You are on page 1of 2

৭ ধরণের মানুষকে আল্লাহ তায়ালা বেশি ভালোবাসেন

আল্লাহ তায়ালা কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করেছেন তিনি কোন ধরনের মানুষকে
সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন।

আল্লাহ তায়ালা তাকেই বেশি ভালবাসেন যে সর্বদা আল্লাহর কথা স্মরণে রাখেন এবং সর্বদা
আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জনের কথা চিন্তা করেন। এছাড়া আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করার দ্বারাও
আল্লাহ তায়ালা খুশি হন।

কিছু বিশেষ গুন সম্পন্ন মানুষ আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে বেশী ভালোবাসা অর্জন করতে পারে।

১. যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অন্যকে ভালবাসে

কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অন্যকে ভালবাসা রাসূলুল্লাহ (সা:) শ্রেষ্ঠ আমল হিসাবে
গণ্য করেছেন। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অন্যকে ভালবাসেন তাদেরকে আল্লাহ
তায়ালাও ভালবাসেন। আল্লাহ তায়ালা এটা তার নিজের উপর বাধ্যতামূলক করেছেন যে,যারা
অন্যকে আল্লাহর জন্য ভালবাসেন আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসবেন।

২. যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য একত্রিত হয়

সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য অন্যদের সাথে একত্রিত হতে হবে। অনেক সময় দেখা
যায় একজন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির সাথে আড্ডা দেয়া কিংবা ব্যবসায়িক কোন লেনদেনের
জন্য একত্রিত হচ্ছেন। আর ঠিক সে সময় যদি তার অন্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা স্মরণ
থাকে তবে সে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারবে। কারণ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা
স্মরণে থাকলে,উক্ত ব্যক্তি পাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকবে।

৩. যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অন্যদের সাথে সাক্ষাত করে

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,একজন মুসলমানের উপর অপর মুসলমানের


ছয়টি হক রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল কেউ অসুস্থ হলে সাক্ষাত করে খোঁজ খবর নেয়া। আর এ
সাক্ষাত করতে হবে আল্লাহকে খুশি করার জন্য। আপনি যদি কারও সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার
জন্য সাক্ষাত করেন এবং এটি ভাবেন যে তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার দরুন ভবিষ্যতে
আপনি তার সাহায্য পাবেন,তবে এর দ্বারা আপনি কোন ভাবেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে
পারবেন না। অর্থাৎ এ সাক্ষাতের পিছনে কোন ব্যবসায়িক বা অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকা যাবে না।

৪. যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দান বা সাদকাহ্ করে

দান করার অনেক ফজিলত। এ ফজিলতের কথা কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন যায়গায় উল্লেখিত
রয়েছে। দান করলে কখনই ধন সম্পদ কমে না বরং বৃদ্ধি পায়। তবে এ দান করতে হবে
গোপনে। শুধু মাত্র আল্লাহর সন্তোষ্টির জন্য। কারণ লোক দেখানো দান আল্লাহ কবুল করেন না।
তবে মানুষকে দানে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি
গোপনে দান বা সাদকাহ্ করবেন, হাশরের ময়দানে আল্লাহ তায়ালা সে ব্যক্তির উপর আরশের
ছায়া দান করবেন। আপনি যদি কেবল আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য দান বা সাদকাহ্ করেন,
ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালাও আপনার উপর সন্তুষ্ট হবে।

৫. যারা নফল ইবাদাত করে

আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং বলেছেন যে,যারা নফল ইবাদাত করবে তিনি তাদের ভালোবাসবেন। আর
থেকেই বোঝা যায় আল্লাহর ভালবাসা অর্জনর ক্ষেত্রে নফল ইবাদাতের গুরুত্ব কতটা। তাই
আমাদের প্রত্যেকরই আল্লাহকে খুশি করার জন্য বেশী বেশী নফল ইবাদাত করতে হবে। সর্বোত্তম
নফল ইবাদত হল তাহাজ্জুদ নামাজ। এছাড়াও রয়েছে নফল রোজা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার ফরজ নামাজের হিসাব নেয়া
হবে। এবং যদি ফরজ নামাজের কোনো ঘাটতি থাকে,তখন নফল নামাজ থেকে ফরজের এ
ঘাটতি পূরণ করা হবে। শুধু নামাজের ক্ষেত্রেই নয় অনান্য আমল যেমন রোজা ও যাকাতের হিসাব
ও এভাবে গ্রহণ করা হবে।

৬. যারা তওবা করে দ্বীনের পথে ফিরে আসে

আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, তিনি তাদের ভালবাসেন যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়
এবং সর্বদা তওবা করে। আমরা অনেক সময় না জেনে বা জেনেও নানা ধরনের গুনাহ এর কাজ
করে থাকি। সুতরাং আল্লাহর ভালবাসা পাওয়ার জন্য আমাদের উচিত সর্বদা আল্লাহ তায়ালার
কাছে আমাদের গুনাহ গুলোর জন্য ক্ষমা চাওয়া। কারণ আল্লাহ তায়ালা কখনই একজন গুনাগার
বান্দাকে ভালবাসেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যদি কোন ব্যক্তি
তওবা করে সে নিষ্পাপের মতো পবিত্র হয়ে যায়। নিষ্পাপ ব্যক্তিকেই আল্লাহ তায়ালা অধিক
ভালবাসেন। আর এথেকেই তওবার গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়।

৭. যারা সর্বদা অন্যের উপকার করে

অন্যের উপকার করা একটি মহৎ গুন। প্রতিটি মুমিন বান্দারই এ গুনটি থাকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
যদি আপনি প্রকৃত রূপে আল্লাহর ভালবাসা পেতে চান,তবে অন্যের উপকার করার চেষ্টা করুন।
আপনি যদি আপনার চারপাশের মানুষদের সাহায্য করেন তবে আল্লাহও আপনাকে সাহায্য
করবেন। এবং আপনি আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রিয় বান্দা হয়ে উঠবেন। অন্যের উপকার করার
ক্ষেত্রে কোন রকম বৈষম্য করে বলা যাবে না যে আমি শুধুমাত্র বাঙালিদের সাহায্য করব কারণ
আমরা বাঙালি জাতি। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই কারও উপকার করতে হবে। এর
পিছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য বা পার্থিব কোন স্বার্থ থাকা যাবে না।

You might also like