You are on page 1of 5

অনুচ্ছেদ এস. এস. সি.

- ২০২১

শিশুশ্রম

শিশুশ্রম একটি সামাজিক ব্যাধি। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে গ্রেট ব্রিটেনে সর্বপ্রথম শিশুশ্রম একটি সামাজিক সমস্যা হিসেবে
চিহ্নিত হয়। শিশুকাল অতিক্রমের আগে অর্থের বিনিময়ে বা বিনা বেতনে যে সকল কাজে নিয়োজিত হওয়ার কারণে শিশুর
নিরাপত্তা, কল্যাণ, আত্মবিকাশ ও সুস্থ জীবন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়, তাকে শিশুশ্রম বলে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এই ধরনের
শ্রমকে শোষণ বলে বিবেচনা করে। আর্থ-সামাজিক বৈষম্য, সম্পদের অসম বণ্টন, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে ফু লের
মতো কোমল নিষ্পাপ শিশুদের কচি কচি হাতগুলো শ্রমের হাতিয়ার হয়ে উঠতে বাধ্য হয় । ফলে তাদের সুপ্ত প্রতিভা অঙ্কু রেই
বিনষ্ট হয়। ছোটখাট কল-কারখানা থেকে শুরু করে পাথর ভাঙা, ফেরি করা, ভিক্ষাবৃত্তি করা, বাসা-বাড়িতে কাজ করা,
wiKmv enb, †Vjv Mvox Uvbv, wewo euv ধা, গার্মেন্টস, গ্যারেজ, দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরা ইত্যাদি ক্ষেত্রে
শিশুদের শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য যেসব কাজ ঝুঁকিপূর্ণ সেসব কাজে
অবলীলায় শিশুদের নিয়োগ করা হয়। স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষ কম মজুরি, অনেক সময় খাওয়ার বিনিময়ে কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ
করিয়ে নেয় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) আঠারো
বছর বয়স পর্যন্ত মানুষকে যেকোনো ধরণের শারীরিক ও মানসিক শ্রমে নিয়োগকে শিশুশ্রম বলে উল্লেখ করে তা নিষিদ্ধ করেছে।
শিশুশ্রমকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে ১২ জুন ‘বিশ্ব শিশুশ্রম দিবস’ পালিত হয়। শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত রাখতে ১৯৮৯
সালে জাতিসংঘ ‘শিশু অধিকার সনদ’ ঘোষণা করে। ‘শিশু অধিকার সনদ-৯০’ নামে পরিচিত এ সনদের বিষয়বস্তুগুলো হলো-
(১) শিশু অধিকার বাস্তবায়ন, (২) পরিচয় সংরক্ষণ, (৩) মত প্রকাশের স্বাধীনতা, (৪) সামাজিক নিরাপত্তা, (৫) শিশু স্বাস্থ্যের
প্রাধান্য, (৬) বৈষম্যহীনতা, (৭) অবৈধ স্থানান্তর, (৮) অক্ষম ও উদ্বাস্তু শিশু, (৯) সামাজিক পর্যালোচনা, (১০) মাতাপিতার সাথে
অবস্থানের অধিকার, (১১) মাতাপিতার অধিকার ও দায়িত্ব। ‘শিশু অধিকার আইনে’ স্পষ্ট উল্লেখ আছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ,
অর্থনৈতিকভাবে শোষণ শিশুদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়। শিশুর সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে যেসব, সেসব
বিপদ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হবে (ধারা ৩২)। শিশুদের সকল প্রকার হয়রানি, নির্যাতন থকে রক্ষা করতে হবে (ধারা ৩৪)।
শিশুর শিক্ষা লাভের অধিকারকে স্বীকৃ তি দিতে হবে (ধারা ২৮)। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো এ সনদের বিষয়বস্তুগুলো অনুসরণ
করলেও বাংলাদেশের মতো তৃ তীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো তা অনুসরণ করতে পারছে না। অপরিসীম দারিদ্র্য আর সামাজিক ও
রাজনৈতিক নৈরাজ্যের কারণে এদেশের শিশুদের যেমন অমানুষিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে, তেমনি বঞ্চিত হতে হচ্ছে ন্যায্য শ্রমমূল্য
থেকেও। শিশুদের অপরিণত দেহ ও কচি মন শ্রমদানে নিস্পেষিত হতে থাকে এবং দীঘদিনের পুঞ্জীভূ ত ক্লান্তির ভারে এরা অকালে
পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। বিকলাঙ্গ হয় অনেকে। ভিক্ষাবৃত্তি, চু রি, পকেট কাটা এসব খারাপ কাজেও শিশুরা জড়িয়ে পড়ে। তাই
এই অমানবিক কাজ বন্ধের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃ ক প্রণীত শিশু ও নারী নির্যাতন আইন প্রয়োগে আরও কঠোরতা অবলম্বন করতে
হবে। শিশুশ্রম রোধকল্পে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন. করতে হবে এবং শিশুশ্রম ও নির্যাতন রোধে
নতু ন আইন প্রণয়ন ও সেই আইনের সুবিধা যাতে শ্রমপীড়িত শিশুরা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। একটি দেশের গুণগত ও
টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে যে সকল বষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয় তার মধ্যে শিশুশ্রম কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। আজকের শিশুই আগামী
দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। তাদের ওপরে নির্ভ র করছে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি। তাই আমাদের সকলের উচিত হবে শিশুদের
জন্য কল্যাণকর পরিবেশ নিশ্চিত করা।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১

বঙ্গবন্ধু স্যাটলাইট -১ (বিএস -১), বিসিএসসিএল পরিচালিত প্রথম বাংলাদেশী জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট। বিটিআরসি কর্তৃ ক
২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর ফ্রান্সের ‘থ্যালেস এলিনিয়া স্পেস’ - এর সঙ্গে উক্ত কৃ ত্রিম উপগ্রহ নির্মাণ, উৎক্ষেপণ ও ভূ -
উপগ্রহকেন্দ্র নির্মাণের জন্য টার্ন-কী চু ক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এর পূর্বে রাশিয়ার ইন্টার স্পুটনিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২১৯ কোটি
টাকায় ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের ভূ স্থির কক্ষপথ ব্যবহারের জন্য চু ক্তি সম্পন্ন করা হয়। একইসঙ্গে ‘ থ্যালেস এলেনিয়া স্পেস’
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘স্পেসএক্স’-এর সঙ্গে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের জন্য চু ক্তিবদ্ধ হয়। তৎপরিপ্রেক্ষিতে ‘ থ্যালেস এলেনিয়া
স্পেস’ স্যাটেলাইটটির নির্মাণ সম্পন্ন করে ৩০ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে ‘ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত
Space Exploration Technologies Corp বা ‘স্পেসএক্স’-এর নিকট প্রেরণ করে। ‘স্পেসএক্স’ তার উৎক্ষেপণকারী যান
ফ্যালকন ৯-এর সর্বশেষ সংস্করণ ব্লক-৫ বুস্টার-এর মাধ্যমে ১১ মে ২০১৮ যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বিকাল ৪ :১৪ মিনিট অর্থাৎ ১২
মে ২০১৮ বাংলাদেশ সময় ভোররাত ২:১৪ মিনিট-এ ফ্লোরিডাস্থ কেপ ক্যানাভেরাল স্টেশন-এ অবস্থিত লঞ্চ প্যাড LC-39A
থেকে অত্যন্ত সফলভাবে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে পৃথিবী থেকে ৩৬,০০০ কিলোমিটার
উচ্চতায় রাশিয়ার কাছ থেকে বরাদ্দকৃ ত অরবিটাল স্লটে আগামী ১৫ বছর অবস্থান করবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট - ১ প্রকল্পটি
বাস্তবায়নে মোট খরচ হয়েছে ২ হাজার ৯০২ কোটি টাকা; এর মধ্যে সরকারি তহবিল ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা, অবশিষ্ট অর্থ ঋণ
সহায়তা দেয় বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি। এই প্রকল্পে সরকারের যে টাকা খরচ হবে তা স্যাটেলাইট ভাড়া দিয়ে ৮ বছরের
অনুচ্ছেদ এস. এস. সি.- ২০২১

মধ্যেই তু লে ফেলা সম্ভব হবে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ এর পর্যবেক্ষণ, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও
রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ‘ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ পরিচালনা এবং এর সফল
ব্যবহার ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ‘বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন
করা হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’-এর সফল উৎক্ষেপণের ফলে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিকানার পাশাপাশি
মহাকাশবিজ্ঞানের অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বিএস -১ এ অগ্রাধিকার স্যাটেলাইট অ্যাপ্লিকেশনগুলি হ'ল (১)
Direct to Home (DTH) (২) VSAT (৩) Backhaul and Trunking (৪) নেটওয়ার্ক পুনরুদ্ধার (৫) দুর্যোগ প্রস্তুতি
এবং ত্রাণ। এই ক্ষেত্রগুলি দ্বারা, বাংলাদেশ এখন বিদেশী উপগ্রহের উপর নির্ভ রশীল। যা আমাদের প্রতি বছর প্রায় ১৪ মিলিয়ন
ব্যয় হয়। এই বিশাল ব্যয়টি এড়ানো হবে এবং আরও কিছু ফ্রিকোয়েন্সি ব্রডব্যান্ড ভাড়া করে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে আয় করব।
একবার চালু হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এই বার্ষিক ব্যয় সাশ্রয় করবে এবং তার পাশাপাশি ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে
সার্ক ভু ক্ত দেশগুলি ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তু র্ক মেনিস্তান, কিরগিজস্তান এবং তাজিকিস্তানের মতো দেশগুলিকে অর্ধেক ভাড়া
দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আনবে যদি ফ্রিকোয়েন্সিগুলি সঠিকভাবে সমন্বিত হয়। টেলিকম নিয়ন্ত্রক সাত বছরের আয়-ব্যয় সমতায়
আসবে বলে আশা করছেন। উপগ্রহটি ডিজিটাল বিভাজনকে সংকু চিত করবে, কারণ এটি গ্রামীণ অঞ্চলে সম্প্রচার এবং
টেলিযোগায়োগ পরিষেবাগুলি গ্রহণে সহায়তা করবে এবং সারা দেশে সরাসরি ঘরে ঘরে পরিসেবার মতো কিছু লাভজনক উদ্যোগ
চালু করতে সহায়তা করবে। জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভূ মিকা রাখাসহ টেলিমেডিসিন ও দূরনিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারে বাধা দূর
করবে।

https://www.asiaticsociety.org.bd/journal/B_Jun_2012/1.pdf
অনুচ্ছেদ এস. এস. সি.- ২০২১

হৃদয়ে কৃ পণ হ’য়ে ধনী হ’তে চায়,—


সুখ তারা দেয় নাকো, তাই দুঃখ পায়॥
অনুচ্ছেদ এস. এস. সি.- ২০২১

ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
অনুচ্ছেদ এস. এস. সি.- ২০২১

You might also like