Professional Documents
Culture Documents
বুকের উপর হাত বাধা.docx
বুকের উপর হাত বাধা.docx
এর উত্তর হল-
আবদুর রউফ ভাই বলেছেন- সালাতে
হাত বাধার কথা সহীহ হাদীসে নেই।
বরং বুকের উপর বাধার কথা সহীহ
হাদীসে আছে।
তিনি প্রমান পেশ করেছেন বুখারীর
এই হাদীস হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা)
থেকে বর্নিত। তিনি বলেন নামাজে
লোকদেরকে ডান হাত বাম হাতের
বাহুর উপর স্থাপন করার নির্দে শ দেয়া
হত।
আবদুর রউফ ভাই এবং যারা এ সম্পর্কে
ভ্রান্তিতে আছেন তাদের বলছি, এই
হাদীসের কোন শব্দ দ্বারা আপনি
প্রমান পেলেন যে হাত বুকের উপর
বাধা হত ? দয়া করে জানাবেন।
বরং এই হাদীস কোনভাবেই হাত
বুকের উপর বাধার সামান্যতম প্রমান
নেই।
এরপর তিনি (আবদুর রউফ ভাই)একটি
মুনকার হাদীস পেশ করেছেন।
হাদীসটি হল ওয়াইল বিন হুজর(রা)
থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, “আমি
নবী করিম (সা) এর সাথে সালাত আদায়
করেছি। (আমি দেখেছি) নবী (সা)
স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর
রেখে বুকের উপর রাখলেন।”
*****************************************
.
আলী রাঃ (সালাতে) সাধারণত তার ( ডান
হাতের) পাঞ্জা বাম হাতের কব্জির
উপরে রাখতেন,তবে কখনো
শরীর চু লকাতে হলে বা কাপড় ঠিক
করে নিতে হলে তা করে নিতেন।
.
[ সহীহ বুখারী, ২য় খন্ড, পৃষ্টাঃ ৩৩০,
হাদিস নং ৭৫৭, (ইঃফাঃ)]
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
এখানে কোথাও ( ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩবুকের
উপর) কথাটি নাই !
.
সহীহ মুসলিম শরীফ
================
যুহায়র ইবনে হারব রহঃ…… ওয়াইল ইবনে
হাজর রাঃ বর্ণিত।তিনি রাসুল সাঃ কে
দেখেছেন তিনি যখন সালাত শুরু
করলেন তখন তার উভয় হাত উঠিয়ে
তাকবীর বললেন। রাবী হুমাম
বলেন, তিনি উভয় হাত কান বরাবর
উঠালেন। তারপর কাপড়ে ঢেকে
নিলেন(গায়ে চাদর দিলেন)। তারপর তার
ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন।
তারপর রুকু করার সময় তার উভয় হাত কাপড়
থেকে বের করলেন। পরে উভয়
হাত উঠালেন এবং তাকবীর বলে
রুকুতে গেলেন। যখন “সামি
আল্লাহুলিমান হামিদা” বললেন,তখন উভয়
হাত তু ললেন। পরে উভয় হাতের
মাঝখানে সিজদা করলেন।
.
[সহীহ মুসলিম,১ম খন্ড,পৃষ্টাঃ ৩৮২,
হাদিস নং-৭৮১ (ইঃফাঃ)]
.
এখানে কোথাও ( ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩবুকের
উপর) কথাটি নাই !
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
তিরমিযী শরীফ
============
হযরত হুলব আতত্বয়ী রা. বলেন,
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাদের ইমাম হতেন এবং
তাঁ র ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।
ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﻪﻠﻟﺍ ﺻﻠﻰ ﻪﻠﻟﺍ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺆﻣﻨﺎ
ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ. ﻓﻴﺄﺧﺬ ﺷﻤﺎﻟﻪ ﺑﻴﻤﻴﻨﻪ:
ﺣﺪﻳﺚ ﺣﺴﻦ
.
[ তিরমিজি, ১ম খন্ড, পৃষ্টাঃ, ২৪১, হাদিস
নং-২৫২ (ই:ফা:)]
.
এখানে কোথাও ( ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩবুকের
উপর) কথাটি নাই!
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
আবু দাউদ শরীফ
==============
আবদুর রহমান হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আমি ইবনুয যুবায়ের রাঃ কে বলতে
শুনেছি- নামাজের সময় দুই পা সমান রাখা
এবং এক হাতের উপর অন্য হাত রাখা
সুন্নাত।
.
[সুনানে আবু দাউদ,১ম খন্ড, হাদীস :
৭৫৪; (ইফা)]
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি ডান
হাতের উপর বাম হাত রেখে নামাজ
পড়েছিলেন। নবী কারীম সাঃ তা
দেখতে পেয়ে তাঁ র বাম হাতের
উপরে ডান হাত রেখে দেন।
.
[সুনানে আবু দাউদ,১ম খন্ড, হাদীস :
৭৫৫; (ইফা)]
.
হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, ‘সুন্নাহ হচ্ছে নামাযে
হাতের পাতা হাতের পাতার উপর
নাভীর নিচে রাখা।’
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺣﻔﺺ ﺑﻦ،ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻣﺤﺒﻮﺏ
ﻋﻦ ﺯﻳﺎﺩ ﺑﻦ، ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﺇﺳﺤﺎﻕ،ﻏﻴﺎﺙ
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺟﺤﻴﻔﺔ ﺃﻥ ﻋﻠﻴﺎ ﺭﺿﻲ ﻪﻠﻟﺍ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ،ﺯﻳﺪ
: ﺍﻟﺴﻨﺔ
ﻭﺿﻊ ﺍﻟﻜﻒ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻜﻒ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﺮﺓ.
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺰﻱ ﻓﻲ ﺗﺤﻔﺔ ﺍﻷﺷﺮﺍﻑ
ﻫﺬﺍ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ، ٤٥٨/ ٨
ﻭﺍﺑﻦ ﺩﺍﺳﺔ ﻭﻏﻴﺮ ﻭﺍﺣﺪ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺩﺍﻭﺩ،ﺍﻷﻋﺮﺍﺑﻲ،
ﻭﻟﻢ ﻳﺬﻛﺮﻩ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﻘﺎﺳﻢ
.
[সুনানে আবু দাউদ,১ম খন্ড, হাদীস নং
৭৫৬; (ইফা)]
.
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে কুদামা …
ইবনে জুরাইজ হতে ,তার পিতার সনদে
বর্ণিত ,তিনি বলেন ,আমি হযরত আলী
রাঃ কে নামাজে নাভীর উপরে ডান হাত
দিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরে রাখতে
দেখেছি।
.
[আবু দাউদ শরীফ,১ম খন্ড,
,হাদিস নং :৫৫৭ (ইফা)]
.
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেছেন, ‘নামাযে হাতের পাতাসমূহ
দ্বারা হাতের পাতাসমূহ নাভীর নীচে
ধরা হবে।’
ﻋﻦ، ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻮﺍﺣﺪ ﺑﻦ ﺯﻳﺎﺩ،ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺴﺪﺩ
ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﺇﺳﺤﺎﻕ Yﺍﻟﻜﻮﻓﻲ ،ﻋﻦ ﺳﻴﺎﺭ ﺃﺑﻲ
ﺍﻟﺤﻜﻢ ،ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻭﺍﺋﻞ ﻗﺎﻝ :ﻗﺎﻝ ﺃﺑﻮ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ
ﻪﻠﻟﺍ ﻋﻨﻪ :ﺃﺧﺬ ﺍﻷﻛﻒ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﻛﻒ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ
ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﺮﺓ
.
[সুনানে আবু দাউদ,১ম খন্ড, হাদীস নং
])৭৫৮, (ইফা
.
.
সুলায়মান ইবনে মুসা-এর সূত্রে একটি
মুরসাল রেওয়ায়েত তাউস রাহ. থেকে
বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তাঁ র ডান হাত বাম হাতের উপর
রাখতেন এবং তা বুকের উপর রাখতেন।
ﺛﻨﺎ ﺍﻟﻬﻴﺜﻢ ـ، ﺛﻨﺎ ﺃﺑﻮ ﺗﻮﺑﺔ: ﻗﺎﻝ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ
ﻋﻦ ﺛﻮﺭ ﻋﻦ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺑﻦ، ﺍﺑﻦ ﺣﻤﻴﺪ: ﻳﻌﻨﻲ
ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﻪﻠﻟﺍ ﺻﻠﻰ: ﻣﻮﺳﻰ ﻋﻦ ﻃﺎﺅﻭﺲ ﻗﺎﻝ
ﻪﻠﻟﺍ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻀﻊ ﺍﻟﻴﻤﻨﻰ ﻋﻠﻰ ﻳﺪﻩ
ﻭﻫﻮ ﻓﻲ، ﺛﻢ ﻳﺸﺪ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩ،ﺍﻟﻴﺴﺮﻯ
ﺍﻟﺼﻼﺓ
.
[সুনানে আবু দাউদ,১ম খন্ড, হাদীস :
৭৫৯; (ইফা)]
.
তবে এই হাদিসটা মুরসাল হাদিস।
.
বিস্তারিত স্ক্রিনসটে দেখুন
.
.
এটি মুরসাল হাদীস। কারণ এটি বর্ণনা
করেছেন একজন তাবেয়ী। তিনি
কোন সাহাবী থেকে শুনেছেন তা
তিনি বলেননি। তাই এ হাদীসের সনদ
রাসূল সাঃ পর্যন্ত পৌঁছেনি। যে
হাদীসের সনদ রাসূল সাঃ পর্যন্ত
পৌঁছেনি। সেটি দিয়ে কথিত আহলে
হাদীস ভাইয়েরা কি করে দলীল
পেশ করেন?
.
তাছাড়া এ হাদীসে সুলাইমান বিন মুসা
নামে একজন বর্ণনাকারী রয়েছেন।
তার সম্পর্কে
১
ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন ﻋﻨﺪﻩ ﻣﻨﺎﻛﻴﺮ
তথা তার কাছে আপত্তিকর বর্ণনা
রয়েছে।{আলকাশিফ লিযযাহাবী}
২
ইমাম নাসায়ী রহঃ বলেছেন,
ﻟﻴﺲ ﺑﺎﻟﻘﻮﻯ ﻓﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ
তথা তিনি হাদীসে মজবুত নন।
.
{আলকাশিফ লিযযাহাবী}
৩
আলী ইবনুল মাদিনী রহঃ বলেছেন
ﻣﻄﻌﻮﻥ ﻋﻠﻴﻪতথা সমালোচিত ও অভিযুক্ত
রাবী।
৪
আস সাজী রহঃ বলেছেন, ﻋﻨﺪﻩ ﻣﻨﺎﻛﻴﺮ
তথা তার কাছে আপত্তিকর বর্ণনা
আছে।
৫
হাকেম আবু আহমাদ রহঃ বলেছেন,
ﻓﻰ ﺣﺪﻳﺜﻪ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻤﻨﺎﻛﻴﺮ
তথা তার হাদীসে কিছু কিছু আপত্তিকর
বিষয় আছে।
৬
ইবনুল জারূদ তাকে তার “যুআফা”
গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। মানে
তার মতে সুলাইমান একজন দুর্বল রাবী।
৭
আলবানী রহঃ বলেছেন, ﺻﺪﻭﻕ ﻓﻰ
ﺣﺪﻳﺜﻪ ﺑﻌﺾ ﻟﻴﻦতিনি সত্যবাদী তবে তার
হাদীসে কিছু দূর্বলতা রয়েছে।
.
{আসলু সিফাতিস সালাহ২/৫২৮}
.
যে হাদীস একদিকে মারফূ তথা রাসূল সাঃ
পর্যন্ত সূত্রবদ্ধ নয়। অপরদিকে এমন
একজন রাবী রয়েছেন, যাকে
মুহাদ্দিসীনে কেরাম, এমনকি আহলে
হাদীস ভ্রান্ত মতবাদের শায়েখ
আলবানীও তার মাঝে দুর্বলতা আছে
বলে স্বীকার করেছেন, সেই
হাদীস কি করে কথিত আহলে হাদীস
ভাইয়েরা দলীল হিসেবে উপস্থাপন
করলেন?
.
এটি আমাদের কিছু তেই বোধগম্য
নয়।
.
এখানে ৭৫৯ নং হাদিসটা মুনকার হাদিস ছাড়া
আর কোথাও ( ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩবুকের উপর)
কথাটি নাই !
.
ইবনে মাজাহ শরীফ
================
হুলব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
নবী সাঃ আমাদের সালাতের ইমামতি
করতেন এবং তিনি তার ডান হাত দিয়ে বাম
হাত ধরতেন।
.
[ইবনে মাজাহ,১য় খন্ড,হাদিস নং ৮০৯]
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
ওয়ায়েল ইবন হুজুর রাঃ থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেব, আমি নবী সাঃ কে তার ডান
হাত দিয়ে বাম হাত ধরা অবস্থায় সালাত
আদায় করতে দেখেছি।
.
[ইবনে মাজাহ,১ম খন্ড,হাদিস নং ৮১০]
.
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ একদা নবী (সাঃ) আমার
নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, এ সময় আমি আমার বাম হাত ডান হাতের উপর
রেখেছিলাম। তখন তিনি আমার ডান হাত ধরে বাম হাতের উপর রেখে দেন।
.
[ইবনে মাজাহ, ১ম খন্ড, হাদিস নং ৮১১]
.
এখানে কোথাও ( ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩবুকের
উপর) কথাটি নাই !
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
নাসাঈ শরীফ
============
ওয়ায়েল ইবন হুজুর রাঃ থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন,রাসুল সাঃ যখন সালাতে
দাড়াতেন তখন আমি তাকে ডান হাত
দিয়ে বাম হাত ধরে রাখতে দেখেছি।
[সুনানে নাসাঈ শরীফ,২য় খন্ড,হাদিস নং
৮৯০(ইঃফাঃ)]
.
ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসুল সাঃ আমাকে দেখলেন,
আমি সালাতে ডান হাতের উপর বাম হাত
রেখেছি । তিনি আমার ডান হাত ধরে তা
বাম হাতের উপর রাখলেন।
.
[সুনানে নাসাঈ শরীফ,২ য় খন্ড,
হাদীস : ৮৯১; (ইঃফাঃ)]
.
৮৯২ নং হাদিসের সারসংক্ষেপ,,,,,, ওয়ায়িল
ইবনে হুজুর রাঃ থেকে বর্ণিত।
……………….. তারপর তিনি (রাসুল সাঃ) তার
ডান হাত রাখলেন বাম হাতের উপর
অর্থাৎ এক কব্জি অন্য কব্জির উপর কিংবা
এক হাত অন্য হাতের উপর রাখলেন।
.
[সুনানে নাসাঈ শরীফ,২য় খন্ড,হাদিস নং
৮৯২(ইঃফাঃ)]
.
এখানে কোথাও ( ﻋﻠﻰ ﺻﺪﺭﻩবুকের
উপর) কথাটি নাই !
.
স্ক্রিনসট দেখুন
.
.
মোটকথা, বুকের উপর হাত বাধার কথা
কোনো সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়
নাই!!!
————————————————
———————————
.
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবার নাভীর
নিচে হাত বাধার হাদীস সম্পকে একটি
চ্যালেন্জের জবাব
==============================
=============
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা তে
নাভীর নিচে হাত বাধার বিষয়ে একটি
হাদীস রয়েছে,
ﻋ َْﻦ ﻋ َْﻠﻘَ َﻤﺔَ ﺑ ِْﻦ، ﻋ َْﻦ ُﻣﻮ َﺳﻰ ﺑ ِْﻦ ُﻋ َﻤﻴ ٍْﺮ،ٌ َﻭ ِﻛﻴﻊ:َﺣ َّﺪﺛَﻨَﺎ
ﻲ ُ « َﺭﺃَﻳ:ﺎﻝ
َّ ِْﺖ ﺍﻟﻨَّﺒ َ َ ﻗ، ﻋ َْﻦ ﺃَﺑِﻴ ِﻪ،َﻭﺍﺋِ ِﻞ ﺑ ِْﻦ ﺣُﺠْ ٍﺮ
ُﺿ َﻊ ﻳَ ِﻤﻴﻨَﻪ َ ﺻﻠَّﻰ ﻪﻠﻟﺍُ َﻋﻠَ ْﻴ ِﻪ َﻭ َﺳﻠَّ َﻢ َﻭ
َ
ﺼﻼَ ِﺓ ﺗَﺤْ ﺖَ ﺍﻟ ُّﺴ َّﺮ ِﺓ َّ َﻋﻠَﻰ ِﺷ َﻤﺎﻟِ ِﻪ ﻓِﻲ ﺍﻟ.»
অর্থ:আমার নিকট ওকী বর্ণনা
করেছেন, তিনি হযরত মুসা বিন উমাইর
থেকে, তিনি হযরত আলকমা ইবনে
ওয়ইল থেকে,তিনি তার পিতা ওয়াইল
ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণনা
করেছেন, তিনি বলেনে, আমি রাসূল
স. কে দেখেছি, তিনি নামাযে তার ডান
হাতকে বাম হাতের উপর নাভীর নিচে
রেখেছেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, খ.৩,
পৃ.৩২১-৩২১, তাহকীক, শায়খ মুহাম্মাদ
আওযামা। মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবার
কোন কোন নুসখায় নাভীর নিচে
শব্দটি নেই। একারণে অনেক
আহলে হাদীস উক্ত হাদীসের
উপর সমালোচনা ও চ্যালেন্জবাজি
করে থাকেন।
এক গাইরে মুকাল্লিদ চ্যালেন্জ
করেছেন,
সে এও বলেছে ১২০০ হি এর আগে
কোন কিতাবে যদি মুসান্নাফে ইবনে
আবি শাইবার হাদীসটি দলিল হিসেবে
দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে সে
নাভীর নিচে হাত বাধা শুরু করবে।”
কথাটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে
হয়েছে। আল-হামদুলিল্লাহ কোন
গাইরে মুকাল্লিদ কোথায় হাত বাধলো
তা নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই এবঙ
সে নাভীর নিচে হাত বাধবে কি না,
সেটাও আমাদের কোন আগ্রহের
বিষয় নয়। তবে, তার চ্যালেন্জের
কারণে একটা সত্য যেন চাপা না থাকে
এবঙ সঠিক সুন্নাহের অনুসারীগণ
যেন তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না
হয়, সেজন্য এখানে তার দাবীর
অসারতা আলোচনা করা হলো।
ইউসুফ ইবনে আব্দুল লতিফ ইবনে
আব্দুল বাকী ইবনে মাহমুদ আল-
হাররানী ৭৪১ হি: তে ইবনে আবি শাইবার
একটি নুসখা লেখেন। এই নুসখায় তিনি
নাভীর নিচে হাত বাধার কথাটি উল্লেখ
করেছেন। নিচে উক্ত নুসখার ছবি
দেয়া হলো,
.
<p
.
উক্ত গাইরে মুকাল্লিদের চ্যালেন্জ
ছিলো, ১২০০ হি. এর আগে উক্ত
হাদীস দ্বারা কেউ দলিল দিয়েছে কি
না। ইমাম কাসেম ইবনে কুতলুবগা আত-
তা’রীফ ওয়াল আখবার বিতাখরিজি
আহাদিসিল ইখতিয়ারে উক্ত হাদীস দ্বারা
দলিল পেশ করেছেন। ইমাম কাসেম
ইবনে কুতলুবুগা রহ. এর জন্ম ৮০২ হি:
এবঙ মৃত্যু ৮৭৯। অর্থাৎ আপনার কাঙ্খিত
১২০০ হি: এর পূর্বে ইমাম আব্দুল
লতীফ ইবনে আব্দুল বাকী প্রায়
সাচে চারশ বছর পূর্বে এবঙ ইমাম
কাসেম ইবনে কুতলুবগা প্রায় সাড়ে
তিন শ বছর পূর্বে এটা লিখেছেন
এবঙ এটা দিয়ে দলিল দিয়েছেন।
নাভীর নিচের কথাটি আল্লামা আবেদ
সিন্ধি রহ. এর নুসখাতেও বিদ্যমান
রয়েছে। নিচে মূল নুসখার স্কিনশট
দেয়া হলো,
.
<p
.
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবার মূল
নুসখাতে যখন বিষয়টি রয়েছে, তখন
গাইরে মুকাল্লিদদের পক্ষ থেকে
উক্ত হাদীসের ব্যাপারে নিজেদের
মতের বিরোধী হওয়ার কারণে
মনগড়া অপবাদ আরোপ কোনভাবেই
সঙ্গত নয়।
শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা মুসান্নাফে ইবনে
আবি শাইবার তাহকীক করার সময এই
হাদীসে উপর তিন পৃষ্ঠার একটি টীকা
লিখেছেন এবঙ মুসান্নাফে ইবনে
আবি শাইবাতে উক্ত শব্দটি রয়েছে, তা
প্রমাণ করেছেন। নিচে উক্ত
আলোচনার স্ত্রিনশ্ট দেয়া হলো।
.
<p
.
<p
.
.
আল্লাহ পাক আমাদেরকে অমূলক
চ্যালেন্জবাজি থেকে বাচার তৌফিক দান
করুন।আমিন।
————————————————
————————————
নামাজে হাত বাধা : একটি হাদিস > দালিলিক ও
তাত্ত্বিক তাহকিক :
==============================
===========
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা তে
নাভীর নিচে হাত বাধার বিষয়ে একটি
হাদীস রয়েছে,
ﻋ َْﻦ ﻋ َْﻠﻘَ َﻤﺔَ ﺑ ِْﻦ، ﻋ َْﻦ ُﻣﻮ َﺳﻰ ﺑ ِْﻦ ُﻋ َﻤﻴ ٍْﺮ،ٌ َﻭ ِﻛﻴﻊ:َﺣ َّﺪﺛَﻨَﺎ
ﻲ ُ » َﺭﺃَﻳ:ﺎﻝ
َّ ِْﺖ ﺍﻟﻨَّﺒ َ َ ﻗ، ﻋ َْﻦ ﺃَﺑِﻴ ِﻪ،َﻭﺍﺋِ ِﻞ ﺑ ِْﻦ ﺣُﺠْ ٍﺮ
ﺿ َﻊ ﻳَ ِﻤﻴﻨَﻪُ َﻋﻠَﻰ ِﺷ َﻤﺎﻟِ ِﻪ ﻓِﻲ َ ﺻﻠَّﻰ ﻪﻠﻟﺍُ َﻋﻠَ ْﻴ ِﻪ َﻭ َﺳﻠَّ َﻢ َﻭ
َ
ﺼﻼَ ِﺓ ﺗَﺤْ ﺖَ ﺍﻟ ُّﺴ َّﺮ ِﺓ
َّ ﺍﻟ.»
অর্থ:আমার নিকট ওকী বর্ণনা
করেছেন, তিনি হযরত মুসা বিন উমাইর
থেকে, তিনি হযরত আলকমা ইবনে
ওয়ইল থেকে,তিনি তার পিতা ওয়াইল
ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণনা
করেছেন, তিনি বলেনে,
আমি রাসূল স. কে দেখেছি, তিনি
নামাযে তার ডান হাতকে বাম হাতের উপর
নাভীর নিচে রেখেছেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, খ.৩,
পৃ.৩২১-৩২১,
তাত্ত্বিক তাহকিক :
এখন মুসান্নিফের নুসখাগুলোতে
উক্ত হাদিস খানা মজুদ থাকলেও কিছু
নুসখাতে . ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ.শব্দটি নেই । এবং
কিছু নুসখায় . ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ. শব্দটি আছে ।
মুসান্নিফের ৬টি নুসখায় . ﺗﺤﺖ
ﺍﻟﺴﻴﺮۃ.আছে
১.ইমাম আবেদ আস-সিন্ধী রহঃ +
.
৪.ইমাম মুরতাযা আযাবিদী রহঃ
৫.আল্লামা আঃ কাদির ইবনে আবু বকর আস-
সিদ্দিক রহঃ
৬.আল্লামা মুহাম্মদ আকরাম সিন্ধী রহঃ
*#* যেসব নুসখায় উক্ত শব্দটি নেই ,
তারমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য নুসখা হচ্ছে
নিমাভী হানাফী রহ: , হায়াত সিন্ধী রহঃ ইত্যাদি ।
পর্যালোচনা>
এখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে , মোট ৬টি
নুসখায় . ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ. শব্দটি আছে (এর
মধ্যে ৩টির শট দেয়া আছে) । এখন
তর্কে র খাতিরে মেনেও নেই যে ,
যে কেউ এই নুসখাগুলতে . ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ.
শব্দটি যোগ করেছে , ত কে
করেছে ??? ৬টি নুসখা কি একজনের !!!
এটা একটা অহেতু ক , নির্লজ্জ ও
খামখেয়ালীপণা অপবাদ ছাড়া কিছু নয় ।
কেননা , প্রায় প্র্যতেক হাদিসের
কিতাবেই এরকম নজির দেখা যায় এবং এটা
একটা সাধারণ বিষয় । যেমন : ইমাম বুখারী রহ:
এর লিখিত কিতাবের যতগুলো নুসখার
সংকলকগণের নাম পাওয়া যায় , তার মধ্যে
ইমাম ফিরাবী রহঃ এর নুসখায় “কিতাবুল তারাবিহ”
নামক একটা অধ্যায় পাওয়া যায় , অধিকিন্তু প্রায়
১১জন ইমামের নুসখায় তা পাওয়া যায় না !!
সুতরাং , এটা হাস্যকর যুক্তি । এটা মিথ্যাচার-
অপবাদ আরোপ ছাড়া কিছু ই নয় । {যা নিচে
আমরা সালফে সলেহীনদের উক্তি
দিয়ে প্রমাণ করব }
“যারা আমানতের ধারক-বাহক , আমানতের
স্বর্ণযুগের উজ্জ্বল-দীপ্তমান
আকাশের সূর্য
তাদের প্রতি চামচিকাদের থাকবেই নজর ,
করতে বদনাম- তারা থাকবেই সর্বদা
অধ্যৈর্য”
স্পষ্টই প্রমাণ হচ্ছে “. ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ.”
মুসান্নিফের পান্ডু লিপিতে ছিল ।
এমনকি মদিনা মুনাওয়ারার বিখ্যাত ফকিহ ও আলিম
শায়খ আওয়ামা হালাবী (দাঃবাঃ) মুসান্নিফের
প্রাচীন পান্ডু লিপি ঘেটে দেখেছেন
যে , সেখানে ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ. আছে । এবং
তিনি তাহকিকসহ পেশ করেছেন তার
কিতাবে । সেখানে মূল পান্ডু লিপির
স্ক্রীনশটও রয়েছে , যা ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ
কে প্রমাণ করে ।
.
অর্থ্যাৎ মুসান্নিফের ৬টি পান্ডু লিপিতে
থাকা এবং শায়খ আওয়ামার দলিল প্রমাণ
করে “ ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃঅবশ্যই ছিল ।
َ َْﺲ ﻟَﻚَ ﺑِ ِﻪ ِﻋ ْﻠ ٌﻢ ﺇِ َّﻥ ﺍﻟ َّﺴ ْﻤ َﻊ َﻭ ْﺍﻟﺒ
ﺼ َﺮ ُ َﻭﻻَ ﺗَ ْﻘ
َ ﻒ َﻣﺎ ﻟَﻴ
ًَﻭ ْﺍﻟﻔُﺆَ ﺍ َﺩ ُﻛﻞُّ ﺃُﻭﻟـﺌِﻚَ َﻛﺎﻥَ َﻋ ْﻨﻪُ َﻣ ْﺴ ُﺆﻭﻻ
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান
নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান,
চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই
জিজ্ঞাসিত হবে। ১৭;৩৬
{আমরা দেখাব যে , কোন নবী-
রাসূল , সাহাবা , তাবেঈ , মুহাদ্দিস,ফকিহ
অথবা মুফাসসির কেউই অপবাদের কবল
থেকে বাদ পড়েন নি । সুতরাং শাইখ
আওয়ামা হালাবী হযুরের আর কি
দোষ !! }
যারা বিনা দলিলে শায়খ আওয়ামার উপর
অপবাদ লাগাচ্ছে , তাদের উপর আল্লহ
এর লা`ণত বর্ষিত হোক ।
َ ﻗُﺘِ َﻞ ْﺍﻟﺨَ ﺮَّﺍﺻُﻮﻥঅনুমানকারীরা ধ্বংস হোক,
৫১:১০
Point-2
———————
এখন , এই কথা শতভাগ সত্যি যে , ”
মুসান্নিফের সব নুসখায় ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃ
শব্দটি হাদিসের সাথে নেই । যারা
সত্যভাষী তারা কখনই সত্যকে
অস্বীকার করে না , অবলীলায়
স্বীকার করে থাকে । যেমন ,
হাদিসটির ভাষ্যের উপর মাঝহাব তথা
হানাফীদের আমল থাকা সত্যেও
নিমাভী হানাফী রহঃ নিজের কাছের
নুসখায় যা দেখেছেন , তাই তার
কিতাবে উল্লেখ্য করেছেন ।
এমনকি ভারতবর্ষের তৎকালিন নুসখায়
ﺗﺤﺖ ﺍﻟﺴﻴﺮۃশব্দটি না থাকাও হানাফী সকল
আলিম স্বীকার করেছেন , এমনকি
ত্বকী উসমান হযুরও এভাবেই বর্ণনা
করেছেন ।
আল্লহ তাআলা আহফীদেরকেও
চালবাজি পরিহার করে সত্যবাদীদের
সাথে চলার তৌওফিক দান করুন , আমিন ।
ْ ُﻮﺍ ﻪّﻠﻟﺍ َ َﻭ ُﻛﻮﻧ
ﻮﺍ َﻣ َﻊ ْ ُﻮﺍ ﺍﺗَّﻘ
ْ ُﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّ ِﺬﻳﻦَ ﺁ َﻣﻨ
ﺍﻟﺼَّﺎ ِﺩﻗِﻴﻦ
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর
এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। ৯;১১৯
উসূলে হাদিস ;
উসূলে হাদিসের পরিভাষায় , এই ধরণের
হাদিসগুলোকে বলা হয় “মুজতারিব হাদিস
” আর শুধু মুজতারিব হাদিস দলিল হিসেবে
গণ্য নয় । তবে এর সাথে যদি , আরও
হাদিস+সাহাবদের আমল+তাবেঈদের
আমল থাকে , তবেই এই মুজতারিব
হাদিসে ই দলিল হয়ে যায় !!!
{উল্লেখ্য যে, আমাদের এই
আলোচনার আলোচ্য বিষয় এটা নয়
যে, “এই হাদিস হুজ্জাত কিনা” । তাই এ
ব্যপারের পরর্বর্তীতে আলোচনা
করা হবে }
তবে উলূমূল হাদিসের মুহাদ্দিসেনে
কেরাম এবং রিজাল শাস্ত্রের ইমামগণ
এই ক্ষেত্রে যাচাই করে দেখেন ”
মূল হাদিসের সাথে নুসখায় বাড়তি সংযজিত
শব্দ রয়েছে , সেটাসহ হাদিসটি সহিহ
কিনা ” ……………
এই প্রেক্ষিতে আমরা দেখব , রিজাল
শাস্ত্রের ইমামগণ কি বলেছেন ???
” ১. তিরমিযী শরিফের ভাষ্যকার আবুত
তায়্যিব সিন্ধী রহ; হাদিসটিকে মজবুত ও
শক্তিশালী বলেছেন ।
২.আল্লামা আবেদ সিন্ধী রহঃও
হাদিসটিকে মজবুত ও শক্তিশালী
বলেছেন ।
৩.হাফেজ যাইনুদ্দিন কাসিম ইবনে
কুতলুবুগা রহ; বলেছেন ﻝ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻗﺴﻢ
ﺑﻦ ﻗﻄﻠﻮﺑﻐﺎ ﻓﻲ ﺗﺨﺮﻳﺞ ﺍﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻻﺧﺘﺎﺭ ﺷﺮﺡ
ﻫﺬﺍ ﺳﻨﺪ ﺟﻴﺪ: ” ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ
অর্থ্যাৎ রিজাল শাস্ত্রের ইমামগণের
নিকট হাদিসটি সহিহ ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
~~
point-3
“”””””””””””””
এখন রিজাল শাস্ত্রের এক ইমামের
উপর আহাফিরা প্রশ্ন তু লেছেন যে ,
” ইবনে কুতলুবুগা রহঃ (৮০২-৮৭৯) সিকাহ
নয় ”
প্রমাণস্বরুপ ইমাম ইব্রাহিম বাকাঈ রহঃ(৮৮৫)
এর উক্তি তুলে এনেছেন , অর্থ্যাৎ
কাসিম ইবনে কুতলুবগা মিথ্যাবাদী ছিল
” {তাওযীহুল আহকাম ১/৩১৫ , যাওউল
লামী -ইমাম সাখাবী ; ৬/১৮৬}
পর্যালোচনা>স্পষ্টই দেখছেন যে
, এখানে জরাহ এর কোন ব্যাখ্যা দেয়া
হয় নি । এবং রিজাল শাস্ত্রের স্বসিদ্ধ
নিয়ামানুযায়ী ,
আল্লামা আব্দুল হাই লখলবী রহঃ
বলেন : “ব্যখ্যাহীন জারহর চেয়ে
তা’দীলই অগ্রগন্য “- যফারুল
আমানী /২৮১
এছাড়াও……………
এখন আমরা দেখব , ইবনে কুতলুবুগা
রহঃ, ইব্রাহিম বাকাঈ রহঃ এবং ইমাম সাখাবী রহ
; মধ্যে কি সম্পর্ক ছিল ??? ওনাদের
জম্ম-মৃত্যু সালের বিবরণ
১.যাইনুদ্দিন কাসিম ইবনে কুতলুবুগা রহ;
(৮০৬-৮৭৯)
২.ইব্রাহিম বাকাঈ রহঃ (৮০৯- ৮৮৫)
৩.ইমাম সাখাবী রহঃ (৮৩১-৯০২)
অর্থ্যাৎ তারা ৩জন ই সমসাময়িক ছিল !!!
একই যুগের মানুষ ছিল !!! এখন , জরাহ-
তাদীল এর স্বসিদ্ধ উসূল অনুযায়ী , ”
একই যুগের ইমামরা যে পরস্পর জরাহ
করেছেন , তা সর্বসম্মতিক্রমে
গ্রহণযোগ্য নয় ” !!!!
প্রমাণ >
আল্লামা আব্দুল হাই লাখনবী রহঃ
উল্লেখ্য করেন , “জরাহ যদি
স্বদলপ্রীতি , গড়ামী , পারস্পরিক
বিদ্বেষ-শত্রুতা ইত্যাদির কারণে হয় ,
তাহলে তা গ্রহণযোগ্য নয় ।
প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের জরাহ
থেকে খুব কম মানুষই রক্ষা পেয়ে
থাকে ” {আর রাফাউ অয়াত তাকমিলু ঃ১৮২ }
হাফেজ যাহাবী রহঃ বলেন , ”
সমসাময়িকরা এঁকে অপরকে যে জরাহ
করেন , সেটার কোন গুরুত্ব নেই ।
বিশেষ করে যখন জানা যায় যে ,
জরাহটা মূলত পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ-
শত্রুতা , প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিংবা
স্বদলপ্রীতি কারণে হচ্ছে । আর
এমন জরাহ থেকে কেবল সেই
রক্ষা পায় , যাকে আল্লহ বিশেষভাবে
রক্ষা করেন । নবী-রাসূল ও সিদ্দিকগণ
ব্যতিত আমার মতে কেউই এর
থেকে বাচতে পারে নি । যদি ইচ্ছা করি
, তাহলে এ বিষয়ে অনেক অনেক
দফতর লিখে ফেলতে পারব ইং শা
আল্লাহ্ ।” {মীযানুল ইতেদাল খঃ১
পৃঃ৫২}
ইমাম সুবুকী রহঃ বলেন , ” যদি আমরা
সকল ক্ষেত্রে জরাহকে অগ্রগণ্য
করি , তাহলে আমাদের কোন ইমামই
নিরাপদ থাকতেপারবেন না । কেননা
প্রায়ই সকল ইমামের ব্যপারে
দোষারোপকারীরা দোষ
আরোপ করেছে । আর এই অযথা
দোষারোপ করারকারণে অনেকে
ধ্বংস হয়েছে ” (তবাকতু শাফিয়ীয়্যাহ
১/১৮৮ পৃঃ )
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালীন রহঃ
বলেন ” কোন কোন ইমাম
ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে জরাহ
করেছেন , আবার কেউ কেউ
প্রতিদ্বন্দ্বিতামুলক মনোভাব থেকে
জরাহ করেছেন , কেউ কেউ আবার
নিজের চেয়েও বড় ও উর্ধের
রাবিকে জরাহ করেছেন ।
তিনি বলেন ﻭ ﻛﻞ ﻫﺬﺍ ﻻ ﻳﻌﺘﺒﺮএগুলো
সবই অগ্রহণযোগ্য ” {মুকাদ্দামা ফতহুল
বারী :৪৪৬}
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
এখন জেনে নেই , ১.যাইনুদ্দিন কাসিম
ইবনে কুতলুবুগা রহ; ২.ইব্রাহিম বাকাঈ রহঃ
৩.ইমাম সাখাবী রহঃ ,
তিনজনই হাফেজ ইবনে হাজার
আসকালীন রহঃ এর ছাত্র । এবং ইমাম
সাখাবী রহঃ এরও ওস্তাদ কাসিম রহঃ ।
এখন আমরা দেখব , যাইনুদ্দিন কাসিম
ইবনে কুতলুবুগা রহ; এর জীবনী :
নাম> কাসিম ,পিতা > কুতলুবুগা (অর্থ
বরকতময় পুরুষ) , উপাধী > যাইনুদ্দিন ,
উপনাম > আবুল আদল , জম্মস্থান >
কায়রো , মিশর । {৮০৬-৮৭৯হিঃ}
* ছোটকাল অত্যন্ত জ্ঞানী ও
মেধাবী ছিলেন । বড় হয়ে তিনি
মিশরের যুগশ্রেষ্ঠ আলিম ও
ইমামদের কাছ থেকে ইলিম অর্জন
করেন । তাদের মধ্যে ইবনুল হুমাম ও
ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ অন্যতম ।
তার ব্যপারে আয-যওউল লামি এর লিখক
ও তার প্রসিদ্ধছাত্র ইমাম সাখাবী রহঃ
বলেন , (+)
“তিনি হলেন এক মহান ব্যক্তিত্ব , বিভিন্ন
শাস্ত্রে তার পারদর্শীতা আছে , তিনি
আরবী সাহিত্যে অগাধ জ্ঞান রাখেন ।
মাযহাবের দলিল প্রমাণ প্রচু র উপস্থাপন
করতে পারেন এবং মাযহাবের খুটিনাটি
দুর্লভ বিষয় তার আয়ত্বে আছে । তিনি
, এই এই শাস্ত্রে অগ্রগামী আর তিনি
ছিলেন সুমিষ্টভাষী । (আয যওউল লামি
৬/১৮৮)
.
ইমাম কাসিম রহঃ সম্পর্কে তার ওস্তাদ যুগের
মহান ইমাম ইবনে হাজার রহ; বলেন ,(+) “তিনি
হলেন শাইখে কামেল (পরিপুর্ণ শাইখ ) ,
মুহাদ্দিসে কামেল (পরিপুর্ণ একজন
মুহাদ্দিস ) , তিনি যুগের অন্যন্য ব্যক্তিত্ব
” (আয যওউল লামি ৬/১৮৫)
কিছু কাল পরে আবারো ইবনে হাজার রহঃ
বলেন , (+) ” তিনি হলেন ইমাম , আল্লামা ,
মুহাদ্দিস , ফকিহ ও হাফেয ” (আয যওউল
লামি৬/১৮৫)
উসূল > . উলুমুল হাদিসের সাথে যাদের সামান্য সম্পর্ক আছে , তারা জানেন
কারো ব্যপারে “ইমাম , শায়েখে কামেল , মুহাদ্দিস , হাফেয ইত্যাদি শব্দ ”
তাদিলের সর্বোচ্চ মান বুঝায় ।
বড়ই পরিতাপের বিষয় যে , আমাদের কিছু বন্ধু , ইমাম সাখাবীর “যাওঊল লাম ”
{আসল নাম ‘আয-যাওউল লামি } থেকে ইমাম কাসিম সমন্ধে জরাহ পেশ
করলেন কিন্তু সেখান থেকে তার উস্তাযের তাদিল ভু লে গেলেন !!!!
অর্থ্যাৎ ইমাম কাসিম রহঃ ছিলেন , একজন যুগশ্রেষ্ঠ ফকিহ , একজন বড় মাপের
মুহাদ্দিস ও আরবী সাহিত্যিক ।
সুতরাং , ইমাম যাইনুদ্দিন কাসিম ইবনে কুতলুবুগা রহ; ১০০% সিকাহ !!!
==================================
নামাযে হাত বাঁ ধা ও নাভীর নিচে বাঁ ধাঃ ************************************ প্রশ্ন :
কিছু দিন আগে আমার এক বন্ধুর সাথে নামাযের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা
হচ্ছিল। তিনি বললেন, ‘নামাযে বুকের উপর হাত রাখা সুন্নাহ। হাদীস শরীফে এই
নিয়মটিই আছে। অন্য কোনো নিয়ম নেই। সহীহ বুখারীতে সাহল ইবনে সাদ রা.
থেকে বর্ণিত হাদীসে, সহীহ ইবনে খুযায়মায় ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত
হাদীসে এবং মুসনাদে আহমদে হুলব আতত্বয়ী রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে বুকের
উপর হাত বাঁ ধার কথা আছে। এছাড়া তাউস রাহ. থেকে একটি মুরসাল হাদীসে
এবং হযরত আলী রা. থেকে সূরায়ে কাওসারের তাফসীরে নামাযে বুকের উপর
হাত বাঁ ধার কথা বর্ণিত হয়েছে।
‘পক্ষান্তরে নাভীর নীচে হাত বাঁ ধার কোনো প্রমাণ সহীহ হাদীসে নেই। এ সম্পর্কে
যত হাদীস ও আছার আছে সব জয়ীফ।’
আমার বন্ধুটি একজন আলেম। আমারও উলূমুল হাদীস বিষয়ে কিছু পড়াশোনা
আছে। তার সাথে আলোচনার পর আমি বিষয়টির উপর কিছু পড়াশোনাও
করেছি।
নামাযে হাত বাঁ ধার বিষয়ে একটি পূর্ণ াঙ্গ আলোচনা এবং উপরোক্ত বিষয়ে ইলমী
সমাধান আপনাদের নিকট কামনা করছি। আল্লাহ তাআলা আপনাদের জাযায়ে
খায়ের দান করুন।
পল্লবী, ঢাকা-১২১৬
উত্তর : নামাযে হাত বাঁ ধা সুন্নত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
নামাযে হাত বেঁধেছেন। তাঁ র ডান হাত থাকত বাম হাতের কব্জির উপর। সাহাবায়ে
কেরামকে এভাবেই নামায পড়ার আদেশ করা হত এবং তাঁ রাও এভাবেই হাত বেঁধে
নামায পড়তেন।
নামাযে হাত বাঁ ধা
হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাকবীর দিয়ে দুই হাত তু ললেন। রাবী বলেন, দুই কান বরাবর। এরপর পরিধানের
চাদর গায়ে জড়িয়ে নিলেন, এরপর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন …।
وصف، أنه رأى النبي صلى هللا عليه وسلم رفع يديه حين دخل في الصالة كبر: عن وائل بن حجر
ثم وضع يده اليمنى على اليسرى، ثم التحف بثوبه،… همام حيال أذينه
হযরত হুলব আতত্বয়ী রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাদের ইমাম হতেন এবং তাঁ র ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন।
حديث حسن: رواه الترمذي وقال.كان رسول هللا صلى هللا عليه وسلم يؤمنا فيأخذ شماله بيمينه.
হযরত সাহল ইবনে সাদ রা. বলেন, লোকদেরকে আদেশ করা হত, পুরুষ যেন
নামাযে ডান হাত বাম বাহুর উপর রাখে।’-সহীহ বুখারী ১/১০৪
ال: قال أبو حاتم.كان الناس يؤمرون أن يضع الرجل اليد اليمنى على ذراعه اليسرى في الصالة
أعلمه إال ينمى ذلك إلى النبي صلى هللا عليه وسلم.
হযরত জাবির রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন
নামাযরত ব্যক্তির নিকট দিয়ে গমন করছিলেন, যিনি ডান হাতের উপর বাম হাত
রেখে নামায পড়ছিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত
খুলে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫০৯০
مر رسول هللا صلى هللا عليه وسلم برجل وهو يصلي قد وضع يده اليسرى على اليمنى فانتزعها
رجاله رجال الصحيح: ٢/٢۷٥ قال الهيثمي في مجمع الزوائد.ووضع اليمنى على اليسرى.
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, আমি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘আমরা নবীগণ আদিষ্ট হয়েছি দ্রুত (সময়
হওয়ামাত্র) ইফতার করতে, বিলম্বে (সময়ের শেষের দিকে) সাহরী খেতে এবং
নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতে।’
إنا معاشر األنبياء أمرنا بتعجيل فطرنا وتأخير سحورنا: سمعت نبي هللا صلى هللا عليه وسلم يقول
رجاله رجال:٢۷٥ /١ قال الهيثمي في مجمع الزوائد.وأن نضع أيماننا على شمائلنا في الصالة
الصحيح.
হারিছ ইবনে গুতাইফ রা. বলেন, ‘আমি এটা ভু লিনি যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখতে দেখেছি, অর্থাৎ
নামাযে।’
مهما رأيت نسيت لم أنس أني رأيت رسول هللا صلى هللا عليه وسلم وضع يده اليمنى على اليسرى
في الصالة: يعني.
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৫৬; মুসনাদে আহমদ ৪/১০৫, হাদীস :
১৬৯৬৭-৬৮, ২২৪৯৭
মোটকথা, নামাযে হাত বেঁধে দাঁ ড়ানো সুন্নাহ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক সাহাবী তা বর্ণনা করেছেন। এ কারণে নামাযে হাত ছেড়ে
দাঁ ড়ানো, যা মালেকী মাযহাবের কোনো কোনো ইমাম গ্রহণ করেছেন, মূল সুন্নাহ
নয়।
মালেকী মাযহাবের প্রাচীন গ্রন্থ ‘‘আলমুদাওয়ানাতু ল কুবরা’’য় আছে, আবদুর
রহমান ইবনুল কাসিম রাহ. ইমাম মালিক রাহ. থেকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের
উপর রাখার বিষয়ে বর্ণনা করেছেন যে, ‘ফরয নামাযে এই নিয়ম আমার জানা
নেই এবং তিনি তা অপছন্দ করতেন। তবে নফল নামাযে কিয়াম যখন দীর্ঘ হয়
তখন হাত বাঁ ধতে বাঁ ধা নেই।’
ال أعرف ذلك في الفريضة وكان: وقال مالك في وضع اليمنى على اليسرى في الصالة قال: قال
ولكن في النوافل إذا طال القيام فال بأس بذلك يعين به نفسه،يكرهه.
قال سحنون عن ابن وهب عن سفيان الثوري عن غير واحد من أصحاب رسول هللا صلى هللا عليه
وسلم أنهم رأوا رسول هللا صلى هللا عليه وسلم واضعا يده اليمنى على اليسرى في الصالة.
-আলমুদাওয়ানাহ ১/৭৬
ইমাম মালেক রাহ.-এর অন্য অনেক শাগরিদ তাঁ র থেকে হাত বাঁ ধার নিয়ম বর্ণনা
করেছেন। মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত মনীষীদের অনেকেই তাঁ র এই
রেওয়ায়েতকেই বিশুদ্ধ ও অগ্রগণ্য বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
তদ্রূপ কাযী ইয়ায মালেকী রাহ. থেকে বর্ণনা করা হয়েছে যে, আমাদের শায়খগণ
ডান হাতের পাতা বাম হাতের কব্জির উপর মুঠ করার নিয়মই গ্রহণ করেছেন।’
ইমাম কুরতু বী মালেকী রাহ.ও (৬৭১ হি.) হাত বাঁ ধার রেওয়ায়েতকে অগ্রগণ্য
সাব্যস্ত করে বলেন, ‘এটিই সঠিক। কারণ হযরত ওয়াইল রা. ও অন্যান্য সাহাবী
বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান হাত বাম
হাতের উপর রেখেছেন।’ -আলজামি লিআহকামিল কুরআনিল কারীম ২০/১৫০
এ প্রসঙ্গে মালেকী মাযহাবের বিখ্যাত মনীষী ইমাম ইবনে আবদুল বার রাহ. (৪৬৩
হি.) শক্তিশালী আলোচনা করেছেন। তিনি হাত বাঁ ধার নিয়মকে শুধু অগ্রাধিকারই
দেননি; বরং এর বিপরীতে ইমাম মালেক রাহ. থেকে যা কিছু বর্ণনা করা হয় তা
দ্ব্যর্থহীন ভাষায় খন্ডনও করেছেন। তাঁ র আলোচনার কিছু অংশ মূল পাঠসহ তু লে
দেওয়া হল।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে (নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা) নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ভিন্ন কিছু বর্ণিত হয়নি এবং কোনো সাহাবী এ নিয়মের
বিরোধিতা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। শুধু আবদুল্লাহ ইবনুয যুবায়ের রা.
সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়, তিনি নামাযে হাত ছেড়ে রাখতেন, তবে এর বিপরীত
কথাও তাঁ র থেকে বর্ণিত হয়েছে। ইতিপূর্বে আমরা তাঁ র বক্তব্য উল্লেখ করেছি যে,
‘সুন্নাহ হচ্ছে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।’
-আততামহীদ ২০/৭৪-৭৫
তিনি আরো বলেন, ‘ইবনুল কাসিম ছাড়া অন্যরা ইমাম মালেক রাহ. থেকে বর্ণনা
করেছেন যে, ফরয-নফল কোনো নামাযেই হাত বাঁ ধতে বাধা নেই। আর এটিই তাঁ রা
মদীনাবাসী শাগরিদদের বর্ণনা।’
… وهي رواية المدنيين، ال بأس بذلك في الفريضة والنافلة: وقال عنه (أي عن مالك) غير ابن القاسم
عنه.
-প্রাগুক্ত
এরপর কোনো কোনো তাবেয়ী থেকে নামাযে হাত ছেড়ে রাখার যে বর্ণনা পাওয়া
যায় সে সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি বলেন, ‘এই হচ্ছে কতিপয় তাবেয়ীর
(আমলের) কিছু বিবরণ। তবে তা (আলোচিত সুন্নাহর) খিলাফ ও বিরোধিতা নয়।
কারণ তাদের কেউ (হাত বাঁ ধা) অপছন্দ করতেন এমনটা পাওয়া যায় না। আর
পাওয়া গেলেও তা দলীল হিসেবে গ্রহণ করা যেত না। কারণ সুন্নাহর অনুসারীদের
জন্য সুন্নাহই হচ্ছে দলীল। আর যারা এর বিরোধিতা করে তাদের বিরুদ্ধেও দলীল
হচ্ছে সুন্নাহ, বিশেষত যে সুন্নাহয় কোনো সাহাবীর ভিন্নমত নেই।
، ألنه ال يثبت عن واحد منهم كراهية،فهذا ما روي عن بعض التابعين في هذا الباب وليس بخالف
وال، ومن خالفها فهو محجوج بها، ألن الحجة في السنة لمن اتبعها،ولو ثبت ذلك ما كانت فيه حجة
سيما سنة لم يثبت عن واحد من الصحابة خالفها.
-প্রাগুক্ত ২০/৭৬
তিনি আরো বলেন, ‘(হাত বাধার ক্ষেত্রে) ফরয-নফলে পার্থক্য করার কোনো যুক্তি
নেই, যদিও কেউ বলে থাকেন যে, হাত বাঁ ধার নিয়মটি নফল নামাযের ক্ষেত্রে,
ফরযের ক্ষেত্রে নয়। কারণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সাধারণত নফল নামায ঘরে আদায় করতেন। সুতরাং এটা যদি তাঁ র ঘরের
নামাযের নিয়ম হত তাহলে তা বর্ণনা করতেন তাঁ র স্ত্রীগণ। কিন্তু তাঁ রা এ বিষয়ে
কিছু ই বর্ণনা করেননি। যাঁ রা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন তাঁ রা তাঁ র নিকট
রাত্রিযাপন করতেন না এবং তাঁ র ঘরেও প্রবেশ করতেন না। তাঁ রা তো তা-ই বর্ণনা
করেছেন, যা তাঁ কে করতে দেখেছেন তাঁ র পিছনে ফরয নামায আদায়ের সময়।’
ألن أكثر، ولو قال قائل إن ذلك في الفريضة دون النافلة،وكذلك ال وجه للتفرقة بين النافلة والفريضة
ولو فعل ذلك في بيته لنقل عنه ذلك أزواجه،ما كان يتنفل رسول هللا صلى هللا عليه وسلم في بيته ليال
ومعلوم أن الذين رووا عنه أنه كان يضع يمينه على يساره في صالته،ولم يأت عنهن في ذلك شيء
، وإنما حكوا عنه ما رأوا منه في صالتهم خلفه في الفرائض، وال يلج بيته،لم يكونوا ممن يبيت عنده
وهللا أعلم.
-প্রাগুক্ত ২০/৭৯
তো এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
নামাযে হাত বাঁ ধতেন এবং সাহাবায়ে কেরামও হাত বাঁ ধতেন। এখন প্রশ্ন হল,
কোথায় তাঁ রা হাত বাঁ ধতেন? মৌখিক বর্ণনায় হাত বাঁ ধার মূল প্রসঙ্গ যত
পরিষ্কারভাবে এসেছে কোথায় বাঁ ধতেন তা সেভাবে আসেনি। কেন আসেনি?
আসার প্রয়োজন হয়নি। কারণ সবাই হাত বাঁ ধছেন। কোথায় বাঁ ধছেন তা সবার
সামনেই পরিষ্কার। কাজেই তা মুখে বর্ণনা করার প্রয়োজন হয়নি। তো যে সুন্নাহ
কর্মে ও অনুসরণে ব্যাপকভাবে রয়েছে তা মৌখিক বর্ণনায় সেভাবে নেই। এ ধরনের
ক্ষেত্রে পরের যুগের লোকদের জন্য সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল ও ফতোয়া
সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । কারণ তাঁ রা ঐ সময়ের কর্ম ও অনুশীলনের প্রত্যক্ষদর্শী।
নামাযে হাত বাঁ ধার সুন্নাহর উপর সাহাবা-তাবেয়ীন কীভাবে আমল করেছেন-এ
বিষয়ে ইমাম তিরমিযী রাহ. (২৭৯ হি.) বলেন-
يرون أن،والعمل على هذا عند أهل العلم من أصحاب النبي صلى هللا عليه وسلم والتابعين ومن بعدهم
ورأى بعضهم أن، ورأى بعضهم أن يضعهما فوق السرة،يضع الرجل يمينه على شماله في الصالة
وكل ذلك واسع عندهم،يضعهما تحت السرة.
বস্ত্তত এটা হচ্ছে হাত বাঁ ধার হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা ও প্রায়োগিক পদ্ধতি। সাহাবা-
তাবেয়ীনের যমানা থেকে এ দুটি নিয়মই চলে আসছে। পরবর্তীতে জুমহূ র ফকীহ ও
মুজতাহিদ ইমামগণ এ দুই নিয়ম গ্রহণ করেছেন। এভাবে উম্মাহর তাওয়ারুছ ও
ব্যাপক চর্চ ার মাধ্যমে নামাযে হাত বাঁ ধার যে নিয়ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে
পৌঁছেছে তা উল্লেখিত হাদীসসমূহেরই ব্যবহারিক রূপ। এ কারণে পরবর্তী যুগে
বিচ্ছিন্ন কোনো নিয়ম আবিষ্কার করে তাকে হাদীস শরীফের উপর আরোপ করা
হাদীসের তাহরীফ ও অপব্যাখ্যা ছাড়া আর কিছু ই নয়।
উপরোক্ত দুই নিয়মের মাঝে নাভীর নিচে হাত বাঁ ধার নিয়মটি রেওয়ায়েতের বিচারে
অগ্রগণ্য। ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. (২৩৮ হি.) বলেছেন, ‘নাভীর নিচে হাত
বাঁ ধা রেওয়ায়েতের বিচারে অধিক শক্তিশালী এবং ভক্তি ও বিনয়ের অধিক
নিকটবর্তী।’
تحت السرة أقوى في الحديث تحت السرة أقوى في الحديث وأقرب إلى التواضع
তাবেয়ী আবু মিজলায লাহিক ইবনে হুমাইদ রাহ. (মৃত্যু : ১০০ হি.-এর পর) নামাযে
কোথায় হাত বাঁ ধবে-এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘ডান হাতের পাতা বাম হাতের
পাতার পিঠের উপর নাভীর নিচে রাখবে।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস :
৩৯৬৩
قلت: سمعت أبا مجلز ـ أو سألته ـ قال: أخبرنا الحجاج بن حسان قال: حدثنا يزيد بن هارون قال
يضع باطن كف يمنيه على ظاهر كف شماله ويجعلها أسفل من السرة: كيف أصنع؟ قال.
يضع يمينه على شماله في الصالة تحت: عن إبراهيم قال، عن أبي معشر، عن ربيع،حدثنا وكيع
السرة.
ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আশশাইবানী রাহ. (১৮৯ হি.) বর্ণনা করেছেন যে,
ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. নাভীর নিচে হাত বাঁ ধতেন। এরপর তিনি বলেন,
‘আমরা এই নিয়মই অনুসরণ করি এবং এটিই (ইমাম) আবু হানীফার সিদ্ধান্ত।’-
কিতাবুল আছার, হাদীস : ১২১
أنه كان يضع يده اليمنى على يده: عن إبراهيم، عن أبي معشر، أخبرنا الربيع بن صبيح: قال محمد
باب الصالة، (كتاب الصالة. وبه نأخذ وهو قول أبي حنيفة رحمه هللا: قال محمد.اليسرى تحت السرة
)قاعدا والتعمد على شيء أو يصلي إلى سترة
প্রসঙ্গত আগেই বলা হয়েছে যে, সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল হচ্ছে হাত বাঁ ধা
সংক্রান্ত মারফূ হাদীসসমূহের ব্যবহারিক রূপ। এ কারণে মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান
রাহ. ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ-এর সূত্রে হাত বাঁ ধার মরফূ হাদীস বর্ণনা করার
পর এই নিয়ম দ্বারা ব্যাখ্যা করেছেন।
রেওয়ায়েতটি এই-
عن حماد عن إبراهيم أن رسول هللا صلى هللا عليه وسلم كان يعتمد بإحدى يديه على،أخبرنا أبو حنيفة
تحت، ويضع بطن كفه األيمن على رسغه األيسر: قال محمد. يتواضع هلل تعالى،األخرى في الصالة
باب الصالة قاعدا والتعمد على، كتاب الصالة، (كتاب األثار، فيكون الرسغ في وسط الكف،السرة
)شيء أو يصلي إلى سترة
(ইমাম) মুহাম্মাদ বলেন, ‘ডান হাতের তালু বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে, নাভীর
নিচে; সুতরাং কব্জি থাকবে হাতের তালুর মাঝে।’-কিতাবুল আছার, হাদীস : ১২০
ইমাম ইবনে কুদামা হাম্বলী রাহ. (৬২০ হি.) বলেন, নামাযে কোথায় হাত বাঁ ধা হবে এ
বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা আছে। (ইমাম) আহমদ রাহ. থেকে বর্ণিত, দুই হাত নাভীর
নিচে রাখবে। এটি (হযরত) আলী রা., আবু হুরায়রা রা., আবু মিজলায রাহ.,
ইবরাহীম নাখায়ী রাহ., (সুফিয়ান) ছাওরী রাহ., ইসহাক (ইবনে রাহুয়াহ) রাহ. থেকে
বর্ণিত।-আলমুগনী ২/১৪১
উল্লেখ্য, ইবনে কুদামা হাম্বলী রাহ. ‘আলমুগনী’তে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ.
থেকে মোট তিনটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন। তবে মূল মতন অর্থাৎ
‘মুখতাসারুল খিরাকী’তে শুধু নাভীর নিচে হাত বাঁ ধার কথাই বলা হয়েছে।
আরবী পাঠ-ويجعلهما ويجعلهما تحت سرته
اختصرت هذا الكتاب ليقرب على متعلمه على مذهب أبي عبد هللا أحمد بن محمد بن حنبل رضي هللا
عنه.
-আলমুগনী ১/৭-৮
শায়খ আবুল হুসাইন ইয়াহইয়া ইবনে আবুল খায়ের রাহ. (মৃত্যু ৫৫৮ হি.) বলেন,
(ইমাম) আবু ইসহাক (আলমারওয়াযী) রাহ. বলেছেন, ‘এক হাত অন্য হাতের উপর
নাভীর নিচে রাখবে।’-আলবায়ান ফী মাযাহিবিল ইমামিশ শাফেয়ী ২/১৭৫
ইমাম নববী রাহ. (৬৭৬ হি.) বলেন, (ইমাম) আবু হানীফা, (সুফিয়ান) ছাওরী ও
ইসহাক (ইবনে রাহুয়াহ) বলেন, ‘দুই হাত নাভীর নিচে রাখবে। আমাদের (শাফেয়ী
মাযহাবের) মনীষীদের মধ্যে আবু ইসহাক আলমারওয়াযী রাহ.ও তা গ্রহণ
করেছেন। আর ইবনুল মুনযির তা বর্ণনা করেছেন আবু হুরায়রা, (ইবরাহীম)
নাখায়ী ও আবু মিজলায রাহ. থেকে।
তিনি আরো বলেন, ‘আলী ইবনে আবী তালিব রা. থেকে দুটি রেওয়ায়েত আছে :
এক. নাভীর উপর হাত বাঁ ধা, দুই. নাভীর নিচে হাত বাঁ ধা।
-আলমাজমূ শরহুল মুহাযযাব ৪/৩৩০
উল্লেখ্য, জনৈক গবেষক একটি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে,
ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. নামাযে বুকের উপর হাত বাঁ ধার অনুসারী
ছিলেন। কিন্তু তার এই প্রয়াস যথার্থ নয়। কারণ হাদীস ও ফিকহের বিখ্যাত
মনীষীগণ ইমাম ইসহাক ইবনে রাহুয়াহ রাহ. সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি
নাভীর নিচে হাত বাঁ ধার নিয়ম গ্রহণ করেছেন। ইবনুল মুনযির রাহ. (৩১৮ হি.) স্বয়ং
ইসহাক ইবনে রাহুয়াহর দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য উদ্ধৃ ত করেছেন যে, ‘নাভীর নিচে হাত বাঁ ধা
রেওয়ায়েতের বিচারে শক্তিশালী এবং ভক্তি ও বিনয়ের অধিক নিকটবর্তী।’
আরবী পাঠ-
كان إسحاق يوتر بنا … ويضع يديه على ثدييه أو تحت الثديين.
আমরা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি যে, নাভীর নিচে ও নাভীর উপরে (বুকের নিচে)
দু’জায়গায় হাত বাঁ ধার নিয়মই সাহাবা-তাবেয়ীনের যুগে ছিল। তাঁ রা একটিকে
অগ্রগণ্য মনে করলেও কেউ অন্যটিকে অনুসরণযোগ্য মনে করতেন। তো ইসহাক
ইবনে রাহুয়াহ রাহ. যদি নাভীর নিচে হাত বাঁ ধাকে অগ্রগণ্য মনে করার পর কখনো
কখনো নাভীর উপরে হাত বাঁ ধার নিয়ম অনুসরণ করে থাকেন তাতে আশ্চর্যের কী
আছে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই একটি অস্পষ্ট রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে কোনো
একটি বিচ্ছিন্ন মত কারো উপর আরোপ করার অবকাশ নেই। এটি বরং
আরোপকারীর দলীল-প্রমাণের দৈন্য এবং শুযূয ও বিছিন্নতাকেই প্রকটভাবে
প্রকাশিত করে দেয়।
মূল আলোচনায় ফিরে আসি। এ পর্যন্ত আমরা খাইরুল কুরূন ও পরবর্তী যুগের
হাদীস ও ফিকহের বিখ্যাত ইমামগণের ফতোয়া ও আমল লক্ষ্য করেছি। এ থেকে
প্রতীয়মান হয় যে, সাহাবা-তাবেয়ীনের যমানায় নাভীর নিচে হাত বাঁ ধার নিয়ম
ব্যাপকভাবে অনুসৃত হয়েছে, যা হাত বাঁ ধার মরফূ হাদীসমূহেরই ব্যাখ্যা ও
ব্যবহারিক রূপ।
নাভীর নিচে হাত বাঁ ধা যেমন সাহাবা-তাবেয়ীনের আমল ও ফতোয়া দ্বারা প্রমাণিত
তেমনি মারফূ রেওয়ায়েতের সূত্রেও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত।
১. হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণিত, ‘আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নীচে
রেখেছেন।
رأيت النبي صلى هللا: عن أبيه قال، عن علقمة بن وائل بن حجر، عن موسى بن عمير،حدثنا وكيع
عليه وسلم يضع يمينه على شماله في الصالة تحت السرة.
এই বর্ণনার সনদ সহীহ। ইমাম কাসেম ইবনে কুতলূবুগা রাহ. (৮৭৯ হি.) বলেন-
وهذاإسناد جيدএটি একটি উত্তম সনদ।-আততা’রীফু ওয়াল ইখবার রিতাখরীজি
আহাদীছিল ইখতিয়ার-হাশিয়া শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামা
উল্লেখ্য, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবার একাধিক পান্ডু লিপিতে হাদীসটি এভাবেই
অর্থাৎ ( ةحةالسرةনাভীর নিচে) কথাটাসহ আছে। এর মধ্যে ইমাম মুরতাযা
আযাবীদী-এর পান্ডু লিপি ও ইমাম আবিদ আসসিন্দী রাহ.-এর পান্ডু লিপি
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইমাম কাসিম ইবনে কুতলূবুগা রাহ., আল্লামা আবদুল
কাদির ইবনে আবু বকর আসসিদ্দীকি ও আল্লামা মুহাম্মাদ আকরাম সিন্ধীর
পান্ডু লিপিতেও হাদীসটি এভাবে আছে। পক্ষান্তরে অন্য কিছু পান্ডু লিপিতে এই
বর্ণনায় ( ةحة السرةনাভীর নিচে) কথাটা নেই। এ কারণে ভারতবর্ষে মুদ্রিত মুসান্নাফ
ইবনে আবী শাইবার পুরানো সংস্করণে এই হাদীসে ( ةحة السرةনাভীর নিচে) অংশটি
ছিল না। বর্ত মানে মদীনা মুনাওয়ারার বিখ্যাত ফকীহ ও মুহাদ্দিস শায়খ মুহাম্মদ
আওয়ামার তাহকীক-সম্পাদনায় মুসান্নাফের যে মুদ্রণ পাঠক-গবেষকদের কাছে
পৌঁছেছে তাতে হাদীসটি ( ةحة السرةনাভীর নিচে) অংশসহ রয়েছে। কারণ শায়খের
সামনে প্রথমোক্ত পান্ডু লিপি দুটিও ছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর
শায়খ বলেন-
معذور في عدم: التي ليست فيها هذه الجملة. ش. ن. ظ.ومن نقل الحديث من إحدى النسخ األربع خ
ومن نقله عن إحدى النسختين اللتين فيهما هذه، ولكنه ليس معذورا في نفي ورودها،إثبات هذه الزيادة
بل واجب عليه ذلك وال يجوز لها حذفها فعلى م التنابز والتنابذ؟،الزيادة هو معذور في إثباتها
سمعت حجرا أبا العنبس: بن نصير ثنا شعبة عن سلمة بن كهيل قالYحدثنا أبو مسلم الكشي ثنا حجاج
ثم وضع يده اليمنى على،… يحدث عن وائل الحضرمي أنه صلى مع رسول هللا صلى هللا عليه وسلم
اليسرى وجعلها على بطنه.
-আলমুজামুল কাবীর ২২/৪৪, হাদীস : ১১০
، ثنا زهير، أخبرنا أبو نعيم: )قال اإلمام الدارمي في السنن (باب وضع اليمين على الشمال في الصالة
رأيت رسول هللا صلى هللا عليه وسلم يضع: عن أبيه قال، عن عبد الجبار بن وائل،عن أبي إسحاق
انتهى.يده اليمنى على اليسرى قريبا من الرسغ
عن، ثنا إسماعيل بن عياش، ثنا عمرو بن عثمان الحمصي،ورواه الطبراني بطريق عبدان بن أحمد
يونس بن أبي إسحاق عن أبي إسحاق به.
নাভীর নিচে হাত বাঁ ধার বিষয়ে জয়ীফ সনদে বর্ণিত কিছু রেওয়ায়েতও আছে।
তবে রেওয়ায়েতগুলোর বিষয়বস্ত্ত উপরে বর্ণিত হাদীস, আছার ও আমলে
মুতাওয়ারাছ দ্বারা সমর্থিত।
২. হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নাহ হচ্ছে নামাযে হাতের পাতা
হাতের পাতার উপর নাভীর নিচে রাখা।’-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮৭৫; সুনানে
আবু দাউদ, হাদীস : ৭৫৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩৯৬৬
عن، عن زياد بن زيد، عن عبد الرحمن بن إسحاق، حدثنا حفص بن غياث،حدثنا محمد بن محبوب
السنة وضع الكف على الكف في الصالة تحت السرة: أبي جحيفة أن عليا رضي هللا عنه قال.
وابن داسة، هذا الحديث في رواية ابي سعيد بن األعرابي،٨/٤٥٨ قال المزي في تحفة األشراف
ولم يذكره أبو القاسم،وغير واحد عن أبي داود.
৩. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘নামাযে হাতের পাতাসমূহ দ্বারা
হাতের পাতাসমূহ নাভীর নীচে ধরা হবে।’
عن، عن سيار أبي الحكم، عن عبد الرحمن بن إسحاق الكوفي، حدثنا عبد الواحد بن زياد،حدثنا مسدد
أخذ األكف على األكف في الصالة تحت السرة: قال أبو هريرة رضي هللا عنه: أبي وائل قال.
এই দুই রেওয়ায়েতের সনদে আবদুর রহমান ইবনে ইসহাক নামক একজন রাবী
আছেন। ইমাম তিরমিযী রাহ. তার সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসকে হাসান বলেছেন।
দেখুন : জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৪৬২; আরো দেখুন : হাদীস ২৫২৭
আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে হাদীসটি (২৫২৬) বর্ণনা করার পর ইমাম
তিরমিযী বলেন, কোনো কোনো মনীষী এই আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের
স্মৃতিশক্তি সম্পর্কে সমালোচনা করেছেন। আরবী পাঠ-
وعبد،ا هذا حديث غريب وقد تكلم بعض أهل العلم في عبد الرحمن هذا من قبل حفظه وهو كوفي
انتهى.الرحمن بن إسحاق القرشي مديني وهو أثبت من هذا
উল্লেখ্য, শায়খ আলবানী রাহ.ও আবদুর রহমান ইবনে ইসহাকের সূত্রে বর্ণিত
একটি হাদীসকে শাওয়াহেদের (অন্যান্য বর্ণনার সমর্থনের) কারণে সিলসিলাতু স
সহীহায় উল্লেখ করেছেন। দেখুন : সিলসিলাতু স সহীহা হাদিস
৪. আনাস রা. থেকে বর্ণিত, ‘তিনটি বিষয় (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-
এর) নবী-স্বভাবের অন্তর্ভু ক্ত: ইফতারে বিলম্ব না করা, সাহরী শেষ সময়ে খাওয়া
এবং নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর নাভীর নিচে রাখা।’
ووضع اليد اليمنى على اليسرى في الصالة، وتأخير السحور، تعجيل األفظار: ثالث من أخالق النبوة
تحت السرة.
উল্লেখ্য, ইবনে হাযম রাহ. (৪৫৬ হি.) তাঁ র নামাযে হাত বাঁ ধার আলোচনায় নাভীর
নিচে হাত বাঁ ধার একটি মারফূ হাদীস ও একটি আছর উল্লেখ করেছেন। তবে
সেগুলোর সনদ উল্লেখ করেননি।
পক্ষান্তরে এ আলোচনায় বুকের উপর হাত বাঁ ধার একটি রেওয়ায়েতও উল্লেখ
করেননি, না সনদসহ না সনদ ছাড়া। তদ্রূপ হাত বাঁ ধার নিয়ম উল্লেখ করতে গিয়ে
বলেছেন, ‘মুস্তাহাব হল, নামাযী তার ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে।’
في وقوفه كله فيها،ويستحب أن يضع المصلي يده اليمنى على كوع يده اليسرى في الصالة.
-আলমুহাল্লা ৩/২৯
খাইরুল কুরূন ও পরবর্তী যুগের হাদীস-ফিকহের বড় বড় ইমাম এই নিয়ম গ্রহণ
করেছেন। এঁদের মধ্যে ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম সুফিয়ান
ছাওরী, ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান, ইমাম ইসহাক ইবনে
রাহুয়াহ, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল প্রমুখ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উপরন্তু বেশ
কিছু মরফূ হাদীসেও নাভীর নিচে হাত বাঁ ধার নিয়ম বর্ণিত হয়েছে।
সুতরাং এটি নামাযে হাত বাঁ ধার মাসনূন তরীকা। এ সম্পর্কে দ্বিধা ও সংশয়ের
কোনো অবকাশ নেই।
====================================
====================================
*********************************
নামাযে হাত কোথায় রাখা সুন্নাত, এ ব্যপারে ইমামদের মাঝে মতভেদ আছে। ইমাম
শাফেয়ির মতে নাভীর উপরে বুকের নিচে হাত রাখা সুন্নাত এবং এটাই তার
বিশুদ্বতম মত। ইমাম মালীকের মতে হাত না বেধে ছেড়ে দেয়া সুন্নাত। ইমাম
আহমাদ ইবনে হাম্বলের মতে নাভীর উপরে বা নিচে যে কোন এক জায়গায় রাখলে
সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু ইউসূফ, ইয়াম
মুহাম্মদ,সুফয়ান সাওরী, ইসহাক ইবনে রাহবিয়াহ এবং আবু ইসহাক মযুরী
(শাফেয়ী) এবং অসংখ্যা ফোকায়ে কেরামের মতে নাভীর নিচে হাত বাধা সুন্নাত।
(ইলাউস সুনান ২য় খন্ড ১৯১পৃ, মাআরিফুসসুনান ২য় খন্ড ৪৩৬ পৃ) আমাদের
দেশে আহলে হাদিস নামধারি কিছু লোক এ ব্যাপারে অতিরঞ্জিত শুরু করেছে।
তারা বলে বুকের উপর হাত বাধা সুন্নত এবং নাভীর নিচে হাত বাধার সবগুলো
হাদীস দুর্বল এবং এ ব্যাপারে কোন ছহীহ হাদিস নেই। (ভূ মিকা, সালাতে নারী
পুরুষের বুকে হাত বাধা), অথচ নাভীর নিচে হাত বাধা ছহীহ হাদীছ এবং রসূল
(সাঃ) এর পবিত্র আমল দ্বারা প্রমাণিত এবং বুকের উপর হাত বাধার দলীল এর
চেয়ে নাভীর নিচে হাত বাধার দল অনেক বেশী শক্তিশালী। বিখ্যাত মুহাদ্দিস আবু
তৈয়ব মাদানি তিরমিযি শরীফের ব্যাখা গ্রন্থে বলেন চার ইমামের কোন ইমাম বুকের
উপর হাত বাধতে বলেননি। বুকের উপর হাত বাধার হাদীস যদি এতই শক্তিশালী
হত, তাহলে কোন না কোন ইমাম বুকের উপর হাত বাধা সুন্নাত বলত। (ফাইযুল
বারী শরহে বুখারী ১ম খন্ড ৬১৪পৃ,তানজিমুল আসতাত শরহে মিশকাত ৩০১পৃ,
মারেফুস সুনান ২য় খন্ড ৪৩৬, )
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বুকের উপর হাত রাখাকেমাকরুহ মনে করেন
(মাসায়েলে আবু দাউদ লিল ইমাম আহমদ (র) ৪৭-৪৮পৃ)
নিম্নে হাদিসের বিশুদ্ব এবং গ্রহণযোগ্য কিতাব সমুহ হতে নাভীর নিচে হাত বাধার
হাদিস সমুহ উল্লেখ করা হল।
১নং দলীলঃ
عن ابي حازم عن سهل بن سعد (رض) قال كان ناس يومرون ان يضع الرجل اليد اليمني علي
ذراعه اليسري في الصالة قال ابو حازم ال أعلمه أال ينمي ذلك الي النبي صلي هللا عليه وسلم
“সাহাবী সাহাল বিন সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন মানূষদের কে নামাযে ডান
হাত কে বাম হাতের উপর রাখতে রাখতে নির্দে শ দেয়া হয়েছে।
উক্ত হাদিছে ডান হাত কে বাম যিরার উপর রাখতে নির্দে শ প্রদান করা হয়েছে।
কিন্তু হাত কোথায় রাখবে, নাভির উপরে না নাভীর নিচে, সে সম্পর্কে । উক্ত হাদিসে
কিছু বলা হয়নি। এখন আমাদের বুঝা দরকার যে আরবী তে “যিরা” শব্দের অর্থ
কি? কনুই থেকে মধ্যমা আঙু ল পর্যন্ত অংশ কে আরবি তে যিরা বলা হয়।
(মিছবাহুল লুগাত,মুজামুল ওয়াসিত,আল মুনযিদ)।
উল্লেখ্য যে কিছু লোক উক্ত হাদিস দ্বারা নামাজে বুকের উপর হাত রাখাকে সুন্নাত
প্রমাণ করতে চায়, অথচ উক্ত হাদিসে বুকের উপর হাত রাখা বিষয়ক কোন শব্দ
নেই। সুতরাং উক্ত হাদিস দ্বারা বুকের উপর হাত রাখা কোনভাবেই প্রমাণিত হয়না।
২ নং দলীলঃ
ثم وضع يده اليمني علي ظهر كفه اليسري والرسغ والساعد: عن واأل بن حجر في حديث طويل
“ওয়াইল ইবনে হাজর থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসে শেষে তিনি বলেন, অতঃপর রসুল
(স) ডান হাত কে বাম হাতের কবজি এবং বাহুর উপর রেখেছেন। ইমাম আবু
দাউদ হাদিসটি উল্লেখ করে নিরবতা পালন করেছেন”।
৩নং দলীলঃ
ثم وضع يده اليمني علي يده اليسري في الصالة قريبا من الرسغ: عن واأل بن حجر في حديث طويل
অনুবাদঃ ওয়াইল ইবনে হাজর থেকে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসে শেষে তিনি বলেন
অতঃপর রসুল (স) নামাযে ডান হাত কে বাম হাতের কবজির কাছে রেখেছেন।
(তালখিসুল হাবির ১ম খন্ড ২২৪ পৃ হাদিস নং ৩৩২, এলাউস সুনান ২য় খন্ড
১৯০পৃ)
৪ নং দলীলঃ
عن قبيصة بن هلب عن ابيه قال كان رسول هللا صلي هللا عليه وسلم يومنا فياخذ شماله بيمينه رواه
الترمزي وقال حسن والعمل علي هذا عند أهل العلم من اصحاب النبي صلي هللا عليه وسلم والتابعين
ومن بعدهم يرون ان يضع الرجل يمينه علي شماله في الصالة وراي بعضهم ان يضعهما فوق السرة
وراي بـعضهم ان يضعهما تحت السرة وكل ذلك واسع عندهم
অনুবাদঃ কুসাইবা ইবনে হালাব (র) থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা
করেন যে রসুল (স) আমাদের নামাযের ইমামতি করতেন এবং ডান হাত দ্বারা বাম
হাত কে আকড়ে ধরতেন।
৫নং দলীলঃ
حدثنا يزيد بن هارون قال أنا الحجاج بن حسان قال سمعت أبامجلز أو سألته قلت كيف يضع؟ قال
يضع باطن كف يمينه علي ظاهر كف شماله ويجعلهما اسفل عن السرة
হাজ্জাজ ইবনে হাসসান বর্ণনা করেন যে আমি আবু মুজলিজ কে জিজ্ঞেস করলাম
যে রসুল (স) নাযাজে হাত কোথায় রাখতেন?
তিনি উত্তর দিলেন যে রসুল (স) নাভীর নিচে ডান হাতের কবজি কে বাম হাতের
কব্জির উপর রাখতেন। আল্লামা ইবনে আবি শায়বা হাদিস টি কে ছহীহ বলে
আখ্যায়িত করেছেন।( মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১ম খন্ড ৩৯০-৩৯১পৃ, আল
যাওহারুন নকী ২য় খন্ড ৩১পৃ)
৬ নং দলীলঃ
قال العالمة ابن التركماني ومذهب ابي مجلز الوضع اسفل السرة حكاه عنه ابو عَمر في التمهيد وجاء
ذلك عنه بسند جيد
আল্লামা ইবনে তু রকুমানি বলেন আবু মুযলিজ সাহাবীর আমল ছিল যে তিনি
নাভীর নিচে হাত রাখতেন। আবু আমর “তামহিদ” নামক কিতাবে তা বর্ণনা করেন
এবং উক্ত হাদিস টি তার থেকে বিশুদ্ব সনদে বর্ণিত হয়েছে।
(বাযলুল মাযহুদ শরহে আবু দাউদ ৪র্থ খন্ড ৪৭৭ পৃ, এলাউস সুনান ২য় খন্ড
১৯২পৃ)
৭নং দলীলঃ
حدثنا وكيع عن ربيع عن ابي معشر عن ابراهيم قال يضع يمينه علي شماله تحت السرة رواه ابن ابي
شيبة واسناده حسن
“প্রসিদ্ব তাবেয়ি ইব্রাহিম নাখয়ী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে রসুল (স) নাভীর নিচে
ডান হাত কে বাম হাতের উপর রাখতেন। এ হাদিসের সনদটি হাসান। (আসারুস
সুনান ১ম খন্ড ৭১পৃ, আসারে মুহাম্মদ ইবনুল হাসান শাইবানি ২৫ পৃ)”
৮নং দলীলঃ
عن ابي حجيفة ان عليا (رض) قال السنة وضع الكف علي الكف في الصالة تحت السرة
“আবূ যূহাইফা (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আলী (র) বলেছেন যে সুন্নাত হল
নামাযে নাভীর নিচে এক হাত কে আরেক হাতের উপর রাখা। (মুসনাদে আহমদ
১ম খন্ড ১১০পৃ, বায়হাকি শরীফ ২য় খন্ড ৩১পৃ, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১ম
খন্ড ৩৯১ পৃ )
উক্ত হাদিস টি আবু দাউদ শরীফে ও বর্ণিত হয়েছে তবে সেটি “ইবনুল আরাবী”
এর পান্ডু লিপিতে আছে, “লুলয়ী” এর পান্ডু লিপিতে নয়। (এলাউস সুনান ২য়
খন্ড১৯৩পৃ, তাকরিরে তিরমিযী ২য় খন্ড ২৪পৃ)
উল্লেখ্য যে উসূলে হাদিস অনুযায়ী যখন কোন সাহাবী রসুল (স) এর কোন আমল
কে “সুন্নাত” বলে আখ্যায়িত করে তখন হাদিসটি মারফু হাদিস এর হুকুমে হয়ে
যায়। সে হিসাবে উক্ত হাদিসটি মারফু হাদিস।
এখানে একটি প্রশ্ন আছে। তা হল ইমাম আবু দাউদ উক্ত হাদিস বর্ণনা শেষে বলেন,
আমি ইমাম আহমদ ঈবণে হাম্বল থেকে শুনেছি যে তিনি আব্দুর রহমান ইবনে
ইসহাক কূফি কে জয়ীফ বলেছেন।
উক্ত প্রশ্নের জবাবে বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা আজলী বলেন আব্দুর রহমান ইবনে
ইসহাক কূফি রাবী হিসাবে কিছু টা দুর্বল হলেও তার তার হাদিস গ্রহণ করা যাবে।
ইবনুল হাজম এবং আল্লামা তাকী উস্মানি বলেন হজরত আলীর উক্ত হাদিসে
কিছু টা দুর্বলতা থাকলেও যেহেতু বিভিন্ন সাহাবায়ে কেরাম যেমন হজরত আবু
মুযলিজ,হযরত আনাস এবং হজরত আবু হুরায়রা সহ আরো অনেকে তাবেয়ির
আমলের দ্বারা নাভীর নিচে হাত বাধা সাব্যাস্ত এবং প্রমানিত, সেহেতু উক্ত হাদিস টি
গ্রহণযোগ্য এবং বিশুদ্ব।( মহল্লি ১৩পৃ ৪র্থ খন্ড, তাকরিরে তিরমিযি ২য় খন্ড ২৪পৃ,
এলাউস সুনান ২য় খন্ড ১৯৩পৃ)
৯ নং দলীলঃ
عن أنس رضي هللا عنه قال ثالث من اخالق النبوة تعجيل االفطار وتاخير السحور ووضع اليد اليمني
علي اليسري في الصالة تحت السرة
“হজরত আনাস (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে তিনটি জিনিষ নবীদের সুন্নাত।
প্রথম হল ইফতারের সময় হলে বিলম্ব না করা, দ্বিতীয় হল ভোর রাত্রে শেষ সময়ে
সেহরি খাওয়া এবং নামাযে নাভীর নিচে ডান হাত কে বাম হাতের উপর রাখা”
(আল যাওহারুন নকী ২য় খন্ড ৩১ও ৩২ পৃ)
১০ নং দলীলঃ
عن ابي واءل (رض) قال قال ابو هريرة (رض) اخذ االكف علي االكف في الصالة تحت السرة
“আবু ওয়াইল (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে আবু হুরায়রা (র) বলেছেন যে
নামাযে নাভীর নচে কব্জির উপর হাত রাখা সুন্নাত। (আবু দাউদ ১ম খন্ড ২৭৫পৃ)
আল্লামা শাওকানী বলেন নামাযে হাত বাধা সম্পর্কে আবু ওয়াইল এর উক্ত
হাদিসের চেয়ে আর কোন সহীহ হাদিস নেই। (এলাউস সুনান ২য় খন্ড ১৯৫পৃ)
১১ নং দলীলঃ
رأيت النبي صلى هللا عليه وسلم يضع يمينه على: عن وائل بن حجر عن ابيه رضي هللا عنه قال
شماله في الصالة تحت السرة
ওয়াইল বিন হাজর (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে আমি রসুল (স) কে দেখেছি
যে তিনি নামাযে নাভীর নিচে ডান হাত কে বাম হাতের উপর রেখেছেন। (মুসান্নাফে
ইবনে আবি শায়বা ১ম খন্ড ৩৯পৃ)
হাফেযুল হাদিস আল্লামা কাসেম ইবনে কাতলুবুগা উপরোক্ত হাদিস সম্বন্ধে বলেন
উক্ত হাদিসটি বুকের উপর হাত রাখার হাদিসের চেয়ে অধিক শক্তিশালী এবং
ছহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে।
বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা নিমী তালিকুল হাসান কিতাবে বলেন যে উক্ত হাদিসটি
যদিওবা মতন এর দিক দিয়ে কিছু টা দুর্বল, তবুও সেটি বুকের উপর হাত রাখার
হাদিসের চেয়ে অধিক শক্তিশালী এবং এর সনদ মযবুত।
আল্লামা আবু তৈয়ব মাদানি তিরমিযি শরীফের ব্যাখ্যায় বলেন উক্ত হাদিসটি
সনদের দিক দিয়ে অধিক শক্তিশালী।
শেখ আবেদ সিন্দি তাওয়ালিয়ুল আনওয়ার কিতাবে বলেন উক্ত হাদিসের রাবীগণ
নর্ভ রযোগ্য। (ফাতহুল মুলহিম শরহে মুসলিম ৩য় খন্ড ৩০৮ পৃ, তানযিমুল আস্তাত
শরহে মিশকাত ১ম খন্ড ৩০২)
أنه كان يضع يده اليمنى على يده: عن إبراهيم، عن أبي معشر، أخبرنا الربيع بن صبيح: قال محمد
باب الصالة، (كتاب الصالة. وبه نأخذ وهو قول أبي حنيفة رحمه هللا: قال محمد.اليسرى تحت السرة
قاعدا والتعمد على شيء أو يصلي إلى ستر
“ইব্রাহিম নাকয়ী থেকে বর্ণিত আছে তিনি নাভীর নিচে ডান হাত কে বাম হাতের
উপর রাখতেন। (কিতাবুল আসার হাদিস নং ১২১)
ইমাম ইবনে কুদামা হাম্বলী (রাহ) (৬২০ হি.) বলেন, নামাযে কোথায় হাত বাঁ ধা হবে
এ বিষয়ে বিভিন্ন বর্ণনা আছে। (ইমাম) আহমদ (রাহ) থেকে বর্ণিত, দুই হাত নাভীর
নিচে রাখবে। এটি (হযরত) আলী রা., আবু হুরায়রা রা., আবু মিজলায রাহ.,
ইবরাহীম নাখায়ী রাহ., (সুফিয়ান) ছাওরী রাহ., ইসহাক (ইবনে রাহুয়াহ) রাহ. থেকে
বর্ণিত। (আলমুগনী ২য় খন্ড ১৪৩পৃ)
শায়খ আবুল হুসাইন ইয়াহইয়া ইবনে আবুল খায়ের রাহ. (মৃত্যু ৫৫৮ হি.) বলেন,
(ইমাম) আবু ইসহাক (আলমারওয়াযী) রাহ. বলেছেন, ‘এক হাত অন্য হাতের উপর
নাভীর নিচে রাখবে।(আলবায়ান ফী মাযাহিবিল ইমামিশ শাফেয়ী ২/১৭৫)
ইমাম নববী রাহ. (৬৭৬ হি.) বলেন, (ইমাম) আবু হানীফা, (সুফিয়ান) ছাওরী ও
ইসহাক (ইবনে রাহুয়াহ) বলেন, ‘দুই হাত নাভীর নিচে রাখবে। আমাদের (শাফেয়ী
মাযহাবের) মনীষীদের মধ্যে আবু ইসহাক আলমারওয়াযী রাহ.ও তা গ্রহণ
করেছেন। আর ইবনুল মুনযির তা বর্ণনা করেছেন আবু হুরায়রা, (ইবরাহীম)
নাখায়ী ও আবু মিজলায রাহ. থেকে।
সুতরাং উপরোক্ত হাদিস সমূহের দ্বারা এ কথা স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হয় যে নাভীর
নিচে হাত রাখা রসুল (স) থেকে প্রমাণিত এবং সাহাবা এবং তাবেইন দের যুগে
এটার উপর ব্যাপকভাবে আমল হয়েছে এবং খায়রুল করুনের বিশিষ্ট ইমামগণ
এটাকে প্রাধাণ্য দিয়েছেন।
عن واءل بـن حجر رضي هللا عنه قال صليت مع النبي صلي هللا عليه وسلم فوضع يده اليمني علي
يده اليسري علي صدره
“ওয়াইল ইবনে হাজর (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রসুল (স) এর সাথে
নামায পরেছি। তিনি বুকের উপর ডান হাতের উপর বাম হাত কে রেখেছেন”।
(ছহীহ ইবনে খুযাইমা ১ম খণ্ড ২৪৩পৃ)
উক্ত হাদিস সমবন্ধে মুহাদ্দিসিনে কেরাম কালাম করেছেন এবং উক্ত হাদিস্টি কে
সনদ হিসাবে খুবই দুর্বল হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। নিচে আমি সে সম্পর্কে
আলোচনা করছি।
কারণ উক্ত হাদিসটি মোট সাত টি সুত্রে বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ বিভিন্নজন
হাদিসটিকে বিভিন্ন সুত্রে বর্ণনা করেছেন।
১ ইমাম আহমদ তার মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনে ওয়ালিদের সুত্রে হাদিসটি বর্ণনা
করেছেন।
৪ ইবনে মাজা তে আব্দুল্লাহ ইবনে ইদ্রিস এবং বশর ইবনে মুফাদ্দাল এর সুত্রে
বর্ণনা এসেছে।
উপরের সাতটি সুত্রের কোনটি তে علي صدرهবা বুকের উপর হাত রাখা শব্দটি নেই।
একমাত্র মোমিল ইবনে ইস্মাইল এর সুত্রে বর্ণনাকৃত হাদিসে “বুকের উপর হাত
রাখা” শব্দটি আছে। তাছাড়া উপরোক্ত রাবীগণ মুমিলের চেয়ে অধেক গ্রহণযোগ্য।
সুতরাং এতগুলো রাবির বীপরিতে মুমিলের মত একজন দুর্বল রাবির বর্ণনা
গ্রহণযোগ্য হবেনা। (ফাতহুল মুলহিম ৩য় খন্ড ৩০৪পৃ, মারেফুস সুনান ২য় খন্ড
৪৩৮পৃ,তানযিমুল আস্তাত ১ম খন্ড ৩০২পৃ, তাকরিরে তিযমিযি ২য় খণ্ড ২২পৃ)
বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম বলেন একমাত্র মুমিল ইবনে ইস্মাইল
ব্যতিত অন্য কেহ বুকের উপর হাত রাখা শব্দটি বর্ণনা করেনি। একমাত্র তিনিই
উক্ত শব্দটি বৃদ্বি করেছেন। সুতরাং সমস্ত রাবীর বিপরিতে মোমিলের মত একজন
দুর্বল রাবীর বর্ণনা গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা। (এলামুল মুয়াক্কিয়িন ২য় খন্ড
৩১২পৃ,তালিকুল হাসান ১ম খন্ড ৬৫পৃ)
তাছাড়া রাবী যদি বিশ্বস্ত ও হন তারপরেও তিনি যদি অণ্যান্য গ্রহণযোগ্য রাবী
অথবা তার চেয়ে শক্তিশালী রাবীর বিরোধিতা করেন তাহলে তার বর্ণনা গ্রহণযোগ্য
হবেনা। এখানে তাই হয়েছে।
মুমিল ইবনে ইস্মাইল কে মুহাদ্দিসিনে কেরাম রাবি হিসাবে খুবই দুর্বল বলেছেন।
আল্লাম নিমী বলেন মুমিল ইবনে ইস্মাইল কে বহু মুহাদ্দিস দুর্বল বলেছেন। প্রখ্যাত
মুহাদ্দিস ও ফকীহ আল্লামা যাহবী “কাশিফ” নামক কিতাবে বলেন মুমিল একজন
সত্যবাদি রাবি কিন্তু তার প্রচু র ভূ ল আছে। তার সম্পর্কে বলা হয়েছে তার কিতাব
সমুহ কে মাটির নিচে দাফন করে ফেলা হয়েছিল। ফলে তিনি মুখস্ত হাদিস বর্ণনা
করতেন এবং ভূ ল করতেন।
তবে মুসনাদে বাজ্জারে একটি বর্ণনা আছে যেখানে উক্ত হাদিসে ( عند صدرهবুকের
কাছে) শব্দ আছে।
এটার জবাব হল উক্ত হাদিসের ভিত্তি হল মুহাম্মদ ইবনে হাজর এর উপর। প্রখ্যাত
মুহাদ্দিস আল্লামা যাহবি তার সম্পর্কে বলেন, তার বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং
উক্ত বর্ণনাটিও গ্রহণযোগ্য নয়। (আযযাওয়াইদ ২য় খন্ড ৩৫পৃ,তাকরিরে তিরমিযি
২য় খন্ড ২২পৃ)
২য় দলীলঃ
عن ابن عباس في قوله تعالي فصل لربك وانحر قال وضع اليمين علي الشمال عند النحرفي الصالة
উক্ত হাদিসের সনদ কে মুহাদ্দিসিনে কেরাম অত্যান্ত দুর্বল বলেছেন। কারণ উক্ত
হাদিসের সনদে “রুহ ইবনুল মুসাইয়য়াব” নামে একজন দুর্বল রাবি আছেন যিনি
হাদিস শাস্ত্রে পরিত্যক্ত। আল্লামা ইবনে হাব্বান বলেন তিনি জাল হাদিস বর্ণনা
করেন। সুতরাং তার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লামা ইবনে আদি বলেন তার
হাদিসগুলো সংরক্ষিত নয়। এভাবে তিনি হজরত আলী (র) থেকে এরকম যে
সকল হাদিস বর্ণনা করেছেন সবগুলোর একই হুকুম। আল্লামা ইবনে তু রকুমানি
বলেন উক্ত হাদিসের সনদে ইযতিরাব আছে। আল্লামা মারদিনি “আল জাওহারুন
নকি” নামক কিতাবে প্রমাণ করেছেন যে উক্ত হাদিসের সনদ এবং মতন
উভয়টিতে ইযতিরাব আছে। আল্লামা ইবনে কাসির উক্ত তাফসির কে বর্ণনা করে
বলেন যে উক্ত তাফসিরটি সঠিক নয়। বরং উক্ত আয়াতের সঠিক তাফসির হল
কোরবানির দিন কোরবানির জন্তু জবেহ করা।
(তাফসিরে ইবনে কাসির ৪র্থ খন্ড ৫৫৮পৃ, তালিকুল হাসান ১ম খন্ড ৪৯পৃ, এলাউস
সুনান ২য় খন্ড ২০০পৃ, তানযিমুল আস্তাত ১ম খন্ড ৩০২পৃ, আল ফাতহুর রাব্বানি
৩য় খন্ড ১৭৪পৃ, আলজাওহারুন নকি ২য় খন্ড ৩০পৃ, তাকরিরে তিরমিযি ২য় খন্ড
২৩পৃ, মারিফুস সুনান ২য় খন্ড ৪৩৮পৃ,ফাতহুল মুলহিম ৩য় খন্ড ৩০৫পৃ)
৩য় দলীলঃ
عن هلب رض كان النبي صلي هللا عليه وسلم ينصرف عن يمينه وعن شماله ويضع هذه علي صدره
হুলুব (র) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রসুল (স) বুকের উপর হাত রেখেছিলেন।
আল্লামা নিমি “আসারুস সুনান” নামক কিতাবে শক্তিশালী দলীল দিয়ে এ কথা
প্রমান করেছেন যে উক্ত বর্ণনার শব্দে পরিবর্ত ন সাধিত হয়েছে। আসল করা
হয়েছে। সুতরাং উক্ত ويضع هذه علي صدرهযেটাকে ভূ লে يضع هذه علي هذهবর্ণনা দ্বারা
দলীল দেওয়া ঠিক হবেনা।
সুতরাং নামাযে বুকের উপর হাত রাখার যে তিনটি দলীল বর্ণিত হয়েছে তিনটি
হাদিসেই সনদের দিক দিয়ে অত্যান্ত দুর্বল যা উপরে বিস্তারির আলোচনা হয়েছে।
সার কথা
সাহাবায়ে কেরাম এবং ইসলামের স্বর্ণ যুগ তথা কুরুনে সালাসার আমল দেখলে
আমরা এ ব্যপারে দু ধরণের আমল দেখতে পাই। প্রথমটি হল নাভীর নিচে হাত
বাধা এবং দ্বিতীয়টি হল নাভীর উপর বুকের নিচে হাত বাধা। উভয়টি সালাফ থেকে
প্রমাণিত এবং উভয়টির উপর আমল করা যাবে যেমন ইমাম তিরমিযি
(র)বলেছেন। তবে নাভীর নিচে হাত বাধার দলীল অধিক শক্তিশালী যা উপরে
বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে বুকের উপর হাত রাখা সালাফ থেকে প্রমাণিত
নয় এবং দু একটি বিচ্ছিন্ন বর্ণনায় তা এসেছে যা অত্যান্ত দুর্বল। ইমাম মালেক
বুকের উপর হাত রাখাই মাকরুহ বলেছেন। যদি বুকের উপর হাত রাখার সহিহ
কোন দলীল থাকত তাহলে তিনি কখনো এটিকে মাকরুহ বলতে পারতেননা।
শায়খ আবেদ সিন্দি এবং শায়খ ইবনুল হুমাম বলেন নাভীর নিচে হাত রাখার
হাদিস অধিক শক্তিশালী। যেহেতু বুকের উপর অথবা নাভির নিচে উভয় বর্ণনায়
কিছু টা দুর্বলতা পাওয়া যায়, যদি আমরা উভয় বর্ণনাকে বাদ দিয়ে নেকায়া
গ্রন্থকার এর কথা মেনে নেই তাহলে সবচেয়ে ভাল হয়। তিনি বলেছেন ডান হাত কে
বাম হাতের উপর রাখা ছহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, কিন্তু বুকের উপর অথবা
নাভীর নিচে হাত রাখার ব্যাপারে সুষ্পষ্ট এমন কোন হাদিস নেই যার দ্বারা আমল
ওয়াজিব হয়। সুতরাং এখানে আমাদের কে কিয়াসের দিকে ফিরে যেতে হবে।
নামাযে দন্ডায়মান অবস্থা হল নম্র ভিক্ষুকের অবস্থার মত। দুনিয়াতে আমরা
সম্মানিত ব্যাক্তির সামনে দাড়ানোর সময় হাত নিচের দিকে রাখি, কখনো উপরে
উঠাইনা। তদ্রুপ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সামনেও তার সম্মানার্থে আমরা
হাত নিচে রাখব । উপরে উঠাবনা।এটাই সম্মানের দাবি। সুতরাং কিয়াস অনুযায়ী
নাভীর নিচে হাত রাখাই প্রামাণিত হয়। তবে মহিলারা হাত বুকের উপর রাখবে
কারণ সেটার দ্বারা তাদের পর্দ া রক্ষা হবে যা তাদের জন্য ফরয। (মিরকাতু ল
মাফাতিহ ৫০৯পৃ ২য় খন্ড, ফাতহুল মুলহিম ৩য় খন্ড ৩০৬পৃ, মারিফুস সুনান ২য়
খন্ড ৪৪৫পৃ, আলুউরফুস সুযি ১ম খন্ড২৯১পৃ, তাকরিরে তিরমিযি ২য় খন্ড ২৪পৃ)
আমাদের দেশে কিছু মানুষ না জেনে না বুঝে এ কথা প্রচার করছে যে নাভীর নিচে
হাত বাধার সবগুলো হাদিস দুর্বল। আমি তাদেরকে সবিনয়ে অনুরোধ করব সিহাহ
সিত্তাহ সহ অন্যাণ্য ছহীহ হাদিসের কিতাবসমূহ এবং তার বিখ্যাত ব্যাখাগ্রন্থগুসমূহ
অধ্যায়ন করার জন্য। তাহলে আমরা সঠিকভাবে সুন্নাহ এর অনুসরণ করতে
পারব। তারা আরো বলে থাকেন আমরা নাকি ইমাম আবু হানিফার অন্ধ অনুসরণ
করে থাকি এমন কি ছহীহ হাদিস যদি ইমাম আবু হানিফার বিরুদ্বে যায় তারপরেও
নাকি আমরা ইমাম আবু হানিফার অনুসরণ করে থাকি। অথচ এ সব কথা সম্পূর্ণ
ভূ ল এবং আমাদের বিরুদ্বে প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছু নয়। যাদের প্রকৃত কোরান
সুন্নাহর জ্ঞান নেই একমাত্র তারাই এসব কথা বলতে পারেন। আমরা স্পষ্ট ভাষায়
বলতে চাই আমরা ইমাম আবু হানিফাকে অনুসরণ করিনা, বরং আমরা কোরান ও
সুন্নাহ কে অনুসরণ করি। তবে যে সব মাসয়ালা জটিল এবং সবার বোধগম্য নয়
এবং ইজতিহাদের প্রয়োজন সে সব মাসয়ালায় ইমাম আবু হানিফা কোরান ও
হাদিস থেকে যে সমাধান দিয়েছেন আমরা শুধু সেটার অনুসরণ করি।
،وخالصة الموضوع أن أرجح األقوال هو استحباب قبض اليد اليمنى على رسغ اليد اليسرى
، وذلك هو قول الشافعية، ويجوز إرسالهما عند السكون،ووضعهما على أسفل الصدر فوق السرة
هذا وليس هناك دليل صحيح على أن
“বিভিন্ন মতামত থেকে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মতামত হল নাভীর উপরে বুকের নিচে
ডান হাত কে বাম হাতের উপর কব্জির উপর রাখা। তবে বুকের উপর হাত রাখার
উপর কোন ছহীহ দলীল নেই”
”ফাতওয়ার শেষাংশে উল্লেখ আছে
وأنبه إلى أن األمر واسع كما قال ابن قدامة .،وال يجوز التعصب لرأى من اآلراء ،والخالف
والتنازع فى هذه الهيئة البسيطة مع عدم االهتمام بالخشوع الذى هو روح الصالة واألساس األول فى
قبولها عند هَّللا ،هو ظاهرة مرضية ال صحية .واإلسالم قد نهى عن الجدل وبخاصة فى هذه الهيئات
البسيطة
“স্বরণ রাখা প্রয়োজন যে এখানে মাসয়ালা প্রসস্ত যে রকম আল্লামা ইবনে কুদামা
বলেছেন যে এখানে কোন একটি রায়ের উপর অটল থাকা জায়েয হবেনা। আর
নামাজের আসল রুহ এবং কবুল হওয়ার আলামত তথা খুশু এর দিকে দৃষ্টিপাত
না করে এ সব নিয়ে ঝগড়া করা (হাত কোথায় রাখব) একটি প্রকাশ্য রোগ। আর
ইসলাম বিশেষভাবে এ সমস্ত ব্যাপারে ঝগড়া করা থেকে সম্পূর্ণ নিষেধ করে
দিয়েছে। (সুত্র Click This Link
ومن هنا فوضع اليدين في الصالة على أي صورة سنة من سنن الصالة ال تبطل بفقدها ،وال ينبغي أن
يكون هذا الخالف الفقهي بين المذاهب مدعاة للتفرقة والشحناء والبغضاء ،فاألمر فيه واسع ،وال
.داعي لتخطئة أي فريق
“নামাযে যে কোন জায়গায় হাত রাখলে সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে, তার দ্বারা
নামাজের কোন ক্ষতি হবেনা। মাযহাবগত এই মতবিরোধ যাতে মানুষের মধ্যে
দলাদলি,হিংশা এবং বিদ্বেষের কারণ না হয় সে দিকে সবার লক্ষ রাখা উচিত।
কারণ এখানে মাসয়ালা প্রসস্ত এবং কোন দল কে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করা উচিত
হবেনা”।
فليس هناك من المذاهب األربعة يذهب إلى وضع اليدين على الصدر .قال اإلمام الذهبي رحمه هللا( :ال
يكاد يوجد الحق فيما اتفق أئمة اإلجتهاد األربعة على خالفه ،مع اعترافنا بأن اتفاقهم على مسألة ال
يكون إجماع األمة ،ونهاب أن نجزم في مسألة اتفقوا عليها بأن الحق في خالفها) سير أعالم النبالء
7/17 .
فمن أين جاءنا وضع اليدين. وعلى هذا درج الناس إلى وقت غير بعيد،وال النحر في القيام في الصالة
على الصدر أو على النحر في الصالة؟
في ظني أن أول من ظهر بهذا بعض المشتغلين بالحديث الشريف بالهند والمتحاملين على المذاهب
ثم انتقل هذا األمر إلى بالد.. أرادوا أن يتميزوا عن أتباع المذاهب األربعة في صفة الصالة،األربعة
فذكر هذا في بعض، وظن بعض الناس أن هذا من اجتهاداته وفرائده،الشام فأخذها مشتغل بالحديث
كتبه وقسا على من يخالفهم.
“চার ইমামের কোন ইমাম বুকের উপর হাত বাধতে বলেননি। প্রখ্যাত আলেম
আল্লামা যাহবি বলেন চার ইমামের মতের বাহিরে হক থাকতে পারেনা,চার ইমাম
যে বিষয়ের উপর ঐক্যমত্য পোষন করেছেন তার বাহিরে হক থাকার বিশ্বাস করা
কে আমরা ভয় করি। (সিয়ারে আলামুন নুবালা ৭ম খন্ড ১৭পৃ)
মানুষ চার ইমামের কথার উপর বহুদিন ধরে আমল করে আসছে, সুতরাং নামাজে
বুকের উপর হাত রাখা কোথা থেকে আসল?
আমার ধারণা মতে, ভারতে মাযহাবের বিরোধিতাকারি কিছু লোক এই কাজ শুরু
করেছে এবং তাদের আসল উদ্দেশ্য হল নামাজের ক্ষেত্রে চার ইমামের বিরোধিতা
করা।তারপর ধিরে ধিরে এই কাজ সিরিয়ায় চলে গিয়েছে এবং সেখানকারর কিছু
লোক এটি গ্রহণ করেছে এবং কিছু লোক মনে করল যে এটা তারা ইজতিহাদ করে
বের করেছে। (http://www.masjidsalahuddin.com)
আমার জানা মতে শায়খ নাসিরুদ্দিন আল্বানি নামাজে বুকের উপর হাত রাখতে
বলেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে শায়খ নাসিরুদ্দিন আল্বানি হাম্বলি মাযহাবের
অনুসারী ছিলেন (সুত্রঃ ওয়েকেপেডিয়া) তবে তিনি এখানে এসে স্বীয় মাযহাবের
বিরোধিতা করেছেন এবং বুকের উপর হাত বাধতে বলেছেন।
এখানে যেহেতু তিনি স্বীয় মাযহাবের বিরোধিতা করেছেন তাই এটি তার ব্যাক্তিগত
ব্যাপার যাকে ফিকাহের ভাষায় তাফাররুদাত বলে। ফোকাহায়ে কেরামের উসূল
হল কেহ যদি স্বীয় মাযহাবের বিরোধিতা করে ভিন্ন মত পোষণ করে তাহলে তার
কথা অণ্যান্যদের জন্য দলীল হতে পারেনা। তাছাড়া ফোকাহায়ে কেরামদের ৭টি
স্থর আছে ৬০০ হিজরির পরে যারা এসেছেন তারা সবাই ৭ম স্থরের। এবং পরের
যুগের কোন ফকীহের কথা ততক্ষন গ্রহণযোগ্য হবেনা যতক্ষন সে পূর্ববর্তী
ফকীহদের কথার রেফারেন্স না দেয়। (শরহে উকূদে রাসমুল মুফতি)
শায়খ আলুবানি সম্পর্কে সৌদি আরবের প্রাক্তন গ্রান্ড মুফতি আল্লামা বিন বায (র)
কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন-
من خيرة الناس وهو من العلماء المعروفين-الشيخ محمد ناصر األلباني –ناصر الدين األلباني
ولكن, وبيان حالها فهو عمدة في هذا الباب,باالستقامة والعقيدة الطيبة والجد في تصحيح األحاديث
, ولكن مثل غيره من العلماء, قد يقع منه خطأ في تصحيح بعد األحاديث أو تضعيفها,ليس بمعصوم
فالواجب على طالب العلم أن ينظر فيما,كل عالم هكذا له بعض األخطاء من األولين واآلخرين
من أهل الصناعة يعرف الحديث وينظر في طرقه,صححه وحسنه وضعفه إذا كان من أهل العلم
من األدلة..………… وإال اعتمد,وينظر في رجاله فإن ظهر له صحة ما قاله الشيخ فالحمد هلل
التي سلكها أهل العلم في هذا الباب؛ ألن أهل العلم وضعوا قواعد في تصحيح األحاديث وتضعيفها
“শায়খ নাসিরুদ্দিন আল্বানি প্রসিদ্ব হাক্বানি আলেম ছিলেন কিন্তু তিনি মাসুম নন,
কিছু কিছু হাদিস কে ছহীহ এবং যয়ীফ বলার ক্ষেত্রে তার ভূ ল হয়েছে, যে রকম
অণ্যদের হয়। সাধারণত এ রকম ভূ ল সবারই হয়ে থাকে। সুতরাং আলেমদের
উপর ওয়াজিব শায়খ আলবানি যে সমস্ত হাদিস কে ছহীহ অথবা জয়ীফ বলেছেন
সে গুলোর ব্যাপারে গবেষনা করা,যাচাই বাচাই করা, যদি শায়খ আলবানির কথা
সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে আলহামদুলিল্লাহ, অণ্যথায় ওলামায়ে কেরাম দলীলের
আলোকে যেটি বলেছেন সেটি গ্রহণ করবে। কারণ মুহাদ্দিসিন কেরাম হাদিস ছহীহ
এবং যয়ীফ বুঝার জন্য কায়েদা প্রনয়ন করেছেন।(সূত্র http://www.al-
sunan.org)
আল্লামা বিন বায শাইয়খ আলবানি রচিত “ছিফাতু স সালাত” নামক কিতাবের ও
কিছু ভূ ল ধরেছেন এবং সে গুলোর সংশোধন করে দিয়েছেন। বিস্তারিত জানতে
উপরের ওয়েবসাইটটি দেখুন।
আল্লামা বিন বাযের উক্ত উত্তর থেকে আমরা অনুধাবন করতে পারি যে শাইয়খ
আলবানির সব কথা দলীল নয়, বরং সে গুলোর ব্যাপারে গবেষনা করা প্রয়োজন।
সে হিসাবে বুকের উপর হাত রাখা এটি তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। এটি কখনো
অন্যদের জন্য দলিল হতে পারেনা।
পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল মানুষ হল আমার যুগের মানুষ (অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম)
এরপর হল তাবেইনগণ এরপর তাবয়ে তাবেয়িনগণ।
উপরোক্ত তিন যুগের জন্য রসূল (স) সার্টিফিকেট প্রদান গিয়েছেন। সুতরাং এর
পরে যত বড় আলেম আসুক না কেন, তার কথা কখনো কারও জন্য দলীল হতে
পারেনা। যদি কেহ সেটি কে দলীল হিসাবে নিতে চায় তাহলে সে পথভ্রষ্ট হবে।”
উপরের আলোচনার দ্বারা আমরা বুঝতে পারি যে নাভীর নিচে অথবা নাভীর
উপরে (বুকের নিচে) হাত রাখা উভয়টি রসূল (স) এর সহীহ হাদিস এবং সাহাবায়ে
কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। যে কোন একটির উপর আমল করা যাবে তবে
দলীলের দিক দিয়ে নাভীর নিচে হাত রাখা অধিক শক্তিশালী। এর বাইরে কোন
আমল রসূল (স) থেকে প্রমাণিত নাই। তাছাড়া এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা, একে
অপরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা অজ্ঞতা এবং স্বজনপ্রীতি ছাড়া আর কিছু নয় যা
আমরা উপরের আলোচনা দ্বারা বুঝতে পেরেছি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে সহীহ সুন্নাহ অনুযায়ি আমল করার এবং যাবতীয়
ফিতনা থেকে বেচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন!
—————————————————–
Share this:
Comment
Name *
Email *
Website
Post navigation
PREVIOUS দ্বীনের ঝান্ডাবাহী তাবলীগ জামাত নিয়ে বানানো প্রতারণামূলক
একটি কথিত হাদীসের তাহক্বীক (স্কিনশট সহ)
NEXT ফাযায়েলে হজ্জে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কবর থেকে হাত বের হওয়ার
ঘটনা নিয়ে লা-মাজহাবীদের অপপ্রচার এবং আমাদের দাঁ ত ভাঙ্গা জবাব
TEXT WIDGET
This is a text widget. The Text Widget allows you to add text or
HTML to your sidebar. You can use a text widget to display text,
links, images, HTML, or a combination of these. Edit them in the
Widget section of the Customizer.
Search for:
RECENT POSTS
Privacy & Cookies: This site uses cookies. By continuing to use this website, you agree to their use.
To find out more, including how to control cookies, see here: Cookie Policy