Professional Documents
Culture Documents
151120
151120
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানোর প্রধান একটি শর্ত হলো বাসার বাইরে
সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। কারণ, এটি একদিকে নিজের ও একই সঙ্গে অন্যদের সুরক্ষার
জন্য অপরিহার্য। কিন্তু আমরা অনেকেই এই নিয়ম মানতে চাই না। মনে করি, নিজের যখন
করোনা নেই, আশপাশের লোকজনের যখন খুব বেশি করোনা নেই, তাহলে কেন কষ্ট করে
মাস্ক পরব? আসলে বিচ্ছিন্নভাবে দু–একজন মাস্ক পরলে এর সুফল পাওয়া যাবে না।
করোনার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে হলে বাইরে চলাফেরার সময় সবার মুখে মাস্ক থাকতে হবে। না
হলে তেমন লাভ হবে না। আজকাল যে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়ছে, তার একটি কারণ
হতে পারে মাস্কের ব্যাপারে গণসচেতনতার অভাব।
আমি যদি এন ৯৫ মাস্ক পরি এবং একবারের বেশি ব্যবহার না করি, তাহলে আমি নিজে
হয়তো প্রায় পূর্ণ সুরক্ষা পাব। কারণ, এ ধরনের মাস্কে ভাইরাস অকার্যকর করার বিশেষ
ব্যবস্থা আছে। সে জন্যই চিকিৎসক–নার্সদের এ ধরনের মাস্ক পরতে হয়। এই মাস্ক খুব দামি
এবং সাধারণের জন্য দোকানে সরবরাহ কম। বিকল্প হিসেবে আমরা দুই–তিন পরত
কাপড়ের মাস্ক পরতে পারি। এই মাস্ক ভাইরাস পরিবাহী ড্রপলেট ও অ্যারোসল আমাদের
নাকে–মুখে ঢুকতে অনেকাংশে বাধা দেয়। উপরন্তু কাপড়ের মাস্ক পরা থাকলে আমরা যখন
জোরে কথা বলি, অট্টহাসি দিই বা হাঁচি–কাশি দিই, তখন আমাদের মুখ থেকে বের হওয়া
ড্রপলেটগুলো বেশি দূর ছড়াতে পারে না, মাস্ক বাধা দেয়। ফলে অন্যদের সংক্রমণের আশঙ্কা
অনেক কমে যায়। অর্থাৎ কাপড়ের মাস্ক নিজেকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি অন্যদের সুরক্ষা
নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
আমরা অনেকেই হয়তো জানি না নিজের করোনা আছে কি না, হয়তো লক্ষণ নেই
(অ্যাসিম্পটোমেটিক)। এসব ক্ষেত্রে মাস্ক না পরলে অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এভাবেই করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এখন কেউ বলতে পারেন, কাপড়ের মাস্ক যখন আমাকে এন ৯৫ মাস্কের মতো নিশ্চিত সুরক্ষা
দিতে পারছে না, তাহলে সেটা পরে লাভ কী? এর উত্তর হলো একই যুক্তিতে যদি অন্যরাও
মাস্ক না পরেন, তাহলে অন্যদের থেকে আপনার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাবে।
তাই নিজে বাইরে চলাফেরায় সব সময় মাস্ক পরুন এবং অন্যদের মাস্ক পরতে বলুন। এক
সঙ্গে সবাই মাস্ক–কালচারে অভ্যস্ত না হলে কেউ রক্ষা পাব না। এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ
থেকে বাঁচতে হলে সম্মিলিত সহযোগিতা ছাড়া উপায় নেই। একা একা সুরক্ষা পাওয়ার
সুযোগ সীমিত। বাঁচতে হলে অন্তত ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত সম্মিলিতভাবে সবাইকে ঘরের
বাইরে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
এখন বিশেষজ্ঞরা বলেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ খুব বেশি ছড়িয়ে পড়ার আগেই
হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে রোগীর জটিল সংক্রমণের আশঙ্কা খুব কম।