You are on page 1of 1

চতু র্থ শিল্প বিপ্লব এবং আইসিটি ক্যাডার সার্ভি স

তথ্য প্রযুক্তি হচ্ছে চতু র্থ শিল্প বিপ্লবের মূল হাতিয়ার আর সেই চতু র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অপরিহার্য
হাতিয়ার, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’কে বাংলাদেশ ক্যাডার সার্ভি সে অন্তর্ভু ক্তির বিষয়টি বছরের পর বছর ধরে
আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বাক্সবন্দি করে রাখা হয়েছে। যার ফলে, নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সরকারী উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্ত াদের
মধ্যে আইসিটি দক্ষতা সন্তোষজনকভাবে বিকশিত হয়নি। প্রযুক্তি খাতের বিপ্লবের এই সময়ে, আইসিটি খাতকে এগিয়ে
নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকারি অফিসগুলিতে দক্ষ লোকের অভাব এখনো বিদ্যমান। নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে প্রযুক্তি
দক্ষতার ঘাটতি, বাংলাদেশের অগ্রগতির সর্বোত্তম বিকাশের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। আধুনিক সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তিতে দক্ষতা না থাকলে অর্জি ত উন্নয়নসমূহ টেকসই না হওয়ার ঝুঁ কি রয়েছে। আইসিটি ক্যাডার সার্ভি স প্রবর্ত ন করে
আইসিটিতে দক্ষ জনবলকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান ও উপযুক্ত জায়গায় ক্ষমতায়ন করা গেলে উপরোক্ত সীমাবদ্ধতাসমূহ
দূরীকরণের পাশাপাশি সমস্ত সরকারী দফতরের সর্বক্ষেত্রে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে। ডিজিটাল ডিভাইস এবং প্রযুক্তিজ্ঞান
যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দাপ্তরিক সমস্ত কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা এবং ই-গভর্ন্যান্স নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সুশাসন নিশ্চিত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে নিঃসন্দেহে আইসিটি ক্যাডার প্রতিষ্ঠা করা সরকারের একটি
যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।

দেশের চারটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে স্নাতক এবং
স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীরা আইসিটি ক্যাডার সার্ভি স না থাকার দরুণ আইসিটি পেশা ছেড়ে দিয়ে
সাধারণ ক্যাডারের দিকে ঝুঁ কে পড়ছে। এতে তাদের অর্জি ত মেধা ও অভিজ্ঞতা অপচয়ের পাশাপাশি প্রকৌশলবিদ্যা
অধ্যয়নে তাঁদের পেছনে সরকারের ব্যয়িত জনগণের অর্থ অপচয় হচ্ছে। এছাড়া, 'প্রকৌশলবিদ্যা অধ্যয়ন শেষে মেধাবীরা
নিজেদের পেশায় ক্যাডার সার্ভি সের ন্যায় সম্মানের চাকুরী না থাকায় দেশ ছেড়ে উন্নত দেশে পাড়ি জমাচ্ছে,' বলে মনে
করেন ডাকসুর সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী। এতে, দেশ ও জনগণ তাঁদের সেবা
পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইসিটি ক্যাডার সার্ভি স প্রবর্তি ত হলে প্রতিবছর আইসিটি বিষয়ে উচ্চশিক্ষিত পনেরো-বিশ
হাজার মেধাবী ICT/ITES গ্র্যাজুয়েটদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশ সহজতর হবে এবং সম্মানের সাথে দেশে কাজ করার
সুযোগ সৃষ্টি হবে। আইসিটিতে দক্ষ এসব মেধাবী জনবলের সরকারী অফিসগুলিতে পদায়ন হলে তারা দেশকে এগিয়ে নিতে
সিদ্ধান্তমূলক ভূ মিকা রাখার পাশাপাশি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
রাখার সুযোগ পাবে। তদুপরি, অনলাইনভিত্তিক নাগরিক সেবাসমূহ নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রদান করে ডিজিটাল বাংলাদেশের
টেকসই বাস্তবায়ন এবং ডিজিটাল কার্যক্রম স্থায়ী ও নিরাপদ রাখতে সক্ষম হবে।

আমাদের পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশ ভারতে ইন্ডিয়ান টেলিকমিউনিকেটিভ সার্ভি স (আইটিএস) নামে ক্যাডার সার্ভি স
রয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কাজ করা সহকারী প্রোগামারদের ১ম শ্রেণি নন-ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ
দেওয়া হয়, অথচ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে আইটি ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে
গ্রাজুয়েটরা আইটিএস ক্যাডারের মাধ্যমে সিভিল সার্ভি সে যোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশে করোনাকালীন সময়ে ৫জন আইটি
প্রকৌশলী মিলে সুরক্ষা ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে নিরখরচায় করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা করা
যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃ ত্বে বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগে অনেক আগে প্রবেশ করেছে, কিন্তু
টেকসই ডিজিটাল উন্নয়নে আইসিটি ক্যাডারদের বিশাল ভূ মিকা রয়েছে। আইসিটি নীতিমালা-২০১৮ এর ৮টি
লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে - দক্ষ ডিজিটাল জনশক্তি ও তাঁদের মেধাশক্তিকে কাজে লাগানো। আইসিটি ক্যাডার
সার্ভি স প্রবর্ত ন করা হলে অচিরেই বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর
সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃ ত্বে মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক অত্যন্ত আশাবাদী যে,
সিভিল সার্ভি সে আইসিটি ক্যাডার অন্তর্ভু ক্ত হবে কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে বলে
জানান সংশ্লিষ্ট মহল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে
দ্রুত আইসিটি ক্যাডারের পদসৃষ্টি ও নিয়োগ বাস্তবায়ন শুরু হয়।

You might also like