You are on page 1of 2

The Industrial Revolution

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের শিল্প-কারখানা স্থাপিত হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য শিল্প হচ্ছে ট্যানারি ও পোশাক। অন্য
দিকে স্থাপত্য শিল্পের উন্নতির কারণে নিত্যনতু ন স্থাপনার জন্য জোগান দিতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রীর। নির্মাণসামগ্রীর 
মধ্যে অন্যতম উপাদান ইট ও সিমেন্ট। প্রতিটি শিল্প বিভিন্নভাবে দূষিত করছে মাটি, পানি, বায়ু, নদীসহ ভূ গর্ভ স্থ পানিও। বায়ুমণ্ড
লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা যায় যে মোট বায়ুদূষণের ৫০ শতাংশেরও বেশি, নদীদূষণের প্রায় ৬
০ শতাংশ এবং শব্দদূষণের প্রায় ৩০ শতাংশ শিল্প-কারখানা থেকে সৃষ্ট।

ট্যানারি শিল্প থেকে পরিবেশ দূষণ

ট্যানারির সংখ্যা ১৫৫। চামড়া প্রক্রিয়াকরণের কয়েকটি ধাপে বিভিন্ন ধরনের তরল ও কঠিন বর্জ্য পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানকে দূষিত করে।
এক্ষেত্রে সিক্তকরণ প্রক্রিয়ায় নির্গত তরল বর্জ্যে প্রচু র পরিমাণে সোডিয়াম ক্লোরাইড, দ্রবীভূ ত প্রোটিন, জৈব পদার্থ, ধুলাবালি,
ময়লা ও গোবর মিশ্রিত থাকে। এগুলো দুর্গন্ধ স ৃষ্টি করে, ফলে বায়ুদূষণ ঘটে। অধিকন্তু বর্জ্যে বিদ্যমান সোডিয়াম ক্লোরাইড ও রাসায়নিক
দ্রব্য মাটি ও পানির দূষণ ঘটায়। লাইমিং প্রক্রিয়ায় নির্গত বর্জ্যে ক্ষার, সালফাইড, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, প্রোটিন থাকে, যা পানিতে
মিশে দূষিত করে। আবার ডিলাইমিং ও ট্যানিং প্রক্রিয়া থেকে অ্যামোনিয়াম ও ক্রোমিয়াম মিশ্রিত তরল বর্জ্য পানিতে ও মাটিতে মিশে যায়।
চামড়ার তৈরি বিভিন্ন বস্তুকে রঙিন করার জন্য রঞ্জক পদার্থ, তেল, গ্রিজ তৈরি করা হয়। পরে এ তরল বর্জ্য পার্শ্ববর্তী জলাধার অথবা
নদীতে মিশে পানি দূষিত করে।

পোশাক শিল্প থেকে পরিবেশ দূষণ

এক কেজি টেক্সটাইল উৎপাদনে প্রায় ১২০ লিটার পরিষ্কার পানি প্রয়োজন হয়।২০২১ সালে পোশাক শিল্প থেকে দেশে বার্ষিক বর্জ্য
পানির উৎপাদনের পরিমাণ ৩৪ কোটি ঘনমিটার। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্যের একটি বড় অংশ অপরিশোধিত অবস্থায় নদীসহ
সব ধরনের জলাধারে মিশে গিয়ে নষ্ট করছে জলজ পরিবেশ, বিপন্ন হচ্ছে জলজ প্রাণ

সিমেন্ট শিল্প থেকে পরিবেশ দূষণ

নির্মাণসামগ্রীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সিমেন্ট। আধুনিক এ যুগে বাড়ছে আকাশচু ম্বী দালানকোঠার সংখ্যা। সেই সঙ্গে
বাড়ছে সিমেন্টের চাহিদা।
নব্বইয়ের দশকের আগেও বিদেশ থেকে সিমেন্ট আমদানি করা হতো। কিন্তু চাহিদার জোগান দিতে ১৯৯৫ সাল থেকে ধীরে ধীরে 
দেশে নিজস্ব সিমেন্ট কারখানা স্থাপন শুরু হয়। বর্ত মানে দেশে ১৪টি সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। কাঁচামাল পরিবহনের সুবিধার কথা
চিন্তা করেই সিমেন্ট কারখানাগুলো নদীর পাড়ে স্থাপন করা হয়েছে। পণ্য পরিহনের সংশ্লিষ্ট নৌযান দূষণ, কারখানা থেকে নির্গত
তরল সবই নদীদূষণের কারণ। সিমেন্ট তৈরির মূল উপাদান হলো ক্লিংকার। কারখানা ও উৎপাদন ভেদে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার
থেকে ৬ হাজার টন ক্লিংকারের চাহিদা রয়েছে। যা পরিবহন থেকে খালাস করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি করা হয় উন্মুক্তভাবে। ফলে
প্রচু র ধুলাবালি আশপাশের বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।প্রতি টন সিমেন্ট উৎপাদনে প্রায় ৫১ গ্রাম ধুলা তৈরি হয় এবং একটি সিমেন্ট
কারখানা থেকে এক বছরে প্রায় ৫০ দশমিক ২ টন ধুলা বাতাসে ছড়ায়। অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা ছাড়াও এতে থাকে সালফার
অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ক্যালসিয়াম অক্সাইড, সিলিকন অক্সাইড, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড।

Agricultural Revolution
ফসল ফলানোর জন্য কৃ ষিতে বিষের ব্যবহার এক অপরিহার্য বিষয় করে ফেলা হয়েছে। পোকা ও কীট দমনের জন্য পেস্টিসাইড ও
ইন্সেক্টিসাইড ব্যবহার হয়। আবার আধুনিক কৃ ষকের জন্যে মূল ফসলের গাছ ছাড়া বাকি সকল প্রাকৃ তিক উদ্ভিদই ‘আগাছা’।
এগুলো নষ্ট করতে ব্যবহার করা হ্য় আগাছানাশক বা হার্বিসাইড। সবই রাসায়নিক এবং বিষ, যা নাশ করে বা মেরে ফেলে।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৫০ সালেই জানা গিয়েছিল যে খাদ্য এবং পানিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্যের কারণে ক্যান্সার হয়। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের
জনস্বাস্থ্য নীতির অধীনে খাদ্য ও ওষূধ প্রশাসনের (এফডিএ) অন্যতম প্রধান কাজ ছিল ফলমূল, সব্জি ইত্যাদি খাদ্য দ্রব্যে
রাসায়িক পদার্থ আছে কিনা পরীক্ষা করা। ক্যান্সারের আতংক এতো বেশি হয়েছিল যে খাদ্যে কীটনাশকের সামান্য প্রামাণিক
সাক্ষ্য পাওয়া গেলেই তা বাজার থেকে তু লে নেয়া হোত।

একটি ঘটনা উল্লেখ করছি যাতে বোঝা যাবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও বিষ কোম্পানির শক্তি জনস্বাস্থ্য নীতি থেকেও কত
শক্তিশালী। ১৯৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কৃ ষি বিভাগ একটি নতু ন আগাছানাশক অনুমোদন দিয়ে নির্দে শ দিল যে এই বিষ ক্রানবেরি
(একটি বুনো টক ফল) ফলের ঝাড় পরিস্কার করার জন্যে ব্যবহার করতে পারবে তবে তা দিতে হবে ক্রানবেরি ফল তোলার পর।
কিন্তু অনেক কৃ ষকই তা খেয়াল না করে ফল তোলার আগেই ক্রানবেরি ঝাড়ে স্প্রে করে দিল। এর ফলে ক্রানবেরী ফলে এই বিষ
লেগে গেল। দু’বছর পর গবেষণায় দেখা গেল আগাছানাশক বিষ দেয়া ক্রানবেরী খেয়ে ইঁদুরের ক্যান্সার হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে
এফডিএ আরও নজরদারি বাড়িয়ে দিয়ে দেখতে পেল পাইকারী বাজারের ক্রানবেরীতে এই আগাছানাশক পাওয়া গেছে। আর যায়
কোথায়। এফডিএ সব ক্রানবেরী বাজার থেকে জব্দ করে ধ্বংস করে দিল। এবং ঘোষণা দেয়া হোল যে এফডিএ দ্বারা পরীক্ষা করা
ছাড়া কোন ক্রানবেরী যেন কেউ না কেনে। এদিকে থাংক্স গিভিং অনুষ্ঠান সামনে; ক্রেতা, বিক্রেতা সকলেই এক অনিশ্চয়তায়
পড়ে গেল। আগাছানাশকের উৎপাদনকারি কোম্পানি খুব ক্ষেপে গেল। তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করলো। ফলে একদিন
আমেরিকার তৎকালিন ভাইস প্রেসিডেন্ট রবার্ট নিক্সন একটি রাজনৈতিক নৈশভোজে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে ক্রানবেরী সস
চারবার নিয়ে খেলেন। জনগণকে আশ্বস্থ করার জন্যে। এতে নিক্সন তক্ষু ণি অসুস্থ হয়ে যান নি বটে তবে ক্রানবেরী সত্যটা ঢাকা
পড়ে গেল। অবশ্য ক্রানবেরির পর আঙ্গুর, আপেল, টমেটো, গমও রাসায়নিক দ্বারা বিষাক্ত হোল কিনা সেই সন্দেহের তালিকায়
পড়ে গেল।

Higher standard of living


দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে ঢাকা

আজকের পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বায়ু দূষণ জনিত নানান রোগব্যাধিতে অকালে মারা যাচ্ছেন

ঢাকা শহরে বায়ু দূষণের জন্য ইটভাটা দায়ী ৫৮ শতাংশ, রোড ডাস্ট ও সয়েল ডাস্ট ১৮ শতাংশ, যানবাহন ১৮ শতাংশ,
বায়োমাস পোড়ানো ৮ শতাংশ এবং অন্যান্য উৎস ৬ শতাংশ দায়ী।

একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ হলে, স্বাস্থ্য সতর্ক তাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। যার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে
পড়তে পারে নগরবাসী। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম
সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। আর একিউআই মান ৩০১ থেকে ৪০০ হলে শহরের বাতাসের মান মানুষের স্বাস্থ্যের
জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ৪০১ থেকে ৫০০ হলে এটাকে মারাত্মক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ঢাকার স্কোর ছিল ৪৮৯

The population explosion based pollution

বাংলাদেশে বায়ু, পানি ও পরিবেশ দূষণে বছরে ক্ষতির পরিমাণ ৪২ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি)
২ .৭ ভাগ৷ শুধুমাত্র বায়ু দূষণে ক্ষতি হয় ২০ হাজার কোটি টাকা৷ দূষণের সবচেয়ে বেশি শিকার হয় শিশুরা৷

You might also like