You are on page 1of 18

বাংলা ভাষার উদ্ভব

রাভিনা নূর নুপুর


-প্রতিবেদক
স্বাগত সম্ভাষন
আলোচনার বিষয়

1. বাংলা ভাষার জন্মকথা ও নামকরণ

2. বাংলা ভাষার বিবর্ত নের ক্রমবিকাশ

3. বাংলা ভাষা বিবর্ত নের রুপরেখা

4. বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন যুগ-বিভাগ

5. কালক্রমে বাংলা ভাষার নিদর্শন


০১.
বাংলা ভাষার জন্মকথা ও
নামকরণ
 আনুমানিক ৫০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি  সময়ে মূল ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
এশিয়া ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে পড়ে। বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত ভাষার সংমিশ্রণে ও বিবর্ত নে বর্ত মান
পৃথিবীর ভাষাগুলোর উদ্ভব ঘটে। ইন্দো-ইউরোপীয় মূল ভাষা হতে বাংলা ভাষার মূলভাষা গোষ্ঠীর জন্ম।
ইন্দো-ইউরোপীয় মূল ভাষা দুভাগে বিভক্ত ছিল। যথা-কেস্তম ও শতম। শতম শাখা হতে আর্য ভষার
উদ্ভব। খ্রিস্ট জন্মের প্রায় ২০০ বছর পূর্বে আর্যদের ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন ঘটে। তাদের রে ‘ বেদ
’ ও ‘ ব্রাহ্মণ সংহিতার ’ ভাষাই ছিল আর্য ভারতীয়দের প্রাচীনতম সাহিত্যিক ভাষা। কালের পরিক্রমায়
নানাভাবে বিবর্ত নে মাধ্যমে এ ভাষা বাংলাভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে। বৃহতম বঙ্গ অঞ্চলের অধিবাসীদের
দ্বারা ব্যবহৃত বলে এই ভাষার নামকরণ হয়েছে বাংলা ভাষা।
০২.
বাংলা ভাষার বিবর্ত নের
ক্রমবিকাশ
 মানুষের নিজের ভাষা তার কাছে মেঘগলা বৃষ্টির জলের মতো। বাঙলা ভাষা ছাড়া থেমে যায় বাঙালি র
জীবন।ব্রাহ্মী লিপি থেকে বালা লিপি বা অক্ষর সৃষ্টি হয়েছিল বলে জানা যায়। কোন ভাষাই শুধু নিজের
ভাষা দিয়ে চলে না। দরকার হয় অন্য ভাষার শব্দ। বাংলা ভাষায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে প্রবেশ করেছে
আরবী,ফারসি  ইংরেজি তু র্কি ভাষা।আমরা যে ভাষায় কথা বলি অনেক আগে  তা আজকের মত ছিল
না। অনেক আগে যখন বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছিল এ ভাষা ছিল অধোঘটিত। হটাৎ বাঙলা ভাষার সৃষ্টি
হয়নি। ভাষা বদলায় মানুষের কন্ঠে।অনেকের মতে আমাদের পুরনো ভাষাটির নাম ছিল প্রাচীন ভারতীয়
আর্য ভাষা। এটা পরিবর্ত ন হয়ে রুপ নেয় পালি।তা থেকে প্রাকৃ ত। শেষে আমাদের বাঙলা ভাষা।
০৩.
বাংলা ভাষা বিবর্ত নের রুপরেখা
০৪.
বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন যুগ-
বিভাগ
 বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস হাজার বছর বা তার কিছু অধিক সময়ের ইতিহাস। বাংলা সাহিত্যের এই হাজার
বছরের অধিক কালের ইতিহাস কে মনে রাখার সুবিধার্থে বা কালের প্রবাহ কে স্বীকার করে নিয়ে কয়েকটি
যুগ বা প্রর্যায়ে ভাগ করে নেওয়া যায়।

সাহিত্যকর্মের বৈচিত্র্যে ও বৈশিষ্ট্যে নির্দি ষ্ট যুগের চিহ্ন ও সাহিত্যের বিবর্ত নের ধারাটি বিশ্লেষণ করেই সাহিত্যের
ইতিহাসে যুগবিভাগ করা হয়ে থাকে। বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাগ নির্ধারিত হয়েছে প্রাপ্ত নিদর্শনের ভিত্তিতে।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস কে প্রধানতঃ তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে।
 ১। প্রাচীন যুগ বা আদিযুগ (৭৫০-১২০০) ,
 ২।মধ্যযুগ (১২০১-১৮০০) ও 
 ৩।আধুনিক যুগ (১৮০১- বর্ত মান সময় পর্যন্ত) ।
 প্রাচীন যুগ :

   ভূ দেব চৌধুরীর মতে মতে বাংলা সাহিত্যের আদিযুগ বা প্রাচীন যুগের সময়সীমা ৭৫০ থেকে ১২০০ পর্যন্ত। ড.
সুনীতি কু মার চট্টোপাধ্যায়ের মতে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ ৯৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। আদি মধ্য যুগের
প্রাচীনতম ও একমাত্র গ্রন্থ হল "চর্যাপদ"।
 মধ্য যুগ :

 বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে মধ্যযুগের বিস্তার ১২০১ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে
মধ্যযুগের শুরুতে ১২০১ থেকে -১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে কোন কোন গবেষক বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার
যুগ বলে অভিহিত করে থাকেন। কারন এই সময়ের বাংলা সাহিত্যের তেমন কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না। তাই
১৩৫১ থেকে ১৮০০ পর্যন্ত সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়ে থাকে
 সাহিত্যে নতু ন যুগের সূচনা সাধারণত সুনির্দি ষ্ট কোনো সন-তারিখ মেনে হয় না, কিন্তু বাংলা সাহিত্যে
আধুনিক যুগের শুরু প্রায় সুনিশ্চিতভাবেই ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ধরা হয়। এ যুগ নানা দিক থেকে বাংলা
সাহিত্যের বিকাশ ও সমৃদ্ধিতে সাহায্য করেছিল।
এই যুগেই সৃষ্টি হয়েছিল বাংলা সাহিত্যের প্রধান প্রধাণ শাখা গুলি যেমন -- প্রবন্ধ, নাটক, প্রহসন,
উপন্যাস, ছোটগল্প প্রভৃ তি। অধুনিক যুগেই বিশ্বের দরবারে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য হয়ে উঠেছে  সুবিখ্যাত
ও সমাদৃত।
০৫.
কালক্রমে বাংলা ভাষার নিদর্শন
 প্রাচীন বাংলা ভাষার আদি  মধ্যযুগের বাংলা ভাষার
নিদর্শন চর্যাপদ বা নিদর্শন বন্ধু চণ্ডীদাস,
বৌদ্ধগান ও দোহা রামায়ণ, অন্নদামঙ্গল
ইত্যাদি
শেষ কথা

হাজার বছরের কাল-পরিক্রমায় সুললিত বাংলা ভাষায় সৃষ্ট সাহিত্য বিশ্ব সাহিত্যের পরবারে যোগ্য
আসনলাভে সমর্থ হয়েছে। সাহিত্যের উৎ কর্ষ এবং ভাষার মান বিচারে বাংলা ভাষা ও বাংলা সাহিত্য বিশ্বে
সপ্তম আ অধিকার করেছে। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের যেটু কু গৌরব বিশ্বে প্রতিষ্ঠালাভ করেছে তা শুধু
বাংলা সাহিত্যের উৎ কর্ষের খাতিরে। আজকের বাংলা সাহিত্য তার সকল শাখায় নাটকে, কাব্যে, উপন্যাসে,
প্রবন্ধে উজ্জ্বল গরিমার স্বাক্ষর রেখেছে। বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে কবি নজরুল, বঙ্কিম-শরৎ , মধুসূধন-
গিরিশ ও প্রমথ চৌধুরী-শহীদুল্লাহর অবদান চিরনন্দিত হয়ে বিরাজমান। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের বিস্ময়কর
উৎ কর্ষ বিশ্বের সাহিত্য রস-রসিকদের যথার্থভাবেই বিস্ময়াপন্ন করে তু লেছে। আমরা আমাদের সাহিত্যের
জন্যে গর্বিত।
তথ্যসূত্র

 এ জেড এম আবদুল আলী, সচিত্র বাংলাদেশ, ১-১৫ ফেব্রুয়ারি,


 ২০০৮ ।
 ড. হুমায়ূন আজাদ, কতো নদী সরোবর বা বাংলা ভাষার
 জীবনী ৷
 বাংলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা ভাষার
 ব্যাকরণ, প্রথম খণ্ড, ২০১১, ঢাকা ।
 বাংলাপিডিয়া (খণ্ড৬, ভু ক্তি: বাংলা ভাষা, পবিত্র সরকার এবং
 মহাম্মদ দানীউল হক), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, প্রথম
 প্রকাশ ২০০৩ ৷
ধন্যবাদ

 রাভিনা নূর নুপুর


 পরিচিতি নং : ২১২১৪১৯৬৩০

You might also like