You are on page 1of 2

ত্রিফলা কি?

ত্রিফলার গুণাবলি
ত্রিফলা হল প্রাচীন আয়ুর্বেদের অন্যতম মূল্যবান ফর্মুলা বা
concoction এবং আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এটা এখনও
প্রাচ্যের মেডিসিনের থেকে বেশি কার্যকরী। ‘ত্রিফলা’ নামের
আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘ তিনটি ফল’ আর নামের সার্থকতা
প্রমান করে এটা হরিতকী, বহেরা আর আমলকী এই তিনটি
ফলের শুকনো গুঁড়া দিয়ে তৈরি। এই ফলগুলোর
প্রত্যেকটিরই স্বাস্থ্য, ত্বক ও চু ল রক্ষায় আছে অসামান্য
ভূ মিকা কিন্তু প্রাচীন আয়ুর্বেদের মতে যখন এদের একত্রে
ব্যবহার করা যায় এদের গুণ হাজার গুনে বাড়ে, আর এই
ধারণা থেকেই ত্রিফলার উতপত্তি। **স্বাস্থ্য রক্ষায় ত্রিফলাঃ
মানব দেহের বর্জ্য নিষ্কাশন করা আর ডিটক্সিফাই করায়
ত্রিফলার মোকাবেলা আর কেউ করতে পারবে না। ত্রিফলা দেহের ভারসম্য বজায় রাখে, দেহ পরিষ্কার রাখে আর
প্রয়োজনীয় ভিটামিন আর মিনারেলস দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে হাই কোলেস্টেরল লেভেল আর আরথাইটিসের ঝুঁকি
কমাতে ত্রিফলা ভূ মিকা রাখে। ত্রিফলার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে আর বদহজম জনিত সমস্যা
দুর করে। শরীরে ফ্যাট সেল জমতে না দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। অন্ত্রের সব বর্জ্য দূর করে খাবার থেকে
পুষ্টি গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়ায়। লিভার পরিষ্কার রাখে আর ডিটক্সিফাই করে। গলব্লাডার আর কিডনির পাথর হবার
সম্ভবনা দূরে রাখে। এর উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। বাচ্চাদের সিসনাল
রোগ দূরে রাখতে সহায়তা করে। **ত্বক, চু ল ও চোখের জন্য ত্রিফলা : ডিটক্সিফাই করে আর শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ
প্রত্যঙ্গ ভালো রেখে ত্রিফলা ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়। সুস্থ দেহের প্রতিফলন চেহারায় তো ফু টে উঠবেই। দেহে টক্সিন
জমার কারণে হওয়া চর্মরোগ যেমন ব্রণ, হোয়াইট হেডস দূরে রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ব্রণের সমস্যা কমিয়ে আনে
এবং টিন এজের ব্রণের সমস্যা দূরে রাখে। **ত্রিফলার কতিপয় গুণাবলী : আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গবেষণা
প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিফলা-র উপর গবেষণা হচ্ছে। ত্রিফলার অনেক গুণাবলী আজ আমাদের কাছে প্রমাণিত।
নিম্নে এর কতিপয় গুণাবলী দেয়া হলো- হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহে রক্ত সঞ্চালন
বাড়ায় রক্তচাপ কমায় হৃদরোগ কমায় রক্তে কোলেস্টরল কমায় যকৃ ত বা লিভারের রোগ প্রতিরোধ করে লিভারের পিত্ত
(Bile) নিঃসরণ বাড়ায় কফ্ নিঃসরণ করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ওজন হ্রাস করে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ কর

আমলকি, হরিতকি এবং বহেড়া এই তিনটি ফল একত্রে বলা হয় ত্রিফলা। ত্রিফলার গুনাগুন- আমলকীঃ আমলকীর
প্রধান অন্তর্নিহিত গুণ হচ্ছে-বায়ু, পিত্ত এবং কফের যে কোনটির বা সবগুলির বিকৃ তিকে স্বাভাবিক করে দেয়। এ ছাড়া
শরীর রক্ষা করার জন্য এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে পরিচিত প্রধান উপাদান ভিটামিন সি আছে প্রচু র পরিমাণে যা অন্য কোন
ফলে নেই। এর রস- (ক) অকালবার্ধক্য প্রতিরোধ করে (খ) পেট পরিস্কার রাখে (গ) খাদ্য অরুচি থাকলে দুর করে (ঘ)
শরীরের কোষ মধ্যস্থ টক্সিন পদার্থ রূপান্তরিত করে অধিকতর সক্রিয় করে পুনরায় তরুন করে দেয়। একক ফল হিসাবে
আমলকীতে সর্বাধিক গুণ থাকায় এটি বিভিন্ন রোগ নিরামক হয়ে আসছে তার কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্র- ১। এসিডিটি:
খাদ্যের কারণে একবার এসিডিটি হলে পিত্তবিকৃ তি হয়ে হজম প্রক্রিয়ায় নানা রকম গোলযোগ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে শুকনা
আমলকি ৩-৪টি এক গ্লাস পানিতে পূর্বদিন রাতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন দুপুরের খাওয়ার পর পানির পরিবর্তে এই পানি
পান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে আমলকি কোন ধাতু রপাত্রে ভেজান যাবে না। কাঁচের গ্লাসে ভেজান উত্তম। ২।
জ্বরঃ জ্বর কিছুতেই ছাড়তে চায় না। ১ চা চামচ আমলকীর রসে সামান্য ঘি মিশিয়ে খেয়ে এক গ্লাস/কাপ কু সুম গরম
পানি পান করতে হবে। তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর ৩ বার গ্রহণ করলে জ্বর উপশম হবে। ৩। প্রস্রাব বিকৃ তি: প্রস্রাব সংক্রান্ত
যে কোন রোগে আক্রান্ত এমনকি ডায়েবেটিস হলে ৩-৪ টি আমলকী কাঁচা অথবা শুকনা পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে সেই
পানি দিনে ২-৩ বার পান করতে হবে। ৪। হিক্কায়: আমলকীর রস ১
চা চামচ অথবা শুকনা আমলকীর ভেজান পানিতে ১/৪ চা চামচ
মধু এবং ২ গ্রাম পিপুল পাউডার মিশিয়ে খাওয়ালে হিক্কা বন্ধ হয়।
৫। শ্বেত প্রদর (খবঁপড়ৎৎযড়বধ): যে কোন বয়সের মেয়েদের শ্বেত
প্রদর দেখা দিলে ছোট দুটো কাঁচা আমলকীর রস একটু চিনি অথবা
মধুসহ খেতে হবে। কাঁচা রস না হলে শুকনা আমলকী পাউডার
১/৪ চা চামচ পরিমাণ চিনি অথবা মধু দিয়ে খেলেও কাজ হবে। ৬।
যে কোন পিত্ত বিকৃ তিতে/এসিডিটিঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে
৪ গ্রাম আমলকী পাউডার এবং ১ গ্রাম নিমপাতা পাউডার ১ কাপ
পানিতে মিশিয়ে পান করলে কিছুদিনের মধ্যেই এই রোগ প্রশমিত
হবে। ৭। বাচ্চাদের পেট ব্যথায় : আমলকী এবং থানকু নি পাতা
সমপরিমাণ বেঁটে পেটে লাগালে পেট কামড়ানি কমে যায়।

You might also like