You are on page 1of 2

জ্ঞানঅধিস্টানম্ মাতৃ কা

জগৎ জননীর আজ্ঞাধীন এই ত্রিজ্ঞান

মাতৃ কা, জগৎ জননী,আর তিন মল আনব মল,মায়িক মল ও কর্মিক মল তারই অধীন। এখানে মাতৃ কা কথার অজন্তা অর্থ
হল । অজন্তা মাতা মানে হল যখন সে নিজে ওয়াকিবহল বা জ্ঞাত নিজের আবরন সম্পর্কে আর এই অবস্থা কে বলে মায়া
শক্তি। যখন বিশ্বজনীন এই শক্তি নিজের স্বাধীন স্বরূপ স্বমন্ধে সচেতন হয় তখন তাকে স্বতন্ত্র শক্তি বলে। সুতরাং মাতৃ কা
উভয়ই মায়া শক্তি ও আবার একাধারেই স্বতন্ত্র শক্তি। স্বতন্ত্র শক্তি বন্ধনের কারন স্বরূপ তিন মলকে পরিচালনা করে।
স্বতন্ত্রতা হলো নিজের স্বাধীন ইচ্ছা, তু মি নিজেকে বদ্ধ করতে পারো আবার নিজেকে মুক্ত করতে পার বন্ধন থেকে, এই দুই
নিজ আয়ত্তাধীন।

তিনভাগে বিভক্ত যে মল, তাদের স্বরূপ কী? প্রথম হচ্ছে "নিজেকে অপূর্ন অনুভব" আনব মল"জ্ঞানম্ বন্ধনম্", দ্বিতীয় হলো
"বিভেদ জ্ঞান" মায়িক মল " "যোনিবর্গ" আর তৃ তীয় হলো " সুখ ও দুঃখের গভীর অনুভূতি " কর্ম মল " কালশরীরম্"। এই
ত্রিগুণময়ী শক্তির নিয়ন্তা শক্তি হলো জগৎ মাতা, যে পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে অক্ষর মালার সব অক্ষরে "অ" থেকে "ক্ষ" অবধি।
এই মাতৃ কা শক্তি শুধুমাত্র অক্ষর জগৎ এ পরিব্যাপ্ত নয়, বস্তুজগৎ জগৎ এ তা পরিব্যাপ্ত। ধরা যাক একটি শব্দ " ফু ল" এইবার
এই শব্দটি ফ,উ,ল এই তিনটি অক্ষর দ্বারা গঠিত। ফু ল একটি পার্থিব বস্তু। এই বস্তু জগৎ এর সবকিছু ই শব্দ দ্বারা পরিচিত।
জগৎমাতা শুধুমাত্র অক্ষর দ্বারাই পরিব্যাপ্ত নয়, বস্তুজগৎ যে নামে প্রতিত হয় সেই নামের প্রতি অক্ষর ও শব্দও সে। জগৎ
জননী জগৎ এর সৃষ্টির কারন।

যখন পরম শক্তি হয়েও আমরা, মায়া শক্তির মধ্যে অবস্থান করি তখন আমরা সীমাবদ্ধ ও সংকীর্ন জ্ঞান উৎপন্ন হয়।
আমদের অসম্পূর্নতা, দুর্বললতা বা হতভাগ্য এই গুলি মনে করি। অথবা আমরা মনে করতে পারি নিজেদের সৌভাগ্যবান বা
শক্তিশালী হিসাবে। এই ভাবে এই শব্দ গুলি দ্বারা র্দু ভাগ্যশালী বা সৌভাগ্যশালী, আনন্দিত বা দুঃখিত, আসক্ত বা অনাসক্ত
অনুভব করি।এবং শেষে এই ভাবের দ্বারা আক্রান্ত হই। এই মাতৃ কা বা মাতা এই ভাবকেই কেন্দ্র করে নিজের লীলাক্ষেত্র বিস্তার
করে।

এই পরম মাতৃ কা শক্তি বা চিতি শক্তি ব্রক্ষ্মরন্ধ্রের মধ্যে অবস্তিত। মাতার পদযুগলকে বেস্টন করে অবস্থান করে জ্ঞানেন্দ্রিয়,
কর্ম্নন্দ্রিয়,মন ও বুদ্ধি একে "পীঠেশ্বরী" বলে। এই পীঠেশ্বরীগন খুবই ভয়ার্ত রূপ থাকে " মহাঘোর"। প্রত্যেক মুহুর্তে তাহারা
চেস্টা করে বিভ্রম বা মোহ সৃষ্টি করতে এবং সব সর্বক্ষন সে চেষ্টা করে আরো বদ্ধ করতে। মাতৃ কাই মূল উপাদান, পীঠশ্বরী
তার সখীগন।

আমরা কী ভাবে শব্দের দ্বারা সুখ ও দুঃখে আক্রান্ত হই? উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়। ধরুন আপনি শুনলেন আপনার কোন
প্রিয়জন অসুস্থ। যদি সে প্রকৃ ত অসুস্থ না ও থাকে। কিন্তু আপনি আপনার ম নকে লক্ষ করুন সে সঙ্গে সঙ্গে আপনার মন দুঃখ
ও বিষাদে পূর্ন হবে। কিন্তু কিছু ক্ষন মধ্যেই আপনি শুনলেন যে তিনি ভাল আছেন, এবং তক্ষু নি আপনি আনন্দ দ্বারা পূর্ন
হলেন বা আক্রান্ত হলেন। এই দুই ক্ষেত্রেই তা মাতৃ কা সংযোজন বা বিয়োজন দ্বারাই এটি সংগঠিত হলো। এই ভাবে আমরা
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন মনোদশার মধ্যে দুলতে থাকি মতৃ কার লীলা খেলার সৃষ্টিতে। কিন্তু যে লীলাময়ী মাতৃ কা শক্তি কখনই
দৌর্মনস্য হয় না, সে নিজের স্বরূপ স্বমন্ধে জ্ঞাত, সে সদা আনন্দময়ী এবং অবদ্ধ । শব্দের সাথে সবসময়ই কোন অর্থব্যঞ্জক।
যতক্ষন শব্দ ও অর্থের সাথে আমারা একাত্ম থাকি ,ততক্ষনই বন্ধন। আর যখন শব্দ ও অর্থের মধ্যে একাত্ম হই না তখনই
মুক্তির স্বাদ অবন্ধন। যদি কেউ এক দুঃসংবাদ দেয় যে তোমার কোন বন্ধু রাম মারা গেছে । এখন তু মি যদি রামের মানসিক
ছবি অর্থাৎ শব্দার্থের সাথে একাত্ম হও তু মি দুঃখের সাগরে ডু বে যাবে , অর্থাৎ কী হলো ভেবে দেখুন আপনি আপনার বন্ধু
রামের সাথে একাত্ম তাই দুঃখ পেলেন। আর আপনার যদি এই নামে কোন বন্ধু না থাকে তাহলে কী হবে? আপনার মধ্যে এই
কথার কোন প্রভাবই পরবে না কারন আপনি একাত্ম নন এই নামটির সাথে। তখন রাম মারা গেছে শুধুমাত্র অক্ষরর সমস্টি
,কোন অর্থবহন করছে না।

পরম চৈতন্যময় মাতৃ কা শক্তি যখন পৃথক ভাবে স্পর্শ করে ইশ্বরের চার ভাগে বিভক্ত শক্তিকে তখন তারা পৃথক পৃথক ফল
প্রদান করে ।এই চার শক্তি হল অম্বা ,জ্যেষ্ঠা , রৌদ্রি ও বামা। যখন এই মাতৃ কা অম্বা শক্তি কে স্পর্শ করে ,তখন আমাদের মন
হয় উর্ধমুখী হয় না হয় নিম্নমুখী হয় ,অর্থাৎ যাকে আমারা মনের চঞ্চলতা রূপে ভোগ করি । বামা শক্তিকে স্পর্শ করলে ,তখন
সংসারের সৃষ্টি হয়। রৌদ্রি শক্তির সংস্পর্শে আমরা কোন ভাল বা মন্দ কোন স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারি না। যখন জ্যেষ্ঠা
শক্তির সাথে স্পর্শে আসে তখন নিজ আজ্ঞান সত্তার উপলব্ধি হয়।

এই চার শক্তির সাথে সংস্পর্শের জন্যি আমরা আমাদের প্রকৃ ত স্বাতন্ত্র্য সত্তা থেকে বঞ্চিত হই। শুধুমাত্র যখন একাগ্র হওয়ার
চেস্টা করি তখনই নয় বরং আমাদের জ্ঞানন্দ্রিয় ও কর্মন্দ্রিয় আমাদের সবসময়ই বর্হি মুখী করে তোলে।

স্পন্দন কারিকায় বলা হয়েছেঃ

" যখনই আমারা কোন ভাল বা মন্দ শব্দ শুনছি,তখনই আমারা আমাদের আর্ন্তনিহিত পরম সত্তা থেকে বর্হি মুখী গমন
করছি।"

You might also like