You are on page 1of 2

পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট

পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (port land


cement )
আধুনিক সিমেন্টের একটি প্রকরণ। সাধারণত এই
সিমেন্ট
সাধারণ সকল ধরনের নির্মাণ কাজে বহুল
পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে একে অনেক সময়
OPC
(Ordinary Port land Cement )
বলা হয়। এই সিমেন্ট কংক্রিট, মশল্লা
(mort ar), এবং স্টাকো (st ucco)- তে
ব্যবহৃত হয়। এই সিমেন্ট তৈরিতে মূল উপাদান
হিসাবে পোর্টল্যান্ড ক্লিঙ্কার ব্যবহার করা হয়।
পোর্টল্যান্ড ক্লিঙ্কার
চুনা পাথর (ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, CaCO3)
সাথে সামান্য কাদা বা এ্যালুমিনো সিলিকেট
(Al 2SiO5) মিশিয়ে
একটি বিশেষায়িত চুল্লি বা
কিলন(Kiln)- এ ১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বা
তারচেয়ে বেশি তাপমাত্রায় উত্তপ্ত
করলে,
ক্যালসিয়াম কার্বনেট থেকে কার্বন- ডাই- অক্সাইড
আলাদা হয়ে গিয়ে ক্যালসিয়াম অক্সাইড অবমুক্ত
হয়।
এই অবস্থায় একে বলা হয় কু ইক লাইম। আর এই
প্রক্রিয়াকে বলা হয় ক্যালসিনেশন। ক্যালসিয়াম
অক্সাইড চুল্লিতে থাকা সিলিকেটের সাথে বিক্রিয়া
করে কঠিন দানাদার ক্যালসিয়াম সিলিকেটে পরিণত
হয়।
একেই ক্লিঙ্কার বলা হয়। উল্লেখ্য এক্ষেত্রে
ক্যালসিয়াম অক্সাইড ও সিলিকেটের অনুপাত ২ এর
বেশি রাখা হয়।
মূলত এই ক্লিঙ্কারে ন্যুনতম
৯৫% ক্যালসিয়াম সিলিকেট থাকে। বাকি অংশে
থাকে অ্যালুমিনিয়াম ও
লোহাজাত পদার্থ ও
অন্যান্য উপাদান। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সবসময়
অন্যদিকে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড
কখনোই মোট
ভরের ৫%এর বেশি রাখা হয় না। ক্লিঙ্কারের
দানা ৩ মিলিমিটার থেকে ২৫ মিলিমিটার
ব্যাসবিশিষ্ট হতে পারে। ক্লিঙ্কার চূর্ণ করে তার
সাথে সামান্য জিপসাম মিশিয়ে আধুনিক
পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট
তৈরি হয়। ক্লিঙ্কার
বাতাসের জলীয় বাষ্পের সাথের বিক্রিয়া করে, তার
স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। এই
কারণে একে
শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করা হয়।
পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের ইতিহাস
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে,
ব্রিটেনে
প্রাকৃ তিক সিমেন্ট থেকে এই সিমেন্ট তৈরির পদ্ধতি
উদ্ভাবিত হয়েছিল। ইংল্যান্ডের ডরসেটের খনি
থেকে প্রাপ্ত এক প্রকার নির্মাণোপযোগী পাথরকে
বলা হতো পোর্টল্যান্ড পাথর। এই পাথরের
নামানুসারে এই
বিশেষ ধরনের সিমেন্টের নামকরণ
করা হয়েছিল পোরল্যান্ড সিমেন্ট। এই সিমেন্টের
সাথে বিশেষভাবে
জড়িয়ে আছে ব্রিটেনের লিডস
নগরীর রাজমিস্ত্রী জোসেফ এ্যাসপডিন
(Joseph Aspdin)। আইজ্যাক
জনসন নামক
তার জনৈক শ্রমিক এর উৎপাদন কৌশল উন্নয়ন
করেন। তাদের এই উন্নয়নকৃ ত সিমেন্ট
নির্মাণকার্যে দ্রুত জমাট বাঁধতো এবং যথেষ্ট
মজবুতও হতো। ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে এই সিমেন্টের
নাম ডিরেক্টরিতে
গৃহীত হয়েছিল। ডিরেক্টরিতে
অন্যান্য সহযোগী কিছু ব্যক্তিদের নামও ছিল।
এঁরা ছিলেন- উইলিয়াম লকউড
(William
Lockwood), ডেভ স্টুয়ার্ট (Dave
St ewart ) প্রমুখ। ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে এই
প্রক্রিয়াটির স্বত্বাধিকার
গ্রহণ করেন জোসেফ
এ্যাসপডিন । ১৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জেমস
পার্কারের স্বত্বাধিকার- কৃ ত রোমান সিমেন্টের
মতোই তাদের সিমেন্টও একই কাজ করতো। এই
সিমেন্টের অনুরূপ আরও একটি সিমেন্ট সে সময়ে
প্রচলিত ছিল। এর নাম ছিল ব্রিটিশ সিমেন্ট। এই
সিমেন্ট ১৮১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জেমস ফ্রস্ট
ব্যবহার করে
আসছিলেন। এর স্বত্বাধিকার গ্রহণ
করা হয়েছিল ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে।
জোসেফ এ্যাসপডিন- এর ছেলে উইলিয়াম,
১৮৪৩
খ্রিষ্টাব্দে এই সিমেন্টের আরও উন্নয়ন সাধন
করেন। প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল— Pat ent
Port land
cement । ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে
উইলিয়াম পুনরায় এর উন্নয়ন সাধন করেন এবং
১৮৫৩ খ্রিষ্টাব্দে সিমেন্ট তৈরির
কাজে
জার্মানীতে যান। জার্মানিতে এই সিমেন্টের ব্যাপক
উন্নয়ন করা হয় এবং ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে
জার্মান
সরকার আদর্শ পোর্টল্যান্ডের সিমেন্টের
মানদণ্ড নির্ধারণ করে দেয়।

Multiple bags of Portland cement wrapped and stacked on a pallet.

Blue Circle Southern Cement works near Berrima, New South Wales, Australia.

তথ্যসূত্র

You might also like