You are on page 1of 2

আল্লাহ আপনার সাথে ঠিক সেরূপ ব্যবহার করবেন যেরূপ আপনি অন্যের সাথে ব্যাবহার করবেন

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন উদাহরণস্বরূপ হাদীস কু দসীতে এসেছে,"হে আদম সন্তান!মানুষের জন্য ব্যায় কর তাহলে
আমি তোমার জন্য ব্যয় করব।" বা যখন হজরত মুহাম্মদ(সা:) বলেছেন,"যে তার ভাইয়ের সেবায় নিয়জিত,আল্লাহ সুবহানাহু
তায়ালা তার সেবায় নিয়জিত থাকবেন।"এই কথাগুলোর গভীরতা চিন্তা করুন। আপনি আপনার ভাইয়ের জন্য কতটু কু খরচ
করবেন এবং আপনি আল্লাহর কাছে কতটু কু আশা করেন? আপনি দুর্বলদের কতটু কু যত্ন করবেন এবং আপনি আল্লাহর কাছে
কতটু ক আশা করেন যখন আপনি নিজেই দুর্বলদের কাতারে লপড়বেন? হজরত মুহাম্মদ (সা:) বলেন," যে ব্যাক্তি তার ভাইয়ের
দোষ লুকায়,কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তাঁর দোষ লুকাবেন সবার কাছ থেকে।" আপনার মাঝে আপনার ভাইয়ের দোষ লুকানোর
কতটু ক ইচ্ছে বিদ্যমান?আর আপনি আল্লাহর কাছে কিয়ামতের দিন আপনার দোষ লুকানোর ইচ্ছে কি পরিমানে চান?সেটা নিয়ে
চিন্তা করুন। কারণ আল্লাহর নিকট চাওয়ার সমীকরণ আপনার ব্যায়ের উপর নির্ভ রশীল। আমি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার
নিকট কি চাই এবং আমি মানুষের জন্য কতটু ক করতে ইচ্ছুক? যদি আমার ইচ্ছে থাকে আমার ভাইয়ের লজ্জাজনক কাজ
কোনমতে ধামাচাপা দিতে তাহলে আমার সেই মনভাব রাখতে হবে যে আমার লজ্জাজনক কাজ কিয়ামতের দিনও লুকিয়ে
রাখা হবে । আমি যদি আমার ভাই বা বোনকে সবার সামনে অপমান করতে ইচ্ছুক থাকি,অপবাদ দিই এবং কু ৎসিত নিন্দা
করি, তাহলে আমারও কিয়ামতের দিন সেই একই অবস্থার সম্মুখীন হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি সেরূপ অপমানিত
হব যেরূপ অপমান আমি অন্যকে করেছি। হজরত মুহাম্মদ (সা:) বলেছেন," যে ব্যাক্তি একজন দুরাবস্থায় পতিত মানুষের জন্য
কিছু কাজ সহজ করে দেয়,আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তার ইহকাল ও পরকাল জীবন সহজ করে দিবেন।" আবার হজরত
মুহাম্মদ (সা:) আমাদেরকে বলেছেন," আপনি অন্যের কষ্ট কতটু ক লাঘব করতে ইচ্ছুক এবং আপনি আল্লাহর কাছে কিয়ামতের
দিন নিজের কষ্টের লাঘব কতটু কু চান?" যখন আল্লাহ কু রআনে বলেছেন,"তারা যেন ওদেরকে ক্ষমা করে এবং ওদের দোষ-ত্রুটি
উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ্‌তোমাদেরকে ক্ষমা করুন(সূরা; আন নূর:২২) আল্লাহ আরো বিষয় যোগ করেছেন।
আপনি জানেন,আপনি যখন একজনকে কিছুটা ক্ষমা করেন কিন্তু এটা নিশ্চিত করেন যেন ওই ব্যক্তি কখনোই আপনার ক্ষমা
করার বিষয়টি না ভু লে। আর আপনি আফসোস করেন কেন আপনি তাকে ক্ষমা করেছেন আর তাকে প্রায় তার পূর্ব পাপের
কথা মনে করিয়ে দেন। তাহলে আপনার এই ক্ষমা করার সার্থকতা কতটু কু মহত্ত্বের প্রকাশ করে? তাহলে আপনি একই রকম
আচরণ আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার নিকট পাবেন। আপনি নিজেকে ঠিক কত ভাল হিসেবে কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে
প্রকাশ করতে চান এবং আপনার গুরুতর পাপসমূহ মাফ হতে দেখতে চান? আপনি আল্লাহর কাছে এটা কতটু কু চান যে তিনি
আপনার পাপাসমূহ একদম প্রকাশ না করেন? আপনার কাছে কি অন্যরা একই আচরণ আশা করে?আপনি কি অন্যদের সাথে
একই ব্যাবহার করেন? হজরত মুহাম্মদ (সা:) বলেছেন," যে ব্যাক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে,আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তার
সাথেও সম্পর্ক ছিন্ন করেন।' আপনি আপনার ভাই ও বোনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন আর আল্লাহ আপনার সাথে সম্পর্ক
ছিন্ন করবেন। আমি এই বিষয়টি নিয়ে খুব ভাবি। সুবহানাল্লাহ! আপনি যখন ঈদে নামাজ পড়তে যান,তখন আপনি দেখবেন
সেখানে এমন দুইজন মানুষ নামাজ পড়তে এসেছেন যারা একে অপরের সাথে কথা বলেন না। এটা খুবই বেমানান। রামাদান
মাস,মানুষ রোজা রেখেছে। জুমআর সময় মসজিদে এমন মানুষ দেখবেন যারা নিজেদের পরিবারের মানুষকে এড়িয়ে যাচ্ছে।
আপনার মনে চিন্তার উদ্রেক হয়। হজরত মুহাম্মদ (সা:) বলেছেন, সপ্তাহে ৩ দিন আল্লাহর নিকট আমলনামা প্রকাশ করা হয়।
বিশেষ করে সোমবার এবং বৃহস্পতিবার আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার নিকট পেশ করা হয় আপনার আমলনামা। আপনার ভাল
আমল আল্লাহর নিকট সোমবার ও বৃহস্পতিবার পেশ করা হয়। হজরত মুহাম্মদ (সা:) বলেছেন," আল্লাহ সেই দুইজন মানুষের
আমল দেখেন যারা একে অপরের সাথে ঝগড়া করছে এবং বলেন,এদের দুইজনের আমল পেশ করবেনা যতদিন তারা
নিজেদের মধ্যে সব মিটমাট করে নেয়। তাদেরকে ছেড়ে দাও।" আপনি জানেন আপনি আপনার ভাই-বোনদের,পরিবারের মাঝে
একটা মিথ্যে দেয়াল তৈরি কিরে রেখেছেন কতগুলি অমূলক বিষয় নিয়ে চিন্তা করার কারণে। যা আপনার রামাদান মাসের আমল
কেড়ে নিবে,আপনার হজ্জের সওয়াব কেড়ে নিবে,আপনার সকল উত্তম আমলগুলো কেড়ে নিবে। কেন? আপনার অহংকারের
কারণে। যদিও এটা এই বিষয়ের সাথে যায় না,শুধুমাত্র বুঝানোর জন্য বলছি এবং দাবি ত্যাগ করছি - একজন অত্যাচারী এবং
একজন পীড়িতের কথা বলছি। এখানে ঝগড়ার কথা বলা হয়েছে। আপনার সাথে যার ঝগড়া তার সাথে সমঝোতা করা অনেক
উত্তম কাজ। আপনি কি চান না আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আপনার সাথে সমঝোতা করে নিন? আপনি কি চান না আল্লাহ
আপনার কাজে খুশি থাকু ন? তাই কেন ভু ল বুঝাবুঝির অবসান করে একজন আরেকজনকে ক্ষমা করবেন না?আর এই
আয়াত এবং হাদিসের কথাগুলোর মাঝে খেয়াল করবেন, হজরত মুহাম্মদ (সা:) একই শব্দ এবং একই কথা বারবার উল্লেখ
করেছেন এবং আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার শব্দসমূহ একই। "দুনিয়াতে সবার প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন এবং যারা জান্নাতে আছে
তাঁদের থেকে দয়া পাবেন।" " দান কর, আমি তোমার উপর খরচ করব।" ক্ষমা করে দাও,তু মি কি চাও না আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা
করে দিন।" এই পুরা সময়ে হজরত মুহাম্মদ (সা:) একই শব্দ বারবার ব্যাবহার করেছেন এবং এটি স্পষ্ট বুঝাতে চেয়েছেন,যে
আল্লাহ আপনার সেরূপ ব্যাবহার করবেন যেরূপ আপনি অন্যের সাথে ব্যাবহার করবেন। আল্লাহর কাছে আপনার সেরূপ সম্মান
করবেন যেরূপ আপনি মানুষের সম্মান করবেন। আপনি যদি আল্লাহর কাছে দয়ার আশা করেন তাহলে আপনি একজন মানুষ
হিসেবে সেটি প্রকাশ করতে কতটু কু ইচ্ছুক?মানুষের প্রতি কি পরিমান দয়া আপনি প্রকাশ করতে সক্ষম এবং ইচ্ছুক?

You might also like