You are on page 1of 10

পাটের নতু ন সম্ভাবনা | New Possibilities of Jute.

Writer:

Zobayer Hossain Noyon

SKTEC

Content Manager & Head of RA, বুনন-Bunon

বাংলাদেশের পাট কোয়ালিটির দিক দিয়ে বিশ্বে তৃ তীয় অবস্হানে আছে। ভালো পাট উৎপাদনের জন্য
যথেষ্ট অনুকূ ল পরিবেশ আছে। আমরা চাইলে আমরা পাটখাতকে ব্রান্ডে পরিণত করতে পারি। দেশে
এখন প্রায় ২৫ লক্ষ টন পাট উৎপাদন হচ্ছে এবং এই সেক্টর থেকে আমরা ৭০০ কোটি টাকা আয়
করতে পারছি বাৎসরিক। আমরা এখনো বস্তা,ছালা, চটের ব্যাগ এসব পণ্য এখনো বাজার জাত
করছি। হাজারো পণ্য নির্মাণ হচ্ছে হচ্ছে এখন পাট দিয়ে। কার্পেট থেকে সর্বাধুনিক উড়োজাহাজের
অঙ্গসজ্জা কিংবা বিলাসবহুল গাড়ির ভেতরটা নির্মাণ হচ্ছে একসময়ের সোনালি আঁশে। পাটের
শপিংব্যাগ, পলিথিনসহ ২৮১ ধরনের পাটপণ্য উৎপাদিত হচ্ছে দেশে। বহুমুখী এসব পাটপণ্যের
রপ্তানি থেকে আসছে বৈদেশিক মুদ্রাও।২০১৮ – ২০১৯ অর্থবছরে পাটজাত পণ্য রপ্তানিকরে
আমাদের আয় হয় $৪২.১০ কোটি ডলার। এদিকে ২০১৯ অর্থবছরে পাট থেকে আয় হয় $৫১.১৭
কোটি ডলার। পজিটিভ প্রবৃদ্ধি।
বর্ত মানে ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশ পাটের আঁশের সঙ্গে অন্যান্য ন্যাচারাল ফাইবার ও পলি
প্রোপাইলিন যুক্ত করে নানান জিনিস তৈরি করছে। জুট ফাইবারের সঙ্গে কটন ব্লেন্ডিং করে তারা হোম
ফার্নিশিং ও হোম টেক্সটাইল পণ্য তৈরি করছে।নামকরা ও জনপ্রিয় গাড়ির ব্র্যান্ড মার্সিডিজ,
বিএমডব্লিউ, ফোর্ড , টয়োটা, টেসলা, মিৎসুবিসি পাটের ফাইবার ব্যবহার করে ইন্টেরিয়র কম্পোনেন্ট
তৈরি করছে। এমন বহুমুখী অনেক পণ্য হচ্ছে পাট দিয়ে।তাই বলা যায়, ছালা ও বস্তার সেই যুগ
পেরিয়ে এখন পাট থেকে হচ্ছে দারুণ সব নজরকাড়া পণ্য। শোপিস থেকে শুরু করে স্যুট, ব্লেজার,
শাড়ি- কী হয় না! পাটপাতার চা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

আকর্ষণীয় পোশাকের পাশাপাশি হোম টেক্সটাইল, কম্বল, পাটের পলিথিন ব্যাগ, ঢেউটিন, গহনা,
অফিস ফাইল, ব্যাগ, পেপার অ্যান্ড পাল্প, ফেব্রিক, পেইন্টস, প্রসাধনীর কাঁচামাল ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে।
নানা প্রতিকূ লতার মধ্যেও যেসব উদ্যোক্তা এ খাতে কাজ করছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ক্রিয়েশন,
ক্ল্যাসিকাল হ্যান্ডমেইড প্রডাক্টস বিডি, গ্রিনফিল্ড জুটেক্স, কোর দ্য জুট ওয়ার্ক স, তরঙ্গ, ওয়ান ওয়ার্ল্ড
এক্সিম, মনি জুট গুডস হ্যান্ডিক্রাফটস, জুট ল্যান্ডস, জুটেক্সকো, গ্রিন আর্থ কটেজ, অনন্য জুট
ফেব্রিক্স অ্যান্ড হ্যান্ডিক্রাফটস, ব্যাগ বাজার ইত্যাদি।
আন্তর্জাতিক জুট স্টাডি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে শুধু শপিংব্যাগের বার্ষিক চহিদা প্রায় ৫০০
বিলিয়ন পিস। অন্যদিকে বিজনেস ওয়্যারের প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২২ সালে হোম গার্ডে নিং ও
ভার্টি ক্যাল গার্ডে নিংয়ের বাজার হবে এক হাজার ৩৩২ বিলিয়ন ডলার। ফ্যাশন, লাইফস্টাইল ও
অ্যাপারেল বাজার হবে ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজার
হবে ১৭০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭ সালে প্যাকেজিং খাতের বাজার ছিল ৮৫১ বিলিয়ন ডলারের।
২০২১ সালে হোম টেক্সটাইলের বাজার হবে ১৩০ বিলিয়ন ডলার এবং জুট ব্যাগের ২ দশমিক ৬
বিলিয়ন ডলার। এসব খাতে পাটের বহুমুখী ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এদিকে নজর দিলে
বাংলাদেশও বড় অঙ্কের অর্থ আয় করতে পারবে।

ইন্টারন্যাশনাল জুট স্টাডি গ্রুপের পর্যবেক্ষণ, টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের আওতায় জুট ফাইবার
ব্যবহারের মাধ্যমে এ খাতে নতু ন দিগন্ত উন্মোচন হতে পারে।এখনও প্রচলিত পণ্য (কাঁচা পাট, বস্তা,
ব্যাগ, পাটের সুতা) থেকেই আসে বেশির ভাগ আয়।
পাটখাতের যথাযথ পরিচর্যা করলে এখনে এই পাট দেশের অর্থনীতির হাল ধরবে এতে সন্দেহের
অবকাশ নেই। রিসেন্ট কিছু পাটের ইনোভেশন আমাদের চমকে দিয়েছে তারমধ্যে পাট পলিথিন,
জুটিন, পাট পাতার চা এগুলোকে আমি দেশের প্রধান ইনোভেশন হিসেবে ধরে নেই৷ এগুলো
ইনোভেশন যথাযথ পরিচর্যা করলে ৭০০ কোটির পরিবর্তে ৩০০০ কোটি আয় করতে পারবো এতে
সন্দেহ নেই।

পুরো দুনিয়া পরিবেশ বান্ধব সাসটেইনেবল সলিউশনের দিকে তাকিয়ে আছে। পলিথিন ও প্লাস্টিকের
অন্যতম রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে পাটের ব্যবহার করা যেতে পারে। উদ্যোগক্তা ও পাটের বড় বড়
কর্মকর্তারা একটু নড়েচড়ে বসলে বড় সম্ভাবনার হাতছানি আমরা ধরে নিতে পারি। আমি নিজেই পাট
নিয়ে কিউরিয়াস। আমার মনে হয় পাটের উজ্জ্বল দিন আমি কাছ থেকে দেখছি। সাসটেইনেবল সব
পণ্য দিয়ে পৃথিবীকে চমকে দিচ্ছি। আমার নিছক স্বপ্ন বাস্তবায়নের মত পদ পদবী হয়তো আমার নেই।
কিন্তু দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি আছে। আসুন না পাট নিয়ে একটু ভাবি। পাট নিয়ে কাজ করি। প্লাস্টিকের এই
বিকল্পকে কাজে না লাগাতে পারলে আবার অন্য কোনো দেশ মার্কে ট দখল করে নিবে। আর আমরা
দূর থেকে শুধু আপসোস করবো।

You might also like