You are on page 1of 9

কিম্‌বদন্তি

বিদ্যুৎ চক্রবর্তী

মিথ এবং মিথলজি

কিংবদন্তী , জনশ্রুতি, লোক কথা, এবং পুরাণ যে নামেই অভিহিত করা হোক মিথ আসলে গল্প কথা মাত্র। যুগে
যুগে স্থান কাল পাত্রে ভিন্ন আকার নিয়ে নেয়, কিছু অংশ হারিয়ে যায়, কিছু অংশ জুড়ে যায়, বদলে গেলেও মিথ
তার বৈশিষ্ট্য বদলায় না। সত্য মিথ্যার মিথস্ক্রিয়া অথবা শুধু কল্পনার ডানায় দিক-দর্শন,যাই হোক না কেন মিথ নিয়ে
যেমন অন্ধত্ব আছে তেমন গবেষণাও আছে। মধ্য প্রাচ্যে এবং ভারতে মিথ নিয়ে অন্ধত্বটাই বেশি পরিমাণ চালু।
পাশ্চাত্যে কিন্তু গবেষণাটাই মুখ্য থেকে গেছে। গবেষনার নাম মিথলজি। এটি একটি প্রাচীন আফ্রো-এশিয় দর্শন যা
গ্রীক মিথলজিকে সমৃদ্ধ করেছে। সুপ্রাচীন কাল থেকেই মানুষের চিন্তা শক্তি মানুষের জীবন-যাত্রা, রীত- রেওয়াজ,
যুদ্ধ-শিকার, বিরহ-মিলন, পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্ব , অংকনে, ছড়ায়, গল্প কথায়, গীতে, নৃত্যে, বাদ্যে, এবং রূপকথায় ,
মেয়েদের ব্রতকথায়, পাঁচালিতে প্রকাশিত হয়েছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তা পরিবাহিত করেছে। বহু জাতি
উপজাতি যুগের প্রবাহে ধ্বংস হয়ে গেছে, অস্তিত্ব বিলোপ হয়েছে কিন্তু তাদের লোক কথা জন শ্রুতি হয়ে মুখে মুখে
প্রচারিত হয়ে কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছে।

উত্তর আফ্রিকার জনৈক ফেবিয়াস প্লান্সিয়েডস ফু লজেন্টিয়াস পঞ্চম শতকে লাতিন ভাষায় ‘অন দ্য এজেস অফ
দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যান্ড অফ ম্যান’ নামক গ্রন্থ রচনা করেন। এই লেখককে অস্বীকার করতে একদল ইতিহাসবিদ খুঁজে
বের করেন অন্য এক সেন্ট ফু লজেন্টিয়াস রুস্পে নামের যাজককে। এটাও একটা রহস্য যে কোন জন সত্য ? যেই
সত্য হন না কেন পঞ্চম শতকেই সর্ব প্রথম মিথের চর্চা শিক্ষিত মানুষের সামনে আসে। মিথলজির চর্চা এসেছে
পঞ্চদশ শতকে। হিস্টোরির চর্চা আরও প্রাচীন। খ্রিস্ট পূর্ব পঞ্চম শতকের ‘হেরোডেটাস’ প্রথম হিস্টোরিয়ান।
ইংরেজি হিস্টোরি শব্দটি এসেছে লাতিন হিস্টোরিয়া থেকে আবার শেষেরটা এসেছে গ্রীক শব্দ ইস্টোরি থেকে। স্টোরি
শব্দটি থেকেই যাচ্ছে। মিথের ওপর গবেষণা করে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য এবং প্রমাণযোগ্য যে স্টোরি তারই নাম
হিস্টোরি। মিথ এক নির্মাণ , হিস্টোরি এক প্রমাণ। ভারতে কোনদিন ইতিহাস লেখার রেওয়াজ ছিল না। এছাড়া
শ্রুতির ( বেদ) ও স্মৃতির (উপনিষদ) মাধ্যমে বিদ্যা শিক্ষা চালু থাকায় বহু ইতিহাস মিথ হয়ে গেছে। বিশ্বে বহু মিথ
ইতিহাস বলে চালিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ আছে।

মিথ ও মিথ্যা

মিথ ও মিথ্যা শব্দ দুটির অর্থ প্রায় কাছাকাছি। দুটির উৎসই কল্পনাপ্রসূত তথ্য প্রমাণ বিহীন রূপকথা।
অজ্ঞানতা বা বিজ্ঞান চেতনার অভাব যে সব মানুষের মধ্যে প্রবল , জনসংখ্যার বিচারে তাদের পাল্লা ভারী এবং
সেই কারণে তারাই মিথকে সত্য মেনে বিশ্বাস করেন। ফ্যান্টাসি অর্থাৎ রূপকল্পবোধ মিথের বাহক, ধর্মান্ধতা এর
ধারক। শিশু মনের রূপকথার জগতে এই প্রাপ্ত বয়স্করা থেকেই যান, তাই ভু ত প্রেত দত্যি দানো ঠাকু র দেবতা সাধু
সন্ন্যাসী এবং ভবিষ্যতবেত্তারা এদের কাঁধে চাপেন। লৌকিকের চেয়ে এরা অলৌকিকে আস্থা বেশি রাখেন। এরা
অনেকেই মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে মিথ সৃষ্টি করে থাকেন যা আজও ভারতে স্বাভাবিক ভাবেই বিরাজ করছে। সবচেয়ে
বড় গুজব যা প্রায় মিথ হতে হতে আটকে গেছিলো তা কিন্তু বেশি পুরানো দিনের কথা নয়- পাথরের গণেশ
মূর্তি দুধ খেয়েছিল। [সার্চ করার লিংক হল https://youtu.be/qiyTogk9kp4]

২১শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৫ সারা পৃথিবী জুড়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয় পাথরের বা মাটির দেব মূর্তি
চামচ করে দুধ দিলে তা খেয়ে নিচ্ছে। রটনাটা সব চেয়ে কার্যকরী হয় গণেশের মূর্তি তে। কারণ গণেশ সবচেয়ে
জনপ্রিয় দেবতা। বিশেষ করে হিন্দু ব্যবসায়ী সমাজে। সেই সময়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী হাভার্ড ফেরত পদার্থবিদ তা
মেনে নিয়েছিলেন রাজনীতি এবং ধর্মান্ধতার তাগিদে। বিজ্ঞান মনস্ক ছাত্ররা এবং বিজ্ঞান চেতনার মঞ্চ গুলো
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, জনৈক মুচির লোহার তৈরি নেহাইকেও (anvil) তাদের কেউ কেউ দুধ খাইয়ে ছেড়েছিল। চাপে
পড়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী স্বীকার করলেন সারফেস টেনশন এর তত্ত্ব। কিন্তু এই ধরণের ঘটনাকে মিথ্যাচারিতা বলে,
মিথ বলে না। অন্ধত্ব থেকে মিথ্যার জন্ম হয় আবার মিথেরও সৃষ্টি হয়। পুরানো যুগের বহু মিথ হারিয়ে গেছে
বিজ্ঞানের হস্তক্ষেপে। আর সে সব কাহিনীর মধ্যে যা কিছু সত্য লুকানো ছিল এবং যা যে কোন কারনেই হোক
অপ্রমানিত করা সম্ভব হয়নি এবং যা সাধারণ মানুষের মনের গভীরে রোমান্স সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে তা
চিরকালীন মিথ হয়ে রয়ে গেছে। যারা এই মিথ সৃষ্টি করেছিলেন এবং যারা সময়ের সঙ্গে এই মিথের পরিমার্জ ন
পরিবর্ধন করেছিলেন তারা এই রূপকথাগুলির মধ্যে গোপনে এক ইতিহাস রোপণ করে গেছিলেন। এই মিথের
ব্যবহারিক দিক কিছু ছিল সেইজন্যে এই মিথগুলি চিরন্তন রয়ে গেছে। মিথের সকারাত্মক দিকটা হোল সাধারণ
মানুষের মধ্যে রূপকের মাধ্যমে ইতিহাস ও বিজ্ঞানকে তু লে ধরা। নকারাত্মক দিকটা হোল অন্ধ কু সংস্কার এবং
ধর্মীয় ও সামাজিক আচরণের বিকৃ তি।
অন্ধ শাস্ত্রাচার বিজ্ঞান আয়ত্ব করা

সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনদিনই সম্ভব ছিলোনা। কারণ যুক্তি মানার জন্য বিশেষ কিছু গুণ আয়ত্ব করতে হয়।
আর তা সাধারণ মানুষ পারে না বলেই মিথের নকারাত্মক দিকটা জন মানসে গেড়ে বসে। সাধারণ মানুষকে একদল
অবিজ্ঞানী ধর্মান্ধ ক্ষমতাবান মানুষ বিশ্বাস করতে শিখিয়েছিল পৃথিবী সমতল, সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে।
আরেকদল বিজ্ঞানী পরবর্তী যুগে এসে এই বিশ্বাস বা মিথ ভেঙ্গে দিলো তখন তাদের কাউকে কাউকে রাজা এবং
চার্চ শাস্তি দিলো অন্ধত্ব এবং মৃত্যু। মহাপ্রবল ভ্যাটিকান সিটির মহাপ্রতাপ পোপ মাত্র ১৯৭৯ সালে গালিলিওর
শাস্তি মাফ করেন। বন্দী অবস্থায় গ্যালিলিও ১৬৪২ সালে মারা যান। এবার বুঝু ন। কি বোকা বোকা ব্যাপার। খৃস্টান
ধর্মান্ধরা ভ্যাটিকান সিটির এই মুর্খামিকে কি ভাবে দেখেছেন?

‘The Church eventually lifted the ban on Galileo's Dialogue in 1822, when it was common
knowledge that the Earth was not the center of the Universe. Still later, there were statements by
the Vatican Council in the early 1960's and in 1979 that implied that Galileo was pardoned, and
that he had suffered at the hands of the Church. Finally, in 1992, three years after Galileo
Galilei's namesake spacecraft had been launched on its way to Jupiter, the Vatican formally and
publicly cleared Galileo of any wrong doing.’

গ্যাললিওর আগে কোপারনিকাস, চার্বাক, কণাদ কেউ শাস্তি থেকে রেহাই পাননি। বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদীরা
পৃথিবীর অপার রহস্য ভেদ করতে চেষ্টা করেন এবং মানুষের অন্ধ বিশ্বাসে আঘাত করেন। ফলে এদেরকে কায়েমী
স্বার্থের হাতে অত্যাচারিত হতে হয়। মিথের আড়ালে যে বিজ্ঞান গুপ্ত রয়েছে তার উন্মোচন করতে গেলেই প্রচলিত
ধর্মের ধ্বজাধারীদের স্বার্থে লাগে। তারা শাস্তি ঘোষণা করে, মাফ করতে ভু লে যায়। ধর্মান্ধ মানুষ মিথের
মিথ্যাচারিতায় আজও ভোলে, কায়েমী স্বার্থ গণতান্ত্রিক রাস্ট্রে খুনী বা জল্লাদ ভাড়া করে সত্যের পথে চলা সাধুদের
হত্যা করে, স্বৈরতান্ত্রিক রাস্ট্রে সরাসরি অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালে ও বাংলাদেশে ব্লগার নিধন (
হিন্দু-মুস্লিম নির্বিশেষে) বা ভারতে যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ সংস্কারক খুন তার প্রমাণ। মিথ সামাজিক হলেও
ধর্ম এর সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ভারতের অন্যতম এক শ্রেষ্ঠ অংকন কলা বিশারদ শিল্পী শুধুমাত্র একটি
কারণে ভারত ত্যাগ করে গেলেন আর তা হলো তিনি মা সরস্বতীর একটা স্কেচ এঁকেছিলেন যাতে নারী দেহের
কোন অঙ্গ স্পষ্ট ছিল না। তবুও কেন মা সরস্বতীকে কাপড় পরানো হয়নি ( প্রচারে সরস্বতী উলঙ্গ) তার জন্য
হিন্দুত্ববাদি দলের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। যেমনটা ঘটানো হয়েছিল ‘হজরত বাল’ কান্ডে। শিল্পী ভারত
ছাড়তে বাধ্য হন। ধর্ম নিরপেক্ষ ভারত রাস্ট্র শিল্পীর পাশে দাঁড়াতে অক্ষম হয়েছিলো। শিল্পী ও একটি মিথকেই
এঁকেছিলেন। তান্ত্রিক মতে ব্রহ্মা এবং তার লীলা সঙ্গিনী সরস্বতী সৃষ্টির দেব দেবী। সৃষ্টি অর্থাৎ সৃজন। নগ্নতা
থেকেই সৃষ্টি হয় প্রাণ। তাই ব্রহ্মা এবং সরস্বতী উলঙ্গ। আবার বিনাশের ( সৃষ্টি স্থিতি বিনাশানাং শক্তি ) দেব দেবী
হলেন শিব এবং কালী তাই তাঁরা দুজনেই নগ্ন। স্থিতি অর্থাৎ পালনের দেব দেবী বিষ্ণু এবং লক্ষ্মী। এ তন্ত্র-রূপক
যারা বোঝে তারাও মিথ এর অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবন না করে ধর্মীয় সংস্কারকেই আঁকড়ে ধরে থাকে। কে বোঝায়
কাকে বোঝায়?

ধর্মের প্রসঙ্গ এসে পড়লো। গ্রীকো রোমান সভ্যতার বাড়বাড়ন্ত সময়েই বিজ্ঞানের পাশাপাশি অবিজ্ঞান অন্ধ বিশ্বাস
এবং কু সংস্কারের ভিড় কিছুমাত্র কমেনি। আজও তার ব্যতিক্রম নেই। আধুনিক যুগের নারী্রা সকলেই জানেন
গর্ভ বতী হওয়ার বিজ্ঞান তবুও তাদের কেউ কেউ ভগবানের আশীর্বাদের এবং স্বপ্নদত্ত সন্তানের ভবি ভোলেন না।
একসময় এদের পূর্ব পুরুষের কাছে সত্য উদ্ঘাটিত ছিল না এবং কিশোরী বয়সে মা হবার চল ছিল তখন তাদেরকে
বোঝান হোতো ভগবানের দয়াতে সন্তান লাভ হয়েছে। কিন্তু এখন তো সবাই শিক্ষিত এবং আলোকিত, তবুও
ভগবানের উপর অগাধ বিশ্বাস।

যীশু খৃস্টের জন্ম কু মারী মাতা মেরির গর্ভে । কারণ সে সময় মানুষ বিশ্বাস করতো বারো বছর বয়স হলে ঈশ্বর
দয়াপরবশ হয়ে কোন কোন কিশোরীদের গর্ভ খোলেন কারো গর্ভ বন্ধ করেন। ৯০ বছর বয়স্ক শারা গর্ভ বতী হয়
জিউসের প্রভাবে এবং তার ধাইয়ের কাজে নিযুক্ত হন বারো বছরের কম বয়সী মেরী। সেখান থেকে ফিরে আসার
পর জোসেফ জানলেন মেরী সন্তানসম্ভবা। ( সুত্র গেজা ভারমিস)

এই মিথ গ্রীকদের ও রোমানদের আলোকিত সমাজেও ছিল। আসলে ধর্মের মাতব্বরেরা এই গর্ভ দান করতো।
এই পদ্ধতিকে হিন্দু ধর্মে বলা হোতো নিয়োগ প্রথা। মাতব্বরদের সিল মোহর ব্যতীত বাকি সব বিবাহ-বহির্ভূ ত যৌন
সম্পর্ক ছিল গর্হিত । সে ক্ষেত্রে ব্যভিচার এর শাস্তি পেতে হোতো কেবল মাত্র গর্ভ বতী রমণীকে। যিশু খৃষ্টের পূর্ব
পুরুষরা সকলেই প্রায় ভগবান প্রদত্ত সন্তান। কিছু অদ্ভু ত ঘটনা থাকে। এমনকি ওল্ড টেস্টামেন্টের গল্প থেকে
মহাভারতের গল্প সর্বত্রই ভগবান প্রদত্ত কাহিনী। মহাভারতে কু ন্তী ও মাদ্রী পঞ্চ দেবতার বরে সন্তান সম্ভবা
হয়েছিলেন, এর মধ্যে অশ্বিনী কু মারদ্বয় ছিলেন। সূর্যের ঔরসে ছায়ার গর্ভে অশ্বিনী কু মারদের জন্ম, রামায়নে বশিষ্ঠ
মুনি এবং ঋষ্য শৃঙ্গ মুনিকে দিয়ে নিয়োগ প্রথা এসব মিথকে জয় করে যা বেঁচে আছে তা হোল কু রু পান্ডবের যুদ্ধ
আর রামায়নের যুদ্ধ।

মিথোলজিতে পৃথিবীর সৃষ্টি রহস্যটা কি বা কেমন ?

গ্রীক মিথ

ইংরেজি ক্যাওস শব্দটার অর্থ বিশৃঙ্খল অবস্থা, মূল গ্রীক অর্থ নিহিলো( Nihilo) - মহাশূন্যের উথাল পাথাল
অবস্থা । গ্রীক মিথলজি অনুযায়ী ক্যাওস (chaos) থেকে নগ্ন শরীরে উঠে এলেন সর্বকালের দেবী ইউরিনোম। উঠে
এসে কোথাও দাঁড়াতে পারলেন দেবী তাই আকাশ আর মহাসাগরকে আলাদা করে দিয়ে দক্ষিণদিকে ছুটতে
লাগলেন। তার পিছনে ছুটতে লাগলো বায়ু।দেবী হঠাত ঘুরে গিয়ে উত্তর বায়ুকে (বরিয়াস) দু’হাতে ধরে চটকাতে
লাগলেন। সেই ঘর্ষণে সৃষ্টি হোল বিশালাকার সর্প অফিওন। আরও বেশি ঘর্ষণে সর্পরাজ ক্রমশঃ বাড়তে লাগলো
এবং সর্বশেষে দেবী ইউরিনোমকে জড়িয়ে ধরে সঙ্গমে রত হোল। ইউরিনোম ঘুঘু পাখির মতন আকার ধারণ
করলেন। একটি ব্রহ্ম অন্ড প্রসব করে অফিওনকে নির্দে শ দিলেন সাত কু ন্ডলীর মধ্যে তা সুরক্ষিত রাখতে। সেই
ব্রহ্মান্ড থেকে সৃষ্টি হোল গ্রহ নক্ষত্রাদি এবং পৃথিবীর। এরপর দেবী জন্ম দিলেন সাতটি গ্রহের এবং তাদের দেব-
দেবীর। থেয়া ও হাইপারিয়ান ( সূর্য) , ফেবে ও অ্যাটলাস( চন্দ্র) ডিওন ও ক্রিয়ুস( মঙ্গল), মেটিস ও চয়ুস( বুধ),
টেথিসো ওসেনাস( শুক্র), রিয়া ও ক্রোনাস ( শনি ), থেমিস ও ইউরিমেডন( বৃহস্পতি)।

ইউরিনোম ও অফিওন অলিম্পাস পাহাড়ে এসে বাসা বাঁধলেন। অফিওনের মনে অহং ভাব এলো তিনি বিশ্ব
ব্রহ্মান্ডের সর্বময় কর্তা। তাতে ইউরিনোম ক্রু দ্ধ হয়ে তাঁকে পদাঘাত করে পৃথিবীতে ফেলে দিলেন। অফিওন গিয়ে
পড়লো পৃথিবীর অভ্যন্তরে। অফিওন এর দাঁত থেকে জন্ম নেয় প্রথম মানব পেলাসগাস। পেলাসগাসিয়ানদের এই
রূপকথাকে হোমার তার মহাকাব্যে স্থান দিয়েছেন। অলিম্পিয়ার মিথ অনুযায়ী মাতা ধরিত্রী যে সন্তানের জন্ম দেন
তার নাম ইউরেনাস (আকাশ বা মেঘ) যাকে অনেকে আর্য দেবতা বরুণের সাথে তু লনা করেছেন। ইউরেনাস
(পুংলিঙ্গ) শব্দটি এসেছে ইউরুনা( স্ত্রীলিঙ্গ) শব্দ থেকে। যেমন আর্য শব্দ অরুণা, অরুণ, বরুণা, বরুণ । উচ্চারন
বিধিতে ‘ব’ (B) কখনো উও (w) হয়ে যায়। ভারতীয় অনেক ভাষায় এবং সংস্কৃ তে দুই ‘ব’ এর স্থান আছে।

হিন্দু মিথ

মৎস পুরাণ, বামন পুরাণ, ঐতেরীয় ব্রাহ্মণ, ঋক বেদের কিছু সুক্ত থেকে পাওয়া যায় নীচের এই উপাখ্যান।
মহাপ্রলয়ের অবসানে এই চরাচর জগতে সকলই যখন প্রসুপ্ত ও অতর্কাবস্থায় (Chaos) পরিণত হোলো, সেই
অবিজ্ঞেয় ও অবিজ্ঞাত নিখিলের তমসা (. Ex nihilo creation is found in creation stories from ancient Egypt,
the Rig Veda, the Bible and the Quran, and many animistic cultures in Africa, Asia, Oceania and North
America ) ভেদ করে আবির্ভূ ত হলেন স্বয়ম্ভু - নিত্যশুদ্ধ নিরাভাস নিরাকার নিরাশ্রয় এক নিত্যবোধ যার শরীর

থেকে উৎপত্তি হোল জলরাশি। ইনি অযোনিজ ব্রহ্মা। তার শরীর থেকে নিক্ষিপ্ত হোল বীজ সেই জলরাশিতে, সৃষ্টি
হোল ব্রহ্ম-অন্ড। বিশাল জ্যোতি সম্পন্ন ত্রিগুন ( সত্ত্বঃ , রজঃ, তমঃ) রহিত এক মহা আদিত্যর নাম ব্রহ্মান্ড ।
সেখান থেকেই সূর্যাদি আদিত্য প্রকট হলেন। অখন্ড তমসা থেকে এক অংশের জ্যোতির্গমন ঘটলো। তার নাম
হোল দিবস। অন্য ভাগের নাম হোল রাত্রি। এই সময় জন্ম নিলও অন্ধক নামের অসুর। শুক্র তার আরাধ্য।
অন্ধকের রাজত্বে ধীরে ধীরে ভয়ংকরী প্রভাব বিস্তার করতে লাগলো অলক্ষ্মী ও অসুয়া, তৃ ষ্ণা ও ক্ষু ধা, এবং
কলহা। এদের সংশ্রবে অন্ধকের উত্তেজনা বৃদ্ধি হোল সে রুদ্রাণীকে জয় করতে ছুটল। পথে রুদ্রের চেলাদের
পরাজিত করে রুদ্রের সাথে মুখোমুখি লড়াই হোল। সেই লড়াইয়ে ত্রিশূল বিদ্ধ হয়েও গদাপ্রহারে রুদ্রকে আহত
করলো অন্ধক। রুদ্রের পূর্ব দিকের শোণিত ধারা থেকে জন্ম নিল অসিতাঙ্গ, পশ্চিম হতে রুরু, অধঃ থেকে ভীষণ,
উর্ধ থেকে সংহার, এবং উত্তর ও দক্ষিণ থেক চন্ড, মুন্ড , উন্মত্ত, কপালী। এদের সহায়তায় রুদ্র এবং নন্দী ( বৃষ )
অন্ধককে ত্রিশূল বিদ্ধ করে মেরে ফেললেন।

মহাভারতে সর্পকু ল সম্পর্কে কিছু কথা ও কাহিনী বর্ণিত আছে। জনমেজয়ের সর্প যজ্ঞ, ডু ন্ডু ভের( ঢোঁড়া সাপ
এর ) কেন বিষ নেই, জরৎকারুর পুত্র আস্তীক দ্বারা সর্পত্রাণ, এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাসুকি ( অনন্ত নাগ তথা
শেষ নাগ) ও গড়ু রের উপাখ্যান। বাসুকি ছিল নাগ আর গড়ু র ছিল পাখী। কাশ্যপ ঋষির দুই পত্নী ছিল তাদের নাম
যথাক্রমে কদ্রু ও বিনতা। কদ্রুর ডিম থেকে এক সহস্র সর্প পুত্রের জন্ম হোলো। বিনতার ডিম থেকে কিছুই বের
হোল না । ধৈর্য হারিয়ে বিনতা একটি ডিম ভেঙ্গে ফেললেন, জন্ম হোল অর্ধ পরিণত সন্তান যার নীচের দিকের শরীর
সৃষ্ট হয়নি তখনো। সেই অর্ধ পরিণত সন্তানের নাম বাসুকি যে তার মাকে শাপ দিয়ে সে আকাশে উড়ে যায়। পাঁচশো
বছর পর বিনতার দ্বিতীয় ডিম থেকে জন্ম নেয় গড়ু র। বাসুকির শাপের ফলে কদ্রু এবং তার সন্তানেরা বিনতা ও
গড়ু রকে দিয়ে দাসত্ব করাতে থাকে । গড়ু র মুক্তি চাইলে কদ্রু এবং তার সন্তানেরা একটি শর্ত দেয় আর তা হোল
গড়ু র যদি অমৃত এনে দেয় তাহলে মা ও ছেলে দাসত্ব থেকে মুক্তি পাবে। অর্থাৎ তখন বাসুকিকে দিয়ে সমুদ্র মন্থন
করানো হয়ে গেছে , না হলে অমৃত দেবতাদের ঘরে গেলো কি করে!

শেষনাগ (বাসুকি বা অনন্তনাগ) সমুদ্র মন্থনে মন্দর পর্বতকে জড়িয়ে ছিলেন। তাঁর মুখের দিক ধরে মন্থন করেছিল
অসুরেরা, লেজের দিকে ধরে টেনেছিল দেবতারা। সমুদ্র মন্থনে বাসুকির মুখ থেকে নির্গত হোল ধূম ও অগ্নিশিখা,
তাঁর থেকে সৃষ্টি হোল মেঘের। মেঘ থেকে সৃষ্টি হোল বৃষ্টি। ভীষণ দাবদাহ থেকে বৃষ্টি দেবাসুরের মন্থনকে কিছুটা স্বস্তি
এনে দিলো। মন্দরের ঘর্ষণে নান রকম পশু পক্ষী বৃক্ষ দগ্ধ হয়ে সমুদ্রে পরতে লাগলো। সে সব ওষধি সৃষ্টি হোল যার
নাম দুগ্ধ এবং ঘৃত। মন্থনে উঠে এলো চন্দ্র লক্ষ্মী সুরা উচ্চৈঃশ্রবা কৌস্তভ, পারিজাত, সুরভি এবং অমৃত। তারপরে
হলাহল।

আঠারোটি মহাপুরান ( ব্রহ্ম, পদ্ম,বিষ্ণু ,বায়ু , ভাগবত, নারদীয়, অগ্নি, ভবিষ্য, মার্ক ন্ডেয়, ব্রহ্মবৈবর্ত , লিঙ্গ, বরাহ,
স্কন্দ, বাম্ন, কূ র্ম, গরুড় এবং ব্রহ্মান্ড পুরাণ ) ও অসংখ্য উপ পুরান সহ সমগ্র পুরান রাশির রচয়িতা হলেন পরাশর
পুত্র শ্রীমন্মহর্ষি কৃ ষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস, যাকে সংক্ষেপে ব্যাস বা বেদব্যাস বলে অভিহিত করা হয়। তিনি তার চার
শিষ্যকে ( সুমন্ত, জৈমিনি, পৈল ও বৈশম্পায়ন) এবং আপন পুত্র শুকদেবকে মহাভারতের সাথে চার বেদ অধ্যয়ন
করান। এই গল্প গুলো কি ইতিহাস না মিথ?

প্রথম বেদ হোল ঋক। ঋকবেদ দশটি মণ্ডলে আখ্যায়িত। ১০২৮টি সুক্ত এবং ১০৪৬২টি ঋক আছে। দশম
মণ্ডলকে অর্বাচীন, প্রথম ও অষ্টম মণ্ডল মধ্যবর্তী, এবং দ্বিতীয় থেকে সপ্তম মণ্ডলকে প্রাচীন বলে চিহ্নিত করা
হয়েছে। সহস্রাধিক বার ‘গো’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। গো অর্থে পৃথিবী হয় আবার গাই বা গোরুকেও বোঝায়।
এরপর বেশি উচ্চারিত শব্দ হোল ‘অশ্ব’। চতু র্থ মণ্ডলের একটি ঋকে আছে – ‘ যে ত্বে শুক্রাসঃ ক্ষাং বপন্তি’ –
এখানে অগ্নিকে উদ্দেশ্য করে পৃথিবীতে শুক্র বপনের কথা বলা হয়েছে। গ্রীক মিথ অনুযায়ী গাইয়া হোল বসুমাতা
যিনি পৃথিবীর জন্ম দাত্রী যিনি ইউরেনাসের সাথে মিলনে আকাশের দেবতার জন্ম দিয়েছেন এবং পনতাস এর
সাথে মিলনে সমুদ্র দেবতাদের জন্ম দিয়েছেন। অশ্ব শব্দটির সাথে গ্রীক মিথলজির ও গভীর সম্পর্ক আছে। সূর্যের
অশ্ব ছাড়াও গাইয়ার সন্তান অশ্বের উল্লেখ আছে। হিন্দুদের পক্ষিরাজ ঘোড়ার কল্পনার সাথে পেগাসাস (Pegasus)
এর কল্পনার মিল আছে।

মিথলজি “ আর্যসমাজে যত

কিছু জনশ্রুতি ছড়াইয়া পড়িয়াছিল তাহাদিগকে তিনি ( ব্যাসদেব ) এক করিলেন। জনশ্রুতি নহে, আর্যসমাজে
প্রচলিত সমস্ত বিশ্বাস, তর্ক বিতর্ক ও চারিত্রনীতিকেও, তিনি এই সঙ্গে এক ক্রিয়া একটি জাতির সমগ্রতার এক
বিরাট মূর্তি এক জায়গায় খাড়া করিলেন। ইহার নাম দিলেন মহাভারত। …. ইহা কোন ব্যক্তি বিশেষ রচিত ইতিহাস
নহে, ইহা একটি জাতির স্বরচিত ইতিহাস” ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকু র/ ভারতবর্ষে ইতিহাসের ধারা)।

গ্রীক মিথ ধরা হয় হোমার এর ওডিসি ও ইলিয়াড থেকে। হিন্দু মিথ এর সময়ের কোন সময় বন্ধনী নেই কারণ এর

বহু কিছু লিখিত ছিল না, মুখে মুখে বংশ পরম্পরায় চলতো। তু রস্ক বা প্রাচীন আনাতোলিয়ার সঙ্গে উল্লেখযোগ্য

হল ফাইজেরিয় কিংবদন্তি। এশিয়া মাইনরের সবচেয়ে বেশি উর্বর লোককথা যা পাশ্চাত্য সংস্কৃ তি
ও সভ্যতার বিকাশে বিশেষ ভূ মিকা পালন করেছে। বহু শব্দ বন্ধ আজও প্রচলিত আছে যা
ফাইজেরিয় লোক কথা প্রসূত।

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তার সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন মগধ থেকে আনাতোলিয়া পর্যন্ত এবং সেলুকাসকে পরাজিত করে
তার কন্যা হেলেনকে বিবাহ করেছিলেন। এর আগেও আলেকজান্দার পোরাসকে ( পুরুকে) পরাজিত করার পর
থেকে গ্রীক ও হিন্দুস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক-সামাজিক (বৈবাহিক) সম্পর্ক শুরু হয়েছিল এবং সেই সময়ে (পুরু
থেকে সম্রাট অশোক) এই বিশাল সাম্রাজ্যের স্বীকৃ ত ভাষা ছিল ব্রাহ্মী এবং গ্রীক। বিজ্ঞান ও দর্শন এর আদান
প্রদান ছিল। কাজেই দুই দেশের মিথ ও যে কাছাকাছি হবে তা বোধগম্য। একইভাবে গ্রীক ও রোমান মিলনের ফল
স্বরূপ ইতালি ও গ্রীকের মিথের মধ্যে মিল থাকবে স্বাভাবিক। এই যে কাহিনী এও এককালে মিথ ছিল। কলকাতার
এশিয়াটিক সোসাইটির প্রিন্সেপ তার বাঙালী ও স্কটিশ সহকর্মীদের সহায়তায় ব্রাহ্মী লিপি উদ্ধার করেন এবং খনন
কার্যে প্রাপ্ত লিপি ও অশোক স্তম্ভে লিখিত লিপি উদ্ধার করে ভারতের ইতিহাস আবিষ্কার করা শুরু করেন। ফলে
এককালের মিথ এখন ইতিহাসে পরিণত হয়েছে।
এছাড়াও প্রোটো -ইন্দো ইউরোপিয়ান (PIE) ভাষা গোষ্ঠী থেকে আসার ফলে প্রাচীন অনেক কিছুই একই রকম

থেকে গেছিল। জে পি মালোরি ও ডি কিউ অ্যাডামস তাদের লিখিত গ্রন্থে (The Oxford Introduction

to Proto-Indo-European and the Proto-Indo-European World) এর প্রামাণ্য উদাহরণ দিয়েছেন।

বহু মিল খুঁজে পাওয়া যায় হিন্দু এবং গ্রীক পুরানে ( মিথলজিতে)। উদাহরণ স্বরূপ হিন্দু মিথলজির বাহন গুলো
হোল অজ, মূষিক, মহিষ, হংস, পারাবত, সিংহ, বায়স যা কিনা গ্রীক মিথলজিতেও আছে। কোন এক সময়ে মধ্য
প্রাচ্য থেকে গ্রীসে কু মারীদের পরনে ইজিস থাকতো কৌমার্য রক্ষার তাগিদে আমাদের ভারতে কু মারীদের পরনে
থাকতো ইজের। এটা পাশ্চাত্যে এজিসের ( ছাগলের) কাটা চামড়া দিয়ে বানানো হোতো। অজ এবং এজিস এর
মধ্যেও সাদৃশ্য বর্ত মান।

সমুদ্রপথ ছিল ধর্ম, বানিজ্য,ও সাম্রাজ্য বিস্তারের প্রাচীনতম পরিবহন ব্যবস্থা এবং নিয়তির দ্বারা চালিত। ঝড় ঝঞ্ঝা
ছিল ভবিতব্য। তাই সমুদ্র সৌভাগ্যদেবীর কল্পনা এবং তার পুজা। বাংলায় যেমন কমলে কামিনী , তেমনই
পাশ্চাত্যে ফরচু ন বা ভেনাস , নগ্ন দেবী কোথাও ডলফিনে আসীনা কোথাও পদ্মে আসীনা কোথাও নৌকায়
আসীনা।

আমরা যখন দুই দূরবর্তী দেশের মধ্যে প্রাচীন সাংস্কৃ তিক মেল বন্ধন খুঁজে পাই তখন পড়ে বিস্ময় জাগে কি করে বা
কবে এই মিল ঘটেছিলো। আমরা অনেক পুরানো অতীতে গিয়ে মিথ এর সৃষ্টি খুঁজতে থাকি। হিন্দু তথা ভারতীয়
ঐতিহাসিকতা এই চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য থকে সম্রাট অশোকের সময় পর্যন্ত বিস্তৃ ত ছিল। অশোকের সময় বৌদ্ধ ধর্মের
প্রসার ঘটেছিলো বিশাল আকারে এবং তা ছড়িয়ে পড়ে ইরান থেকে জাপান পর্যন্ত। মিথ এর প্রাসঙ্গিকতা মূলতঃ
জীবন-জীবিকার ভালো মন্দ নির্বাহ এবং মিরাকেল বা অতীন্দ্রিয় শক্তির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান অথবা
কৌতূ হলের নিবৃত্তির মাধ্যমে বজায় থাকে। হাইতাইত সভ্যতা বা ইন্দো ইউরোপিয় সভ্যতা ও গ্রেকো ইন্ডিয়ান একই
ধরণের মিথের জন্ম দিয়েছে। গ্রেকো রোমান সভ্যতা ও এই সব মিথের প্রকারভেদ ঘটিয়েছে।

বিস্ময়ে তাই জাগে


আদিমকাল থেকেই মানুষের জীবন যাপন প্রতিকু লতা রুদ্ধ। প্রাকৃ তিক এবং বাহ্যিক প্রতিকু লতা জয় করার ঘটনা
অনেক সময় কোক মুখে পল্লবিত হয়ে এক নতু ন রূপ কল্প নিতো। সমাজবদ্ধ থাকার জন্য কিছু অনুশাসনের
প্রয়োজন ছিল এবং নিরক্ষর মানুষকে কোন গাঁথার মাধ্যমে তা শেখান হতো। ফ্রাইজেরিয় কিংবদন্তি রাজা
মিডাসের গল্পর মতন ঈশপের গল্পের মতো সব দেশেই কিছু বাস্তব বেশির ভাগটাই কল্পনা দিয়ে গড়ে ঊঠেছে
অসংখ্য কিংবদন্তি বা লোক কথা। বিস্ময় ভয় লোভ মোহ এবং জিজ্ঞাসা ও জিগীষা ত্থেকে তৈরি হওয়া স্টোরি
একদিন হিস্টরির সন্ধান দিতে পারে কিন্তু ইতিহাস কখনো মিথ হয়ে উঠতে পারে না।

You might also like