You are on page 1of 5

Kahf

দয়া করে কেউ কি আমাকে সূরা কাহাফ এর ৮৬নং এবং ৯০নং আয়াত দুটি একটু বুঝিয়ে দিবেন! অনেক দোটানায় পড়ে
হাবুডুবু খাচ্ছি।দয়া করে সাহায্য করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।?

কি বলেন!

এটা আমরা ফেভারেট অংশ পুরো সুরার!

আল্লাহ্‌তায়ালা সূর্যডোবার কথা না বললে আমরা অন্ধ থাকতামঃ

কারণ,এই সূরার মাধ্যমেই আমরা ইয়া'জুজ-মা'জুজ এর অবস্থান ধরে নিতে পারি। এবং তাদের চিহ্নিত করতে এবং
তাদের বর্তমান অবস্থা জানতে দেরি করতে পারি না।

এর জন্য তাই আগে আলহামদুলিল্লাহ্‌বলেন।

এবার আসি আমার উত্তরেঃ

সত্যি বলতে কুরআনের ভাষা আসলে বহুমাত্রিক,গুরুগম্ভীর আজব এবং শক্তিশালী। পড়লেই বোঝা যায় এটা সাধারণ
মানুষের রচনা না।

কুরআনের সূরা কাহাফে উদায়াচল এবং অস্তাচল সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এই উদায়াচল এবং অস্তাচল

 একই সাথে স্থান,কাল এবং দিক বোঝাতে পারে।

কুরআন (১৮:৮৬)

চলতে চলতে যখন সে সূর্যাস্তের স্থানে পৌঁছল, তখন সে সূর্যকে অস্বচ্ছ জলাশয়ে ডুবতে দেখল আর সেখানে একটি জাতির
লোকেদের সাক্ষাৎ পেল। আমি বললাম, ‘হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার কিংবা তাদের সঙ্গে (সদয়)
ব্যবহারও করতে পার।’

——————তাইসিরুল কুরআন(অনুবাদ)

এর কয়েক আয়াত পরেই দেখব আবার সূর্য ওঠার স্থানের কথা বলা হয়েছে।

আমরা যদি আরবি ভাষার সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ডিকশনারী 'লিসানাল আরাব' বা ইংরেজি "An Arabic English Lexicon"
দেখি তবে,

আমরা দেখব ১৮:৮৬ এ পৌঁছানোর জন্য যেই আরবি শব্দ 'বালাগা" ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আসলে কোন স্থান কিংবা
কাল/সময়-কে চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে

ভালো মত দেখেন, সূর্য ডোবার কথা বলার আগে "বালাগা" শব্দটি আছে তাই

এটি স্থান কিংবা সময় কিংবা যেকোন ঘটনা বা অবস্থার কথা নির্দেশ করছে।
ব্যাখ্যাটা সহজ করতে আমরা দুটি উদাহরণ দিতে পারি।

[১] আমি কলেজ থেকে বাসায় পৌঁছালাম।

অথবা, [২] আমি কলেজ থেকে সন্ধ্যা বেলা বাসায় পৌঁছালাম।

এই একই কথা Muhammad Mohar Ali'র "A word for word Meaning of the Quran" বইটিতেও দেয়া
আছে, এখানে,মাঘরিব শব্দের পূর্বে "বালাগা" ব্যবহার হওয়ায় এটা সময় কিংবা স্থান,পশ্চিম বোঝাচ্ছে।

অনুরূপ, সূর্য ঊঠার স্থান কিংবা কাল একই সাথে বোঝাতে পারে।

অর্থাৎ, একই সাথে পূর্ব দিক এবং ভোর বেলা বোঝাতে পারে।

এবার আসি ডোবার অংশে।

সে সূর্যকে অস্বচ্ছ জলাশয়ে ডুবতে দেখল………" ——[তাইসিরুল অনুবাদ]

জুলকারনাইন [অনেকে কিং সাইরাস বলেন যিনি কিনা ইহুদিদের অনেক বছর শাসন করেছিলেন] সূর্যকে পানির নিচে
অস্তমিত হতে দেখলেন।

এখানে যেই শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটা হল Wajadaha

যার অর্থ,

 He experienced it [অভিজ্ঞতা লাভ করল]


 Discovered it [আবিষ্কার করল]
 Perceived it [উপলব্ধি করা]
 Saw it [দেখল]
অর্থাৎ,জুলকারনাইন এটা মনে করলেন বা Perceive করলেন।

এবার পঙ্কিল জলাশয় কোনটি?

এটা Black SEA এটাই একমাত্র যৌক্তিক উত্তর হতে পারে।কারণ, ব্ল্যাক সি নামটি এসেছে সে খানের পানির আপাত
রঙ থেকে

এবার ৮৬-৯০ আয়াতের ব্যাখ্যা থেকে আমরা ইয়া'জুজ-মা'জুজ এর অবস্থান নির্ণয় করব

প্রথমে, পশ্চিম (সেখানে গিয়ে সূর্য ডুবতে দেখলেন) এটা অবশ্যই ব্ল্যাক সি।

এরপর, পূর্ব দিকে গেলেন যেখানে তিনি কিছু মানুষকে আদিম উপায়ে বসবাস করতে দেখলেন কারণ তারা আল্লাহ্‌কর্তৃক
দেয়া শেল্টার ছাড়া কোন শেল্টার পায় নি।

এরপর তিনি একটি পাহাড়ি অঞ্চলে গেলেন।

তাহলে এই তিন অংশ থেকে এর অবস্থান আমরা নির্ণয় করি, চলুনঃ


এটা অবশ্যই "দারিয়াল গর্জ"

শেষ করতে চাই কুরআনের তিনটি আয়াত দিয়েঃ

আর আমি যে জনপদকে ধ্বংস করেছি তার সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে, তার অধিবাসীবৃন্দ আর ফিরে আসবে না।

অবশেষে যখন ইয়া’জূজ ও মা’জূজকে মুক্তি দেয়া হবে, আর তারা প্রতিটি উঁচু ভূমি হতে ছুটে আসবে।

আর অমোঘ প্রতিশ্রুত সময় নিকটবর্তী হবে, আকস্মাৎ কাফেরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে, তারা বলবে, ‘হায়, দুর্ভোগ
আমাদের! আমরা তো ছিলাম এ বিষয়ে উদাসীন; বরং আমরা তো ছিলাম সীমালঙ্ঘনকারী।

——- কুরআন (১৮:৯৫-৯৭)

 এবার কল্পনা করুন এমন এক জাতি (অবশ্যই সে জাতি মানুষ!) যাদেরকে তাদের ভূমি থেকে বের
করে দেয়া হয়েছে।
 তারা ততক্ষণ ফিরবে না যতক্ষণনা ইয়া'জুজ-মা'জুজ ফিরে না আসছে তাদের সেই উচু ভূমি (পাহাড়ি
অঞ্চল/ সেই জর্জিয়ার অংশ) থেকে ফিরে আসবে।

উল্লেখ্য, এখানে আকস্মাত মানে কিন্তু সাথে সাথে বোঝানো হয় নি, বরং কিয়ামতের বড় আলামত বলা হয়েছে।

এবার আমাকে বলুন,এই জাতি কারা/কে?


এর উত্তর কয়েক আয়াত পরেই আল্লাহ্‌তায়ালা দিয়ে দিয়েছেন।

আমি উপদেশের পর কিতাবে (যবূরে) লিখে দিয়েছি যে, আমার ন্যাপরায়ণ বান্দারা ভূমির অধিকারী হবে।

এখানে ভুমিটা কোন ভূমি?

এটা কি সেই পবিত্র ভূমি? "জেরুসালেম"? চিন্তা করে দেখুন

তিনি বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তবর্ণ চেহারা নিয়ে ঘুম থেকে জাগলেন এবং বলতে লাগলেন,
‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্’! আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই।

নিকটবর্তী এক দুর্যোগে আরব ধ্বংস হয়ে যাবে। ইয়াজূজ-মা‘জূজের (প্রতিরোধ) প্রাচীর আজ এতটুকু পরিমাণ খুলে গেছে।
সুফ্ইয়ান নব্বই কিংবা একশ’র রেখায় আঙ্গুল রেখে গিঁট বানিয়ে দেখলেন।

জিজ্ঞাসা করা হল, আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাব অথচ আমাদের মাঝে নেককার লোকও থাকবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচার বেড়ে যাবে।

এই একই হাদিস বুখারিতে আরও কয়েকবার আছে।

You might also like