You are on page 1of 4

"পোস্টমাস্টার"- লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মূলগ্রন্থ- "গল্পগুচ্ছ।"(সুজিত চক্রবর্তী) 2/6/23

47."প্রথম কাজ আরম্ভ করিয়াই উলাপুর গ্রামে পোস্টমাস্টারকে আসিতে হয়।"


ক)উলাপুর গ্রামের অফিসটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
খ)এই গ্রামের পোস্টমাস্টারের দিন কীভাবে কাটত? (2+3)
উত্তরঃ ক)আলোচ্য অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
উলাপুর গ্রামটি আয়তনে অতি সামান্য। গ্রামের কাছেই একটি নীলকুঠি ছিল। সেই নীলকুঠির সাহেব অনেক
পরিশ্রম করে এই নতু ন পোস্টঅফিসটি স্থাপন করিয়েছিলেন। এই গ্রামের মধ্যেই একটি অন্ধকার আটচালার মধ্যে
পোস্ট অফিসটি ছিল। পোস্ট অফিসের খুব কাছে একটি পানাপুকুর ছিল এবং তার চারপাড় জঙ্গলে ভরা ছিল।

খ)উলাপুর গ্রামের পোস্টমাস্টার ছিলেন কলকাতার ছেলে। আর উলাপুর ছিল একেবারেই গণ্ডগ্রাম। এই গ্রামে
শহরের মতো রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট ও সুযোগ- সুবিধা কিছু ই ছিল না।পোস্ট অফিসের নিকটে
একটি পানাপুকুর ছিল এবং পুকুরটির চারপাড়ে জঙ্গলে ভরা ছিল। তাই লেখক বলেছেন,জলের মাছকে ডাঙায়
তু ললে যেমন অবস্থা হয় তেমনি এই গণ্ডগ্রামে এসে পোস্ট মাস্টারের সেই অবস্থা হয়েছিল। এছাড়া লেখকের
মতে,কলকাতার ছেলেরা ভালো করে মিশতে জানে না। তার উপর অপরিচিত স্থানে গেলে তারা উদ্ধত হয়,
নয়তো অপ্রতিভ হয়ে থাকে। এসব কারণে স্থানীয় লোকেদের সাথে তাঁর মেলামেশা হয়ে উঠত না। এমনকি
কুঠির গোমস্তা প্রভৃ তি যেসব কর্মচারী ছিল তাদেরও সময় বা ফু রসত ছিল না। এছাড়া তারা ভদ্রলোকের সাথে
মিশবার উপযুক্তও ছিল না। সেই কারণে স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে পোস্টমাস্টারের মেলামেশা হয়ে উঠত না।প্রায়ই
তাঁকে একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন কাটাতে হোত।
—ঃসমাপ্তঃ—-

48."সেই মুহূর্তে এসে জননীর পদ অধিকার করিয়া বসিল।"


ক)কে,কার জননীর পদ অধিকার করে বসেছিল?
খ)প্রাসঙ্গিক ঘটনাটি সংক্ষেপে লেখ। (2+3)
উত্তরঃ ক)আলোচ্য অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
অনাথা বালিকা রতন অসুস্থ পোস্টমাস্টারের জননীর পদ অধিকার করে বসেছিল।

খ)এই গল্পের প্রধান চরিত্র পোস্টমাস্টার। তিনি কলকাতার ছেলে। পোস্টমাস্টার উলাপুর গ্রামে একা থাকতেন।
তাঁর বাড়ির কাজকর্ম রতন নামে 12-13 বছরের একটি গ্রাম্যমেয়ে করে দিত। নিতান্ত-নিঃসঙ্গ প্রবাস জীবনে
ঘনবর্ষায় তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় রোগশয্যায় মা-দিদি আত্মীয়- স্বজন বা শাঁখা পরা কোমল হাতের
স্পর্শ সবার পেতে ইচ্ছা করে। অসুস্থ পোস্টমাস্টারের মনেও সেই ইচ্ছা জাগ্রত হয়েছিল।তাঁর মা- দিদি উপস্থিত
না থাকলেও বালিকা রতন সেই মুহূর্তে জননীর পদ অধিকার করে বসেছিল। অর্থাৎ বালিকা রতন যেন আর
বালিকা রইল না।সে বৈদ্য ডেকে এনে,যথাসময়ে ওষুধ খাইয়ে, সারারাত মাথার শিয়রে জেগে রইল। এমনকি
নিজে পথ্য রান্না করে দিল। বারবার জিজ্ঞাসা করতে লাগলো, 'হ্যাঁগো দাদাবাবু, একটু খানি ভালো বোধ হচ্ছে
কি?' এভাবে রতনের অক্লান্ত সেবার কারণে পোস্টমাস্টার সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।
—ঃসমাপ্তঃ–

48."তাহার ক্ষু দ্র হৃদয়পটে বালিকা তাঁহাদের কাল্পনিক মূর্তি ও চিত্রিত করিয়া লইয়াছিল।"
ক)বালিকাটি কে?কাদের কাল্পনিক মূর্তি র কথা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে?
খ)উক্তিটির মাধ্যমে বক্তার বক্তব্য বিষয় বুঝিয়ে লেখ।(2+3)
উত্তরঃ ক)আলোচ্য অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
বালিকাটি হল অনাথা বারো-তেরো বছরের রতন। এখানে পোস্টমাস্টারের মা-দিদি-ছোট ভাইয়ের কাল্পনিক
মূর্তি র কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

খ)পোস্টমাস্টার কলকাতা শহরের ছেলে। এছাড়া লেখকের মতে, কলকাতার ছেলেরা ভালো করে মিশতে জানে
না।তার উপর অপরিচিত স্থানে গেলে তারা উদ্ধত হয়, নয়তো অপ্রতিভ হয়ে থাকে। উলাপুর নামক প্রত্যন্ত গ্রামে
এসে তাঁর ভালো লাগত না।কারো সাথে মেলামেশাও করতে পারতেন না। এবং মেলামেশার মতো উপযুক্ত
মানুষও পেতেন না।তাই একাকীত্বের হাত থেকে বাঁচার জন্য তিনি এক- একদিন সন্ধ্যাবেলায় সেই বৃহৎ
আটচালার কোণে পোস্টঅফিসের কাঠের চৌকির উপর বসে রতনের কাছে নিজের ঘরের কথা বলতেন। তিনি
রতনের কাছে ছোটোভাই, মা এবং দিদির কথা বলতেন।প্রবাসে একলা ঘরে বসে যাদের জন্য তাঁর হৃদয় ব্যথিত
হয়ে উঠতো তাদের কথা বলতেন। এছাড়া যেসব কথা সবসময় তাঁর মনে উদয় হতো সেসব কথাও তিনি
বলতেন।অথচ নীল- কুঠির গোমস্তাদের কাছে সেসব কথা কোনমতেই বলতে পারতেন না। কিন্তু সেসব কথা
একটি অশিক্ষিতা ক্ষু দ্র বালিকার কাছে অবলীলায় তিনি বলে যেতেন। কিছু মাত্র তাঁর অসঙ্গত মনে হত না।
দাদাবাবুর মুখ থেকে তাঁর বাড়ির লোকেদের কথা শোনার ফলে রতনের ক্ষু দ্র হৃদয়পটে তাঁদের কাল্পনিক মূর্তি ও
যেন চিত্রিত হয়ে গিয়েছিল। উক্তিটির মধ্য দিয়ে দাদাবাবুর প্রতি অনাথা রতনের গভীর ভালোবাসা যেমন
প্রকাশ পেয়েছে তেমনি তাঁর মা-দিদি-ভাই কেও নিকট আত্মীয়রূপে তার ক্ষু দ্র হৃদয়পটে স্থান করে
নিয়েছে।—ঃসমাপ্তঃ—

49."সে সেই পোস্টঅফিস গৃহের চারদিকে কেবল অশ্রুজলে ভাসাইয়া ঘুরিয়া-ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল।
ক)এখানে 'সে' বলতে কাকে বলা হয়েছে? কোন পোস্টঅফিসের কথা বলা হয়েছে? খ)প্রাসঙ্গিক ঘটনাটির
সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। (2+3)
উত্তরঃ ক)আলোচ্য অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
'সে' বলতে অনাথা ১২-১৩ বছরের বালিকা রতনের কথা বলা হয়েছে।
'উলাপুর'গ্রামের পোস্টঅফিসের কথা বলা হয়েছে।

খ)বালিকা রতনের অক্লান্ত সেবায় পোস্টমাস্টার সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। এরপর বদলির সুপারিশ নামঞ্জুর হলে
তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে কলকাতায় ফিরে যাবার কথা রতনকে বলেন।রতন একথা শুনে দাদাবাবুর
সাথে যাবার জন্য করুন আবেদন করে। কিন্তু 'সে কী করে হবে।'- এ কথা বলে দাদাবাবু নিজেই কলকাতা
যাবার জন্য নৌকায় উঠে বসেন। নৌকাও ছেড়ে দেয়।অনাথিনী বালিকা রতনের কথা ভেবে দাদাবাবু মনে-মনে
খুব কষ্ট পেতে থাকেন। একবার ভাবলেন, ফিরে গিয়ে সেই অনাথিনী রতনকে সাথে করে নিয়ে আসি। পরক্ষণেই
তাঁর মনে হলো জীবনে এমন কত বিচ্ছেদ,কত মৃত্যু আছে,ফিরে গিয়ে লাভ কী? পৃথিবীতে কে কাহার?
ধীরে-ধীরে পোস্টমাস্টার শান্ত হলেন। কিন্তু রতন শান্ত হতে পারল না। সে দাদাবাবুর ফিরে আসার আশায়
পোস্টঅফিসের চারপাশে চোখের জল ফেলতে-ফেলতে ঘুরে বেড়াতে লাগল। আর এ প্রসঙ্গেই বালিকা রতনের
মানসিকতাকে লক্ষ্য করে গল্পকার উক্তি উক্তিটি বলেছিলেন। —----ঃসমাপ্তঃ—---

"50."এইরূপ কথা প্রসঙ্গে মাঝে মাঝে বেশি রাত হইয়া যাইত।"


ক)আলোচ্য উক্তিটি কার লেখা?কোন্ রচনার অন্তর্গত?
খ)কে,কার সাথে এরূপ কথা বলত?
গ)প্রাসঙ্গিক ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। (1+2+2)
উত্তরঃ ক)আলোচ্য উক্তিটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'পোস্টমাস্টার' রচনার অন্তর্গত।
খ)পোস্টমাস্টার বালিকা রতনের সাথে এরূপ কথা বলতো।

গ)অন্ধকার দুয়ারে একলা বসে গাছের কম্পন দেখলেও কবি হৃদয়ে ঈষৎ হৃদকম্প উপস্থিত হোত। আর ঠিক
তখনই পোস্টমাস্টার রতনকে ডেকে তামাক সেজে দিতে বলতেন। রতন দু-গাল ফু লিয়ে কলিকায় ফুঁ দিতে-দিতে
ঘরে ঢু কলেই তিনি তার মা ও পরিবারের কথা মনে পড়ে কিনা জানতে চাইতেন। রতন বলত, তার মায়ের চেয়ে
বাপের কথা অল্প-অল্প মনে আছে। সারাদিন পরিশ্রম করে বাবা সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে আসত। এছাড়া তার
ছোট ভাইয়ের কথাও মনে পড়ে। অনেক আগে বর্ষার দিনে তারা দুজনে একটি ডোবার ধারে গাছের ভাঙা
ডালকে ছিপ মনে করে মিছিমিছি মাছধরা খেলা খেলত। এভাবে পোস্টমাস্টারের পায়ের কাছে বসে রতন তার
মা-বাবা ও ভাইয়ের কথা বলত। এরূপ উভয়ের কথা প্রসঙ্গে মাঝে-মাঝে বেশি রাত হয়ে যেত।
–ঃসমাপ্তঃ–
51."অবশেষে সপ্তাহখানেক পরে একদিন সন্ধ্যাবেলায় ডাক পড়িল।"
ক)কে,কাকে কোথায় ডেকেছিল?
খ)উক্তিটি তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর। (2+3)
উত্তরঃ ক) অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া
হয়েছে।পোস্টমাস্টার অনাথা বালিকা রতনকে ঘরের মধ্যে ডেকেছিল।

খ)পোস্টমাস্টার তথা দাদাবাবু খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। বালিকা রতন জননীর পদ অধিকার করে
পোস্টমাস্টারের সেবা করতে থাকে। সে বৈদ্য ডেকে,যথাসময়ে ওষুধ খাইয়ে,সারারাত রান্না করে জিজ্ঞাসা
করত, হ্যাঁগো দাদাবাবু একটু খানি ভালো বোধ হচ্ছে কি? পোস্টমাস্টার সুস্থ হয়ে উঠেই স্থানীয় অস্বাস্থ্যকর
পরিবেশের উল্লেখ করে কলকাতায় কর্তৃ পক্ষের কাছে বদলির দরখাস্ত করেন। এদিকে রতন রোগসেবা থেকে
নিষ্কৃতি পেয়ে দরজার বাইরে আবার সস্থান অধিকার করে রইল। কিন্তু আগের মতো দাদাবাবু আর তাকে
ডাকেন না। মাঝে-মাঝে এসে উঁকি মেরে দেখে দাদাবাবু অত্যন্ত অন্যমনস্কভাবে চৌকিতে বসে আছেন এবং
অধীর চিত্তে যেন তার দরখাস্তের উত্তর প্রতীক্ষা করছেন। হঠাৎ ডাক পড়লে যুক্তাক্ষর গোলমাল না হয়ে যায়
সেজন্য সে দরজার বাইরে বসে সহস্রবার করে তার পুরানো পড়া পড়ছিল। এভাবে যেতে-যেতে সপ্তাহখানেক
পরে একদিন সন্ধ্যাবেলায় রতনের ডাক পড়েছিল।
—ঃসমাপ্তঃ—-
52."দাদাবাবু,আমাকে তোমাদের বাড়ি নিয়ে যাবে?" ক)কে,কাকে, কখন কথা বলেছিল?
খ)বক্তার এ ধরনের উক্তির কারণ কী ছিল? (2+3)
উত্তরঃ ক)আলোচ্য অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
অনাথা বালিকা রতন পোস্টমাস্টারকে একথা বলেছিল।

পোস্টমাস্টার যখন বললেন, বদলির দরখাস্ত নামঞ্জুর হওয়ায় তিনি চাকরিতে জবাব দিয়ে কালই বাড়ি চলে
যাচ্ছেন তখন বালিকা রতন একথা বলেছিল।

খ)এই গল্পের প্রধান চরিত্র হলো পোস্টমাস্টার। তিনি কলকাতা শহরের ছেলে। উলাপুর নামক প্রত্যন্ত গ্রামের
পোস্টঅফিসে তিনি পোস্টমাস্টারের কাজ করতে এসেছিলেন। প্রবাস জীবনে থাকাকালীন ঘনবর্ষায় একদিন
তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী12-13বছরের গ্রাম্য বালিকা রতন বাড়ির সমস্ত কাজকর্ম
করে দিত। আত্মীয়-স্বজন কেউ না থাকায় রতন যেন জননীর পদ অধিকার করে বসেছিল। অর্থাৎ বালিকা
রতন আর বালিকা ছিল না।সে বৈদ্য ডেকে এনে, যথাসময়ে ওষুধ খাইয়ে,সারারাত মাথার শিয়রে জেগে
দাদাবাবুর সেবা-শুশ্রূষা করেছিল। এমনকি নিজে রান্না করে দিত এবং বারবার জিজ্ঞাসা করতহ্যাঁগো দাদাবাবু,
একটু খানি ভালোবোধ হচ্ছে কী? রতনের অক্লান্ত সেবার কারণে পোস্টমাস্টার সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। এরপর
উপর মহলে বদলির আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় তিনি চাকুরীতে ইস্তফা দিয়ে কলকাতায় ফিরে যাওয়ার কথা
রতনকে বলেন। একথা শুনে রতনও দাদাবাবুর সাথে কলকাতায় যাবার জন্য করুণ আবেদন জানায়। তার
মনে হয়েছিল, দাদাবাবু তাকে আত্মীয়রূপে গ্রহণ করবেন। কিন্তু দাদাবাবু বললেন, 'সে কী করে হবে?' রতনের
মনে হল তার পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে গেল। আর তখনই সে বুঝলো দাদাবাবু তাকে কাজের লোক
ছাড়া অন্য কিছু মনে করেন না।আসলে রতন জানত না তাদের সামাজিক ব্যবধান বিস্তর।তাই পোস্টমাস্টার
কোনো ভাবেই তাকে সাথে করে কলকাতায় নিয়ে যেতে পারেন না।
–ঃসমাপ্তঃ–
53.গভীর নিস্তব্ধ মধ্যাহ্নে দীর্ঘ ছু টির দিনে এইরূপ একটা ভাবের উদয় হইয়া থাকে।"
ক)কার মনে কখন এরূপ ভাবের উদয় হয়?
খ)উক্তিটির মাধ্যমে বক্তা কী বোঝাতে চেয়েছেন? (2+3)
উত্তরঃ ক) আলোচ্য অংশটি লেখক তথা গল্পকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পোস্টমাস্টার' গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
গল্পের প্রধান চরিত্র পোস্টমাস্টারের মনে এরূপ ভাবের উদয় হোত। সেদিন তাঁর হাতে কোন কাজ না থাকায়
তিনি বৃষ্টিধৌত মসৃণ চিক্কণ তরুপল্লবের হিল্লোল এবং পরাভূ ত বর্ষার ভগ্নাবশিষ্ট রৌদ্রশুভ্র স্তূ পাকার মেঘরাশি
দেখছিলেন। সেদিন তাঁর মনে গভীর নিস্তব্ধ মধ্যাহ্নে দীর্ঘ ছু টির দিনে এরূপ একটা ভাবে উদয় হতো।

খ)একদিন বর্ষাকালের মেঘমুক্ত দ্বিপ্রহরে ঈষৎ তপ্ত সুকোমল বাতাস দিচ্ছিল। রোদে ভেজা ঘাস ও গাছপালা
থেকে এক প্রকার গন্ধ ভেসে আসছিল। তাঁর মনে হচ্ছিল যেন ক্লান্ত ধরণীর উষ্ণ নিঃশ্বাস গায়ের উপরে লাগছে।
সেই সাথে কোথাকার এক নাছোড়বান্দা পাখি তার একটানা সুরের নালিশ সারা দুপুরবেলা প্রকৃ তির দরবারে খুব
করুণস্বরে বারবার যেন আবৃত্তি করছিল। সেদিন হাতে কোন কাজ না থাকায় তিনি বৃষ্টিতে ধোয়া মসৃণ চিকন
গাছের পাতার হিল্লোল এবং পরাভূ ত বর্ষার ভগ্নাবশিষ্ট রৌদ্রশুভ্র স্তূ পাকার মেঘরাশি দেখছিলেন।সেই সাথে
ভাবছিলেন এ সময় যদি হৃদয়ের সাথে একান্ত সংলগ্ন একটি স্নেহপুত্তলি খুব কাছের লোক থাকত। তাঁর মনে হতে
লাগল, ওই পাখিও বারবার যেন একই কথায় বলছে। আর জনহীন তরুচ্ছায়া নিমগ্ন মধ্যাহ্নের পল্লবমর্মরের
অর্থও অনেকটা একই রূপ। এসব কেহ বিশ্বাস করে না এবং জানতেও চায় না। আর ঠিক সেই সময়ই
পোস্টমাস্টারের মনে গভীর নিস্তব্ধ মধ্যাহ্নে দীর্ঘ ছু টির দিনে এরূপ একটা ভাবের উদয় হত।
—---ঃসমাপ্তঃ—-- (শ্রী সুজিত চক্রবর্তী।) 02/06/23.

You might also like