You are on page 1of 1

বিজয় এসেছে অনেক রক্তের বিনিময়ে। অনেক জীবন ও স্বপ্নের বিনিময়ে। অনেক

আশা ও সাধনার উচ্ছ্বাসে। 


আত্মসমর্পণের দলিল নিয়ে আসার পর প্রথমে পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান
জেনারেল নিয়াজী ও পরে ভারতীয় বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল
আরোরা দলিলে সই করলেন। সইয়ের জন্য নিয়াজীকে কলম এগিয়ে দেন আরোরা। প্রথমে
কলমটি দিয়ে লেখা যাচ্ছিল না। আরোরা কলমটি নিয়ে ঝাড়াঝাড়ি করে পুনরায়
নিয়াজীকে দেন। এ দফায় কলমটি আর ঝামেলা করেনি। সই শেষ হলে উভয়ই উঠে
দাঁড়ান। তারপর আত্মসমর্পণের রীতি অনুযায়ী জেনারেল নিয়াজী নিজের রিভালবারটি
কাঁপা কাঁপা হাতে অত্যন্ত বিষণ্ণতার সঙ্গে জেনারেল আরোরার কাছে হস্তান্তর করেন।
এরপর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি সৈন্য ও কর্মকর্ত াদের কর্ড ন করে
ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যান। এভাবে বাঙালি জাতির বিজয় সূচিত হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১!

যেসব কীর্তি মান মানুষের আত্মত্যাগে এই বিজয় সম্ভব হয়েছিল, বিজয়ের দিনে তাঁদের
প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা নয় মাসের রক্তক্ষয়ী
লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এ বিজয়কে অনিবার্য করে তু লেছিলেন, তাঁদের প্রতি জানাই সশ্রদ্ধ
অভিবাদন।
পৃথিবীর সব স্বাধীন দেশের স্বাধীনতা দিবস থাকলেও বিজয় দিবস থাকে না।
বাংলাদেশ সেই বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী দেশ, যেটি ২৪ বছরের রাজনৈতিক
আন্দোলন-সংগ্রামের পর রণাঙ্গনে শত্রুকে পরাজিত করে বিজয় অর্জ ন করেছে।

আমি স্বপ্ন দেখি আমার জন্মভূ মিকে নিয়ে। স্বপ্ন দেখি এমন এক বাংলাদেশের Ñ যা
প্রাণপ্রাচু র্যে ভরা, যুক্তিবাদী মুক্তমনের অধিকারী, হৃদয়বান নাগরিকের বাংলাদেশ।
আকাশছোঁয়া আত্মবিশ্বাসে সমৃদ্ধ, সৃজনশীলতায় উদ্দীপ্ত, নিজেদের ভাগ্য গড়ার দৃঢ়প্রত্যয়ে
আস্থাশীল নাগরিকের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে থাকবে না দারিদ্র্য, থাকবে না অপুষ্টি,
ব্যাধি। সমাজ থাকবে দুর্নীতির কলুষমুক্ত, স্বার্থপরতা এবং সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে, আকাশের
মতো উদার, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পশূন্য, সব মত-পথ-বিশ্বাসের অবাধ চারণক্ষেত্র।

You might also like