You are on page 1of 2

মূ লনীতি-৪

একটি হাদিসের সকল বর্ণনাকে একত্র করা হাদিসের অর্থ বু ঝতে সহায়ক ।
হাদিসের অর্থ বোঝার ক্ষেত্রে নির্দি ষ্ট হাদিসের সকল বর্ণনাকে একত্র করা জরুরী। একটি হাদিসের বাহ্যিক শব্দ বহু
অর্থেরই সম্ভাবনা রাখে। কিন্তু যখন হাদিসের সব বর্ণনাকে সামনে রাখা হয়, তখন উদ্দিষ্ট অর্থটি বেরিয়ে আসে। এ
জন্যই হাদিসের ব্যাখ্যাকারগণ হাদিসের ব্যাখ্যা করার সময় নির্দি ষ্ট হাদিসের সকল বর্ণনাকে সামনে রাখতেন।
আহকামের হাদিস নিয়ে যারা লিখেছেন, তারাও ঠিক অনু রুপ কাজ করেছেন। তাছাড়া অনেক সময় আহকামের
একটি হাদিসের অপরাপর বর্ণনাগুলো অতিরক্তি কোনো হুকুমকেও অন্তর্ভূ ক্ত করে থাকে।
ইমাম ইবনে দাক্বিক উল ইদ রহ. বলেন, যখন কোনো হদিসকে সকল সনদে একত্র করা হয়, তখন তার একটি
রিওয়ায়েত অপর রিওয়ায়েতের ব্যাখ্যা করে।
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন, হাদিস বিষয়ে যারা কথা বলবেন তাদের দায়িত্ব হলো, নির্দি ষ্ট
হাদিসের সকল বর্ণনাকে একত্র করা। অতঃপর সকল বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত মতন বা হাদিসের শব্দগুলোকে একত্র
করা। এবং ঐ হাদিসটিকে সকল রেওয়ায়েতের আলোকে একটি হাদিস কল্পনা করে শরাহ বা ব্যাখ্যা করা। কেননা
হাদিসকে হাদিস দ্বারা ব্যাখ্যা করাই উত্তম।
উদাহরণস্বরূপ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর একটি হাদিস পেশ করা হয়েছে যা বু খারী ও মু সলিমে উল্লেখ করা
হয়েছে-
ُ‫ َفِإ َّن َما َأ ْط َع َم ُه هَّللا ُ َو َس َقاه‬،ُ‫ص ْو َمه‬
َ ‫ َف ْل ُي ِت َّم‬،‫ب‬َ ‫ َفَأ َك َل َأ ْو َش ِر‬،‫صاِئ ٌم‬ َ ‫َمنْ َنسِ َي َوه َُو‬
“রাসু লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সিয়াম পালনকারী যদি ভুলক্রমে খায় বা পান করে, তবে সে
তার সিয়াম পূ র্ণ করবে। কেননা আল্লাহ তা’আলাই তাকে আহার করিয়েছেন ও পান করিয়েছেন।”
ইবনে খু জাইমা হাসান সনদে অনু রূপ আরেকটি হাদিস বর্ণনা করেন
‫من أكل أو شرب في رمضان ناسيا فال قضاء عليه‬
“সিয়াম অবস্থায় কেউ যদি ভুলে আহার বা পান করে তাহলে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে না।”
ইবনে খু জাইমার হাদিস থেকে দুটি হুকুম বের হয়-
প্রথম, উক্ত হাদিসটি রমযানের দিবসে ভুলক্রমে পানাহারকারীর বিধান অন্তর্ভূ ক্ত করে।
দ্বিতীয়. রাসু ল সঃ এর বাণী ُ‫ط َع َمهُ هَّللا ُ َو َسقَاه‬ ْ ‫ فَِإنَّ َما َأ‬এর অর্থ হলো ভুলক্রমে পানাহারকারীর উপর কাযা কাফ্ফারাহ
কোনোটিই আসবেনা।
অনু রূপ আরেকটি হাদিস ইমাম বু খারী সহীহ সনদে উল্লেখ করেছেন-
‫َعنْ َأ ِبي َب ْك َر َة َأ َّن ُه ا ْن َت َهى ِإ َلى ال َّن ِبيِّ صلى هللا عليه وسلم َوه َُو َرا ِك ٌع َف َر َك َع َق ْب َل َأنْ يَصِ َل ِإ َلى الصَّفِّ َف َذ َك َر‬
‫ادَك هللاُ ِحرْ صًا َوالَ َتع ُْد‬ َ ‫َذل َِك لِل َّن ِبيِّ َف َقا َل َز‬
আবূ বকরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এমন অবস্থায় পৌঁছলেন যে,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন রুকূ‘তে ছিলেন। তখন কাতার পর্যন্ত পৌঁছার পূ র্বেই তিনি রুকূ‘তে চলে
যান। এ ঘটনা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট ব্যক্ত করা হলে, তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা
তোমার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিন। তবে এ রকম আর করবে না।
ওলামায়ে কিরাম ইখতিলাফ করেছেন (‫ َ)والَ َتع ُْد‬এর ইরাব ও এর থেকে প্রাপ্ত হুকুম নিয়ে।
যখন আমরা উক্ত হাদিসের আবু দাউদের বর্ণনাটি ও অপরাপর বর্ণনা পেলাম এভাবে যে,
‫ضى ال َّن ِبيُّ صلى هللا‬ َ ‫ون الصَّفِّ ُث َّم َم َشى ِإ َلى الصَّفِّ َف َلمَّا َق‬ َ ‫ َجا َء َو َرسُو ُل هَّللا ِ َرا ِك ٌع َف َر َك َع ُد‬،‫َأنَّ َأ َبا َب ْك َر َة‬ 
‫ َف َقا َل ال َّن ِبيُّ صلى هللا‬. ‫ َف َقا َل َأبُو َب ْك َر َة َأ َنا‬. " ِّ‫ون الصَّفِّ ُث َّم َم َشى ِإلَى الصَّف‬ َ ‫صالَ َت ُه َأ ُّي ُك ُم الَّذِي َر َك َع ُد‬
َ ‫عليه وسلم‬
‫ َوالَ َتع ُْد‬B‫ك هَّللا ُ حِرْ صً ا‬
َ ‫عليه وسلم " َزا َد‬
“আবূ বকরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি মসজিদে এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রুকূতে দেখে
কাতারে শামিল না হয়েই রুকূতে যান। শেষে তিনি কাতারে গিয়ে শামিল হন। নামাযান্তে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তি কাতারে শামিল হওয়ার পূ র্বে রুকূ করেছে, অতঃপর সে কাতারে শামিল
হয়েছে? আবূ বকরা (রাঃ) বলেনঃ আমি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ্ ইবাদাতের প্রতি
তোমার আগ্রহ বৃ দ্ধি করুন। তুমি পু নর্বার এরূপ করবে না।
আবু দাউদের এই রেওয়ায়েতটি থেকে আমরা জানলাম, রাসূ ল সা. যে বিষয়টি অপছন্দ করেছেন এবং নিষেধ
করেছেন তা হলো, কাতারে সংযু ক্ত হওয়ার পূ র্বে রুকু করা। অন্যথা রাসূ ল সা. এর কথা অনর্থক হয়ে যায়। আর
রাসূ লের কথা অনর্থক হওয়া থেকে পবিত্র।
অনু রূপ আরেকটি মূ লনীতি হলো-
‫ فإن ُغ َّم عليكم َفا ْق ُدرُوا له‬،‫ وإذا َرَأ ْي ُتمُوه َفأ ْفطِ روُ ا‬،‫َفصُومُوا‬
“রাসু লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন চাঁদ দেখবে তখন তোমরা সিয়াম আরম্ভ করবে এবং যখন
তোমরা চাঁদ দেখবে তখন ইফতার (ঈদ) করবে। তবে আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলে (মাস) পূ র্ণ করবে।”
এই হাদিসের অপরাপর রিওয়ায়েত ‫ فَا ْق ُدرُوا له‬অংশের ব্যাখ্যা করে।

You might also like