You are on page 1of 2

এসাইনমেন্ট ১:

“আসসালামুয়ালাইকু ম স্যার, কালকে কয়টায় ডিউটি স্যার?”

আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গাড়ির মালিক এবং ড্রাইভারদের মধ্যকার সম্পর্ক টা বেশ বিতর্কি ত এবং কিছুটা আপেক্ষিক
বটে। আমাদের দেশে খুব কমই দেখা যায় যে মালিক এবং ড্রাইভারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা
যায় যে গাড়ির মালিক এবং ড্রাইভারদের মধ্যে বনি-বনা হয় না, এবং তারা একে অপরের সঙ্গে চটাচটি এবং ঝগড়ায় লিপ্ত।

এই বিষয়টা নিয়ে উভয়দিকেই অনেকগুলো সমস্যা আছে। প্রথমত, আমাদের দেশের বেশিরভাগ ড্রাইভার ভাইয়েরা
অধিকাংশ সময়ই সততার পরিচয় দিতে পারে না। তারা বিভিন্ন ধরণের সুযোগ খুঁজতে থাকে কিভাবে বেআইনি ভাবে কিছু
অতিরিক্ত টাকা উপার্জ ন করা যায়। এরপর যখন গাড়ির মালিকেরা এগুলো ধরে ফেলে, সেটার পরিণতি খুব একটা ভালো হয়
না।

আবার অন্যদিকে অনেক গাড়ির মালিক আছেন যারা সচরাচর ড্রাইভারদের সঙ্গে খুব একটা ভালো আচরণ করেন না। অনেক
সময় অঢেল সম্পদ থাকার ফলে মালিকেরা নিজেদেরকে অনেক বড়ো মনে করে, এবং ড্রাইভারদেরকে তাচ্ছিল্যর চোখে
দেখে। তারা ড্রাইভারদেরকে সকাল থেকে রাত অবদি ডিউটি করান কিন্তু সেই অনুযায়ী তাদেরকে বেতন দেন না। এর ফলে
যেটা হয় সেটা হলো ড্রাইভাররা অন্যান্য অসৎ পথে টাকা উপার্জ ন করার দিকে ঝুঁকে যায়।

এছাড়াও কোন ধরনের জরুরী কাজে ড্রাইভার যদি ছুটি চায়, মালিকেরা দেখা যায় কোন ভাবেই ছুটি দিতে রাজী হয়না। এতে
ড্রাইভার ভাইয়েরা তাদের কাজে অমনোযোগী হয়ে পড়ে, গাড়ি চালাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, এবং মালিকদের প্রতি
স্বাভাবিকভাবেই বিরক্ত হয়ে পড়ে। এতে পরস্পর পরস্পরের প্রতি সম্মান হারিয়ে ফেলে এবং বিভিন্ন ধরনের বাকবিতণ্ডায়
জড়িয়ে পড়ে।

আবার এমনও দেখা যায় যে একজন গাড়ির মালিক যখন একজন ড্রাইভার কে চাকরি দেয়ার আগে প্রশ্ন করে যে তারা কত
বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত আছে, অনেকেই একদম নতু ন হওয়া সত্তেও অনেক বছরের অভিজ্ঞতা আছে বলে দাবি করে।
কিন্তু পরে যখন গাড়ি চালানোর সময় আসে, দেখা যায় যে হয়তো সেই ড্রাইভার ঠিকমতো গিয়ার প্লেসমেন্টও করতে পারে না,
এমনকি, রাস্তাঘাটও অনেক সময় ঠিক মতো চিন্তে পারে না। এর ফলে, গাড়ির মালিকেরা স্বাভাবিকভাবে প্রচণ্ড রেগে যায়,
এবং ড্রাইভারের সঙ্গে বাজে আচরণ করে বসে।

তবে সব মালিক এবং ড্রাইভেরদের মধ্যেই যে এমন দা-কু মড়ো সম্পর্ক সেটা বললেও ভু ল হবে। এমনও অনেক উদাহরণ
রয়েছে যে একজন ড্রাইভার একটি মালিকের গাড়ি ১০, ১৫ এমনকি ২০ বছর যাবতও চালায়। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় যে
মালিক এবং ড্রাইভারের মধ্যেকার সম্পর্ক টা খুব্ই অন্তর্দৃ ষ্টিসম্পন্ন হয়। এই ধরনের গাড়ির মালিকেরা তাদের ড্রাইভারদের সঙ্গে
কখনো কোন ধরনের বাজে আচরণ করে না। তারা ঠিকমতো তাদের মাসিক বেতন তো দেয়ই, বরং দরকারে বা বিপদ-আপদে
সব সময় তাদের পাশে থাকে। যার ফলে, ড্রাইভার ভাইয়েরাও উৎফু ল্ল মনে তাদের কাজ করার তাগিদ পায়, এবং কোন ধরনের
অসৎ উপার্জ ন করার চেষ্টা করে না।
প্রত্যেকটা গাড়ির মালিকেরই উচিত তাদের ড্রাইভারদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা, এবং তাদের সুখে-দুঃখে সবসময় তাদের
পাশে থাকা। পাশাপাশি, ড্রাইভের ভাইদেরও উচিত কর্মক্ষেত্রে তাদের মালিকদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা, এবং সম্পূর্ণ
সৎভাবে নিজের জীবনকে পরিচালনা করা। তাহলেই আমাদের দেশের সকল ড্রাইভার ভাইয়েদের এবং তাদের গাড়ির
মালিকদের মধ্যেকার বোঝাপড়া অটু ট থাকবে।

You might also like