You are on page 1of 7

সন্ন্যাসী সংবাদ

একটি মৃতদেহের সঙ্গে লাগাতার তিনদিন দৈনিক পাঁচবার হারে ধর্ষণের পর বীরবল ব্রহ্মচারীরর মনে

হল ঢের হয়েছে, এবার একটা জ্যান্ত মানুষের বাচ্চা না জুটলেই নয়। অথচ টানা তিনদিন সহবাসের

পর বেনামি মৃতদেহটির ওপর খানিকটা মায়াই যেন পড়ে গিয়েছিল ব্রহ্মচারীর - মানুষ বলে কথা

তো, এখন না হোক কোনও এককালে এর শরীরেও তো বয়ে যেত সাঁতারু রক্তের টলোমলো স্রোত!

তখন নিশ্চয়ই ব্রহ্মচারীকে নীরব নির্বিরোধী সম্মতির বদলে পোহাতে হত গোটা একটা মানুষের

অস্বাভাবিক আঁচড়কামড় - ঠেকে শিখে নিতে হত ধর্ষকামের প্রসিদ্ধ প্রথাসিদ্ধ আদবকায়দা। কিন্তু সে

সুযোগ আর ব্রহ্মচারী পেল কই! দেখামাত্রই মাথায় বাঁশের আঘাতে যেই না এই কন্যাকে বেশ কাবু

করা গেছে বলে মনে হল ব্রহ্মচারীর, সেই মুহুর্তে ই তার আত্মারাম দেহখাঁচার বাইরে বেরিয়ে

জলাজংলার অথবা নিঃশেষিত কচু বনের দিকে কয়েকশো মাইল গতিবেগে এমন ছু ট লাগাল যে

ব্রহ্মচারী হতবাক! এত কব্জির জোর এই মাগীর? অগত্যা মনের সাধ মনে রেখে, জবরদস্তির যাবতীয়

স্বপ্নবিলাসের টুঁ টি চিপে তাকে মনপুট


ঁ ু লির এককোণায় সাবধানে গুছিয়ে রেখে, ব্রহ্মচারী তৃ ষার্ত শরীরের

স্বর্গীয় সাধ মেটানোর কাজে অভিনিবেশ করতে বাধ্য হল। লিবিডোকে কাবু করতে শেখেনি

ব্রহ্মচারী। বরঞ্চ লিবিডোর উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্বোধনে আজীবন বাহাদুরিই কুড়িয়ে এসেছে।

ঐ দ্যাখো বীরবল

মদনের চ্যালা

ছোট হোক খাটো হোক

লিঙ্গেরে কখনও

করিয়োনা হ্যালা

ব্রহ্মচারী উপাধিটা তার পিতৃ দত্ত নামের সঙ্গে কখন যে লেজুর হয়ে জুড়ে গিয়েছিল -- বিদ্রুপের না,

বাহাদুরিরর-ই উৎকৃ ষ্ট খেতাব হিসেবে -- তাও আর মনে পড়ে না ব্রহ্মচারীর।

সেসব অতীতের কথা। ইন্দ্রিয়মুগ্ধ বর্ত মানে অতশত অতীতচারনা বিশেষ কোনও ঢেউই তোলেনা

ব্রহ্মচারীর বুকে। অত ঢঙ পোষায় না তার। যা পাও তাই খাও - চর্বচোষ্যলেহ্যপেয়, এমনকি

আঁটিটাকে অব্দি ছিবড়ে করে ছেড়ে দেওয়াটাই প্রতিটি স্বধর্মনিষ্ঠ মানুষের ঐকান্তিক লক্ষ্য হওয়া

যুধাজিৎ সরকার Page 1


উচিত - এই হল ব্রহ্মচারীর গুরুমন্ত্র, তার সাধ্যসাধনপন্থা । অত ছুঁ চিবাইয়ের কী আছে, ছুঁ য়াছুঁ তের কী

আছে - বোঝেনা সে। শেয়ালডাকা অন্ধকারে নিজের মনে মনেই আলতো উচ্চারণে সে মন্ত্র বাঁধে -

যা পাও তাই খাও

ছাড়িয়োনা আঁটি

রক্ত গরম খাও

দেহটারে কাটি

ছাড়িয়োনা যোনিমূল

উহারেও খাও

হস্ত নিষেধ যেন

না মানে কোথাও

হঠাৎ নিজের ওপর ভয়ানক ক্রোধ হয় ব্রহ্মচারীর। বড়োমুখ করে যে মন্ত্র সে এক্ষু নি এক্ষু নি

উচ্চারণ করল, তার প্রতিটা কথা হরফে হরফে সেও কি মেনে চলেছে? মেনে চলছে? আত্মপক্ষ সমর্থনে

কী প্রমাণ হাজির করতে পারবে সে? এই যে তিনদিনকার লাশ - আলুথালু শ্রাবণী জ্যোৎস্নায় মরা

স্ত্রীলোকের উচ্ছ্বল শবদেহটির দিকে আড়চোখে কটমট করে তাকায় ব্রহ্মচারী - একে তো এতক্ষণে

চেটেপুটে কামড়েখিমচে হজম করে ফেলবার কথা ছিল তার! পেরেছে কি সে? আর যদি না পেরে

থাকে তবে কোন মুখে সে উচ্চারণ করে এই মন্ত্রজমাট বিশুদ্ধ বাক্য? এই অপরাধে নিজেই নিজের

জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে ফেলবার কথা নয় কি তার?

কোদালে দাঁতে নিজের জিভে সাংঘাতিক একটা কামড় বসাতে গিয়েও থেমে যায় ব্রহ্মচারী। তার

নাকে এসে লাগে জগতপৃথিবী তোলপাড় করা বুকতাতানো একটা খুশবু। কোথা থেকে? কোথা থেকে

আসে এই সুগন্ধ? ছটফটিয়ে চারপাশে বেড়ালচোখে তাকায় ব্রহ্মচারী। কোথায়, কোথায় এই

প্রাণমাতানো সমস্তকিছু ভু লিয়ে দেওয়া গন্ধের উৎস? শ্রাবণী জ্যোৎস্নার ভরপুর ময়দানে আঁতিপাঁতি

করে সেই সুগন্ধের তাল্লাশ করে বেড়ায় ব্রহ্মচারী। যতই সে উৎসসন্ধানে আরও বেশি করে হাবুডুবু

খায়, জোলো বাতাসের আজগুবি ঝাপটে ততই প্রবলতর হয়ে উঠে তার নাকে এসে লাগে অই গন্ধ।

তাকে উশকে তোলে। নাকের ছিদ্র দিয়ে ঢু কে পড়ে সেই গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে তার সমস্ত শরীরে। ঢোঁক

গিলতে গিয়ে আবিষ্ট লাগে তার। বুকভরা কফ আর শ্লেষ্মা তার গলায় এসে জমাট বাঁধে। সুগন্ধ

যুধাজিৎ সরকার Page 2


ছড়িয়ে পড়ে তার প্রতিটা দেহকূপে, প্রত্যেক-কটা স্নায়ুকোষে। কাহিল হতে হতেও গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে

ব্রহ্মচারী। এতদিনকার চেনা প্রতিটা মানুষের মুখ মনে পড়ে তার। মনে পড়ে চোয়ালসন্ন্যাসীর কথা

- বাহাদুরিতে তাকে টক্কর দিতে পারে এমন কে-ই বা ছিল তামাম পৃথিবীতে এক চোয়ালসন্ন্যাসী

ছাড়া! তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে না পেরে কত হ্যাপাই না পোহাতে হয়েছে ব্রহ্মচারীকে।

তখন অবশ্য সে ব্রহ্মচারী নয়, শুধুই বীরবল -- সদ্য সদ্য সোয়াদ পেতে শিখেছে মহার্ঘ পুরুষকবচের,

তার গোটা সত্তা জুড়ে তখন সেই প্রথম আস্বাদনের আঁচ -- শেয়ালের ঠোঁটে খরগোশের প্রথম রক্ত

যেমন।

তা সেই চোয়ালসন্ন্যাসী তো প্রায় হাতিয়েই নিতে বসেছিল তার ব্রহ্মচারী খেতাবটু কু অব্দি। তার

স্পর্ধা দেখে তাজ্জব বনে যেত বীরবল। তাই সেই ভরবৈশাখি সন্ধ্যাবেলায় একহাট লোকের মাঝখানে

সামান্য একটা কঞ্চির প্রতাপে যখন সে খুবলে বের করে এনেছিল চোয়ালসন্ন্যাসীর শ্বাসনালীটা, অপূর্ব

শিহরণে রোমাঞ্চিত হয়ে উঠেছিল তার সমস্ত চেতনা। কী যেন একটা আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল তাকে।

ঠিক যেমন এখন তার সমস্ত দেহমনকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে এই চমৎকার নৈসর্গিক সুগন্ধের

হাওয়াটলোমলো বিস্তার। হোক না হোক এ নিশ্চয়ই সেই সেয়ানা চোয়ালসন্ন্যাসীর ষড়যন্ত্র। তাকে

একা পেয়ে সশরীরে পেরে উঠবে না জেনে এই সুগন্ধকে এখন সে তার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে, নিজে

গোপনে থেকে তাকে শায়েস্তা করবে, তাকে টিটকিরি দেবে বলে।

তন্নতন্ন করে খোঁজে ব্রহ্মচারী। আশপাশের প্রতিটা গাছের বাকলসুদ্ধ ছিঁড়ে নেয় সেই রোমাঞ্চকারী

অঘ্রাতপূর্ব খুশবুর উৎসসন্ধানে। কিন্তু কিছু তেই পায়না। কিছু তেই সে বুঝে উঠতে পারেনা আশমানের

কোন কোণায়, গাছের কোন ডালে অথবা চামড়ার কোন গোপন অতলে বসে চোয়ালসন্ন্যাসী এমন

একটানা ভড়কে চলেছে তাকে।

তারপর হঠাৎ তার চোখ যায় ওই বেনামী স্ত্রীদেহটির দিকে। আবিষ্কারের দমফাটা আনন্দে কঁ কিয়ে

ওঠে সে। পাওয়া গেছে, পাওয়া গেছে, তোমার সব ক্যারদানি ফাঁস হয়ে গেছে লো চোয়ালসন্ন্যাসী, সব

ক্যারদানি ফাঁস হয়ে গেছে। উত্তেজনার চোটে এ গাছে ও গাছে নিজের পিঁপড়েখাওয়া শরীরটা

বারকয়েক ঘষে নেয় ব্রহ্মচারী। সেই কর্ষনে তার নিজের শরীর ফের কিছু টা নিজের আয়ত্তে ফিরে

আসে। আর তারপর শুরু হয় তার আসল সন্ধান।

যুধাজিৎ সরকার Page 3


মরা মেয়ে লোকটার তামাম শরীর, শরীরের প্রতিটা রন্ধ্র, প্রতিটা অন্ধিসন্ধি, প্রত্যেকটা অন্ধ কানা

চোরা বাঁকা গলিতে নিজেকে উবুড় করে দেয় ব্রহ্মচারী। প্রতিটা জায়গার আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র

সমস্ত গন্ধ টের পায় সে। টের পায় এই বেনামি দেহটার প্রতিটা আকস্মিক মোচড়ে পাল্টে যাচ্ছ

তার গন্ধদুনিয়ার আরব্ধ ব্যাকরণ। নিজের নাকটাকে সেই মরদেহের ওপর-নীচ ডাইনে-বাঁয়ে ঘষটাতে

ঘষটাতে ব্রহ্মচারী কখনও পোড়া টায়ারের গন্ধ পায়, পেয়ে তার স্মৃতি ছলকে ওঠে কোনও উপভোগ্য

দাঙ্গার দৃশ্য; কখনও আবার সেই শরীরের প্রত্যন্ত পাণ্ডববর্জি ত কোনও এলাকা তাকে মনে করিয়ে দেয়

বেহায়া নারায়ণী বৈষ্ণবীর সুলতান নাপিতের সঙ্গে চু দুরবুদরে


ু র সময় কোমর থেকে খসে পড়া আর

তারপর সেইখানেই হ্যালায় ফেলে চলে যাওয়া ঘেমো সায়ার মেটে সুগন্ধ। নাভির আশপাশের যে

জায়গাটায় তিনদিনকার পচন এসে জমা হয়েছিল সেই উদ্ভিন্ন পচনশীল স্থানটাতে পৌঁছে ব্রহ্মচারীর

মাথার মধ্যে ভেসে ওঠে বাসি গেড়িগুগলির চচ্চড়ির জাদুই সুবাস। ব্রহ্মচারী শুঁকে চলে। এত

কিসিমের এত বিচিত্র সমস্ত গন্ধ গত তিনদিনের ঢালাও মন্থনের সময় কেন নজর কাড়েনি তার -

এই কথা তার এই মুহুর্তে মনে হওয়াটা নিজের কাছেই জরুরি বলে মনে হলেও, চড়া শ্রাবণী

জ্যোৎস্নায় এই যাবতীয় ভাবনার মেরুদণ্ড কাঁপিয়ে দিয়ে হাওয়াবাতাসের গর্ভি ণী জলীয় ঝাপটে বাকি

আর সবকিছু কে ছাপিয়ে তার নাকে স্থায়ী হয়ে থাকে ঐ তীব্র সুগন্ধের আনোখা রেশ। সেই রেশ

নাকে নিয়ে, চোয়ালসন্ন্যাসীর ভাঁড়ামো এই নাস্তানাবুদ করলাম ভেবে, যতই আগুপিছু করে ব্রহ্মচারী,

ততই সেই গন্ধের উৎস থেকে ক্রমাগত আরও আরও দূরে সরে যেতে থাকে সে। অন্তত তার

সেইরকমটাই মনে হয়।

চোয়ালসন্ন্যাসীর উদ্দেশ্যে চারটে কাঁচা খিস্তি চন্দ্রালোকিত আকাশের দিকে নিক্ষেপ করে পুনরায় স্বকর্মে

লিপ্ত হয় ব্রহ্মচারী। শুঁকতে থাকে। সেই শোঁকার চোটে পৃথিবীর যাবতীয় গন্ধ এসে ভর করে তার

নাকে - যানবাহনের গন্ধ, গরুর গাড়ির চাকার গন্ধ, সদ্যজন্মানো বাছু রের জলভাঙা মিঠে চামড়ার

গন্ধ, মহাকাশের গন্ধ, দাঁড়াইশ সাপের ফেলেছেড়ে যাওয়া খোলসের গন্ধ, বিধবার একাদশীর গন্ধ, তার

ফু রিয়ে যাওয়া প্রখর রজ:স্রোতের গন্ধ, বাজপাখির ডিমের গন্ধ, রাজপুত্রের জোড়া চপ্পলের গন্ধ,

দেশনায়কের নরহত্যাকামী হৃদমস্তিষ্কের ধারালো জনমোহিনী কাটারির গন্ধ। কিন্তু এই তাবৎ গন্ধের

ভিড়ে সে ওই একটি গন্ধ খুঁজে পায়না যার খপ্পড়ে পড়ে চোয়ালসন্ন্যাসীকে নাকাল করার মরিয়া

যুধাজিৎ সরকার Page 4


চেষ্টায় সে আথারিপিথারি করে ঢু ঁ ড়ে চলেছে এই অলীক কামোদ্রেককারী মহিলাশরীরের পৃথুলা

চর্বিসম্মত লাশটাকে।

কোথায়? কোথা থেকে ভেসে আসছে এই অলৌকিক গন্ধ? ব্রহ্মচারী ভাবে আর শুঁকে চলে। শুঁকে চলে

আর ভাবে। এইভাবে তার ভাবতে ভাবতে শোঁকা আর শুঁকতে শুঁকতে ভাবার মাঝখানে হঠাৎই

ব্রহ্মচারী এসে পড়ে এই দ্বীনদুনিয়ার অবিনশ্বর ওরিজিনের দোরগোড়ায় -- এই সুদশ


ৃ ্য লোভনীয়

মরদেহটির কুঞ্চিত যোনিপথের চৌহাট্টায়। সেইখানে পৌঁছে আচমকাই যেন টাল খায় ব্রহ্মচারী। আর

সেই দৈবিক টাল সামলে উঠতে না উঠতেই চক্ষু কর্ণনাসিকা সমেত গোটা মাথাটা নিয়েই নি:শব্দ

চিচিং ফাঁকে সে ঢু কে পড়ে সেই চোরাবালির একেবারে কেন্দ্রে। এই দৈব অনুপ্রবেশে কোনই অসুবিধা

হয়না তার, পুঁতিগন্ধে গুলিয়ে ওঠেনা গা, রি রি করেনা শরীর, ক্ষু ধা মোচড় দেয়না তলপেটে, শিশ্নে।

সেই মুহুর্তে তার একটাই লক্ষ্য -- ওই গন্ধটাকে খুঁজে বের করে আনা আর চোয়ালসন্ন্যাসীর যাবতীয়

টিটকিরির মুখে আসিডের মত ছুঁ ড়ে দেওয়া তার এই অপূর্ব আবিষ্কার। আর কিছু ই জানেনা সে।

ঁ ড়ের বিষাক্ত কামড় অব্দি।


আর কিছু ই বোঝেনা। এমনকি চোখা পুরুষাঙ্গের বেয়াদপ শীর্ষে ডেঁয়োপিপ

কিন্তু না, তন্নতন্ন করে হাতড়েও বুকতাতানো সেই সুগন্ধের উৎস তার নাগালের বাইরেই থেকে যায়।

ক্লান্ত, বিমর্ষ, হতোদ্যম ব্রহ্মচারী মুখ তু লে আনে বাইরে -- পৃথিবীতে। আকাশের দিকে তাকিয়ে তার

মনে হয় সমস্ত নক্ষত্রেরা একজোট হয়ে তাকে দেখে হাসছে। আর পেছন থেকে তাদের লাগাতার

ফু সলে চলেছে তার জনমশত্তুর চোয়ালসন্ন্যাসী। তার শ্বাসনালীহীন ফুঁ টো গলা দিয়ে ঘড়ঘড় করে শব্দ

বেরুচ্ছে আর সেই শব্দ মেঘের গায়ে ঢাক্কা খেতে খেতে ঘটিয়ে চলেছে অমায়িক বিদ্যুতপাত।

একচিলতে বাজ যেন পরাস্ত পর্যুদস্ত ব্রহ্মচারীর ঘাড়ে সুড়সুড়ি দিয়েই গিয়ে পড়ল নিকটবর্তী

শিশুগাছটিতে। রাগে অপমানে বিষযন্ত্রনায় গরজাতে গরজাতে পকেট থেকে ভোঁতা ব্লেডটা বের করে

ব্রহ্মচারী এবার অন্তিম চেষ্টার উপক্রমে দাঁত কিড়মিড় করতে করতে একের পর এক আঁচড়ে ফালা

ফালা করে ফেলল সেই বেনামি স্ত্রীলোকের বিদঘুটে শরীরটা। অপ্রতিম বিশ্বাসে সেই প্রতিক্রিয়াহীন

শরীরের প্রতিটা কন্দর ছেনে ফেলল সে। বাদ গেলনা একটি রন্ধ্র, একটিও অন্তরঙ্গ দেহতল্লাট। কিন্তু

না, কোথাও পাওয়া গেলনা সেই অমৃতভাণ্ডের সন্ধান। জীবনে এই প্রথম এতখানি কষ্টস্বীকারের পরেও

মামুলি একটা মৃত মেয়েছেলের কাছে হেরে যেতে হল ব্রহ্মচারীকেকে। আর ঠিক সেই মুহুর্তে ই নামল,

যেন তার অপমানের মাত্রাটাকে খুচি


ঁ য়ে বাড়িয়ে তু লতেই, বেঢপ পুষ্পবৃষ্টি।

যুধাজিৎ সরকার Page 5


কিমাশ্চর্যম! যে গন্ধটাকে এতক্ষণ মনে হচ্ছিল অনেক দূরবর্তী, যদিও প্রকৃ ত প্রস্তাবে মনোহরণ, এবার

সেটাকেই যেন অনেক কাছে অনেক ঘনিষ্ঠভাবে টের পেল সে। তার আহত উদ্যমে যেন আবার

খানিকটা ঢেউ খেলে গেল। এবার আর ভু ল হলনা তার। গন্ধটা এখন তার এতটাই নিকটে যে ভু ল

হবার সম্ভাবনাও ছিলনা। মনুষ্যরক্তের ছোঁয়ায় পুনরায় উজ্জীবিত হয়ে ওঠা ব্লেডটাকে এবার সে টেনে

নিয়ে গেল নিজের নাভির কাছাকাছি। সামান্য চাপ দিতেই সেখান থেকে বেরিয়ে এল শয়ে শয়ে

খুশবুদার প্রজাপতি। সেই চাপ ধরে রেখে ব্লেডটাকে আরও আরও নীচে নামিয়ে নিয়ে চলল ব্রহ্মচারী।

তলপেট ছাড়িয়ে পুরুষাঙ্গকে দু'খণ্ডে ভাগ করে যতক্ষণে সেই কোষমুক্ত তরবারি তার অণ্ডকোষে এসে

পৌঁছল, ততক্ষণে শ্রাবণী জ্যোৎস্নার আলুথালু ময়দান ভরে গিয়েছে হাজারো সুবাসিত প্রজাপতিতে।

আ:! নিজেরই শরীরের ভিতরে এমত অত্যাশ্চর্য জমাট আনন্দনিকেতন আবিষ্কার করে জয়ধ্বনিতে

ফেটে পড়ল ব্রহ্মচারী। আকাশের দিকে হাত তু লে চোয়ালসন্ন্যাসীকে অনুপম ভেংচি কেটে সে জানিয়ে

দিল যে তার রেলা এইখানেই শেষ, এক্কেবারে খতম -- এই অন্তিম ইনিংসে সে আবারও প্রমাণ করে

দিল যে বাহাদুরিতে, লিবিডোর অনি:শেষ উদ্বোধনে তার ধারেকাছেও কেউ নেই। বিজয়মঞ্চে সে একা,

একক -- তার চৌহদ্দিতে পা মাড়াবে এমন দ্বিতীয় বীরবল ব্রহ্মচারী জন্মায়নি এখনও। আর যদি বা

সেই সম্ভাবনা ভবিষ্যতে দেখা দেয় কখনও, তো পোয়াতি রাক্ষসীর পেটের ভিতর সেঁধিয়ে গিয়ে সেই

অজন্মা প্রতিদ্বন্দ্বীর ঘেঁটিসুদ্ধ উপড়ে আনতে কোনই তকলিফ পোহাতে হবেনা অশরীরী সর্বত্রগামী

বীরবল ব্রহ্মচারীকে। এই আগাম স্বপ্নের শিহরণে পুনরায় জয়ধ্বনি করে উঠল সে --

জয় হউক মহাশরীরের

জয় হউক আকণ্ঠ পুরুষের

জয় হউক 

জয় হউক

জয়...

তার সেই স্বত:স্ফূ র্ত বিজয়োল্লাস আবছা হতে হতে মিলিয়ে গেল তেপান্তরের বিস্তৃ ত দিগন্তমরীচিকায়।

আকাশে মেঘ ঠেলে শ্রাবণী জ্যোৎস্না ঠেলে তখন সদ্য সদ্য ফু টতে শুরু করেছে ত্যারছা ভোরের

বেশরম লজঝড়ে আলো।

যুধাজিৎ সরকার Page 6


যুধাজিৎ সরকার Page 7

You might also like