You are on page 1of 28

সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত অধিক ফজিলতপূর্ণ কিছু সুরা ও আয়াত

১- সুরা ইখলাসের ফজিলতঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুরা ইখলাস সম্পর্কে বলেছেনঃ
“নিঃসন্দেহে এটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান”। মুসলিম ৮১২, তিরমিযী ২৮৯৯, ইবনু মাজাহ ৩৭৮৭, আহমাদ ৯২৫১।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, “তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে পারনা”?
প্রস্তাবটি সাহাবাদের জন্য কঠিন মনে হল। তাই তাঁরা বলে উঠলেন, “হে আল্লাহর রসুল! এই কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে”?
(অর্থাৎ কেউ পারবে না।) তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ” (সুরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের
সমান”। (অর্থাৎ এই সুরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী পাওয়া যাবে)। সহীহুল বুখারী ৫০১৫, নাসায়ী ৯৯৫, আবু
দাউদ ১৪৬১, আহমাদ ১০৬৬৯।
#এক সাহাবী এসে বলল, “হে আল্লাহর রসূল! আমি এই (সূরা) ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদকে ভালবাসি”। তিনি বললেন, “এর ভালবাসা
তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে”। বুখারীর ৭৭৪নং হাদীসের পরবর্তী অধ্যায়, তিরমিযী ২৯০১, আহমাদ ১২০২৪
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি সুরা ইখলাস ১০ বার পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর
বানানো হবে”। সহীহ আল-জামি আস-সগীর ৬৪৭২।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করতে শুনলেন। তিনি বললেন “এটা তার
অধিকার”। সাহাবারা জিজ্ঞাস করলেন, তার অধিকার কি? তিনি উত্তর দিলেন, “তার অধিকার হচ্ছে জান্নাত”। মুসনাদে আহমাদঃ
৭৬৬৯।
***দিনে রাতে যতবার ইচ্ছা, বেশি বেশি করে সুরা ইখলাস পড়া যাবে।
২- *সুরা মুলকের ফজিলত*
➖আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “নিশ্চয় পবিত্র কুরআনে একটি সূরা, যাতে আছে
তিরিশটি আয়াত। উহা পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে, যে পর্যন্ত তাকে ক্ষমা না করা হয়। সূরাটি হচ্ছে “তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল
মুল্কু..”। (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান এবং হাকেম। হাদীছের বাক্য তিরমিযীর,
তিনি হাদীছটিকে হাসান বলেছেন। আর হাকেম বলেছেন, এর সনদ সহীহ)
➖আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “কবরস্থিত ব্যক্তির নিকট পায়ের দিকে দিয়ে ফেরেশতারা শাস্তির জন্য
আসতে চাইবে। তখন তার পদদ্বয় বলবে, আমার দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে সূরা ‘মুলক’ পাঠ করত। তখন তার সীনা
অথবা পেটের দিক দিয়ে আসতে চাইবে। তখন সীনা অথবা পেট বলবে, আমার দিকে দিয়ে আসার কোন রাস্তা তোমাদের জন্য নেই।
কেননা সে আমার মধ্যে সূরা ‘মুলক’ ভালভাবে ধারণ করে রেখেছিল। অতঃপর তার মাথার দিক দিয়ে আসার চেষ্টা করবে। মাথা বলবে
এ দিক দিয়ে আসার রাস্তা নেই। কেননা সে আমার দ্বারা সূরা ‘মুলক’ পাঠ করেছিল। সূরা মুলক হচ্ছে বাধাদানকারী। কবরের আযাব
থেকে বাধা দিবে। তাওরাতেও সূরা ‘মুলক’ ছিল। যে ব্যক্তি উহা রাত্রে পাঠ করে, সে অধিক ও পবিত্র-উৎকৃষ্ট আমল করবে।” (হাদীছটি
বর্ণনা করেছেন হাকেম, তিনি বলেন, এর সনদ সহীহ।)
➖নাসাঈতে হাদীছটি সংক্ষিপ্তভাবে এসেছেঃ “যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাযী বি ইয়াদিহিল মুলকু.. পাঠ করবে, আল্লাহ্ তাকে
কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন।”
ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর যুগে সূরাটিকে মানেআ’ বা বাধাদানকারী সূরা বলে
আখ্যা দিতাম। উহা আল্লাহ তা’আলার কিতাব কুরআনের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে উহা পাঠ করবে সে অধিক
ও উৎকৃষ্ট আমল করবে। শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি হাসান। দ্র: সহীহ তারগীব ও তারহীব, হা/ ১৪৭৫ ও ১৪৭৬।
*সন্ধ্যার পর ঘুমানোর পূর্বে যে কোন সময় সূরাটি পড়তে পারেন। কোন অসুবিধা নেই।*
৩- আয়াতুল কুরসির ফজিলত
কুরআন মাজিদের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত- আয়াতুল কুরসি, যার ফজিলত এতো বেশি যে, রাসুল সাঃ বলেছেন, প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর
এই আয়াত পাঠ করলে মৃত্যু ছাড়া জান্নাত যাওয়ার পথে পাঠকারীর জন্য আর কোন বাধা থাকে না। (সহীহ জামে’ ৫/৩৩৯, সি:
সহীহাহ্‌৯৭২)

৪- সূরা কাহাফ এর ফযিলত


১। হযরত বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাতে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করছিলেন। তার কাছে দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা
ছিল। এরই মধ্যে একটি মেঘখণ্ড এসে তাকে ঢেকে ফেলল। এরপর যখন মেঘখণ্ডটি তার কাছে চলে আসছিল, তখন তার ঘোড়া
ছোটাছুটি করতে লাগল। অতঃপর সকালে ওই ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে
রাতের ঘটনা বললেন। তিনি বললেন, ওটা ছিল সাকিনা (রহমত), যা কোরআন তেলাওয়াতের বরকতে নাজিল হয়েছিল। (সহিহ বুখারি
৫০১১, ৩৬১৪; সহিহ মুসলিম ৭৯৫)
২। আবু সাইদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন সূরা কাহাফ
তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তা‘আলা এ জুমু‘আ থেকে পরবর্তী জুমু‘আ পর্যন্ত তার জন্য নূরের আলো দ্বারা আলোকিত করে রাখবেন”।
বাইহাকী, হাদিস: ৬০৬,
৩। হযরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে
নিরাপদ থাকবে। তাঁর থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু
দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ)
সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস` করবে সেও উল্লিখিত ফজিলতের অন্তর্ভুক্ত হবে।
৫- সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াতের ফজিলত-
***রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করলে তাহাজ্জুদের সমান সওয়াব পাওয়ার আশা করা যেতে পারেঃ
রাসুলুলাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে”।
বুখারি ৫০১০, মুসলিম ৮০৭।
বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থ “রিয়াদুস সালেহীন” এর লেখক ও সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার, ইমাম আন-নববী (রহঃ) বলেন,“এর অর্থ কেউ
বলেছেনঃ কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেনঃ শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ
বলেছেনঃ বালা-মুসিবত থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। তবে সবগুলো অর্থ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। [শারহুন নববী আ’লা সহিহ
মুসলিমঃ ৬/৩৪০, হাদীস ৮০৭।]
আবু মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,“যে ব্যক্তি সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতে পাঠ করবে,তার জন্য এ দুটি
আয়াত যথেষ্ট হবে। (অর্থাৎ সারারাত সে জিন ও মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে এবং প্রতিটি অপ্রিয় বিষয় থেকে তাকে হেফাজত
করা হবে)। (সহীহ বুখারি, মুসলিম)
৬- সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাসের ফজিলত :
প্রতি ফরজ সালাতের পর সূরা ইখলাস ফালাক ও নাস এ তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করতে হবে । ফজর আর মাগরিবের ফরজ
সালাতের পর এ তিনটি সূরা তিনবার করে মোট নয়বার পাঠ করা সুন্নত আর বাকী ফরজ সালাতের পর একবার করে পড়তে হবে ।
(আবু দাউদ হা:১৩৬৩)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে যখন ঘুমাতে যেতেন, তখন নিজের উভয় হাত এক
সঙ্গে মিলাতেন। তারপর উভয় হাতে ফুঁক দিতেন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়তেন। তারপর দেহের যতটুকু অংশ
সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। তিনি এরূপ তিনবার করতেন। -সহি
বুখারি ৫০১৭, সুনানে আবু দাউদ : ৫০৫৮, জামে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৪০২
নামাযের মাসনূন কেরাত

মূল : মাওলানা খন্দকার মনসুর আহমদ
সংযোজন : মাওলানা মুহাম্মাদ রাফিদ আমীন
নযরে ছানী ও সম্পাদনা : মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক
 

নামায  আমাদের  দৈনন্দিন জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, আখেরাতের পরম পাথেয় এবং ইসলামের অন্যতম বুনিয়াদ। এর 
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে কেরাত।
নামাযে কুরআনে কারীম থেকে তিলাওয়াত করা জরুরি। প্রথমে সূরা ফাতিহা এরপর আরও কিছু অংশ।
আলহামদু লিল্লাহ, নামাযের কেরাত সংক্রান্ত মাসায়েল সাধারণ পর্যায়ে মুসল্লীদের জানা আছে। কোন্ কোন্ রাকাতে সূরা ফাতিহা এ
বং আরও কিছু অংশ পড়া ওয়াজিব। কোন্ রাকাতে কেবল সূরা ফাতিহা পড়া সুন্নত, এরচে বেশি পড়ার বিধান নেই। আর কোন্ কো
ন্ নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে আরও কিছু অংশ পড়া আবশ্যক। এসব মাসআলা প্রায় সবারই জানা। তবে এক্ষে
ত্রে যে বিষয়টির আলোচনা তুলনামূলক কম হয় তা হল, ফরয নামাযে সুন্নত কেরাতের পরিমাণ কতটুকু এবং কোন্ নামাযে কোন্ সূ
রা তিলাওয়াত করা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের আমল হিসেবে প্রমাণিত।
আলহামদু লিল্লাহ, উলামায়ে কেরাম তো বিষয়গুলো বলেই থাকেন। তবু মনে হল, হাদীস-আছার ও ফিকহে হানাফীর আলোকে মাস
নূন কেরাত সম্পর্কে একটু বিস্তারিত লেখা যায়। এজন্য এই নিবন্ধে আমরা বিষয়টি বিশদভাবে  তুলে ধরার  প্রয়াস পাব- ইনশাআল্লা
হ।
 এ প্রসঙ্গে প্রথমেই যা জেনে নেয়া প্রয়োজন, তা হল, মুফাসসাল ও তার প্রকারসমূহের পরিচয়।
কুরআন মাজীদের শেষ অংশ, অর্থাৎ সূরা হুজুরাত থেকে সূরা নাস পর্যন্ত সূরাসমূহকে ‘মুফাসসাল’ বলা হয়। -তাফসীরে সাম‘আনী 
খ. ৫ পৃ. ২১২; জামালুল কুররা ওয়া কামালুল ইক্বরা, আলামুদ্দীন সাখাভী খ. ১ পৃ. ৩৫; বাসাইরু যাওয়িত তাময়ীয, ফায়রুযাবাদী 
খ. ৪ পৃ. ১৯৪; হাশিয়া ইবনে আবিদীন খ. ৩ পৃ. ৪৫৮
َّ ‫اِ َذا‬
মুফাসসাল তিন প্রকার- তিওয়ালে মুফাসসাল, আওসাতে মুফাসসাল ও  কিসারে মুফাসসাল। সূরা হুজুরাত থেকে সূরা ‫الس َمآ ُء‬
‫ا ْن َشقَّت‬ পর্যন্ত সূরাগুলি হচ্ছে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’। সূরা বুরূজ থেকে সূরা ক্বাদ্র পর্যন্ত সূরাগুলি হচ্ছে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ এবং  
সূরা বায়্যিনাহ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত সূরাগুলি হচ্ছে ‘কিসারে মুফাসসাল’। -মানাহিলুল ইরফান ফী উলূমিল কুরআন খ. ১ পৃ. ২৮৭; 
 আলবাহরুর রায়েক খ. ১ পৃ. ৫৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া খ. ১ পৃ. ৭৭; হাশিয়া ইবনে আবিদীন খ. ৩ পৃ. ৪৫৮-৪৬০; সি‘আয়াহ খ. 
২ পৃ. ২৮৬
বিষয়টি বোঝার সুবিধার্থে আমরা ছকের মাধ্যমে ‘মুফাসসাল’-এর সূরাগুলোর নাম ও পরিমাণ তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ। উল্লেখ্য, 
পৃষ্ঠাগত পরিমাণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমরা বর্তমানে ব্যাপকভাবে পঠিত নূরানী হাফেজী কুরআন শরীফকে অনুসরণ করেছি। যেখানে প
নের লাইনে এক পৃষ্ঠা হয়। ছকটি প্রবন্ধের শেষে লক্ষ্য করুন।
এই ভূমিকার পর প্রথমে আমরা মাসনূন  কেরাত বিষয়ক হাদীস ও আছার উল্লেখ করব। এরপর ফিকহে হানাফীর আলোকে উক্ত হা
দীস ও আছারগুলো থেকে প্রাপ্ত হেদায়াত ও বিধানাবলি উল্লেখ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।
ফজরের কেরাত
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-
،‫ َو ِمنَ الَّ ْی ِل فَتَهَ َّج ْد بِ ٖه نَافِلَ ةً لَّك‬،‫ اِ َّن قُرْ ٰانَ ْالفَجْ ِر َكانَ َم ْشهُوْ دًا‬ ‫ق الَّ ْی ِل َو قُرْ ٰانَ ْالفَجْ ِر‬
ِ ‫س اِ ٰلی َغ َس‬ ِ ‫ك ال َّش ْم‬ ِ ْ‫اَقِ ِم الص َّٰلوةَ لِ ُدلُو‬
.‫ك َربُّكَ َمقَا ًما َّمحْ ُموْ دًا‬ َ َ‫ع َٰۤسی اَ ْن یَّ ْب َعث‬
(হে নবী!) সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম কর এবং ফজরের সময় কুরআন পাঠে যত্নবান থাক। স্মরণ 
রেখ, ফজরের তিলাওয়াতে ঘটে থাকে  (ফেরেশতাগণের) সমাবেশ। রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে, যা তোমার জন্য এক অ
তিরিক্ত ইবাদত। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে  ‘মাকামে মাহমুদ’-এ পৌঁছাবেন। -সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৭৮-
৭৯
১. হযরত কুতবা ইবনে মালিক রা. বলেন-
.‫ َوالنّ ْخ َل بَا ِسقَات فِي ال ّر ْك َع ِة اُألولَى‬:‫فِي الفَجْ ِر‬ ‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم يَ ْق َرُأ‬
َ ِ‫ُول هللا‬ ُ ‫َس ِمع‬
َ ‫ْت َرس‬
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ফজরের প্রথম রাকাতে ‫ت‬ ٍ ‫قَا‬ ‫اس‬
ِ َ‫َل ب‬ ‫ َوالنّ ْخ‬ তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -
জামে তিরমিযী, হাদীস ৩০৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫৭
ٍ ‫قَا‬
হাদীসে উল্লেখিত ‫ت‬ ‫اس‬
ِ َ‫َل ب‬ ‫ َوالنّ ْخ‬- এ আয়াতাংশ সূরা ‫ق‬ -
এর প্রথম রুকুতে রয়েছে। হাদীসের সাধারণ অর্থ এটাই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের প্রথম রাকাতে সম্পূ
র্ণ সূরা ‘ক্বাফ’ তিলাওয়াত করেছেন।
২. হযরত জাবের ইবনে সামুরাহ রা. বলেন-
.‫ ونحوها‬:‫ وزاد في رواية‬،‫ق والقرآن المجيد‬:‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم َكانَ يَ ْق َرُأ فِي ْالفَجْ ِر بـ‬
َ ‫ِإ ّن النّبِ ّي‬
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের  নামাযে ‫رْ آ ِن‬ ُ‫ق َو ْالق‬
ْ
‫ال َم ِجي ِد‬  (সূরা ‘ক্বাফ’) এবং এর কাছাকাছি পরিমাণের সূরা তিলাওয়াত করতেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫৮
উল্লেখ্য যে, সূরা ‘ক্বাফ’-এর আয়াত সংখ্যা ৪৫
৩. অন্য হাদীসে হযরত জাবের ইবনে সামুরাহ রা. বলেন-
.‫َكانَ يَ ْق َرُأ فِي ْالفَجْ ِر ْال َواقِ َعةَ َونَحْ َوهَا ِمنَ السّو َر ِة‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে সূরা ‘ওয়াক্বিআহ’ এবং এজাতীয় সূরা তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে 
আব্দুর রাযযাক, হাদীস ২৭২০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২০৯৯৫
৪. হযরত উম্মে সালামা রা. বলেন-
ِ‫ت َو َر ُس و ُل هللا‬ ِ ‫اس َوَأ ْن‬
ُ ‫ فَطُ ْف‬،ٌ‫ت َرا ِكبَ ة‬ ِ ّ‫ طُوفِي ِم ْن َو َرا ِء الن‬:‫ فَقَا َل‬،‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم َأنِّي َأ ْشتَ ِكي‬
َ ِ‫ت ِإلَى َرسُو ِل هللا‬ ُ ْ‫َش َكو‬

ٍ ُ‫ب َم ْسط‬
.‫ور‬ ٍ ‫ور َو ِكتَا‬ ُّ ‫ َوهُ َو يَ ْق َرُأ بِـ‬،‫ت‬
ِ ‫الط‬ ِ ‫ب البَ ْي‬ِ ‫صلِّي ِإلَى َج ْن‬ َ ُ‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم ي‬ َ
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার অসুস্থতার বিষয়ে জানালাম। তিনি বললেন, তুমি (সাওয়ারীতে) আরোহণ 
করে মানুষদের পিছনে গিয়ে তাওয়াফ কর। তো আমি তাওয়াফ করছিলাম আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায প
ড়ছিলেন। নামাযে তিনি তিলাওয়াত করছিলেন সূরা ‘তূর’। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৬৩৩
অন্য বর্ণনায় হাদীসটির শব্দ এই-
. َ‫صلّون‬
َ ُ‫ك َوالنّاسُ ي‬ ِ ‫ْح فَطُوفِي َعلَى بَ ِع‬
ِ ‫ير‬ ّ ‫صالَةُ ال‬
ِ ‫صب‬ ْ ‫ِإ َذا ُأقِي َم‬
َ ‫ت‬
যখন ফজরের নামায শুরু হবে তখন তুমি উটে আরোহণ করে তাওয়াফ করবে আর লোকেরা তখন নামাযে থাকবে। -সহীহ বুখারী, 
হাদীস ১৬২৬
এ বর্ণনায় স্পষ্টভাবে ফজরের নামাযের কথা এসেছে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামা
যে সূরা ‘তূর’ তিলাওয়াত করেছেন।  
৫. হযরত আমর ইবেন হুরাইস রা. বলেন-
ْ ‫ ِإ َذا ال َّش ْمسُ ُك ِّو َر‬:‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم يَ ْق َرُأ فِي ْالفَجْ ِر‬
.‫ت‬ َ ‫ْت النّبِ ّي‬ُ ‫َس ِمع‬
আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ফজরের নামাযে সূরা  ُ‫ْمس‬ َّ ‫ِإ َذا‬
‫الش‬
ْ ‫ ُك ِّو َر‬ (সূরা তাকবীর) তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৯৫১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৮৭৩৩
‫ت‬
৬. যাহহাক ইবনে উসমান রাহ. শারীক ইবনে আবী নামির রাহ. থেকে বর্ণনা করেন-
َ‫ ُع َم َر ْبن‬:‫ يَ ْعنِي‬،‫صاَل ةً بِ َرسُو ِل هللاِ صلّى هللا عليه وسلم ِم ْن هَ َذا ْالفَتَى‬ َ َ‫ْت َو َرا َء َأ َح ٍد َأ ْشبَه‬
ُ ‫صلّي‬
َ ‫ َما‬:‫ك قَا َل‬ ِ ‫ع َْن َأن‬
ٍ ِ‫َس ْب ِن َمال‬
‫ َويَ ْق َرُأ‬،‫ص َر‬
ْ ‫ف ْال َع‬ ّ َ‫ فَيُ ِطي ُل اَأْل ّولَتَ ْي ِن ِمن‬،ُ‫صلِّي َو َرا َءه‬ َ ‫ت ُأ‬
ّ ‫ َويُ ِخ‬،‫ َويُ َخفِّفُ اآْل ِخ َرتَ ْي ِن‬،‫الظ ْه ِر‬ ُ ‫ فَ ُك ْن‬:‫ك‬ ّ ‫ قَا َل ال‬.‫يز‬
ُ ‫ضحّا‬ ِ ‫َع ْب ِد ْال َع ِز‬
.‫ْح بِ ِط َوا ِل ْال ُمفَص ِّل‬ ّ ‫ َويَ ْق َرُأ فِي ال‬،‫ص ِل‬
ِ ‫صب‬ ّ َ‫ َويَ ْق َرُأ فِي ْال ِع َشا ِء بِ َو َس ِط ْال ُمف‬،‫ص ِل‬
ّ َ‫ار ْال ُمف‬
ِ ‫ص‬ ِ ‫فِي ْال َم ْغ ِر‬
َ ِ‫ب بِق‬
হযরত আনাস রা. উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.-এর ব্যাপারে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সদৃ
শ নামায আদায় করার ক্ষেত্রে এই যুবক থেকে অগ্রগামী আর কারো পিছনে নামায পড়িনি।
যাহহাক রাহ. বলেন, আমি উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.-এর পিছনে নামায পড়তাম। তিনি যোহরের প্রথম দুই রাকাত দীর্ঘ কর
তেন এবং শেষের দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত করতেন। আসরের নামায সংক্ষিপ্ত করতেন। মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ পড়তে
ন। ইশার নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ পড়তেন। ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ পড়তেন। -তাবাকাতে ইবনে সা‘দ 
খ. ৫ পৃ. ১৬১-১৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৩৬৬
৭. সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রাহ. বলেন-
،‫ ِإِل َم ٍام َك انَ بِ ْال َم ِدينَ ِة‬،‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َس لّ َم ِم ْن فُاَل ٍن‬َ ِ‫صاَل ةً بِ َرسُو ِل هللا‬ َ َ‫ْت َر ُجاًل َأ ْشبَه‬ُ ‫ َما َرَأي‬:‫ َأنّهُ قَا َل‬،َ‫ع َْن َأبِي ه َُر ْي َرة‬
‫ َويَ ْق َرُأ فِي‬،‫ص َر‬ ْ ‫ َويُخَ فِّفُ ْال َع‬،‫ َويُخَ فِّفُ اُأْل ْخ َريَي ِْن‬،‫ فَ َك انَ يُ ِطي ُل اُأْلولَيَي ِْن ِمنَ الظّ ْه ِر‬،ُ‫ْت خَ ْلفَ ه‬
ُ ‫صلّي‬ ٍ ‫ال ُسلَ ْي َمانُ بْنُ يَ َس‬
َ َ‫ ف‬:‫ار‬ َ َ‫ق‬
ِ ‫ َويَ ْق َرُأ فِي ْال َغ دَا ِة بِ ِط َو‬،‫ص ِل‬
‫ال‬ ّ َ‫ َويَ ْق َرُأ فِي اُأْلولَيَي ِْن ِمنَ ْال ِع َش ا ِء ِم ْن َو َس ِط ْال ُمف‬،‫ص ِل‬ّ َ‫ار ْال ُمف‬
ِ ‫ص‬ ِ ‫اُأْلولَيَ ْي ِن ِمنَ ْال َم ْغ ِر‬
َ ِ‫ب بِق‬
ّ َ‫ْال ُمف‬
.‫ص ِل‬
হযরত আবু হুরাইরা রা. মদীনার এক আমীর স¤পর্কে বললেন, আমি তার থেকে অধিক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-
এর সদৃশ নামায আদায়কারী আর কাউকে দেখিনি।
সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রাহ. বলেন, আমি ঐ আমীরের পিছনে নামায পড়েছি। তিনি যোহরের প্রথম দুই রাকাত দীর্ঘ করতেন এ
বং শেষের দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত করতেন। আসরের নামায সংক্ষিপ্ত করতেন। মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতে ‘কিসারে মুফাসসাল’ পড়
তেন। ইশার প্রথম দুই রাকাতে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ পড়তেন। ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ পড়তেন। -মুসনাদে আ
হমাদ, হাদীস ৮৩৬৬, ৭৯৯১; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৮২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ৫২০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮৩
৭; শারহু মা‘আনিল আসার, হাদীস ১২৭৯, ১২৮০
৮. হযরত আবু বারযা রা. থেকে বর্ণিত-
َ ‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم َكانَ يَ ْق َرُأ فِي‬
.‫صاَل ِة ْال َغدَا ِة ِمنَ ال ِّستِّينَ ِإلَى ْال ِماَئ ِة‬ َ ِ‫َأ ّن َرسُو َل هللا‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল¬ম ফজরের  নামাযে ষাট আয়াত থেকে একশত আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করতেন। -সহীহ 
মুসলিম, হাদীস ৪৬১; সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৯
হযরত উমর রা.-এর ফরমান
হাসান বসরী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
‫ال‬
ِ ‫ْح بِ ِط َو‬ ّ
ِ ‫الص ب‬ ّ َ‫ َوفِي ْال ِع َش ا ِء بِ َو َس ِط ْال ُمف‬،‫ص ِل‬
‫ َوفِي‬،‫ص ِل‬ ّ َ‫ار ْال ُمف‬
ِ ‫ص‬ ِ ‫ َأ ِن ا ْق َرْأ فِي ْال َم ْغ ِر‬:‫َب ُع َم ُر ِإلَى َأبِي ُمو َسى‬
َ ِ‫ب بِق‬ َ ‫َكت‬
.‫ص ِل‬ّ َ‫ْال ُمف‬
হযরত উমর রা. হযরত আবু মূসা আশআরী রা.-কে লিখে পাঠিয়েছেন যে, মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ পড়বে, ইশার 
নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ পড়বে এবং ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ পড়বে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা 
২৬৭২
হযরত উমর রা.-এর আমল
রবী‘আ ইবনে আবদুল্লাহ রাহ. বলেন-
.‫َكانَ ُع َم ُر يَ ْق َرُأ بِ ْال َح ِدي ِد َوَأ ْشبَا ِههَا‬
হযরত উমর রা. (ফজরের নামাযে) সূরা ‘হাদীদ’ ও এ ধরণের সূরা তিলাওয়াত করতেন। -
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭২২ (ফজরের কেরাত অনুচ্ছেদ)
তাবেঈনের আমল
১. যাহহাক ইবনে উসমান রাহ. বলেন-
.‫يز قَ َرَأ فِي ْالفَجْ ِر بِسُو َرتَ ْي ِن ِم ْن ِط َوا ِل ْال ُمفَص ِّل‬
ِ ‫ْت ُع َم َر ْبنَ َع ْب ِد ْال َع ِز‬
ُ ‫َرَأي‬
আমি উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.-কে ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’-এর দুটি সূরা তিলাওয়াত করতে দেখেছি। -
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৮২
২. কাতাদা রাহ. বলেন-
‫ َو يَا َأ ُّيهَا النَّبِ ُّي لِ َم‬   ،‫ يَا َأ ُّيهَا النَّبِ ُّي ِإ َذا طَلَّ ْقتُ ُم النِّ َس ا َء‬:‫ فَقَ َرَأ فِي ْالفَجْ ِر‬،‫اس‬ َ ‫ي بْنُ َأرْ طَ اةَ ْال َح َس نَ َأ ْن ي‬
ِ ّ‫ُص لِّ َي بِالن‬ ّ ‫َأ َم َر َع ِد‬
.‫تُ َح ِّر ُم‬
আদী ইবনে আরতাত রাহ. হাসান বসরী রাহ.-কে নামায পড়াতে বললেন। হাসান বসরী রাহ. ফজরের নামাযে ‫يَا َأ ُّيهَا النَّبِ ُّي ِإ َذا‬
‫ا َء‬ ‫طَلَّ ْقتُ ُم النِّ َس‬ (সূরা ত্বালাক) ও ‫رِّم‬ ‫ َو يَا َأ ُّيهَا النَّبِ ُّي لِ َم تُ َح‬ (সূরা তাহরীম) তিলাওয়াত করলেন। -
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭২৬
৩. নু‘মান ইবনে কায়স রাহ. আবীদা সালমানী রাহ.-এর ব্যাপারে বলেন-
.‫ الرَّحْ َمنَ َونَحْ َوهَا‬:‫َأنّهُ َكانَ يَ ْق َرأ فِي ْالفَجْ ِر‬
তিনি ফজরের নামাযে সূরা ‘আররহমান’ এবং এজাতীয় সূরা তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৭৬
ফজরের নামাযে ‘মুফাসসাল’-এর বাইরে থেকে তিলাওয়াত
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে ‘মুফাসসাল’-এর বাইরে থেকেও দীর্ঘ কেরাত পড়েছেন।
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সা’ইব রা. বলেন-
‫وس ى َوهَ ارُونَ َأوْ ِذ ْك ُر‬
َ ‫ َحتّى َج ا َء ِذ ْك ُر ُم‬، َ‫ فَا ْستَ ْفتَ َح ُس و َرةَ ْال ُم ْؤ ِمنِين‬،َ‫ص ْب َح بِ َم ّكة‬ّ ‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم ال‬ َ ‫صلّى لَنَا النّبِ ّي‬ َ
.‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم َس ْعلَةٌ فَ َر َك َع‬ ِ ‫اختَلَفُوا َعلَ ْي ِه ـ َأ َخ َذ‬
َ ‫ت النّبِ ّي‬ ْ ‫ َأ ِو‬،‫ك‬ ّ ‫ِعي َسى ـ ُم َح ّم ُد بْنُ َعبّا ٍد يَ ُش‬
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় আমাদের নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামাযে তিনি সূরা মু’মিনূন শুরু করলেন
। যখন হযরত মূসা ও হারূন আ. অথবা হযরত ঈসা আ.-এর আলোচনায় পৌঁছলেন তখন তার কাশি আসল, ফলে তিনি রুকূতে চ
লে গেলেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৮২০
সূরা মু’মিনূন-এ হযরত মূসা আ. ও হযরত হারূন আ.-এর আলোচনা শুরু হয়েছে ৪৫ নং আয়াত থেকে এবং হযরত ঈসা আ.-এর 
আলোচনা শুরু হয়েছে ৫০ নং আয়াত থেকে।
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন-
ِ ‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم لَيَُؤ ّمنَا فِي ْالفَجْ ِر بِالصّافّا‬
.‫ت‬ َ ِ‫ِإ ْن َكانَ َرسُو ُل هللا‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে সূরা ‘সাফফাত’ দিয়ে আমাদের ইমামতি করতেন। -সহীহ ইবনে হিব্বা
ন, হাদীস ১৮১৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৪৯৮৯
৩. শাবীব আবু রওহ রাহ. জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন-
ِ ‫ فَقَ َرَأ فِي ِه َما بِالر‬،‫صلّى هللاُ َعلَ ْي ِه َو َسلّ َم ْالفَجْ َر‬
.‫ّوم‬ َ ِ‫صلّى َرسُو ُل هللا‬
َ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামায আদায় করলেন। নামাযে তিনি সূরা ‘রূম’ তিলাওয়াত করলেন। -
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩০৭২, ২৩১২৫; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৪৭
সাহাবায়ে কেরাম রা.-ও ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’-এর বাইরে থেকে দীর্ঘ দীর্ঘ সূরা তিলাওয়াত করতেন।
১. হযরত আনাস রা. বলেন-
.‫ فَقَ َرَأهَا فِي َر ْك َعتَ ْي ِن‬،َ‫ فَا ْستَ ْفتَ َح ْالبَقَ َرة‬،‫ْت َخ ْلفَ َأبِي بَ ْك ٍر ْالفَجْ َر‬
ُ ‫صلّي‬
َ
আমি হযরত আবু বকর রা.-এর পিছনে ফজরের নামায পড়েছি। তিনি সূরা ‘বাক্বারা’ শুরু করলেন এবং দুই রাকাতে পূর্ণ সূরাটি তি
লাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭১১, ২৭১৩; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৬৫
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হারিস রা.-ও হযরত আবু বকর রা. থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন। -শারহু মা‘আনিল আসার, বর্ণনা ১০৮৯
অন্য এক বর্ণনায় হযরত আনাস রা. বলেন-
. َ‫ فَقَ َرَأ بِسُو َر ِة آ ِل ِع ْم َران‬،‫ْح‬ َ ‫صلّى بِنَا َأبُو بَ ْك ٍر‬
ّ ‫صاَل ةَ ال‬
ِ ‫صب‬ َ
হযরত আবু বকর রা. আমাদেরকে ফজরের নামায পড়ালেন। নামাযে তিনি সূরা ‘আলে ইমরান’ তিলাওয়াত করলেন। -শারহু 
মা‘আনিল আছার, বর্ণনা ১০৮৮; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭১২
২. আহনাফ ইবনে কায়স রাহ. বলেন-
َ ُ‫ فَقَ َرَأ بِيُون‬،َ‫ْت َخ ْلفَ ُع َم َر ْال َغدَاة‬
.‫س َوهُو ٍد َونَحْ ِو ِه َما‬ ُ ‫صلّي‬
َ
আমি হযরত উমর রা.-এর পিছনে ফজরের নামায আদায় করেছি। নামাযে তিনি সূরা ‘ইউনুস’ ও সূরা ‘হূদ’ এবং এ ধরনের সূরা 
তিলাওয়াত করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৬৬
যায়দ ইবনে ওয়াহব রাহ. বলেন-
. َ‫ بَنِي ِإس َْراِئي َل َو ْال َك ْهف‬:‫ فَقَ َرأ‬،‫ْح‬ َ ‫صلّى بِنَا ُع َم ُر‬
ّ ‫صاَل ةَ ال‬
ِ ‫صب‬ َ
হযরত উমর রা. আমাদেরকে ফজরের নামায পড়ালেন। নামাযে তিনি সূরা ‘বানী ইসরাঈল’ ও সূরা ‘কাহ্ফ’ তিলাওয়াত করলেন। 
-শারহু মা‘আনিল আছার, বর্ণনা ১০৭৯, ১০৮০
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমের ইবনে রবী‘আ রা. বলেন-
‫ َك انَ يَ ْق َرُؤ هُ َما‬:‫ فَقَ ا َل‬،‫ص اَل ِة ْالفَجْ ِر‬
َ ‫ ِم ْن َك ْث َر ِة َما َك انَ يَ ْق َرُؤ هُ َما فِي‬،‫ت سُو َرةَ يُوسُفَ َوسُو َرةَ ْال َح ِّج ِإاّل ِم ْن ُع َم َر‬ ُ ‫ظ‬ْ ِ‫َما َحف‬
.ً‫قِ َرا َءةً بَ ِطيَئة‬
আমি সূরা ‘ইউসুফ’ ও সূরা ‘হজ¦’ হযরত উমর রা. থেকে শুনে শুনেই হিফয করেছি। কারণ তিনি ফজরের নামাযে সূরা দুটি অনে
ক বেশি তিলাওয়াত করতেন। তিনি তিলাওয়াত করতেন ধীরে ধীরে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭১৫
আবু রাফে রাহ. বলেন-
‫ َويَ ْق َرُأ بِ ِمَئ ٍة ِم ْن آ ِل‬،‫ص ِل‬
ّ َ‫ُور ْال ُمف‬
ِ ‫صد‬ُ ‫ َويُ ْتبِ ُعهَا بِسُو َر ٍة ِمنَ ْال َمثَانِي َأوْ ِم ْن‬،‫ْح بِ ِمَئ ٍة ِمنَ ْالبَقَ َر ِة‬ َ ‫َكانَ ُع َم ُر يَ ْق َرُأ فِي‬
ّ ‫صاَل ِة ال‬
ِ ‫صب‬
ّ َ‫ُور ْال ُمف‬
.‫ص ِل‬ ِ ‫صد‬ ُ ‫ َويُ ْتبِ ُعهَا بِسُو َر ٍة ِمنَ ْال َمثَانِي أوْ ِم ْن‬، َ‫ِع ْم َران‬
হযরত উমর রা. ফজরের (প্রথম রাকাতে) সূরা ‘বাক্বারা’ থেকে একশ আয়াত পড়তেন। তারপর (দ্বিতীয় রাকাতে) ‘মাসানী’ থেকে 
অথবা ‘মুফাসসালের’ শুরু অংশ থেকে পড়তেন। আবার কখনো (প্রথম রাকাতে) সূরা ‘আলে ইমরান’ থেকে একশ আয়াত পড়তে
ন। তারপর (দ্বিতীয় রাকাতে) ‘মাসানী’ অথবা ‘মুফাসসালের’ শুরু অংশ থেকে পড়তেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫
৮৩
‘মুফাসসালের’ সূরাসমূহ ব্যতীত অন্য যেসব সূরার আয়াত সংখ্যা একশ থেকে কম, ঐ সূরাগুলোকে ‘মাসানী’ বলা হয়। -আল ইত
কান ফী উলূমিল কুরআন খ. ১ পৃ. ২০০
৩. ফুরাফিসা ইবনে উমাইর রাহ. বলেন-
.‫ْح ِم ْن َك ْث َر ِة َما َكانَ يُ َر ِّد ُدهَا لَنَا‬ ّ ‫ت سُو َرةَ يُوسُفَ ِإالّ ِم ْن قِ َرا َء ِة ع ُْث َمانَ ب ِْن َعفّانَ ِإيّاهَا فِي ال‬
ِ ‫صب‬ ُ ‫َما َأخ َْذ‬
আমি হযরত উসমান রা.-এর ফজরের তিলাওয়াত থেকেই সূরা ‘ইউসুফ’ শিখেছি। কারণ এই সূরাটি তিনি আমাদের সামনে বারবা
র তিলাওয়াত করতেন। -মুয়াত্তা মালিক, বর্ণনা ২২০; শারহু মা‘আনিল আছার, বর্ণনা ১০৯০
৪. আবু আবদুর রহমান সুলামী রাহ. বলেন-
.‫ فَقَ َرَأ بِاَأْل ْنبِيَا ِء‬،‫َأ ّمنَا َعلِ ّي فِي ْالفَجْ ِر‬
হযরত আলী রা. ফজরের নামাযে আমাদের ইমামতি করলেন। নামাযে তিনি সূরা ‘আম্বিয়া’ তিলাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে আবদু
র রাযযাক, বর্ণনা ২৭০৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৮১
৫. আবু আমর শাইবানী রাহ. বলেন-
َ ‫ اآْل ِخ َرةُ ِم ْنهُ َما بَنُوْ ِإ ْس َراِئ‬،‫ فَقَ َرَأ بِسُوْ َرتَ ْي ِن‬،‫صلّى بِنَا َع ْب ُد هللاِ ْالفَجْ َر‬
.‫يل‬ َ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন। তিনি দুটি সূরা তিলাওয়াত করলেন। দ্বিতী
য় সূরাটি ছিল সূরা ‘বানী ইসরাইল’। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৭০
৬. আমর ইবনে মাইমুন রাহ. বলেন-
ّ ‫صلّى ال‬
.‫ فَقَ َرأ بِالنِّ َسا ِء‬،‫ص ْب َح بِاليَ َم ِن‬ َ ‫أن ُم َعا َذ ْبنَ َجبَ ٍل‬
ّ
হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল রা.
(একদিন) ইয়েমেনে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামাযে তিনি সূরা ‘নিসা’ তিলাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাই
বা, বর্ণনা ৩৫৭৩
৭. নাফে রাহ. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর ব্যাপারে বলেন-
. ُ‫ والّتي ي ُْذكر فِيها ال َكهْف‬، ُ‫َكانَ يَ ْق َرأ فِي ْالفَجْ ِر بِالسّوْ َر ِة الّتِ ْي ي ُْذ َك ُر فِيهَا يُوسف‬
তিনি ফজরের নামাযে হযরত ইউসুফ আ.-এর আলোচনা সম্বলিত সূরা (অর্থাৎ সূরা ‘ইউসুফ’) এবং কাহফের আলোচনা সম্বলিত সূ
রা (অর্থাৎ সূরা ‘কাহফ’) তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৭৪
সাহাবায়ে কেরামের পরে তাবেঈনও ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’-এর বাইরে থেকে লম্বা সূরা তিলাওয়াত করেছেন।
১. ওয়ালীদ ইবনে জুমাই রাহ. বলেন-
.‫ َو َكانَ َس ِري َع ْالقِ َرا َء ِة‬،‫ْح بـ يس َوَأ ْشبَا ِههَا‬ ّ ‫ فَ َكانَ يَ ْق َرأ فِي ال‬،‫ْت َخ ْلفَ ِإب َْرا ِهي َم‬
ِ ‫صب‬ ُ ‫صلّي‬
َ
আমি ইবরাহীম নাখাঈ রাহ.-এর পিছনে নামায পড়েছি। তিনি ফজরের নামাযে সূরা ‘ইয়াসীন’ ও এই ধরনের সূরা তিলাওয়াত কর
তেন। আর তিনি ছিলেন দ্রুত তিলাওয়াতকারী। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৮০
২. আমর ইবনে ইয়া‘লা রাহ. সাঈদ ইবনে জুবাইর রাহ. স¤পর্কে বলেন-
.‫ فَقَ َرَأ بَنِي ِإ ْس َراِئي َل فِي َر ْك َعتَ ْي ِن‬،‫َأنّهُ َأ ّمهُ ْم فِي ْالفَجْ ِر‬
তিনি ফজরের নামাযে তাদের ইমামতি করলেন। তিনি সূরা ‘বানী ইসরাঈল’ তিলাওয়াত করলেন দুই রাকাতে। -মুসান্নাফে আবদুর 
রাযযাক, বর্ণনা ২৭১৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৭৩৬
৩. আতা ইবনে সা’ইব রাহ. বলেন-
.‫ فَ ُربّ َما قَ َرَأ بِ ْال َماِئ َد ِة فِي ْالفَجْ ِر‬،َ‫ْت َخ ْلفَ َعرْ فَ َجة‬
ُ ‫صلّي‬
َ
আমি আরফাজা রাহ.-এর পিছনে নামায পড়েছি। কখনো তিনি ফজরের নামাযে সূরা ‘মায়িদা’ তিলাওয়াত করেছেন। -মুসান্নাফে ই
বনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৭৭
ফজরের নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’-এর শুরু থেকে তিলাওয়াত
১. ইয়াযীদ ইবনে আবদুর রহমান আওদী রাহ. বলেন-
.‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬ ِ ‫ َسب‬ ‫بِـ‬ ‫فَقَ َرَأ‬ ،‫ص ْب َح‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ ّ ‫ال‬ ‫ َعلِ ٍّي‬  َ‫خَ ْلف‬ ‫ْت‬
ُ ‫صلّي‬
َ
আমি হযরত আলী রা.-এর পিছনে ফজরের নামায পড়েছি। নামাযে তিনি ‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬َ ِّ‫ َرب‬ ‫اس َم‬ْ  ‫ِّح‬
ِ ‫ َس ب‬ (সূরা আ‘লা) তিলাওয়াত করেছে
ন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৭৮, ৩৫৭১
২. আবু সাওয়ার কাযী রাহ. বলেন-
.‫ ْال ِع َما ِد‬ ‫ت‬ َ ُّ‫ َرب‬ ‫فَ َع َل‬  َ‫ َك ْيف‬ ‫تَ َر‬ ‫َألَ ْم‬ :‫يَ ْق َرُأ‬ ُ‫فَ َس ِم ْعتُه‬ ،‫ص ْب َح‬
ِ ‫ َذا‬ ‫ِإ َر َم‬ ‫بِ َعا ٍد‬ ‫ك‬ ّ ‫ال‬ ‫ال ّزبَي ِْر‬ ‫اب ِْن‬  َ‫خَ ْلف‬ ‫ْت‬
ُ ‫صلّي‬
َ
আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা.-এর পিছনে ফজরের নামায পড়েছি। নামাযে আমি তাকে পড়তে শুনেছি  ‫فَ َع َل‬  َ‫ َك ْيف‬ ‫ت ََر‬ ‫َألَ ْم‬
‫ ْال ِع َما ِد‬ ‫ت‬
ِ ‫ َذا‬ ‫ِإ َر َم‬ ‫بِ َعا ٍد‬  َ‫ َربُّك‬ (সূরা ফাজ্র : ৬-৭)। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৭৯
উল্লেখিত হাদীস ও আছারসমূহের শিক্ষা
আলহামদু লিল্লাহ, ফজরের কেরাত সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো হাদীস ও আছার উল্লেখ করা হল। এখন প্রয়োজন হল এই হাদীস ও আছার
সমূহের দাবি ও উদ্দেশ্য এবং এগুলোর উপর আমল করার তরিকা ও পদ্ধতি সম্পর্কে অবগতি লাভ করা। এজন্য আমাদেরকে শরণা
পন্ন হতে হবে ইমাম আবু হানীফা রাহ. ও অন্যান্য ফুকাহায়ে কেরামের প্রতি। কেননা অনিবার্য বাস্তবতা এটাই- যেমনটি ইমাম তির
মিযী রাহ.-ও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন- ‫ث‬ َ  ‫بِ َم َع انِي‬ ‫َأ ْعلَ ُم‬ ‫ َوهُ ْم‬ ‫الفُقَهَا ُء‬ ‫قَا َل‬ ‫ك‬
ِ ‫الح ِدي‬ َ ِ‫ َو َك َذل‬ অর্থাৎ হাদীসের অর্থ ও মর্মের ব্যাপারে অ
ধিক জ্ঞান ও গভীর প্রজ্ঞা রাখেন ফুকাহায়ে কেরাম।
হানাফী মাযহাবের তৃতীয় ইমাম, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান শাইবানী রাহ. (১৮৯ হিজরী) ‘কিতাবুল আছল’-
এ নামাযে কেরাতের পরিমাণ নিয়ে আলোচনা শুরুই করেছেন ঐ হাদীস দিয়ে যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইর
শাদ করেছেন-
.‫ ْال َحا َج ِة‬ ‫ َو َذا‬ ‫وال َكبِي َر‬
ْ   َ‫ض ِعيف‬ َ ‫ ْال َم ِر‬ ‫فِي ِه ُم‬ ‫فَِإ ّن‬ ،‫َأضْ َعفِ ِه ْم‬ َ‫صاَل ة‬
ّ ‫ َوال‬ ‫يض‬ َ ‫فلي‬ ‫قَوْ َما‬ ‫أ ّم‬ ‫من‬
َ  ‫بِ ِه ْم‬ ‫ص ِّل‬
অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোনো জামাতের ইমামতি করবে সে উপস্থিত সবচে দুর্বল মুসল্লীর প্রতি খেয়াল রেখে নামায আদায় করবে। কেননা 
তাদের কেউ অসুস্থ থাকতে পারে। কোনো শিশু, কোনো বৃদ্ধ, কোনো প্রয়োজনগ্রস্ত ব্যক্তি (অর্থাৎ কোনো তাড়া থাকার দরুন যার জল
দি জলদি নামায থেকে ফারেগ হওয়া প্রয়োজন) এমন কেউ সেখানে থাকতে পারে। -কিতাবুল আছল, খ. ১ পৃ. ১৩৭; কিতাবুল আ
ছার, নুসখায়ে ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. পৃষ্ঠা ৩৮; কিতাবুল আছার, নুসখায়ে ইমাম আবূ ইউসুফ রাহ. পৃষ্ঠা ২৭
এই হাদীসটি উল্লেখ করে ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. লিখেন, নামাযে সূরা ফাতিহা তো পড়তেই হবে। সূরা ফাতিহার পর ফজরের দুই রা
কাতে চল্লিশ আয়াত পড়বে। যোহরের প্রথম দুই রাকাতে (মোটামুটি) এ পরিমাণ কিংবা এরচে কিছু কম পড়বে।
).‫أودونه‬ ‫ذلك‬ ‫من‬ ‫بنحو‬ ‫يقرأ‬ : ‫قا َ َل‬ ‫الظّه ِْر؟‬  َ‫ ِمن‬ ‫ال ّر ْك َعتَ ْي ِن‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫(فكم‬
আছর এবং ইশার প্রথম দুই রাকাতে বিশ আয়াত পড়বে। আর মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতের প্রতি রাকাতে ছোট কোনো সূরা পড়
বে- পাঁচ-ছয় আয়াতের। -কিতাবুল আছল, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান শাইবানী, খ. ১ পৃ. ১৩৭
‫هـ‬১৪৩৩ ‫بيروت‬ ‫حزم‬ ‫ابن‬ ‫دار‬ : ‫ناشر‬ ،‫الفريضة‬ ‫في‬ ‫القيام‬ ‫في‬ ‫ماجاء‬ ‫باب‬ 
উল্লেখিত মাসআলায় আমাদের তিন ইমামই (ইমাম আবু হানীফা রাহ., ইমাম আবু ইউসুফ রাহ. ও ইমাম মুহাম্মাদ রাহ.) একমত। 
কেননা কিতাবুল আছলে এক্ষেত্রে কোনো ইখতেলাফ উল্লেখ করা হয়নি।
ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. ‘আল জামিউস সাগীর’-এ ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর বক্তব্য উল্লেখ করেছেন-
ّ  ‫فِي‬ ‫ك‬
 ‫ َو ْالعصر‬ ،‫الظ ْه ر‬ َ ِ‫ َو َك َذل‬ ،‫ ْالكتاب‬ ‫فَاتِ َحة‬ ‫سوى‬ ‫آيَة‬ )‫ستين‬ ‫(أو‬ ‫خمسين‬ ‫َأو‬  َ‫بَِأرْ بَ ِعين‬ ‫ال ّر ْك َعتَ ْي ِن‬ ‫فِي‬ ‫ ْالفجْ ر‬ ‫فِي‬ ‫ضر‬
َ ‫ ْال َح‬ ‫فِي‬ ‫َوي ْق َرأ‬
.‫ َذلِك‬ ‫دون‬ ‫ ْالمغرب‬ ‫ َوفِي‬ ،‫ َس َواء‬ ‫َو ْالع َشاء‬
অর্থাৎ মুকীম অবস্থায় ফজরের উভয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ব্যতীত মোট চল্লিশ অথবা পঞ্চাশ (অথবা ষাট) আয়াত পড়বে। যোহরেও 
সে পরিমাণ পড়বে। আর আছর ও ইশার কেরাত বরাবর। আর মাগরিবের কেরাত এরচে কম।
(আল জামিউস সাগীর, পৃষ্ঠা ৭২
)‫هـ‬১৪৩২ ‫بيروت‬ ‫حزم‬ ‫ابن‬ ‫دار‬ : ‫الناشر‬ ،‫الصالة‬ ‫في‬ ‫القراءة‬ ‫باب‬ 
বন্ধনীর অংশটুকুর জন্য দ্রষ্টব্য : মাবসূত সারখসী, খ. ১ পৃ. ১৬২
 ‫بيروت‬ ‫المعرفة‬ ‫دار‬ :‫الناشر‬ ،‫الفريضة‬ ‫في‬ ‫القيام‬ ‫باب‬ ১৪০৬‫هـ‬
আলমুহীতুল বুরহানী, খ. ২ পৃ. ৪৪
 ‫كراچى‬ ‫القرآن‬ ‫إدارة‬ :‫الناشر‬ ،‫الثاني‬ ‫الفصل‬ ،‫الصالة‬ ‫كتاب‬ ১৪২৪‫هـ‬ 
বাদায়েউস সানায়ে খ. ১ পৃ. ৪৭৮
 ‫بيروت‬ ‫العربي‬ ‫التراث‬ ‫إحياء‬ ‫دار‬ : ‫الناشر‬ ،‫القراءة‬ ‫من‬ ‫المستحب‬ ‫القدر‬ ،‫الصالة‬ ‫كتاب‬ ১৪১৯‫هـ‬
এই তিনও কিতাবে ‘আলজামেউস সগীর’-এর উদ্ধৃতিতে >‫ستين‬ ‫( <أو‬অথবা ষাট) অংশটিও রয়েছে।
ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, প্রথম দুই রাকাতে এত এত পরিমাণ তিলাওয়াত করবে। এর অর্থ হল, দুই রাকাতে সর্বমোট এত আয়া
ত তিলাওয়াত করবে। প্রতি রাকাতেই এ পরিমাণ তিলাওয়াত করবে- এমনটি উদেশ্য নয়। (আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৮৮; ফাতহুল 
কাদীর ১/৩৩৪)
আল্লামা ফখরুদ্দীন যায়লায়ী রাহ. বলেছেন- যেমন, প্রথম রাকাতে পড়বে পঁচিশ আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকাতে পড়বে পনের আয়াত। 
(তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৩৪)
মুতাআখখিরীন ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, মুস্তাহাব হল, ফজর ও যোহরে তিওয়ালে মুফাসসাল থেকে পড়া, আছর ও ইশাতে আও
সাতে মুফাসসাল থেকে পড়া এবং মাগরিবে কিসারে মুফাসসাল থেকে পড়া। তবে ইমাম কুদূরী রাহ.-সহ অন্যান্য ফুকাহায়ে কেরাম 
এও বলেছেন যে, যোহরেও আছর ও ইশার মতো আওসাতে মুফাসসালই পড়বে।
মুতাআখখিরীন ফুকাহায়ে কেরাম যে মুফাসসাল থেকে পড়াকে মুস্তাহাব বলেছেন, এ কথায় এবং আমাদের ইমামগণের কথায় কো
নো তাআরুয বা বিরোধ নেই। কেননা ইমামগণের উদ্দেশ্য এই নয় যে, কেরাতের সুন্নত আদায় করার ক্ষেত্রে মুফাসসালের কোনো 
দখলই নেই। আর মুতাআখখিরীন ফুকাহায়ে কেরামের উদ্দেশ্যও এটা নয় যে, জামাতের নামাযে মুফাসসালের বাইরে থেকে মুস্তাহাব 
কেরাতের ন্যূনতম পরিমাণ (যা কিতাবুল আছল ও আলজামেউস সগীর-এর উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে।) পড়লে তা খেলাফে সুন্নত হবে- 
বিষয়টি কখনোই এমন নয়। বরং (ছকে উদ্ধৃত) তারতীব অনুযায়ী মুফাসসাল থেকে পড়া হলে তাতেও মাসনূন কেরাত আদায় হয়ে 
যাবে। আবার (ছকে উদ্ধৃত) পরিমাণ অনুযায়ী মুফাসসালের বাইরে থেকে পড়া হলেও মাসনূন কেরাত আদায় হয়ে যাবে। অবশ্য মু
ফাসসালের সূরাগুলো থেকেই ইমামতি করা সহজ। আর সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত একটি সহীহ হাদীস থেকেও এমনটি বুঝে আসে 
যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরয নামাযের জামাতে মুফাসসালের সূরাগুলো থেকে বেশি তিলাওয়াত করতেন। (
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮১৪; ফাতহুল বারী, ইবনে রজব, খ. ৪ পৃ. ৪৩৩)
 তেমনিভাবে উল্লেখিত আয়াতসমূহ থেকে একথা ভাবাও ভুল যে, মুফাসসালের যে দুই সূরা মিলে মোট চল্লিশ আয়াত হয় না এমনস
ব সূরা তিলাওয়াত করলে মাসনূন কেরাত আদায় হবে না। যেমন ফজরের প্রথম রাকাতে সূরা জুমুআ পড়ল এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূ
রা মুনাফিকূন পড়ল তাহলে নিঃসন্দেহে মাসনূন কেরাত আদায় হয়ে যাবে। যদিও এ দুই সূরার প্রত্যেকটিতে মাত্র এগারটি করে আ
য়াত-অর্থাৎ দুই সূরা মিলে সর্বমোট আয়াত হয় বাইশটি। কেননা এ দুই সূরার আয়াতগুলো বড় বড়। তিওয়ালে মুফাসসালেরই আরে
কটি সূরা হল সূরা তাকবীর। এর মোট আয়াত সংখ্যা ২৯টি হলেও পরিমাণে তা সূরা জুমুআ এবং সূরা মুনাফিকূন উভয়টি থেকে ছো
ট। অথচ সহীহ হাদীসেই রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে সূরা তাকবীর তিলাওয়াত করেছেন।
কেরাতের মাসনূন পরিমাণ বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ইমাম বুরহানুদ্দীন মাহমূদ আলবুখারী রাহ. (৫৫১ হি.-
৬১৬ হি.) ‘আল মুহীতুল বুরহানীতে’ (খ. ২ পৃ. ৪৪) খুব চমৎকার কথা উল্লেখ করেছেন-
.‫سعة‬ ‫األمر‬ ‫في‬ ‫أن‬ ‫على‬ ‫يستدل‬ ‫اآلثار‬ ‫وباختالف‬ ،‫هللا‬ ‫رحمه‬ ‫محمد‬ ‫مقادير‬ ‫اختلفت‬ ‫القراءة‬ ‫مقادير‬ ‫في‬ ‫اآلثار‬ ‫اختلفت‬ ‫ولما‬
মোদ্দাকথা হল, মাসনূন কেরাত কোনো এক নির্দিষ্ট পরিমাণে (যেমন শুধু চল্লিশ আয়াত) কিংবা নির্দিষ্ট কোনো সূরায় সীমাবদ্ধ নয়। ন
বী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খুলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেঈনের আমলের মাঝে এক্ষেত্রে বৈচিত্র্য 
পাওয়া যায়। অতএব এ থেকে একথাই প্রমাণিত হয় যে, মাসনূন কেরাতের ব্যাপারে ‫توسع‬ বা ব্যাপকতা রয়েছে। তাই একে সীমাব
দ্ধ করে ফেলা উচিত নয়।
ফুকাহায়ে কেরাম এক্ষেত্রে ঐ বিষয়গুলোও উল্লেখ করেছেন, যেগুলো বিবেচনায় রেখে ইমাম সাহেব সুন্নত কেরাতের বিভিন্ন পদ্ধতির 
কোনো একটি গ্রহণ করবেন, যাতে মুসল্লীদের জন্য চাপ হয়ে না যায়। উদাহরণস্বরূপ যে মৌসুমে রাত লম্বা হয়, মানুষের ঘুম পুরা হ
য়ে যায়, ঐ সময় ফজরের কেরাত কিছুটা দীর্ঘ হলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যে মৌসুমে রাত ছোট থাকে, ঐ সময় ফজরের কেরা
ত লম্বা করলে মুসল্লীদের জন্য তা কষ্টকর হয়ে যেতে পারে। তেমনিভাবে বেশি গরমের সময় দীর্ঘ কেরাত কষ্টের কারণ হয়। কিন্তু 
মৌসুম স্বাভাবিক থাকলে এমন হয় না।
তেমনিভাবে যে মসজিদে নির্ধারিত মুসল্লী থাকেন এবং সকলেই ইবাদতে আগ্রহী ও উদ্যমী হন, তাদের জন্য দীর্ঘ কেরাত কষ্টকর 
কিছু নয়। পক্ষান্তরে যে মসজিদের মুসল্লীগণ ব্যস্ত থাকেন কিংবা ইবাদতে যারা কম উদ্যমী তাদের জন্য দীর্ঘ কেরাত চাপ হয়ে যেতে 
পারে।
 তেমনিভাবে যেই ইমাম সাহেব ঝরঝরে পড়েন এবং যার কেরাতে মুসল্লীগণ আকর্ষণ বোধ করেন, এমন ইমামের দীর্ঘ কেরাতও সং
ক্ষিপ্ত মনে হয়। অন্যথায় সংক্ষিপ্ত কেরাতও অনেক সময় দীর্ঘ মনে হয়।
হাট-বাজারের মসজিদগুলোতে, রাস্তার পাশের মসজিদগুলোতে (তেমনিভাবে স্টেশন ও তার আশপাশের মসজিদগুলোতে) ব্যস্ত মুস
ল্লীদের সংখ্যা বেশি থাকে। তাদের বিভিন্ন তাড়া থাকে। জলদি জলদি তারা নামায থেকে ফারেগ হতে চান। তাদের জন্য দীর্ঘ কেরা
তে নামায পড়া কষ্টকর হয়ে যায়। আর যে মসজিদ এমন নয় সেখানে অবস্থা ভিন্ন রকম হয়।
তেমনিভাবে ছোট ছোট আয়াতের ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট সূরা বড় বড় আয়াতের পনের আয়াত বিশিষ্ট সূরার সমান হয়ে থাকে।
এধরনের বিভিন্ন হালাত ও অবস্থা বিবেচনায় রেখে ফুকাহায়ে কেরাম যে উসূল বলেছেন, তার খোলাসা হল- ইমাম সাহেবের কর্তব্য 
হচ্ছে মুসল্লীদের হালতের প্রতি খেয়াল রাখা।
হযরত আবূ মাসউদ আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে বলল, আ
মি অমুকের কারণে ফজরের জামাতে শরীক হই না। সে নামায (খুব) দীর্ঘ করে! আবূ মাসউদ বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আ
লাইহি ওয়াসাল্লামকে সেদিন যতটা নারাজ হতে দেখেছি, নসীহত করার সময় এমন নারাজ হতে আর কখনও দেখিনি। অতপর নবী
জী বললেন-
.‫ ْال َحا َج ِة‬ ‫ َو َذا‬  َ‫ض ِعيف‬ َ ِ‫ ْال َكب‬ ‫ َو َراِئ ِه‬ ‫ ِم ْن‬ ‫فَِإ ّن‬ ،‫فَ ْليُو ِجز‬ ‫اس‬
ّ ‫ َوال‬ ‫ير‬ َ ّ‫الن‬ ‫َأ ّم‬ ‫فََأيّ ُك ْم‬ ، َ‫ ُمنَفِّ ِرين‬ ‫ ِم ْن ُك ْم‬ ‫ِإ ّن‬  ُ‫النّاس‬ ‫َأيّهَا‬ ‫يَا‬
লোকসকল, তোমাদের কেউ কেউ এমন রয়েছে, যে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। তোমাদের যে কেউই ইমামতি করবে, তার কর্তব্য 
হচ্ছে, সে নামায সংক্ষিপ্ত করবে। কেননা তার পিছে বৃদ্ধ, দুর্বল ও প্রয়োজনগ্রস্ত ব্যক্তিও থাকে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৬৬; সহীহ 
বুখারী, হাদীস ৭০২, ৭০৪)
অন্য হাদীসে রয়েছে-
َ ُ‫فَ ْلي‬ ُ‫ َوحْ َده‬ ‫صلّى‬
.‫ َشاء‬  َ‫ َك ْيف‬ ‫ص ِّل‬ َ ‫ َو ْال َم ِر‬ ، َ‫ض ِعيف‬
َ  ‫فَِإ َذا‬ ،‫يض‬ ّ ‫ َوال‬ ،‫ َو ْال َكبِي َر‬ ،‫ص ِغي َر‬ ْ ِّ‫فَ ْليُ َخف‬ ‫اس‬
ّ ‫ال‬ ‫فِي ِه ُم‬ ‫فَِإ ّن‬ ،‫ف‬ َ ّ‫الن‬ ‫َأ َح ُد ُك ُم‬ ‫َأ ّم‬ ‫ِإ َذا‬
 যে ব্যক্তি লোকদের ইমামতি করবে সে যেন নামায সংক্ষিপ্ত করে।... আর যখন একাকী নামায পড়বে তখন যত ইচ্ছা নামায দীর্ঘ ক
রুক। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৬৭; সহীহ বুখারী, হাদীস ৭০৩)
হযরত জাবের ইবনে সামুরা রা. যে হাদীসে একথা বলেছেন যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে সূরা 
ক্বাফ বা এ ধরনের অন্য কোনো সূরা তিলাওয়াত করতেন, সে হাদীসে তিনি এও বলেছেন যে, ( ‫تخفيف‬ ‫بعد‬ ‫ص الته‬ ‫وك انت‬
‫)ا‬ এই বাক্যটির একটি ব্যাখ্যা এও যে- পরবর্তীতে (যখন মুসল্লীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছিল তখন) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আ
লাইহি ওয়াসাল্লামের নামায আরো সংক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৫৮)
এসব হাদীস থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে না
মাযে খুব দীর্ঘ কেরাতের যেসকল বিবরণ পাওয়া যায়, সেগুলো সেই প্রেক্ষাপটে ছিল যখন মুসল্লী সীমিত ও নির্ধারিত ছিল এবং এমন 
দীর্ঘ তিলাওয়াতে কষ্ট হত না। নতুবা ইমাম সাহেবানের জন্য আম হেদায়েত তো এটাই যে, তারা নামায সংক্ষিপ্ত করবেন। অর্থাৎ মু
স্তাহাব কেরাতের ন্যূনতম পরিমাণ তিলাওয়াত করবেন। চাইলে এর চেয়ে কিছু বেশি পড়তে পারেন। তবে খুব দীর্ঘ করবেন না এবং 
নামাযের আরকান, তাসবীহ-দুআ ইত্যাদি বিষয়গুলো সুন্নত তরীকায় ধীরস্থিরভাবে আদায় করবেন; বেশি লম্বা করবেন না। আর বি
শেষ জরুরতে কিংবা ওজর বশত তো বহারহাল সূরা কাউসার ও সূরা ইখলাস দিয়েও নামায পড়া জায়েয আছে। কেরাতের উল্লেখি
ত পরিমাণ তো কেবল মাসনূন ও মুস্তাহাব, ওয়াজিব বা সুন্নতে মুআক্কাদাহ নয়।১ (এখানের আরবী টীকাটি প্রবন্ধের শেষে দেখুন)
বিশেষ কারণে ফজরসহ অন্যান্য নামাযে কেরাত সংক্ষিপ্ত করা
স্বাভাবিক অবস্থায় তো ফজরের নামায ও অন্যান্য নামাযে মাসনূন কেরাত রয়েছে। তবে বিশেষ কোনো কারণে নাস, ফালাক, ইখলা
ছ ও কাফিরূনের মত ছোট ছোট সূরা যেকোনো নামাযে তিলাওয়াত করায় অসুবিধা নেই। এমনকি বিশেষ অবস্থায় এমন করা হলে 
তা সুন্নাহর মধ্যে শামিল হবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর অবস্থায় সূরা নাস ও সূরা ফালাক দিয়ে ফজরের  নামায আদায় করেছেন- এমন এ
কটি চমৎকার বর্ণনা হাদীস শরীফে রয়েছে। হাদীসটি নিম্নে তুলে ধরছি-
َ ‫س‬ ‫خَ ي َْر‬  َ‫ُأ َعلِّ ُمك‬  ‫َأاَل‬ ،ُ‫ ُع ْقبَة‬ ‫يَا‬ :‫لِي‬ ‫ال‬
 ‫ُورتَي ِْن‬ َ َ‫فَق‬ ،‫ال ّسفَ ِر‬ ‫فِي‬ ُ‫نَاقَتَه‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫بِ َرسُو ِل‬ ‫َأقُو ُد‬ ‫ت‬
ُ ‫ ُك ْن‬ :‫قَا َل‬ ،‫عَا ِم ٍر‬ ‫ ْب ِن‬ َ‫ ُع ْقبَة‬ ‫ع َْن‬
‫بِ ِه‬ ‫صلّى‬
َ  ‫ْح‬
ِ ‫صب‬ ّ ‫ال‬ ‫صاَل ِة‬َ ِ‫ل‬ ‫نَ َز َل‬ ‫فَلَ ّما‬ ،‫ ِج ّدا‬ ‫بِ ِه َما‬ ‫ت‬ ُ ْ‫س ُِرر‬ ‫يَ َرنِي‬ ‫فَلَ ْم‬ :‫قَا َل‬ ،‫اس‬ ِ ّ‫الن‬  ِّ‫بِ َرب‬ ‫َأعُو ُذ‬  ْ‫قُل‬ ‫ َو‬ ،‫ق‬
ِ َ‫ ْالفَل‬  ِّ‫بِ َرب‬ ‫َأعُو ُذ‬  ْ‫قُل‬ ‫فَ َعلّ َمنِي‬ ‫قُ ِرَئتَا؟‬
‫ َرَأيْتَ ؟‬  َ‫ َك ْيف‬ ،ُ‫ ُع ْقبَة‬ ‫يَا‬ :‫فَقَا َل‬ ،‫ِإلَ ّي‬  َ‫ ْالتَفَت‬ ‫صاَل ِة‬
ّ ‫ال‬  َ‫ ِمن‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو ُل‬ ‫فَ َر َغ‬ ‫فَلَ ّما‬ ،‫اس‬ ِ ّ‫لِلن‬ ‫ْح‬ ّ ‫ال‬ َ‫صاَل ة‬
ِ ‫صب‬ َ  ‫َما‬
 হযরত উকবা বিন আমের রা. বলেন, আমি সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উট চালাচ্ছিলাম। একসময় তিনি 
আমাকে বললেন, হে উকবা! লোকেরা যেসকল সূরা তিলাওয়াত করে আমি কি তোমাকে এর মধ্য থেকে সর্বোত্তম দুটি সূরা শিক্ষা 
ِ َ‫ ْالفَل‬  ِّ‫بِ َرب‬ ‫َأعُو ُذ‬  ْ‫قُل‬  (সূরা ফালাক) এবং ‫اس‬
দিব না? এরপর তিনি আমাকে ‫ق‬ ِ َّ‫الن‬  ِّ‫بِ َرب‬ ‫َأ ُع و ُذ‬  ْ‫قُ ل‬ (সূরা নাস) শেখালেন। কিন্তু এতে 
আমি তেমন খুশি হয়েছি বলে তিনি মনে করলেন না। পরবর্তীতে তিনি যখন ফজরের নামাযের জন্য অবতরণ করলেন, তখন এই দু
ইটি সূরা দ্বারাই নামায পড়ালেন। যখন তিনি নামায শেষ করলেন, আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, কেমন দেখলে, হে উকবা! -
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭৩৫০; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৫৪৩৬
বর্ণিত হাদীসে প্রথমত- নবী কারীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের হালতে ছিলেন এবং দ্বিতীয়ত- সাহাবী হযরত উকবা রা
.-কে সূরা ফালাক ও সূরা নাস শিক্ষা দেয়া উদ্দেশ্য ছিল। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামাযে সূরা দুটি পাঠ 
করেছেন।
সাহাবায়ে কেরামও সফর বা অন্য কোনো ওজরের কারণে নামাযে সংক্ষিপ্ত কেরাত পড়তেন।
১. আমর ইবনে মাইমুন রাহ. বলেন-
.‫َأ َح ٌد‬ ُ‫هللا‬ ‫هُ َو‬  ْ‫قُل‬ ‫و‬ ، َ‫ ْال َكافِرُوْ ن‬ ‫َأ ُّيهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ :‫بِـ‬ ‫فَقَ َرأ‬ ،‫ال ّسفَ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ ْالفَجْ َر‬ ‫ ُع َم ُر‬ ‫بِنَا‬ ‫صلّى‬
َ
হযরত উমর রা. সফরের সময় আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামাযে তিনি  َ‫ ْال َك افِرُوْ ن‬ ‫َأ ُّيهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ (সূরা কাফিরূ
ন) এবং ‫َأ َح ٌد‬ ُ‫هللا‬ ‫ه َُو‬  ْ‫قُل‬ (সূরা ইখলাস) তিলাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৭০৩; মুসান্নাফে আবদুর রায
যাক, বর্ণনা ২৭৩৩, ২৭৩৫
অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, হযরত উমর রা. সফরের সময় ফজরের নামাযে সূরা ‘ফীল’ ও সূরা ‘কুরাইশ’ তিলাওয়াত করেছেন। -
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭৩৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৭০২
২. আবু ওয়া’ইল রাহ. বলেন-
.‫ َر َك َع‬ ‫ثُ ّم‬ ،‫ َولَدًا‬ ‫يَتّ ِخ ْذ‬ ‫لَ ْم‬ ‫الّذي‬ ِ ‫هلِل‬ ‫ ْال َح ْم ُد‬ :‫ِإ ْس َراِئي َل‬ ‫بَنِي‬ ‫بِآ ِخ ِر‬ ‫فَقَ َرأ‬ ،‫ال ّسفَ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ ْالفَجْ َر‬ ‫ َم ْسعُو ٍد‬  ُ‫ابْن‬ ‫بِنَا‬ ‫صلّى‬
َ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. সফরে আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামাযে তিনি সূরা ‘বানী ইসরাঈল’
-এর শেষ আয়াত  ‫ َولَ دًا‬ ‫يَتَّ ِخ ْذ‬ ‫لَ ْم‬ ‫الَّذي‬ ِ ‫هلِل‬ ‫ ْال َح ْم ُد‬ তিলাওয়াত করলেন। এরপর রুকুতে চলে গেলেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, 
বর্ণনা ৩৭০৬
৩. ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বলেন-
.‫ار‬
ِ ‫ص‬َ ِ‫الق‬ ‫بِال ّس َو ِر‬ ‫ال ّسفَ ِر‬ ‫فِي‬  َ‫يَ ْق َرُؤ وْ ن‬ ‫وسلم‬ ‫عليه‬ ‫هللا‬ ‫صلى‬ ‫هللا‬ ‫ َرسُو ِل‬  ُ‫أصْ َحاب‬  َ‫َكان‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ সফরে ছোট ছোট সূরা তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাই
বা, বর্ণনা ৩৭০৪
৪. আমর ইবনে মাইমূন রাহ. বলেন-
‫َأ‬ ‫ِإنَّا‬ ‫ َو‬ ،ِ‫هللا‬ ‫َص ُر‬
ْ ‫ن‬ ‫ َج ا َء‬ ‫ِإ َذا‬ :‫فَقَ َرَأ‬ ،‫ ْالفَجْ َر‬ ‫بِه ُم‬ ‫صلّى‬ ٍ ْ‫عَو‬  َ‫ ْبن‬ ‫الرّحْ َم ِن‬ ‫ َع ْب َد‬ ‫قَ ّد ُموا‬ ، َ‫طُ ِعن‬ ‫لَ ّما‬ ُ‫ َع ْنه‬ ُ‫هللا‬ ‫ض َي‬
َ  ،‫ف‬ ِ ‫ ْال َخطّا‬  َ‫ ْبن‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫َأ ّن‬
ِ ‫ َر‬ ‫ب‬
.‫ ْال َكوْ ثَ َر‬ ‫ك‬
َ ‫ْعطَ ْينَا‬
হযরত উমর রা. যখন আহত হলেন, তখন তারা হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. কে আগে বাড়িয়ে দিলেন। তিনি ফজরের 
ْ ‫ن‬ ‫ َج ا َء‬ ‫ِإ َذا‬ (সূরা নাছ্র) এবং ‫ ْال َك وْ ثَ َر‬  َ‫َأ ْعطَ ْينَ اك‬ ‫ِإنَّا‬ (সূরা কাউসার) তিলাওয়াত করলেন। -
নামায পড়ালেন। নামাযে তিনি ِ‫هللا‬ ‫َص ُر‬
সুনানে বাইহাকী খ. ২ পৃ. ৩৯০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭৪০
এখানে বিশেষ পরিস্থিতির কারণে হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. ফজরের  কেরাত সংক্ষিপ্ত করেছেন।
এসব বর্ণনা থেকে একথা প্রমাণিত হল যে, বিশেষ কোনো অবস্থার প্রেক্ষাপটে ফজর ও অন্য যেকোনো নামাযে ছোট ছোট সূরা পড়া 
হলে কোনো সমস্যা নেই।
যোহর ও আসরের কেরাত
কোনো কোনো হাদীস থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ পড়েছেন বলে জা
না যায়। আবার কোনো কোনো হাদীসে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ থেকে পড়ার কথাও পাওয়া যায়।
প্রথমে যোহরের নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’-এর হাদীস ও আছার উল্লেখ করা হল।
১. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন-
‫ا‬ ‫قِ َرا َء ِة‬ ‫قَ ْد َر‬ ‫الظّه ِْر‬  َ‫ ِمن‬ ‫اُأْلولَيَ ْي ِن‬ ‫ال ّر ْك َعتَ ْي ِن‬ ‫فِي‬ ُ‫قِيَا َمه‬ ‫فَ َحزَرْ نَا‬ ،‫ َو ْال َعصْ ِر‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو ِل‬ ‫قِيَا َم‬ ‫نَحْ ِز ُر‬ ‫ُكنّا‬
.‫السّجْ َد ِة‬ ‫تَ ْن ِزي ُل‬ ‫لم‬
আমরা যোহর ও আসরের  নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কিয়াম (দাঁড়িয়ে থাকা) পরিমাপ করতাম। যোহ
রের প্রথম দুই রাকাতে তাঁর কিয়াম ‫السجدة‬ ‫تنزيل‬ ‫الم‬ (সূরা সাজদাহ) সূরাটি তিলাওয়াত পরিমাণ দীর্ঘ হত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস 
৪৫২
২. হযরত বারা ইবনে আযিব রা. বলেন-
.‫ت‬
ِ ‫اريَا‬ ّ ‫ َو‬  َ‫لُ ْق َمان‬ ‫ُور ِة‬
ِ ‫الذ‬ ِ ‫اآْل يَا‬ ‫بَ ْع َد‬ َ‫اآْل يَة‬ ُ‫ ِم ْنه‬ ‫فَنَ ْس َم ُع‬ ،‫الظّ ْه َر‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ ‫س‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ت‬ َ  ‫النّبِ ِّي‬  َ‫ َخ ْلف‬ ‫صلِّي‬
َ ُ‫ن‬ ‫ُكنّا‬
আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পিছনে যোহরের নামায আদায় করতাম। তো আমরা মাঝে মধ্যে তার থেকে 
সূরা ‘লুকমান’ ও সূরা ‘যারিয়াত’-এর এক-দুই আয়াত শুনতে পেতাম। -সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৭১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদী
স ৮৩০
উল্লেখ্য, সূরা সিজদার আয়াত সংখ্যা ত্রিশ এবং সূরা লুকমানের আয়াত সংখ্যা চৌত্রিশ। সূরা যারিয়াতের আয়াতগুলো ছোট ছোট এ
বং এর আয়াত সংখ্যা ষাট।
৩. হযরত বুরাইদা রা. বলেন-
ْ ّ‫ا ْن َشق‬ ‫ال ّس َما ُء‬ ‫ِإ َذا‬ ‫بِـ‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫ َكان‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
.‫ َونَحْ ِوهَا‬ ‫ت‬ َ  ‫النّبِ ّي‬ ‫َأ ّن‬
ْ َّ‫ا ْن َش ق‬ ‫الس َما ُء‬
নবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের নামাযে ‫ت‬ َّ  ‫ِإ َذا‬ (সূরা ইনশিক্বাক্ব) এবং এই ধরনের সূরা তিলাওয়াত কর
তেন। -সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ৫১১
৪. আবুল মুতাওয়াক্কিল নাজী রাহ. বলেন-
.‫ت‬
ِ ‫اريَا‬ ّ ‫ َو‬ ‫ق‬ ‫بِـ‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫صاَل ِة‬
ِ ‫الذ‬ َ  ‫فِي‬ ‫قَ َرأ‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫أن‬
ّ
উমর রা. যোহরের নামাযে সূরা ‘ক্বাফ’ ও সূরা ‘যারিয়াত’ তিলাওয়াত করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৯৪
৫. মুওয়াররিক ইজলী রাহ. বলেন-
ْ َ‫ َوا ْقتَ َرب‬ ‫بِقَاف‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫فَيَ ْق َرأ‬ ،‫ُصلِّ ْي‬
.‫ت‬ َ ‫ي‬ ‫ ُع َم َر‬  ُ‫ابْن‬  َ‫َكان‬
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. যোহরের নামাযে সূরা ‘ক্বাফ’ ও সূরা ‘ইকতারাবাত’ (অর্থাৎ সূরা ক্বামার) তিলাওয়াত করতেন। -
মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৯৭, ২৬৮০
৬. নাফে রাহ. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর ব্যাপারে বলেন-
.‫ َكفَرُوْ ا‬  َ‫الّ ِذ ْين‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرأ‬  َ‫كان‬ ‫أنّه‬
তিনি যোহরের নামাযে ‫ َكفَرُوْ ا‬  َ‫الّ ِذ ْين‬  (সূরা মুহাম্মাদ) তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৮১, ২৬৮২
যোহরের নামাযে ‘মুফাসসাল’-এর বাইরে থেকে তিলাওয়াত
সাহাবায়ে কেরাম কখনো কখনো যোহরের নামাযে ‘মুফাসসাল’-এর বাইরে থেকেও দীর্ঘ কেরাত পড়েছেন।
১. মুওয়াররিক ইজলী রাহ. বলেন-
.‫ َمرْ يَم‬ ‫بِسُوْ َر ِة‬ ‫فَقَ َرأ‬ ،‫الظّ ْه َر‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫اب ِْن‬  َ‫خَ ْلف‬ ‫ْت‬
ُ ‫صلّي‬
َ
আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর পিছনে যোহরের নামায আদায় করেছি। তিনি নামাযে সূরা ‘মারয়াম’ তিলাওয়াত করেছেন। -
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৯৬
২. মুজাহিদ রাহ. বলেন-
.‫كهيعص‬ ‫بِـ‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرأ‬ ‫ َع ْم ٍرو‬  َ‫ا ْبن‬ ِ‫هللا‬ ‫ َع ْب َد‬ ‫ْت‬
ُ ‫َس ِمع‬
আমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা.-কে যোহরের নামাযে ‫كهيعص‬ (অর্থাৎ সূরা ‘মারয়াম’) তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -মুসান্নাফে ইব
নে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৯৭
৩. ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বলেন-
ِ ‫بِالصّافّا‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫أَل ْق َرأ‬ ‫إنِّ ْي‬
.‫ت‬
আমি যোহরের নামাযে (কখনো) সূরা ‘সাফফাত’ তিলাওয়াত করি। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫৯৮
যোহর ও আসরের নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’
১. হযরত জাবের ইবনে সামুরাহ রা. বলেন-
ْ ‫بَِأ‬ ‫صبْح‬ ّ ‫ُأ‬
. َ‫ َذلِك‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ط َو َل‬ ِ ّ ‫ال‬ ‫ َوفِي‬ ،‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬ ِ ‫ َسب‬ ‫بِـ‬ ‫الظه ِْر‬ ‫فِي‬  ‫يَ ْق َر‬  َ‫ َكان‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ َ  ‫النّبِ ّي‬ ‫َأ ّن‬
নবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের নামাযে ‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬ ْ  ‫ِّح‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫اس َم‬ ِ ‫ َس ب‬ (সূরা আ‘লা) তিলাওয়াত করতেন। আর ফজরে আ
রো দীর্ঘ কেরাত পড়তেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৬০
২. অন্য হাদীসে হযরত জাবের ইবনে সামুরাহ রা. বলেন-
ِ َ‫ َوالط‬ ‫ال َس َما ِء‬ ‫ َو‬ ‫ج‬
.‫ َو ِش ْب ِه ِه َما‬ ‫ارق‬ ِ ‫ َذا‬ ‫وال َس َما ِء‬ ‫بِـ‬ ‫ َوال َعصْ ِر‬ ‫الظُه ِْر‬ ‫فِ ْي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫ َكان‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
ِ ْ‫البُرُو‬ ‫ت‬ َ  ‫هللا‬ ‫رسول‬
َ ّ
 ‫أن‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর এবং আসরে ‫ال بروج‬ ‫ذات‬ ‫والسماء‬ (সূরা বুরূজ) এবং ‫الط ارق‬ ‫و‬ ‫والس ماء‬ (সূরা 
ত্বারিক্ব) এবং এ দুয়ের সমপরিমাণ সূরাসমূহ তিলাওয়াত করতেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩০৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮০৫
৩. আরেক হাদীসে হযরত জাবের ইবনে সামুরাহ রা. বলেন-
ّ ‫ال‬ ‫فِي‬ ‫ َويَ ْق َرُأ‬ ،‫ َونَحْ ِوهَا‬ ‫ض َحاهَا‬
‫ص ْب‬ ِ ‫ال َّش ْم‬ ‫ َو‬ ،‫يَ ْغ َشى‬ ‫ِإ َذا‬ ‫واللَّ ْي ِل‬ ‫بِـ‬ ‫ َو ْال َعصْ ِر‬ ‫الظّه ِْر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
ُ ‫ َو‬ ‫س‬ َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو ُل‬  َ‫َكان‬
.‫ك‬ ْ ‫بَِأ‬ ‫ح‬
َ ِ‫ َذل‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ط َو َل‬ ِ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহর ও আসরের নামাযে ‫يَ ْغ َشى‬ ‫ِإ َذا‬ ‫ َواللَّي ِْل‬ (সূরা লাইল) এবং ‫ض َحاهَا‬ ِ ‫ َوال َّش ْم‬  (সূরা 
ُ ‫ َو‬ ‫س‬
শাম্স) এবং এ পরিমাণ অন্য কোনো সূরা তিলাওয়াত করতেন। আর ফজরের নামযে এর চেয়ে দীর্ঘ সূরা পড়তেন। -সহীহ ইবনে খু
যাইমা, হাদীস ৫১০
হযরত আনাস রা. এবং তাবেয়ীগণের আমল
১. হুমাইদ রাহ. বলেন-
.َ‫اآليَة‬ ‫يُ ْس ِم ُعنَا‬ ‫ َو َج َع َل‬ ،‫اَأل ْعلَى‬ ‫ك‬ ّ ٍ َ‫أن‬  َ‫خَ ْلف‬ ‫ْت‬
ُ ‫صلّي‬
ِ ‫ َسب‬ ‫بِـ‬ ‫فَقَ َرأ‬ ،‫الظ ْه َر‬ ‫س‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ َ
আমি আনাস রা. -এর পিছনে যোহরের নামায আদায় করেছি। নামাযে তিনি َ‫اَأل ْعل‬ ‫ك‬ َ ِّ‫ َرب‬ ‫َم‬ ْ  ‫ِّح‬
‫اس‬ ِ ‫ب‬ ‫َس‬
‫ى‬ (সূরা আ‘লা) তিলাওয়াত করেছেন। তিনি একটু অংশ কিছুটা আওয়াজ করে পড়লেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫
৯৫, ৩৬৬৩
২. সাবিত রাহ. বলেন-
.‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ ْ ‫ا ْنفَطَ َر‬ ‫ال َّس َما ُء‬ ‫ِإ َذا‬ :‫قِ َرا َءتِ ِه‬ ‫ ِم ْن‬ ‫َأ ْس َم َعنَا‬ ‫فَ ُربّ َما‬ ،‫ َو ْال َعصْ َر‬ ‫الظّ ْه َر‬ ‫بِنَا‬ ‫ُصلِّي‬
ِ ‫ َسب‬ ‫ َو‬ ،‫ت‬ َ ‫ي‬  ٌ‫َأنَس‬  َ‫َكان‬
আনাস রা. আমাদেরকে নিয়ে যোহর ও আসরের নামায আদায় করতেন। কখনো তিনি ‫ت‬ ْ ‫ا ْنفَطَ َر‬ ‫ال َّس َما ُء‬ ‫ِإ َذا‬ (সূরা ইনফিত্বার) এবং 
‫اَأْل ْعلَى‬  َ‫ َربِّك‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬
ِ ‫ َسب‬ (সূরা আ‘লা) পড়তেন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৮৭
৩. ইবরাহীম নাখাঈ রাহ.  (ওফাত ৯৫ হিজরী) বলেন-
.‫بِ ْال ِع َشا ِء‬ ‫الظّ ْه َر‬  َ‫يَ ْع ِدلُوْ ن‬ ‫َكانُوْ ا‬
তারা যোহরকে ইশার সমান গণ্য করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬০৫
অর্থাৎ ইশার নামাযে তারা যেমন ‘আওসাতে মুফাসসাল’ পড়তেন, তেমনিভাবে যোহরের নামাযেও তারা ‘আওসাতে মুফাসসাল’ 
পড়তেন।
৪. সুফিয়ান সাওরী রাহ. বলেন-
ِ ُ‫ َوال َّز ْيت‬ ‫التِّي ِن‬ ‫ َو‬ ،‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬
.‫ون‬ ِ ‫ َسب‬ ‫و‬ ،‫يَ ْغ َشى‬ ‫ِإ َذا‬ ‫ َواللَّ ْي ِل‬ :‫ ْال َعصْ ِر‬ ‫قِ َرا َء ِة‬ ‫ت‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ ُ ‫َو ْق‬
আসরের কেরাতের পরিমাণ হল সূরা লাইল, সূরা আ‘লা ও সূরা তীন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৯০
সারকথা এই দাঁড়াল যে, যোহরের নামাযে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ ও ‘আওসাতে মুফাস
সাল’ উভয় অংশ থেকেই তিলাওয়াত করেছেন। সাহাবায়ে কেরামও যোহরের নামাযে উভয় অংশ থেকেই তিলাওয়াত করেছেন।
তাই অনেক ফকীহের মতে যোহরের নামাযে আওসাতে মুফাসসাল থেকে পড়লেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। ফিকহে হানাফীর সবচে
য়ে গুরুত্বপূর্ণ কিতাব কিতাবুল আছল (আলমাবসূত)-এ ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেছেন- ‫ب‬ ‫يقرأ‬
‫دونه‬ ‫أو‬ ‫ذلك‬ ‫من‬ ‫نحو‬ অর্থাৎ যোহরে ফজরের কেরাতের কাছাকাছি বা এর চেয়ে কম পড়বে। -কিতাবুল আছল, খ. ১ পৃ. ১৩৭
মুনইয়াতুল মুসল্লী গ্রন্থে ইমাম কুদূরী রাহ.-এর উদ্ধৃতিতে যোহরের নামাযে আওসাতে মুফাসসাল পড়ার কথা রয়েছে। আল্লামা হালা
বী রাহ. এই বক্তব্যের সমর্থন করে লিখেছেন-
.‫الفجر‬ ‫مع‬ ‫ال‬ ،‫والعشاء‬ ‫العصر‬ ‫مع‬ ‫جمعها‬ ‫حيث‬ ،‫الظهر‬ ‫في‬ ‫األصل‬ ‫لرواية‬ ‫القدوري‬ ‫من‬ ‫اختيار‬ ‫وهذا‬
আল্লামা হালাবী আরো বলেছেন-
২৭২ ‫المتملي‬ ‫ (غنية‬.‫زماننا‬ ‫في‬ ‫س يما‬ ‫عليها‬ ‫العمل‬ ‫يكون‬ ‫أن‬ ‫فينبغي‬ ،‫األصل‬ ‫رواية‬ ‫يؤيد‬ )‫سمرة‬ ‫بن‬ ‫جابر‬ ‫عن‬ ‫مسلم‬ ‫(حديث‬ ‫فهذا‬
)-২৭১
আর আল্লামা শুরুম্বুলালী রাহ. কিতাবুল আছলের বক্তব্যের পক্ষে উমর রা.-এর ফরমানটিকে দলীল হিসাবে পেশ করেছেন। যাতে তি
নি আবূ মূসা রা.-কে যোহরে আওসাতে মুফাসসাল থেকে পড়তে বলেছেন। (ইমদাদুল ফাত্তাহ শরহে নূরুল ঈযাহ, পৃ.২৯০)
উক্ত রেওয়ায়েতটি জামে তিরমিযীর ‫الص بح‬ ‫في‬ ‫الق راءة‬  ‫ب اب‬-এর পরের বাবে (হাদীস ৩০৪-এর অধীনে) উল্লেখিত হয়েছে। -
ফাতহুল কাদীর ১/৩৩৫
আরো বর্ণিত হয়েছে ইবনে শাহীনের কিতাবে। দেখুন, আল বিনায়া, বদরুদ্দীন আইনী রাহ., খ. ২ পৃ.৩০৮ এবং হাশিয়াতুশ শিলবী 
আলা তাবয়ীনিল হাকায়েক ১/৩৩৩
উল্লেখ্য, এই বিষয়গুলো পেশ করার উদ্দেশ্য যোহরের নামাযে তিওয়ালে মুফাসসাল পড়তে অনুৎসাহিত করা নয়; বরং শুধু এতটুকু 
বলা যে, যদি যোহরে আওসাতে মুফাসসাল থেকে বা তার সমপরিমাণ পড়া হয় তাহলে এটাকে সুন্নত পরিপন্থী বা সুন্নতের লঙ্ঘন ব
লা যাবে না। কারণ এটাও  মাসনূন কেরাতের শামিল। দেখুন, ইলাউস সুনান ৪/২১,৩১
‫الع‬ ‫مع‬ ‫جمعها‬ ‫حيث‬ ‫الظهر‬ ‫في‬ ‫األصل‬ ‫لرواية‬ ‫اختيار‬ ‫الق دوري‬ ‫من‬ ‫وهذا‬ : <‫المنية‬ ‫>شرح‬ ‫وفي‬ : ‫األول‬ ‫الموضع‬ ‫في‬ ‫(وعبارته‬
‫ف‬ ‫واليوقعهم‬ ،‫زمانه‬ ‫أهل‬ ‫حال‬ ‫يراعي‬ ‫أن‬ ‫لإلمام‬ ‫وينبغي‬ ،‫واسع‬ ‫فاألمر‬ ،‫األثر‬ ‫ورد‬ ‫وبكل‬ : ‫قلت‬ .‫اهـ‬ ‫الفجر‬ ‫مع‬ ‫ال‬ ،‫والعشاء‬ ‫صر‬
.)‫والمالل‬ ‫السآمة‬ ‫ي‬
আসরের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’
১. আবু বকর ইবনে খালেদ ইবনে উরফুতা রাহ. বলেন-
.‫ال َعصْ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ب‬ ٍ ‫خَ بّا‬  َ‫ َخ ْلف‬ ‫األرْ ض‬ ‫ت‬
ِ َ‫ ُز ْل ِزل‬ ‫إ َذا‬ ‫ت‬
ُ ‫تَ َعلّ ْم‬
ِ َ‫ ُز ْل ِزل‬ ‫إ َذا‬  -ও (সূরা যিলযাল) পড়তেন। -মুসান্নাফে 
এ বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে সাহাবী খাব্বাব রা. আসরের নামাযে কখনো সূরা ‫ت‬
ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬৬০
২. যিয়াদ ইবনে ফাইয়ায রাহ. বলেন-
ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫ ِم ْث ُل‬ ‫ ِه َي‬ :‫قَا َل‬ ،‫ ْال َعصْ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ ْالقِ َرا َء ِة‬ ‫ َع ِن‬ ،ُ‫َأ ْس َمع‬ ‫ َوَأنَا‬ ،‫ِإ ْب َرا ِهي َم‬ َ‫ َسلَ َمة‬  ُ‫بْن‬ ‫تَ ِمي ُم‬ ‫َسَأ َل‬
.‫ب‬
তামীম ইবনে সালামা রাহ. ইবরাহীম নাখাঈ রাহ.-কে আসরের কেরাত স¤পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। আর আমি তাদের কথোপকথন 
শুনছিলাম। তো ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বললেন, আসরের কেরাত হল মাগরিবের কেরাতের মতো। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণ
না ২৬৯০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬০৩
৩. ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. (৯৫ হিজরী) বলেন-
ِ ‫بِال َم ْغ ِر‬ ‫ َو ْال َعصْ َر‬ ،‫بِ ْال ِع َشا ِء‬ ‫الظّ ْه َر‬  َ‫يَ ْع ِدلُوْ ن‬ ‫َكانُوْ ا‬
.‫ب‬
তারা যোহরকে ইশার সমান গণ্য করতেন এবং আসরকে মাগরিবের সমান গণ্য করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬
০৫
সুতরাং বুঝা যাচ্ছে, খাইরুল কুরূনে আছরের নামাযে কখনো কখনো কিসারে মুফাসসালের বড় কোনো সূরাও পড়া হয়েছে। তবে সা
ধারণ নিয়ম ছিল আওসাতে মুফাসসাল থেকে পড়ার।
মাগরিবের কেরাত
স্বাভাবিকভাবে মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ সুন্নত- তা আমরা জেনেছি। কিন্তু মাগরিবের নামাযে দীর্ঘ কেরাতও যে জা
য়েয আছে, তাও জানা থাকা দরকার। নি¤েœ র হাদীসগুলো লক্ষ্য করুন :
১. উম্মুল ফাযল রা. থেকে বর্ণিত-
 ‫بَ ْع ُد‬ ‫صاّل هَا‬ ِ ‫بِال ُمرْ َسال‬ ‫فَقَ َرَأ‬ ،‫ب‬
َ  ‫فَ َما‬ ،‫ت‬ َ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫صلّى‬
َ َ‫ف‬ ،‫ضه‬ ِ ‫ع‬ ‫ َوهُ َو‬ ‫وسلم‬ ‫عليه‬ ‫هللا‬ ‫صلى‬ ‫هللا‬ ‫ َرسُوْ ُل‬ ‫ِإلَ ْينَا‬ ‫خَ َر َج‬
ِ ‫ َم َر‬ ‫فِ ْي‬ ُ‫ َرأ َسه‬  ٌ‫َاصب‬
َ  ‫ َع ّز‬ َ‫هللا‬ ‫لَقِ َي‬ ‫َحتّى‬
.‫وج ّل‬
অন্তিম অসুস্থতার সময়ে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মাগরিবের নামায পড়ানোর জন্য আগমন করলেন। 
মাথা ব্যথার কারণে তখন তাঁর মাথা মুবারক পট্টি দিয়ে বাঁধা ছিল। সেদিন তিনি মাগরিবের নামাযে সূরা ‘মুরসালাত’ তিলাওয়াত ক
রলেন। এটিই ছিল তাঁর শেষ মাগরিব নামায। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩০৮
২. হযরত জুবাইর ইবনে মুতইম রা. বলেন-
ِ ّ‫بِالط‬ ‫ب‬
.‫ور‬ ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫قَ َرَأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬ ُ ‫َس ِمع‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو َل‬ ‫ْت‬
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মাগরিবের নামাযে সূরা ‘তূর’ পড়তে শুনেছি। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৬৫; সহী
হ মুসলিম, হাদীস ৪৬৩
সাহাবীগণও মাগরিবের নামাযে কখনো কখনো দীর্ঘ কেরাত পড়েছেন।
১. নাফে রাহ. বলেন-
ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ً‫ َم ّرة‬ ‫قَ َرأ‬ ‫ ُع َم َر‬  َ‫ا ْبن‬ ‫أن‬
.‫يس‬ ‫بِـ‬ ‫ب‬ ّ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. একবার মাগরিবের নামাযে সূরা ‘ইয়াসীন’ তিলাওয়াত করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, 
বর্ণনা ৩৬১৯
আরেক বর্ণনায় নাফে বলেন-
.‫يَتَ َسا َءلُوْ ن‬ ‫ َع َّم‬ ‫ َو‬ ‫يس‬ ‫بِـ‬ ‫ب‬
ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫قَ َرأ‬ ‫أنّه‬
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. মাগরিবের নামাযে সূরা ‘ইয়াসীন’ ও সূরা ‘নাবা’ তিলাওয়াত করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী 
শাইবা, বর্ণনা ৩৬২০
২. আমর ইবনে মুররা রাহ. প্রমুখ বলেন-
ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ق‬ ‫بِـ‬ ‫يَ ْق َرأ‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫ابْن‬ ‫عت‬
.‫ب‬ ُ ‫َس ِم‬
আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে মাগরিবের নামাযে সূরা ‘ক্বাফ’ তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাই
বা, বর্ণনা ৩৬১৮; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৯৫
৩. তাউস ইবনে কাইসান রাহ. থেকে বর্ণিত-
ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫قَ َرَأ‬ ‫ ُع َم َر‬  َ‫ا ْبن‬ ‫ َس ِم َع‬ ‫أنّه‬
.‫ ُمبِينًا‬ ‫فَ ْتحًا‬  َ‫لَك‬ ‫فَتَحْ نَا‬ ‫ِإنَّا‬ :‫ب‬
তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. -কে মাগরিবের নামাযে  ً‫ ُمبِين‬ ‫فَ ْتحًا‬ ‫ك‬
َ َ‫ل‬ ‫فَتَحْ نَا‬ ‫ِإنَّا‬
‫ا‬ (সূরা ফাত্হ) তিলাওয়াত করতে শুনেছেন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৯৬
৪. আবদুল্লাহ ইবনে হারিস রাহ. বলেন-
ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬  َ‫ال ّدخان‬ ‫قَ َرأ‬ ‫ َعبّاس‬  َ‫ا ْبن‬ ‫أن‬
.‫ب‬ ّ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. মাগরিবের নামাযে সূরা ‘দুখান’ তিলাওয়াত করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা 
৩৬১৬
এসব বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, মাগরিবের নামাযে দীর্ঘ কিরাত পড়ার সুযোগ রয়েছে। কোনো কোনো মসজিদে দেখা যায় ইমাম সা
হেব মাগরিবের নামাযে কিসারে মুফাসসালের বাইরে কোনো সূরা পড়লেই কেউ কেউ আপত্তি করে বসে। এমন করা আদৌ ঠিক নয়
। তবে সাধারণ নিয়ম হল, মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ থেকে পড়াই উত্তম। সামনে এ বিষয়ের হাদীস ও আছার উল্লেখ 
করা হল।
মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’
এক্ষেত্রে প্রথমে সাহাবা ও তাবেঈনের আছার উল্লেখ করা হল।
সাহাবায়ে কেরামের আমল
১. আবু আবদুল্লাহ সুনাবিহী রাহ. বলেন-
ِ‫ق‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ور ٍة‬
َ ‫ ُس‬ ‫ُور ٍة‬ ِ ْ‫ ْالقُر‬ ‫بُِأ ِّم‬ ‫اُأْلولَيَي ِْن‬ ‫ال ّر ْك َعتَي ِْن‬ ‫فِي‬ ‫فَقَ َرَأ‬ ،‫ب‬
َ ‫ َوس‬ ‫آن‬ َ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ُ‫ َو َرا َءه‬ ‫ْت‬
ُ ‫صلّي‬
َ َ‫ف‬ ،‫ِّيق‬
ِ ‫صد‬ ِّ ‫ال‬ ‫بَ ْك ٍر‬ ‫َأبِي‬ ‫ ِخالَفَ ِة‬ ‫فِي‬ َ‫ ْال َم ِدينَة‬ ‫ت‬
ُ ‫قَ ِد ْم‬
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ار‬
.‫ص ِل‬ ِ ‫ص‬ َ
হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর খেলাফত কালে আমি মদীনায় আসলাম। আমি তাঁর পিছনে মাগরিবের নামায আদায় করলাম। 
তিনি প্রথম দুই রাকাতে উম্মুল কুরআন (সূরা ফাতিহা) ও কিসারে মুফাসসাল থেকে একটি করে সূরা তিলাওয়াত করলেন। -মুয়াত্তা 
মালিক, বর্ণনা ২৫৯; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৯৮
২. হাসান বসরী রাহ. বলেন-
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ار‬
.‫ص ِل‬ ِ ‫ص‬ ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ا ْق َرْأ‬ ‫َأ ِن‬ :‫ ُمو َسى‬ ‫َأبِي‬ ‫ِإلَى‬ ‫ ُع َم ُر‬ ‫َب‬
َ ِ‫بِق‬ ‫ب‬ َ ‫َكت‬
হযরত উমর রা. হযরত আবু মূসা আশ‘আরী রা.-কে লিখে পাঠিয়েছেন যে, তুমি মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ থেকে তি
লাওয়াত করবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৭২
যুরারা ইবনে আউফা রাহ. বলেন-
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫بِآ ِخ ِر‬ ‫ب‬
ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫اس‬ ‫ْأ‬
.‫ص ِل‬ ِ ّ‫بِالن‬  ‫ا ْق َر‬ ‫َأ ِن‬ :‫ ُع َم َر‬ ‫َاب‬
َ ‫ ِكت‬ ‫ ُمو َسى‬ ‫َأبُو‬ ‫َأ ْق َرَأنِي‬
আবু মূসা আশ‘আরী রা. আমাকে উমর রা.-এর চিঠি পড়ে শুনিয়েছেন যে, তুমি লোকদের নিয়ে (অর্থাৎ জামাতে) মাগরিবের নামাযে 
‘মুফাসসালের’ শেষ থেকে তিলাওয়াত করবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১২৮১
‘কিসারে মুফাসসাল’কেই এখানে ‘মুফাসসালের শেষ’ বলে ব্যক্ত করা হয়েছে।
৩. আমর ইবনে মাইমূন রাহ. বলেন-
َ‫ت‬ ‫َألَ ْم‬ :‫ير ِة‬
َ ‫اَأْل ِخ‬ ‫ال ّر ْك َع ِة‬ ‫ َوفِي‬ ، َ‫ ِسينِين‬ ‫ور‬ ‫ُأْل‬ ِ ‫ ْالخَطّا‬  ُ‫بْن‬ ‫ ُع َم ُر‬ ‫بِنَا‬ ‫صلّى‬
ِ ُ‫ َوط‬ ‫ َوال َّز ْيتُو ِن‬ ‫التِّي ِن‬ ‫بِـ‬ ‫ا ولَى‬ ‫ال ّر ْك َع ِة‬ ‫فِي‬ ‫فَقَ َرَأ‬ ،‫ب‬
ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ َ‫صاَل ة‬
َ  ‫ب‬ َ
.‫ َج ِميعًا‬  ِ ‫ف‬ِ ‫اِل ِ ی ْٰل‬ ‫ َو‬ ‫َر‬
হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. আমাদেরকে মাগরিবের নামায পড়ালেন। প্রথম রাকাতে তিনি সূরা ‘তীন’ তিলাওয়াত করলেন আর 
দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ‘ফীল’ ও সূরা ‘কুরাইশ’ তিলাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৯৭, মুসান্নাফে ইবনে 
শাইবা, বর্ণনা ৩৬১৩
৪. আবু উসমান নাহদী রাহ. থেকে বর্ণিত-
.‫َأ َحد‬ ُ‫هللا‬ ‫هُ َو‬  ْ‫قُل‬ ‫بِـ‬ ‫فَقَ َرأ‬ ،‫رب‬
َ ‫ال َم ْغ‬ ‫ َم ْسعُوْ ٍد‬ ‫ا ْب ِن‬  َ‫خَ ْلف‬ ‫صلّى‬
َ  ‫أنّه‬
তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর পিছনে মাগরিবের নামায আদায় করেছেন। তো নামাযে ইবনে মাসউদ রা.  ‫هُ َو‬  ْ‫قُ ل‬
‫َأ َح ٌد‬ ُ‫هللا‬ (সূরা ইখলাছ) তিলাওয়াত করেছেন। -সুনানে আবু দাউদ, বর্ণনা ৮১৫; সুনানে বাইহাকী খ. ২ পৃ. ৩৯১
৫. আবু নাওফিল ইবনে আবু আকরাব রাহ. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. স¤পর্কে বলেন-
ِ ‫ َو ْالفَ ْت‬ ِ‫هللا‬ ‫نَصْ ُر‬ ‫ َجا َء‬ ‫إ َذا‬ :‫ب‬
.‫ح‬ ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫في‬ ‫يَ ْق َرأ‬ ‫َس ِمعتُه‬
ِ ‫ َو ْالفَ ْت‬ ِ‫هللا‬ ‫نَصْ ُر‬ ‫ َجا َء‬ ‫إ َذا‬ (সূরা নাছ্র) তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণ
আমি তাকে মাগরিবের নামাযে ‫ح‬
না ৩৬১৭
৬. হাসান বসরী রাহ. বলেন-
.‫ َوال َعا ِديَات‬ ،‫ت‬ ْ َ‫ ُز ْل ِزل‬ ‫إ َذا‬ :‫ب‬
ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫في‬ ‫يَ ْق َرأ‬ ‫ص ْي ٍن‬
َ ‫ ُح‬  ُ‫ابْن‬  ُ‫ ِع ْم َران‬  َ‫َكان‬
ْ َ‫ِزل‬
হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রা. মাগরিবের নামাযে সূরা ‫ت‬ ‫ ُز ْل‬ ‫إ َذا‬ (সূরা যিলযাল) ও সূরা আদিয়াত তিলাওয়াত করতেন। -
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ২৬২১
তাবেয়ীনের আমল
১. যাহহাক ইবনে উসমান রাহ. বলেন-
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ار‬
.‫ص ِل‬ ِ ‫ص‬ ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫يز‬
َ ِ‫بِق‬ ‫ب‬ ِ ‫ ْال َع ِز‬ ‫ َع ْب ِد‬  َ‫ ْبن‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫ْت‬
ُ ‫َرَأي‬
আমি উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.-কে মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ তিলাওয়াত করতে দেখেছি। -মুসান্নাফে ইবনে 
আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬২৭
২. হিশাম ইবনে উরওয়া রাহ. থেকে বর্ণিত-
ِ ‫ َو ْال َعا ِديَا‬ : َ‫تَ ْق َرُؤ وْ ن‬ ‫ َما‬ ‫بِنَحْ ِو‬ ‫ب‬
.‫الس َّو ِر‬  َ‫ ِمن‬ ‫ َونَحْ ِوهَا‬ ‫ت‬ َ  ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫ َكان‬ ‫أبَاه‬ ‫أن‬
ِ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫صاَل ِة‬ ّ
তার পিতা (উরওয়া ইবনে যুবাইর রাহ.) মাগরিবের নামাযে সূরা ‘আদিয়াত’ ও এজাতীয় সূরা পড়তেন, যেমনটি তোমরা পড়ে থাক
। -সুনানে আবু দাউদ, বর্ণনা ৮১৩
৩. রবী ইবনে সবীহ রাহ. বলেন-
ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  ُ‫ال َح َسن‬  َ‫َكان‬
ِ ‫ َو ْال َعا ِديَا‬ ،‫ ُز ْل ِزلَت‬ ‫ِإ َذا‬ :‫ب‬
.‫يَ َد ُعهَا‬  ‫اَل‬ ،‫ت‬
হাসান বসরী রাহ. মাগরিবের নামাযে সূরা ‫ِإ َذا ُز ْل ِزلَت‬  (যিলযাল) ও সূরা ‘আদিয়াত’ তিলাওয়াত করতেন। এই সূরা দুটি
(সাধারণত) তিনি ছাড়তেন না। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৫২৪
৪. নুসাইর ইবনে যু‘লূক রাহ. রবী ইবনে খুসাইম রাহ. সম্পর্কে বলেন-
.‫َأ َحد‬ ُ‫هللا‬ ‫هُ َو‬  ْ‫قُل‬ ‫ َو‬ ، َ‫ ْال َكافِرُون‬ ‫َأ ُّيهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ ،‫ص ِل‬
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ار‬
ِ ‫ص‬ ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫ َكان‬ ُ‫َأنّه‬
َ ِ‫بِق‬ ‫ب‬
তিনি মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’, ‫قُ لْ يَا َأ ُّيهَا ْال َك افِرُوْ ن‬  (সূরা কাফিরূন) ও ‫قُ لْ هُ َو هللاُ َأ َح ٌد‬  (সূরা ইখলাস)
তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬২৬
৫. মুহিল ইবনে মুহরিয রাহ. বলেন-
ٍ ‫قُ َر ْي‬ ‫ف‬
.‫ش‬ ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬  َ‫ ِمن‬ ‫اُأْلولَى‬ ‫ال ّر ْك َع ِة‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ِإ ْب َرا ِهي َم‬ ‫ْت‬
ِ ‫ِإِل ياَل‬ :‫ب‬ ُ ‫َس ِمع‬
আমি ইবরাহীম নাখাঈ রাহ.-কে মাগরিবের প্রথম রাকাতে ‫ف قُ َريْش‬
ِ ‫ِإِل ْياَل‬  (সূরা কুরাইশ) তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬২৩
মাগরিবে ‘কিসারে মুফাসসাল’ পড়ার বিষয়ে মারফূ হাদীস
১. সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রাহ. বলেন-
‫ ُس لَ ْي َما‬ ‫قَ ا َل‬ ،‫بِ ْال َم ِدينَ ِة‬  َ‫ َكان‬ ‫ِإِل َم ٍام‬ ،‫فُاَل ٍن‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫بِ َرسُو ِل‬ ً‫صاَل ة‬ َ  َ‫َأ ْشبَه‬  ‫ َر ُجاًل‬ ‫ْت‬ ُ ‫ َرَأي‬ ‫ َما‬ :‫قَا َل‬ ُ‫َأنّه‬ ،َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبِي‬ ‫ع َْن‬
‫ ْال َم ْغ ِر‬  َ‫ ِمن‬ ‫اُأْلولَيَ ْي ِن‬ ‫فِي‬ ‫ َويَ ْق َرُأ‬ ،‫ ْال َعصْ َر‬  ُ‫ َويُ َخفِّف‬ ،‫اُأْل ْخ َريَ ْي ِن‬  ُ‫ َويُخَ فِّف‬ ،‫الظّه ِْر‬  َ‫ ِمن‬ ‫اُأْلولَيَ ْي ِن‬ ‫يُ ِطي ُل‬  َ‫فَ َكان‬ ،ُ‫خَ ْلفَه‬ ‫ْت‬ ُ ‫صلّي‬
َ َ‫ف‬ :‫ار‬ ٍ ‫يَ َس‬  ُ‫بْن‬  ُ‫ن‬
.‫ص ِل‬ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ال‬ ِ ‫بِ ِط َو‬ ‫ ْال َغدَا ِة‬ ‫فِي‬ ‫ َويَ ْق َرُأ‬ ،‫ص ِل‬ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ َو َس ِط‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬  َ‫ ِمن‬ ‫اُأْلولَيَي ِْن‬ ‫فِي‬ ‫ َويَ ْق َرُأ‬ ،‫ص ِل‬
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫ار‬ِ ‫ص‬َ ِ‫بِق‬ ‫ب‬ِ
হযরত আবু হুরাইরা রা. মদীনার এক আমীর স¤পর্কে বললেন, আমি তার থেকে অধিক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সদৃশ নামায আদায়কারী আর কাউকে দেখিনি।
সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রাহ. বলেন, আমি ঐ আমীরের পিছনে নামায পড়েছি। তিনি যোহরের প্রথম দুই রাকাত দীর্ঘ
করতেন এবং শেষের দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত করতেন। আসরের নামায সংক্ষিপ্ত করতেন। মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতে ‘কিসারে
মুফাসসাল’ পড়তেন। ইশার প্রথম দুই রাকাতে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ পড়তেন। ফজরের নামাযে ‘তিওয়ালে
মুফাসসাল’ পড়তেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৩৬৬, ৭৯৯১; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৮২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস
৫২০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮৩৭; শারহু মা‘আনিল আসার, হাদীস ১২৭৯, ১২৮০
অনুরূপ হাদীস হযরত আনাস রা.-এর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। -তাবাকাতে ইবনে সা‘দ খ. ৫ পৃ. ১৬১-১৬২; মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস ৮৩৬৬
ইমাম ত্বহাবী রাহ. বলেন-
.‫المفصل‬ ‫بقصار‬ ‫المغرب‬ ‫صالة‬ ‫في‬ ‫يقرأ‬ ‫كان‬ ‫أنه‬ ‫وسلم‬ ‫عليه‬ ‫هللا‬ ‫صلى‬ ‫النبي‬ ‫عن‬ ‫أخبر‬ ‫قد‬ ‫هريرة‬ ‫أبو‬ ‫فهذا‬
এখানে হযরত আবু হুরাইরা রা. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যাপারে পরোক্ষভাবে সংবাদ দিলেন
যে, তিনি মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ তিলাওয়াত করতেন। -শারহু মা‘আনিল আসার খ. ১ পৃ. ৩৫১
হাফেয ইবনে রজব রাহ. বলেন-
.‫المفصل‬ ‫بقصار‬ ‫المغرب‬ ‫في‬ ‫يقرأ‬ ‫كان‬ ‫وسلم‬ ‫عليه‬ ‫هللا‬ ‫صلى‬ ‫النبي‬ ‫أن‬ ‫على‬ ‫ويدل‬ ،‫وأنس‬ ‫هريرة‬ ‫أبي‬ ‫عن‬ ‫صحيح‬ ‫حديث‬ ‫فهذا‬
এটি হযরত আবু হুরাইরা রা. ও হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীস এবং হাদীসটি একথা বুঝাচ্ছে যে, নবী কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামাযে ‘কিসারে মুফাসসাল’ তিলাওয়াত করতেন। -ফাতহুল বারী, ইবনে রজব খ.
৪ পৃ. ৪৩৩
২. হযরত রাফে ইবনে খাদীজ রা. বলেন-
ِ ‫لَيُ ْب‬ ُ‫ َوِإنّه‬ ‫َأ َح ُدنَا‬  ُ‫ص ِرف‬
.‫نَ ْبلِ ِه‬ ‫ َم َواقِ َع‬ ‫ص ُر‬ َ ‫فَيَ ْن‬ ،‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬ َ ‫ال َم ْغ ِر‬ ‫صلِّي‬
َ  ‫النّبِ ِّي‬ ‫ َم َع‬ ‫ب‬ َ ُ‫ن‬ ‫ُكنّا‬
আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মাগরিবের নামায আদায় করতাম। এরপর আমাদের কেউ (তার
ঘরে) প্রত্যাবর্তন করত। আর তখনও সে তার নিক্ষিপ্ত তীরের স্থান দেখতে পেত। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৯; সহীহ
মুসলিম, হাদীস ৬৩৭
হাদীসটি হযরত আনাস রা., হযরত জাবের রা. এবং আরো অন্যান্য সাহাবীদের সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। -সুনানে আবু
দাউদ, হাদীস ৪১৬; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৪২৪৬; শারহু মা‘আনিল আসার, হাদীস ১২৬৫-১২৭১
প্রকাশ থাকে যে, এটা তখনই সম্ভব হবে যখন মাগরিবের নামাযে সংক্ষিপ্ত কেরাত পড়া হবে।
এ সকল বর্ণনার আলোকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, মাগরিবের স্বাভাবিক সুন্নত হল ‘কিসারে মুফাসসাল’। তবে দীর্ঘ কেরাত
পড়াও জায়েয আছে।
ইশার কেরাত
পূর্বে আমরা জেনেছি যে, ইশার নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ পড়া মাসনূন। অবশ্য অবস্থা ভেদে বেশ-কম করাতেও কোনো
ক্ষতি নেই। এক্ষেত্রে হাদীস শরীফে কখনো কখনো ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ এবং ‘কিসারে মুফাসসাল’ পড়ার বর্ণনাও রয়েছে।
১. হযরত বুরাইদা রা. বলেন-
.‫الس َُو ِر‬ ‫ ِم ْن‬ ‫ َونَحْ ِوهَا‬ ‫ض َحهَا‬ ِ ‫ال َش ْم‬ ‫بِـ‬ ‫اآل ِخ َر ِة‬ ‫ال ِع َشا ِء‬ ‫فِ ْي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
ُ ‫ َو‬ ‫س‬ َ  ‫هللا‬ ‫ َرسُوْ ُل‬  َ‫َكان‬
ِ ‫ َوال َّش ْم‬  (সূরা শাম্স) এবং তার অনুরূপ সূরা পড়তেন। -জামে
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার  নামাযে ‫س َوضُحهَا‬
তিরমিযী, হাদীস ৩০৯; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৯৯
২. হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন-
 ‫ َوا ْفتَت ََح‬ ،َ‫صاَل ة‬
ّ ‫ال‬ ‫ض َر‬ َ ‫ َو َح‬ ‫ضَأ‬ ّ ‫فَتَ َو‬ ‫فَقَا َم‬ ،ُ‫علفَه‬ ‫ ْالفَتَى‬ ‫َزل‬ َ ‫فَن‬ ،‫ ْال ِع َشا ِء‬ َ‫صاَل ة‬
َ  ‫ َجبَ ٍل‬  ُ‫بْن‬ ‫ ُم َعا ُذ‬ ‫ َوَأقَا َم‬ ،ُ‫ض َحه‬
ِ ‫نَا‬  َ‫ َعلَف‬ ‫ار‬
ِ ‫ص‬ َ ‫اَأْل ْن‬  َ‫ ِمن‬ ‫فَتًى‬ ‫بَ ْينَا‬
 ُ‫فَ َس بّه‬ ،‫ ْالفَتَى‬ ‫ َجا َء‬ ‫ ُم َعا ٌذ‬  َ‫ص َرف‬َ ‫ا ْن‬ ‫فَلَ ّما‬ ،‫ـ‬ ‫فَ َعلَفَهَا‬  ْ‫َأو‬ ‫ـ‬ ُ‫فَ َعلَفَه‬ ‫ض ِح ِه‬
ِ ‫نَا‬ ‫ِإلَى‬  َ‫ص َرف‬َ ‫ َوا ْن‬ ،‫ ُم َعا ًذا‬ ‫ك‬ َ ‫ َوتَ َر‬ ‫ ْالفَتَى‬ ‫صلّى‬
َ َ‫ف‬ ،‫ ْالبَقَ َر ِة‬ ‫بِسُو َر ِة‬ ‫ُم َعا ٌذ‬
 ُ‫لَه‬ ‫فَ َذ َك َر‬ ،‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬َ  ‫النّبِ ِّي‬ ‫ ِع ْن َد‬ ‫فَاجْ تَ َم َعا‬ ،‫فََأصْ بَحْ نَا‬ ،َ‫ َخبَ َرك‬ ُ‫فَُأ ْخبِ َره‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫نَبِ ّي‬ ‫آَل تِيَ ّن‬ :‫قَا َل‬ ‫ثُ ّم‬ ،ُ‫صه‬ َ َ‫َونَق‬
‫َأتُ ِري‬ ،‫ ُم َعا ُذ‬ ‫يَا‬ :‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬َ  ‫النّبِ ّي‬ ‫فَقَا َل‬ ،‫ ْالبَقَ َر ِة‬ ‫بِسُو َر ِة‬ ‫ا ْستَ ْفت ََح‬ ،‫ َعلَ ْينَا‬ ‫فَطَ ّو َل‬ ،‫ َو ُش ْغ ٍل‬ ‫ َع َم ٍل‬ ‫َأ ْه ُل‬ ‫ِإنّا‬ :‫ ْالفَتَى‬ ‫فَقَا َل‬ ،ُ‫ َشْأنَه‬ ‫ُم َعا ٌذ‬
.‫الضُّ َحى‬ ‫ َو‬ ،َ‫ َربِّك‬ ‫بِاس ِْم‬ ‫ا ْق َرْأ‬ ‫ َو‬ ،‫يَ ْغ َشى‬ ‫ِإ َذا‬ ‫اللَّ ْي ِل‬ ‫ َو‬ ،‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬ ‫ْأ‬ َ ّ‫الن‬  َ‫َأ َم ْمت‬ ‫ِإ َذا‬ ‫فَتّانًا؟‬  َ‫تَ ُكون‬ ‫َأ ْن‬ ‫ُد‬
ِ ‫ َسب‬ ‫بِـ‬  ‫فَا ْق َر‬ ‫اس‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬
এক আনসারী যুবক তার পানি সিঞ্চনের উটকে খাওয়াচ্ছিল। তখন হযরত মু‘আয ইবনে জাবাল রা. ইশার নামায শুরু
করলেন। সে তার উটকে খাওয়ানো রেখে উযু করে নামাযে হাযির হল। হযরত মু‘আয রা. সূরা ‘বাক্বারা’ শুরু করলেন। তো
ঐ যুবক হযরত মু‘আয রা.-কে ছেড়ে একাকী নামায পড়ে ফেলল এবং গিয়ে তার উটকে খাওয়াল।
মু‘আয রা. নামায শেষ করার পর সে (আবার) আসল। মু‘আয রা. তাকে মন্দ বললেন এবং তিরস্কার করলেন। এরপর
বললেন, আমি আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গিয়ে তোমার বিষয়ে জানাব।
পরের দিন তারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একত্র হলেন। মু‘আয রা. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-কে ঐ যুবকের বিষয়ে বললেন। তখন যুবক বলল, আমরা কর্ম করে রোজগার করি আর ব্যস্ত জীবন কাটাই। আর
তিনি আমাদের নিয়ে দীর্ঘ নামায পড়েছেন। সূরা বাকারা পড়া শুরু করেছেন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মু‘আয! তুমি কি ফিতনাকারী হতে চাও? যখন তুমি লোকদের ইমামতি
করবে, তখন তুমি পড়বে সূরা আ‘লা, সূরা লাইল, সূরা ‘আলাক্ব এবং সূরা দুহা। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৩৭২৫
এই হাদীসের অন্যান্য বর্ণনায় সূরা ‘শাম্স’-এর উল্লেখ রয়েছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭০৫, ৬১০৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস
৪৬৫
কোনো কোনো বর্ণনায় সূরা ‘বুরূজ’ ও সূরা ‘ত্বারিক’-এর উল্লেখ রয়েছে। -মুসনাদে হুমাইদী, হাদীস ১২৪৬; সহীহ ইবনে
খুযাইমা, হাদীস ৫২১
এক বর্ণনায় সূরা ‘ইনফিতার’-এর কথাও এসেছে। -সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৯৭
হাদীসে উল্লিখিত সূরা ইনফিতার ‘তিওয়ালে মুফাসসালের’ অন্তর্ভুক্ত আর বাকি সূরাগুলি ‘আওসাতে মুফাসসালের’ অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং এই হাদীস থেকে ইশার নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ এবং ‘তিওয়ালে মুফাসসালের’ সংক্ষিপ্ত সূরাসমূহ
তিলাওয়াতের নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে।
৩. হযরত বারা ইবনে আযিব রা. বলেন-
.‫ال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫ َوال َّز ْيتُو ِن‬ ‫ َوالتِّي ِن‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ  ‫النّبِ ّي‬ ‫ْت‬
ُ ‫َس ِمع‬
আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ইশার নামাযে ‫ َوال َّز ْيتُو ِن‬ ‫ َوالتِّي ِن‬ (সূরা তীন) তিলাওয়াত করতে শুনেছি। -
সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৬৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৬৪; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩১০; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ১০০০
৪. পূর্বে গত হয়েছে যে, হযরত আবু হুরাইরা রা. ও হযরত আনাস রা. যার নামাযের ব্যাপারে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সদৃশ হওয়ার স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, তিনি ইশার নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ থেকে তিলাওয়াত করতেন। -
তাবাকাতে ইবনে সা‘দ খ. ৫ পৃ. ১৬১-১৬২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৭৯৯১, ৮৩৬৬; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯৮২
হযরত উমর রা.-এর ফরমান
যুরারা ইবনে আওফা রাহ. বলেন-
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫بِ َو َس ِط‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫اس‬ ‫ْأ‬
.‫ص ِل‬ ِ ّ‫بِالن‬  ‫ا ْق َر‬ ‫َأ ِن‬ :‫ِإلَ ْي ِه‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫َاب‬
َ ‫ ِكت‬ ‫ ُمو َسى‬ ‫َأبُو‬ ‫َأ ْق َرَأنِي‬
আমাকে হযরত আবু মূসা আশ‘আরী রা. তার প্রতি হযরত উমর রা.-এর চিঠি পড়ে শুনিয়েছেন যে, তুমি লোকদের নিয়ে
ইশার নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ থেকে তিলাওয়াত করবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬৩১; মুসান্নাফে
আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৬৭২
সাহাবায়ে কেরামের আমল
১. আবু রাফে রাহ. বলেন-
ْ َّ‫ا ْن َشق‬ ‫ال ّس َما ُء‬ ‫ِإ َذا‬ :‫فَقَ َرَأ‬ ،‫ ْال ِع َشا َء‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫ َم َع‬ ‫ْت‬
.‫ت‬ ُ ‫صلّي‬
َ
ْ َّ‫ا ْن َش ق‬ ‫ال َّس َما ُء‬ ‫ِإ َذا‬ (সূরা ইনশিক্বাক্ব) তিলাওয়াত
আমি হযরত উমর রা.-এর পিছনে ইশার নামায পড়েছি। নামাযে তিনি ‫ت‬
করেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬৩৬, ৪২৬৮
২. আবু রাফে রাহ. বলেন-
ْ َّ‫ا ْن َشق‬ ‫ال َّس َما ُء‬ ‫ِإ َذا‬ :‫فَقَ َرَأ‬ ،َ‫ال َعتَ َمة‬ َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبِي‬ ‫ َم َع‬ ‫ْت‬
.‫ت‬ ُ ‫صلّي‬
َ
ْ َّ‫ا ْن َشق‬ ‫ال َّس َماء‬  ‫ِإ َذا‬ (সূরা ইনশিক্বাক্ব) তিলাওয়াত
আমি হযরত আবু হুরাইরা রা.-এর সঙ্গে ইশার নামায পড়েছি। তিনি নামাযে ‫ت‬
করেছেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭৬৬, ৭৬৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৪২৬৬
৩. হিলাল ইবনে ইয়াযীদ রাহ. থেকে বর্ণিত-
.‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫ض ْبحًا‬ ِ ‫ َو ْال َعا ِديَا‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبَا‬ ‫ َس ِم َع‬ ُ‫َأنّه‬
َ  ‫ت‬
তিনি হযরত আবু হুরাইরা রা.-কে ইশার নামাযে ‫ض ْبحًا‬ ِ ‫ َو ْال َعا ِديَا‬ (সূরা ‘আদিয়াত) পড়তে শুনেছেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী
َ  ‫ت‬
শাইবা, বর্ণনা ৩৬৩৩
হযরত আবু হুরাইরা রা. ইশার নামাযে সূরা ‘আদিয়াত’ পড়েছেন, যা ‘কিসারে মুফাসসাল’-এর অন্তর্ভুক্ত। পূর্বের দুটি হাদীসে
সূরা ‘দুহা’ ও সূরা ‘তীন’ পড়ার কথা এসেছে। এ দুটি সূরা অবস্থান হিসেবে ‘আওসাতে মুফাসসাল’-এর অন্তর্ভুক্ত হলেও
পরিমাণের দিক থেকে ‘কিসারে মুফাসসাল’-এর বড় সূরার সমান।
উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.-এর আমল
যাহহাক রাহ. বলেন-
ّ َ‫ ْال ُمف‬ ‫بِ َو َس ِط‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫يز‬
.‫ص ِل‬ ِ ‫ ْال َع ِز‬ ‫ َع ْب ِد‬  َ‫ ْبن‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫ْت‬
ُ ‫َرَأي‬
আমি উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.-কে ইশার নামাযে ‘আওসাতে মুফাসসাল’ তিলাওয়াত করতে দেখেছি। -মুসান্নাফে
ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬৩৭
ইশার নামাযে ‘তিওয়ালে মুফাসসাল’ বা তার বাইরে থেকে দীর্ঘ কেরাত
১. আলক্বামা ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাহ. বলেন-
 ُ‫يجه‬ َ ‫س‬ ‫اآْل ِخ َر ِة‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ب‬
ُ ‫ َس ِمع‬  َ‫يُوسُف‬ ‫ َذ َك َر‬ ‫ِإ َذا‬ ‫ َحتّى‬ ، ِّ‫الصّف‬ ‫ ُمَؤ ّخ ِر‬ ‫فِي‬ ‫ َوَأنَا‬ :‫قَا َل‬ . َ‫يُوسُف‬ َ‫ُورة‬
َ ‫ن َِش‬ ‫ْت‬ ِ ‫ ْال َخطّا‬  ُ‫بْن‬ ‫ ُع َم ُر‬  َ‫َكان‬
.‫وف‬ِ ُ ‫صف‬ّ ‫ال‬ ‫ ُمَؤ ّخ ِر‬ ‫فِي‬ ‫َوَأنَا‬
হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. ইশার নামাযে সূরা ইউসুফ তিলাওয়াত করতেন। ‘আলক্বামা বলেন, আমি ছিলাম কাতারের
পিছন দিকে। হযরত উমর রা. যখন হযরত ইউসুফ আ.-এর আলোচনা সম্বলিত আয়াত পড়লেন, আমি পিছনের কাতার
থেকেই তার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭০৩
২. মাসরূক রাহ. বলেন-
.‫ َوال َّز ْيتُو ِن‬ ‫التِّي ِن‬ ‫بِـ‬ ‫فَقَ َرَأ‬ ‫قَا َم‬ ‫ثُ ّم‬ ،َ‫ َس َجد‬ ‫ثُ ّم‬ ،‫بِالنّجْ ِم‬ ‫ـ‬ َ‫ ْال َعتَ َمة‬ ‫يَ ْعنِي‬ ‫ـ‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫قَ َرَأ‬  َ‫ع ُْث َمان‬ ‫َأ ّن‬
হযরত উসমান ইবনে আফফান রা. ইশার নামাযে সূরা নাজম তিলাওয়াত করলেন। এরপর তিনি সিজদা দিলেন। এরপর
আবার দাঁড়িয়ে ‫ َوال َّز ْيتُ و ِن‬ ‫ َوالتِّي ِن‬  (সূরা তীন) তিলাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা
৩৬৩২, ৪২৮২, ৪৪২৬
৩. আবদুর রহমান ইবনে ইয়াযীদ রাহ. বলেন-
‫ال‬ ‫فِي‬ ‫قَ َرَأ‬ ‫ثُ ّم‬ ،‫ َر َك َع‬ ،ُ‫صير‬
ِ َّ‫الن‬ ‫ َونِ ْع َم‬ ‫ ْال َموْ لَى‬ ‫نِ ْع َم‬ :‫بَلَ َغ‬ ‫ِإ َذا‬ ‫ َحتّى‬ ،‫اَأْل ْنفَا ِل‬ ‫بِسُو َر ِة‬ ‫فَا ْستَ ْفتَ َح‬ ،‫اآْل ِخ َر ِة‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ َ‫صاَل ة‬
َ  ‫ َم ْسعُو ٍد‬  ُ‫ابْن‬ ‫بِنَا‬ ‫صلّى‬ َ
.‫ص ِل‬ّ َ‫ ْال ُمف‬  َ‫ ِمن‬ ‫بِسُو َر ٍة‬ ‫الثّانِيَ ِة‬ ‫رّ ْك َع ِة‬
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে ইশার নামায পড়ালেন। তিনি সূরা আনফাল শুরু করলেন। যখন তিনি ‫ا‬ ‫نِ ْع َم‬
ِ َّ‫الن‬ ‫ َونِ ْع َم‬ ‫ ْل َموْ لَى‬ (আনফাল : ৪০) আয়াতে পৌঁছলেন, রুকু করলেন। এরপর দ্বিতীয় রাকাতে ‘মুফাসসালের’ একটি সূরা
‫صي ُر‬
তিলাওয়াত করলেন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭০১, ২৭০২; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬২৯, ৩৬৩০
৪. নাফে রাহ. বলেন-
‫ُأ‬
ِ ‫ َو ْالفَ ْت‬ ‫ َكفَرُوا‬  َ‫الَّ ِذين‬ ‫بِـ‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬  ‫يَ ْق َر‬  َ‫ َكان‬ ‫ ُع َم َر‬  َ‫ا ْبن‬ ‫َأ ّن‬
.‫ح‬
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. ইশার নামাযে ‫ َكفَرُوْ ا‬  َ‫الَّ ِذ ْين‬ (সূরা মুহাম্মাদ) ও সূরা ফাত্হ তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে
ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬৩৪
 

তাউস রাহ.-এর আমল


আবদুল্লাহ ইবনে তাউস রাহ. বলেন-
ُ ‫ ْال ُم ْل‬ ‫بِيَ ِد ِه‬ ‫الَّ ِذي‬ ‫ك‬
.‫ك‬ ّ ‫ال‬ ‫السّجْ َد ِة‬ ‫بِسُو َر ِة‬ ‫اآْل ِخ َر ِة‬ ‫ ْال ِع َشا ِء‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرَأ‬ ‫َأ ْن‬ ‫ع‬
َ َ‫تَب‬ ‫ َو‬ ،ُ‫تَ ْن ِزيل‬ ‫الم‬ :‫ص ْغ َرى‬
َ ‫ار‬ ُ ‫يَ َد‬  ‫اَل‬  َ‫ َكان‬ ُ‫َأبَاه‬ ‫َأ ّن‬
তার পিতা (তাউস ইবনে কায়সান রাহ.) ইশার নামাযে ছোট সূরা সিজদা অর্থাৎ ‫تَ ْن ِزي ُل‬ ‫الم‬ এবং ‫ك‬ ُ ‫ ْال ُم ْل‬ ‫بِيَ ِد ِه‬ ‫الَّ ِذي‬ ‫ك‬ َ َ‫تَب‬ (সূরা
َ ‫ار‬
মুল্ক) পড়া ছাড়তেন না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ২৭০৪, ২৭০৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৬৩৫
খোলাসা কথা হল, ইশার নামাযে মূলত আওসাতে মুফাসসাল থেকে পড়া হবে। তবে কখনো কিসারের কোনো বড় সূরা পড়া
হলে তাকে খেলাফে সুন্নত বলা ঠিক নয়। তেমনিভাবে তিওয়ালে মুফাসসাল থেকে কিংবা কুরআন কারীমের অন্য কোনো স্থান
থেকে আওসাত পরিমাণ অংশ তিলাওয়াত করা হলে তাতেও কোনো আপত্তি নেই। তবে স্মর্তব্য হল, দীর্ঘ কেরাত পড়তে হলে
কিংবা বড় কোনো সূরা পড়তে হলে মুসল্লীদের হালত বিবেচনা করা বহারহাল জরুরি। আর আজকালকার হালত যেহেতু
জানাই আছে, তাই একথা বলা যেতে পারে যে, ইমাম সাহেবদের জন্য মাসনূন কেরাতের ন্যূনতম পরিমাণের চেয়ে বেশি লম্বা
না করা চাই। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম সাহেবগণকে নামায সংক্ষিপ্ত করার ব্যাপারে তাকিদের
সাথে যে হুকুম করেছেন- এর প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার।
জুমার দিন ফজর নামাযে মাসনূন কেরাত
 জুমার নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কেরাত প্রসঙ্গে বুখারী ও মুসলিমে নিম্নলিখিত হাদীসে বর্ণিত
হয়েছে-
َ  ‫فِي‬ ‫ال ُج ُم َع ِة‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
  ْ‫هَل‬ ‫ َو‬ ،َ‫السّجْ َدة‬ ‫تَ ْن ِزي ُل‬ ‫الم‬ ‫الفَجْ ِر‬ ‫صالَ ِة‬ َ  ‫النّبِ ّي‬  َ‫ َكان‬ :‫قَا َل‬ ،ُ‫ َع ْنه‬ ُ ‫هّللا‬ ‫ض َي‬ِ ‫ َر‬ َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبِي‬ ‫ع َْن‬
.‫ال ّد ْه ِر‬  َ‫ ِمن‬ ‫ين‬ ٌ ‫ ِح‬ ‫اِإل ْن َسا ِن‬ ‫ َعلَى‬ ‫َأتَى‬
হযরত আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার দিন ফজরের  নামাযে প্রথম
রাকাতে َ‫السَّجْ َدة‬ ‫تَ ْن ِزي ُل‬ ‫الم‬ (সূরা আলিফ লাম মীম  সাজদাহ) এবং দ্বিতীয় রাকাতে ‫اِإل ْن َسا ِن‬ ‫ َعلَى‬ ‫َأتَى‬  ْ‫هَل‬ (সূরা দাহর) পড়তেন।
-সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৯১, ১০৬৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৭৯
উল্লেখ্য যে, সূরা সাজদাহ ত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট এবং তিন পৃষ্ঠাব্যাপী আর ‘দাহর’ সূরাটি একত্রিশ আয়াত বিশিষ্ট এবং দুই
পৃষ্ঠার সামান্য বেশি।
বিশিষ্ট হানাফী ফকীহ আল্লামা শুরুম্বুলালী রাহ. বলেছেন, এ আমলটি কেউ একেবারেই করে না আর কেউ কখনো ছাড়ে না।
তা না করে মাঝেমধ্যে বাদ দিয়ে আমলটি করা উচিত। -মারাকিল ফালাহ, পৃষ্ঠা ২৬৪
তবে মুসল্লীদের প্রতি খেয়াল রাখার যে সাধারণ বিধান তা এক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। আরেকটি কথা হল, এ আমলটি মূলত
তারগীবের আওতায় আসে। এ বিষয়ে  কোনো ইমাম সাহেবকে মজবুর করা বা ইছরার করা মুনাসিব মনে হয় না।
দুই ঈদ এবং জুমায় মাসনূন কেরাত
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো জুমার প্রথম রাকাতে সূরা ‘জুমু‘আ’ এবং দ্বিতীয় রাকাতে
সূরা ‘মুনাফিকূন’ তিলাওয়াত করতেন। এ সম্পর্কে সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত উবাইদুল্লাহ ইবনে
আবী রাফে রাহ. বর্ণনা করেন-
‫اآْل‬ ‫ال ّر ْك َع ِة‬ ‫فِي‬ ‫ ْال ُج ُم َع ِة‬ ‫سُو َر ِة‬ ‫بَ ْع َد‬ ‫فَقَ َرَأ‬ ،َ‫ ْال ُج ُم َعة‬ َ‫ه َُر ْي َرة‬ ‫َأبُو‬ ‫لَنَا‬ ‫صلى‬ َ َ‫ف‬ ،َ‫ َم ّكة‬ ‫ِإلَى‬ ‫ َوخ ََر َج‬ ،‫ ْال َم ِدينَ ِة‬ ‫ َعلَى‬ َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبَا‬  ُ‫ َمرْ َوان‬  َ‫ا ْست َْخلَف‬
ِ‫ب‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ب‬ٍ ِ‫طَال‬ ‫َأبِي‬  ُ‫بْن‬ ‫ َعلِ ّي‬  َ‫ َكان‬ ‫ُورتَي ِْن‬ َ ‫بِس‬  َ‫قَ َرْأت‬  َ‫ِإنك‬ :ُ‫لَه‬ ‫ت‬ ُ ‫فَقُ ْل‬ ، َ‫ص َرف‬َ ‫ا ْن‬  َ‫ ِحين‬ َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبَا‬ ‫ت‬
ُ ‫فََأ ْد َر ْك‬ :‫قَا َل‬ ، َ‫ ْال ُمنَافِقُون‬ ‫ك‬
َ ‫ َجا َء‬ ‫ِإ َذا‬ :‫ِخ َر ِة‬
.‫ ْال ُج ُم َع ِة‬ ‫يَوْ َم‬ ‫بِ ِه َما‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ،‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬ ُ ‫ َس ِمع‬ ‫ِإنِّي‬ :َ‫هُ َر ْي َرة‬ ‫َأبُو‬ ‫فَقَا َل‬ ،‫بِ ْال ُكوفَ ِة‬ ‫ِه َما‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو َل‬ ‫ْت‬
মারওয়ান হযরত আবু হুরায়রা রা.-কে মদীনায় নিজের স্থলাভিষিক্ত বানাল এবং সে মক্কার উদ্দেশে বেরিয়ে গেল। তখন আবু
হুরায়রা রা. জুমার নামাযে ইমামতি করলেন। তিনি প্রথম রাকাতে সূরা ‘জুমু‘আ’ পড়লেন এবং দ্বিতীয় রাকাতে
সূরা ‘মুনাফিকূন’ পড়লেন।
 ইবনে আবী রাফি বলেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা রা.-কে বললাম, আপনি (জুমার নামাযে) যে সূরা দুটি তিলাওয়াত
করলেন, হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রা. কুফায় (জুমার নামাযে) ঐ দুই সূরা তিলাওয়াত করতেন। তখন হযরত আবু
হুরায়রা রা. বললেন, আমি জুমার নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই দুই সূরা পড়তে শুনেছি। -সহীহ
মুসলিম, হাদীস ৮৭৭
কখনো তিনি জুমায় ‘সূরা আ‘লা’ এবং ‘গাশিয়াহ’ও পড়তেন। এ প্রসঙ্গে হযরত নুমান বিন বাশীর রা. থেকে বর্ণিত-
ِ ‫ ْالغ‬ ‫يث‬
ُ ‫ َح ِد‬  َ‫َأتَاك‬  ْ‫هَل‬ ‫ َو‬ ،‫اَأْل ْعلَى‬ ‫ك‬ ‫ُأ‬
َ َ‫ق‬ ،‫َاشيَ ِة‬
‫ َوِإ‬ :‫ال‬ ِ ‫ َسب‬ ‫بِـ‬ ‫ ْال ُج ُم َع ِة‬ ‫ َوفِي‬ ‫ ْال ِعي َد ْي ِن‬ ‫فِي‬  ‫يَ ْق َر‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
َ ِّ‫ َرب‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو ُل‬  َ‫َكان‬
ّ ‫ال‬ ‫فِي‬ ‫َأ ْيضًا‬ ‫بِ ِه َما‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ،‫ َوا ِح ٍد‬ ‫يَوْ ٍم‬ ‫فِي‬ ُ‫ َو ْال ُج ُم َعة‬ ‫ ْال ِعي ُد‬ ‫اجْ تَ َم َع‬ ‫َذا‬
.‫صاَل تَ ْي ِن‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই ঈদের নামাযে এবং জুমার  নামাযে ‫اَأْل ْعلَى‬  َ‫ َربِّك‬ ‫اس َم‬ ْ  ‫ِّح‬ِ ‫ َس ب‬ (সূরা আ‘লা)
ِ ‫ ْالغ‬ ‫يث‬
এবং ‫َاشيَ ِة‬ ُ ‫ َح ِد‬  َ‫َأتَاك‬  ْ‫هَل‬  (সূরা গাশিয়াহ) পড়তেন। তিনি এও বর্ণনা করেন যে, একই দিনে ঈদ ও জুমা হলে উভয়
নামাযেই এই দুই সূরা তিলাওয়াত করতেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৭৮
অবশ্য দুই ঈদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা ক্বাফ এবং সূরা ক্বামার পড়েছেন বলেও বর্ণিত রয়েছে। এ
প্রসঙ্গে উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ রাহ. থেকে বর্ণিত-
 ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫ َكان‬ :‫فَقَا َل‬ ‫ط ِر؟‬ َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو ُل‬ ‫بِ ِه‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫ َكان‬ ‫ َما‬ :‫اللّ ْيثِ ّي‬ ‫ َواقِ ٍد‬ ‫َأبَا‬ ‫ َسَأ َل‬ ‫ب‬
ْ ِ‫ َو ْالف‬ ‫اَأْلضْ َحى‬ ‫فِي‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬ ِ ‫ ْال َخطّا‬  َ‫ ْبن‬ ‫ ُع َم َر‬ ‫َأ ّن‬
.‫ ْالقَ َم ُر‬ ‫ق‬
َّ ‫ َوا ْن َش‬ ُ‫السَّا َعة‬ ‫ت‬ِ َ‫ا ْقتَ َرب‬ ‫ َو‬ ،‫ ْال َم ِجي ِد‬ ‫ َو ْالقُرْ آ ِن‬ ‫ق‬ ‫بِـ‬ ‫فِي ِه َما‬
হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. হযরত আবু ওয়াক্বিদ লাইসী রা.-কে জিজ্ঞেস করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আযহা ও ফিতরের ঈদের নামাযে কী কিরাত পড়তেন? তিনি জবাব দিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি
ওয়াসাল্লাম দুই ঈদের নামাযে সূরা ক্বাফ ও সূরা ক্বামার পড়তেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৯১
ফজরের সুন্নতে নবীজীর কেরাত
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সুন্নতে সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাছ পড়তেন। হযরত আবদুল্লাহ
ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
.‫قُلْ يَأ َيّهَا ال َكافِرُوْ نَ َو قُلْ ه َُو هللاُ َأ َح ٌد‬ ‫الفَجْ ِر‬ ‫قَ ْب َل‬ ‫ال َر ْك َعتَ ْي ِن‬ ‫فِ ْي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬  َ‫فَ َكان‬ ‫ َش ْهرًا‬ ‫ َسلّ َم‬ ‫ َو‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬ ُ ‫َر َم ْق‬
َ  ‫النَبِ ّي‬ ‫ت‬
আমি এক মাস পর্যন্ত নবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে থেকে খেয়াল করে বুঝার চেষ্টা করেছি, তিনি ফজরের
সুন্নত নামাযে সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাছ তিলাওয়াত করতেন। -জামে তিরমিযী খ. ২, পৃ. ২৬০, হাদীস ৪১৭
 হযরত আবু হুরায়রা রা.-ও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ফজরের সুন্নত নামাযে এই দুই সূরা পড়ার কথা
বর্ণনা করেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭২৬
আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. থেকেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। -সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ১১১৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী
শাইবা, হাদীস ৬৩৯৫
২. আবার অনেক সময় সূরা বাকারা ও সূরা আলে ইমরান থেকে এক এক আয়াত করে তিলাওয়াত করতেন, যার বিবরণ
এই হাদীসে রয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
ِ  ‫ِإلَى‬ ‫ِإب َْرا ِهي َم‬ ‫ِإلَى‬ ‫ُأ ْن ِز َل‬ ‫ َو َما‬ ‫ِإلَ ْينَا‬ ‫ُأ ْن ِز َل‬ ‫ َو َما‬ ِ‫بِاهلل‬ ‫آ َمنَّا‬ ‫قُولُوا‬ :‫ ْالفَجْ ِر‬ ‫ َر ْك َعت َِي‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ ‫هّللا‬ ‫صلّى‬
‫آخ‬ َ  ِ ‫هّللا‬ ‫ َرسُو ُل‬  َ‫ َكان‬ ‫ َما‬ ‫َأ ْكثَ ُر‬
. َ‫ ُم ْسلِ ُمون‬ ‫بَِأنّا‬ ‫ا ْشهَدُوا‬ :‫قَوْ لِ ِه‬ ‫ِإلَى‬ ‫ َوبَ ْينَ ُكم‬ ‫بَ ْينَنَا‬ ‫ َس َوا ٍء‬ ‫ َكلِ َم ٍة‬ ‫ِإلَى‬ ‫تَ َعالَوْ ا‬ ‫ ْال ِكتَاب‬ ‫َأ ْه َل‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ :‫اُأْل ْخ َرى‬ ‫ َوفِي‬ .‫اآْل يَ ِة‬ ‫ِر‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশির ভাগ সময় ফজরের (সুন্নত) দুই রাকাতের (প্রথম রাকাতে)  ‫ َو َما‬ ِ‫بِاهلل‬ ‫آ َمنَّا‬ ‫قُولُوا‬
‫ِإب َْرا ِهي َم‬ ‫ِإلَى‬ ‫ُأ ْن ِز َل‬ ‫ َو َما‬ ‫ِإلَ ْينَا‬ ‫ُأ ْن ِز َل‬  আয়াতের শেষ পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় রাকাতে ‫ َوبَ ْينَ ُك‬ ‫بَ ْينَنَا‬ ‫ َس َوا ٍء‬ ‫ َكلِ َم ٍة‬ ‫ِإلَى‬ ‫تَ َعالَوْ ا‬ ‫ب‬
ِ ‫ ْال ِكتَا‬ ‫َأ ْه َل‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬
‫م‬ আয়াতটি 
ْ َ‫ ُم ْسلِ ُمون‬ ‫بَِأنَّا‬ ‫ا ْشهَدُوا‬ পর্যন্ত তিলাওয়াত করতেন। -সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ১১১৫, সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭২৭
মাগরিব পরবর্তী দু’রাকাতে মুস্তাহাব কেরাত
মাগরিবের পরবর্তী দু’রাকাত সুন্নতেও সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাছ পড়ার বর্ণনা রয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
ِ ‫ ْال َم ْغ ِر‬ ‫بَ ْع َد‬ ‫ َوال ّر ْك َعتَي ِْن‬ ،‫ ْالفَجْ ِر‬ ‫قَب َْل‬ ‫ال ّر ْك َعتَ ْي ِن‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ً‫ َم ّرة‬  َ‫ ِع ْش ِرين‬ ‫ ِم ْن‬ ‫َأ ْكثَ َر‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
ِ‫ ْال َكاف‬ ‫َأيّهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ :‫ب‬ َ  ‫النّبِ ّي‬ ‫ْت‬
ُ ‫َس ِمع‬
.‫َأ َحد‬ ُ‫هللا‬ ‫هُ َو‬  ْ‫قُل‬ ‫ َو‬ ، َ‫رُون‬
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিশের অধিক বার ফজরের পূর্বের দুই রাকাত (সুন্নত) ও মাগরিবের পরের
দুই রাকাত (সুন্নত) নামাযে সূরা কাফিরূন ও সূরা ইখলাছ পড়তে শুনেছি। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস
৬৩৯৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৪৭৬৩
বিতরের নামাযের কেরাত
হযরত আবদুর রহমান ইবনে আবযা রা. বলেন-
.‫َأ َح ٌد‬ ُ‫هللا‬ ‫ه َُو‬  ْ‫قُل‬ ‫ َو‬ ، َ‫ ْال َكافِرُون‬ ‫َأ ُّيهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ ‫ َو‬ ،‫اَأْل ْعلَى‬  َ‫ َربِّك‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬ ‫ُأ‬
ِ ‫ َسب‬ ‫بِـ‬ ‫ ْال ِو ْت ِر‬ ‫فِي‬  ‫يَ ْق َر‬  َ‫ َكان‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬ َ ‫ َرس‬ ‫َأ ّن‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫ُول‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের নামাযে  ‫اَأْل ْعلَى‬  َ‫ َربِّك‬ ‫ا ْس َم‬ ‫ِّح‬
ِ ‫ َسب‬ (সূরা আ‘লা),   َ‫ ْال َك افِرُون‬ ‫َأ ُّيهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬ (সূরা
কাফিরূন) এবং  ‫َأ َح ٌد‬ ُ‫هللا‬ ‫هُ َو‬  ْ‫قُل‬  (সূরা ইখলাছ) তিলাওয়াত করতেন। -সুনানে নাসাঈ, হাদীস ১৭৩১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস
১৫৩৫৪
জ্ঞাতব্য, যেমনটি আমরা দেখেছি যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু কিছু নামাযে বিশেষ বিশেষ সূরা
পড়তেন। উদাহরণস্বরূপ তিনি জুমা ও দুই ঈদের নামাযে সূরা আ‘লা এবং সূরা গাশিয়াহ পড়তেন। আবার কখনো সূরা
জুমুআ ও সূরা মুনাফিকূন পড়তেন। বিত্রের নামাযে সূরা আ‘লা ও সূরা কাফিরূন এবং সূরা ইখলাছ পড়তেন। ফজর ও
মাগরিবের সুন্নতে ‫ ْال َكافِرُون‬ ‫َأ ُّيهَا‬ ‫يَا‬  ْ‫قُل‬  (সূরা কাফিরূন) ও ‫َأ َحد‬ ُ‫هللا‬ ‫هُ َو‬  ْ‫قُل‬ (সূরা ইখলাছ) পড়তেন। তাই বর্ণিত এসকল সূরা
উল্লিখিত নামাযসমূহে পড়া মুস্তাহাব। তবে ওয়াজিব বা সুন্নতে মুআক্কাদাহর মতো নয়। মাঝেমধ্যে অন্য সূরাও পড়া চাই।
[আলহাবিল কুদসী ১/১৭৫; ফাতহুল কাদীর, খ. ১ পৃ. ৩৩৭
: ‫(تحت‬
‫ك‬ ‫في‬ <‫بـ>ق الوا‬ ‫المعنيين‬ ‫عن‬ ‫وليبحث‬،‫فلينظر‬ ،‫نظر‬ ‫من‬ ‫اليخلو‬ ‫ذلك‬ ‫بعض‬ ‫في‬ ‫المواظبة‬ ‫سنية‬ ‫ودعوى‬ ،<... ‫يوقت‬ ‫أن‬ ‫>ويكره‬
).‫عباراتهم‬ ‫وعن‬ ،‫هناك‬ ‫المه‬
আননাহরুল ফায়েক খ. ১ পৃ. ২৩৪-২৩৫; মারাকিল ফালাহ,পৃ. ২৬৪; তুহফাতুল আলমাঈ, খ. ২, পৃ. ২৬০]
আলহামদু লিল্লাহ প্রবন্ধটি সমাপ্ত হল।  হাদীস ও আছার বেশি পরিমাণে উল্লেখ করাতে যদিও প্রবন্ধটি কিছুটা দীর্ঘ হয়ে
গিয়েছে, তবে আশা করি তা উপকারী হবে- ইনশাআল্লাহ। সবগুলো বর্ণনা নজরে থাকলে বড় ফায়দা হল মাসনূন
কেরাতের  বৈচিত্র্যের বিষয়টি মনে থাকবে। এর আরেকটি বড় ফায়দা হল সুন্নতের উপর আমল সহজ হওয়া। আরেকটি
ফায়দা হল মাসনূন কেরাতের  কোনো প্রকারকে শুধু না জানার কারণে অস্বীকার করা থেকে বাঁচা যাবে।
প্রবন্ধটি গভীরভাবে পড়ে থাকলে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, মাসনূন কেরাতের ন্যূনতম পরিমাণ ফজরের নামাযে তিওয়ালে
মুফাসসালের ছোট সূরাগুলো (যেমন সূরা তাকবীর যার আয়াত সংখ্যা ২৯। সূরা ইনফিতার যার আয়াত সংখ্যা ১৯ এবং
আয়াতগুলো ছোট ছোট।) বা তার সমপরিমাণ। যোহরের নামাযে তিওয়ালে মুফাসসালের ছোট সূরাগুলো অথবা আওসাতে
মুফাসসালের বড় সূরাগুলো বা তার সমপরিমাণ। আছর এবং ইশায় আওসাতে মুফাসসালের যেকোনো সূরা বা তার
সমপরিমাণ। আর মাগরিবে কিসারে মুফাসসালের ছোট সূরাগুলো বা তার সমপরিমাণ। এই হল মাসনূন কেরাতের ন্যূনতম
পরিমাণ। এরচে বেশি পড়া হলে তাও ভালো। কিন্তু ইমামের জন্য শর্ত হল এক্ষেত্রে মুসল্লীদের হালাতের প্রতি লক্ষ রাখা।
পরিশিষ্ট
কেরাত সংশ্লিষ্ট আরো কিছু মাসআলা রয়েছে যেগুলোর বেশ প্রয়োজন দেখা দেয়। তাই সংক্ষিপ্তভাবে সেগুলোর বিবরণ পেশ
করা মুনাসিব মনে হচ্ছে।
এক. উত্তম হল, এক রাকাতে পূর্ণ সূরাই তিলাওয়াত করা। তবে এক সূরাকে দুই রাকাতে ভাগ করে পড়া জায়েয, এমন করা
মাকরূহ নয়। হাদীস ও আছার থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৮২; আলমুহীতুল বুরহানী
২/৪৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬৬; ফাতাওয়া আলমগীরী ১/৭৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/২১৭; উমদাতুল ক্বারী ৬/৩৯-
৪৫ ‫بالخواتيم‬ ‫والقراءة‬ ‫الركعة‬ ‫في‬ ‫السورتين‬ ‫بين‬ ‫الجمع‬ ‫باب‬ ،‫األذان‬ ‫كتاب‬ ; ফাতহুল বারী (উক্ত অধ্যায়) ২/২৯৮-৩০৪)
উল্লেখ্য, সূরা যদি এই পরিমাণ ছোট হয় যে, তা দুই রাকাতে ভাগ করে পড়লে মুস্তাহাব কেরাতের ন্যূনতম পরিমাণের চেয়েও
কম হয়ে যাবে, তাহলে এমনটি না করা চাই। আর এরকম পড়ার অভ্যাস করা তো মোটেই সমীচীন নয়।
পক্ষান্তরে ইমাম সাহেব যদি এমন কোনো দীর্ঘ সূরা পড়তে চান, যা মাসনূন কেরাতের ন্যূনতম পরিমাণের চেয়ে এত বেশি, যা
মুসল্লীদের জন্য কষ্টের কারণ হতে পারে, সেক্ষেত্রে ঐ সূরাকে দুই রাকাতে ভাগ করে পড়াই উত্তম হবে। ফরয নামাযে দীর্ঘ
সূরাকে দু’রাকাতে ভাগ করে পড়ার প্রমাণও হাদীস ও আছারে রয়েছে। (উমদাতুল কারী ৬/৪২, কাতাদা রাহ.-এর বক্তব্য >
‫هللا‬ ‫كتاب‬ ‫<كل‬-এর অধীনে; আলইসতিযকার শরহুল মুআত্তা, ইমাম ইবনু আবদিল বার ৪/১৭৪-১৭৬)
দুই. কোনো বড় সূরার শেষ থেকে যদি মুস্তাহাব পরিমাণ তিলাওয়াত করা হয়, তাহলে তাও ঠিক আছে; মাকরূহ নয়।
(ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬১)
তিন. প্রথম রাকাতে এক সূরার শেষ থেকে পড়লে এবং দ্বিতীয় রাকাতে অন্য সূরার শেষ থেকে পড়লে তাও জায়েয আছে।
সহীহ বক্তব্য অনুসারে এভাবে পড়া মাকরূহ নয়। (ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬১; ফাতাওয়া আলমগীরী ১/৭৮)
চার. প্রথম রাকাতে কোনো দীর্ঘ সূরার অংশবিশেষ তিলাওয়াত করা আর দ্বিতীয় রাকাতে কোনো পূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করা-
এটাও বৈধ আছে, মাকরূহ নয়। সাহাবায়ে কেরামের আমলে এর নজির পাওয়া যায়। (ফাতাওয়া আলমগীরী ১/৭৮)
পাঁচ. প্রথম রাকাতে কোনো দীর্ঘ সূরার মাঝখান থেকে অংশবিশেষ তিলাওয়াত করা এবং দ্বিতীয় রাকাতে অন্য কোনো দীর্ঘ
সূরার মাঝখান থেকে অথবা শেষ থেকে অংশবিশেষ তিলাওয়াত করাও বৈধ, মাকরূহ নয়। (ফাতাওয়া আলমগীরী ১/৭৮)
হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রাহ.-এর নিকট প্রশ্ন করা হয়েছে যে, কোনো কোনো ইমাম ছাহেব
নামাযের প্রথম দুই রাকাতে কোনো একটি সূরাকে দুই ভাগ করে তিলাওয়াত করে থাকেন কিংবা কোনো সূরা থেকে এক/দুই
রুকূ পরিমাণ তিলাওয়াত করে থাকেন- এমনটি করা কি সুন্নত, না অনুত্তম, না মাকরূহ?
হযরত থানবী রাহ. এর জবাবে লেখেন- প্রশ্নোক্ত বিবরণের ক্ষেত্রে আছাহ্ তথা অধিক বিশুদ্ধ বক্তব্য অনুযায়ী এমনটি করা
মাকরূহ নয়। তবে এভাবে অভ্যাস বানিয়ে নেওয়া অনুত্তম। অবশ্য কখনো কখনো এমন হলে তা এক পর্যায়ে মাসনূনও
বটে। কেননা-
ِ  ‫فِي‬ ‫ َوالّتِي‬ ،‫ِإلَ ْينَا‬ ‫ُأ ْن ِز َل‬ ‫ َو َما‬ ِ‫بِاهلل‬ ‫آ َمنَّا‬ ‫قُولُوا‬ :‫ ْالفَجْ ِر‬ ‫ َر ْك َعت َِي‬ ‫فِي‬ ‫يَ ْق َرُأ‬ ‫ َو َسلّ َم‬ ‫ َعلَ ْي ِه‬ ُ‫هللا‬ ‫صلّى‬
‫ ِع‬ ‫آل‬ َ َ‫ق‬ ،‫س‬
َ  ِ‫هللا‬ ‫ َرسُو ُل‬  َ‫كان‬ :‫ال‬ ٍ ‫ َعبّا‬ ‫اب ِْن‬ ‫َع ِن‬
.‫ َوبَ ْينَ ُك ْم‬ ‫بَ ْينَنَا‬ ‫ َس َوا ٍء‬ ‫ َكلِ َم ٍة‬ ‫ِإلَى‬ ‫تَ َعالَوْ ا‬ : َ‫ْم َران‬
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের (সুন্নত) দুই রাকাতের (প্রথম রাকাতে) َ ‫ِإلَ ْينَا‬ ‫ُأ ْن ِز َل‬ ‫ َو َما‬ ِ‫بِاهلل‬ ‫آ َمنَّا‬ ‫قُولُوا‬ এবং
(দ্বিতীয় রাকাতে) সূরা আলে ইমরানের (আয়াত)  ‫ َوبَ ْينَ ُك ْم‬ ‫بَ ْينَنَا‬ ‫ َس َوا ٍء‬ ‫ َكلِ َم ٍة‬ ‫ِإلَى‬ ‫تَ َع الَوْ ا‬ তিলাওয়াত করতেন। -সহীহ
মুসলিম, হাদীস ৭২৭ (ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/২১৭)

You might also like