You are on page 1of 14

ক্লাউন ফ্লেস

টিম কারেন
রুপান্তরঃ অরূপ ঘোষ
অধ্যায় ১

এক ভয়াবহ তু ষারঝড় এগিয়ে আসছে , যেন প্রচণ্ড ক্রোধে গর্জাচ্ছে কোন দানব। সাথে নিয়ে
আসছে শিস দেয়া বাতাস, বরফ ঝড়টার পেট ভর্তি হয়ে আছে তু ষার আর শীতল বৃষ্টিতে। ক্রো
ফলস – একটি ছোট্ট , সাধারণ শহর , যেটা ডাকোটা রাজ্যের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত , আর এটাই
পড়েছে সেই ভয়ানক ঝড়ের যাত্রাপথে। আর এসব কিছুই সব খারাপের শেষ নয়, ঐ ঝড়ের
আড়ালে আরও কিছু যেন লুকিয়ে আছে, আরও ভয়ংকর কিছু, যেটা ওই ঝড়কে আড়াল হিসাবে
ব্যবহার করবে, শান্তি মতো শিকার করার জন্য, সেই শিকারের নাম হলো মানুষ !

কিন্তু সে কথায় পরে আসছি ।

এখন, মিলফোর্ড জাইস ওর নড়বড়ে জেলে কু টিরের পাশে বসে আছে। ক্রো লেকের বরফের
ওপর , যেটা কাছের শহর থেকে মাইলখানেক দূরে। ওর থামার বিন্দুমাত্র ইচ্ছাও নেই, কারণ এই
মুহূর্তে মাছেরা ওর বড় বড়শিতে পাগলের মতো কামড়াকামড়ি শুরু করেছে ! ওর মোমকৃ মি
মাখানো বড়শি পানিতে ফেলা মাত্রই টোপ গিলে নিচ্ছে মাছগুলো। মাছের বালতিটা ক্রমাগত
ভর্তি হয়েই যাচ্ছে, আর জাইস দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছে ওর মাছগুলি শহরের বড় বড় হোটেলে
গ্রিল হচ্ছে। ওর ভাগ্য অনেকদিন এরকম ভালো যায়নি !

কিন্তু এই বালের তু ষারঝড় !

ওহ ম্যান , এটা আসলেই অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে , ভাবতে ভাবতেই মিল তার বড়শিটা আবার
পানিতে ফেলল । বিশ সেকেন্ডেরও কম সময়ের ভেতর আরেকটা মোটা পারচ মাছ ওর
বালতিতে আশ্রয় নিলো !

এর মাঝে মিলের নড়বড়ে জেলে কু টির আরও একবার জোরে নড়ে ওঠায় , এমনকি ওর মতো
মানুষও বিচলিত না হয়ে পারলো না। এই ক্রো লেকে ১৯৫৪ সালে আট বছর বয়স থেকে মিল
মাছ ধরছে। মিল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল, প্রকৃ তি মাতার ওপর যারপরনাই হতাশ। যিনি কিনা ওকে
মুখ ভ্যাংচাচ্ছেন এমন একটা দিনে , যে দিনে ওর ভাগ্য শুধু সুপ্রসন্নই নয়, বরং ‘ছপ্পর ফাঁড়কে’
ঈশ্বর ওকে দিচ্ছেন !

অনিচ্ছার সাথে মিল ওর জিনিসপত্র প্যাক করল, কাঠ পোড়ানোর স্টোভটা বন্ধ করলো “কাল
আরও একটা অন্য দিন !” দাঁতে দাঁত চেপে বিড়বিড় করলো সে, কিন্তু এটা তার মুড মোটেই
ভালো করতে পারলো না । সে জানতো এখানকার মাছেরা কতোটা অনিশ্চিত, আর আজকে
রাতের মতো আরেকটা রাত হয়তো আগামী কয়েক হপ্তা, মাস এমনকি কয়েক বছরের মধ্যেও না
আসতে পারে। ঠিক মনে হচ্ছিলো কেউ যেন ওর অণ্ডকোষ বরাবর একটা শক্ত লাথি ঝেড়েছে !

মনমরাভাবে , মিল ওর পর্ণকু টিরের দরজার বোলট খুলল, আর বাতাস ওর হাত থেকে যেন
ঝটকা দিয়ে দরজাটা কেড়ে নিলো। ওহ ! কি বাতাস ! ওর হাতের ল্যাম্পটা যেন তু ষারাচ্ছন্ন
অন্ধকারকে ঝেটিয়ে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিলো। ও নিজেকে নিজেই জড়িয়ে ধরল ঠাণ্ডার প্রচণ্ডতায়,
নিজের স্নো-মোবিলটার দিকে তাকাল সে, ওটা একটা পোলারিস কোল্ট, ১৯৭৬ মডেলের। মিল
যন্ত্রটা স্টার্ট দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো ইঞ্জিন খানিকটা গরম হবার জন্য। অনেক কষ্টে ভেতরের
দরজা খুলে মেইন রুমে আসলো সে, ঠোঁটে একটা উইনস্টন গুঁজে জিপ্পো দিয়ে ধরাল “একটা
নরকের রাত !” শোনাল নিজেকেই। খুব রুক্ষ আবহাওয়া, কিন্তু ও এর থেকেও খারাপ দেখেছে,
নিজেকে বোঝাল সে। আরও বোঝাল, দৃষ্টিসীমার স্বল্পতা সত্ত্বেও, ও লেকের তীর ঠিকই খুঁজে
পাবে। ও কেবল মাইল খানেকের দূরত্বে আছে শহর থেকে, ওকে কেবল ওর স্নো-মোবিলটার
পুরানো ট্র্যাকগুলি অনুসরণ করতে হবে। ইস ! যদি সত্যিকারের ঘোড়ার মতো স্নো-মোবিলটাও
নিজে নিজে পথ খুঁজে নিতে পারতো – ভাবল মিল।

মিল বুঝতে পারলো সে একাই পড়ে রয়েছে এই বরফের রাজ্যে ওই বরফের ঝড়কে কাছ থেকে
দেখার জন্য। সে আসলেই টাফ, একটা সত্যিকারের ডেয়ারডেভিল ! ওর বাবা প্রায়ই বলতেন ,
উষ্ণতা খোঁজা লোকেরা সূর্যাস্তের সময় বাড়িতে ফিরে যায়, আর তখনই – শুরু হয় মরদ মানুষদের
মাছ শিকার ! একটা মুচকি হাসি ফু টে উঠলো মিলের ঠোঁটে, তবুও, ও জানে, বরফে জমে যাওয়া
লেকের ওপরের একটা তু ষার ঝড়কে মোটেই হালকা ভাবে নেয়া উচিত না ! মিল দূর দক্ষিণে
অনেক শীত দেখে এসেছে, তাই সামনে এসে পড়া ভয়ংকর শীতকে ও যথাযথ সম্মানই দেবে ! ও
সিগারেটের অবশিষ্টাংশ টিপে নেভাল, হাতে পড়ল উলের হাতমোজা। মাছের বিরাট বালতিটা
স্নো-মোবিলটার পেছনে বেঁধে নিলো, কুঁ ড়েটা বন্ধ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার জন্য প্রস্তুত
হল। কিন্তু......... হঠাৎ ই , সে থেমে গেলো।

ওটা কি ? ! !!!

বাতাসের একটানা গোঙানিরও বাইরে, ও একটা শব্দ শুনতে পেলো, যেটা শুনে মনে হলো যেন
কোন ঘণ্টি বাজছে। এটা হতে পারেনা ! কিন্তু ...... ওই যে ! আবার ! এবার আরও কাছে ! কিন্তু
এখানে ? নিশ্চয়ই কোন ইডিয়ট তার কুঁ ড়েতে কোন গ্রে হাউন্ড বেঁধে রেখে গেছে, আর ওটাই
কুঁ ড়েময় দৌড়াদৌড়ি করে যাচ্ছে ! মিলের মনে পড়লো , জনি পালানপা তার কুঁ ড়ের মাথাতে
একটা পতাকা স্ট্যান্ড বসিয়েছিল, যেটা রৌদ্রোজ্জ্বল দিনগুলোতে পতপত করে উড়ে ওর
দেশপ্রেমের পরিচয় দিতো। কিন্তু এরকমই এক ঝড়ে ওই স্ট্যান্ডসহ কুঁ ড়ের ছাদের অর্ধেকটাও যখন
উড়ে গেলো, জনি শাপশাপান্ত করছিলো ‘বালের দেশ , বালের ঝড়’ কে ! মুচকি হাসল আপন
মনেই আবার ।

কিন্তু ওই ঘণ্টির শব্দ আরও কাছিয়ে আসতে ওর হাসি মিলিয়ে গেলো। ওই আওয়াজটাতে কিছু
একটা সমস্যা আছে ! ওই শব্দ এখানে একদম বেমানান, এই ঝড়, এই অন্ধকার , এখানে তো না-ই
! এমন নয় যে সে ভয় পেয়েছে, কিন্তু তবুও। স্নো-মোবিলটাতে চড়ে বসতে বসতে সে শুনতে
পেলো, ঘণ্টির শব্দ আরও কাছিয়ে আসছে............ আরও কাছে .........

অধ্যায় ২
মিল স্নো-মোবিলটা নিয়ে গজরাতে গজরাতে এগোল, ঠিক যেন একটা যান্ত্রিক ঘোড়া ! সে খুব
সহজেই ওর আগের ট্র্যাক খুঁজে পেল আর সেগুলি ফলো করতে লাগলো। অল্প সময়েই জমিনে
উঠে পড়বে , ও আরও একটু জোরে চালাতে পারতো কিন্তু স্বল্প দৃষ্টিসীমার কারণে ও ট্র্যাক হারিয়ে
ফেলতে পারে, এই ভয়ে সেটা করলো না। এই বাজে ঝড়টা আর বাতাস ওকে ওর সিট থেকে
বারবার ফেলে দিতে চাইছে, আর ও পাঁচ মিটার দূরের জিনিসও দেখতে পাচ্ছে না । এখানে অনেক
মাইলের মধ্যে কোন বাঁধা নেই। বাতাসের গতি ক্রমেই জোরাল হচ্ছে।

হঠাৎ, সে ঘণ্টির আওয়াজ আবারো শুনতে পেলো, আর এবার ঠিক মনে হলো ওর পাশেই
আওয়াজটা আসছে। কিন্তু তবুও, মিল মোটেই ভয় পাচ্ছে না, ওর স্নোস্যুটের নিচে ও ঘেমে যাচ্ছে,
ওর হৃৎপিণ্ড গলার কাছে উঠে আসতে চাইছে, ও দাঁতে দাঁত চেপে আছে যাতে ওরা পরস্পর
বাড়ি না খায়, কিন্তু তবুও , ও মোটেই ভয় পাচ্ছে না ! কারণ, ও জানে ভয় মানুষকে কি করতে
পারে ! ওর মনে পড়ে গেলো ’৬৫ সালে ভিয়েতনামের যুদ্ধের কথা, বোমা খেয়ে সঙ্গীসাথীদের
উড়ে যাবার কথা। ভয় তোমাকে অদ্ভু ত কিছু ভাবায় আর করায়, তু মি ভু ল করতেই থাকবে।

মিল দেখতে পেল জমিনের রেখা দেখা যাচ্ছে, আর একটু ...... ভাবল সে।

হঠাৎ ওর হৃৎপিণ্ড যেন কেউ লোহার হাত দিয়ে চেপে ধরল, ও দেখতে পেল ও একটা খাদের
একদম কিনারে চলে এসেছে, আর উল্টোদিকে একটা কিম্ভু ত চেহারার লোক ওর দিকে চেয়ে হাত
নাড়ছে আর যেন ভেংচি কেটে হাসছে !

এখন মিল আরও জোরে যেতে চায়, ও ফু ল থ্রটল দিলো, ওর মনে ভেসে উঠলো ভিয়েতনাম
যুদ্ধের মৃত সঙ্গীদের মুখ। অনেক বছর আগে , ও নিজেকে বোঝাত, সকাল পর্যন্ত কাটিয়ে দিতে
পারলেই হবে, সব ঠিক হয়ে যাবে, ঠিক যেমন এখন জমিনে উঠতে পারলেই ...............

ওহ ঈশ্বর !
ওই কিম্ভু ত লোকটা ঠিক ওর সামনে চলে এসেছে , মিল জানে ও ওটাকে পাশ কাটিয়ে কিছুতেই
এগোতে পারবে না, বরফের ওপর, এই অন্ধকারে, ঝড়ের ভেতর ......... নাহ ! ওটা যাই হোক,
মানুষ না ! ও পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিল নিচ, কু টিল হাসি ভরা মুখ -- দাঁত গুলি বড় বড় আর
তীক্ষ্ণ আর লম্বা ! হিতাহিতভাবে স্নো-মোবিলটাকে এগিয়ে নিতে চাইলো মিল, ওহ ! ওই
চোখগুলি! ওটা আরও কাছে, আরও কাছে এগিয়ে আসতে লাগলো । শেষ মুহূর্তে কিম্ভু তটা
একপাশে সরে গেলো আর মিল ওর গলাতে একটা স্টিলের তার অনুভব করলো ! ও প্রচণ্ড
গতিতে মাটিতে আছড়ে পড়লো স্নো-মোবিলটার ওপর থেকে। কাঁধে প্রচণ্ড একটা ব্যাথা ছড়িয়ে
পড়ছে টের পেল সে , ওর স্নো-মোবিলটা একটা বরফের টিলার কাছে গিয়ে ওটা খানিকটা খুঁড়ে
ওখানেই স্থির হয়ে গেল। কাঁধের প্রচণ্ড ব্যাথা উপেক্ষা করে মিল উঠে দাঁড়ালো, বেল্ট থেকে টান
দিয়ে বের করলো একটা সুইচ ব্লেড ছুরি, ঝড় ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চাইছে, চোখে মুখে বাড়ি
দিচ্ছে এলোমেলো উড়তে থাকা তু ষারকণা , কিন্তু প্রাক্তন সৈনিকের রক্ত ওকে দাঁড় করিয়ে রাখল
শেষমেশ।

নিজেকে দেখা, ব্যাটা কাপুরুষ দানব কোথাকার ! কাটাকু টি হতে চাইলে এদিকে আয় একবার !

তখনই, ওই কিম্ভু তটা ওর একদম সামনে দাঁড়িয়ে পড়লো। দাঁতগুলি চোখা বরফের ডগার মতো,
নখগুলি ঠিক একটা ভালুকের মতোই ওর নাগাল পেতে চাইছে। একটা বিকট চিৎকার দিয়ে মিল
দানবটার গায়ে ছয় ইঞ্চি ব্লেড পুরোটাই ঢু কিয়ে দিলো, ওটা বুনো আর্ত নাদ করে উঠলো সেটা গলার
ভেতর থেকে। কিন্তু দানবটার একটা লম্বা নখ ওর নাগাল পেয়ে মুহূর্তে র মধ্যে ওর গলা চিরে দু
ফাঁক করে দিলো, এমনকি সরে আসার কথা চিন্তা করারও আগে ।

বাতাসের জন্য খাবি খেতে খেতে সরে এলো মিল, নাক মুখ দিয়ে আর চেরা গলা দিয়ে সমানে
ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে, শক্তিহীন ভাবে বরফের ওপর পড়ে গেলো সে, জীবন তাকে ছেড়ে
গেলো ঠিক গরম উদ্বায়ী বাষ্পের মতোই । কিম্ভু ত দানবটা তাড়িয়ে তাড়িয়ে ওর মৃত্যু দেখল,
তারপর সাদা তু ষার ঝড়ের ভেতর অদৃশ্য হয়ে গেলো যেমন এসেছিল তেমনি !
অধ্যায় ৩

যদিও ক্লে কাউন্টির শেরিফ হিসাবে দশ বছর হয়ে গেছে, টিগ জানে এলাকার বুড়োরা এখনও ওকে
নবীশই মনে করে। ঠিক ওর আগেরজনের মতোই , উইল সবসময় লেসটার পিসের ছায়াতলেই
রয়ে যাবে, যে কিনা একজন সেরা পুলিশ অফিসার ছিল, অথবা স্মরণকালের সেরা বজ্জাত লোক
যে শেরিফের ব্যাজ পড়েছিল – নির্ভ র করে আপনি কাকে জিজ্ঞেস করছেন তার ওপর !

লেসটার ১৯৯৩ সালে চল্লিশ বছর সার্ভি স শেষে রিটায়ারমেন্ট এ যায়, বেনি লেক্স ওর জায়গা নেয়
টিগ ওকে ২০০৫ সালে অব্যাহতি দেবার আগ পর্যন্ত। কিন্তু এমনকি বিশ বছর পরেও, লেসটারের
দ্যুতি এখনও মিলিয়ে যায়নি, আর ওর ছায়া ক্রমশ লম্বা থেকে আরও লম্বা হয়েছে। ক্রো ফলসের
রিটায়ারমেন্ট এ যাওয়া বুড়োদের কাছে , লেসটার পিস এখনও বিশ্বের সবচেয়ে টাফ পুলিশ
অফিসার, যার মধ্যে একইসাথে খারাপ আর ভালো – দুইটারই সমান মিশ্রণ ছিল। একজন
কর্ত ব্যপরায়ণ , কঠোর পরিশ্রমী শয়তান যে কিনা সবসময়ই জানতো শহরে ঠিক কি চলছে !
যখনই কোন বাজে ঘটনা ঘটত, সে তার বেলচা নিয়ে ঠিক সময়ে হাজির হতো আর নোংরাটা
বাইরে ছুঁ ড়ে ফেলত ! এখন কথা হল, ঘটনা কি সবই সত্যি নাকি লেসটার প্রায়ই অভিনয় করতো,
হুম, এখন অতীত ঘেঁটে এসব বের করা যথেষ্ট কঠিনই বটে।

এখন, তু ষারঝড় যতই খারাপ রূপ নিচ্ছে, টিগ শহরের পেছনদিককার রাস্তাগুলিতে গাড়ি চালাতে
চালাতে চিন্তা করছিলো......... চিন্তা করছিলো সেসব বিষয় নিয়ে যা ও নিজে আর লেসটার ছাড়া
আর কেউ জানেনা ---- ফান্ডের অপব্যবহার, অর্থহীন পরিসংখ্যান, ভু য়া এভিডেন্স – এবং
আরও আধ ডজন অপ্রীতিকর বিষয়। এসব সে জানতে পেরেছিল লেসটারের ডেপুটি থাকার
সময়। বেনি কখনও জানতে পারেনি, পারলে লেসটারের খবর ছিল। অন্যদিকে , টিগ, পক্ষান্তরে ,
সবই জানতো, কিন্তু ও বুড়ো লেসটারকে ওসব নিয়ে যেতে দিলো। কারণ দিন শেষে লেসটারের
সাজানো তদন্তগুলিতে , কেউই তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হতো না ! তাছাড়া, লেসটার এখন মৃত, আর মারা
যাবার আগে সে ভালোভাবেই বুঝে গিয়েছিলো যে টিগ সব জানত। তাই ওরা দুজন একা থাকলে
লেসটার কখনোই টিগের চোখে চোখে তাকিয়ে কথা বলতে পারতো না। ওর ছায়া তখন বেশ
অকিঞ্চিৎকর মনে হতো।

পথে মানুষজন খুবই কম, এটা তাকে বেশ স্বস্তি দিলো, কিন্তু মেইন রোডের ওপর বেশ অনেকগুলি
গাড়ি পারকিং করা আছে, যেটা খুব খারাপ। কারণ একটু পরেই এখান দিয়ে স্নো-প্লাউগুলি যাবে।
এর মানে হল এখন টিগকে সব পাবে পাবে ঢুঁ মেরে মেরে মাতালদের বলতে হবে তারা যেন দয়া
করে নিজের নিজের গাড়িতে উঠে বাড়ি চলে যায় ! ওরা স্বাভাবিকভাবেই এটা ভালোভাবে নেবে
না, তার মানে হল ঝামেলা ! তিক্তভাবে ভাবল টিগ।

কিন্তু কিছু করার নেই, এটা ওর কাজেরই অংশ। বেলচাটা এখন ওর কাছে, আর ময়লা ওকেই
ফেলতে হবে।

‘ব্রোকেন বটল’ নামে একটা বারের সামনে ও গাড়ি থামাল। এক মুহূর্ত গাড়ির ভেতর বসে
মাতালের মতো দুলতে থাকা সাইনবোর্ড টার দিকে তাকিয়ে রইল টিগ। খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি
হবার আগে নিজেকে প্রস্তুত করে নিচ্ছে।

হায় ! সে যদি জানতো আরও কত বেশি খারাপের মুখোমুখি তাকে হতে হবে ! তাহলে হয়তো
ওখান থেকেই ফিরতি বাড়ির পথ ধরতো সে !

অধ্যায় ৪
এটা পুরোই ট্যাবের দোষ, জিনা ভাবছিল , আর এবার জেল থেকে ওকে জিনার ঘরেই আর ঢু কতে
দেবে না ! ও কেয়ার করেনা যে ট্যাব ওর ভাই হয়, একটা চল্লিশ বছরের বুড়ো ধাড়ী যে কিনা
এখনও টিনএজারদের মতো আচরণ করেই যাচ্ছে ! এটা গত বছর থেকে দ্বিতীয়বারের মতো ,
যখন কিনা সে মাতাল হয়ে গাড়ি চালানোর জন্য জেলে গেলো। এবার বাছাধনকে কমসেকম তিন
মাসের ঘানি টানতেই হবে, এই নিষ্ঠু র তু ষার ঝড়ের ভেতর নিজের টয়োটাকে রাস্তাতে রাখার আপ্রাণ
চেষ্টা করতে করতে ভাবছিল জিনা।

কি একটা ঝড় !

ভারমিলিয়নের পথ অনেক কঠিন ছিল, কিন্তু এখন রাস্তাটা চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে
পড়েছে। একটু আগে একটা স্নো প্লাউ দেখেছিলো সে, কিন্তু এখন রাস্তাতে আবার প্রায় দশ ইঞ্চি
পুরু বরফ জমে গেছে। ক্রো ফলসে পৌঁছতে আরও আধঘণ্টাটাক লাগবে, যদি সে আদৌ পৌঁছতে
পারে আরকি !

ধন্যবাদ , ট্যাব, তোমাকেও ধন্যবাদ !

সে কল্পনার চোখে দেখতে পাচ্ছিল ওই গর্দ ভটা একটা কোজি সেলে অন্যান্য অপরাধীদের সাথে
বসে আরামে সিগারেট টানছে, আর এদিকে সে জীবন বাঁচানোর জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। আসলে
ওর এখন ভারমিলিয়নে না গেলেও চলতো, ট্যাব আর ওর হতচ্ছাড়া নেশা সোমবার পর্যন্ত
অপেক্ষা করতেই পারতো, কিন্তু জিনার স্টু পিড সাহায্যকারী স্বত্বা শেষমেশ জিতে গিয়েছিলো। ও,
ওর মায়ের মতোই একজন ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক ছিল, আর ভাইকেও না আনার চিন্তাও সে করতে
পারেনা, এটা ওর পরিবারের প্রতি বেঈমানি করার সামিল।

হঠাৎ -- বাতাস একটা সুনামির মতোই আঘাত করলো ওর গাড়ির আয়নার ওপর, জিনা সজোরে
স্টিয়ারিং আঁকড়ে ধরলো যাতে ওটা হাত থেকে ছুটে না যায় ! টয়োটাটা পিছলে ডানে সরে গেলো,
পেছনের দিকটা বিপজ্জনকভাবে স্কিড করে প্রায় রাস্তার বাইরে চলে গিয়ে নিচের খানাখন্দের দিকে
টানছিল গাড়িটা। শেষমেশ অবশ্য সেটা হলনা, গাড়িটা আবার সোজা হয়ে জিনার কন্ট্রোলে চলে
এলো।

হাঁফ ছাড়ল জিনা, গেছিলো আরেকটু হলে !

ঝড়ো বাতাস বাইরের বিস্তৃ ত মাঠ জুড়ে বয়ে যাচ্ছে, গাড়ির সামনের উইন্ডশিল্ড জুড়ে ঠিক যেন
একটা সাদা পর্দা ঝু লে আছে। ওয়াইপারগুলি প্রাণপণে সামনের উইন্ডশিল্ডটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা
করে যাচ্ছে। হেডলাইটের আলোতে সামনের রাস্তা জুড়ে নেচে যাচ্ছে সাদা তু ষার। জিনা তির্যক
দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করল সে আসলে কোথায় আছে, অনেকক্ষণ হল সে
কোন গাড়ি দেখেনি। সামনের পথটা একটা বিশুদ্ধ সাদা ফিতার মতো দিগন্তবিস্তৃ ত মাঠের মাঝখানে
বিছিয়ে আছে। এক্সিলারেটর থেকে পা সরিয়ে নিলো জিনা, এখন বোঝার কোন উপায় নেই সে
নিজের লেনে আছে কি-না । আরেকটা কোণ ঘুরলো টয়োটাটা , আর এবার দৃষ্টিসীমা দশ মিটারে
নেমে এলো, প্রায় অন্ধ করে দিলো জিনাকে।

তখন হঠাৎ করেই সে একটা হেডলাইট দেখতে পেলো, আরে, তু মি সরাসরি ওর দিকেই এগিয়ে
যাচ্ছ, নিজেকে শোনাল জিনা। ও নিশ্চয়ই নিজের লেন ছেড়ে পাশের উল্টো লেনে চলে এসেছে,
সামনের ওটা একটা বিশাল ট্রাক। শিট !

‘বুউউ’ করে ট্রাকটা তার কানফাটানো হর্ন বাজাল, আর জিনার মন মৃত্যুভয়ে আচ্ছন্ন হয়ে
পড়লো। এখন, জিনা নিজেকে শোনাল, তু মি যদি জোরে স্টিয়ারিং ঘোরাও, তাহলে তু মি রাস্তার
বাইরে ছিটকে পড়বে, আর লেন আঁকড়ে থাকলে ওই যন্ত্রদানবের সামনে। সাবধানে , খুউইব
সাবধানে , সে আস্তে আস্তে স্টিয়ারিং ঘোরালো , নিজের লেনে ফেরত যাবার সময় ভারী ট্রাকটার
এমন পাশ ঘেঁষে গেলো জিনার গাড়িটা, যে দুই গাড়ির মাঝখানে একটা কমলালেবু রাখলে সেটা
চ্যাপ্টা হয়ে যেতো। একটু খানি ঘষা লাগলেই আর দেখতে হতোনা, সোজা পাশের গভীর খানাতে
গিয়ে জমত ওর টয়োটা।

পরের বিশ মিনিট কিছুই ঘটলো না ।


অবশেষে , ক্রো ফলসের উপত্যকা সামনে বিছানো দেখতে পেলো জিনা, শহরের বাতিগুলি
অন্ধকারে ঝিকমিক করতে লাগলো। ঠিক মনে হচ্ছিলো মরুভূ মির মাঝখানে একটা মরীচিকার
মতো, কারণ মুহূর্তে র মধ্যে দৃশ্যটা আবার তু ষার ঝড়ের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেলো।

আমি এসে গেছি ! জিনা ভাবল আমি বাড়ি পৌঁছে গেছি !

শহরতলির ঠিক পাঁচ মিনিট আগে, রাস্তার ওপর দশ সেন্টিমিটার পুরু বরফ জমে থাকতে দেখল
জিনা। ঠিক সেই মুহূর্তে ............ ওর হেডলাইটের আলোর সামনে আচমকা একটা শরীর এসে
দাঁড়ালো, জিনা একটা চিৎকার দিয়ে উঠে ব্রেক চেপে ধরল। টয়োটা সামনে পেছনে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে
দুলতে দুলতে স্কিড করে সামনেই এগোতে লাগলো আর একটা বিচ্ছিরি ভোঁতা আর ভয়ংকর
আওয়াজ করে সামনের লোকটাকে বাম্পার দিয়ে ধাক্কা মারল, লোকটা ছিটকে পাশের তু ষারঝড়ের
ভেতর নিক্ষিপ্ত হল।

পরমুহূর্তে জিনা দেখতে পেলো উইন্ডশিল্ড সমান উঁচু বরফের মধ্যে ওর গাড়িটা আটকে গেছে ! ও
রিভার্স গিয়ার দিলো, চাকা ঘুরেই গেলো কিন্তু গাড়ি নড়ল না। অগত্যা নিজেকে শান্ত করে অনেক
ধ্বস্তাধস্তি করে দরজা খুলে সাবধানে বাইরে বেরিয়ে এলো। ঠাণ্ডা বাতাস ওর শরীর আর মুখে
চাবুকের মতো আছড়ে পড়লো আর ওর পুরো শরীর মুহূর্তে ই অবশ হয়ে গেলো।

ওর পুরো শরীর ভীষণভাবে কাঁপছিল, শুধু শীতে নয়, ও যাকে ধাক্কা মেরেছে টার কথাও ভাবছে
সে। ওকে ৯১১ এ কল দিতে হবে আর বডিটা খুঁজে বের করতে হবে। চিন্তাটা ওকে সম্পূর্ণ অবশ
করে দিলো, কারণ এইমাত্র ও দেখতে পেয়েছে ও কাকে – আসলে কাকে নয় – ‘কি’ কে ধাক্কা
মেরেছে ।

ও একটা ক্লাউনকে ধাক্কা মেরেছে !

অধ্যায় ৫
“এখন শান্ত হোন সবাই ! ”

শেরিফ টিগের আওয়াজ কারাওকে সিস্টেমে গমগম করে উঠলো, এমনকি বাইকাররাও যারা কিনা
পাশের রুমে বিলিয়ার্ড খেলছিল, তারাও থেমে গেলো আর কিউ (খেলার লাঠি) এর ওপর ভর
দিয়ে দাঁড়ালো। পুরো ‘ব্রোকেন বটল’ বার নিস্তব্ধ হয়ে গেলো, কেউ সামান্যতম শব্দও করছে না।
অতিথিরা তাদের বিয়ারের বোতলে চু মুক দিতে ভু লে গেলো, টেবিলের ওপর রাখা পিজ্জার
টু করোগুলি নীরবে ঠাণ্ডা হচ্ছে।

“ওয়েল” শেরিফ টিগ শুরু করলো “আমি এটা বলছি না যে , ব্রোকেন বটল বন্ধ করে দিতে চাচ্ছি,
আমার সেটা করার এখতিয়ার নেই -- ”

“সহজভাবে নাও যে ওটা করার এখতিয়ার তোমার নেই --” অতিথিদের একজন উচ্চস্বরে বলে
উঠলো , চারপাশে হাততালি আর হাসির রোল পড়ে গেল একথা শুনে।

টিগ ওর মাথা ঝাঁকাল “ধন্যবাদ , কারপি ! পরেরবার তোমার সাথে দেখা হলে, তোমার সাপ ট্যাটু
লাগানো বাইকের চাবি নিয়ে তোমাকে সোজা একটা সেলে ঢু কিয়ে দেবো !”

জর্জ কারপির উৎসাহে ঠাণ্ডা পানি পড়ে গেলো, ও এমনভাবে সামনে রাখা বিয়ারের গ্লাসের
ভেতর তাকিয়ে রইলো যে দেখে মনে হতে লাগলো সেখানের ভেতর ওর হারানো সাহস খুঁজে বের
করার চেষ্টা করছে !

টিগ বলে চলল “কেউ ‘ব্রোকেন বটল’ বন্ধ করতে যাচ্ছে না , আমি কেবল বর্ত মান পরিস্থিতির
ভয়াবহতা সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। বাইরে, শতাব্দীর ভয়াবহতম তু ষারঝড় পাকিয়ে
উঠছে। মধ্যরাতের ভেতর আট ইঞ্চি আর সকালের ভেতর এক মিটারের মতো পুরু বরফ জমার
পূর্বাভাস রয়েছে। স্টেট পুলিশ ইতিমধ্যে হাইওয়ে বন্ধ করে দিয়েছে আর লোকাল পুলিশ চাচ্ছে
পেছন দিককার রাস্তা গুলো বন্ধ করে দিতে। তোমাদের মধ্যে যারা একটু দূরে থাকো, যেমন তু মি –
কারপি – তোমার উচিত এখনই বাড়ির পথ ধরা ! অথবা শহরের ভেতর কারো সাথে রাত
কাটানো যায় কিনা চেষ্টা করে দেখা । ”

পুরো রুম জুড়ে অসন্তোষের বিড়বিড়ানি আর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লো।

“ভালোই দেখালে, শেরিফ !” ব্রেনডা পেচেক অভিযোগ জানাল “তু মি আমার শুক্রবারের পুরো
বিকেলের ব্যাবসা ধ্বংস করে দিলে ! আমি কষ্টেসৃষ্টে ভাড়ার টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করছি আর
তু মি এসে আমার বারোটা বাজিয়ে দিলে !”

“হ্যাঁ ! ঠিক কথা !” পাশ থেকে উচ্চস্বরে সায় জানাল ওর স্বামী স্তিউ।

টিগ ভালো করেই জানতো স্তিউ পেচেক ওর বউয়ের সব কথাতেই সায় দেবে , সেটা বাজারে
শসার দাম নিয়েই হোক বা তোমার বাঁকা মন্তব্য, যাই হোক না কেন।

“আমি কেবল সত্যি ঘটনাটা তু লে ধরছি ” চেঁ চাল টিগ “তোমরা তোমাদের যা মনে আসে করতে
পারো, কেবল রাস্তা থেকে তোমাদের গাড়ি আর ট্রাকগুলি সরিয়ে নাও, স্নো-প্লাউগুলি যাতে
বাধাহীনভাবে চলাচল করতে পারে। আধঘণ্টার মধ্যে আমি যা বললাম সেটা যদি না হয়, তাহলে
আমি গাড়িগুলো টো করে সরিয়ে নেবার ব্যাবস্থা করব। সেটা কারো জন্যই সুখকর হবে না !”

অতিথিদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের জ্যাকেট তু লে নিয়ে বাইরে ছুটে গেলো, দরজা খোলার সাথে
সাথে বাইরের বরফ ঠাণ্ডা হাওয়া ভেতরে ঢু কে বেশ কিছু হালকা পেপার প্লেট উড়িয়ে দিলো ।
নিয়মিত পানকারীরা বসেই রইলো, দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে ভাবতে লাগলো , কে ওই উইল
টিগকে খুন করে বিশ্ব সম্রাটের আসন কেড়ে নেবে ! অন্যদিকে ব্রেনডা অভিযোগ করেই চলল “খুব
ভালোই খেল দেখালে, শেরিফ ! এবার কি করবে, পুরো শহর শাট ডাউন করে দেবে ?”

“আধ ঘণ্টা !” আরেকবার বাজখাই গলাতে বলেই স্টেজ ছেড়ে নেমে পড়লো টিগ।

ব্রেনডা গজগজ করেই চলল “তু মি ওই বালের লিবারেটদের কাছ থেকে এসব পেয়েছ , ওই -- ”
“তোমার মুখ বন্ধ করো , ব্রেনডা !” টিগ ত্যাক্ত হয়ে বলল।

“তু মি কি ওকে এভাবে আমার সাথে কথা বলতে দেবে ?” স্বামীর দিকে তাকাল ব্রেনডা।

“কি বলছ ভেবে বলো !” গরগর করে বলল টিগ।

স্তিউ একবার ওর বউয়ের রাগে গনগনে লাল মুখের দিকে তাকাল , আরেকবার শেরিফের দিকে ।
একশো আশি পাউন্ড এর কিলবিলে পেশী আর বেশ অনেকটা চওড়া কাঁধ, ওই পুলিশ লেদার
জ্যাকেটের ভেতর গুঁজে দেয়া। নাহ ! এই ঝুঁকি ও নিতে পারবে না !

ও শুকনোভাবে ঢোঁক গিলে বলল “হ্যাঁ !”

অধ্যায় ৬

তু ষারঝড় গুঙিয়েই চলেছে, জিনা ওর জ্যাকেটের পকেটে গ্লাভসগুলি গুঁজে রাখল আর


সেলফোনটা বের করলো। ও এখন ৯১১ এ কল দেবে আর খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে ও
আসলে কাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে।

কিন্তু ঠাণ্ডা আর ওর ভয়, দুটোর যুগপৎ আক্রমণে ওর হাত এতই কাঁপছিল যে ওর ফোনটা ছুঁ ড়ে
দেয়া পাথরের মতো ওর হাত থেকে ছুটে গিয়ে একটা বরফের স্তূ পের নিচে হারিয়ে গেলো। ও
সাথেসাথেই হাঁটু গেড়ে বসে ওটা খুঁজতে লেগে গেলো। ওটা খুঁজে বের করা সহজই হবার কথা,
কিন্তু অনেক খোঁড়াখুঁড়ি আর বরফ-মাটি সরানোর পরও ওটা খুঁজে পেলনা সে। ওখানে বেশ
অন্ধকার থাকাতে ওর মনে পড়ল গ্লোভ কম্পার্ট মেন্টে রাখা ফ্ল্যাশলাইটটার কথা । ও ওটা নিয়ে
ফেরত আসার পথে শক্ত কিছুর ওপর ওর পা পড়লো, ‘কট’ করে একটা শব্দের সাথে কিছু
একটা ফেটে যাবার শব্দ শুনল সে “গ্রেট !” ভাবল সে, এই বালের রাত আরও মধুময় হয়ে উঠছে
!

You might also like