Professional Documents
Culture Documents
Ghazal Qasida Ghalib
Ghazal Qasida Ghalib
এখানে কবি একটি একমু খী প্রেমের গজল রচনা করেছেন। শব্দচয়নের মাধ্যমে
অনু ভূতিগুলো বড্ড স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে, যেন কবির হৃদয় মু চড়ে শব্দগুলো বেরিয়েছে।
ফর্মগত দিক থেকে দেখলে, মাতলাতে রাদিফ ও কাফিয়া দুয়ের ব্যবহারই দেখা গেছে। এই
গজলে রাদিফ হল ‘নহীঁ হ্যায়’ এবং কাফিয়া হল ‘কারার’ ‘উস্তুওয়ার’ ‘অ্যায়তবার’ ইত্যাদি।
মাতলার পরে প্রত্যেক জোড় সংখ্যক পংক্তিতে রাদিফের পু নরাবৃ ত্তি ঘটেছে এবং তার
আগে কাফিয়াও বসেছে। মাক্তাহ্-তে কবির নামও রয়েছে। সু তরাং, ফর্ম এবং বিষয়, সবদিক
থেকেই এটি একটি আদর্শ গজল।
২। দিল ইয়ে নাদাঁ তুঝে হুয়া কেয়া হ্যায়
আখির ইস দর্দ কি দাওয়া কেয়া হ্যায়
হাম হ্যায় মু স্তাফা অওর উও বেজার
ইয়া ইলাহি ইয়ে মাজরা কেয়া হ্যায়
...
ম্যায়নে মানা কি কুছ নহীঁ গালিব
মু ফত হাথ আয়ে তো বু রা কেয়া হ্যায়।
এই গজলেও এক প্রেমিকের হৃদয়ের আর্তি ফুটে উঠেছে। ফর্মগত দিক থেকে দেখলেও
দেখা যায়, সার্থক গজল হয়ে ওঠার সবকটি শর্ত ই রয়েছে এর মধ্যে, যথা রাদিফ (কেয়া
হ্যায়), কাফিয়া(দাওয়া, মাজরা, বু রা), মাতলা(দিল ইয়ে...), মাক্তাহ্(ম্যায়নে মানা কি...)
এর থেকে বলা যায়, গজল রচনায় মির্জ া গালিব অত্যন্ত পারঙ্গম এক কবি এবং কৃতিত্বের
অধিকারী।
কাসিদা কী: কাসিদা হল উর্দু প্রশস্তিমূ লক কবিতা। সমাজের শীর্ষস্থানীয় কোনো ব্যক্তি,
মূ লত রাজারাজড়া, জমিদার, সম্রাটদের, নায়ক, সাধু সন্ত, ধর্মপ্রবক্তা ইত্যাদিদের
প্রশস্তি করার উদ্দেশ্যে।
কাসিদার বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ –
১। কাসিদা বহিরঙ্গমূ লক কাব্য (যাকে খারিজি বলে)। একটি কাসিদা সাধারণত ১৫-২১টি
দ্বিপদ নিয়ে তৈরি হয়।
২। কাসিদার একটা ভূমিকা থাকে, যাকে তসবীব বলা হয়। এছাড়াও কাসিদা গুরেজ, মধ
এবং দুয়া – এই মোট চারটি অংশ নিয়ে তৈরি হয়।
৩। কাসিদায় গজলের মতোই প্রথম দুটি লাইন বা মাতলায় রাদিফ বা কাফিয়া থাকে।
তবে, গজলে যেমন মাতলায় রাদিফ ও কাফিয়া থাকতেই হবে, কাসিদায় সেটা না। কাসিদার
মাতলায় রাদিফ ও কাফিয়া নাই থাকতে পারে, পরে থাকতে পারে, এমনকী নাও থাকতে
পারে।
৪। কাসিদাতেও মাক্তাহ্থাকে, যেখানে কবি ভণিতা করেন বা নিজের নাম বলেন। তবে,
গজলের মতো শেষ দুটি লাইন নয়, যেখানে খু শি মাক্তাহ্থাকতে পারে।
মির্জ া গালিব কাসিদা রচনায়ও বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁর প্রতিভা সবথেকে
বেশি দেখা যেত কাসিদার ভূমিকা বা তসবীব রচনায়। এক হিন্দি সমালোচক বলেছেন,
“গালিব কো আপনি তসবীব পর বড়া নাজ্থা।” (গালিবের নিজের তসবীবের উপর খু ব গর্ব
ছিল)। তাঁর তসবীবে শব্দপ্রয়োগ, অলঙ্কারের ব্যবহার কাসিদাগুলোকে এক অন্য মর্যাদা
দিয়েছে।
নীচে মু ঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ্জাফরকে নিয়ে রচিত একটি কাসিদার তসবীব অংশটি তুলে
ধরা হল –
হাঁ মাহ্-এ-নাও! সু নে হম উসকা নাম
জিসকো তু ঝুঁ ককে কর রাহা হ্যায় সালাম
তু নহী জানতা তো মু ঝসে সু ন
নাম শাহেনশা-এ-বু লন্দ মকাম
কিবলা-এ-জান ব দিল বাহাদুর শাহ
মাজহার-এ-জ্দ্অল্জালাল ব হল কিবাম।
এখানে চাঁদকে কবি বলছেন, যাকে সে রোজ ঝুঁ কে সেলাম করে, কবি তার নাম জানেন। চাঁদ
যদি না জানে, যেন কবির থেকে জেনে নেয়। তিনি হৃদয়বান, ধর্মপ্রাণ, বিশ্বাধিপতি,
মহামহিম।
এই তসবীব থেকে এই সেই হিন্দি সমালোচকের কথাটিই প্রামাণ্য হয়ে দাঁড়ায়; “গালিব কো
আপনি তসবীব পর বড়া নাজ্থা।”
সু তরাং, উর্দু সাহিত্যে কবিতার মধ্যে গজল ও কাসিদা রচনায় মির্জ া গালিবের কৃতিত্ব
অনস্বীকার্য। উর্দু সাহিত্যকে জনপ্রিয় ও সমৃ দ্ধ করে তোলায় তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন
করেন, যা তাঁর গজল বা কাসিদা রচনার প্রতিভা থেকে সহজেই বোধগম্য হয়।