাম ৷ এজনই হয়ত কবি বলে গিয়েছিলেন ,“ সাত কোটি বাঙালিরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙালি
করে মানুষ করনি ”৷ কথাটির এখন সত্যতা পাচ্ছি ৷ এই পঙ্গপালের উপস্থিতি দেখে এদেশে হানা দেয় বঙ্গপাল ৷
তাদের খাবার দাবার পঙ্গপাল থেকেও বেশি ৷ গরিবের আহার , সৈনিকের আহার সবই বঙ্গপালের পেটে ৷ এখন
এই বঙ্গ মায়ের চোখেই ঐ সব বঙ্গপালই দেশের সব থেকে বড় পঙ্গপাল ৷ যা আমরা চোখে দেখেও কিছু দেখছি না
বলে এরিয়ে যাচ্ছি ৷ কারণ এই বঙ্গ পাল আমি আপনি আমরাই ৷

# Stay safe, Stay home❤

Name: Mozammel Hossain Shoron


Batch: 37
Department: Textile
Article: কাব্যতা তখন মৃত

থাকুক কোন এক আত্মাত্যাগ!


কাব্যতা?
আমি সেবার অন্তর্ভু ক্ত বেদনায় মরতে বসেছিলাম মনে আছে?
আমি চাই সে সময় আবারো এসে দাঁড়াক আমার শিয়রে!
কাব্যতা?
আমি তো আজ বয়সের ভারে কাবু!
কোন অবলম্বন ছাড়া আমি মেরুদণ্ডহীন
এমন দিনাতিপাত আর কত সইবো বলো?
তু মি তো বেশ স্থির চিত্রে চিন্তা মগ্ন হয়ে চেয়ে থাকো রোজ
আমার ভেতরকার হিমালয় সমান উপেক্ষা গুনপোকার মত শব্দ করে একটু একটু করে নিঃশেষ করে দিচ্ছে।
কাব্যতা?
শুনছো!যাকে আমরা আমাদের ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীতে এনেছি!
সে ভালোবাসাটু কুও আজ মৃত!
আমার কাছে এখন জানলার ওপাশের সময়গুলো অদ্ভু ত সপ্নের মত লাগে!
রোদ,মেঘের খেলা দেখতে দেখতে আমি আজ ভীষন অভ্যস্ত
কাব্যতা!
মাঝে হঠাৎ পুরো পৃথিবী থেমে গেল মনে আছে!
যে অসুখে আমি তোমায় সব সময়ের জন্য হারালাম
এরপর থেকে এসব প্রকৃ তি, আবহ আমার কাছে অস্তিত্বহীন দম বন্ধের মত অসস্তিকর লাগে!
কোন রকম মুগ্ধতা এখানে আমায় আবারো নিমজ্জিত করে না!
কোন নিমন্ত্রণিত স্নিগ্ধ হাওয়া শরীরে আর এসে ছুঁ য়ে দেয় না!
কাব্যতা?
তু মি কি আমার সব আকুলতা বানী শুনতে পাও?
নাকি ছায়াছবির মত কেবল কল্পনাতেই প্রলাপ বকে যাই!
আচ্ছা কাব্যতা?
তোমার চিঠির টেবিলে এখনো কিন্তু যত্ন করে আমি আমার সংসারের পান্ডুলিপিটি রেখে দিয়েছি!
জানো?
কেবল এই একটি জিনিস আমার কাছে এখনো অপুর্ব লাগে!
সেসব দিনের মত!
প্রথম প্রথম লজ্জা নিয়ে লিখা চিরকুটে প্রেম!
কাব্যতা!
আমার কাছে স্থির এক অন্ধকার এগিয়ে আসছে!
সেখানে আমায় ঘনীভূ ত করে নেবে?
আমি এই আশ্চর্যের সময় ছেড়ে অনন্ত সময়ের হবো!
অনেকগুলো কবিতাপাঠ বাকি রয়ে গেল কাব্যতা!
অসুখকের গ্রাস করা শরীরে একটু ও শক্তি অবশিষ্ট নেই!
পৃথিবী আজ সুস্থ হয়েছে কাব্যতা!
সেই মহামারী থেকে অনেক মহাকবিও তৈরি হয়েছে!
জানো!
আবারো জেকে বসেছে সেই ধোঁয়াটে শহুরে ভীর!
ভ্যাপসা প্রাণহীন গন্ধ
'ভালোবাসা, সাম্যতা, সরলতা, ' সব রোমের প্রাচীন সভ্যতার মত এখন কেবল ইতিহাস!
কাব্যতা!
অন্ধকার অবয়ব আমাকে শেষ নিঃশ্বাসে বাধ্যে করছে!
আমি আর এক মুহূর্ত বাঁচতে চাই!
মহামারী ভয়াবহতা লিখতে চাই!
একদন্ড সাজাপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামীর মত!
কালো কাপড়ে ঢেকে শেষ ইচ্ছের কথা জিজ্ঞেস করা হবে?
আমি তখন!
সংবিধান হিসেবে 'আমাদের বেঁচে থাকাকে' লিখে যাবো!
গোরস্থানের মৃদু আলোয়!
আমার উপর থাকবে সুবিশাল এক চালতা গাছ!
কাব্যতা?
শুনছো?
আমিও এখন অস্তিত্বের অধীনের বাইরে
এখানে দীর্ঘ সপ্ন ভঙের আক্ষেপ হয় না।
শুধু চলতার ফু লে নিজের আবরিত মাটিটু কু নৈসর্গিক লাগে!

Name: শাহজাহান তালুকদার সানি


Batch: 29
Department: Pharmacy
Article: একাকিত্বের ভীড়

যার কাছে নিজেকে দৈনিক ইনস্টলমেন্টে জমা রাখা যায়, জীবনে এমন একটা মানুষ দরকার। অন্তত দিনশেষে
নিজের কথাগুলো কাউকে ভরসা করে বলা যায়। মানুষ হতাশায় কখনো মারা যায় না, বরং, নিঃশেষ হয়ে যায়।
মানুষ মারা যায় একাকিত্বে, যখন সে নিজের কথাগুলো কাউকে বলতে পারেনা। মানুষ যতটা না হতাশায় দিন
কাটায়, তার চেয়ে বেশি দিন কাটে একাকিত্বে। হতাশা একটা সময় নিজে চেষ্টা করলে কাটিয়ে উঠা যায়, কিন্তু
একাকিত্ব কখনো নিজে নিজে কাটিয়ে উঠা যায় না। একাকিত্ব যখন গ্রাস করে ফেলে তখন চু প করে থাকা মানে
ভাল নেই বোঝায় না, এর অর্থ কথা বলতে ইচ্ছে করে না।

সবার জীবনে এমন একজন প্রয়োজন যে মন খারাপটু কু বুঝে নিতে পারবে, একাকিত্বের অবলম্বন হবে। প্রচন্ড
একাকিত্বে মানুষ ভরসা পাবার মত বিশ্বাসী একটা মন খোজে।
জীবনে একটা মানুষ থাকা দরকার যার সাথে অন্য কারো যোগাযোগ থাকবেনা। অন্য কারোর গল্প তাকে স্পর্শ
করতে পারবেনা। মানুষটা থাকবে একান্তই নিজের। একাকিত্বের ভীড়ে যার নিজের মানুষ আছে, সেই মানুষটা
কখনো একা নয়। তাকে কখনো একাকিত্ব স্পর্শ করতে পারে না। সে সবচেয়ে সুখী মানুষ।
#StayHome
#StaySafe

Name: Mahmud Hasan Rifat


Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: শুভ্র আলোকছটা

হঠাৎ ক্লাসরুমের সাদার মাঝে সে ছিলো শুভ্র এক আলোকছটা।সেই আলোতে মুগ্ধ হয়ে মেয়েদের সাথে কথা না
বলা লাজুক ছেলেটিও আচমকা লাজুকলতা কাটিয়ে তার সাথে কথা বললো।।মূলত মেয়েটি কথা বলা শুরু করায়
ছেলেটি যুদ্ধ জয়ের প্রয়াসে রনক্ষেত্রে পদার্পণ করে। মেয়েটার মায়াবি হাসি লুকিয়ে দেখার জন্য প্রথম সারির
বেঞ্চগুলো ছেড়ে পেছনের সারির বেঞ্চগুলোতে বসতে শুরু করে।ক্লাসে বসে মেয়েটিকে নিয়ে কবিতা লেখা আর
মেয়েটির ছবি আঁকা হয়ে উঠে তার নিত্যদিনের অমনোযোগী ক্লাসের সময় বিলাসিতা ।যদিও তার কবিতা ছিলো
ব্যর্থ আর কবি হিসেবে সে ছিলো ব্যাহত। তবুও নিজেকে অব্যাহত রাখার প্রয়াসে বন্ধুত্বের বন্ধন গাঢ়তর হওয়ার
আগেই ছেলেটি নিজের রাজ্যে কালো পতাকা উড়িয়ে বলে দিলো মনের কথা। মেয়েটি রনক্ষেত্রে বিনা মেঘে
বজ্রপাতে বিজয় নিশান উড়িয়ে হারিয়েছে ছেলেটির দৃষ্টিসীমা ছাড়িয়ে আপন রাজ্য সাজিয়ে।তাইতো ছেলেটি
শূন্যতার মাঝে পূর্ণতার খোজে গোধুলির আবছায়া আলোতে স্মৃতির প্রতিটি পাতার ভাজে তাকিয়ে অতৃ প্ত প্রহরের
তৃ প্তিমাখা ক্লান্ত হাসি হাসে।কিন্তু বেলা শেষে স্মৃতির পাতাগুলো অন্ধকারাচ্ছন্নই হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে কেউ
আধারে প্রদীপ জ্বেলে গল্পটা পড়ে আবার প্রদীপ নিয়েই হারিয়ে যায়,তবে কেউই খালি পড়ে থাকা স্মৃতির পাতায়
নতু ন সূর্যোদয় সমেত আলোকিত দিন উপহার দেয়ার ইচ্ছাও পোষণ করে না।অবশ্য লাজুক ছেলেটি সে আশাও
করে না। আশাতীত সুখের পানে নিরাশার জাল যে আছে বুনে।তাইতো লাজুক ছেলেটি অসমাপ্ত স্মৃতিপটে
কাল্পনিক সমাপ্তির লক্ষ্যে সংগী করে নিয়েছে পূর্নিমার চাঁদ,খোলা ছাদ আর অজস্র তারার ঝাক।
#StayHomeStaySafe.
Name: Sumaya Ferdous Zoya
Batch: 44
Department: English
Article: অসময়ের ক্রন্দন

এইতো সেদিন টু কটু কে লাল শাড়ি পড়ে ভেবেছিলাম যেদিন বড় হবো পাশের বাসার আপুর মত ফু লের গাড়িতে
চেপে শ্বশুরবাড়ি যাব। আব্বুকে বলায় খুব হেসেছিল সেদিন। মাথায় হাত দিয়ে বলেছিল পাগলিটা। সময় গড়িয়ে
আজ ছোট্ট মেয়েটা কত্ত বড়৷ ছোট চোখ দুটো এখন বিশাল বিশাল স্বপ্ন নিয়ে মেতে থাকে। স্কুল কলেজের গন্ডি
পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠে পা রেখেছি খুব বেশি দিন হয়নি। তাও ক্যাম্পাসের সেই আড্ডা, ক্লাস সবকিছু
নিয়েই বেশ ব্যস্ত দিন কাটাতাম। বাসা দূরে হওয়ায় হোস্টেলেই থাকতাম। প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে গনরুমে শান্তি তে চোখ
বুঝে থাকা সময়গুলো নিয়ে, পাশাপাশি বেডে থাকা মেয়ে গুলোকে নিয়ে রাত জেগে আড্ডা মারা রুমমেট গুলোকে
নিয়ে , হোস্টেলের রান্না করা খালাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মেতে থাকায় দিব্যি সময় কাটছিলো। বাসার কমতি হুট
হাট মনে আসতো না তা নয়৷ তবে এই জীবনটার মধ্যেও ছিলো প্রশান্তি। এইতো সেদিন ক্যাম্পাস থেকে ফিরে এসে
ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতেই দেখলাম কোভিড -১৯ এ ধরা পড়েছে ৩ জন। তখন ও বিষয়টা আমলে না নিলেও
যখন ধীরে ধীরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে লাগল সেই সাথে আমার চোখে স্বপ্ন গুলো কেমন যেন ফিকে হতে শুরু
করল। ক্যাম্পাসের সেই রোড, প্রিয় মুখ গুলো ফিকে হতে শুরু করল। ঘরবন্দী হওয়ার নির্দে শে যখন যে যার মত
পরিবারের কাছে ফিরে যেতে শুরু করলাম। কি করুন হাহাকার সবার মধ্যে। প্রিয় মানুষ, বন্ধু বান্ধব, এই নচ্ছার
রুমমেট গুলোকে রেখে যেতেও যে এত কষ্ট লাগে তা হয়ত এই প্যানডেমিক না হলে বুঝতাম না। প্রতিটা বার ছু টি
পড়লে বড্ড খুশিতে বাড়ি ফিরতাম। এবার যেন শক্ত করে শিকল বেধে রেখেছিল পায়ে কোন এক অজানা টান৷
বাড়ি যাওয়ার সময় মনে হয়েছিল না জানি প্রিয় মানুষগুলোর জন্য রাস্তা থেকে সাথে করে কিছু নিয়ে যাচ্ছিনা
তো??? আচ্ছা যাদের কে রেখে যাচ্ছি আবার দেখা হবে তো?? ওই যে ক্যাম্পাসে দারুন মিমিক্রি করে যে ভাইয়া
টা ।আবার যদি দেখা হয় ভাইয়া কে বলব “ ভাই আপনার মিমিক্রি কিন্তু দারুন। “ ওই যে স্টেজ কাপানো বড়
ভাই বোন গুলো তাদেরকে তো বলায় হয়নি দেখা যদি হয় আবার এবার আপনাদের সাথে আমিও উঠে যাব স্টেজ
কাপাতে । আচ্ছা ওই যে ভাইয়াটা?? কেমন আছে সে? তাকে বলায় হয়নি আড় চোখে তাকে দেখে আমার দিব্যি
সময় কাটত। ক্যাম্পাসের ল্যাম্পপোষ্টের নিচে বসে চা কি আবার খাব?? বড্ড ইচ্ছা ছিল বৃষ্টি হলে খালি পায়ে
হেটে যাব বহুদূর। সবকিছু ফেলে যখন বাসায় ফিরলাম । আগে ফিরলে মাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতাম। এবার
ধরার আগেই মাকে বলেছি সরে যাও। কি আশ্চর্য। বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় কেন জানিনা। এই সময় গুলো যেন
যেতেই চায় না ।প্রতিটা দিন মনে হয় শত বর্ষ। এইতো ১ মাস ১৩ দিন লকডাউন চলছে । আমরা অনেকেই খুব
ভালোই আছি। কিন্তু ঠিক উল্টো পিঠে উঠে থাকা বাস্তবতা থেকে আমি মুখ সরাতে পারিনি৷ এই উন্নয়নশীল দেশে
যতটা না করোনায় মরছে তার থেকে বেশি মরছে না খেতে পেয়ে। চারিদিকে কেন জানিনা হাহাকার ,মানুষের
আর্ত নাদ শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত৷ বিভিন্ন গুজব, ত্রান চু রি সব কিছু ই যেন আমার জীবনকে বিভীষিকাময় করে
তু লেছে৷ আমি জানি কত অসহায় এই হত দরিদ্র মানুষ গুলো। ফোনালাপে সবার খোজ নিলেও বুকের মধ্যে তাদের
দেখার তীব্র বাসনা জেগে উঠছে সময়ে সময়ে ।প্রথমেই বলেছিলাম যে আপুটার কথা। মনে আছে?? এই তো
সেদিন বিশাল চিৎকারে কেদে উঠা আপুর বাবার মুখেই শুনলাম করোনার শিকার অল্প বয়স্ক আপুটার স্বামী আজ
পাড়ি জমিয়েছে অন্য জগতে। কি শাস্তি তাইনা?? প্রিয় মানুষ টাকে ছু য়ে দেখার অনুমতিও মেলেনি আপুর।
তাকেও রাখা হয়েছে আইসোলেশনে।

“ আমি দেখেছি পশুত্ব


প্রচন্ড যন্ত্রনায় মাটিতে আছড়ে পড়া মধ্যবিত্তের আহাজারি
দেখেছি সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেওয়া অশিক্ষিত জনগনকে
পৃথিবী সুস্থ নয়
আমি দেখেছি মৃত্যুর প্রলয়
দেখেছি ত্রাণে পাওয়া চাল ছিটকে পড়ায় রাস্তার পাশে মানুষের আর্ত নাদ
দূর্দ ান্ত কিশোরের ভয়ার্ত মুখ
হাজারো প্রেমিকের নির্বাক চাহনি
আমি হৃদয় হীনা
পিতার কোলে পুত্রের লাশে
আমি আজ ছন্মছাড়া
বাধ ভাঙা স্বপ্নের শেষকৃ ত্য
সময়কে অসময় করে তোলা সেই দুঃস্বপ্ন
পৃথিবী সেরে যাক, দেখা হবে কোন এক উষালগ্নে আবারো “

Name: Farzana Yeasmin


Batch: 33
Department: Pharmacy
Article: অন্ধকারের স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ আমি

অন্ধকারের মায়াজাল টা কাটিয়ে আলোর দিশা খুঁজেই পাচ্ছিলাম না!


তু মি চোখে আঙু ল দিয়ে বুঝিয়েছিলে যে আমার জন্য আলো নয় অন্ধকার টাই শ্রেয়!
আমিও সেটাই মেনে নিয়েছিলাম!
অন্ধকারে তলিয়ে যেতে লাগলাম আমিও!

যখন দেখলাম আকাশে এতোগুলো তারার মাঝে একখণ্ড চাঁদ আলোকিত করে রেখেছে পুরো পৃথিবী;
সেদিন বুঝলাম অন্ধকারের মাঝেও নিজেকে তৈরি করা যায়; নিজের অস্তিত্ব প্রমান করা যায়; ঠিক আকাশের
একখণ্ড চাঁদের আলোর মতো!
সেদিনএক শীতল বাতাস অনুভব করলাম যেটা শুধু রাতের অন্ধকারেই পাওয়া যায়!
নিজেকে প্রমান করতে সবসময় আলো লাগেনা, মাঝে মাঝে অন্ধকারেও আলো খুঁজে পাওয়া যায়!

নিজেকে আলোকিত করা যায়!


আলোর এই স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ হতে চাই বারবার।
প্রকাশ করতে চাই এই অন্ধকারে আলোর দিশা পাওয়া আমার আমি কে!
এখন আমিও তোমাকে দেখিয়ে দিতে সক্ষম অন্ধকারে ও কতোটা আলোকিত আর উজ্জ্বল আমি!
"হ্যাঁ! আজ অন্ধকার টাই ভীষন প্রিয় আমার!"

#StayHomeStaySafe.

Name: Baha Uddin Reza


Batch: 34
Department: Textile
Article: স্বর্গরাজ্যে আমরা

এক এক করে সব বিল্ডিং এর লাইটগুলো অফ হয়ে গেল একা একা ছাদে বসে খেয়াল করছিলাম। তোমার ঘরও
অন্ধকার হয়ে গেল....ভাবছি ঘুমাতে যাব না অপেক্ষা করব।

আকাশে চাঁদ এল তোমার জানালায় আলো পড়ল চেঁ চামেচিতে ঘুর কেটে গেল। দূর থেকে দেখে ঝাপসা বুঝায়
যাচ্ছিল ৫"৪ ইঞ্চি লম্বা আবছা ছাঁয়া বেলকোনিতে ঝু লছে, পা গুলো যে শূন্যে ভাসছে স্পর্শ বুঝা যাচ্ছিল। আমি
ধোঁয়া দিয়ে হৃন্দপিন্ডদের বেগ কমানোর চেষ্টা করলাম, বেকুল হয়ে দেখছি অদ্ভু দ অমানুষিক দৃশ্যটা।
খুব সম্ভবত এমন দৃশ্য মানুষ খুব কমই দেখে ক্ষণিকের জন্য নিজেকে পুড়াকপাল মনে হল, চাক্ষু স সাক্ষী হয়ে
গেলাম।

চাঁদের আলোয় পৃথিবী স্বর্গ রাজ্য দেখাচ্ছে, মহাসমুদ্রের জোয়ারে অক্ষিগোলকদ্বয় ছলছল করছে, কত সখ করা
আঁচড়ানো চু লের ভাজ নষ্ট হচ্ছে বাতাসে, রেলিং এর উপরে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু কেন !! শেষ টান দিয়ে বুঝে
উঠার আগেই বুঝলাম;
আমি অন্য কোন গ্রহে চলে যাচ্ছি হুহুহু বাতাস চোখে ঝাপসা কিংবা এলোমেলো অস্পষ্ট তীব্র আলোর রশ্মি
তারপর তারপর আবিষ্কার করলাম নিজেকে প্রিয়তার সাথে।

চেনা গ্রহের দুজন কাছের মানুষ অচেনা গ্রহে কথোপকথন করছে


- কেন করতে গেলে এসব !!

-জানি নাহ....আমতা আমতা করে তু ততমি

-নিজেকে আটকে রাখার ক্ষমতার কজনের থাক বল....হিমুর মত মহাপুরুষ কজন বা আছে আমি বরং
কারপুরুষতা... (থেমে থেমে ভারি নিঃশ্বাসের শব্দে) কিন্তু তু মি তো...

-অকারণেও আমি তোমাকে ছাড়া বেশ্যা হয়ে সুখের স্বাদ নিতে পারছিলাম না বলে

- বাহ...বেশ পাকামো কথা বলছ

- পাকা না হলে এইভাবে অচেনা জায়গায় একসাথে এই চাঁদনী দেখার সুযোগ পেতাম কি হাজারও জন্মে

-মাথা ধরেছে, তোমার কাধে একটু মাথা রাখি;

- যা ইচ্ছা রাখ সয়ে যাবে !!

#stayhome_staysafe

Name: Ferdin Ehsan


Batch: 35
Department: Pharmacy
Article: মা এর শেষ চিঠি

মা শব্দটি আমাদের সবার মুখের প্রথম শব্দ।।


মা আমাদের জীবন এর সবথেকে মুল্লবান সম্পদ।। কিন্তু সময় থাকতে আমরা সেটা বুঝতে পারি না।।
একদা এক ছেলে ছিল অনেক সুন্দর অনেক মেধাবি।।
কিন্তু তার মা এর একটা চোখ ছিল না জার জন্য তার মা কে কুতশিত লাগত।। ছেলেটা একদিন স্কুল এ হঠাত
অসুস্থ হয়ে পরল এমনকি সে অজ্ঞান হয়ে গেছিলো।। তার মা খবর পায়।। সংগে সংগে মা ছু টে গেল ছেলের
কাছে।। ছেলের যত্ন নিল সুস্থ করে তু ল্ল। পরদিন স্কুল এ এসে ছেলে তাকে তার কুতশিত মার জন্য কথা শুন্তে হল।।
ছেলে সেটা নিতা পারল না। ছেলে ভাবল জে আমরা এই মহিলা এর থেকে দুরে চলে জেতে হবে।। ছেলে দিন রাত
পরিস্রম করে বর একটা অফিসার হয়ে গেল।।।কিন্তু সে তার এই কুতশিত মা র আর কোনো খবর নিল না। কিন্তু
এইদিকে মা ছেলের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করত কিন্তু ছেলে আর বারি ফিরে না।
মা কোনো ভাবে জানতে পারল তার ছেলের শহর এর থিকানা। মা ছু টে গেল কিন্তু ছেলে তাকে দারোয়ান দিয়ে
দোর থেকে তারিয়ে দিল।। মা কষটো পেয়ে চলে গেল। কিছু দিন পর গ্রামে সেই স্কুল এ একটা পুনরমিলনি
অনুশথান হল ছেলে সেখানে আশলো।শহর এ ফিরে জাবার সময় ভাবলো বুরি তাকে আকতু দেখে জাই।। ছেলে
বারি তে গিয়ে দেখলো কেও নেই। ছেলে পাশে জিগ্যেস করল জে বুরি কথায় ।। পাশের লকেরা বল্ল তু মি বাবা
আশতে দেরি করে ফেলসো। তোমার মা ২দিন আগে মারা গেসে।আর মারা জাবার আগে এই চিঠি তা তোমার
জন্য রেখে গেসে।।
চিঠি তেঃ বাবা আশা করি ভাল আছো। তু মি যখন এই চিঠি পরবে আমি তখন থাকব না এই প্রিথিবিতে।।
তোমার সারাজিবন একটা অভিযোগ ছিলো ।। আমার কুতশিত চেহারা নিয়ে তু মি অনেক কথা শুন্তে।। কিন্তু তু মি
কি জনো।। তু মি যখন ছোট ছিলে। খেলা করতে গিয়ে তু মি গাছ থেকে পরে নিজের চোখ তা নশটো করে
ফেলেছিলে তখন আমি আমার চোখ দিয়ে দিয়েছিলাম তোমাকে জাতে কুতশিত না লাগে।।আমি যদি আমার চোখ
তা না দিতাম হইত আমেক এত কুতশিত লাগতো না।। বাবা তোমার জন্য আমি সবসময় দোয়া করি তু মি ভাল
থাকো শুখে থাক।।আর বাবা তু মি এটা ভেবোনা তোমার উপর আমার কোনো রাগ বা কশটো আছে।। তু মি শুকে
থাকো ভাল থাকো সেইতাই দোয়া করি।।
ছেলে চিঠি তা পরে কান্না সুরু করল আর মা এর কাছে মাফ চেতে লাগ্ল কিন্তু সে তার মাকে আর ফিরে পাবে
না।।। এজন্য আমারা আমাদের মাবাবা কে কখনো কসটো দিবনা।। তারা যা করে আমাদের ভালোর জন্য
করে।।।সবাই আমরা মা বাবা এর জন্য দোয়া করবো আর তাদের মনে কখনো কসটো দিব না।। কারন
"মা এর পাতলে সন্তান এর বেহেশতো"
#stayhomebesafe

Name: Sukdev Sarker


Batch: 36
Department: English
Article: প্রাক্তন
যখনই কারো সাথে প্রেম প্রেম ভাব জমে উঠবে,
তখনই দেখবেন প্রাক্তন নামক প্রানীটা আকাশ
থেকে ঠাসসস করে আপনার কোলে এসে পরবে!

সেদিনের কথা কেয়ার রিয়্যাক্ট টা তখন অনেকটা ত্রানের মতো কেউকেউ পেয়েছে আর আর কেউকেউ তখনো
পায়নি। আমিও অনেকের মত কেয়ার রিয়্যাক্ট না পেয়ে নিজেকে অভাগা ভেবে কষ্ট পাচ্ছিলাম তখনই

প্রাক্তন প্রেমিকা হঠাৎ ফোন দিয়ে বলতেছে-সুক রাতে খাইছো?


না, খাইনি এখনো-বলার সাথে সাথে সেই এক ঝাড়ি মেরে বলতেছে,স্টু পিড অনেক রাত হইছে তাড়াতাড়ি খেয়ে
নাও।

আমার মনে হলো সবাই কে ডেকে বলি দেখছো আমার কেয়ার রিএক্ট লাগেনা প্রাক্তন এখনো কত কেয়ার করে
আমার।

অথচ প্রাক্তনকে -আই ডোন্ট কেয়ার।

কারন আসলে প্রাক্তন কে নিয়ে সবার দুক্ষ থাকে না সব মানুষ ইমোশনাল হয়না অনেক মানুষ প্রাক্টিকাল ও হয়

প্রাক্তন এর কাছে ছ্যাঁকা খেয়ে যারা বাকিজীবন প্রেম না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তারা হলো বিশ্ববোকা।

পিচ্চিকালে প্রথমবার হাটতে গিয়ে উষ্টা খাবার পর


কি জীবনে আর কোনদিন হাটার চেষ্টা করেননি!

মহাখালী থেকে বনানী যাওয়ার ৭-৮টা রাস্তা আছে,১টা প্রেম করেই যদি বিয়ে করা যেতো।

তাইলে মহাখালী থেকে বনানী যেতে ১টা রাস্তাই থাকত!

আমি এখন নিজেকেই সবচেয়ে ভালোবাসি নিজেকে থেকে অন্যকে বেশি ভালোবাসে বোকারা।

নিজেকে এমনভাবে গড়ে তু লবো যাতে প্রাক্তনও


আমাকে দেখে আবার নতু ন করে প্রেমে পড়ে খায়!
Name : Ibne Faruk Sadik
Batch:35
Department of pharmacy
Article : আত্মউপলব্ধি

বৃষ্টি ভালোবাসি......
আজ অনেক দিন পর বন্দী জীবণটাকে উপভোগ করছি।বারান্দার রেলিং বেয়ে অসমাপ্ত ছিটে ফোঁটা রোদের
ঝলাসানো যেই আলো মেঘকে ফাঁকি দিয়ে চু পচাপ করে উকি দিচ্ছে তা কিন্তু আজ বৃষ্টির সাথে ভালোই
প্রতিযোগিতা করছে। রাত হলে মসজিদে হাজারো মানুষের সাথে তারাবি পড়া হয় না ঠিকই , তবে রোজা কিন্তু
থেমে নেই। আর এই রোজাতেও বেশ সুন্দর একটা দুপর
ু উপোভোগ করছিলাম। আপনারা যারা মন দিয়ে টানা
১০ মিনিট অন্তত বৃষ্টি দেখবেন আর মাটির একটা কড়া ঘ্রাণ নাকে নিবেন , আমি হলফ করে বলতে পারি
আপনারা ফেলে আসা পিছনের ১০ টা বছরের পুরুনো স্মৃতিতে ফিরে যাবেন । আমি হলফ করে বলতে পারি
আপনার আর যাই হোক সুন্দর একটা সময় কেটে যাব এই ১০ টি মিনিটে। যারা বৃষ্টির ফোঁটা গুলোকে হাতে নিতে
পছন্দ করেন আর আকাশ ভালোবাসেন তারা অন্তত শুকনো একটা আভাষ পাবেন। ফেলে আসা দিন গুলোর ভু ল
থেকে কিছু টা শিক্ষা পাবার। সামনে এগিয়ে যাবার জন্য আকাশ পরিমাণ শিক্ষা নাহ , শুধু মাত্র একটা
আত্মউপলব্ধিই যথেষ্ট। তাই বৃষ্টি ভালোবাসতে হবে নয়তো এভাবেই প্রতিবার বৃষ্টি দেখবেন আর কিচ্ছুক্ষন বৃষ্টি
দেখে রেলিং থেকে হাত গুটিয়ে ঘরে চলে আসবেন অতঃপর কোনো আত্মউপলব্ধি করতে পারবেন নাহ।
#stayhomestaysafe

Name: Avijit Das


Batch: 40
Department: Textile
Article: নারকীয়

সরু এই অন্ধকার গলি। চাঁদের হালকা আলোয় নিজের জরাজীর্ণ ছায়াকে পেছনে ফেলে হাঁটছি। ছায়া? নাকি
আমার অতীত?
পাশে ময়লার ডাস্টবিনে কিছু কুকুর ময়লা কুটে খাবার খুঁজছে।
বিনা অনুমতিতে এই গ্রহ দখলে নিয়েছি বটে। কিন্তু পরিচর্যা শুধু নিজেদেরকেই করে চলেছি একমনে।
কুকুরগুলোকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় একটা কুকুর মুখ উঁচিয়ে তাকালো আমার দিকে।
আমি ওই অল্প চাঁদের আলোতেই প্রাণীটির মুখে আমার সঙ্কটপূর্ণ ভবিষ্যতের ছাপ দেখতে পেলাম।
একটু ঘাবড়ে গেছি তা ঠিক।
পরিবারের কথা ভাবতে পারছিনা। সারাজীবন ভৎসনা আর তিরস্কার ছাড়া তেমন কিছু পাইনি। যারা
ভালোবাসেন বেশি তারা নাকি শাসনও করেন বেশি। তবে, শাসন এবং গালমন্দ, লাঠিপেটার মধ্যেকার পার্থক্য
খুব ছোটোবেলাতেই বুঝে গিয়েছিলাম। বড় পরিবারে সবাইকে এক হারে ভালোবাসতে হয়, নাহলে কেউ সেই
স্নেহের ছোঁয়া না পেলে ওই মানুষটার যে অস্তিত্বেই টান পড়ে যায় - এই তথ্য আমার পরিবারে কখনো পৌঁছায়নি।

সরু গলিটা পেরিয়েই সুমিদের বাসার সামনে এসে দাঁড়ালাম।


ওর রুমে আলো জ্বলছে। মেয়েটা পড়ছে মনে হয়৷ ওর সাথে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছি আমি। বাবা আর একটু
সুযোগ দিলে ওর সাথে কলেজ অব্দিও যেতে পারতাম হয়তো।
ওর সাথে আমার পরিচয় আমার বাড়িতেই। আমার জীবনে একবারই আমার জন্মদিন পালন করা হয়েছিলো
যখন আমি তৃ তীয় শ্রেণিতে পড়তাম।আমার বড় খালা এসেছিলো অনেক বছর পরে। উনিই সব কিছু র ব্যবস্থা
করেছিলেন। আমার জীবনে খুব বেশি সুন্দর দিন নেই, তবে ওইদিনটিতে আমার প্রথমবার নিজেকে একজন এই
সমাজের সদস্য বলে মনে হয়েছিলো। তখন শুধু সুমিই এসেছিলো তার বাবার সাথে আমার সমবয়সী হিসেবে।
এলাকার কোনো ছেলেপেলেই আমাকে পছন্দ করেনি কখনো, কেনো জানি! হয়তো আমি অন্যরকম বলে।
আমার বেশিরভাগ ভালো স্মৃতিই সুমির সাথে। ছোটোবেলায় যখন বাসায় মারধোর করতো, পালিয়ে এসে ওর
বাসায় লুকিয়ে থাকতাম।
ওর মা তখন চিন্তিত নজরে পিঠে মলম লাগিয়ে বিস্কুট খেতে দিতো।স্কুলেও আমার বন্ধু বলতে শুধু সুমিই ছিলো।
কেননা আমি কারো সাথে মিশতে পারিনা সহজে। কথাও পরিষ্কারভাবে বলতে পারিনা। বাবা, বড়দা, মেজদা
ওরা যখন খুব মারতো তখন শুধুই গোঙাতাম। কোনো প্রতিবাদ করতে পারতাম না। তখন সব ব্যাথা এই
সুমির হাসিতেই কেটে যেতো কেবল। মাকে তো জন্মের সময়ই হারিয়েছি। উনি থাকলে হয়তো আজ অন্য প্লট
হতো গল্পের।

ভাবতেই খারাপ লাগছে আর কখনো সুমির সাথে দেখা হবেনা হয়তো। এই এলাকা, এই শহর আদতে এই জেলা
আমাকে রাতের মধ্যেই ত্যাগ করতে হবে। সকাল হলেই হয়তো সিকদার বাড়িতে চিৎকার, হাহাকার শুরু হয়ে
যাবে।বাড়ির কর্ত ার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি, তার বড় নাতির মৃত,ছিন্নবিচ্ছিন্ন লাশটি উঠানে পড়ে আছে।
কোনো একটা প্রাণি প্রচন্ড নারকীয় হিংসা আর ক্ষোভ মিটিয়েছে শিশুটির উপর মাত্রাধিক্য বর্বরতার সাথে।

যার সাথে সারাজীবন পশুর মতো আচরণ করা হবে তার থেকে পশুর ন্যায় প্রতিশোধ ছাড়া আর কি পাওয়া
যাবে!

পা বাড়ানোর আগে আরেকবার তাকালাম সুমির রুমের জানালার দিকে। সে জানালা খুলে তাকিয়ে আছে। ওর
মুখে অস্পষ্টভাবে হাসি দেখতে পাচ্ছি। যাক, সামনের যাত্রায় অশুভ কিছু ঘটবেনা।

#StayHomeStaySafe

You might also like