Professional Documents
Culture Documents
Kwe Briæj Mikvwi K JR, XVKV: Uvg© Ccvi
Kwe Briæj Mikvwi K JR, XVKV: Uvg© Ccvi
Dc¯’vcbvq
†gvt Avezj Kv‡kg
‡kªYx: †ivj:
†iwRt bs: 41510002035
wk¶vel©: 2018-2019 Bs
Gg.G. (dvBbvj)
Bmjv‡gi BwZnvm I ms¯‹„wZ wefvM
Kwe bRiæj miKvwi K‡jR, XvKv|
Dc¯’vcbvq
†gvt Avezj Kv‡kg
‡kªYx: †ivj:
†iwRt bs: 41510002035
wk¶vel©: 2018-2019 Bs
Gg.G. (dvBbvj)
Bmjv‡gi BwZnvm I ms¯‹„wZ wefvM
Kwe bRiæj miKvwi K‡jR, XvKv|
i
cÖZ¨qb cÎt
GB g‡g© cÖZ¨qb Kiv hv‡”Q †h, †gvt Avezj Kv‡kg , cixÿv †ivj-, †iwR
ZË¡veav‡bt
ZvRwbb mzjZvbv
mnKvix Aa¨vcK
Bmjv‡gi BwZnvm I ms¯‹…
wZ wefvM
Kwe bRiæj miKvwi K‡jR,
XvKv|
ii
iii
gyLeÜt
welqMZ Ávb PP©vi cvkvcvwk †Kvb wel‡qi Db¥y³ Av‡jvPbvi `ÿZv I
wkÿv e¨e¯’vcbv m¤ú‡K© Ávb jv‡fi cÖ‡qvRbxqZv wkÿKZv †ckvq
wb‡qvwRZ e¨w³‡`i Rb¨ AZ¨vek¨K| ce©c cÖYqb msKxY© A‡_© n‡jI GKwU
M‡elYv Kg©| Uvg© †ccvi cÖbq‡b Avgvi welq wQj Ò ga¨hz‡Mi evsjvi Drme
mg‚nÓ| Dchy©³ welqwU mxwgZ cwim‡i n‡jI GKwU ev¯ÍevbyM wPÎ
Dc¯’vc‡bi †Póv K‡iwQ| Uvg© †ccvi ZZ¡veavqK ZvRwbb mzjZvbv m¨v‡ii
nv‡Z h_vmg‡q Zz‡j w`‡Z †c‡i wb‡R‡K AZ¨šÍ K…ZÁ g‡b KiwQ|
Dc¯’vcbvq
†gvt Avezj Kv‡kg
Bmjv‡gi BwZnvm I ms¯‹„wZ wefvM
Kwe bRiæj miKvwi K‡jR, XvKv|
iv
K…ZÁZv ¯^xKvit
Dc¯’vcbvqt
†gvt Avezj Kv‡kg
Bmjv‡gi BwZnvm I ms¯‹…
wZ wefvM
Kwe bRiæj miKvwi K‡jR,
XvKv|
v
DrmM©t
vi
mvi-ms‡ÿct
evOjvi Drme I Abzôvb Zv‡`i GKwU wbR¯^ ¯^Zš¿ †mŠ›`h©Zv enb K‡i| mviv
eQi a‡i cvwjZ wewfbœ Drme I Abzôvb¸wji g‡a¨ w`‡q iv‡R¨i mvs¯‹…wZK
MwZkxjZv cÖKvk cvq| wewfbœ Drme¸wji g‡a¨ `‚M©vc‚Rv, C`, `xcvewj, Kvjx
c‚Rv, LÖxógvm, †`vj-hvÎv Ges cqjv ˆekvL nj Ab¨Zg| cwðge½, HwZn¨MZ Hk¦‡
¯úw›`Z ¯’j wnmv‡e MY¨ nq| wgkÖ-mvs¯‹…wZK Abzôv‡b mg…×, GB ivR¨
wewfbœ ¯’vbxq Drm‡ei mgq Djvm Ges ù‚wZiÖ GK kke¨¯Í †¶‡Î cwiYZ nq|
‡`vjhvÎv evsjvi GKwU cÖavb Abzôvb, GB Dcj‡¶ GLvbKvi gvbzl G‡K Aci‡K
i‡Oi Avei‡Y †X‡K †d‡j| cqjv ˆekvL GLbI evOvwji K¨v‡jÛv‡i Ab¨ Av‡iK
D‡jL‡hvM¨ Abzôvb, GB w`‡b Zviv bZzb el©‡K ¯^vMZ Rvbvq| GLv‡b
GKwU NUbv AMÖvn¨ Kiv P‡j bv †h GLvbKvi Drme I Abzôvb¸wj cwðe‡½i
mvgwMÖK cwiwPwZ I mnRvZ cÖe…wË cÖ`vb K‡i|
vii
viii
m~wPcÎ
‡NvlbvcÎt...............................................................................................................i
cÖZ¨qb cÎt.............................................................................................................ii
gyLeÜt................................................................................................................. iii
K…ZÁZv ¯^xKvit...............................................................................................iv
DrmM©t................................................................................................................v
mvi-ms‡ÿct...........................................................................................................vi
cÖ_g Aa¨vq...........................................................................................................1
cÖviw¤¢K..........................................................................................................1
1.1 f~wgKvt....................................................................................................1
1.2 wel‡qi wee„wZt.......................................................................................3
1.3 M‡elYvi D‡Ïk¨mg~nt...............................................................................5
wØZxq Aa¨vq.......................................................................................................6
aviYvMZ cÖZ¨qmg~n........................................................................................6
2.1 cÖZ¨qmg~‡ni msÁvt................................................................................6
2.2 c~e© M‡elYvi djvdj/Z_¨t.........................................................................7
Z…Zxq Aa¨vq......................................................................................................8
Z_¨ wfwË............................................................................................................8
3.1 Z‡_¨i Drm I cÖK…wZ (Sources of Data) t.................................................8
3.2 Z_¨ msMÖ‡ni ‡KŠkj I c×wZt................................................................10
PZz_© Aa¨vq......................................................................................................12
wel‡qi weeiY....................................................................................................12
4.1 ga¨hz‡Mi evsjvi Drme mg‚nt.................................................................12
4.2 ga¨hy‡M evsjvi ag©xq Drmemg~nt.......................................................17
4.3 ga¨hz‡M evsjvi gzmjgvb‡`i ag©xq I mvgvwRK Drmemgznt...............19
gzmjgvb‡`i ag©xq Drmemgz‡n XvKvi beve cwiev‡ii c„ô‡cvlKZvt..........21
cÂv‡q‡Zi f‚wgKvt.......................................................................................22
nhiZ ivmz‡j Kvix‡gi (mvjøvjøvû AvjvBwn Iqvmvjøvg) cweÎ Rb¥ Drmet 25
4.4 mgmvgwqK fvi‡Zi Ab¨vb¨ Abyôvbvw`t...............................................26
cÂg Aa¨vq...........................................................................................................34
¸iæZ¡c~Y© djvd‡ji mvivsk...............................................................................34
5.1 M‡elYvi djvdjt.......................................................................................34
5.2 Dcmsnvit................................................................................................35
MÖš’cyÄx....................................................................................................36
cÖ_g Aa¨vq
cÖviw¤¢K
1.1 f~wgKvt
†Zi kZ‡K gymjgvbiv evsjv‡`k Rq K‡i gymwjg mgvR wbg©vY K‡i Ges
gymwjg mf¨Zv M‡o †Zv‡j| †mB †_‡K AvVv‡iv kZ‡Ki gvSvgvwS mgq ch©šÍ
evsjv gymwjg kvm‡bi Aaxb wQj| ivóª I A_©bxwZi cÖfv‡e ga¨hy‡M evsjvi
mgvR I ms¯‹…wZ wbwg©Z n‡qwQj| evsjvi ga¨hy‡Mi BwZnv‡m me‡P‡q eo
cwieZ©b n‡”Q ewn‡`©k †_‡K AvMZ gymwjg cÖfve| ïaykvmb †¶‡ÎB bq
mgvRRxe‡bI hv ¯’vqx Avmb jvf K‡iwQj| gymwjg kvmb wb‡q †hgb
mv¤cÖ`vwqK msNvZ m„wó nqwb, Avevi gymwjg kvmKMYI wn›`y I †eŠ×‡`i
¯^vaxbZv `v‡b Kvc©Y¨ K‡iwb| mvgšÍ mgv‡Ri wbqg Abyhvqx wn›`y‡`i g‡a¨
hviv †jLvcov I Avw_©Kfv‡e AMÖmi (eªvþY, ˆ¶wÎq) wQ‡jb ZvivB AwfRvZ
†kªwY wn‡m‡e my‡hvM-myweav we‡klfv‡e MÖnY I †fvM K‡i‡Qb|
এ সময়ে হিন্দু সমাজের উল্লেখযোেগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল ধর্মীয় অসহিষ্ণু তা। মুসলমানরা বর্ত মান সময়ের মতোই
মধ্যযুগেও বিজি খর্মীয় রীতি-নীতি ও আচার অনুষ্ঠান পালন করছে। ঈদউল-ফিক্তর ও ঈদ-উল-আজহা
মুসলমান সমাজের প্রধান ধর্মীয় উত্সব হিসেবে পালিত হতো। ধর্মপ্রাণ মুসলমান মাত্রই পবিত্র রমজান মাসে
রোজা রাখত। এছাড়াও শব-ই-বরাত ও শব-ই-কদরের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করতো।
উৎসব অনুষ্ঠানে মুসলমানরা তাদের সাধ্য মতে নতু ন এবং পরিচ্ছন্ন পােশাক পরে একে অন্যের গৃহে গিয়ে
কু শল ও দাওয়াত বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃ ত্বভাবকে সুদৃঢ় করত । সুলতান, সুবাদার ও
নবাবগণ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে জনগণের সান্নিধ্যে আসতেন। বিশেষ আড়ম্বরের সঙ্গে মুসলমানরা মহানবির
(সা) জন্মদিন পালন করতো। বর্ত মান সময়ের মত মধ্যযুগেও মহরম উৎসব পালিত হতো। এটি শিয়া
সম্প্রদায়ের একটি প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলে পরিচিত।
এ উদ্দেশ্যে শিয়ারা ‘ তাজিয়া’ তৈরি করত। মুসলমানদের বর্ষপঞ্জি অনুসারে মহরমের প্রথম দিনকে নববর্ষ
হিসেবে পালন করা হয়। মহরমের চন্দ্র উদয়কে মুসলমানরা আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে বরণ করত। এ যুগে
ধর্মপ্রীতি মুসলমান সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ
পড়তো। এছাড়া তারা নিয়মিত কোরআন ও হাদিস পাঠ করতো। সমাজে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব
দেয়া হতো। ছেলে-মেয়ে উভয়কেই ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের জন্য মক্তবে পাঠানো হতো । সমাজে ধর্মীয় জ্ঞানের
জন্য এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পরিচালনার জন্য মোল্লা সম্প্রদায়কে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো।
গ্রামীণ জীবনে ধর্মীয় উৎসব এবং বিয়েশাদির মতো সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে মোল্লা সম্প্রদায়ের উপস্থিতি
ছিল অপরিহার্য। মুসলমান সমাজে সুফি ও দরবেশ নামে পরিচিত পির বা ফকির সম্প্রদায়ের যথেষ্ট প্রভাব
ছিল। তারা ধর্মশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন এবং সর্বদা আধ্যাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন থাকতেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে
তারা ধর্ম সাধনার জন্য দরগা’ প্রতিষ্ঠা করেন।
1
শাসকবর্গ ও জনগণ সকলের কাছেই তাঁরা শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন । বাংলায় ইসলামের বিস্তৃ তির সাথে সাথে
মুসলমান সমাজও বিস্তৃ ত হতে থাকে। বাংলায় মুসলমান সমাজে দুইটি পৃথক শ্রেণি বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
একটি বিদেশ থেকে আগত মুসলমান, অন্যটি স্থানীয় ভাবে ধর্মান্তরিত মুসলমান। বিদেশি ও স্থানীয়
মুসলমানদের মধ্যে কৃ ষ্টি ও রীতিনীতির পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা
দেয়নি। মুসলমান শাসকদের উদারতা এবং স্থানীয় কৃ ষ্টি-সংস্কৃ তির প্রতি তাদের পৃষ্ঠপোষকতাই এর কারণ ছিল।
2
1.2 wel‡qi wee„wZt
মধ্যযুগের মুসলমান শাসকগণ ইসলামের গৌরবকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং নিজেদের রাজ্যজয় ও শাসনকালকে স্মরণীয়
করে রাখতে জামা বাংলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রাসাদ, মসজিদ, কবর, নম ও দরগাহ ইত্যাদি নির্মাণ
করেছিলেন। মসজিদ নির্মাণকে মুসলমান জামা, শাসকগণ অতিশয় পুণ্যের কাজ বলে বিবেচনা করতেন। এ জন্যেই
রুষেরা মুসলমান শাসকগণ স্থাপত্য শিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছিলেন।
বাঙালি হিন্দুর সর্বপ্রধান এবং সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃ তিক উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আনন্দময়ী
দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গার আগমন বার্তায় বর্ত মানে চরাচর আনন্দমুখর। আমরা দুর্গাপূজা বললেও আসলে এই পূজা মা-
দুর্গার একার নয়। সঙ্গে আরও অনেকেই আছেন। মা দুর্গা আসেন সবাইকে নিয়েই৷ ভাল-মন্দ, শত্রু-মিত্র, গাছ-প্রাণী সঙ্গে
নিয়েই৷ চালচিত্রে শিব আছেন, তো পায়ের নিচে অসুর। কলাগাছ বউ তো পেঁচা, হাঁস, ইঁদুর, ময়ূর বাহন। হাসিকান্না,
সুজন-দুর্জ ন, পশুপক্ষী-উদ্ভিদ সমাহারে আমাদের জীবন-পথ চলাটাকেই সহজ করে চিনিয়ে দিতে চান।
পৌরাণিক কাহিনি থেকে দুর্গা পূজার শুরু। কিন্তু ক্রমে দুর্গা যেন আমাদের ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছে। সাধারণ মেয়ে, তবে
দাপুটে। এই দাপুটে মেয়ের কত নাম! এক অঙ্গে বহুরূপ। এক রূপে বহুনামে চিহ্নিত আমাদের মা দুর্গা। শরৎঋতু তে
আবাহন হয় বলে দেবীর আরেক নাম শারদীয়া। এছাড়া মহিষাসুরমর্দি ণী, কাত্যায়নী, শিবানী, ভবানী, আদ্যাশক্তি, চন্ডী,
শতাক্ষী, দুর্গা, ঊমা, গৌরী, সতী, রুদ্রাণী, কল্যাণী, অম্বিকা, অদ্রিজা এমন কত নাম আছে মায়ের। ঠিক নানী-দাদীরা
যেমন আমাদের আদর করে একটা নামে ডাকে, মামারবাড়িতে আদিখ্যেতা করে অন্য নামে ডাকা হয়। আবার বাবার
দেওয়া একটা নাম, মায়ের দেওয়া একটা নাম, স্কু লের জন্য একটা ভালো নাম । মা দুর্গারও তেমনি অনেক নাম। সে তো
আমাদেরই ঘরের মেয়ে !
আমরা যদি চণ্ডীর দেবীনির্মাণের ব্যাখ্যা ধরি, নানা শক্তি সমন্বয়ে আজকের ভাষায় তিনি একটি বিশেষ কার্যসিদ্ধির
উদ্দেশ্যে বানানো যন্ত্র, একজন নারীবেশী যুদ্ধাস্ত্র ছাড়া কিছু নন। অসুরের মধ্যে পুরুষের তথাকথিত নারীশরীরের লোভ
সঞ্জাত করেছিলেন পৌরাণিকরা। তাই দুর্গা নামের যুদ্ধাস্ত্রটি স্ত্রী রূপে শোভিত, এক পুরুষকে প্রলোভন দেখাবে বলেই।
যদিও আমাদের ঘরের মেয়ে বা লৌকিক দুর্গার সঙ্গে পৌরাণিক কাহিনির তেমন কোন মিল নেই। লৌকিক দুর্গা আমাদের
ঘরের মেয়ে, চলতি তথাকথিত মেয়েলি সব বৈশিষ্ট্য তাঁর অধিকার। মা’কে যেমন একাহাতে অনেক কাজ করতে হয়, ঠিক
যেমন মা দুর্গাকে দশহাতে যুদ্ধ করতে হয়েছিল মহিষাসুর বধের সময়। সব দেবতারা অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল মা দুর্গাকে।
অনেকগুলো দৈত্য, দানব, অসুরকে তিনি মেরেছিলেন। আমরা শুধু মহিষাসুরের নামটাই জানি। রক্তবীজ, চন্ড, মুন্ড,
শুম্ভ, নিশুম্ভ, ধূম্রলোচন, মধু, কৈটভ আর মহিষাসুর, মোট ন’জন অসুরকে মা দুর্গা বধ করেছিলেন।
এই এক একজন দুষ্টু অসুর আসলে সমাজের খারাপ লোকেদের প্রতীক। ধরে নেয়া যায়, অসুরের একজন চোর, একজন
ডাকাত, একজন মিথ্যেবাদী, একজন হিংসুটে, একজন মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে, একজন অসৎ, একজন খুনি,
একজন প্রতারক আর একজন নিষ্ঠু র লোক। এরা সকলেই দুষ্টু আর সমাজের জন্য ক্ষতিকারক মানুষ। তাই বছরে
একবার মা দুর্গাকে স্মরণ করে আমরা এইসব অশুভ শক্তির বিনাশ করার চেষ্টা করি।
আমরা যেমন ঘর-সংসার, স্বামীসন্তান, আত্মীয় পরিজন ছাড়া কোনো কিছু চিন্তা করতে পারি না, আমরা দুর্গার ক্ষেত্রেও
তাই দেখতে চেয়েছি। লৌকিক দুর্গা আমাদের মাঝে দেখা দেন সপরিবারে। বাঙালির আপন মনের মাধুরী মেশানো দুর্গা তার
সন্তান কার্তি ক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীকে নিয়ে কৈলাশ থেকে হিমালয়ের ঘরে বাপের বাড়ি আসেন। বাঙালির ঘরে মেয়ে
শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসার মতো আনন্দ। যেমন পরিবারে সবাই আপন, সেরকম জগজ্জননীর বিশ্বসংসারে
আমরা শিক্ষিত, অশিক্ষিত, খেটে খাওয়া মানুষ, ব্যবসায়ী-বৈশ্য, শাসনকর্তা-সবাই বিশ্বজননীর সন্তান- সরস্বতী, কার্তি ক,
লক্ষ্মী ও গণেশের মতো সবাই আপন। সন্তানদের কল্যাণের জন্য মা দুর্গা সর্বদাই উদগ্রীব। তাই ১০ দিক থেকে সন্তানদের
রক্ষা করার জন্য তিনি ১০ হাতে ১০ অস্ত্র ধরেছেন।
3
তবে বাঙালি যেভাবে দুর্গা পূজাকে আত্মস্থ তথা জীবনের অঙ্গ হিসাবে গ্রহণ করেছে, তেমন ভাবে আর কেউ করতে
পারেনি। মাতৃ রূপে বা শক্তিরূপে মা দুর্গা যেমন বাঙালির অন্তর জুড়ে বিরাজ করছেন, তেমনি কন্যারূপে উমা বাঙালির
সংসারে এক অভূ তপূর্ব আবেগের সঞ্চার করেছে। কথিত আছে, গিরিরাজ হিমালয় ও তাঁর স্ত্রী মেনকা কন্যা উমা বা
পার্বতীকে বিয়ের পর কৈলাসে শিবের ঘরে পাঠিয়েছিলেন । বৎসারান্তরে সেই কন্যাকে দেখার জন্য মা মেনকার ব্যাকু ল
প্রার্থনা যেন প্রতিটি বাঙালি পরিবারের সর্বজনীন প্রার্থনায় পরিণত।
ঘরের মেয়ে ঘরে আসবে–তাই বাঙালির ঘরে ঘরে দেখা দেয় আনন্দের শিহরণ। আমাদের এই দুঃখ-দৈন্যের ঘরে শ্বশুরবাড়ি
থেকে মেয়ে আসবে মাত্র চার দিনের জন্য–তাই আর সমস্ত দুঃখ ভু লে ঘরে ঘরে আনন্দের পসরা সাজায়, নতু ন জামা
কাপড় পরে দুঃখকে বিদায় দিয়ে আনন্দময় হয়ে উঠে বাংলার আকাশ-বাতাস। এভাবে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে
সামাজিক উৎসবে পরিণত করার ঘটনা পৃথিবীতে আর কোথাও পাওয়া যাবে না।
মা দুর্গাকে বরণ করে নেবার জন্য বাঙালির আগমনী সঙ্গীত আমাদের জীবনপ্রবাহে মিশে যাওয়া এক অবিচ্ছেদ্য ধারা। এর
তাৎপর্য হৃদয় দিয়ে, গভীর বোধ দিয়ে অনুভব করতে হয়।
4
1.3 M‡elYvi D‡Ïk¨mg~nt
Av‡jv‡P¨ As‡k Òga¨hz‡Mi evsjvi Drme mg‚nÓ kxl©K M‡elYv cÎwU‡Z
M‡elYvi D‡Ïk¨mg~n Av‡jvPbv Kiv n‡jv:
5
wØZxq Aa¨vq
aviYvMZ cÖZ¨qmg~n
2.1 cÖZ¨qmg~‡ni msÁvt
উৎসবঃ
উৎসব বলতে সাধারণত সামাজিক, ধর্মীয় এবং ঐতিহ্যগত প্রেক্ষাপটে পালিত আনন্দ অনুষ্ঠানকে বোঝায়। বাংলায়
প্রচলিত লোকায়িত উৎসবের মধ্যে রয়েছে পহেলা বৈশাখ, চৈত্র সংক্রান্তি, নবান্ন, পৌষ মেলা ইত্যাদি। মুসলমান
ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে রয়েছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বার্ষিক উৎসবের মধ্যে
রয়েছে জন্মাষ্ঠমী, রথযাত্রা, দুর্গা পূজা, সরস্বতী পূজা।
উৎসব আনন্দ প্রকাশ ও লাভের মাধ্যম, এক কথায় যাকে বলা যায় আনন্দানুষ্ঠান; ইংরেজিতে একে ‘এ জয়ফু ল অব
অনারিফিক সেলিব্রেশন’ বলে সংজ্ঞায়িত করা যায়। উৎসব পরিবারকেন্দ্রিক হতে পারে, আবার ব্যাপকভাবে
সমাজকেন্দ্রিকও হতে পারে। কালের বিবর্ত নে এসব উৎসবের কোনোটির রূপ বদলায়, কোনোটি বিলুপ্ত হয়, আবার
কোনোটি নতু ন সৃষ্টি হয়। উৎসবসমূহের কোনোটিতে থাকে সমাজ ও জাতীয়তার ছাপ, কোনোটিতে ধর্মের ছাপ, আবার
কোনোটিতে থাকে রাজনীতির ছাপ। আদিম সমাজে মানুষের খাদ্যকামনাকে কেন্দ্র করে যে উৎসবের শুরু হয়েছিল,
আজ তা নানা বর্ণ ও বৈচিত্র্যে পূর্ণ। তবে সব অনুষ্ঠানের মূলেই রয়েছে আনন্দ লাভ।
উৎসবের মূল ভিত্তি এবং অধিকাংশ প্রাচীন আচার অনুষ্ঠানই যৌথ কর্ম। মানুষের প্রধান কর্ম কৃ ষির সঙ্গেও যোগ ছিল
অনেক অনুষ্ঠান বা উৎসবের এবং সেসব নিয়ন্ত্রিত হতো চান্দ্রমাস দ্বারা। প্রাচীনকালের আচার অনুষ্ঠানগুলি ছিল
অতিপ্রাকৃ তিক শক্তিকে বশে আনার এক ঐন্দ্রজালিক প্রক্রিয়া; পরবর্তীকালের সংস্কৃ তিতে তার চারিত্রিক উপাদান রয়ে
গেছে। প্রাচীনকালের কৃ ষিভিত্তিক উৎসবগুলি ছিল স্বতঃস্ফূ র্ত , যা পরবর্তীকালে অনেক আনুষ্ঠানিক হয়ে ওঠায় তার
স্বতঃস্ফূ র্ত তা হারায়।
6
মধ্যযুগ:
মধ্যযুগ (ইংরেজি: The Middle Ages) হল ইউরোপীয় ইতিহাসের একটি সময়কাল। এটি ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে শুরু
হয়েছে, যে সময়ে রোমান সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটেছিল, এবং ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের নবজগত
আবিষ্কারের পূর্বও পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে। একে মধ্যযুগ বলার কারণ হল এটি সেই সময় যখন কিনা সাম্রাজ্যবাদী
রোমের পতন ঘটে এবং প্রাচীন আধুনিক ইউরোপের সূচনা হয়। এই সময়কালকে মধ্যযুগীয় সময় (Medieval
Age), অন্ধকারের যুগ (the Dark Ages) এবং (ইসলাম এবং খ্রিস্টধর্মের উত্থানের কারণে ) আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের
যুগও (the Age of Faith) বলা হয়। সঙ্কীর্ণভাবে ব্যবহৃত হলে, অন্ধকারের যুগ বলতে ৪৭৬ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দকে
বোঝানো হয়, যে সময়ে শার্লামেন(Charlemagne)সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন।
7
Z…Zxq Aa¨vq
Z_¨ wfwË
cÖv_wgK Z_¨
gva¨wgK Z_¨
Z‡_¨i Drm‡K Avgiv cÖv_wgK I gva¨wgK Drm wn‡m‡e wPwýZ Ki‡Z cvwi|
†Kv‡bv †Kv‡bv M‡elK cÖv_wgK Drm‡K gvV ch©v‡qi Drm wn‡m‡e
bvgKiY K‡i‡Qb|
hLb †Kv‡bv Z_¨ DcvË mivmwi DËi`vZvi wbKU †_‡K msMÖn Kiv nq,
ZLb Zv‡K cÖv_wgK Drm ev cÖv_wgK Z_¨ DcvË e‡j| Ab¨fv‡e ejv hvq †h
Z_¨ cÖ_gev‡ii g‡Zv msM„nxZ A_v©r †h Drm n‡Z Gi Av‡M †Kv‡bv
cwimsL¨vwbK c×wZ cÖ‡qvM Kiv nqwb, †mUvB cÖv_wgK ev †gŠwjK ev
gvV ch©v‡qi Drm wn‡m‡e we‡ewPZ|
C.R. Kothari Gi g‡Z ÒThe primary data are those which are collected
afresh and for the first time, and thus happen to be original in character.Ó
8
A_©vr cÖv_wgK Z_¨ n‡jv hv weï×fv‡e Ges cÖ_gev‡ii g‡Zv msM„nxZ Ges
‰ewk‡ó¨ †gŠwjKZvi Qvc _v‡K|Õ
G cÖm‡½ C.R. Kothari e‡jb ÔThe secondary data are those which have
already been collected by someone else and which have already been passed
through the statistical process.Õ
9
(L) ˆe‡`wkK miKvi ev AvšÍR©vwZK ms¯’v ev Zv‡`i mvewmwWqvwi ev A½
cÖwZôv‡bi wewfbœ cÖKvkbv; (M) KvwiMwi, A_©‰bwZK I evwYwR¨K
mvgwqKxmg~n;
Avi AcÖKvwkZ Z‡_¨i Drm n‡Z cv‡i wewfbœ M‡elK ev weØvb e¨w³, evwYR¨
ms¯’v, kÖg ms¯’v, wewfbœ miKvwi ev †emiKvwi e¨w³ ev cÖwZôv‡bi
Wv‡qwi, wPwVcÎ, AcÖKvwkZ AvZœRxebx BZ¨vw`|
cÖv_wgK I gva¨wgK Z‡_¨i Drm wPwýZ Kiv mnR| wKš‘ G `yB Dr‡mi
g‡a¨ cv_©K¨ wbY©q Kiv KL‡bv KL‡bv †ek KwVb n‡q c‡o| gva¨wgK Z_¨
e¨env‡ii †ÿ‡Î M‡elK‡K jÿ¨ ivL‡Z n‡e †h, wZwb †h Z_¨ e¨envi Ki‡Z Pvb, Zv
Zvi M‡elYvi D‡Ï‡k¨i mv‡_ m½wZc~Y© wKbv| hw` Z‡_¨i ¸YMZ gvb
MÖnY‡hvM¨ nq, †m‡ÿ‡Î A_©, mgq I kÖg mvkÖ‡qi Rb¨ gva¨wgK Drm n‡Z
Z_¨ e¨envi Kiv †kÖq|
cÖv_wgK Drm n‡Z Z_¨ msMÖ‡ni wewfbœ c×wZ Av‡Q| †m¸‡jv n‡jv t
10
(K) ch©‡eÿY c×wZ (Observation method)
Z‡_¨i we‡kølYt
Z_¨ msMÖ‡ni ci Z_¨‡K we‡køl‡Yi gva¨‡g Uvg© †ccvi ‰Zix nq| wb‡b¥
Uvg© †ccvi we‡kølY c×wZ mg~n Av‡jvKcvZ Kiv n‡jv|
11
PZz_© Aa¨vq
wel‡qi weeiY
mvgvwRK Drmevw`t
wb‡¤œ mvgvwRK Drmevw` m¤ú‡K© Av‡jvPbv Kiv n‡jv|
12
ÒPb¥gyn~Z© †_‡K Qq mvZw`be¨vcx cwiev‡ii mva¨g‡Zv Drme Abyôvbvw`i
e¨e¯’v n‡Zv| G Abyôv‡bi †fvRce©‡K ejv n‡Zv QwU (lôw`‡bi Abyôvb)Ó| wkï
mšÍv‡bi Rb¥ Dcj‡ÿ¨ cÖ‡Z¨K wcZvgvZv Zv‡`i AvZ¥xq¯^Rb‡`i g‡a¨ Dcnvi I
`vb-LqivZ cÖ`vb KiZ| ÒjvjgwZ mqdzj gyjKÓ bvZK GKwU evsjv MÖ‡š’ Rvbv
hvq, mqd’j gyj‡Ki Rb¥ Dcj‡ÿ¨ Zvi wcZvgvZv Mwie‡`i g‡a¨ UvKv-cqmv I
Kvco-‡Pvco cÖ`vb K‡ib| beRvZ wkgy mšÍv‡bi Kzôxbvgv Abyôv‡bi ixwZ
wn›`y-gymjgvb Dfq m¤úª`v‡qi g‡a¨B we`¨gvb wQj| ga¨hy‡M evsjvi
mgvRe¨e¯’vq evsjv RbMY Zv‡`i wkï mšÍv‡bi R‡b¥i ïf jMœwU AZ¨šÍ
RuvKRg‡Ki mv‡_ cvjb KiZ|
bvgKiYt
Rb gvk©vj 1668 wLªóv‡ã evsjv cwiåg‡YGm wkï mšÍv‡bi R‡b¥i mv‡_
m¤úwK©Z Abyôvbvw`i eY©bvq e‡j‡Qb, Ògyi ev gymjgvbMY Zv‡`i R‡b¥i
wØZxq w`‡b GKwU bvg cvq| beRvZ‡Ki wcZv A_ev wbKU AvZ¥xq
ag©¸iæ‡K Avgš¿Y K‡ib| wZwb ag©xq cy¯ÍK eÜ K‡ iwcZvi nv‡Z GKwU
myPv‡jv KvwV †`b| GwU cvZvi g‡a¨ cÖe‡k K iv‡bi ci myPwe× cvZv Ly‡j
†mB cvZvi cÖ_g Aÿi Gi A_©vbymv‡i wkïi bvgKiY Kib|Ó G †_‡K eySv hvq
†h, evsjvi gymjgvbMY wkïi bvgKi‡Y ag©xq MÖ‡š’i (KziAvb kixd) mvnvh¨
wb‡Zb|
AvwKKvt
wkï mšÍv‡bi R‡b¥i mv‡_ AvwKKv GKwU GKvšÍ cÖ‡qvRbxq Abyôvb|
AvwKKv k‡ãi A_© n‡”Q beRvZK wkïi †Kk| G Abyôv‡b wkïi bvgKi‡Yi
¯§„wZ iÿv‡_© wkïcy‡Îi †ÿ‡Î `y‡Uv Ges wkïKb¨vi †ÿ‡Î GKwU gwnl A_ev
QvMj RevB Kiv n‡Zv Ges AvZ¥xq¯^Rb I Mwie`‡i g‡a¨ gvsk weZiY Kiv
n‡Zv|
wemwgjøvn Lvbt
13
wemwgjøvn Lvb wkïi mv‡_ m¤ú„³ Avi GKwU ¸iæZ¡c~Y Abyôvb| wkïi Pvi eQi
Pvi gvm Pvi w`b eqtµgKv‡j G Abyôv‡bi D`hvcb Kiv n‡q _v‡K| cÖv_©bv,
Avkx©ev` I cÖgv‡`i ga¨ w`‡q Avjøvni bv‡g cov ïiv ïiæ Kivi Rb¨ wkgy‡K
I¯Ív`‡`i wbKU mgc© Kiv nq| Gfv‡e wkï wkÿvRxe‡ cÖ‡ek K‡i|
Lrbvt
wj½v‡MÖi Pg©KZ©b Kiv‡K ejv nq Lrbv GUv mybœvZ bv‡gI cwiwPZ|
gymjgvbiv AbyôvwbKfv‡e G Drme D`hvcb KiZ| mvaviYZ wkgyi mvZ eQi
eq‡mi mgq LZbv Kiv n‡Zv|
weevnt
we‡q gymwjg mvg‡Ri GKwU we‡kl DrmegyLi Abyôvb| †gŠjweiv we‡q
Abyôvb cwiPvjbv K‡ib| wewfbœ ¯’v‡b we‡q Abyôv‡b wewfbœ iKg Drm‡ei
Av‡qvRb Kiv nq| weËkvjx e¨w³iv we‡q Dcj‡ÿ¨ we‡kl R¨uvKRg‡Ki Av‡qvRb
K‡ib| G Dcj‡ÿ¨ Zviv cÖPzi e¨q Ki‡Zb| we‡qKvh© m¤úbœ Kivi ci be`¤úwZi
Rb¨ evmikh¨vi e¨e¯’v niv n‡Zv| D‡Ï‡k¨ evmiNi‡K dyj Øviv mymw¾Z Kiv
n‡Zv| eY© cÖ_vi Dci wfwË K‡i wn›`y mgv‡R weevnKvh© m¤úvw`Z n‡Zv|
we‡qi mgq Kb¨v‡K we‡qgÛ‡c GKwU wcuwo‡Z ewm‡q e‡ii Pviw`‡K Zv‡K
mvZevi Nywi‡q Avbv nq| Zvici eª²Y cy‡ivwnZ gš¿ cvV K‡i we‡q Kvh©
m¤úbœ K‡ib|
14
g½j Kvgbvq Zviv cÖv_©bv KiZ| cwiev‡ii †kvK-ce© Qqgv‡miI AwaKKvj
Ae¨vnZ _vKZ| AZtci weivU †fvRvbyôv‡bi ga¨ w`‡q †kvKc‡e©i mgvwß NUZ|
Av‡gv`-cÖ‡gv`t
‡mKv‡j gymjgvbMY mvgvwRK I mvwnwZ¨K m‡¤§j‡bi Av‡qvRb KiZ|
mvgvwRK Abyôvb¸‡j Kwe, MíK_K, iwmK I mw½ZKvi‡`i cÖwZ‡hvwMZvq
mRxe n‡q DVZ| GgwbK, hyׇÿ‡ÎI ˆmwbKiv gv‡S gv‡S Giƒc Abyôv‡bi e¨e¯’v
Ki‡Zb| wgR©v bv_vb e‡j‡Qb, ÒcÖwZw`b mw½ZKvi, MíK_K, Kwe I
cuyw_cvVK‡`i m‡¤§j‡bi ga¨ w`‡q AwZevwnZ n‡Zv|Ó mvgwiK AwdmviMY
weivU v‡fvRvbyôv‡bi e¨e¯’v Ki‡Zb| wecyjmsL¨K †jvK G Abyôv‡b †hvM`vb
KiZ|
15
cvb LvIqvt
cvb LvIqv (cvb I mycvwi LvIqv) G Dcgnv‡`‡ki wewfbœ A‡ji bªvq evsjvqI
GKwU cyivZb Af¨vm mKj †kÖYxi Rbmvavi‡Yi g‡a¨ cÖPjb wQj| cÖ‡Z¨K
Drme Abyôv‡b cv‡bi †hvMvb †`Iqv n‡Zv| evOvwj wn›`y-gymwjg Dfq
m¤úª`v‡qi g‡a¨ cvb GKwU ¸iæZ¡c~Y© gh©v`v `Lj K‡iwQj| AwZw_
Af¨vMZ‡K Zvi AvMgb I cÖZ¨vMg‡bi mgq cvb`v‡b Avc¨vqbm Kivi ixwZ eû
D‡jøL Av‡Q Ôevnvwi¯Ívb-B-Mv‡qex‡ZÕ| mvgvwRK Abyôvbvw`‡Z cvb
weZi‡Yi Aw_‡_qZvi mgvwß NUZ| ‡Kvb K_vi cÖwZkÖæwZ¯^ixc cvb w`‡q
Avc¨vqb Kivi ixwZ cÖPwjZ wQj| Aveyj dRj cv‡bi D”Q¡wmZ cÖksmv
K‡i‡Qb| Zvi g‡Z©, ÒD`¨v‡bi cy‡®úi g‡Zv, cvb GKwU DrK…ó dj;
wn›`y¯Ív‡bi me‡P‡q †miv dj|Ó
a~gcvbt
cÂ`k kZK ch©šÍ G Dcgnv‡`‡ki Ab¨vb¨ As‡ki b¨vq evsjvqI a~gcvb An&TvZ
wQj| †lvok kZ‡K cZ©ywMRiv a~gcvb cÖeZ©b K‡ib Ges G kZ‡KB GUv
mgv‡R Pvjy n‡q hvq| DUv D”P-wbP, †QvU, eo cÖvq cÖ‡Z¨KwU cwiev‡i
cÖ‡ekvwaKvi cvq| Òû°vÓ ivR`iev‡i ¯’vb jvf K‡i|
cvbxq `ªe¨t
gyNj-c~e© hy‡M cvbxq `ª‡e¨i e¨envi AZ¨bZn mxgve× wQj| myjZvb DjvDwÏb
LjRx Rbmgv‡`‡k cvbxq `ªe¨ MÖnY wbwl× K‡ib| wKš‘ AwfRvZ e¨w³ I
ivRKg©PvixMY ‡Mvc‡b cvbxq `ªe¨ MÖnY Ki‡Zb| D”P‡kÖYxi †jv‡Kiv
g`¨cvb Ki‡Zb| evi‡evmv e‡j‡Qb, Òg`¨cvb AcÖKv‡k¨ Kiv n‡Zv| Z‡e Drme
Abyôvbvw` I we‡qi †fv‡Ri AskMÖnYKvixiv iv‡Î g`¨cvb Ki‡Zb|Ó m¤ªvU
AvKei miKvwi ZZ¡veav‡b g‡`i †`vKvbmg~n †Lvjvi wb‡`©k w`‡qwQ‡jb|
Kwc I Pvt
VvÛv cvbxq wn‡m‡e mvaviY †jv‡Kiv kieZ e¨envi KiZ| gymjgvb kvm‡bi
cÖ_gw`‡K Kwd I Pv AÁvZ Qj| m¤ú`k kZ‡K Kwdi cÖPjb ïiæ nq| beve
Avjxe`©x Lvb †fv‡i Kwd cvb KiZ‡b| G mgq ¯^v¯’¨Ki cvbxq wn‡m‡e Pw‡q
cÖPjbI wQj| mß`k kZ‡K Dcgnv‡`‡k Pv‡qi cÖPjb nq| GwU m¤¢eZ Bs‡iR
ewYK‡`i Øviv G`‡k Avg`vwb Kiv n‡qwQj 1962-93 wLªóv‡ã| GKRb Bs‡iR
Kg©KZ©v e‡j‡Qb, Zvi Avg‡j ¯^v¯’¨Ki cvbxq wn‡m‡e fvi‡Z cPv cv‡bi cÖPjb
wQj| gb‡Wjm jÕ ‡_‡K wZwb GKwU weªwUk Rvnv‡R K‡i e›`i AveŸvm
†_‡K myiv‡U Avmvi mgq mv‡_ K‡i Pv wb‡q Av‡mb|
kc_ MÖnYt
gyNj Avg‡j kc_ MÖn‡Yi ixwZ wn›`y I gymjgvb Dfq m¤úª`v‡qi g‡a¨ cÖPwjZ
wQj| Awf‡hv‡Mi Dˇi wb‡Ri wb‡`©vwlZv cÖgv‡Yi R‡b¨ ev A½xKvi
wbwðZ Ki‡Z gymjgvbMY KziAv‡bi Dci Ges wn›`yMY kvjMÖv‡gi y&ci kc_
MÖnY Ki‡Zb|
‡PŠMvb †Ljvt
ga¨hy‡M gvby‡li Av‡gv`-cÖ‡gv‡`i GKwU RbwcÖq gva¨g wQj †Ljvayjv|
†PŠMvb †Ljv D”P‡kÖYxi †jv‡Kiv fv‡jvevm‡Zb| G †Ljv‡K AvaywbK nwK
†Ljvi c~e©m~wi ejv n‡q _v‡K| bvg Ges †PŠMvb †Ljv cvim¨‡`kxq| GUv
AMÖfvM euvKv‡bv jvwV (†PŠ) w`‡q gv‡V (Mvb) †Ljv n‡Zv| Ak¦c„‡ô GUv
†Ljv n‡Zv Ges ejUv wQj †cv‡jv †Ljvi e‡ji g‡Zv| Kwe AvjvIj ÔcÙeZ©xÕ
Kv‡e¨ G PgKcÖ` †Ljvi K_v D‡jøL K‡i‡Qb|
17
‡PŠci cvkv‡Ljvt
gymjgvb kvmbvg‡j cvkv‡Ljvi (‡PŠci) cÖPjb †`Lv hvq| GwU evsjv‡`‡k weevn
Abyôv‡bi GKwU AZ¨vek¨Kxq w`K wQj| evmiN‡i ei-K‡bi g‡a¨ cvkv‡Ljvi eû
`„óvšÍ †`Lv hvq| GwU evsjv‡`‡k weevn Abyôv‡bi GKwU AZ¨vek¨Kxq w`K
wQj| evmiN‡i ei-K‡bi g‡a¨ cvkv‡Ljvi eû `„óvšÍ evsjv mvwn‡Z¨ cvIqv hvq|
Aveyj dR‡ji †gZ, Ò!‡PŠci †LjvwU wQj m¤ªvU AvKe‡ii GKwU Ab¨Zg wcÖq
‡Ljv|Ó
Zvm †Ljvt
Zvm †Ljv wQj evsjvi GKwU AZ¨šÍ mycwiwPZ †Ljv| Aveyj dRj e‡j‡Qib,
m¤ªvU AvKei wb‡R Zvm †Lj‡Zb Ges wZwb G †Ljvq wKQz myweavRbK
Ôi`e`jÕ K‡ib| ev‡ivwU msL¨v wQj Zvm †Ljvi wfwË Ges cÖwZwU †kÖYx
ev‡ivwU Zv‡mi mgš^‡q MwVZ, wKš‘ Zviv f~‡j wM‡qwQ‡jb †h, ev‡ivRb
ivRv ev‡ivwU wfbœ cÖKv‡ii nIqv DwPZ|
Rv`ygš¿t
ga¨hy‡M evsjvi RbMY wewfbœ ai‡bi †KŠZzK I Kymsöv‡i wek¦vm KiZ| evsjv
I Kvgiƒ‡c PvKwiiZ gyNj Kg©Pvix I ˆmb¨iv Rv`ywe`¨vq wek¦vm KiZ| wgR©v
bv_‡bi g‡Z, Ôgxi kvg&m Rv`ywe`¨v weÁv‡b GKRb `ÿ e¨w³ wQ‡jb|Ó
cÖwZØ›Øx I k·`i wbg©~j Kivi R‡b¨ Rv`ywe`ªvi e¨envi n‡Zv|
GQvov G hy‡M cviveZ Dovb, e¨vNª †cvl gvbv‡bv, muvZvi KvUv, ‡bŠKv
evBP BZ¨vw` wQj †m mgqKvi RbwcÖq Av‡gv`-cÖ‡gv`, cy®úej w`‡q
Ô‡NiæÕ †LjvwU evjK‡`i g‡a¨ e¨vcKev‡e cÖPwjZ wQj| ÔgiwMevwRÕ ev
†gviM jvovBI †m hy‡Mi RbwcÖq Av‡gv`-cÖ‡gv` wQj|
18
4.2 ga¨hy‡M evsjvi ag©xq Drmemg~nt
gymwjg kvmbvg‡j evsjvi gymjgvb‡`i ag©xq Abyiv‡M wekl L¨vwZ wQj|
gymjgvb‡`i ag©xq Drmemg~n mgMÖ gymwjg kvmbvg‡jB Qj| Zviv ag©xq
Drme¸‡jv Lye Av‡gv` cÖ‡gv‡`i mwnZ cvjb Ki‡Zv| G mgq gymjgvb mgv‡R
wKQz ag©xq Drme I mvgvwRK Drm‡ei Avwef©ve nq| gymjgvb kvmbvg‡j
wn›`yivI Zv‡`i wewfbœ ag©xq Abyôvb wbwe©‡Nœ cvjb Ki‡Z cviZ| Gfv‡e
wn›`y I gymjgvb‡`i ag©xq Drme¸‡jv kZvãxi ci kZvãx P‡j Avm‡Q| wb‡¤œ
ga¨hy‡Mi ag©xq Drm¸‡A kZvãxi ci kZvãx P‡j Avm‡Q| wb‡¤œ ga¨hy‡Mi
ag©xq Drme¸‡jvi weeiY ‡`Iqv n‡jv|
igRvbt
Dcevm, mshg, cÖv_©bv I mvgvwRm m‡¤§jbxq mgq wn‡m‡e †m hy‡M
gymjgvbiv igRvb gvm cvjb Ki‡Zv| gymjgvbiv Aviwe gvm igRvb‡K cweÎ I
g½jRbK wn‡m‡e MY¨ K‡i| Ges AZ¨šÍ Lywki mv‡Z G gvm‡K ¯^MZ Rvbvq|
wgR©v bv_vb e‡jb, ÒigRvb gv‡m Puv` ‡`Lvi ïiæ n‡Z Gi †kl w`b ch©šÍ gyNj
ˆmb¨iv †QvU eo cÖ‡Z¨K cÖZ¨n Zv‡`i Zuvey‡Z wgwjZ n‡Zb|
C`t
wgR©v bv_v‡b eY©bv n‡Z †m hy‡M E` Drm‡ei eY©bv cvIqv ‡hZ|
gymjgvbiv eQ‡i `ywU C` D`hvcb KiZ| GKgvm †ivRv ivLvi ci C‡`i Puv` †`Lv
†M‡j †QvU eo Avevj e„×ewbZv bvix-cyiæl mevi gb Avb‡›` f‡i †hZ| Zviv
bZzb RvgvKvco c‡i gmwR‡` C‡`i bvgvR co‡Z †hZ Ges bvgvR †k‡l G‡K
A‡b¨i mv‡_ †KvjvKzwj Ki‡Zv| gymjgvb‡`i Av‡iKwU C` n‡jv C` Avhnv|
gymjgvbiv mKv‡j bZzb Rvgv Kvco c‡o C‡`i bvgvR ‡kl K‡i cÖ‡Z¨‡K Zv‡`i
mvg_©¨ Abyhvqx Avjøvn‡K Lywk Kivi Rb¨ cï RevB Ki‡Zv| RevBK…Z cïi
gvsm Zviv AvZ¥xq ¯^Rb I Mwie `ytLxqi g‡a¨ e›Ub KiZ|
cqM¤^‡ii Rb¥w`bt
19
gvmjgvbiv GKwU weivU ag©xq Drme wn‡m‡e cqM¤^‡ii Rb¥w`b cvjb Ki‡Zv|
G w`bwU Zv‡`i Kv‡Q A‡bK m¤§bRbK beve gywk©`Zzjx Kvb G w`bwU‡K
weivU Avb›` Drm‡e cwiYZ K‡ib| gnvbex (mvt) Gi Rb¥w`b Dcj‡ÿ Zvui Rxebx
Av‡jvPbvi Rb¨ wgjv` gvnwdj Abyôv‡bi cÖ_v kvmK I Ae¯’vcbœ gymjgvb‡`i
g‡a¨ cÖPwjZ wQj|
k‡eeivZ I k‡eK`it
k‡eeivZ I k‡eK`i gymjgvb‡`i wbKU `ywU cweÎ iRbx| G `ywU ivZ eiKZgq
gv‡mi cÖ_g `wkw`b GUv D`hvcb Kiv nq|
gniigt
gniig Drme wkqv‡`i mv‡_ RwoZ Bgvg nvmvb †nv‡m‡bi kvnv`vZ eiY
¯§iYv‡_© gniig gv‡mi cÖ_g `kw`b GUv D`hvcb Kiv nq|
‡eov Drmet
evsjvi gymjgvb kvmbvg‡j D`hvwcZ †eov Drme wQj RbwcÖq Drme| GwU
D`hvwcZ n‡Zv LvRv wLwR‡ii m¤§v‡b|
‡eŠ× c~wY©gvt
ga¨hy‡M evsiv‡Z †eŠ× m¤úª`v‡qi †jK‡`i emevm wQj| †eŠ×‡`i GKwU eo
ag©xq Drme n‡jv †eŠa c~wY©gv|
20
`yM©vc~Rvt
wn›`ymgv‡Ri m‡e‡P‡q eo ag©xq Abyôvb n‡jv `yM©vc~Rv| Avo¤^i I
RvuKRg‡Ki mv‡_ wn›`yi `yM©vc~Rv cvjb KiZ|
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ও গবেষক ডঃ এম. এ. রহিম তাঁর বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃ তিক ইতিহাস (প্রথম খন্ড)
গ্রন্থে 'বাঙ্গালি মুসলমানদের সামাজিক জীবন' অধ্যায়ের দ্বিত্বীয় পর্বে ''উৎসবাদি,অনুষ্ঠানাদি ও রীতিনীতি''
সমুহের বর্ণনা প্রসংগে (২৪২-২৭২) ৩০ পৃষ্টা জুড়ে এগুলির সুবিস্তৃ ত বিবরন দিয়েছেন।
মধ্যযুগের কবি মুকু ন্দরাম 'চন্ডীমঙ্গল' কাব্যে মুসলমানদের জীবনাচরণের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে ৩৪৪ নং
পৃষ্ঠায় বলেন,'' তারা (মুসলমানেরা) প্রভাতে ঘুম থেকে উঠে, এবং লাল পাটি (মাদুর) বিছিয়ে প্রত্যহ পাঁচবার
নামাজ পড়ে। সোলেমানি মালা গুণে তারা পীর-পয়গমৃরের ধ্যান করে এবং পীরের মোকামে প্রদীপ জ্বালায়।
তাদের দশিবশজন একত্রে বসে বিচার-আচার করে। মুসলমানগণ সদা সর্বদা কোরআন-কিতাব পাঠ করে। তারা
অত্যন্ত জ্ঞানী এবং আল্লাহ্ব্যতিত তারা আর কাউকে ভয় করে না। প্রাণ গেলেও এরা রোজা ত্যাগ করে না।''
এছাড়া, বাংলা সাহিত্যের অপরাপর মধ্যযুগীয় মঙ্গল কাব্যের কবিগণ যেমন- বিপ্রদাসের 'মনসামঙ্গল', বিজয়
গুপ্তের 'মনসামঙ্গল', ষষ্ঠিবরের 'মনসামঙ্গল', দ্বিজ বংশী দাসের 'মনসামঙ্গল' কাব্য এবং কৃ ষ্ণ কবিরাজের
কাব্যগ্রন্থে মধ্যযুগীয় মুসলমান সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সমুহ সবিস্তারে স্হান পেয়েছে।
21
''ঢাকার সামাজিক জীবনও গড়ে উঠতে থাকে নানা জাতি -ধর্মের সংমিশ্রনে, তখনকার জীবন যাত্রা পাঠ
করে জানা যায়- সামাজিক অনুষ্ঠান, উৎসব ইত্যাদির অধিকাংশ উপকরণই ছিল ধর্মভিত্তিক। খুব সমারোহের
সঙ্গেই তখন এই সব উৎসব পালিত হ'তো, এবং সকল ধর্মের লোকেরাই একে অপরের উৎসবে যোগ দিতো।
ধর্মীয় আচাররীতি আলাদা হলেও উৎসব পালা-পার্বণ পালনে একত্রিত হতো সকলে। মোহররম পর্ব সকল
সম্প্রদায় নিয়ে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হতো''।
''মসজিদ তৈরি হলে উৎসব হতো। ১৭০০ খৃষ্টাব্দে মুঘল আমলে ঢকায় 'বেগম বাজারের করতলব খানের
মসজিদ' স্হাপনের সময়েও বেশ সমারোহ হয়েছিল''।
''তখনকার ঢকার গৃহজীবনের ও কিছু কিছু পরিচয় ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যায়, প্রায় গৃহেই বৈঠকখানা কিংবা
মজলিশ ঘর থাকতো। বড় লেকের বৈঠকখানা পানদান, আতরদানে সাজানো থাকতে. নানা রকম উপাদানে
বাড়ীর মেয়েরা পান সাজাতো। ........................চীন দেশ থেকে আমদানী করা মাটির পাত্রে অতিথিদের
খাবার সাজিয়ে দেয়া হতো। ঢাকার কারিগরদের তৈরী পানদান, আতরদানের সুক্ষ্ম কারুকাজ দেখে বিদেশীরাও
মুগ্দ্ধ হতেন। ................................................... মিলাদ ও মুশায়েরার আয়োজনেও সামাজিক মেলামেশার
ব্যবস্হা ছিল''।
''মুসলমানদের মধ্যে তখনও ছিল তখনো ছিল আরবি ফারসির প্রচলন। সামাজিক মেলামেশার আর একটি
সুযোগ ছিল তখন মিলাদের আসরে। ঢাকা শহর জুড়েই তখন মিলাদের চর্চা ছিল। বাড়ীর ছেলেমেয়েদের সুর
করে দোয়া দরুদ শিক্ষায় উৎসাহিত করা হতো। ভাল মিলাদকারীদের কদর ছিল সে সময়ে। সুর করে বাড়িতে
সালাম দেয়ার সময়ে সুরে সুরে ভরে যেতো বাড়ি। মিলাদের পর সকলকে ঘন দুধে পাক করা চিকন চালের
ফিরনী, কিংবা জাফরানী জরদা বিতরণ করা হতো ছোট ছোট তস্তরী করে। এখনকার মতো ঠোঙ্গা হাতে
অতিথিদের বিদায় করা হতো না। মিলাদের পর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-পড়শীদের মধ্যে আলাপ জমে উঠতো
জীবনের নানা ঘটনা প্রবাহ নিয়ে''। (তথ্য সূত্রঃ ঐতিহাসিক ঢাকা মহা নগরীঃ বির্বতন ও সম্ভাবনা- সম্পদানা-
ইফতিখার-উল-আউয়াল, প্রকাশনায়- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ২০০৪খৃঃ, পৃষ্ঠা নং-৫৮৭-৯০।)
ঢাকার নবাব পরিবা রে র সদস্যগন সুন্নী মতাদর্শে বিশ্বা সী এবং সুফী ভাবধারা র অনুসারী ছিলেন ।
তাঁদের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য ঢাকা শহরের নামীদামী পীর হিসেবে স্বীকৃ ত ছিলেন। এ প্রসংগে
'আহসান মন্জিল ও ঢাকার নওয়াব- ঐতিহাসিক রুপরেখা' (প্রকাশনা-২০০৮ইং) গ্রন্থে বিশিষ্ট গবেষক ও
আহসান মঞ্জিলের কীপার ডঃ মোহাম্মদ আলমগীর লিখেছেন,"খাজা আবদুল্লাহ একজন সফলকাম পীরের
ভূ মিকা পালন করেন , তাঁর ধর্মীয় জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক সাধনার বিশেষ খ্যাতি ছিল। এতদাঞ্চলে আলেম
উলামসহ এক বিরাট সংখ্যক জনগন তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহন করেন। তদানীন্তন ঢাকার মগবাজার দায়রার প্রখ্যাত
আলেম ও পীর শাহ নুরী (মৃত্যু-১৭ ৮৫খৃঃ) পর্যন্ত তাঁর মুরীদ হতে পেরে গর্ব বোধ করতেন''। নবাব পরিবারের
আধ্যাত্মিক সাধনার ব্যাপারে এ পুস্তকের ৫৩-৫৫ নং পৃষ্টায় বিশদ বিবরন দেয়া হয়েছে।
22
cÂv‡q‡Zi f‚wgKvt
ঢাকার নবাব পরিবা রে র সদস্য খাজা মো হাম্মদ আযম থাকতেন দিলকু শায় । ১৯০৭ খৃষ্টাব্দে নবাব স্যার
সলিমুল্লাহ (১৮৭১খৃঃ-১৯১৫খৃঃ) তাঁকে ঢাকার পঞ্চায়েতসমুহের জন্য তত্তাবধায়ক হিসেবে নিয়োগ দেন। খাজা
আযম ছিলেন ঢাকার সকল পঞ্চায়েতসমুহের জন্য নিয়োজিত প্রথম তত্তাবধায়ক। ফলে এটা খুবই স্পষ্ট যে,
নবাব পরিবারের প্রধানকে ঢাকার মুসলমানদের বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃ তি দিয়েছিলেন, ইংরেজ সরকার।
আসলে পঞ্চায়েত প্রথাটিকে সক্রিয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের পিছনে ঢাকার নবাব নবাব সলিমুল্লাহ সাহেবের
মূল উদ্দেশ্য ছিল 'ইসলামীকরণের মাধ্যমে ঢাকার মুসলমান সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করা'। এছাড়া
তাঁর মান-সম্মানের বিষয়টিতো এর সাথে জড়িত ছিলই। বস্তুতঃ ১৯০৫ খৃষ্টাব্দের বঙ্গ ভঙ্গ ও মুসলিম লীগ
প্রতিষ্ঠার (১৯০৬ খৃঃ) প্রেক্ষিতে নবাব পরিবারের দ্বারা ঢাকার পঞ্চায়েত ব্যবস্হার পুনরুজ্জীবন ও প্রয়োজনীয়
পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের ঘটনাটি ছিল বিংশ শতাব্দীর বাংলার মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ও
মুসলিম নবজাগরণের প্রতীক।
''খাজা আযমের প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী ১৯০৭ সালের দিকে ঢাকা শহরের পঞ্চায়েতের সংখ্যা ছিল ১৩৩ টি । ঢাকা
শহরের প্রতিটি মহল্লায় ছিল একটি করে পঞ্চায়েত। এর সদস্য ছিলেন মহল্লার সমস্ত মুসলমান বাসিন্দাগণ।
ঢাকার নবাব পরিবা রে র বিভিন্ন মহল্লা র পঞ্চা য়েত প্রধানদি গকে পাগড়ী পরিধান করাতেন এবং এ
উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হতো মিলাদ মাহফিলের। পঞ্চায়েত সম্পর্কি ত সমুদয় বিষয়াদি দেখবাল করার জন্য
একজন তত্তাবধায়কের পদ সৃষ্টি করা হয়। মহল্লার প্রতিটি সামাজিক অনুষ্ঠান, অন্যান্য কার্যাবলী, এক কথায়,
মহল্লার মুসলমানদের জীবন নিয়নত্রন করতো এই পঞ্চায়েত। মহল্লার বিবাদ-বিসম্বাদ সবকিছুর মীমাংসা হতো
এই পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। মহল্লার অধিবাসী কারো পক্ষ্যেই পঞ্চায়েতের দেয়া সিদ্ধান্ত অমান্য করা সম্ভবপর ছিল
না। সমস্ত পঞ্চায়েত সমুহ 'দায়রা-ই-মুতিয়ুল ইসলাম' নামে পরিচিত ছিল''।
''মহল্লার সকল বৈষয়িক ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদির তত্তাবধান ছাড়াও পঞ্চায়েতের একটা প্রধান কাজ ছিল
মুসলমানদের সকল ধর্মীয় উৎসবগুলোতে সার্বিকভাবে সহায়তা প্রদান করা। ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ সাহেবের
'পঞ্চায়েতকে ইসলামীকরণের' সাথে এটি যুক্ত ছিল। ঢাকার মুসলমান সমাজের যে দু'টি ধর্মীয় উৎসব পালনে
পঞ্চায়েতকেবিশেষভাবেসহায়তা করতে হতোসেগুলোহলো- 'মুহররম' ও 'ফাতেহা-ই-ইয়াজ দহম'। তথ্য সূত্রঃ
স্মৃতিময় ঢাকা- মুনতাসীর মামুন, ঢাকা -১৯৯২ খৃষ্টাব্দ, পৃষ্ঠা নং-৩০-৩৮।
১। আশুরা -মুসলমান শাসনামলে বাংলাদেশে শিয়া সম্প্রদায় ছিল। ষোড়শ শতকের বাংলা সাহিত্যে শিয়াদের
ইমামবাড়ার বহু উল্লেখ আছে। কবি মুকু ন্দরাম চক্রবর্তী চন্ডী মঙ্গল কাব্যের ৩৪৪ নং পৃষ্ঠায় মুসলমানদের
প্রতিষ্ঠিত ইমাম বাড়ার বর্ণনা করেছেন।
''বিশেষ করে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা 'মোহররম' পর্বকে কারবালায় (ঈমাম) হোসেনের শাহাদাতের বাৎসরিক
স্মরণিকা হিসেবে পালন করতো। 'ফাদার মনসেরাত' মোগল সম্রাট আকবরের (১৫৫৬খৃঃ-১৬০৭খৃঃ) সময়কার
'মোহররম' উদযাপনের বর্ণনা দিয়ে বলেন,
''মোহররমে'র সময় মুসলমানরা মাসের প্রথম নয় দিনে কেবল নিরামিশ খেয়ে রোজা রাখতো এবং একটি উঁচু
মঞ্চ থেকে জনসভায় হাসান হোসেনের দুঃখ-কষ্টের করুণ কাহিনী বর্ণনা করতো। এতে সমস্ত সভাগৃহ শোকে
অভিভূ ত হয়ে যেত.........................। তারা হাসান-হোসেন ধ্বনি দিয়ে ক্রন্দন করতো''।
23
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ও গবেষক ডঃ এম. এ. রহিম তাঁর বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃ তিক ইতিহাস (প্রথম খন্ড)
গ্রন্থে 'বাঙ্গালি মুসলমানদের সামাজিক জীবন' অধ্যায়ের দ্বিত্বীয় পর্বের ২৪৫ পৃষ্টায় 'মনডেলসলো' কতৃ ক বর্ণিত
আগ্রাতে মোগল সম্রাট শাহ্জাহানের (১৬২৮খৃঃ-১৬৬০খৃঃ) সময়কার মোহররম মিছিলের উল্লেখ করেছেন।
অতঃপর লেখক বলেছেন,''সুন্নী মুসলমানগণ 'মোহররম' একটা নীরব শোকের পর্ব হিসেবে পালন করতো এবং
সাধারণতঃ শিয়াদের আবেগময় খেলা ও মিছিলে অংশগ্রহন করতো না। সুন্নীদের মধ্যে কেবলমাত্র সাধারণ
শ্রেণীর লোকেরা এ-সব ব্যাপারে অংশগ্রহন করতো। মুসলমানরা মোহররমের প্রথম দিনটি নববর্ষের প্রথম দিন
হিসেবে পালন করতো''।
'বাহারিস্তান' থেকে জানা যায় যে , 'মুসলমানগণ উৎসব ও অভিনন্দন জ্ঞাপনের দ্বারা মোহররমের চাঁদকে
স্বাগত জানাতো'। নবাবী আমলে ঢাকা শহরে মুহররমের এক তারিখ থেকে নয় তারিখ পর্যন্ত হোসেনী দালানে,
শহরের বিভিন্ন পঞ্চায়েত কত্বক রাতে মাতমের আয়োজন করা হতো। এ মাতম 'ভাটিয়া লী মর্সীয়া ' নামে
পরিচিত ছিল।
এছাড়া ১০ ই মহররম তাজিয়া মিছিল আয়েজিত হতো। বিশেষতঃ শিয়া মুসলমানেরা এতে অংশ নিতো।
এছাড়া অনেক হিন্দু মহিলাগন পুত্র সন্তান লাভের আশায় তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতো। বৃটিশ সরকারের
আমলে আশুরা উপলক্ষ্যে মুহররমের এক তারিখ থেকে পনের তারিখ পর্যন্ত সরকারী ছুটি থাকত।
২। আখেরী চাহার সাম্বা - সফর মাসের শেষ বুধবার আখেরী চাহার সাম্বা হিসেবে বাংলার মুসলমান সমাজের
মধ্যে বিশষভাবে প্রতিপালিত হতো। হযরত রাসুলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দিনে সামান্য
সুস্থ্য বোধ করে গোসল করেছিলেন বলে হাদীস শরীফের কিতাবাদিতে উল্লেখিত আছে। সে কারণে এ দিনটিতে
এদেশের মুসলমানরা রোগ মুক্তির আশায় বিশেষ দোয়া-তাবিজ লিখিত পানি পান ও তদ্বারা গোসল করতো
এবং ইবাদাত বন্দেগীর মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করতো। বৃটিশ সরকার এ দিনটিতে ও সরকারী ছুটি ঘোষনা
করেছিল।
৩। ফাতেহা-এ-এয়াজ দহম –
প্রতি বছর ১১ই রবিউস সানি তারিখেবড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী'র (রহঃ) (১০৭৭ খৃঃ -১১৬৬খৃঃ)
ওফাত দিবস সারা দেশের ধর্মপ্রান মুসলমান সমাজ ফাতেহা-এ-এয়াজ দহম হিসেবে খুবই উৎসাহ-উদ্দীপনার
সাথে পালন করতেন। এদেশে এটির সর্বপ্রথম প্রচলন করেন বিক্রমপুরের (বর্ত মানে মুন্সীগঞ্জ) সিপাহীপাড়ায়
সমাহিত হযরত বাবা আদম (রহঃ)। তাঁর নির্দে শে ১১৭৪ খৃষ্টাব্দের ১১ ই রবিউস সানি তারিখে বড়পীর হযরত
আবদুল কাদের জিলানী'র (রহঃ) ৮ম ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তদীয় খলীফা আবদুল্লাহপুর খানকা'র প্রধান
হযরত মুয়াবিন আল বসরী (রহঃ) একটা গরু জবাই করে ওরস পালন করেছিলেন বলে জানা যায় । হিন্দু রাজ্যে
গরু জবেহ করার অপরাধে আবদুল্লাহপুর খানকা'র প্রধান হযরত মুয়াবিন আল বসরীকে (রহঃ) সামন্ত রাজা
বল্লাল সেন অন্ধ কু পে নিক্ষেপ করে শহীদ করে। এতে কাদেরিয়া তরীকার আনুসারী হযরত বাবা আদম শহীদের
(রহঃ) সাথে বল্লাল সেনের সংঘর্ষ আনিবার্য হয়ে পড়ে। ১১৭৮ খৃষ্টাব্দে হিন্দু সামন্ত রাজা বল্লাল সেনের বিরুদ্ধে
ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে শাহাদাতবরণ করেন হযরত বাবা আদম (রহঃ)
24
মধ্যযুগের অন্যতম মুসলিম মহাকবি আলাওল (১৬০৭ খৃঃ -১৬৮০খৃঃ) ছিলেন কাদেরিয়া তরীকার আনুসারী।
তাঁর পীর হযরত মসউদ শাহ্কাদেরী (রহঃ) ছিলেন রোসাঙ্গের কাজী। হযরত বড়পীর সাহেবের (রহঃ) প্রতি কবি
আলাওলের প্রচন্ড ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখে তিনি কবিকে কাদেরীয়া তরীকার খিলাফত প্রদান করেছিলেন বলে কবি
তাঁর 'সিকান্দরনামা' (১৬৭৩খৃঃ) গ্রন্হের এক কবিতায় একথা উল্লেখ করেছেন।
বৃটিশ সরকারের শাসনামলে নুর নবীজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জন্মদিন একটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ
মুসলমানী পর্ব বিবেচনায় সরকারী ছুটি হিসেবে ঘোষিত ছিল। 'আহসান মন্জিল-ও ঢাকার নওয়াব- ঐতিহাসিক
রুপরেখা' গ্রন্থে বিশিষ্ট গবেষক ও আহসান মঞ্জিলের কীপার ডঃ মোহাম্মদ আলমগীর লিখেছেন, ''নওয়াব
সলিমুল্লাহর উৎসাহ উদ্দীপনায় ফাতিহা-ই-দোয়াজ দাহামের সময় ঢাকা শহর সরগরম হয়ে উঠতো। নওয়াবের
আর্থিক সহায়তায় প্রতি বছর এ উপলক্ষে ঢাকার পঞ্চায়েত সমিতিগুলো পাড়ায় পাড়ায় জাঁকালোভাবে
আলোকসজ্জা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করতো''। পৃঃ ৩৮
হাকিম হাবীবুর রহমান (১৮৮১ খৃঃ -১৯৪৭খৃঃ ) বলেন, ''শাহ্বুরহানুল্লাহ কাদেরী আমার প্রতি খুব সদয় ছিলেন।
তিনি ছিলেন প্রফু ল্ল চিত্ত ও খোশালাপী। ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জে (ঢাকা জে লা ) তাঁর অনেক মুরীদ ছিল।
তিনি জাঁকালোভাবে ঈদ-এ-মিলাদুন-নবী পালন করতেন''। মালয় উপদ্বীপে জন্মগ্রহনকারী, ঢাকার ভাট
মসজিদ এলাকায় বসবাসকারী এই পীরের পূর্ব-পুরুষগন ছিলেন বাগদাদের অধিবাসী। তাঁর প্রপিতামহ বহু
পূর্বেই বাগদাদথেকেঢাকায় এসে বসতি স্হাপন করেন। ১৩৩৩ হিজরী/১৯১৪ খৃষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। তথ্যসূত্র
'ছালাছা' ঢাকা -পৃষ্টানং-১১০।
25
4.4 mgmvgwqK fvi‡Zi Ab¨vb¨ Abyôvbvw`t
দূর্গাপূজা
অসুররাজ মহীষাসুরকে বধ করার পর দেবী দূর্গার বিজয় উল্লাসকে কেন্দ্র করে এই উৎসব পালিত হয় । শরৎ
ঋতু তে এই দূর্গাপূজার উল্লসিত পরিমন্ডল সমস্ত বাংলার মানুষদেরকে সম্প্র্ণূরূপে আচ্ছন্ন করে রাখে। সপ্তমী,
অষ্টমী, নবমী ও বিজয়া দশমী হল এই উৎসবের প্রধান চারটি দিন যখন দেবী প্রতিমা পূজিত হন।
বাংলায় দূর্গাপূজাকে ঘিরে যে কাল্পনিক ইতিহাস রয়েছে তা একটি খুবই আকর্ষণীয় গল্প । একবার দৈত্য মহিষাসুর
তার আন্তরিক ধ্যানের মাধ্যমে ভগবান শিবকে প্রসন্ন করেন। ফলস্বরূপ, ভগবান শিব তাকে অমর ত্বে র বরদা ন
করেন। এই ঘটনার পর মহিষাসুর তার প্রকৃ ত সত্ত্বায় ফিরে আসে এবং কোনওরকম দ্বিধা ছাড়াই মানুষকে হত্যা
করতে শুরু করে।
ঈদ
পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার পশ্চিমবঙ্গে, বিভিন্ন আনন্দময় এবং সমৃদ্ধ উৎসবের প্রাচু র্য্য রয়েছে । একটি কথার চলন
আছে, যে বাঙালির ক্যালেন্ডারে ১২ মাসে ১৩ পার্বণ পালিত হয়। এই ধর্ম-নিরপেক্ষ রাজ্যটিতে শুধুমাত্র বাঙালি
উৎসবই পালিত হয় না, এখানে ঈদ্ ও খ্রীষ্টমাসের মতো উৎসবগুলিও চরম উৎসাহের সাথে পালিত হয়।
ঈদ্ হল একটি বৃহত্তম মুসলিম উৎসব যেটি খুবই ধুমধাম এবং জাঁকজমকের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পালিত হয়।
ঈদ-উল-ফিতর, রমজান (যা সূর্যাস্ত পর্যন্ত নামাজ ও উপবাসের কঠোর মাধ্যমের সঙ্গে জড়িত)মাসের পর চরম
ধূমধামের সঙ্গে পালিত হয়। রমজান মাসের শেষ দশটি রাত লৈলূত-উল-কাদার বা “ ক্ষমতার রাত্রি”-র পবিত্র
দিন হিসাবে গণ্য হয়। কল্পনা অনুসারে এই লৈলূত-উল-কাদার-এর সময় পবিত্র কোরাণ স্বর্গ থেকে অবতীর্ণ হন।
তবে এই সুপ্রসন্ন মুহূর্তে র প্রকৃ ত উৎস হল আল্লাহ এবং মহম্মদের মধ্যে এক গোপন ভাববিনিময়।
দীপাবলি
পশ্চিমবঙ্গের গর্ব তার প্রসিদ্ধ বাংলা সংস্কৃ তি ও রন্ধন প্রণালীর মধ্যে আচ্ছন্ন রয়েছে। বাঙালি খুবই আবেগপ্রবণ
ও বন্ধু ত্বপূর্ণ, যারা ধুমধাম এবং জাঁকজমকের সঙ্গে প্রতিটি অনুষ্ঠান পালন করতে ভালবাসে। আলো ও শব্দের
উৎসব দীপাবলি, এই রাজ্যের একটি বিশিষ্ট উৎসব।
পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম উৎসব, দূর্গাপূজা একটি শ্রেষ্ঠ উৎসব- রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে থেকে আগত মানুষের ভিড়
যার সাক্ষী হয়ে থাকে, রাস্তায় ভিড়ের বন্যার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন প্যান্ডেলে মনোরম দৃশ্যের আভাস পাওয়া যায়।
আলোর উৎসব, দিওয়ালী বা দীপাবলী, দূর্গাপূজার পরেই অনুষ্ঠিত হয়।
কালীপূজা
পশ্চিমবঙ্গ, তার সাংস্কৃ তিক উন্মত্ততা এবং উল্লসিত উৎসব পালন সহ একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র । বর্ণময়
বাংলা সংস্কৃ তি এবং শহরের প্রাণবন্ত নাগরিকগণ স্ফূ র্তি র সঙ্গে প্রতিটি আহ্লাদিত উপলক্ষ উদযাপন করতে
ভালবাসে। একটি শুদ্ধ বা ঙা লি উৎসব কালীপূজা , এই রাজ্যে সমৃদ্ধি এবং জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত
হয়।
পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম উৎসব দূর্গাপূজা, গোটা রাজ্যে ধূমধাম ও আড়ম্বর পূর্ণ ভাবে পালিত হয়। তার পাঁচ দিন
পরে, পূর্ণ চন্দ্রের উপস্থিতিতেবা পূর্ণিমার রাতেযখন কৌশিকী চন্দ্রপ্রভা সমগ্র ব্রহ্মান্ডকে আলোড়িত করে, তখন
লক্ষ্মীপূজার দিনে সম্পদের দেবী লক্ষীর পূজা করা হয়।
শরতের পরবর্তী অন্ধকারে এবং অমঙ্গলসূচক নতু ন চন্দ্র বা অমাবস্যার রাতে পশ্চিমবঙ্গে দীপাবলি ও
কালীপূজার পালন করা হয়। দেবী কালীর মূর্তি হল দেবী দুর্গার বিপদজ্জনক রূপ- গাঢ় কৃ ষ্ণ গাত্রবর্ণ, শিলীভূ ত
26
তৃ তীয় চক্ষু সহ এক আতঙ্কজনক রূপ, তাঁর দীর্ঘ মূর্তি শুধুমাত্র সর্প ও মস্তকের খুলির মালা পরিহিত, রক্তাক্ত
আকারে অগ্নিসদৃশ মেজাজে দাঁড়য়ে থাকে।
রাসযাত্রা
বিভিন্ন বাঙালি উৎসবগুলির মধ্যে রাসযাত্রা হল একটি জনপ্রিয় উৎসব। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে এই ধর্মীয় উৎসব
রাসযাত্রা পালিত হয়। এটি সাধারণত প্রতি বছর শীতকালে প্রায় ডিসেম্বর নাগাদ অনুষ্ঠিত হয়।
এই রাসাযাত্রা উৎসবটি রাস যাত্রা নামেও পরিচিত, ভগবান শ্রী কৃ ষ্ণ কে সম্মান এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের
উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে পালন করা হয়। এই উৎসবটি বিশেষভাবে অগণিত অবিশ্বাস্য এবং
বিস্ময়কর কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। এটিতে বৃন্দাবনে, ভগবান শ্রী কৃ ষ্ণে র সর্বদা তাঁর রাখাল
বন্ধু দের সাথে অবস্থানের সময়ের উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়।
রাসযাত্রায়, ভগবান শ্রী কৃ ষ্ণে র পূজা করা হয় । এই রাসযাত্রার সময় পশ্চিমবঙ্গে গোটা রাজ্য জুড়ে মেলা
অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলা খুবই বিখ্যাত ও এখানে প্রচু র মানুষের ভিড় হয়। ভগবান শ্রীকৃ ষ্ণ একটানা সাত দিন
ধরে পূজিত হন। ভগবান শ্রীকৃ ষ্ণের জীবন ও তাঁর বেশ কিছু অলৌকিক কার্যকলাপ এইসব মেলাগুলিতে তু লে
ধরা হয়। এই সময় অনুষ্ঠিত মেলাগুলি রাসা মেলা বা রাস মেলা নামে জনপ্রিয়।
নবান্ন
পশ্চিমবঙ্গে ফসল উৎসব নবান্ন, অনেকটা তামিল উৎসব পোঙ্গলের ন্যায় পালিত হয়। নবান্ন ভারতীয়
উপমহাদেশের পূর্ব অঞ্চলে পালিত হয়। নব কথার অর্থ হল নতু ন এবং অন্ন কথার অর্থ হল শস্য। যখন
‘আমন’ ধান চাষ করা হয় তখন এটি পালিত হয়। এই ফসল কাটার উৎসবগুলি ভারতের এক অবিচ্ছেদ্য
অংশ। প্রাথমিকভাবে ভারত কৃ ষিভিত্তিক দেশ এবং ফসলের ফলন সময়োপযোগী বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভ র
করে। উৎপাদন যাতে সারা বছর ভালো হয় তাই দেবতাকে তৃ প্ত করার লক্ষ্যে এই উৎসব বিশাল জাঁকজমকের
সঙ্গে আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে, নবান্ন প্রাথমিকভাবে একটি হিন্দু উৎসব। শরৎ কালীন ফসল কাটার পর এই উৎসবটি পালিত
হয়। যেমন মহালয়া, এই উৎসবে পূর্বপুরুষদের নতু ন ধানের সঙ্গে প্রসন্ন করার এক গুরুত্বপূর্ণ রীতি ছিল ।
তারপর, এই অর্ঘ্য বিভিন্ন দেব-দেবী, পবিত্র অগ্নিদেব, প্রাণী ও ব্রাহ্মনদের নিবেদন করা হত। চাল এই উৎসবের
এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গৃহাঙ্গন চালের পিটু লি দ্বারা সজ্জিত করা হয় এবং চালের পিঠে প্রতিবেশীদের মধ্যে
বিনিময় করা হয়।
খ্রীষ্টমাস
পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন সাংস্কৃ তিক উন্মত্ততা, মেলা ও উৎসবের প্রাচু র্য্যতা লক্ষ্য করা যায়। এই ধর্ম-নিরপেক্ষ
রাজ্যটি আনন্দ উপভোগের জন্য জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন উৎসবকে উল্লসিত ভাবে পালনের মধ্যে দিয়ে
জীবনের আনন্দ খুঁজে পায়। তাই, খ্রীস্টানদের একটি ঐতিহ্যগত উৎসব, খ্রীষ্টমাসও এখানে জাঁকজমকের সঙ্গে
পালন করা হয়।
কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের শহরতলির একটি বৃহদাকার অংশ খ্রীস্টান জনসাধারণ নিয়ে গঠিত। তাই পশ্চিমবঙ্গে
২৫-শে ডিসেম্বর যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে বার্ষিক উৎসব হিসাবে খ্রীষ্টমাস আড়ম্বর পূর্ণ ভাবে পালিত
হয়। চলতি ভাষায় বাঙালিরা এটিকে বড় দিন হিসাবে উল্লেখ করে। পশ্চিমবঙ্গে এই খ্রীষ্টমাস – খ্রীষ্টমাস গাছ,
উপহার ও প্রচলিত খাবার পুরভরা টার্কি ও পুডিং-এর সঙ্গে জাঁকজমকের সাথে উদযাপিত হয়।
27
গঙ্গা সাগর মেলা
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি তার সাংস্কৃ তিক উন্মত্ততায় ঐশ্বর্যশালী হয়ে রয়েছে, এখানকার পালিত উৎসবগুলি এই
রাজ্যের হয়ে অনেক কথা বলে। সারা বছর ধরে অনুষ্ঠিত এই বর্ণময় উৎসবগুলি উচ্ছ্বাসিত নাগরিকদের
ইচ্ছাপূরণ করে চলে এবং তারা উৎসাহের সঙ্গে সমস্ত অনুষ্ঠানগুলি পালন করে। গঙ্গাসাগর মেলা সম্ভবত
রাজ্যের সর্ববৃহত্তম মেলা।
নামের সুপারিশ অনুযায়ী, গঙ্গাসাগর মেলা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় গঙ্গাসাগর বা বৃহৎ বঙ্গোপসাগরের তীরে
অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসব মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়। এইসময় তীর্থযাত্রী ও ভক্তরা এই সাগর
দ্বীপে ঝাঁকে ঝাঁকে ভিড় করে।
জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসে শীতকালে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ঠাণ্ডা সমুদ্রের হাওয়া ও লবণামৃত এই পবিত্র
জলে একবার ডু ব দিতে মানুষরা এখানে আসে এবং তারা পাপ মুক্ত হয়।
তিন দিন ব্যাপী রাজ্যে এই মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন কোণ থেকে তীর্থযাত্রীরা ঈশ্বরের আশীর্বাদ
পেতেএবং প্রায়শ্চিত্ত করার লক্ষ্যে এই হিম-শীতল সমু্দ্েরর জলে স্নান করার জন্য এখানে আসে।
পৌষ মেলা
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি, তার অতু লনীয় সৌন্দর্য্য, মেলা ও উৎসবগুলির সাংস্কৃ তিক উত্তরাধিকার ও প্রাচীন
ইতিহাসের প্রাচু র্য্যে উল্লিখিত হয়ে আছে। পৌষ মেলাও এক ধরনের মেলা যা শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠিত হয় এবং
এটি শুদ্ধ বাঙালি সংস্কৃ তি নিয়ে রচিত।
শীতকালের গোড়ার দিকে, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূ ম জেলার সুন্দর স্বর্গোদ্যান শান্তিনিকেতনে প্রতি বছর এই পৌষ
মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলা সাম্প্রতিক বছরের বিদায় লগ্নে এবং নতু ন বছরের আগমনীর প্রস্তুতির সময়, এক
নতু ন আশা এবং নতু ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে, পৌষ মাসের ৭থেকে৯ তারিখেরমধ্যেঅনুষ্ঠিত হয়।
শান্তিনিকেতন, প্রখ্যাত নোবেলবিজয়ীরবীন্দ্রনাথ ঠাকু র ও তার অনুপ্রেরণায় সৃষ্ট, সারা বছর ধরে সাংস্কৃ তিক ও
বুদ্ধিবৃত্তিক উৎসবের প্রাচু র্য্যে এই ভূ মি প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে। পৌষ মেলা সম্ভবত শান্তিনিকেতনের মেলা প্রাঙ্গনে
আয়োজিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।
জয়দেব মেলা
বাঙালি সংস্কৃ তির উপবিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ, তার প্রাচীন ইতিহাস ও সাংস্কৃ তিক ঐতিহ্যের জন্য উল্লেখযোগ্য।
এখানকার আবেগ-প্রবণ ও প্রাণবন্ত মানুষ মেলা ও উৎসবের মাধ্যমে তাদের জীবন উপভোগ করতে
ভালবাসে । বিভিন্ন মেলাগুলির মধ্যে, জয়দেব মেলা হল এক ঐতিহ্যগত সাংস্কৃ তিক উৎসব যা ধর্মীয়
উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়।
কথিত আছে, বাঙালির ক্যালেন্ডার বারো মাসে তেরো পার্বণ। উৎসাহী এবং সমৃদ্ধ বাঙালির উপলক্ষ পালনের
জন্য শুধু একটি সামান্য কারণ প্রয়োজন। প্রতি বছর বর্ধমানের কেঁ ন্দুলি মেলা প্রাঙ্গনে এই জয়দেব মেলা
অনুষ্ঠিত হয়।
রবীন্দ্রনাথের মহিমান্বিত শান্তিনিকেতন, যা শীতকালীন উৎসবে আচ্ছাদিত তার থেকে সামান্য দূরে কলকাতার
উপকন্ঠে এই ক্ষু দ্র, চিত্রানুরাগী গ্রামটি অবস্থিত। কবি জয়দেবের ভক্তি-অর্চ নার প্রতিভাকে শ্রদ্ধা জানাতে
প্রতি বছর জানুয়ারীমাসে এই মেলার আয়োজনকরা হয়। এই মেলা লোক ঐতিহ্যের সঙ্গে জীবিত রয়েছে এবং
দেশের সব কোণ থেকে পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীরা ধর্মীয় টানে এই মেলা প্রাঙ্গনে ভিড় করে।
28
সরস্বতী পূজা
সরস্বতী পূজা এমন এক ধরনের উৎসব যা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব বাঙালির বাড়িতে পালন করা হয় । এই দিনে,
জ্ঞান এবং চারুকলার দেবী মহান নিষ্ঠার সঙ্গে পূজিত হন। বাঙালি সম্প্রদায় জ্ঞান এবং চারুকলাকে তাদের
জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচনা করে। সব বয়সের ব্যক্তিই অতু লনীয় উৎসাহের সঙ্গে সরস্বতী
পূজায় অংশগ্রহণ করে।
দেবী সরস্বতী অধিকাংশ বাঙালির ঘরে একটি আবশ্যিক হিসাবে পূজিত হন। এমনকি যারা নাস্তিক তাদের
ঘরেও সরস্বতী পূজা পালন করা হয়। এটির কারণ সম্ভবত দেবী সরস্বতী, জ্ঞান ও চারুকলার সংক্ষিপ্তসার বলে
বিবেচিত হন। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিদ্যা ও সাংস্কৃ তিক মানের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। পশ্চিমবঙ্গে এমন কোনও
শিল্পীই নেই যিনি সরস্বতী পূজা সম্পাদন করেন না। জ্ঞান এবং চারুকলার এই দেবী তার বাম হাতে ‘ বীণা’ সহ
সাদা শাড়িতে ভূ ষিত।
29
শিবরাত্রি
শিবরাত্রি নামক প্রসিদ্ধ উৎসব শ্রদ্ধার সঙ্গে সমস্ত দেশ জুড়ে পালিত হয়। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যে, সম্ভবত ভিন্ন ধর্মের
উপস্থিতির কারণে এতে কিছু ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। পশ্চিমবঙ্গে এই শিবরাত্রি অনেক উদ্যমের সঙ্গে পালিত
হয়।
ভক্তরা এই শিবরা ত্রি তে সারাদিন ব্যা পী উপবাস থাকে । শিবপূজা রাত্রিবেলায় অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে শিব
লিঙ্গকে দুধের দ্বারা স্নান করানো হয়। পশ্চিমবঙ্গে, এক ধরনের উর্বর কাদামাটি দিয়ে নিষ্ঠাভাবে চারটি শিবলিঙ্গ
তৈরির এক ঐতিহ্যগত প্রথা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে, এই ধরনের কাদামাটি পবিত্র গঙ্গা নদীর তীরে দেখতে পাওয়া
যায়। এই চারটি শিবলিঙ্গ রাতভর পূজার সময় এক এক করে অর্পন করা হয়। সম্পূর্ণ রাতকে চারটি সমান
সময়কালে বিভক্ত করা হয়, যাকে প্রহর বলা হয়। প্রথম প্রহরে, শিবলিঙ্গকে শুদ্ধ দুধ দিয়ে স্নান করানো হয়। দ্বিতীয়
প্রহরে এটিকে দই-য়ের দ্বারা মাখিয়ে দেওয়া হয়, তৃ তীয় প্রহরে শিবলিঙ্গকে ঘি দ্বারা স্নান করানো হয় এবং চতু র্থ
প্রহরেএটিকে মধু সহযোগেডু বিয়েদেওয়া হয়। রাতভর পূজা করার পর, ভক্তরা অবশেষে ‘ প্রসাদ’ গ্রহণে র
মাধ্যমে তাদের উপবাস ব্রত ভঙ্গ করে।
পয়লা বৈশাখ
বাঙালির নতু ন বর্ষ, পশ্চিমবঙ্গেপয়লা বৈশাখ নামেও সুপরিচিত। বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিনটি, সমগ্র রাজ্য
জুড়ে হৃদয়গ্রাহী উৎসব এবং অনুষ্ঠানের জন্য সূচিত হয়। বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাসটি হল বৈশাখ মাস
এবং এই মাসের প্রথম দিনটি বা ‘ পয়লা’ দিনটি বাংলার নববর্ষের সূচনাকে ইঙ্গিত করে। সমগ্র বাংলায় এই
অনুষ্ঠান সমস্ত আঞ্চলিক বা ধর্মীয় পার্থক্য নির্বিশেষে একসঙ্গে পালিত হয়। পশ্চিম বাংলার বাইরের বাঙালিদের
মধ্যেও এই খুশির অনুষ্ঠানটিকে পালন করতে দেখা যায়। এটি সাধারণত ইংরাজী মাসের মাঝামাঝি সময়
এপ্রিল মাসে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়।
রথযাত্রা
প্রাণবন্তএবং উচ্ছসিত মানুষের এই ভূ মি পশ্চিমবঙ্গ তার বর্ণময় উৎসবের জন্য সুপ্রসিদ্ধ। একটি কথার প্রচলন
আছে যে, বাংলার ক্যালেন্ডারে বারো মাস তেরো পার্বণ। বাঙালির ঐতিহ্যগত উৎসব হল রথযাত্রা। এই বর্ণময়
অনুষ্ঠানে মানুষ প্রভূ জগন্নাথকে বহন করে রথ টেনে নিয়ে যায়।
এই রথযাত্রা প্রধানত জুন-জুলাই মাসে বর্ষার গোড়ার দিকে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায় অনুষ্ঠিত হয় । এইসময়
সশব্দ গর্জ নের সঙ্গে বিদীর্ণ বাদল মেঘ ভারী বৃষ্টি অনুষঙ্গী করে নীলকাশে বিছিয়ে পড়ে। শ্রীরামপুরের কাছে
হুগলী নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত মাহেশ, তার বিখ্যাত রথযাত্রা পালনের জন্য বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত। সাহিত্যস্রষ্টা
শ্রী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত সাহিত্য গ্রন্থ ‘ রাধারাণী’র পিছনে ১৮৭৫ সালের বিখ্যাত মাহেশ রথযাত্রার এক
বিশাল অনু্প্রেরণা ছিল।
বিষ্ণু পুর উৎসব স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের কাছে একটি খুব জনপ্রিয় উৎসব হিসেবে আবির্ভূ ত হয়েছে। অনেক
শিল্পী তাদের চমৎকার পোড়ামাটির কাজ, ভাস্কর্য এবং খো দা ইয়ে র বিভিন্ন কারুকার্য বিক্রয় ও প্রদর্শনীর
জন্য এই উৎসবে নিয়ে আসে। স্থানীয় হস্তশিল্পীরা তাদের পণ্যের সঙ্গে এই প্রদর্শনীর রঙ্গভূ মিতে ঝাঁকে ঝাঁকে
ভিড় করে। অন্যা ন্য রা জ্যে র হস্তশিল্পী রাও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে। খাঁটি পশমের শাড়ি , ঝিনুকের
কাজ, ছৌ মুখোশ, জামাকাপড়, খাবার ইত্যাদি দোকানে প্রদর্শিত হয়। বিষ্ণু পুরে অবস্থিত তার নিজস্ব সঙ্গীত
30
বিদ্যালয় ‘বিষ্ণু পুর ঘরানা’-র জন্য ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিক্রমায় বিষ্ণু পুরের নাম উল্লেখ রয়েছে। ‘বিষ্ণু পুর
ঘরানা’র কাছের ও দূরের বহু গায়ক ও সঙ্গীতবিদ এবং অন্যান্য কিছু শাস্ত্রীয় শৈলী উৎসবের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করে।
অনেক বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পীদের উপস্থিতির জন্য, এই স্থান শাস্ত্রীয় সঙ্গীত-প্রেমীদের কাছে একটি স্বর্গ হয়ে ওঠে।
এই কারণেই বিষ্ণু পুর উৎসব অন্যান্য সাধারণ মেলা ও উৎসবগুলির চেয়ে আলাদা। এই উৎসব শিল্প, সঙ্গীত,
সংস্কৃ তি, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের এক অতু লনীয় মিশ্রন। আশ্চর্যের কিছুই নেই যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন
আকর্ষণ হিসেবে অগ্রসর হচ্ছে।
রাসমেলা
রাসযাত্রা উৎসব সমারোহের সময়ে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত রাসমেলার সঙ্গে মানুষ জড়িত। পশ্চিমঙ্গের বিভিন্ন
রাজ্য জড়ে প্রচু র মেলা আয়োজিত হয়, এর মধ্যে বেশ কিছু মেলা রাজধানী কলকাতাতেও অনুষ্ঠিত হয় তবে,
এগুলির মধ্যে কোচবিহারের বার্ষিক রাসমেলা সবচেয়ে প্রসিদ্ধ।
জনপ্রিয় বাঙালি উৎসব, রাসযাত্রা উৎসব ভগবান শ্রীকৃ ষ্ণ ও তার চিরন্তন প্রেম শ্রী রাধিকার প্রতি শ্রদ্ধা
জ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত হয়। ভগবান শ্রীকৃ ষ্ণের প্রেম-কাহিনী এবং বৃন্দাবনে তাঁর অতিবাহিত মহিমান্বিত
দিনগুলিকে স্মরণ করে এই রাসযাত্রা উৎসব পালিত হয়। যদিও এই রাসযাত্রা উৎসব সারা রাজ্য জুড়ে পালিত
হয়, তবে উত্তরবঙ্গেই এই উৎসব সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়। বাংলার উত্তর অংশে বহদিন থেকে এটি পালিত হয়।
আগে রাজা-মহারাজাদের সময়ের থেকে আজকের দিনে এই উৎসব মানুষের মধ্যে আরোও বেশি ছড়িয়ে গেছে
তবে, পুরনো তাৎপর্য এবং রাজকীয় ঐতিহ্য এখনও সম্মানের সঙ্গে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বিশাল
রাজবাড়ি বা কোচবিহারের রাজপ্রাসাদগুলিকে রাসযাত্রা উৎসবের সময় সাজিয়ে তোলা হয়। এই রাসমেলার
সময় এই সমস্ত ভবনগুলি রঙ-বেরঙের দোকান, উৎসাহী মানুষের ভিড়, হস্তশিল্প এবং অন্যান্য পণ্যের সমৃদ্ধ
সংগ্রহের মাধ্যমে এক বড় ধরনের মেলার আকার ধারণ করে।
31
cÂg Aa¨vq
¸iæZ¡c~Y© djvd‡ji mvivsk
5.1 M‡elYvi djvdjt
DcwiD³ Av‡jvPbv †k‡l ejv hvq †h, gya¨hy‡M gymwjg kvmbvg‡j evsjvq
wewfbœ ai‡bi mvgvwRK Drme Abyôb D`hvwcZ n‡Zv| Gme Abyôvb kZvãxi ci
kZvãx a‡i AcwiewZ©Z Ae¯’vq AvRI evsjvq cÖPwjZ Av‡Q| gyNj
†mbvevwnbx we‡kl mvgvwRK I mvs¯‹…wZK Abyôv‡bi Av‡qvRb K‡i Zv‡`i
weRq Drme D`hvcb KiZ| G mg¯Í Drme Abyôv‡b wecyjmsL¨K †jvK †hvM`vb
Ki‡Zb| G mgq wewfbœ Drme Abyôv‡b weËkvjxiv cÖPzi A_© e¨q K‡i
†fvRvbyôv‡bi e¨e¯’v Ki‡Zb| AÎšÍ RuvKRgKc~Y© fv‡e gymwjg kvmbvg‡j
mvgvwRK Drme Abyôvb D`hvcb Kiv n‡Zv|
32
5.2 Dcmsnvit
Dchy³ Av‡jvPbv †cÖwÿ‡Z ejv hvq †h, ga¨hy‡Mi evsjv‡Z wn›`y I gymjgvb
Zv‡`i ag©xq Drmemg~n AZ¨šÍ RuvKRg‡Ki mv‡_ cvjb Ki‡Zv| †Mvjvg
†nv‡mb ZveZvqx eY©bv K‡i, cÖ‡Z¨KwU C‡`i w`b DrK…ó †cvkv‡K mw¾Z
n‡Zv| Drm‡ei w`b eÜzevÜeiv GK A‡b¨i RqMvb MvB‡Zb|
33
MÖš’cyÄx
URLt
www.google.com
www.wikipedia.com
www.bn.wikipedia.com
www.shikhabatayon.com
34